২০. মতিলালের যুক্তি, বাবুরামবাবুর শ্রাদ্ধের ঘোঁট, বাঞ্ছারাম ও ঠকচাচার অধ্যক্ষতা, শ্রাদ্ধে পণ্ডিতদের বাদানুবাদ ও গোলযোগ।

পিতার মৃত্যু হইলে মতিলাল বাটীতে গদিয়ান হইয়া বসিল। সঙ্গী সকল এক লহমাও তাহার সঙ্গছাড়া নয়। এখন চার পো বুক হইল –মনে করিতে লাগিল, এতদিনের পর ধুমধাম দেদার রকমে চলিবে। বাপের জন্য মতিলালের কিঞ্চিৎ শোক উপস্থিত হইল –সঙ্গীরা বলিল, বড়োবাবু! ভাবো কেন ? বাপ-মা লইয়া চিরকাল কে ঘর করিয়া থাকে ? এখন তো তুমি রাজেশ্বর হইলে। মুঢ়ের শোক নামমাত্র –যে ব্যক্তি পরমপদার্থ পিতামাতাকে কখন সুখ দেয় নাই –নানাপ্রকার যন্ত্রণা দিত, তাহার মনে পিতার শোক কিরূপে লাগিবে? যদি লাগে তবে তাহা ছায়ার ন্যায় ক্ষণেক স্থায়ী, তাহাতে তাহার পিতাকে কখন ভক্তিপূর্বক স্মরণ করা হয় না ও স্মরণার্থে কোনো কর্ম করিতে মনও চায় না। মতিলালের বাপের শোক শীঘ্র ঢাকা পড়িয়া বিষয়-আশয় কি আছে কি না আছে তাহা জানিবার ইচ্ছা প্রবল হইল। সঙ্গীদিগের বুদ্ধিতে ঘর-দ্বার সিন্দুক-পেটারার ডবল্‌ ডবল্‌ তালা দিয়া স্থির হইয়া বসিল। সর্বদা মনের মধ্যে এই ভয়, পাছে মায়ের কি বিমাতার কি ভাইয়ের বা ভগনীর হাতে কোনো রকমে টাকাকড়ি পড়ে তাহা হইলে সে টাকা একেবারে গাপ হইবে। সঙ্গীরা সর্বদা বলে –বড়োবাবু ! টাকা বড়ো চিজ –টাকাতে বাপকেও বিশ্বাস নাই। ছোটবাবু ধর্মের ছালা বেঁধে সত্য সত্য বলিয়ে বেড়ান বটে কিন্তু পতনে পেলে তাঁহার গুরুও কাহাকে রেয়াত করেন না –ও সকল ভণ্ডামী আমরা অনেক দেখিয়াছি –সে যাহা হউক, বরদাবাবুটা অবশ্য কোনো ভেল্‌কি জানে –বোধ হয় ওটা কামাখ্যাতে দিনকতক ছিল, তা না হলে কর্তার মৃত্যুকালে তাঁহার এত পেশ কি প্রকারে হইল।

দুই-এক দিবস পরেই মতিলাল আত্মীয়-কুটুম্বদিগের নিকট লৌকিকতা রাখিতে যাইতে আরম্ভ করিল। যে সকল লোক দলঘাঁটা, সাল্‌কে মধ্যস্থ করিতে সর্বদা উদ্যত হয়, জিলাপির ফেরে চলে, তাহারা ঘুরিয়া ফিরিয়া নানা কথা বলে –সে সকল কথা আসমানে উড়ে উড়ে বেড়ায়, জমিতে ছোঁয় ছোঁয় করিয়া ছোঁয় না সুতরাং উল্টে-পাল্টে লইলে তাহার দুই রকম অর্থ হইতে পারে। কেহ কেহ বলে কর্তা সরেশ মানুষ ছিলেন –এমন সকল ছেলে রেখে-ঢেকে যাওয়া বড়ো পূণ্য না হইলে হয় না –তিনি যেমন লোক তেমনি তাঁহার আশ্চর্য মৃত্যুও হইয়াছে বাবু। এতদিন তুমি পর্বতের আড়ালে ছিলে এখন বুঝে-সুঝে চলতে হবে –সংসারটি ঘাড়ে পড়িল –ক্রিয়া-কলাপ আছে –বাপ পিতামহের নাম বজায় রাখিতে হইবে, এ সওয়ায় দায়-দফা আছে। আপনার বিষয় বুঝে শ্রাদ্ধ করিবে, দশ জনার কথা শুনিয়া নেচে উঠবার আবশ্যক নাই। নিজে রামচন্দ্র বালির পিণ্ড দিয়াছিলেন, এ বিষয় আক্ষেপ করা বৃথা, কিন্তু নিতান্ত কিছু না করা সেও তো বড়ো ভালো নয়। বাবু জানো তো কর্তার ঢাক্টাপানা নামটা –তাঁহার নামে আজো বাঘে গোরুতে জল খায়। তাহাতে কি সুদ্ধ তিলকাঞ্চনি রকমে চল্‌বে ?-গেরেপ্তার হয়েও লোকের মুখ থেকে তর্‌তে হবে। মতিলাল এ সকল কথায় মারপেঁচ কিছুই বুঝিতে পারে না। আত্মীয়রা আত্মীয়তাপূর্বক দরদ প্রকাশ করে কিন্তু যাহাতে একটা ধুমধাম বেধে যায় ও তাহারা কর্তৃত্ব ফলিয়ে বেড়াতে পারে তাহাই তাহাদিগের মানস অথচ স্পষ্টরূপে জিজ্ঞাসা করিলে এঁ ওঁ করিয়া সেরে দেয়। কেহ বলে ছয়টি রুপার ষোড়শ না করিলে ভালো হয় না –কেহ বলে একটা দান সাগর না করিলে মান থাকা ভার –কেহ বলে একটা দম্পতি বরণ না করিলে সামান্য শ্রাদ্ধ হবে –কেহ বলে কতকগুলিন অধ্যাপক নিমন্ত্রণ ও কাঙালী বিদায় না করিলে মহা অপযশ হইবে। এইরূপে ভারি গোলযোগ হইতে লাগিল –কে বা বিধি চায় ? কে বা তর্ক করিতে বলে ? –কে বা সিদ্ধান্ত শুনে ?– সকলেই গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়ল –সকলেই স্ব স্ব প্রধান, সকলেরই আপনার কথা পাঁচ কাহন।

তিনদিন পরে বেণীবাবু, বেচারামবাবু, বাঞ্ছারামবাবু ও বক্রেশ্বরবাবু আসিয়া উপস্থিত হইলেন। মতিলালের নিকট ঠকচাচা মণিহারা ফণীর ন্যায় বসিয়া আছেন –হাতে মালা –ঠোঁট দু’টি কাঁপাইয়া তসবি পড়িতেছেন, অন্যান্য অনেক কথা হইতেছে কিন্তু সে সব কথায় তাঁহার কিছুতেই মন নাই –দুই চক্ষু দেওয়ালের উপর লক্ষ্য করিয়া ভেল্‌ ভেল্‌ করিয়া ঘুরাইতেছেন –তাক্‌-বাগ কিছুই স্থির করিতে পারেন নাই –বেণীবাবু প্রভৃতিকে দেখিয়া ধড়মড়িয়া উঠিয়া সেলাম করিতে লাগিলেন। ঠকচাচার এত নম্রতা কখনই দেখা যায় নাই। ঢোঁড়া হইয়া পড়িলেই জাঁক যায়। বেণীবাবু ঠকচাচার হাত ধরিয়া বলিলেন –আরে। করো কি ? তুমি প্রাচীন মুরুব্বী লোকটা –আমাদিগকে দেখে এত কেন ? বাঞ্ছারামবাবু বলিলেন –অন্য কথা যাউক –এদিকে দিন অতি সংক্ষেপ –উদ্‌যোগ কিছুই হয় নাই –কর্তব্য কি বলুন ?

বেচারাম। বাবুরামের বিষয়-আশায় অনেক জোড়া –কতক বিষয় বিক্রিসিক্রি করিয়া দেনা পরিশোধ করা কর্তব্য –দেনা করিয়া ধুমধাম শ্রাদ্ধ করা উচিত নহে।

বাঞ্ছারাম। সে কি কথা ! আগে লোকের মুখ থেকে তর্‌তে হবে, পশ্চাৎ বিষয়-আশয় রক্ষা হইবে। মান-সম্ভ্রম কি বানের জলে ভেসে যাবে ?

বেচারাম। এ পরামর্শ কুপরামর্শ –এমন পরামর্শ কখনই দিব না –কেমন বেণী ভায়া ! কি হলো ?

বেণী। যে স্থলে দেনা অনেক, বিষয়-আশায় বিক্রি করিয়া দিলেও পরিশোধ হয় কি-না সন্দেহ, সে স্থলে পুনরায় দেনা করা একপ্রকার অপহরণ করা, কারণ সে দেনা পরিশোধ কিরূপে হইবে ?

বাঞ্ছারাম। ও সকল ইংরেজী মত –বড়োমানুষদিগের ঢাল সুমরেই চলে –তাহারা এক দিচ্ছে এক নিচ্ছে, একটা সৎকর্মে বাগড়া দিয়ে ভাঙা মঙ্গলচণ্ডী হওয়া ভদ্রলোকের কর্তব্য নয়। আমার নিজের দান করিবার সঙ্গতি নাই, অন্য এক ব্যক্তি দশজন ব্রাহ্মণ পণ্ডিতকে দান করিতে উদ্যত তাহাতে আমার খোঁচা দিবার আবশ্যক কি ? আর সকলেরই নিকট অনুগত ব্রাহ্মণ পণ্ডিত আছে, তাহারাও পত্রটত্র পাইতে ইচ্ছা করে –তাহাদেরও তো চলা চাই।

বক্রেশ্বর। আপনি ভালো বলেছেন –কথাই আছে যাউক প্রাণ থাকুক মান।

বেচারাম। বাবুরামের পরিবার বেড়া আগুনে পড়িয়াছে –দেখিতেছি ‘রায় নিকেশ হইবে। যাহা করিলে আখেরে ভালো হয় তাহাই আমাদিগের বলা কর্তব্য –দেনা করিয়া মান কেনার মুখে ছাই –আমি এমন অনুগত বামুন রাখি না যে তাহাদিগের পেট পুরাইবার জন্য অন্যের গলায় ছুরি দিবে। এ সব কি কারখানা। দূঁর দূঁর । চলো বেণী ভায়া। আমরা যাই –এই বলিয়া তিনি বেণীবাবুর হাত ধরিয়া উঠিলেন।

বেণীবাবু ও বেচারামবাবু গমন করিলে বাঞ্ছারাম বলিলেন –আপদের শান্তি। এ দু-টা কিছুই বোঝে-সোঝে না, কেবল গোল করে। সমজদার মানুষের সঙ্গে কথা কইলে প্রাণ ঠাণ্ডা হয়। ঠকচাচা নিকটে আইস –তোমার বিবেচনায় কি হয় ?

ঠকচাচা। মুই বি তোমার সাতে বাতচিত করতে বহুত খোস –তেনারা খাপ্‌কান –তেনাদের নজদিকে এস্তে মোর ডর লাগে। যে সব বাত তুমি জাহের করলে সে সব সাচ্চা বাত। আদমির হুরমত ও কুদরৎ গেলে জিন্দিগি ফেল্‌তো। মামলা-মকদ্দমা নেগাবানি তুমি ও মুই করে বেলকুল বখেড়া কেটিয়ে দিব –তাতে ডর কি ?

মতিলালের ধুমধেমে স্বভাব –আয়ব্যয় বোধাবোধ নাই –বিষয় কর্ম কাহাকে বলে জানে না –বাঞ্ছারাম ও ঠকচাচার উপর বড়ো বিশ্বাস, কারণ তাহারা আদালত ঘাঁটা লোক আর তাহারা যেরূপ মন যুগিয়ে ও সলিয়ে কলিয়ে লওয়াইতে লাগিল তাহাতে মতিলাল একেবারে বলিল –এ কর্মে আপনারা অধ্যক্ষ হইয়া যাহাতে নির্বাহ হয় তাহা করুন, আমাকে সহি সনদ করিতে যাহা বলিবেন আমি তৎক্ষণাৎ করিব। বাঞ্ছারামবাবু বলিলেন –কর্তার উইল বাহির করিয়া আমাকে দাও –উইল কেবল তুমি অছি আছ –তোমার ভাইটে পাগল এই জন্য তাহার নাম বাদ দেওয়া গিয়াছিল, সেই উইল লইয়া আদালতে পেশ করিলে তুমি অছি মরকর হইবে, তাহার পরে তোমার সহি সনদে বিষয় বন্ধক বা বিক্রি হইতে পারিবে। মতিলাল বাক্স খুলিয়া উইল বাহির করিয়া দিল। পরে বাঞ্ছারাম আদালতের কর্ম শেষ করিয়া একজন মহাজন খাড়া করিয়া লেখাপড়া ও টাকা সমেত বৈদ্যবাটীর বাটীতে উপস্থিত হইলেন। মতিলাল টাকার মুখ দেখিয়া তৎক্ষণাৎ কাগজাদ সহি করিয়া দিল। টাকার থলিতে হাত দিয়া বাক্সের ভিতর রাখিতে যায় এমন সময় বাঞ্ছারাম ও ঠকচাচা বলিল –বাবুজি ! টাকা তোমার হাতে থাকিলে বেলকুল খরচ হইয়া যাইবে, আমাদিগের হাতে তহবিল থাকিলে বোধ হয় টাকা বাঁচিতে পারিবে, আর তোমার স্বভাব বড়ো ভালো, চক্ষুলজ্জা অধিক, কেহ চাহিলে মুখ মুড়িতে পারিবে না, আমরা লোক বুঝে টেলে দিতে পারব। মতিলাল মনে করিল এ কথা বড়ো ভালো শ্রাদ্ধের পর আমিই বা খরচের টাকা কিরূপে পাই এখন তো বাবা নাই যে চাহিলেই পাব এ কারণে উক্ত প্রস্তাবে সম্মত হইল।

বাবুরামবাবুর শ্রাদ্ধের ধুম লেগে গেল। ষোড়শ গড়িবার শব্দ –ভেয়ানের গন্ধ –বোল্‌তা মাছির ভন্‌ভনানি, ভিজে কাঠের ধুঁয়া, জিনিস পত্রের আমদানি লোকের কোলাহলে বাড়ি ছেয়ে ফেলিল। যাবতীয় পূজারী, দোকানী ও বাজার সরকারে বামুন এক এক তসর জোড় পরিয়া ও গঙ্গামৃত্তিকার ফোঁটা করিয়া পত্রের জন্য গমনাগমন করিতে লাগল, আর তর্কবাগীশ, বিদ্যারত্ন, ন্যায়ালঙ্কার, বাচস্পতি ও বিদ্যাসাগরের তো শেষ নাই, দিন-রাত্রি ব্রাহ্মণ পণ্ডিত ও অধ্যাপকের আগমন যেন গো-মড়কে মুচির পার্বণ।

শ্রাদ্ধের দিবস উপস্থিত –সভায় নানা দিগ্‌দেশীয় ব্রাহ্মণ পণ্ডিতের সমাগম হইয়াছে ও যাবতীয় আত্মকুটুম্ব, স্বজন, সুহৃদ্‌ বসিয়াছেন –সম্মুখে রুপার দানসাগর –ঘোড়া, পালকি, পিতলের বাসন, বনাত, তৈজসপত্র ও নগদ টাকা –পার্শ্বে কীর্তন হইতেছে –মধ্যে বেচারামবাবু ভাবুক হইয়া ভাব গ্রহণ করিতেছেন। বাটীর বাহিরে অগ্রদানী, রেও ভাট, নাগা, তষ্টিরাম ও কাঙালীতে পরিপূর্ণ –ঠকচাচা কেনিয়ে কেনিয়ে বেড়াচ্ছেন –সভায় বসিতে তাঁহার ভরসা হয় না। অধ্যাপকেরা নস্য লইতেছেন ও শাস্ত্রীয় কথা লইয়া পরস্পরে আলাপ করিতেছেন –তাহাদিগের গুণ এই যে একত্র হইলে ঠাণ্ডা রুপে কথোপকথন করা ভার –একটা না একটা উৎপাত অনায়াসে উপস্থিত হয়। একজন অধ্যাপক ন্যায়শাস্ত্রের একটা ফেঁড়কা উপস্থিত করিলেন – “ঘটত্বাবচ্ছিন্ন প্রতিযোগিতাভাব বহ্ণিভাবে ধূমা, ধূমাভাবে বহ্ণি”। উৎকলনিবাসী একজন পণ্ডিত কহিলেন –যৌটি ঘটিয়া বাচ্ছিন্তি ভাব প্রতিযোগা সৌটি পর্বত বহ্ণি নামেধিয়া। কাশীজোড়া-নিবাসী পণ্ডিত বলিলেন –কেমন কথা গো ? বাক্যটি প্রিণিধান করো নাই –যে ও ঘটকে পট করে পর্বতকে বহ্ণিমান ধূম –শিরোমণি যে মেকটি মেরে দিচ্ছেন। বঙ্গদেশীয় পণ্ডিত বলিলেন –গটিয়াবচ্ছিন্ন বাব প্রতিযোগা দুমাধামে অগ্নি অগ্নিবাবে দুমা –অগ্নি না হলে দুমা কেম্‌মে লাগে। এইরূপ তর্ক বির্তক হইতেছে –মুখামুখি হইতে হইতে হাতাহাতি হইবার উপক্রম –ঠকচাচা ভাবেন পাছে প্রমাদ ঘটে এই বেলা মিটিয়া দেওয়া ভালো –আস্তে আস্তে নিকটে আসিয়া বলিলেন –মুই বলি একটা বদনা ও চেরাগের বাত লিয়ে তোমরা কেন কেজিয়ে করো –মুই তোমাদের দু-টা দু-টা বদনা দিব। অধ্যাপকের মধ্যে একজন চটপটে ব্রাহ্মণ উঠিয়া বলিলেন –তুই বেটা কে রে ? হিন্দুর শ্রাদ্ধে যবন কেন ? এ কি ? পেতনীর শ্রাদ্ধে আলেয়া অধ্যক্ষ না কি ? এই বলিতে বলিতে গালাগালি হাতাহাতি হইতে হইতে ঠেলাঠেলি, বেতাবেতি আরম্ভ হইল। বাঞ্ছারামবাবু তেড়ে আসিয়া বলিলেন –গোলমাল করিয়া শ্রাদ্ধ ভণ্ডুল করিলে পরে বুঝব –একেবারে বড়ো আদালতে এক শমন আনব –একি ছেলের হাতের পিটে ? বক্রেশ্বর বলেন, তা বইকি আর যিনি শ্রাদ্ধ করিবেন তিনি তো সামান্য ছেলে নন, তিনি পরেশ পাথর। বেচারাম বলিলেন –এ তো জানাই আছে যেখানে ঠক ও বাঞ্ছারাম অধ্যক্ষ সেখানে কর্ম সুপ্রতুল হইবে না –দূঁর দূঁর ! গোল কোনক্রমে থামে না –রেও ভাট প্রভৃতি ঝেঁকে আসিতেছে, এক একবার বেত খাইতেছে ও চিৎকার করিয়া বলিতেছে –”ভালো শ্রাদ্ধ কর্‌লি রে।” অবশেষে সভার ভদ্রলোক সকলে এই ব্যাপার দেখিয়া কহিতে লাগিল “কার শ্রাদ্ধ কে করে খোলা কেটে বামুন মরে” এই বেলা সরে পড়া শ্রেয় –ছুবড়ি ফেলে অমিত্তি কেন হারানো যাবে ?

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *