০৪. প্রজা-সমিতি প্রতিষ্ঠা

প্রজা-সমিতি প্রতিষ্ঠা
চৌথা অধ্যায়

১. সাম্প্রদায়িক তিক্ততা বৃদ্ধি

১৯২৫ সালের ১৬ই জুন দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ নিতান্ত আককিভাবে পরলোক গমন করেন। বাংলার কপালে দুর্ভাগ্যের দিন শুরু হয়। ঐ সালের শেষ দিকে মুসলিম লীগের আলীগড় বৈঠকের সভাপতিরূপে সার আবদুর রহিম হিন্দুদের সাম্প্রদায়িক মনোভাবের নিন্দা করিয়া ভাষণ দেন। তাতে হিন্দু নেতাদের অনেকে এবং হিন্দু সংবাদ-পত্ৰসমূহ সাধারণভাবে সার আবদুর রহিমের উপর খুব চটিয়া যান। হিন্দুদের এই আবদুর রহিম-বিদ্বেষ এতদূর তীব্র হইয়া উঠে যে ১৯২৬ সালের গোড়ার দিকে লাট সাহেব যখন সার আবদুর রহিমকে মন্ত্রী নিয়োগ করেন, তখন কোন হিন্দু নেতাই সার আবদুর রহিমের সহিত মন্ত্রিত্ব করিতে রাজী হন না। ফলে সার আবদুর রহিম পদত্যাগ করিতে বাধ্য হন। সার আবদুর রহিমের স্থলে সার আবদুল করিম গয়নবীর সাথে মন্ত্রিত্ব করিতে হিন্দু-নেতারা রাজী হন। তাতে সার আবদুল করিম গয়নবী ও ব্যারিস্টার ব্যোমকেশ চক্রবর্তী মন্ত্রী নিযুক্ত হন। এই ঘটনায় সাম্প্রদায়িক তিক্ততা বাড়িয়া যায়। মুসলমানরা এই মন্ত্রিদ্বয়কে ‘গজচক্র’ মন্ত্রিত্ব বলিয়া অভিহিত করে। আমি এই সময় জনাব মৌলবী মুজিবুর রহমান সাহেবের সম্পাদিত ‘দি মুসলমানের’ সহকারী সম্পাদকতার কাজ করি। আমাদের কাগ-সহ সব কয়টি মুসলমান সাপ্তাহিক (মুসলমান-পরিচালিত কোনও দৈনিক তখন ছিল না) এক-যোগে ‘গজচক্র’-মন্ত্রিত্বের বিরুদ্ধে কলম চালাই। মুসলমান ছাত্ররা আন্দোলনে অংশ গ্রহণ করে। অল্প দিনেই গজচক্র মন্ত্রিদ্বয় পদত্যাগ করিতে বাধ্য হন। সার আবদুল করিম গযনবী মন্ত্রিত্ব হারাইয়া মসজিদের সামনে বাজনার বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেন। এই সময় রাজরাজেশ্বরী মিছিলের বাজনা লইয়া কলিকাতায় তৎকালের বৃহত্তম সাম্প্রদায়িক দাংগা হয়। উভয় পক্ষে এগার শত লোক হতাহত হয়। মসজিদের সামনে বাজনার দাবিতে বরিশালের জনপ্রিয় হিন্দু নেতা শ্রীযুক্ত সতীন সেন প্রসেশন করিতে যান। কুলকাঠি থানার পোনাবালিয়া গ্রামে পুলিশ-মুসলমানে সংঘর্ষ হয়। জিলা ম্যাজিস্ট্রেট ব্ল্যাণ্ডির নির্দেশে মুসলমানের উপর গুলি করা হয়। অনেক লোক হতাহত হয়। এতে হিন্দু-মুসলিম সম্পর্কের দ্রুত অবনতি ঘটে।

এই তিক্ত আবহাওয়ায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার জন্য চেষ্টা করিতেছিল একমাত্র জিন্না-নেতৃত্বের মুসলিম লীগই। এটা কংগ্রেসের অন্যতম প্রধান কাজ হওয়া সত্ত্বেও এ ব্যাপারে কার্যতঃ কংগ্রেস সম্পূর্ণ নিরুপায় হইয়া পড়িয়াছিল। মুসলিম সমাজে কংগ্রেসের প্রভাব কমিয়া গিয়াছিল অথচ শুধু হিন্দুদের পক্ষে কথা বলায়ও তাঁদের আপত্তি ছিল। ফলে তাঁদের হিন্দু-মুসলিম-ঐক্যর কথা কার্যতঃ অর্থহীন দার্শনিক আপ্তবাক্যে পর্যবসিত হইয়াছিল। সে অবস্থায় জিন্না-নেতৃত্বে মুসলিম লীগই হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের প্রশ্নে বাস্তববাদী ছিল। রাজনৈতিক দাবি-দাওয়ায় বৃটিশ সরকারের মোকাবেলায়ও মুসলিম লীগই ছিল কংগ্রেসের নিকটতম সহপথিক। ভারতবাসীর স্বায়ত্তশাসন-দাবির কার্যকারিতা পরখের জন্য ‘অল্ হোয়াইট’ সাইমন কমিশন পাঠাইবার কথাও বিলাতি পার্লামেন্টে এই সময় উঠিয়াছিল। সাম্প্রদায়িক তিক্ততার সুযোগে ইংরাজের খায়েরবাহ নাইট-নবাবরা জিন্না সাহেবকে মুসলিম লীগ নেতৃত্ব হইতে অপসারণ করার জন্য কোমর বাঁধিয়া লাগিয়া যান। পাঞ্জাবের সার মিয়া মোহাম্মদ শফী এই জিন্না-বিরোধী ষড়যন্ত্রের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। বাংলার সার আবদুর রহিম বাদে আর সব নাইট-নবাবরা তাতে যোগ দেন। এই পরিবেশে ১৯২৭ সালে কলিকাতা টাউন হলে নিখিল ভারত মুসলিম লীগের বার্ষিক অধিবেশন হয়। বরাবর কংগ্রেস ও লীগের বৈঠক একই সময়ে একই শহরে প্রায় একই প্যান্ডেলের নিচে হইত। ১৯১৬ সালের লাখনৌ প্যাকটের সময় হইতেই এই নিয়ম চলিয়া আসিতেছিল। তবু সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি ও নাইট-নবাবদের ষড়যন্ত্রের মোকাবেলায় সাবধানতা হিসাবেই ১৯২৭ সালের মুসলিম লীগের বৈঠক ঐ সালের কংগ্রেস বৈঠকের সাথে মাদ্রাজে না করিয়া কলিকাতায় করা হয়। জিন্না সাহেবের অন্তরংগ বন্ধু ডাঃ আনসারী মাদ্রাজ কংগ্রেসের সভাপতি। তবু মিঃ জিন্ন মুসলিম লীগকে কংগ্রেসের সংস্পর্শ হইতে দূরে রাখিলেন। জিন্না-বিরোধী নাইট-নবাবরা লাহোরে এক প্রতিদ্বন্দ্বী মুসলিম লীগ সম্মিলনীর আয়োজন করিলেন। সার মোহাম্মদ শফী তাতে সভাপতিত্ব করিলেন। বাংলার দু-চার জন নবাব-নাইট জনমত অগ্রাহ্য করিয়া একরূপ গোপনে লাহোর সম্মিলনীতে অংশ গ্রহণ করিলেন।

কলিকাতা টাউন হলে মুসলিম লীগ সম্মিলনী খুব ধুমধামের সাথে অনুষ্ঠিত হইল। আমার নেতা ও মনিব মৌলবী মুজিবুর রহমান অভ্যর্থনা সমিতির চেয়ারম্যান। ডাঃ আর. আহমদ সেক্রেটারি। চেয়ারম্যানের ইচ্ছা অনুসার্কে আমাকে অভ্যর্থনা সমিতির অন্যতম সহকারী সেক্রেটারি করা হইল। আমি জীবনের প্রথম এই নিখিল ভারতীয় কনফারেন্সের কাজ ঘনিষ্ঠভাবে দেখিবার সুযোগ পাইলাম। মৌঃ মোহাম্মদ ইয়াকুব (পরে সার) এই সম্মিলনীতে সভাপতিত্ব করেন। সস্ত্রীক জিনা সাহেব এই সম্মিলনীতে যোগ দেন। আমি মিসেস রতন বাই জিন্নাকে অত কাছে হইতে এই প্রথম ও শেষবারের মত দেখিতে পাই।

মিঃ জিন্না ও মওলানা মোহাম্মদ আলীর ব্যক্তিগত বিরোধের সুযোগ লইয়া নাইট-নবাবরা অতঃপর মুসলিম লীগ কাউন্সিলে জিন্না সাহেবের উপর অনাস্থা দিবার চেষ্টা করেন। দিল্লীতে লীগ কাউন্সিলের সভা। মৌলবী মুজিবুর রহমান ও মওলানা আকরম খাঁর নেতৃত্বে বাংলার কাউন্সিলারগণ দলবদ্ধভাবে দিল্লী গেলাম জিন্না নেতৃত্বকে নাইট-নারবদের হামলা হইতে বাঁচাইতে। বাংলার প্রতিনিধিরা আমরা কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট ডাঃ আনসারীর মেহমান হই। ডাঃ আনসারীর যমুনা পারস্থ দরিয়াগঞ্জের সুবৃহৎ প্রাসাদতুল্য বাড়ি গোটাটাই আমাদের জন্য ছাড়িয়া দেওয়া হয়। আমাদের খাওয়ার ব্যবস্থাও ডাঃ সাহেবই করেন।

