০৫. আপনার সেক্রেটারীর মুখে শুনলাম

আপনার সেক্রেটারীর মুখে শুনলাম আসল ডকুমেন্টটা পেয়ে গিয়েছেন—কিরীটী বললে।

তাতেই তো আরো আমার মাথা ঘুরতে শুরু করেছে, রামস্বামী বললেন।

ঠিক যেখানে ছিল আয়নার সে-এ, ঠিক সেখানেই পেয়েছেন কি ডকুমেন্টটা?

আঁ, হ্যাঁ  তাই—একজাক্টলি হোয়ার ইট ওয়াজ! আরো নুতন করে গোলমাল দেখা। দিয়েছে ঐ দলিলটা আবার ফিরে পাওয়াতেই।

কেন?

প্রধান মন্ত্রীর ধারণা—

কি?

বুঝতে পারছেন না, যদিও রাদার ফ্যান্টাস্টিক—তাহলেও তার ধারণা, যারা হাতসাফাই করেছিল তারা নিশ্চয়ই তার একটা ব্লু-প্রিন্ট করে নিয়েছে।

কিরীটী মৃদুকণ্ঠে বললে, তার ধারণা মিথ্যা নাও হতে পারে। হয়ত সত্যিই সেটার একটা ব্লু-প্রিন্ট করে নিয়ে দলিলটা আবার যথাস্থানে রেখে গিয়েছে—কথাটা বলতে বলতে হঠাৎ যেন কিরীটী থেমে গেল।

মনে হলো তার মাথার মধ্যে হঠাৎ যেন কোন একটা চিন্তা এসে উঁকি দিয়েছে।

কি ভাবছেন মিঃ রায়?

কিছু না—আচ্ছা মিঃ রামস্বামী—

বলুন।

দলিলটা যে চুরি গিয়েছিল, ব্যাপারটা কে কে জেনেছিল বলুন তো?

ব্যাপারটা প্রথম থেকেই, বুঝতেই তো পারছেন, সিক্রেট ও কনফিডেনশিয়াল রাখা হয়েছে–

তবু কে কে জানত?

প্রধানমন্ত্রী, আমি আর আমার চীফ সেক্রেটারী প্রতাপ সিং ছাড়া কেউ জানে না।

প্রতাপ সিংকে নিশ্চয়ই আপনি খুব বিশ্বাস করেন?

ওঃ, শিয়োর। হি ইজ অ্যাবভ অল সাসপিসান।

হুঁ। তা বলছিলাম—

বলুন।

দলিলটা যখন পেয়ে গিয়েছেন, তখন কি আর আমার কোন প্রয়োজন আছে?

কি বলছেন মিঃ রায়, দলিলের কপি যখন করে নিয়েছে—সেটা পাচার হবেই।

আর একটা কথা

বলুন!

আমি যাবো আপনার পার্টিতে কিন্তু আমার পরিচয়টা যেন যথাসাধ্য গোপন থাকে।

আপনি যেমন বলবেন মিঃ রায় তেমনিই হবে—তারপরেই একটু থেমে মন্ত্রী মশাই বললেন, আপনার ব্যক্তিগত সিকিউরিটির জন্য যদি কোন প্রহরার প্রয়োজন বোধ করেন তো আমাকে জানাতে কোনরকম দ্বিধাবোেধ করবেন না মিঃ রায়।

না, সেরকম কিছু আপাতত আমার প্রয়োজন নেই।

গাড়ি চাই না আপনার?

না।

কোথায় উঠেছেন।

রায়সিনহা রোডে।

আপনার থাকার তো আমি ভাল ব্যবস্থা করেছিলাম।

তার প্রয়োজন নেই।

ঠিক আছে, কিছু দরকার হলে সিংকে বলবেন।

জানাবো। এখন তাহলে আমি উঠবো—

কিরীটী মন্ত্রীমশাইয়ের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে এলো।

বিকেলের দিকে সুব্রত এলো।

দেবেশ খনো অফিস থেকে ফেরেনি। শীতের বেলা ইতিমধ্যেই ম্লান হয়ে এসেছিল। দেবেশের বসবার ঘরে চা-পান করতে করতে দুজনার মধ্যে কথাবার্তা হয়।

তারপর তোর কি খবর বল্ সুব্রত?

খবর বিশেষ কিছু নেই—স্টেশন থেকে বেরুনো পর্যন্ত ওদের আমি ফলো করেছিলাম।

তারপর?

কিন্তু স্টেশনের বাইরে একটা গাড়ি ওদের জন্য অপেক্ষা করছিল—সে গাড়িতে চেপে হাওয়া হয়ে গেল।

ওদের অনুসরণ করতে পারলি না?

বিরাট সুপার লাকসারী কার—গাড়িটার নম্বর ছিল দিল্লীর।

হুঁ। তাহলে তারা সোজা দিল্লীতেই এসেছে-কতকটা যেন আত্মগত ভাবেই কথাটা বললে কিরীটী।

ঐ সময় বেয়ারা রামলাল এসে বললে, সাহেব অফিস থেকে ফোন করছেন।

কাকে?

রায় সাহেবকে ডাকছেন।

কিরীটী উঠে গিয়ে ফোনটা ধরল।

কে, কিরীটী?

হ্যাঁ, কি ব্যাপার?

গাড়ি পাঠিয়ে দিচ্ছি, চলে আয়।

কোথায়?

আয় না। কিরীটীর মনে হলো দেবেশ যেন কোনমতে কথা কটা বলেই ফোনের কানেকশনটা কেটে দিল।