ইদানীং সুটকেস

ইদানীং কেউ কারো রাখে না খবর বাস্তবিক, অনেকেরই
কাটে বেলা উদ্বেগে সন্ত্রাসে।
নিত্য সেব্য ট্রাঙ্কুলাইজার, সর্বক্ষণ এরা ওরা করে প্রশ্ন
নিজেকেই বারবার-সুটকেস আছে তো প্রস্তুত?
দেশ-দেশান্তরে
ঘোরে দলে দলে কত টুরিস্ট একালে, ভ্রমণেই
খোঁজে মুক্তি নানা পথে, খাটায় যে যার তাঁবু ঈষৎ হেলানো
দক্ষিণে কি বামে।

আমরা ছিলাম পাঁচজন, এক পাত্রের ইয়ার-
একজন যুদ্ধে গেছে কাটা; অন্যজন ঘোরে রাস্তায় রাস্তায়,
ময়লা জমেছে নখে ঢের, কুড়োয় কাগজ ছেঁড়াখোঁড়া, প্রায়
নগ্ন, পোকা-মাকড়ের সঙ্গে
বলে কথা দিনরাত হিজিবিজি, আঁধারের থুতনি নাড়িয়ে দেয়, আর
যে যুবার টান টান চিবুকে খাঁড়ির মতো খাঁজ
ছিলো, সে করেছে আত্মহত্যা এবং রাজহাঁসের
স্বপ্ন দেখতো যে,
সুটকেস হাতে মেতেছে সে সাগরযাত্রায়, হয়তো-বা পৌঁছে
গেছে দূর দেশে, শুধু আমি পড়ে আছি, প্রগাঢ় চুম্বন আঁকি
বিষাদের ঠোঁটে;
প্রতিধ্বনি ডেকে নিয়ে যায় দ্রুত নৈরাশ্যের টানেলে আমাকে।
এমন সময় এক, যখন সবাই ডামাডোলে ভীষণ অস্থির আর
যে যার আপনকার সুটকেস তৈরি রাখে, যেন
সহজেই যাত্রা করা চলে দূরে, অথচ কখনও
আমার নিজের সুটকেস ঠিক গোছানো হয় না।
বিদায় বিদায় ধ্বনি সুটকেসে, ইদানীং সুটকেস দেখে
দেখে বেলা যায়, ভাবি- যদি তার পেটের ভেতর
শার্ট কিংবা ইজেরের মতো থাকা যেত।
নিঃশ্বাসবিহীন।
কী-যে হয়, বারবার মেঝে ফুঁড়ে বহু ক্ষিপ্র হাত
গাছ গাছালির মতো ভীষণ জড়িয়ে ধরে আমার নিজস্ব সুটকেস।