• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • লেখক
  • My Account
  • লেখক
  • My Account
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা PDF ডাউনলোড

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

০৪.রায়-নন্দিনী – চতুর্থ পরিচ্ছেদঃ পত্র

লাইব্রেরি » সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজী » রায়-নন্দিনী » ০৪.রায়-নন্দিনী – চতুর্থ পরিচ্ছেদঃ পত্র

চতুর্থ পরিচ্ছেদঃ পত্র

জ্যৈষ্ঠ মাস গত প্রায়। আষাঢ়ের ১৭ই তারিখে মোহররম উৎসব। সেই মোহররম উৎসবের পরেই স্বর্ণময়ীকে পিত্রালয়ে ফিরিতে হইবে। স্বর্ণময়ী শিবনাথের মুখে আরও সংবাদ পাইল যে, আগামী অগ্রহায়ন মাসেই ইদিলপুরের শ্রীনাথ চৌধুরীর সঙ্গে তাহার বিবাহের সম্বন্ধও পাকাপাকি হইয়াছে। রাজা এখন হইতেই বিবাহের আয়োজনে লিপ্ত। বিশেষ সমারোহ হইবে। শিবু অত্যন্ত আনন্দের সহিত স্মিতমুখে র্স্বণকে এই সংবাদ প্রদান করিলেও, বিবাহের কথায় স্বর্ণের বুক যেন ধড়স ধড়স করিতে লাগিল। তাহার বক্ষের স্পন্দন এত সজোরে চলিতে লাগিল যে, স্বর্ণের সন্দেহ হইল পাছে বা অন্যে শ্রবণ করে। স্বর্ণের মুখমণ্ডল ম্লান হইয়া গেল। শিবনাথ ভাবিল, পাত্র কিরূপ তাই ভাবিয়া তাই ভাবিয়া স্বর্ণময়ী চিন্তিত হইয়াছে। সুতারাং সে একটু কাশিয়া লইয়া গলাটা পরিস্কার হাসিতে হাসিতে বলিল, “দিদি! আর ভাবতে হবে না, সে পাত্র আমি নিজে দেখেছি। মহারাজও দেখেছেন। তাদের ঘর বেশ বুনিয়াদি। পাত্র দেখতে শুনতে সাক্ষাৎ কার্তিক ঠাকুর। বয়সও অল্প। তোমার সঙ্গে বেশ মানাবে। সেরূপ সুশ্রী সুন্দর পাত্র আমাদের এ অঞ্চলে আর নাই। তুমি একবার তাকে দেখলে ভুলে যাবে।” শিবনাথ আনন্দের সহিত তাহাকে সন্তুষ্ট ও খুশী করিবার জন্য এসব কথা বলিলেও স্বর্গের কর্ণে তাহা বিষের মত বোধ হইতে লাগিল। স্বর্ণ চুল বাঁধিবার ছল করিয়া সেখান হইতে উঠিয়া গেল। ঘরে যাইয়া একেবারে বিছানায় শুইয়া পড়িল। বালিশে সে অনেকক্ষণ মুখ লুকাইয়া কাঁদিল। তারপর মুখ ধুইয়া মন স্থির করিয়া অনেকক্ষণ পর্যন্ত চিন্তা করিল। সে বেশ চিন্তা করিয়া দেখিল, ঈসা খাঁ ব্যতীত তাহার জীবনের কোনও অস্তিত্ব নাই। সে দেখিল ঈসা খাঁকে তাহার হৃদয় এরূপভাবে ধরিয়া বসিয়াছে যে, সমস্ত দেবতা এমনকি ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বর পর্যন্ত এক মুহূর্তের জন্যও তাহার হৃদয়ের সিংহাসন হইতে ঈসা খাঁকে বিচ্যুত করিতে সমর্থ নহে। যুবতী অনেক ভাবিয়া শেষে ঈসা খাঁকে পত্রযোগে আত্মসমর্পণের কথা জানাইবার জন্যই মন স্থির করিল। ভাবী বিপদের গুরুত্ব স্মরণে এবং হৃদয়ের দুর্বিষহ যন্ত্রণায় লজ্জা দূরীভূত হইল। যুবতী পত্র লিখিয়া তাহা শিবনাথের দ্বারা খিজিরপুরে পাঠাইবার সংকল্প করিল। বলা বাহুল্য, পত্র পারস্য ভাষায় রচিত হইল। আমরা সেই অমৃত-নিস্যন্দিনী পারস্য ভাষায় রচিত পত্রের বঙ্গানুবাদ দিতেছিঃ

পত্র
হে মহানুভব! প্রাণ-রাজ্যের একমাত্র অধীশ্বর! তোমাকে কি বলিয়া সম্বোধন করিব, তাহা ভাষায় খুঁজিয়া পাইতেছি না। মানুষ মুখের ভাষা আবিক্সার করিয়াছে কিন্তু প্রাণের ভাষা অদ্যাপি অনাবিস্কৃত রহিয়াছে। প্রাণের একটি আবেগ প্রকাশ করিতে পৃথিবীর সমস্ত ভাষা যখন এক নিঃশ্বাসে ফুরাইয়া যায় তখন হে আমার প্রাণের আকাঙ্খিত প্রিয় দেবতা! এ হৃদয়ের অনন্ত ভাবোচ্ছ্বাস, অনন্ত দুঃখ-ব্যথা আমি কিরূপে প্রকাশ করিব। তবে আশা আছে, মহৎ ব্যক্তি তর্জনী প্রদর্শনেই চন্দ্র এবং গোলাপের একটি পাপড়িতেই প্রেমিক-হৃদয় দর্শন করেন।

হে নয়নানন্দ! হে আমার জীবনাকাশের প্রভাত-রবি। আমার ক্রটি ও বে-আদবী মার্জনা করিতে মর্জী হয়। হৃদয়ের নদী উচ্ছ্বসিত হইয়াছে, উহা অন্য নদীতে মিশিতে অক্ষম, উহা সমুদ্র ব্যতীত আর কাহাকেও আত্মসমর্পণ করিবে না। গোলাপ প্রস্ফুটিত হইয়াছে; কিন্তু খিজিরপুরের বুলবুল ব্যতীত আর কাহাকেও সুরভি দান করিবে না। শ্রীপুরের সরোবরে যে কমল ফুটিয়াছে, তাহার খিজিরপুরের দেবতার জন্যই ফুটিয়াছে। চরণ-প্রান্তে স্থাপন পাইবার অযোগ্য হইলেও তাহার প্রেম-দেবতা তাহাকে যোগ্যতা দান করিতে কুণ্ঠিত হইবেন না। কমলের অটল বিশ্বাস যে, তাহার দেবতা পরম হৃদয়বান্‌ দয়ালু। এ বিশ্বাস অটুট রাখিতে পাঠান দেবতা কি অগ্রসর হইবেন না? ইলিনীকে অনেক বুঝান হইল, সে স্পষ্ট বলিল, “আমি সূর্য ব্যতীত কাহারও পানে তাকাইব না।” চকোরকে অনেক বুঝান হইল, সে ক্ষুদ্র হইলেও গবর্ের সহিত বলিল, “চন্দ্র-সুধা ব্যাতীত আমি আর কিছু পান করিব না।”, চাতককে অনেক বুঝান হইল, সে বলিল, “আমি জলদের জল ব্যতীত অন্য জল পান করিব না।” প্রেমের নিকট সকলেই পরাস্ত, প্রেম চির-বিজয়ী। অধিনীর তাহাতে দোষ কি?

হে দেবতা!

উন্মাদিনী তাহার হৃদয়ের পাত্রে প্রীতির ফুল সাজাইয়া চরণপ্রান্তে উপস্থিত। এক্ষণে তাহার পূজা গ্রহণ করিলে দুঃখিনীর জন্ম-জীবন সার্থক হইবে। যদি অনাদর কর-ফিরাইয়া দাও তাহাও ভাল, একটি হৃদয় ভস্ম হইয়া অনন্তে মিশিবে। কিন্তু তাহাতে কি? দেবতার কোনও কার্যে দোষ নাই। বৈশাখের মেঘ ইচ্ছা করিলে গোলাপের হৃদয় বজ্রানলে দগ্ধ করিতে পারে, আবার ইচ্ছা করিলে তুষারশীতল সলিল-ধারায় তাহাকে স্নিগ্ধ করিতে পারে। সকলি মেঘের ইচ্ছা।

চরণপ্রান্তের ধূলি-আকাঙ্খিণী-

শ্রীপুরের মরু-তাপ-দগ্ধ গোলাপ

স্বর্ণময়ী।

স্বর্ণ পত্র লিখিয়া তাহার একপ্রান্তে মুসলমানী কায়দামতে একটু আতর মাখাইয়া পুরু লেফাফায় বন্ধ করিল। তৎপর স্বহস্তের কারুকার্যযুক্ত এবং নানা প্রকারের পার্শি বয়েত অঙ্কিত একখানি সুন্দর রেশমী রুমালে তাহা বেশ করিয়া বাঁধিয়া শিবনাথের হস্তে সমর্পণ করিল। শিবনাথ পত্র পাইয়া জিজ্ঞাসা করিল, “দিদি, এ কিসের পাত্র?” বাড়ীর আরও সকলে, বিশেষতঃ মালতী পুনঃ পুনঃ জিজ্ঞাসা করিল, এ কিসের পাত্রঃ স্বর্ণ গম্ভীরভাবে বলিল, “ঈসা খাঁ আমাকে সেই রাতে দস্যু-হস্ত থেকে উদ্ধার করে প্রাতঃকালে সাদুল্লাপুরে রওয়ানা করবার সময় বলেছিলেন, ‘সাদুল্লাপুরে তোমার মঙ্গল মত পহুঁছান-সংবাদ আমাকে জানিও।’ এতদিন লোকাভাবে তা জানাতে পারি নাই। বড়ই বিলম্ব হ’য়েছে। অত বড় লোক, বিশেষতঃ আমাকে যেরূপ বিপদ হ’তে রক্ষা ক’রেছেন, তাতে কাজটা বড়ই অন্যায় হ’য়েছে।”

স্বর্গের ছোট মামী পার্বতীসুন্দরী বিরক্তি প্রকাশ করিয়া বলিলেন, “ছি! তোমার কোন বিবেচনা নাই। বারভূঁইয়ার দলপতি ঈসা খাঁ মসনদ আলীর কাছে রাজরাজড়ারা যোড়হস্তে দাঁড়িয়ে থাকেন; তাঁকে তুমি এত বিলম্বে মঙ্গল-সংবাদ দিতেছ! তিনি যে তোমাকে মঙ্গল-সংবাদ দিতে বলেছেন, তা তোমার চৌদ্দপুরুষের ভাগ্য। শিবনাথ এতদিন এখানে নাই বা ছিল, আমাদের বাড়ীতে কি অন্য লোকজন ছিল না? রাজার মেয়ে হ’য়েছ, বুদ্ধিটা একুট গম্ভীর কর। এলে তুমি বৈশাখ মাসে, আর মঙ্গল-সংবাদ দিচ্ছ জ্যৈষ্ঠের শেষে!”

স্বর্ণ একটু অপ্রতিভ হইবার ভাণ করিয়া বলিল,-“কি জানি মামী, আমার বড় ভুল হয়ে গেছলো, আমি সে জন্যে পত্রে ক্রটি স্বীকার ক’রেছি।” স্বর্ণ এই বলিয়া শিবনাথকে বিদায় করিয়া দিল এবং বলিয়া দিল যে, “নবাব বাড়ীর কেহ জিজ্ঞাসা করিলে বলিস যে, “শ্রীপুরের রাজবাড়ী হ’তে আসছি।’ তা’হলে অনায়াসেই নবাবের কাছে যেতে পারবি। পত্রের উত্তর নিয়ে আসা চাই। উত্তর আনলে বখ্‌শিস পাবি।” শিবনাথ উপদিষ্ট হইয়া, ঘাড়ে লাঠি ফেলিয়া কোমরে চাপরাস বাঁধিয়া একরাশি বাবরী চুল ঝাঁকাইতে ঝাঁকাইতে খিজিরপুরের দিকে রওয়ানা হইল।

Category: রায়-নন্দিনী
পূর্ববর্তী:
« ০৩.রায়-নন্দিনী – তৃতীয় পরিচ্ছেদঃ মাতুলালয়ে
পরবর্তী:
০৫.রায়-নন্দিনী – পঞ্চম পরিচ্ছেদঃ খিজিরপুর প্রাসাদে »

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বাংলা লাইব্রেরি : উল্লেখযোগ্য বিভাগসমূহ

লেখক ও রচনা

অনুবাদ সাহিত্য

সেবা প্রকাশনী

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

কোরআন

হাদিস

ত্রিপিটক

মহাভারত

রামায়ণ

পুরাণ

গীতা

বাইবেল

বিবিধ রচনা

বাংলা ওসিআর

Download Bangla PDF

হেলথ

লাইব্রেরি – ফেসবুক – PDF

top↑