৬. দ্বিপ্রহরের খররৌদ্রে

দ্বিপ্রহরের খররৌদ্রে চারিদিক মুহ্যমান। পাহাড়ের অঙ্গ হইতে উত্তাপ প্রতিফলিত হইতেছে। ছায়া বিবরসন্ধী সর্পের মত পাথরের খাঁজে খাঁজে লুকাইবার চেষ্টা করিতেছে।

এই সময় নির্জন পার্বত্যপথ দিয়া এক পথিক চলিয়াছিল। পথিক অন্ধ, ষষ্টি ধরিয়া ধীরপদে চলিতেছিল। তাহার দেহ দীর্ঘ ও ঋজু, কিন্তু বয়স ও দারিদ্রের প্রকোপে কঙ্কালমাত্রে পর্যবসিত হইয়াছে। তাহাকে দেখিয়া ভিক্ষুক বলিয়া মনে হয়।

অন্ধ ভিক্ষুক থাকিয়া থাকিয়া উচ্চকণ্ঠে হাঁকিয়া উঠিতেছিল,

প্রতাপ বারবটিয়া—প্রতাপ বারবটিয়া—তুমি কোথায়?

জনহীন আবেষ্টনীর মধ্য হইতে জিজ্ঞাসার কোনও উত্তর আসিতেছিল না; কিন্তু ভিক্ষুক সমভাবে হাঁকিয়া চলিয়াছে—

প্রতাপ বারবটিয়া! তুমি কোথায়?

বিসর্পিল পথে ভিক্ষুক এইভাবে অনেকদূর চলিল।

পথের পাশে একস্থানে কয়েকটি বড় বড় পাথরের চাঁই একত্র হইয়া আপন ক্রোড়দেশে একটু ছায়ার সৃষ্টি করিয়াছিল। এই ছায়ার কোটরে বসিয়া পুরন্দর আপন মনে আঙুলে আঙুল জড়াইয়া খেলা করিতেছিল। তাহাকে দেখিয়া মনে হয় না তাহার কোনও কাজ আছে; গ্রীষ্ম-মধ্যাহ্নের অফুরন্ত অবকাশ এমনি হেলাফেলায় কাটাইয়া দেওয়াই যেন তাহার একমাত্র উদ্দেশ্য। এই অলস নৈষ্কর্মের মধ্যেও তাহার চক্ষুকর্ণ যে সজাগ হইয়া আছে তাহা সহজে লক্ষ্য করা যায় না।

দূর হইতে কঠিন পথের উপর লাঠির ঠক্ শব্দ কানে যাইতেই পুরন্দর সোজা হইয়া বসিল; পরক্ষণেই সে ভিক্ষুকের উচ্চ চিৎকার শুনিতে পাইল

প্রতাপ বারবটিয়া, তুমি কোথায়?

পুরন্দর একবার ঘাড় ফিরাইয়া দেখিল কিন্তু উঠিল না, যেমন বসিয়াছিল তেমনি বসিয়া রহিল। ক্ৰমে ভিক্ষুক লাঠির শব্দ করিতে করিতে তাহার সম্মুখ দিয়া যাইতে লাগিল। পুরন্দর তথাপি নড়িল না, কেবল তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে ভিক্ষুককে পর্যবেক্ষণ করিতে লাগিল।

ভিক্ষুক তাহাকে অতিক্রম করিয়া যাইবার পর পুরন্দর নিঃশব্দে উঠিল, পা টিপিয়া টিপিয়া গিয়া পিছন হইতে তাহার স্কন্ধ স্পর্শ করিল।

ভিক্ষুক দাঁড়াইয়া পড়িল। কিছুক্ষণ স্থির থাকিয়া প্রশ্ন করিল,-

কে তুমি? প্রতাপ বারবটিয়া?

পুরন্দর সম্মুখে আসিয়া ভিক্ষুকের মুখ এবং মণিহীন অক্ষিকোটর ভাল করিয়া পরীক্ষা করিল। বলিল,-

তুমি অন্ধ?

ভিক্ষুক বলিল,-হ্যাঁ, তুমি কে?

পুরন্দর বলিল,-আমি যেই হই, প্রতাপ বাবটিয়ার সঙ্গে তোমার কি দরকার?

ভিক্ষুক বলিল,-দরকার আছে বড় জরুরী দরকার।

পুরন্দর প্রশ্ন করিল,—কী দরকার আমায় বলবে না?

ভিক্ষুক বলিল,-তুমি যদি প্রতাপ বারবটিয়া হও তোমাকে বলতে পারি।

পুরন্দর বলিল,-আমি প্রতাপ নই কিন্তু তোমাকে তার কাছে নিয়ে যেতে পারি। যাবে?

ভিক্ষুক বলিল,-যাব। তার কাছে যাব বলেই তো বেরিয়েছি। কিন্তু আমি অন্ধ

পুরন্দর বলিল,-বেশ, আমার সঙ্গে এস।

পুরন্দর ভিক্ষুকের ষষ্টির অন্য প্রান্তে তুলিয়া নিজমুষ্টিতে ধরিয়া আগে আগে চলিল, ভিক্ষুক তাহার পশ্চাৎবর্তী হইল।

.

গুহার সম্মুখে একখণ্ড প্রস্তরের উপর প্রতাপ ও তেজ সিং পাশাপাশি বসিয়া আছেন। তাঁহাদের পিছনে তিলু, ভীম, নানাভাই ও প্রভু দাঁড়াইয়া আছে। সম্মুখে কিছু দূরে অন্ধ ভিক্ষুক ঋজু দেহে দাঁড়াইয়া বলিতেছে,–

প্রতাপ বারবটিয়া, তোমার দেশের লোক যদি না খেয়ে মরে যায় তাহলে তুমি কেন রাজদ্রোহী হয়েছ? অন্ন যদি চাষীর পেটে না গিয়ে মহাজনের গুদামে জমা হয়, তবে কিসের জন্য তুমি দস্যুবৃত্তি গ্রহণ করেছ?

প্রতাপ প্রশ্ন করিল,—তুমি কে? কোথা থেকে আসছ?

ভিক্ষুক বলিল,-আমি মিঠাপুর গ্রামের লোক। মিঠাপুর এখান থেকে দশ ক্রোশ উত্তরে। গ্রামের যিনি জমিদার তিনিই মহাজন। এবার ফসল ভাল হয়নি তাই জমিদার খাজনার বাবদ প্রজার সমস্ত ফসল বাজেয়াপ্ত করে নিজের আড়তে তুলেছেন, আর চতুগুণ মূল্যে তাই প্রজাদের বিক্রি করছেন। প্রজাদের যতদিন ক্ষমতা ছিল, গাই বলদ কাস্তে লাঙল বিক্রি করে নিজের তৈরি শস্য মহাজনের কাছ থেকে কিনে খেয়েছে। কিন্তু এখন আর তাদের কিছু নেই—তারা সর্বস্বান্ত হয়েছে। মহাজনও তাদের শস্য দেওয়া বন্ধ করে দিয়ে শহরে মাল চালান দিচ্ছেন; অসহায় দুর্বল চাষীরা অনাহারে মরছে। প্রতাপ বারবটিয়া, তাই আমি তোমাকে খুঁজতে বেরিয়েছি—আমি জানতে চাই এর প্রতিকার কি তুমি করবে না?

শুনিতে শুনিতে প্রতাপের মুখ কঠিন হইয়া উঠিতেছিল। সে তেজ সিংয়ের দিকে ফিরিল, কণ্ঠস্বর যথাসম্ভব নম্র করিয়া বলিল,-

সর্দারজী, আপনি রাজকর্মচারী, এর প্রতিকার আপনিই করুন। এই লোকটির চেহারা দেখেই বুঝতে পেরেছেন ওদের কি অবস্থা হয়েছে। দেশে রাজা আছে, আইন আছে, আদালত আছে—এই ক্ষুধার্তদের প্রাণ বাঁচাবার ন্যায়সঙ্গত রাস্তা আপনি বলে দিন।

তেজ সিং মাথা হেঁট করিলেন,

আইনের কোনও হাত নেই।

প্রতাপ বলিল,-তাহলে এতগুলো মানুষের প্রাণরক্ষার জন্য আপনারা কিছুই করতে পারেন না?

তেজ সিং হেঁট মুখে রহিলেন, উত্তর দিলেন না। প্রতাপ উঠিয়া দাঁড়াইল, বলিল,–

বেশ, তাহলে আমরাই ওদের প্রাণরক্ষা করব। রাজশক্তি যখন পঙ্গু তখন রাজদ্রোহীরাই রাজার কর্তব্য পালন করবে। ভীম, তৈরি হও তোমরা।

ভীম, নানা, প্রভু ও পুরন্দর যাত্রার আয়োজন করিতে চলিয়া গেল। তেজ সিং মুখ তুলিলেন, বলিলেন,-

কি করতে চান আপনারা?

প্রতাপ বলিল—ক্ষুধার্তের অন্ন ক্ষুধার্তকে ফিরিয়ে দেব। কাজটা আইনসঙ্গত হবে না। কিন্তু আইনের চেয়ে মানুষের জীবনের মূল্য আমাদের কাছে বেশী। আপনি আসবেন আমাদের সঙ্গে? ভয় নেই, আপনাকে ডাকাতি করতে হবে না; শুধু দর্শক হিসাবে যাবেন। আমরা কিভাবে ডাকাতি করি স্বচক্ষে দেখলে হয়তো আমাদের খুব বেশী অধম মনে করতে পারবেন না।

তেজ সিং উঠিয়া দাঁড়াইলেন,

বেশ, যাব আপনাদের সঙ্গে।

প্রতাপ তিলুর দিকে ফিরিয়া ইঙ্গিত করিল।

তিলু —

এই যে প্রতাপভাই—

তিলু দ্রুতপদে গুহার মধ্যে প্রবেশ করিল। প্রতাপ তখন দূরে দণ্ডায়মান ভিক্ষুকের কাছে গিয়া তাহার স্কন্ধে হাত রাখিল। বলিল,-

ভাই, আমরা যাচ্ছি। যতক্ষণ না ফিরি তুমি এইখানেই থাকো। তুমি ক্ষুধার্ত, তিলুবেন তোমাকে খেতে দেবেন।

অন্ধের অক্ষিকোটর হইতে জল গড়াইয়া পড়িল, সে কম্পিত বাষ্পরুদ্ধ কণ্ঠে বলিল,–

জয় হোক—তোমাদের জয় হোক।

.

মিঠাপুর গ্রামের জমিদার-মহাজনের কোঠাবাড়ির সম্মুখভাগ। খর্বাকৃতি পুষ্টোদর শেঠজী বাড়ির বারান্দায় দাঁড়াইয়া আছেন, তিনটি গরুর গাড়িতে শস্যের বস্তা লাদাই হইতেছে। কুলি মজুর ছাড়াও দশবারো জন লাঠিয়াল সশস্ত্রভাবে দাঁড়াইয়া এই লাদাইকার্য তদারক করিতেছে।

গ্রাম্যপথের অপর পাশে মাঠের উপর একদল গ্রামবাসী দাঁড়াইয়া আছে। তাহাদের শীর্ণ শরীরে বস্ত্রের বাহুল্য নাই, চোখে হতাশ বিদ্রোহের ধিকিধিকি আগুন। জীবনধারণের একমাত্র উপকরণ চোখের সম্মুখে স্থানান্তরিত হইতেছে অথচ তাহাদের বাধা দিবার ক্ষমতা নাই।

গরুর গাড়িতে বস্তা চাপানো সম্পূর্ণ হইলে শেঠ হাত নাড়িয়া ইশারা করিলেন; তখন বৃহৎ শৃঙ্গধর বলদের দ্বারা বাহিত শকটগুলি চলিতে আরম্ভ করিল। লাঠিয়ালেরা গাড়িগুলির দুই পাশে সারি দিয়া চলিল।

এই সময় গ্রামবাসীদের মধ্যে একজন আর স্থির থাকিতে পারিল না, ছুটিয়া আসিয়া প্রথম গাড়ির সম্মুখে দাঁড়াইল। তাহার কোটরপ্রবিষ্ট চোখে উন্মাদের দৃষ্টি; হস্ত আস্ফালন করিয়া সে চিৎকার করিয়া উঠিল,

না—যেতে দেব না—আমাদের ফসল নিয়ে যেতে দেব না। আমরা খাব কী? আমাদের ছেলে বৌ খাবে কি?

বারান্দার উপর শেঠ শুনিতে পাইয়া ক্রুদ্ধস্বরে হুকুম দিলেন,

মার মার হতভাগাকে মেরে তাড়িয়ে দে

একজন লাঠিয়াল আগাইয়া আসিয়া লাঠির গুঁতা দিয়া হতভাগ্যকে পথের পাশে ফেলিয়া দিল।

সহসা বন্দুকের গুড়ুম শব্দ হইল। লাঠিয়ালটা পায়ে আহত হইয়া বাপরে বলিয়া মাটিতে বসিয়া পড়িল।

ছয়জন অশ্বারোহী আসিয়া গরুর গাড়ির পথরোধ করিয়া দাঁড়াইল। ছয়জনের মধ্যে চারজনের হাতে বন্দুক, প্রতাপের কোমরে পিস্তল, তেজ সিং নিরস্ত্র। প্রতাপ সঙ্গীদের বলিল,-

তোমরা এদের আটক রাখো—আমরা মহাজনের সঙ্গে কথা কয়ে আসি। আসুন সর্দারজী।

প্রতাপ ও তেজ সিং ঘোড়া হইতে নামিয়া বাড়ির বারান্দার সম্মুখে উপস্থিত হইলেন। শেঠ বন্দুকের আওয়াজ শুনিয়া ভয় পাইয়াছিলেন, মাত্র দুইজন নিরস্ত্র লোক দেখিয়া তাহার সাহস কতকটা ফিরিয়া আসিল। তাঁহার অনেক লোকলস্কর লাঠিয়াল আছে, দুইজন লোককে তাঁহার ভয় কি? তিনি রুক্ষদৃষ্টিতে তাহাদের পানে চাহিলেন। প্রতাপ কাছে আসিয়া নম্রকণ্ঠে বলিল,-

আপনিই কি গ্রামের শেঠ?

শেঠ বলিলেন,—হ্যাঁ। তোমরা কে?

প্রতাপ উত্তর না দিয়া পুনশ্চ প্রশ্ন করিল,

এই যে ফসল চালান দিচ্ছেন এ কি আপনার ফসল?

সে খবরে তোমার দরকার কি? তুমি কে?

প্রতাপ সবিনয়ে বলিল,-আমি প্রতাপ বারবটিয়া।

ঝাঁটার প্রহারে মাকড়সা যেমন কুঁকড়াইয়া যায়, নাম শুনিয়া শেঠও তেমনি কুঁচকাইয়া গেলেন, প্রতাপের পিস্তলটার প্রতি হঠাৎ তাঁহার নজর পড়িল।

প্রতাপ নির্লিপ্ত কণ্ঠে বলিল,-প্রজারা খেতে পাচ্ছে না, এ সময় ফসল চালান দেওয়া কি আপনার উচিত হচ্ছে?

শেঠ ঢোক গিলিতে গিলিতে বলিলেন,—আমি—আমার—এঁ—প্রজারা দাম দিতে পারে না—তাই

প্রতাপ একটু হাসিল; তাহার একটা হাত অবহেলাভরে পিস্তলের মুঠের উপর পড়িল। সে বলিল,–

হুঁ। আপনি প্রজাদের ফসল বাজেয়াপ্ত করে সেই ফসল দশগুণ দরে তাদেরই বিক্রি করছেন। এখন তারা নিঃস্ব। তাই তাদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়ে আপনি বাইরে মাল চালান দিচ্ছেন

ভয়ে শেঠের নাভি পর্যন্ত শুকাইয়া উঠিয়াছিল। তিনি সামান্য গ্রাম্য মহাজন, চাষীদের উপর যতই দাপট হোক, প্রতাপ বারবটিয়ার সহিত বাক্‌-যুদ্ধ করিবার সাহস তাঁহার নাই। তিনি একেবারে কেঁচো হইয়া গিয়া কাঁদো কাঁদো সুরে বলিলেন,–

আমার দোষ হয়েছে কসুর হয়েছে, এবারটি আমায় ক্ষমা করুন। আপনি আমায় যা বলবেন তাই করব।

প্রতাপ তাহার মুখের পানে চাহিয়া ক্ষণেক বিবেচনা করিল।

আপনি প্রজাদের কাছ থেকে যে লাভ করেছেন তাতে আপনার বকেয়া খাজনা শোধ হয়ে গেছে? সত্যি কথা বলুন।

শেঠ বলিল,-অ্যা–হ্যাঁ শোধ হয়ে গেছে।

প্রতাপ বলিল,-তাহলে এখন আপনার ঘরে যা ফসল আছে তা উপরি। কত ফসল আছে?

তা—তা—

সত্যি কথা বলুন। নইলে ফসল তো যাবেই, আপনার ঘরবাড়িও আস্ত থাকবে না।

পাঁচশো মণ আছে—পাঁচশো মণ।

বেশ, এই পাঁচশো মণ ফসল ন্যায্য অধিকারীদের ফিরিয়ে দিতে হবে।

শেঠ ক্রন্দনোন্মুখ হইয়া বলিলেন,—সবই যদি ফিরিয়ে দিই তবে সারা বছর আমি খাব কি?

প্রতাপ বলিল,-পাঁচজনের মত আপনিও কিনে খাবেন। এখন আসুন আমার সঙ্গে।

ওদিকে গরুর গাড়িগুলি এতক্ষণ দাঁড়াইয়াছিল, লাঠিয়ালেরা সম্মুখে বন্দুকধারী ঘোড়সওয়ার দেখিয়া কিংকর্তব্যবিমূঢ় হইয়া পড়িয়াছিল, আহত লাঠিয়ালটা আহত গ্রামবাসীর পাশে বসিয়া মৃদু মৃদু কুন্থন করিতেছিল। এখন শেঠ মহাশয় প্রতাপ ও তেজ সিংয়ের মধ্যবর্তী হইয়া পথের উপর আসিয়া দাঁড়াইলেন।

প্রতাপ বলিল,-আপনার লাঠিয়ালদের সরে যেতে বলুন।

শেঠ হাত নাড়িয়া বলিলেন,—ওরে তোরা সব সরে যা।

লাঠিয়ালেরা বাঙ্‌নিষ্পত্তি না করিয়া সরিয়া গেল। আহত লাঠিয়ালটা হামাগুড়ি দিয়া তাহাদের অনুগামী হইল।

প্রতাপ বলিল,-এবার বলুন—প্রজাদের দিকে ফিরে বলুন—

প্রতাপ নিম্নস্বরে বলিতে লাগিল, শেঠ মন্ত্র পড়ার মত আবৃত্তি করিতে লাগিলেন,

ভাই সব—তোমাদের পাঁচশো মণ ফসল আমার কাছে গচ্ছিত আছে—তোমাদের যখন ইচ্ছে তোমরা সে ফসল নিয়ে যেয়ো (ঢোক গিলিয়া)—দাম দিতে হবে না। উপস্থিত এই তিন গরুরগাড়ি মাল তোমরা নিয়ে যাও

প্রজারা ক্ষণকালের জন্য নিশ্চল হতবুদ্ধি হইয়া রহিল, তারপর চিৎকার শব্দে গগন বিদীর্ণ করিয়া গরুর গাড়ি তিনটির উপর ঝাঁপাইয়া পড়িল।

প্রতাপ তেজ সিংয়ের পানে চাহিয়া পরিতৃপ্তির হাসি হাসিল। তেজ সিং মাথা হেঁট করিলেন।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *