• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • নতুন সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • পুরানো সব ক্যাটাগরি
  • My Account →
  • নতুন সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • পুরানো সব ক্যাটাগরি
  • My Account →
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

দাশুর কীর্তি

লাইব্রেরি » সুকুমার রায় » সুকুমার রায়ের গল্প » দাশুর কীর্তি

নবীনচাঁদ স্কুলে এসেই বলল, কাল তাকে ডাকাতে ধরেছিল। শুনে স্কুলশুদ্ধ সবাই হাঁ হাঁ করে ছুটে আসল। “ডাকাতে ধরেছিল? কি বলিস রে?” ডাকাত না তো কি? বিকেলবেলায় সে জ্যোতিলালের বাড়ি পড়তে গিয়েছিল, সেখান থেকে ফিরবার সময়ে ডাকতেরা তাকে ধরে, তার মাথায় চাঁটি মেরে, তার নতুন কেনা শখের পিরানটিতে কাদাজলের পিচকিরি দিয়ে গেল। আর যাবার সময় বলে গেল, “চুপ করে দাঁড়িয়ে থাক্-নইলে দড়াম্ করে তোর মাথা উড়িয়ে দেব।” তাই সে ভয়ে আড়ষ্ট হয়ে রাস্তার ধারে প্রায় বিশ মিনিট দাঁড়িয়েছিল; এমন সময় তার বড়মামা এসে তার কান ধরে বাড়িতে নিয়ে বললেন, “রাস্তায় সং সেজে এয়ার্কি করা হচ্ছিল?” নবীনচাঁদ কাঁদ-কাঁদ গলায় বলে উঠল “আমি কি করব? আমায় ডাকাত ধরেছিল-” শুনে তার মামা প্রকাণ্ড এক চড় তুলে বললেন, “ফের জ্যাঠামি!” নবীনচাঁদ দেখল মামার সঙ্গে তর্ক করাই বৃথা- কারণ, সত্যিসত্যিই তাকে যে ডাকাতে ধরেছিল, এ কথা তার বাড়ির কাউকে বিশ্বাস করানো শক্ত! সুতরাং তার মনের দুঃখ এতক্ষণ মনের মধ্যেই চাপা ছিল। স্কুলে এসে আমাদের কাছে বসতে না বসতেই সে দুঃখ একেবারে উথলিয়ে উঠল।

যাহোক, স্কুলে এসে তার দুঃখ বোধ হয় অনেকটা দুর হতে পেরেছিল, কারণ, স্কুলের অন্তত অর্ধেক ছেলে তার কথা শুনবার জন্য একেবারে ব্যস্ত হয়ে ঝুঁকে পড়েছিল, এবং তার ঘামাচি, ফুসকুড়ি আর চুলকানির দাগটি পর্যন্ত তারা আগ্রহ করে ডাকাতির সুস্পষ্ট প্রমান বলে স্বীকার করেছিল। দুয়েকজন, যারা তার কনুয়ের আঁচড়টাকে পুরনো বলে সন্দেহ করেছিল, তারাও বলল যে হাঁটুর কাছে যে ছড়ে গেছে সেটা একেবারে টাটকা নতুন। কিন্তু তার পায়ের গোড়ালিতে যে ঘায়ের মত ছিল সেটাকে দেখে কেষ্টা যখন বলল, “ওটা তো জুতোর ফোস্কা,” তখন নবীনচাঁদ ভয়ানক চটে বলল, “যাও, তোমাদের কাছে আর কিচ্ছু বলব না!” কেষ্টাটার জন্য আমাদের আর কিছুই শোনা হল না।

ততক্ষণে দশটা বেজে গেছে, ঢং ঢং করে স্কুলের ঘণ্টা পড়ে গেল। সবাই যে যার ক্লাশে চলে গেলাম, এমন সময় দেখি পাগলা দাশু একগাল হাসি নিয়ে ক্লাশে ঢুকছে। আমরা বললাম, “শুনেছিস? কাল নবুকে ডাকাতে ধরেছিল।” যেমন বলা, অমনি দাশরথি হঠাত্‍‌ হাত-পা ছেড়ে বইটই ফেলে খ্যাঃ খ্যাঃ খ্যাঃ খ্যাঃ করে হাসতে হাসতে একেবারে মেঝের ওপর বসে পড়ল! পেটে হাত দিয়ে গড়াগড়ি করে, একবার চিত হয়ে, একবার উপুড় হয়ে, তার হাসি আর কিছুতেই থামে না! দেখে আমরা তো অবাক! পণ্ডিতমশায় ক্লাসে এসেছেন, তখনো পুরোদমে তার হাসি চলেছে। সবাই ভাবল, “ছোঁড়াটা খেপে গেল নাকি?” যা হোক, খুব খানিকটা হুটোপুটির পর সে ঠান্ডা হয়ে, বইটই গুটিয়ে বেঞ্চের উপর উঠে বসল। পণ্ডিতমশায় বললেন, “ওরকম হাসছিলে কেন?” দাশু নবিনচাঁদকে দেখিয়ে বলল, “ঐ ওকে দেখে।” পণ্ডিতমশায় খুব কড়ারকমের ধমক লাগিয়ে তাকে ক্লাসের কোনায় দাঁড় করিয়ে রাখলেন। কিন্তু পাগলার তাতেও লজ্জা নেই, সে সারাটি ঘন্টা থেকে থেকে বই দিয়ে মুখ আড়াল করে ফিক্‌ফিক্ করে হাসতে লাগল।

টিফিনের ছুটির সময়ে নবু দাশুকে চেপে ধরল, “কিরে দেশো! বড়ো যে হাসতে শিখেছিস!” দাশু বলল, “হাসব না? তুমি কাল ধুচুনি মাথায় দিয়ে কি রকম নাচটা নেচেছিলে, সে তো আর তুমি নিজে দেখনি? দেখলে বুঝতে কেমন মজা!” আমরা সবাই বললাম, “সে কি রকম? ধুচুনি মাথায় নচছিল মানে?” দাশু বলল “তাও জান না? ঐ কেষ্টা আর জগাই- ঐ যা! বলতে বারণ করেছিল!” আমি বিরক্ত হয়ে বললাম, “কি বলছিস ভালো করেই বল-না।” দাশু বলল, “কালকে শেঠেদের বাগানের পেছন দিয়ে নবু একলা একলা বাড়ি যাচ্ছিল, এমন সময়ে দুটো ছেলে- তাদের নাম বলতে বারণ- তারা দৌড়ে এসে নবুর মাথায় ধুচুনির মতো কি একটা চাপিয়ে তার গায়ের উপর আচ্ছা করে পিচকিরি দিয়ে পালিয়ে গেল!” নবু ভয়ানক দেগে বলল, “তুই তখন কি করছিলি?” দাশু বলল, “তুমি তখন মাথার থলি খুলবার জন্য ব্যাঙের মতো হাত-পা ছুড়ে লাফাচ্ছিলে দেখে আমি বললাম, ফের নড়বি তো দড়াম্ করে মাথা উড়িয়ে দেব। তাই শুনে তুমি রাস্তার মধ্যে কাঠ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলে, তাই আমি তোমার বড়োমামাকে ডেকে আনলাম।” নবীনচাঁদের যেমন বাবুয়ানা, তেমনি তার দেমাক- সেইজন্য কেউ তাকে পছন্দ করত না, তার লাঞ্ছনার বর্ণণা শুনে সবাই বেশ খুশি হলাম। ব্রজলাল ছেলেমানুষ, সে ব্যাপারটা বুঝতে না পেরে বলব, “তবে যে নবীনদা বলছিল তাকে ডাকাতে ধরেছে?” দাশু বলল, “দূর বোকা! কেষ্টা কি ডাকাত?” বলতে না বলতেই কেষ্টা সেখানে এসে হাজির। কেষ্টা আমাদের উপরের ক্লাসে পড়ে, তার গায়েও বেশ জোর আছে। নবীনচাঁদ তাকে দেখবামাত্র শিকারি বেড়ালের মতো ফুলে উঠল। কিন্তু মারামারি করতে সাহস পেল না, খানিকক্ষণ কট্‌মট্ করে তাকিয়ে সেখান থেকে সরে পড়ল। আমরা ভাবলাম গোলমাল মিটে গেল!

কিন্তু তার পরদিন ছুটির সময় দেখি, নবীন তার দাদা মোহনচাঁদকে নিয়ে হন্‌হন্ করে আমাদের দিকে আসছে। মোহনচাঁদ এন্‌ট্রান্স ক্লাসে পড়ে, সে আমাদের চাইতে অনেক বড়ো, তাকে ওরকমভাবে আসতে দেখেই আমরা বুঝলাম এবার একটা কাণ্ড হবে। মোহন এসেই বলল, “কেষ্টা কই?” কেষ্টা দূর থেকে তাকে দেখতে পেয়েই কোথায় সরে পড়েছে, তাই তাকে আর পাওয়া গেল না। তখন নবীনচাঁদ বলল “ওই দাশুটা সব জানে, ওকে জিঞ্জেসা কর।” মোহন বলল, “কি হে ছোকরা তুমি সব জান নাকি?” দাশু বলল, “না, সব আর জানব কোত্থেকে- এই তো সবে ফোর্থ ক্লাসে পড়ি, একটু ইংরিজি জানি, ভুগোল, বাংলা, জিওমেট্রি-” মোহনচাঁদ ধমক দিয়ে বলল, “সেদিন নবুকে যে কারা সব ঠেঙিয়েছিল, তুমি তার কিছু জান কি না?” দাশু বলল, ঠ্যাঙায় নি তো- মেরেছিল, খুব আস্তে মেরেছিল।” মোহন একটুখানি ভেংচিয়ে বলল, “খুব আস্তে মেরেছে, না? কতখানি আস্তে শুনি তো?” দাশু বলল, “সে কিছুই না- ওরকম মারলে একটুও লাগে না।” মোহন আবার ব্যঙ্গ করে বলল, “তাই নাকি? কি রকম মারলে পরে লাগে?” দাশু খানিকটা মাথা চুলকিয়ে তার পর বললে, “ঐ সেবার হেডমাস্টার মশাই তোমায় যেমন বেত মেরেছিলেন সেইরকম!” এই কথায় মোহন ভয়ানক চটে দাশুর কান মলে দিয়ে চীত্‍‌কার করে বলল, “দ্যাখ বেয়াদব। ফের জ্যাঠামি করবি তো চাবকিয়ে লাল করে দেব। তুই সেখানে ছিলি কি না। আর কি রকম কি মেরেছিল সব খুলে বলবি কি না?”

জানই তো দাশুর মেজাজ কেমন পাগলাটেগোছের, সে একটুখানি কানে হাত বুলিয়ে তার পর মোহনচাঁদকে ভীষণভাবে আক্রমণ করে বসল। কিল, ঘুঁষি, চড়, আঁচড়, কামড়, সে এমনি চটপট চালিয়ে গেল জে আমরা সবাই হাঁ করে তাকিয়ে রইলাম। মোহন বোধ হয় স্বপ্নেও ভাবে নি যে ফোর্থ ক্লাশের একটা রোগাছেলে তাকে অমনভাবে তেড়ে আসতে সাহস পাবে- তাই সে একেবারে থতমত খেয়ে কেমন যেন লড়তেই পারল না। দাশু তাকে পাঁচ সেকেণ্ডের মধ্যে মাটিতে চিতপাত্‍‌ করে ফেলে হাঁপাতে হাঁপাতে বলল, “এর চাইতেও ঢের আস্তে মেরেছিল।” এনট্রান্স ক্লাশের কয়েকটি ছেলে সেখানে দাড়িয়েছিল। তারা যদি মোহনকে সামলে না ফেলত, তা হলে সেদিন তার হাত থেকে দাশুকে বাঁচানোই মুস্কিল হত।

পরে একদিন কেষ্টাকে জিঞ্জেস করা হয়েছিল, “হাঁ রে, নবুকে সেদিন তোরা অমন করলি কেন?” কেষ্টা বলল, “ঐ দাশুটাই তো শিখিয়েছিল ওরকম করতে। আর বলেছিল, ‘তা হলে এক সের জিলিপি পাবি’!” আমরা বললাম, “কই, আমাদের তো ভাগ দিলি নে?” কেষ্টা বলল, “সে কথা আর বলিস কেন? জিলিপি চাইতে গেলুম, হতভাগা বলে কিনা ‘আমার কাছে কেন? ময়রার দোকানে যা, পয়সা ফেলে দে, যত চাস জিলিপি পাবি’।”

আচ্ছা, দাশু কি সত্যি সত্যি পাগল, না, কেবল মিচ্‌কেমি করে?

(সন্দেশ- চৈত্র, ১৩২৪ বঃ)

Category: সুকুমার রায়, সুকুমার রায়ের গল্প
পূর্ববর্তী:
« দানের হিসাব
পরবর্তী:
দাশুর খ্যাপামি »

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বাংলা লাইব্রেরি : উল্লেখযোগ্য বিভাগসমূহ

লেখক ও রচনা

অনুবাদ সাহিত্য

সেবা প্রকাশনী

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

কোরআন

হাদিস

ত্রিপিটক

মহাভারত

রামায়ণ

পুরাণ

গীতা

বাইবেল

বিবিধ রচনা

বাংলা ওসিআর

Download Bangla PDF

হেলথ

লাইব্রেরি – ফেসবুক – PDF

top↑