চুম্বন

কী করে জীবন পায় পূর্ণতা অথবা রাজহাঁসের মতন
হেঁটে যায় শূন্যে শূন্যে কোন্‌ পুণ্যে, জানেনি সে যুবা।

একটি নতুন স্বপন আরেক স্বপ্নের কানে কানে ক্ষণকাল
রূপালি গুঞ্জান তোলে। ভিন্ন গান যুবার মগজে কী সহজে
করে তৈরি ফোঁটা ফোঁটা আলোর নিবিড় স্তনবোঁটা!
অস্তিত্বের খাঁজে খাঁজে তার বয় মন্দাকিনী কখনও সখনও,
কখনওবা লাভাস্রোত প্রবল ভাসিয়ে নেয় দূরে
প্রথার দেয়াল আর পুরেনো চণ্ডীমণ্ডপ এক।
গন্ধকের ঝাঁজে-ভরা আস্তানায় চায় যুবক
যুগপৎ মুখ্য ঘ্রাণ এসেন্সের আর ক্ষয়লিপ্সু এক চৈতন্য-প্রসাদ!

আলোর নেশায় যুবা চেয়েছিলো, স্বপ্নের মতন ঠোঁটে কারো
চুম্বন আঁকবে গাঢ় ঘন ঘন। ব্যর্থতার ভীষণ কণ্টকাবৃত পথে
ঘুরে ঘুরে দ্যাখে কত উজাড় টিনের কৌটো, বিধ্বস্ত বাগানে
দোমড়ানো মোচড়ানো মোটা বাইক, দ্যাখে ঘড়িতে গোটানো
কত বেলা-অপবেলা, আস্তিন-তলায় খামখেয়াল শতেক।
সিগারেট-জোনাকির খেলা চলে অন্ধকারে, ভাঙা
পাখির বাসার মতো কিছু স্মৃতি থাকে পড়ে ক্লিষ্ট ত্র্যাসট্রেতে।

নানা ঘাটে ঘুরে দ্যাখে ক্লান্ত চোখে ঠোঁট নয়, ঠোটের মতোই
নরম বিষাক্ত পাতা ভয়ানক খাদ্যের কিনারা হয়ে ডাকে।
তাকে সারাক্ষণ; সে-ও দ্যায় সাড়া, আবার সম্বিৎ ফিরে এলে
কত মেয়েমানুষের কাদায় লুটিয়ে চলে যায়,
আঁকে না চুম্বন কারও ঠোঁটে, প্রায়শই পথিকের মুখে দ্রুত
উপদ্রবী অন্ধকার ছড়িয়ে বেড়ায়, যতবার
ইস্পাতি পিস্তল তার উগরায় ধোঁয়া, ততবার সত্তরের
বা খায় চুমো হিংস্র অবুরাগে তপ্ত কালো নলে।
আপন শহুরে পথে সে যুবক হঠাৎ যখন এক কোণে
আহত পশুর মতো পড়লো লুটিয়ে জবুথবু, ভুলে ক্ষিপ্র
কাঁধের ঝাঁকুনি, বড়ো একা হয়ে, মাতৃগন্ধময়
মাটিকে খেলো সে চুমো বারবার, তারপর বেবাক নিথর।
করে না শনাক্ত কেউ রক্তে ভাসে এক কৃষ্ণ তারা ছন্নছাড়া,
কোথায় যে ঘরবাড়ি তার, কি-বা জন্ম পরিচয়।