জিন্না-বিরোধী উপদলও খুব ভোড়জোড় করে। দিল্লীর বিল্লিমারন রোডে এক বিশাল ভবনে কাউন্সিলের সভা রু হয়। কিন্তু ডাঃ আনসারীর উদ্যোগে নেতৃবৃন্দের চেষ্টায় কাউন্সিল বৈঠকের আগেই জিন্না সাহেব ও মওলানা মোহাম্মদ আলীর মধ্যকার বিরোধ মিটিয়া যায়। কাউন্সিল বৈঠকের শুরুতে উভয় নেতার মধ্যে কোলাকুলি হয়। আমরা হর্ষধ্বনি ও করতালি দিয়া তাঁদেরে অভিনন্দন জানাই। জিন্না বিরোধীরা একদম চুপ মারিয়া যান। শান্তিপূর্ণভাবে কাউন্সিলের কাজ শেষ হয়। কাউন্সিল জিন্না-নেতৃত্বে আস্থা পুনরাবৃত্তি করিয়া এবং সাম্প্রদায়িক ঐক্যের ভিত্তিস্বরূপ মুসলিম দাবি-দাওয়া সম্বন্ধে এবং ‘অলহোয়াইট কমিশন’ সম্পর্কে জিন্না সাহেবকে সর্বময় ক্ষমতা দিয়া প্রস্তাব পাস করতঃ সভার কাজ সমাপ্ত হয়।

তিনদিন সম্মিলনীর কাজ করিবার জন্য এবং জিন্না-বিরোধীদের একহাত দেখাইবার জন্য আমরা যারা প্রস্তুত হইয়া আসিয়াছিলাম, একদিনে সভার কাজ শেষ হওয়ায় তারা বেকার হইলাম। আর কি করা যায়? জনাব মুজিবুর রহমানের খরচে ও নেতৃত্বে দিল্লী-আগ্রার দর্শনীয় জায়গা ও বস্তুসমূহ দেখিয়া জীবনের সাধ মিটাইলাম। অতঃপর আগ্রার বিশ্ববিখ্যাত সূরাহি প্রত্যেকে আধ ডজন করিয়া কিনিয়া কলিকাতা ফিরিলাম। পথে আসিতে আসিতে সূরাহির সংখ্যা অর্ধেক হইয়া গেল। তাতেও দামের দিক দিয়া আমাদের যথেষ্ট মুনাফা থাকিল।

২. কংগ্রেসের ব্যর্থতা

পরের বছর (১৯২৮) ডিসেম্বর মাসে কলিকাতায় কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের বার্ষিক অধিবেশন। ১৯২৭ সালের কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট ডাঃ আনসারীর উদ্যোগে স্বায়ত্ত শাসিত ভারতের শাসনতান্ত্রিক বিধানের সুপারিশ করার উদ্দেশ্যে পণ্ডিত মতিলালের নেতৃত্বে নেহরু কমিটি গঠিত হইয়াছিল। এই কমিটি যে রিপোর্ট দিয়াছিল তাতে হিন্দু-মুসলিম সমস্যার সমাধানের জন্য নয়া ফরমুলা দেওয়া হইয়াছিল। এ রিপোর্টের রচয়িতা পণ্ডিত মতিলাল নেহরু স্বয়ং কলিকাতা কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট। পক্ষান্তরে জিন্না সাহেবের পরম ভক্ত উদর মতাবলম্বী মাহমুদাবাদের রাজা সাহেব (বর্তমান রাজা সাহেবের পিতা) মুসলিম লীগ সেশনের সভাপতি। কাজেই সকলেই আশা করিতেছিল এবার কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের সমঝোতায় হিন্দু-মুসলিম-সমস্যার সমাধান হইয়া যাইবে। সাইমন কমিশনের গঠন সম্পর্কে বৃটিশ সরকারের অনমনীয় মনোভাবও উভয় প্রতিষ্ঠানের সমঝোতার রাস্তা পরিষ্কার করিয়া দিয়াছিল।

বাংলায় এই দুই প্রতিষ্ঠানের অধিবেশন হইতেছে। সুতরাং বাংলার হিন্দু-মুসলিম নেতৃবৃন্দের এদিককার দায়িত্বই সবচেয়ে বেশি। অতএব কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের অধিবেশনের তারিখের বেশ কিছুদিন আগে ‘দি মুসলমান’ অফিসে বাংলার হিন্দু মুসলিম নেতৃবৃন্দের এক আলোচনা সভা হয়। হিন্দু পক্ষ হইতে মিঃ জে, এম, সেনগুপ্ত, মিঃ শরৎচন্দ্র বসু, ডাঃ বিধান চন্দ্র রায়, মিঃ জে, এম, দাশগুপ্ত, মিঃ জে, সি, গুপ্ত, ডাঃ ললিত চন্দ্র দাস, মিঃ নলিনী রঞ্জন সরকার ও আরও দু-একজন উপস্থিত হন। মুসলিম পক্ষে সার আবদুর রহিম, মৌঃ ফযলুল হক, মওলানা আযাদ, মৌঃ আবদুল করিম, মৌঃ আবুল কাসেম, মৌলবী মুজিবুর রহমান, মওলানা আকরম খাঁ, মওলানা ইসলামাবাদী এবং আরও কয়েকজন এই আলোচনায় শরিক হন। নেতাদের ফুট-ফরমায়েশ করিবার জন্য মৌঃ মুজিবুর রহমানের কথামত আমিও এই সভায় উপস্থিত থাকিবার অনুমতি পাই। দেশবন্ধুর বেংগল প্যাক্ট তখনও : কাগমে-কলমে বাঁচিয়া আছে। কাজেই আলোচনা প্রধানতঃ এই প্যাকটের উপরেই চলিল। হিন্দু-মুসলিম-বিরোধ মীমাংসার সব আলোচনার ভাগ্যে যা হইয়াছে, এই আলোচনা বৈঠকের বরাতেরও অবিকল তাই হইল। কিন্তু এ বৈঠকে আমি স্যার আবদুর রহিমের মুখে যে মূল্যবান একটি কথা শুনিয়াছিলাম প্রধানতঃ সেইটি লিপিবদ্ধ করিবার জন্যই এই ঘটনার অবতারণা করিয়াছি। মুসলমানদের দাবি-দাওয়া সম্পর্কে নেতাদের বিভিন্ন যুক্তির উত্তরে ডাঃ বিধান রায় তাঁর স্বাভাবিক কাট-খোট্টা ভাষায় বলিলেন : তা হলে মুসলমানদের কথা এই স্বাধীনতা সংগ্রামে যাব না, কিন্তু চাকরিতে অংশ দাও। পাল্টা জবাবে উস্তাদ সার আবদুর রহিম সংগে-সংগে উত্তর দিলেন? তা হলে হিন্দুদের কথা এই : চাকরিতে অংশ দিব না, কিন্তু স্বাধীনতা সগ্রামে আস। সবাই হাসিয়া উঠিলেন। অতঃপর সার আবদুর রহিম সিরিয়াস হইয়া বলিলেন : ‘লুক হিয়ার ডাঃ রায়। ইউ ফরগেট দ্যাট ইউ হিন্দুয় হ্যাভ গট অনলি ওয়ান এনিমি দি বৃটিশার্স টু ফাঁইট, হোয়ারআয় উই মুসলিমস হ্যাভ গট টু ফাঁইট থ্রি এনিমিয় : দি বৃটিশার্স অনদি ফ্রন্ট, দি হিন্দু অনদি রাইট এন্ড দি মোল্লায অনদি লেফট।’ কথাটা আমি জীবনে ভুলিতে পারি নাই।

বরাবরের মতই এবারও হিন্দু-মুসলিম-সমস্যার সমাধান-চেষ্টা ব্যর্থ হয়। বিরোধ আরও বাড়িয়া যায়। ১৯২৮ সালের প্রজাস্বত্ব আইনের প্রশ্নে দল নির্বিশেষে সব হিন্দু মেম্বররা জমিদার পক্ষে এবং দল-নির্বিশেষে সব মুসলিম মেম্বাররা প্রজার পক্ষে ভোট দেন। আইনসভা স্পষ্টতঃ সাম্প্রদায়িক ভাগে বিভক্ত হয়। পর বৎসর সুভাষ বাবুর নেতৃত্বে কৃষ্ণনগর কংগ্রেস সম্মিলনীতে দেশবন্ধুর বেংগল প্যাকেট বাতিল করা হয়। কি মুসলমানের স্বার্থের দিক দিয়া, কি প্রজার স্বার্থের দিক দিয়া, কোন দিক দিয়াই কংগ্রেসের উপর নির্ভর করিয়া চলা আর সম্ভব থাকিল না।

৩. প্রজা-সমিতির জন্ম

আমরা মুসলমান কংগ্রেসীরা মওলানা আকরম খাঁ সাহেবের নেতৃত্বে কংগ্রেস বর্জন করিয়া নিখিল-বংগ প্রজা সমিতি গঠন করি (১৯২৯)। সার আবদুর রহিম এই সমিতির সভাপতি ও মওলানা আকরম খাঁ ইহার সেক্রেটারি হন। মৌঃ মুজিবুর রহমান, মৌঃ আবদুল করিম, মৌঃ ফযলুল হক, ডাঃ আবদুল্ল সুহরাওয়ার্দী, খান বাহাদুর আবদুল মোমিন সি. আই. ই. ইহার ভাইস প্রেসিডেন্ট, মৌঃ শামসুদ্দিন আহমদ ও মৌঃ তমিয়ুদ্দিন খাঁ জয়েন্ট সেক্রেটারি নির্বাচিত হন। এইভাবে রাজনৈতিক মত-ও দল-নির্বিশেষ বাংলার সমস্ত হিন্দু নেতা জমিদারের পক্ষে কংগ্রেসে এবং সমস্ত মুসলিম নেতা প্রজার পক্ষে প্রজা-সমিতিতে সংঘবদ্ধ হইলেন। এই পরিস্থিতি লক্ষ্য করিয়া দেশপ্রিয় জে, এম. সেনগুপ্ত একদিন আফসোস করিয়াছিলেন : “আজ হইতে কংগ্রেস শুধু মুসলিম-বাংলার আস্থাই হারাইল না, প্রজাসাধারণের আস্থাও হারাইল।” মিঃ সেনগুপ্তের ভবিষ্যদ্বাণী অক্ষরে-অক্ষরেকলিয়া গিয়াছিল।

এই সময় আমি ওকালতি পাস করিয়া ‘দি মুসলমানের’ কাজ ছাড়িয়া ময়মনসিংহ জিলা কোটে প্র্যাকটিস শুরু করি। সংগে-সংগে নিখিল বংগ প্ৰজা সমিতির ময়মনসিংহ শাখা গঠন করিবার কাজে হাত দেই। অল্পদিন মধ্যেই এ কাজে আশাতিরিক্ত সাফল্য লাভ করি। এ কাজে ময়মনসিংহ বারের মোখতার মৌঃ আবদুল হাকিম ও শ্রীযুক্ত প্রমথ চন্দ্র বসু, কতোয়ালী থানার মওলানা আলতাফ হোসেন, কাতলাসেনের মৌলবী আবদুল করিম খাঁ, উকিল মৌঃ মোহাম্মদ কলম আলী, ত্রিশাল থানার মৌঃ ওয়ায়েযুদ্দিন, ঈশ্বরগঞ্জের মৌঃ আবদুল ওয়াহেদ বোকাই নগরী, ফুলপুরের মৌঃ মুজিবুর রহমান খী ফুলপুরী ও মওলানা আবদুর রহমান, নান্দাইল থানার মওলানা বোরহান উদ্দীন কামালপুরী ও মৌঃ আবদুর রশিদ খা, জামালপুরের মৌঃ তৈয়ব আলী উকিল ও মৌঃ গিয়াসুদ্দিন আহমদ, টাংগাইলের উকিল মৌঃ খোন্দকার আবদুস সামাদ, মোখর মৌঃ খোদা বখশ ও মৌঃ নিযামুদ্দিন আহমদ, নেত্রকোনার উকিল মৌঃ আবদুর রহিম ও মৌঃ আবদুস সামাদ তালুকদার, কিশোরগঞ্জের মৌঃ আফতাবুদ্দিন আহমদ, মৌঃ মোহাম্মদ ইসরাইল উকিল ও মৌঃ আবু আহমদের সহায়তার কথা আমি জীবনে ভুলিতে পারিব না। তাঁদের নিঃস্বার্থ কঠোর পরিশ্রমে অল্পকাল মধ্যেই ময়মনসিংহ প্রজা-সমিতি একটি শক্তিশালী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। প্রজা আন্দোলন সংঘবদ্ধ আন্দোলনের আকারে মাথা চাড়া দিয়া উঠে। পরবর্তীকালে অবসরপ্রাপ্ত ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট মৌঃ আবদুল মজিদ ও ধনবাড়ির জমিদার নবাবযাদা সৈয়দ হাসান আলী প্রজা আন্দোলনে যোগ দেন। তাতে ময়মনসিংহ প্রজা সমিতির শক্তি ও মর্যাদা বাড়িয়া যায়। এই দুই জনের অর্থ সাহায্যে প্রজা-সমিতির নিজস্ব ছাপাখানা কিনিয়া ‘চাষী’ নামে প্রজা আন্দোলনের সাপ্তাহিক মুখপত্র বাহির করি।

সাহিত্যিক হিসাবে জিলার সরকারী-বেসরকারী উভয় মহলে আমার একটা বিশেষ স্নেহ-প্রীতির স্থান ছিল। কাজেই আমি ময়মনসিংহে ওকালতি শুরু করার সাথে-সাথেই সকল দলের মুসলমান নেতারা আমাকে আপন করিয়া লইলেন। শহরের যাঁরা মুরুৰি তাঁদের সকলের কাছেই আমি পরিচিত। বছর পনর আগে স্কুলের ছাত্র হিসাবে সভা-সমিতিতে বক্তৃতা করিয়া এবং প্রবন্ধ পাঠ করিয়া সুনাম অর্জন ও মুরুব্বিদের স্নেহ-ভালবাসা লাভ করিয়াছিলাম। এরাই সকলে মিলিয়া আমাকে এমন এক সম্মানের স্থানে বসাইলেন যেখানে বসিবার আমার কোন যোগ্যতা ছিল না, অভিজ্ঞতা ও বয়সের দিকে হইতেও না, মতবাদের দিক হইতেও না। এই পদটি ছিল আঞ্জুমনে-ইসলামিয়ার সহকারী সভাপতির পদ। করটিয়ার স্বনামধন্য জমিদার ওয়াজেদ আলী খানপন্নী (চান মিয়া সাহেব) আঞ্জুমনের সভাপতি। কিন্তু তিনি থাকেন কলিকাতা। কোনদিন আঞ্জুমনের সভায় আসেন না। দুইজন সহসভাপতি : একজন সার এ. কে. গযনবী; আরেক জন জিলার সর্বজনমান্য প্রবীণ নেতা খান বাহাদুর ইসমাইল। আমি যখন ময়মনসিংহ বারে যোগ দেই সেই বছরই সার এ, কে, গযনবী বাংলার লাটের একযিকিউটিভ কাউন্সিলার নিযুক্ত হন। নিয়মানুসারে তিনি আঞ্জুমনের সহ সভাপতিত্বে ইস্তাফা দেন। তাঁরই স্থলে আমাকে সর্বসম্মতিক্রমে সহসভাপতি নির্বাচন করা হয়–আমার ঘোরতর আপত্তি সত্ত্বেও। আমার জ্যেষ্ঠভ্রাতা-তুল্য শ্রদ্ধেয় মৌঃ শাহাবুদ্দিন আহমদ আঞ্জুমনের সেক্রেটারি। আঞ্জুমনের অপর ভাইস প্রেসিডেন্ট খান বাহাদুর ইসমাইল সাহেব পাবলিক প্রসিকিউটর ও জিলা বোর্ডের চেয়ারম্যান আঞ্জুমনের সভায় উপস্থিত হওয়ারও আলোচনায় যোগ দেওয়ার সময় তাঁর খুবই কম। কাজেই আমাকেই কার্যতঃ আঞ্জুমনের প্রেসিডেন্টের কাজ করিতে হইত। আমার বয়সে অনেক বড় ও ওকালতিতে অনেক সিনিয়র মৌঃ তৈয়বুদ্দিন খান সাহেব (পরে খান বাহাদুর), শরফুদ্দিন খান সাহেব (পরে খান বাহাদুর নূরুল আমিন, আবদুল মোননম খাঁ, গিয়াসুদ্দিন পাঠান, মৌঃ মোঃ ছমেদ আলী প্রভৃতি অনেক যোগ্যতার ও মান্যগণ্য ব্যক্তি থাকিতেও আমাকে যে এই সম্মান দেওয়া হইয়াছিল তার একমাত্র কারণ ছিল আমার প্রতি মুরুব্বিদের স্নেহ।

৪. মুসলিম-সংহতি ও প্রজা-সংহতির বিরোধ

কিন্তু এই স্নেহ বেশিদিন আমাকে রক্ষা করিতে পারিল না। আঞ্জুমনের কাজ ছাড়া আরও দুইটা রাজনৈতিক দায়িত্ব পালন করিতাম। আমি ছিলাম জিলা প্ৰজা-সমিতির সেক্রেটারি এবং জিলা কংগ্রেসের ভাইস প্রেসিডেন্ট। আঞ্জুমনের মধ্যে অনেক মুসলিম জমিদার থাকা সত্ত্বেও অধিকাংশ মেম্বরই প্রজা এবং সেই হিসাবে প্রজা আন্দোলনের মোটামুটি সমর্থক। কিন্তু সকলেই একবাক্যে কংগ্রেসের বিরোধী। প্রজা আন্দোলনের জনপ্রিয়তা দেখিয়া বেশ কিছুসংখ্যক কংগ্রেস-কমী প্রজা সমিতির সমর্থক হই। প্রজা সমিতির সংগঠন উপলক্ষে আমি একটি কর্মী সম্মিলনী ডাকিলাম। আঞ্জুমনের সদস্যগণ আমাকে মুসলিম কমী সম্মিলনী ডাকিতে পরামর্শ দিলেন। আমি তাঁদেরে বুঝাইবার চেষ্টা করিলাম, আমার ডাকে কার্যতঃ শুধু মুসলমান কর্মীরাই আসিবেন। প্রজা সমিতি অসাম্প্রদায়িক প্রতিষ্ঠান হইলেও ইহাতে প্রধানতঃ মুসলমানরাই আছে। শুধু-শুধি সাম্প্রদায়িক সম্মিলনী ডাকার দরকার নাই। তাতে নাহক প্রজা সমিতিকে এবং প্রজা আন্দোলনকেও সাম্প্রদায়িক রূপ দেওয়া হইবে। আঞ্জুমনীরা আমার এই যুক্তি মানিলেন না। বরঞ্চ তাঁরা বলিলেন, প্রজাদের অধিকাংশই যখন মুসলমান, হিন্দুরা যখন প্রজা আন্দোলনে আসেই না, তখন নামে আর অসাম্প্রদায়িক প্রজা সমিতির দরকার কি? সোজাসুজি মুসলিম সম্মিলনী ডাকিলেই আমার উদ্দেশ্য সফল হইবে।

দৃশ্যতঃ তাঁদের কথাও সত্য। আমার ডাকা কর্মী সম্মিলনীতে মুসলমানরাই আসিবেন, হিন্দু কর্মীরা দূর হইতে মৌখিক সহানুভূতি দেখাইবেন। এ সমস্তই সত্য কথা। কিন্তু প্রজা সমিতির ও প্রজা আন্দোলনের আদর্শগত অসাম্প্রদায়িক রূপ আমরা নষ্ট করিতে পারি না। নিখিল-বংগ প্ৰজা-সমিতির অফিস-বিয়ারার সব মুসলমান হইলেও ডাঃ নরেশ চন্দ্র সেনগুপ্ত, অধ্যাপক জে, এল, বানাজী, মিঃ অতুল গুপ্ত প্রভৃতি বড়-বড় হিন্দু মনীষী প্রজাদের দাবি-দাওয়া সমর্থন করিতেছিলেন। অবশ্য এ জিলার কংগ্রেস কর্মীদের মধ্যে শুধু মুসলমানরাই প্রজা আন্দোলনে প্রত্যক্ষভাবে যোগ দিয়াছেন। হিন্দু কংগ্রেসীদের মধ্যে যাঁরা জমিদারি-বিরোধী তাঁরা প্রজা-সমিতিতে যোগ না দিয়া কৃষক-সমিতি, কিষাণ সভা ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানে যোগ দিয়াছেন। বাংলার প্রজা আন্দোলনকে এদের অনেকেই জোতদার আন্দোলন বলিয়া নিন্দা করিয়াছেন। নিছক কথা হিসাবে ওঁদের অভিযোগে অনেকখানি সত্য ছিল। কিন্তু আমার মতে ওঁদের ও-মত ছিল তৎকালের জন্য আন্ট্রা লেফটিযম। তৎকালীন কমিউনিস্ট ভাষায় শিশুসুলভ বাম পন্থা (ইনফেনটাইল লেফটিযম)। ঐ আল্টা-লেফটিযম প্রত্যক্ষভাবে না হইলেও পরোক্ষভাবে জমিদারি-বিরোধী আন্দোলনের ক্ষতি সাধন করিত পারিত। আমার ঘোরতর সন্দেহ ছিল যে জমিদার-সমর্থক কোনও কোনও কংগ্রেস-নেতা ঐ উদ্দেশ্যেই ঐ আল্টা-লেফটিযমে উষ্কানি দিতেন। আমার জ্ঞান-বিশ্বাস মতে তৎকালীন প্রজা-আন্দোলনই ছিল প্রকৃত প্রস্তাবে যুগোপযোগী গণআন্দোলন। এ বিষয়ে তৎকালীন দক্ষিণ ভারতীয় কৃষক আন্দোলনের নেতা অধ্যাপক রংগও আমাদের সহিত একমত ছিলেন। বাংলার কৃষক সমিতি ও কিযাণ সভার সাথে আমাদের প্রজা সমিতির পার্থক্যের দিকে তাঁর মনোযোগ আকৰ্ষণ করিলে তিনি আমাদের পথকেই ঠিক পথ বলিয়াছিলেন। এই জন্যই আমি বামপন্থীদের চাপ এড়াইয়া প্রজা-আন্দোলনই চালাইতেছিলাম। ফলে আমার জিলার প্রজা-সমিতি, চেহারা-ছবিতে একমত মুসলিম প্রতিষ্ঠান হইয়াই দাঁড়াইয়াছিল। এই দিক হইতে আমার আঞ্জুমনী বন্ধুদের কথাই ঠিক।

কিন্তু এর অন্য একটা দিকও ছিল। দেশের অর্থনৈতিক গণ-আন্দোলন হিসাবে ইহার অসাম্প্রদায়িক শ্রেণীরূপ বজায় রাখাও ছিল আবশ্যক। যতই অল্পসংখ্যক হোক এ জিলার দু’চারজন অকংগ্রেসী হিন্দু ভদ্রলোক প্রজা-আন্দোলনের গোড়া সমর্থক ও বিশ্বস্ত অনুগত সক্রিম্ম মেম্বর ছিলেন। এদের মধ্যে প্রবীণ মোখর শ্রীযুক্ত প্রমথ চন্দ্র বসু এবং উকিল শ্ৰীযুক্ত উমেশ চন্দ্র দেবনাথের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তাছাড়া দেশবিখ্যাত কতিপয় হিন্দু চিন্তাবিদ প্রজা-আন্দোলনের প্রকাশ্য সমর্থক ছিলেন। ইহাদের মধ্যে ডাঃ নরেশ চন্দ্র সেনগুপ্ত, মিঃ অতুল চন্দ্র গুপ্ত, অধ্যাপক জে, এল, বানাজী ও অধ্যাপক বিনয় সরকারের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

তাই আমি আঙুমনী বন্ধুদের চাপে টলিলাম না। কাজেই তাঁরাও আমার সম্মিলনীর বিরোধী হইয়া উঠিলেন। ক্রমে অবস্থা এমন দাঁড়াইল যে হয় সম্মিলনী পরিত্যাগ করিতে হয় অথবা আঞ্জুমনের সহ-সভাপতিত্ব ছাড়িতে হয়। আঞ্জুমনের প্রতি আদর্শগত কোনও আকর্ষণ আমার ছিল না। শহরের মুরুব্বি ও বন্ধু-বান্ধবরা আদর করিয়া একটা সম্মান দিয়াছিলেন। তাই নিয়াছিলাম। আজ তাঁরা সেটা ফেরত চাইলেন। আমি ফেরত দিলাম।

আঞ্জুমনীরা আমার কর্মী-সম্মিলনীর একই দিনে টাউন হলে এক মুসলিম সম্মিলনী আহ্বান করিলেন। আমি মনে করিলাম, ভাল কথা। ওঁদের সম্মিলনীতে যদি মফস্বল হইতে লোক আসে তবে সেখানেও প্রজাদের দাবিতে প্রস্তাব পাস হইবে। ফলে দুই সম্মিলনীই কার্যতঃ প্রজা-সম্মিলনী হইবে। কিন্তু আঞ্জুমানীরা তাঁদের সম্মিলনীকে সফল করার চেয়ে আমার সম্মিলনী ভাংগার দিকে অধিক মনোযোগ দিলেন। প্রথমে জিলা ম্যাজিস্ট্রেটকে দিয়া ১৪৪ ধারা জারির চেষ্টা করিলেন। আমার সম্মিলনীর তারিখ বহুদিন আগে ঘোষিত হইয়াছে, আমি এই আপত্তি করায় জিলা ম্যাজিস্ট্রেট নিষেধাজ্ঞা জারি করিলেন না। কিন্তু আঞ্জুমনীরা আমাকে কয়েদ করিয়া গুণ্ডামির দ্বারা আমাদের সম্মিলনী ভাংগিয়া দিতে সক্ষম হইয়াছিলেন। এই সব করিতে গিয়া তাঁরা সম্মিলনীকে কার্যতঃ অনেকখানি কংগ্রেসী কর্মী-সম্মিলন করিয়া ফেলিয়াছিলেন। ফলে কোনও সম্মিলনী না হওয়া সত্ত্বেও আমাদের পক্ষে খবরের কাগয়ে বাহির হইল? সাফল্যের সাথে সম্মিলনীর কার্য সমাপ্ত হইয়াছে। মুসলিম সাম্প্রদায়িকতাবাদীরা সম্মিলনী পও করিবার যে সব চেষ্টা করিয়াছিল সে সবই ব্যর্থ হইয়াছে। সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে প্রস্তাব গৃহীত হইয়াছে। ময়মনসিংহ জিলায় সাম্প্রদায়িক রাজনীতির অবসান ঘটিয়াছে ইত্যাদি।

পক্ষান্তরে কোন-কোন মুসলিম কাগযে খবর ছাপা হইল : কংগ্রেসীদের সম্মিলনী ব্যর্থ হইয়াছে। মুসলিম জনতা সম্মিলনীর প্যাণ্ডাল দখল করিয়াছে। সেই প্যাণ্ডালেই কংগ্রেস-বিরোধী প্রস্তাব পাস হইয়াছে এবং মুসলমানদের দাবি-দাওয়ার পুনরাবৃত্তি করা হইয়াছে।

আমি মনে-মনে হাসিলাম। বুঝিলাম এ ধরনের কাগযী আন্দোলন করিয়া কোনও লাভ হইবে না। প্রজা-সমিতিকে সত্য-সত্যই প্রজাদের প্রতিষ্ঠানরূপে গড়িয়া ভোলার কাজে মন দিলাম।

1 Comment
Collapse Comments

সূরাহি বলতে কি বুঝানো হয়েছে?

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *