হায়রে মানুষ

একটু ছিল বয়েস যখন ছোট্ট ছিলাম আমি
আমার কাছে খেলাই ছিল কাজের চেয়ে দামি।
উঠোন জুড়ে ফুল ফুটেছে আকাশ ভরা তারা
তারার দেশে উড়তো আমার পরাণ আত্মহারা।
জোছনা রাতে বুড়িগঙ্গা তুলতো যখন ঢেউ
আমার পিঠে পরীর ডানা পরিয়ে দিতো কেউ।
দেহ থাকতো এই শহরে উড়াল দিতো মন
মেঘের ছিটার ঝিলিক পেয়ে হাসতো দু’নয়ন।
তারায় তারায় হাঁটতো আমার ব্যাকুল দু’টি পা
নীল চাঁদোয়ার দেশে হঠাৎ রাত ফুরাতো না।
খেলার সাথী ছিল তখন প্রজাপতির ঝাঁক
বনভাদালির গন্ধে কত কুটকুটোতো নাক;
কেওড়া ফুলের ঝোল খেয়ে যে কোল ছেড়েছে মা’র
তার কি থাকে ঘরবাড়ি না তার থাকে সংসার ?

তারপরে যে কী হলো, এক দৈত্য এসে কবে
পাখনা দুটো ভেঙে বলে মানুষ হতে হবে।
মানুষ হওয়ার জন্য কত পার হয়েছি সিঁড়ি
গাধার মত বই গিলেছি স্বাদ যে কি বিচ্ছিরি।
জ্ঞানের গেলাস পান করে আজ চুল হয়েছে শণ
কেশের বাহার বিরল হয়ে উজাড় হলো বন।
মানুষ মানুষ করে যারা মানুষ তারা কে ?
অফিস বাড়ির মধ্যে রোবোট কলম ধরেছে।
নরম গদি কোশন আসন চশমা পরা চোখ
লোক ঠকানো হিসেব লেখে, কম্প্যুটারে শ্লোক।
বাংলাদেশের কপাল পোড়ে ঘূর্ণিঝড়ে চর
মানুষ গড়ার শাসন দেখে বুক কাঁপে থরথর।
‘হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস’- গান শোননি ভাই ?
মানুষ হবার ইচ্ছে আমার এক্কেবারে নাই।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *