০৯. কিরীটীকে নিয়ে সত্যজিৎ

কিরীটীকে নিয়ে সত্যজিৎ রাজবাটিতে পৌঁছবার পরের দিনই সন্ধ্যার দিকে নিত্যানন্দ সান্যাল মশাই তাঁর কন্যা কল্যাণীকে সঙ্গে নিয়ে এসে পৌঁছলেন।

স্টেশনে জমিদারবাড়ির টমটমই সান্যালমশাইকে আনতে গিয়েছিল।

সন্ধ্যার অন্ধকার সবে তখন চারিদিকে ঘন হয়ে এসেছে। প্রমোদভবনের কক্ষে কক্ষে বাতি জলে উঠেছে।

সত্যজিতের ঘরেই কিরীটী তার থাকবার ব্যবস্থা করে নিয়েছিল।

সত্যজিৎ পাশের ঘরে সবিতার সঙ্গে কথা বলছিল, আর কিরীটী একা ঘরের মধ্যে একটা আরামকেদারার উপরে গা এলিয়ে দিয়ে নিঃশব্দে একটা চুরোটে অগ্নিসংযোগ করে মধ্যে মধ্যে ধূমোদগিরণ করছিল।

সিঁড়িতে ভারী পায়ের শব্দ শোনা গেল এবং সেই সঙ্গে শোনা গেল গম্ভীর মোটা গলার ডাক, সবি! আমার সবি মা কই!

কণ্ঠস্বর শ্রুতিপটে প্রবেশ করা মাত্রই কিরীটী সহসা যেন নিজের অজ্ঞাতেই আরামকেদারাটার উপরে সোজা হয়ে উঠে বসে।

পায়ের শব্দ ক্রমেই সিঁড়ি-পথে উপরের দিকে উঠে আসছে।

সবিতাও বোধ হয় সে কণ্ঠস্বর শুনতে পেয়েছিল এবং ঘর থেকে বাইরে বারান্দায় বের হয়ে এসেছিল।

কিরীটীও উঠে এগিয়ে যায় খোলা দরজাটার দিকে।

এবং নিজের অস্তিত্বকে গোপন রেখেই ইচ্ছা করে দরজার খোলা কবাট দুটো ভেজিয়ে দিয়ে ঈষৎ ফাঁক করে বাইরের বারান্দায় দৃষ্টিপাত করে।

সিঁড়ির মাথাতেই আগন্তুক নিত্যানন্দ সান্যালের সঙ্গে চোখাচোখি হয়ে গেল এবং সবিতা নীচু হয়ে নিত্যানন্দর পায়ের ধুলো নিতে যেতেই নিত্যানন্দ পরম স্নেহে প্রসারিত দুই বাহুর সাহায্যে সবিতাকে বুকের কাছে টেনে নিয়ে মধুসিক্ত করুণ কণ্ঠে বলে উঠলেন, থাক মা থাক, হয়েছে—হয়েছে।

কণ্ঠস্বরটা সান্যালমশাইয়ের অশ্রুতে যেন বুজে আসে, চোখের কোলেও দুফোঁটা জল চকচক করে ওঠে বোধ হয়।

সবিতার মাথাটা সান্যালমশাই নিজের প্রশস্ত বক্ষের উপর ন্যস্ত করে ধীরে ধীরে ওর মাথার চলে সস্নেহে অঙ্গুলি-সঞ্চালন করতে থাকেন।

বারান্দার যেটুকু আলো সান্যালমশাইয়ের চোখে-মুখে পড়েছিল, সেই আলোতেই কিরীটী দরজার ফাঁক দিয়ে দেখে, অন্তরের রুদ্ধ শোকাবেগটা সামলাবার জন্য সান্যালমশাই যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন। ইতিমধ্যে সান্যালমশাইয়ের মেয়ে কল্যাণীও পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। কল্যাণী সবিতার চাইতে বছর চারেকের ছোট হবে বলেই মনে হয়। মেয়েটি কালো দেখতে হলেও সে কালো রূপের মধ্যে অপূর্ব একটা শ্ৰী আছে। মেয়েটির মুখখানির যেন এক কথায় তুলনা হয় না। ছোট কপাল, কপালের উপর কয়েকগাছি চূর্ণ কুন্তল এসে পড়েছে; দুচোখের দৃষ্টিতে অপূর্ব একটা বুদ্ধির দীপ্তি যেন ঝকঝক করছে।

সবিতা নিজেকে সামলে নিয়ে সান্যাল মশাইয়ের স্নেহের বাহুবন্ধন হতে নিজেকে মুক্ত করে নিয়ে ধীরকণ্ঠে বলে, চলুন মামাবাবু, ঘরে চলুন।

চল মা।

কল্যাণীর দিকে ফিরে তাকিয়ে সবিতা তাকেও আহ্বান জানায়, এসো কল্যাণী।

প্রভু হে, দয়াময়! সবই তোমার ইচ্ছা! বলতে বলতে সান্যালমশাই সবিতা ও কল্যাণীকে অনুসরণ করে সবিতার ঘরের দিকে অগ্রসর হতেই সবিতার ঘরের দ্বারপথে সত্যজিৎ এসে দাঁড়াল।

সহসা খোলা দ্বারপথে সত্যজিৎকে এসে দাঁড়াতে দেখে থমকে দাঁড়িয়ে গেলেন সান্যালমশাই, এবং একবার সত্যজিতের দিকে তাকিয়ে নিমেষেই তার আপাদমস্তক এক দৃষ্টিতে দেখে নিয়ে সবিতার দিকে ফিরে তাকালেন জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে।

সবিতা কোন প্রকার ইতস্তত মাত্র না করে সান্যালমশাইয়ের দিকে তাকিয়ে বললে, বাবার বন্ধুর ছেলে সত্যজিৎবাবু, বর্মা থেকে এসেছেন।

ও, তুমিই সত্যজিৎ-মৃত্যুঞ্জয়ের বন্ধুপুত্র! মৃত্যুঞ্জয়ের মুখে তোমার সম্পর্কে আমি সব কথাই শুনেছি। তা বেশ বেশ, কথাটা বলে এবারে সত্যজিতের দিকে সস্নেহ দৃষ্টিতে তাকিয়েই প্রশ্ন করলেন, তা বাবাজীর এখানে কবে আসা হলো?

সবিতা দেবীর সঙ্গে একই ট্রেনে এখানে এসেছি। জবাব দিল সত্যজিৎ।

একই ট্রেনে আসা হয়েছে! তা বেশ বেশ! মৃত্যুঞ্জয়ের বন্ধুপুত্র তুমি, এ বাড়ির পরমাত্মীয় বইকি। হ্যাঁ মা সবি, এর এখানে থাকতে কোন কষ্ট বা অসুবিধা হচ্ছে না তো?

না, না, আপনি ব্যস্ত হবেন না মামাবাবু। প্রত্যুত্তর দেয় সত্যজিৎ।

সকলে এসে সবিতার কক্ষমধ্যে প্রবেশ করল।

সত্যজিৎ একটা খালি চেয়ার এগিয়ে দিতে দিতে সান্যালমশাইয়ের দিকে তাকিয়ে বললে, বসুন মামাবাবু।

সান্যালমশাই চেয়ারটার উপর উপবেশন করে একবার ঘরের চতুর্দিকে দৃষ্টিটা বুলিয়ে নিলেন।

বসন্তর সঙ্গে দেখা হলো না—সে কি নেই? জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালেন নিত্যানন্দ সবিতার মুখের দিকে।

হ্যাঁ, বসন্তকাকা আছেন তো। সবিতা জবাব দেয়।

কই, নিচে তাকে দেখলাম না তো।

দুপুরের দিকে কাছারীতে গিয়েছেন, এখনো বোধ হয় ফেরেননি।

এমন সময় নীচে একটা উচ্চকণ্ঠের গোলমাল শোনা গেল। গোলমালের শব্দ ঘরের মধ্যে উপস্থিত সকলেরই কানে এসেছিল এবং সকলেই প্রায় উৎকর্ণ হয়ে ওঠে।

ব্যাপার কি! নিচে এত গোলমাল কিসের? নিত্যনন্দই কতকটা যেন স্বগতভাবেই প্রশ্ন করলেন।

আমি দেখছি। সত্যজিৎ এগিয়ে যায়।

সবিতাও সত্যজিৎকে অনুসরণ করে।

নিচে বাইরের ঘরের মধ্যে প্রবেশ করে সত্যজিৎ ও সবিতা থমকে দাঁড়িয়ে যায়।

অত্যন্ত দীর্ঘকায় মিলিটারী লংস ও বুসকোট পরিধান এক ভদ্রলোক উচ্চকণ্ঠে নায়েব বসন্তবাবুর সঙ্গে তর্ক করছেন। ঠাকুর, বনমালী, গোবিন্দ প্রভৃতি ভৃত্যের দল চারিদিকে দাঁড়িয়ে ভিড় করে।

আগন্তুকের দীর্ঘ বলিষ্ঠ গঠন প্রথমেই সকলের দৃষ্টিকে আকর্ষণ করে। মুখখানা চৌকো। ছড়ানো চোয়াল।

মুখখানা দেখলেই মনে হয় যেন অত্যন্ত দৃঢ়বদ্ধ কঠিন ও কর্কশ। চোখ দুটো ছোট ছোট গোলাকার।

লোকটার সামনেই পায়ের কাছে একটা হোন্ডঅল স্ট্রাপ দিয়ে বাঁধা, একটা চামড়ার মাঝারি আকারের সুটকেস ও একটা এ্যাটাচী কেস।

আগন্তুক বসন্তবাবুকেই প্রশ্ন করছিল—আমার চিঠি পাননি মানে কি! এডেন থেকে পর পর দুদুখানা চিঠি দিয়েছি। এতদূর পথ এই বোঝা নিজের কাঁধে করে নিয়ে আসতে হয়েছে।

না, আপনার কোন চিঠিই পাইনি।

বেশ, চিঠি না পেয়েছেন না পেয়েছেন। চিঠিটা পেলে আর এমনি ঝামেলাটা আমাকে সহ্য করতে হতো না।

কিন্তু আপনার পরিচয় সম্পর্কে যখন আমি এতটুকুও জ্ঞাত নই, তখন এ বাড়িতে আপনাকে আমি উঠতে দিতে পারি না। নায়েব বসন্ত সেন বললেন।

বটে! উঠতে দিতে পারেন না। আমার পরিচয়টা পাবার পরও নয়?

না। দঢ়কণ্ঠে বসন্তবাবু, প্রত্যুত্তর দেন।

তাহলে আপনি বলতে চান যে মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী আমার কাকা ছিলেন না? অর্থাৎ সোজা কথায় আমি তাঁর ভাইপো নই? কিন্তু এ কথাটাও কি কখনও আপনি শোনেননি কাকার মুখে যে, তাঁর এক বড় জাঠতুতো ভাই ছিল শশাঙ্কশেখর চৌধুরী এবং ১৮ ১৯ বৎসর বয়সের সময় তিনি ভাগ্যাণ্বেষণে বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যান? আপনি তো শুনি বহুকাল এ-বাড়িতে আছেন। এ কথাটা কখনো কাকার মুখে শোনেননি?

শুনেছি। শুনেছি তাঁর এক জাঠতুতো ভাই ছিল কিন্তু

তবে আবার এর মধ্যে কিন্তুটা কি?

কিন্তুটা যথেষ্ট আছে বৈকি। গম্ভীর দৃঢ় সংযত কণ্ঠে বসন্তবাবু, এবারে বললেন, আপনি সন্তোষ চৌধুরী যে সেই গৃহত্যাগী শশাঙ্কশেখর চৌধুরীরই একমাত্র পুত্র তার তো কোন প্রমাণ দেননি, একমাত্র আপনার কথা ছাড়া।

What do you mean! আমার কথা ছাড়া মানে কি? আমার কথার কি কোন মূল্যই নেই? আপনি তাহলে বলতে চান I am an imposter– প্রতারক!

মিথ্যে আপনি চেচাচ্ছেন মশাই। গলাবাজি করে এ প্রশ্নের মীমাংসা হতে পারে না। আপনার কাছে কোন লিখিত-পড়িত প্রমাণ আছে কি, যার সাহায্যে আপনি প্রমাণ করতে পারেন যে আপনিই সেই শশাঙ্কবাবুর পুত্র সন্তোষ চৌধুরী, এই চৌধুরী বংশেরই একজন।

তাও আছে বৈকি! প্রয়োজন হলে আদালতেই সেটা আমি পেশ করবো, আপনাকে নয় অবশ্যি, ব্যঙ্গমিশ্রিত কণ্ঠে জবাব দিল সন্তোষ চৌধুরী।

সবিতা এতক্ষণ নিঃশব্দ বিস্ময়ে ওদের পরস্পরের কথা-কাটাকাটি শুনছিল। কিন্তু চুপ করে থাকতে পারল না, একটু এগিয়ে এসে বললে, কে এই ভদ্রলোক কাকাবাবু?

সন্তোষ চৌধুরী সবিতার কথায় তার দিকে চোখ তুলে তাকাল, তুমিই বোধ হয় সবিতা, কাকার মেয়ে? আমাকে তুমি চিনবে না। আমি তোমার জাঠতুতো ভাই। এডেন থেকে আসছি, আমার নাম সন্তোষ চৌধুরী।

এডেন থেকে আসছেন?

হ্যাঁ। Its a long journey! সব বলবো, আগে একটু চা চাই বোন। তৃষ্ণায় গলা একেবারে শুকিয়ে কাঠ হয়ে গিয়েছে। এমন হতচ্ছাড়া জায়গা যে স্টেশনে একটা চায়ের স্টল পর্যন্ত নেই। পরক্ষণেই সবিতার জবাবের অপেক্ষা মাত্রও না করে অদূরে দণ্ডায়মান ভৃত্যের দিকে তাকিয়ে বললে, এই বেটারা, হাঁ করে ভূতের মত দাঁড়িয়ে দেখছিস কি! জিনিসগুলো উপরে নিয়ে চল না। I want some rest, ভীষণ tired!

কিন্তু তার কথায় কেউ কোন আগ্রহ জানায় না। যে যেমন দাঁড়িয়েছিল তেমনিই দাঁড়িয়ে থাকে।

সন্তোষবাবুর জিনিসপত্র নিচের মহলে আমার পাশের খালি ঘরটার রাখ। গোবিন্দর দিকে তাকিয়ে বসন্তবাবু, বললেন।

নিচের মহলে থাকতে হবে মানে? তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকাল সন্তোষ চৌধুরী বসন্তবাবুর মুখের দিকে।

হ্যাঁ, নিচের ঘরেই আপনাকে থাকতে হবে যতক্ষণ না আপনার identity আমি সঠিকভাবে পাচ্ছি।

কঠিন স্বরে নায়েব বসন্তবাবু বলে ঘর হতে বেরিয়ে গেলেন আর দ্বিতীয় কোন বাক্যব্যয় মাত্রও না করে।

বসন্তবাবুর খড়মের শব্দটা খটখট করে ঘরের বাইরের বারান্দায় মিলিয়ে গেল। ঘরের মধ্যে যারা আর সকলে উপস্থিত ছিল, স্থাণুর মত নিঃশব্দে দাঁড়িয়ে রইলো।

শেষ নির্দেশ যেন জারী হয়ে গিয়েছে। এবং বসন্তবাবুর মুখনিঃসৃত সে নির্দেশের বিরুদ্ধে এ কক্ষের মধ্যে উপস্থিত কারো যেন এতটুকু ক্ষীণ প্রতিবাদ করবারও ক্ষমতা বা দুঃসাহস নেই, সেটকু বুঝতে কারোরই কষ্ট হয় না।

কক্ষের জমাট স্তব্ধতাকে ভঙ্গ করে প্রথমেই কথা বলল সন্তোষ চৌধুরী, তাহলে আমাকে নিচের ঘরে থাকতে হবে সবিতা? কথাটা বলে সন্তোষ সবিতার মুখের দিকে তাকাল।

ঘটনার পরিস্থিতিতে সত্যজিৎ নিজেকে যেন একটু বিব্রত বোধ করে। সম্পূর্ণ অনাত্মীয় সে।

সত্যিই যদি এই লোকটি একটু আগে যা বলল ঠিক হয় এবং এই চৌধুরীদের আত্মীয়ই হয়, তাহলে একে নিচের একটা ঘরে স্থান দিয়ে নিজের তার উপরের একখানা ঘর দখল করে থাকাটা নিশ্চয়ই শোভনীয় হবে না, ও সমীচীনও হবে না।

সত্যজিৎ এবারে কথা বললে, আমিই কেন নিচের একটা ঘরে এসে থাকি না

মিস চৌধুরী? উনি বরং

আপনি! বিস্মিত সপ্রশ্ন দৃষ্টিতে তাকাল সন্তোষ চৌধুরী এতক্ষণে সত্যজিতের মুখের দিকে।

আমাকে আপনি চিনতে পারবেন না সন্তোষবাবু। আপনি এসেছেন এডেন থেকে আর আমি আসছি বর্মামুলুক—রেঙ্গুন থেকে।

এদের কোন আত্মীয় রেঙ্গুনে ছিলেন বলে তো কই জানি না! সন্তোষ চৌধুরী কথাটা বললে।

ঠিকই। আমি এদের আত্মীয় নই—

তবে?

মৃত্যুঞ্জয়বাবুর বন্ধুপুত্র। এদের গৃহে সামান্য কয়েকটা দিনের জন্য অতিথি মাত্র। শীঘ্রই চলে যাবো।

অঃ, একান্ত নিরাসক্ত ভাবেই সন্তোষ চৌধুরী শব্দটা উচ্চারণ করল।

আপাততঃ তো ওপরের কোন ঘর খালি নেই সন্তোষদা, আপনি বরং দুটো দিন কাকা যে ব্যবস্থা করে গেলেন নিচের ঘরেই থাকুন।

সবিতার কথায় যুগপৎ সকলেই যেন একটু বিস্মিত ভাবেই ওর মুখের দিকে তাকাল। গোবিন্দ, বাবুর জিনিসপত্রগুলো নায়েবকাকার পাশে যে ঘরটা খালি আছে, সেই ঘরে নিয়ে গিয়ে ব্যবস্থা করে দাও। সবিতা এবারে কতকটা দৃঢ়কণ্ঠেই যেন তার বক্তব্যটা জানিয়ে দিল।

গোবিন্দ এগিয়ে এসে সন্তোষ চৌধুরীর মালপত্রগুলো মাটি থেকে তুলে নিতে নিতে বললে, চলেন বাবু

চল। সন্তোষের কণ্ঠস্বর ও মুখের চেহারাটা কেমন যেন অদ্ভুত শান্ত ও নিরাসক্ত শোনায়।

গোবিন্দ মালপত্রগুলো মাথায় তুলে নিয়ে ঘরের বাইরের দিকে পা বাড়াল এবং সন্তোষ চৌধুরী তাকে অনুসরণ করল।

বসন্তবাবুর পাশের ঘরটা খালিই পড়েছিল।

ঘরটা স্বল্পপরিসর হলেও আলো-হাওয়ার প্রচুর ব্যবস্থাই আছে। জিনিসপত্রগুলো মেঝেতে নামিয়ে রেখে গোবিন্দ সন্তোষের মুখের দিকে তাকিয়ে বললে, বসুন বাবু, আগে একটা আলো জ্বেলে নিয়ে আসি।

গোবিন্দ ঘর হতে বের হয়ে গেল।

অন্ধকার ঘরটার মধ্যে একাকী সন্তোষ চৌধুরী দাঁড়িয়ে রইলো।