স্করপিয়ন

স্করপিয়ন

বাগদাদের এই মরু বিছেটিকে নিয়ে এখন যত দুশ্চিন্তা।
ঘুম নেই কারো। কত টন বোমায় বিছের বংশ ধ্বংস
হয় তা সমরবিশারদরা হিসেব করে দেখছেন। বিছেটি পাছার
হুল তুলে এক জায়গায় স্থির হয়ে বসে আছে। তার
সর্বাঙ্গের বিষ, মাথায় গোবর এবং কথাবার্তা
মহামতি লেনিনের মৃত্যুর আগে সর্বশেষ ভাষণের মত।
কে জানে কে বেশী বিপ্লবী? বাগদাদের স্করপিয়ন
না ভ্লাদিমির ইলিচ?

পৃথিবী এখন ঘড়িওয়ালা এবং দাড়িওয়ালা মানুষের ভয়ে
আফগান মেয়েদের মত সিঁটিয়ে আছে। সে তার
নিজের কক্ষপথ ছেড়ে অন্য কোন গ্রহের সাথে সংঘর্ষ
বাধিয়ে একটা কেয়ামতের আয়োজন করবে কি না
আল্লাহ্ মালুম।

আমরা পৃথিবীর কবিরা ঘড়িওয়ালা মানুষদের সময়ের
স্রোত গণনার এই বিশেষ নাজুক অবস্থা দেখে
উট পাখির মত বালিতে মুখ গুঁজে এবং কানে
আঙ্গুল দিয়ে অপেক্ষা করছি। আমাদের অপেক্ষা
মূলত আরম্ভটা দেখার জন্য।

সমস্ত ভবিষ্যদ্বাণী ব্যর্থ হয়েছে।

সমস্ত দ্বান্দ্বিক তত্ত্ব এখন উল্টোদিকে বইছে।
ডায়লেকটিক যদি মানুষের ক্ষুধা, তৃষ্ণা ও যৌনতার
কোন সুরাহা না করতে পারে তাহলে পৃথিবীতে
আরেকটি নতুন দার্শনিক তত্ত্ব ঘোড়ার ডিমের মত
আমাদের সামনে গড়িয়ে আসবে না কি?

আমরা কোনো ঘড়িকেই কালস্রোত গণনার
উপযোগী মনে করতে পারছি না। আমরা
কবিরা টিকটিক শব্দে ঘুমুতে অভ্যস্ত নই।
কারণ যে কোনো টিকটিক শব্দ দেয়ালে টিকটিকির
ঠিকঠিক ডাকের মত সমর্থন ধন্য হয়ে উঠতে পারে।
আমরা ধ্বংসের, মৃত্যুর, নৈঃশব্দের এবং শহরগুলোর
কংকাল নিয়ে কাব্য রচনা করতে চাই না।
কিন্তু কেউ বিশ্বাস করুক বা না করুক বোমার
ভয়ে বোরখা ছেড়ে দিগ্বিদিক জ্ঞানহারা আফগান
কিশোরীর মত পৃথিবী এখন কবিতার তৃষ্ণায় কাতর।

২৯-১১-০২

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *