• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • নতুন সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • পুরানো সব ক্যাটাগরি
  • My Account →
  • নতুন সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • পুরানো সব ক্যাটাগরি
  • My Account →
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

২.১০ তা বদলাবে এ আর বিচিত্র কি

লাইব্রেরি » আশাপূর্ণা দেবী » সুবর্ণলতা (১৯৬৭) » ২.১০ তা বদলাবে এ আর বিচিত্র কি

তা বদলাবে এ আর বিচিত্র কি?

পৃথিবীর খেলাই তো তাই।

না। যদি বদলাতো অম্বিকা, সেটাই হতো অস্বাভাবিক।

বদলায় নি। শুধু অল্পবুদ্ধিরা।

বুদ্ধির চাকার অভাবে ওরা একই জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকে। সুবালা তাদের দলের, তাই সুবালা সুখী। সুবালার সুখ কেউ কেড়ে নিতে পারবে না। সুবালা যদি দুঃসহ কোনো শোক পায়, সুবালা কেঁদে বলবে, ভগবান নিয়েছেন—

অতএব সুবালা সুখী হবে।

যারা কার্যকারোনের বিচার নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করতে বসে, যারা জগতের যত অনাচার অবিচার অত্যাচার, সব কিছুর বিরুদ্ধে তীব্র প্রশ্ন তুলতে বসে, তারাই জানে না সুখের সন্ধান।

কিন্তু সন্ধান কি তারা রাখতেই চায়? সুখকে কি তারা আরাধনা করে?

সুখেতে যে তাদের ঘৃণা!

নইলে সুবৰ্ণলতা—

হ্যাঁ, নইলে সুবৰ্ণলতার তো উচিত ছিল তার স্বামীর সুবিবেচনা আর পত্নী প্রেমের পরিচয়ে আহ্লাদে ডগমগ হওয়া।

স্ত্রীকে আকস্মিক আনন্দ দেবার রোমাঞ্চময় পরিকল্পনায় সে যে তার স্ত্রীর বাপের চতুর্থ উপলক্ষে মস্ত একটা যজ্ঞির আয়োজন করে ফেলেছে চুপিচুপি—এটা কি কম কথা নাকি? কম সুখের কথা?

কিন্তু সুবৰ্ণলতা হচ্ছে বিধাতার সেই অদ্ভুত সৃষ্টি, সুখে যার বিতৃষ্ণা, সুখে যার ঘৃণা।

তাই কৰ্মবীর জগু যখন অকস্মাৎ গোটা তিনেক মুটের মাথায় রাশীকৃত বাজার, ফলমূল, কলাপাতার বোঝা, মাটির খুরি-গ্লাস ইত্যাদি নিয়ে তার পিসতুতো ছোট ভাইয়ের বাড়িতে এসে ঢুকে হাঁক পাড়লো, কই রে, কে কোথায় আছিস? এসব কোথায় নামাবে দেখিয়ে দে—

তখন সুবৰ্ণলতা পাথরের মত মুখে এসে দাঁড়িয়ে একটা ধাতব গলায় বলে ওঠে, এসব কি?

দোভাষীর প্রয়োজন স্বীকার করে না।

গলা স্পষ্ট পরিষ্কার। শুধু মুখটা অন্য দিকে।

তবে জগুও অতি নীতি-নিয়মের ধার ধারে না। তাই বলে ওঠে, এই মরেছে! এ যে সেই যার বিয়ে তার মনে নেই, পাড়াপাড়শীর ঘুম নেই!—বলি তোমার বাপের ছোরাদ, আর তুমি আকাশ থেকে পড়ছে? চতুর্থর যোগাড়, দ্বাদশ ব্ৰাহ্মণের ভোজের রসদ, আর তোমার গিয়ে আত্মকুটুম্বও কোন না। ষাট-সত্তরজন হবে। একা আমার পিসির ডালাপালাই তো— জগু একটু উচ্চাঙ্গের হাসি হেসে কথা শেষ করে, তাদের একটু ভালোমন্দ খ্যাটের যোগাড়—

হঠাৎ থেমে যায় জগু।

ভাদ্রবৌয়ের মুখের দিকে তাকানো অশাস্ত্রীয় এটা জানা থাকলেও বোধ করি হঠাৎই তাকিয়ে ফেলেছিল সে। অথবা ভয়ঙ্কর একটা নীরবতা অনুভর করে তাকিয়েছিল কে জানে। তবে থেমে যাবার হেতুটা তাই। ওই মুখ!

মুখ দেখে ভয়ে প্ৰাণ উড়ে যায়। ওই বাজখাই লোকটার। তাড়াতাড়ি ডাক দেয়, পারু পারু, দেখ তোর মার শরীর-টরীর খারাপ হলো নাকি?

মুটেগুলো এতক্ষণ অপেক্ষান্তে রাগ-ভরে নিজেরাই স্থান নির্বাচন করে জিনিসগুলো নামাতে শুরু করে, এবং সারাও করে আনে। ইতিমধ্যে পারু এসে দাঁড়ায়, সমস্ত দৃশ্যটার ওপর একবার দৃষ্টিটা বুলিয়ে নিয়ে সেও অবাক গলায় বলে, এসব কি বড় জ্যাঠা?

এবার বিস্ময়-প্রশ্নের পালা জগুর।

তোদের কথায় আর আমি কি উত্তর দেব রে পারু, আমিই যে তাজ্জব বনে যাচ্ছি! বলি তোদের বাবা কি আমার সঙ্গে ন্যাকরা করে এল? তোদের বাড়িতে কোনো কাজকর্ম নেই? দাদামশাই দিদিমা মরে নি তোদের? সব ভুল?

পারু আস্তে বলে, ভুল নয়। তবে তার জন্যে এসব- গলাটা একটু নামায়, আস্তে বলে, জানি একটা মরণকে উপলক্ষ করে মানুষ এমন ঘটা লাগায়, কিন্তু জানেনই তো মাকে! মা এসব একেবারেই ইয়ে করেন না। তা ছাড়া–

পারুর কথা থেমে যায়।

সহসা পারুর মায়ের কণ্ঠ কথা কয়ে ওঠে, পারু ভাসুরিঠাকুরকে বল, যেন আমার অপরাধ না নেন। লোকে যা করে, আমার তার সঙ্গে মেলে না। আমি আমার জ্যান্ত মা-বোপকে কখনো একটি দুটি অল্প এগিয়ে দিই নি, আজ মরার পর আর তাদের ওপর খাঁড়ার মা দিয়ে অপমান করতে পারব না।–

সহসা একটা অভাবিত ব্যাপার ঘটে।

অন্তত পারুর তাই মনে হয়।

মায়ের চোখ দিয়ে ঝরঝর করে জল ঝরে পড়তে কবে দেখেছে পারু? সে চোখে তো শুধু আগুনই দেখে এসেছে জ্ঞানাবধি।

কিন্তু বেশিক্ষণ সে দৃশ্য দেখবার সুযোগ দেয় না পারুর মা, দ্রুতপায়ে চলে যায়। চলে যায় শুধু পারুকেই নয়, আরও মানুষকে পাথর করে দিয়ে।

পাগল-ছাগল জণ্ড আরও একবার শাস্ত্রীয়বিধি বিস্মৃত হয়ে ভদ্রবৌয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে ফেলেছিল, এবং বলা বাহুল্য সে মুখে অবগুণ্ঠনের খুব একটা বাড়াবাড়ি ছিল না। কাজেই দেখায় অসম্পূর্ণতা ছিল না।

পাগল-ছাগল বলেই কি হঠাৎ এত আঘাত খেল জগু? নাকি এরকম একখানা ভয়ঙ্কর দুঃখ হতাশা গ্লানি ক্ষোভ বেদনা বিদ্রোহের সম্মিলিত ছবি সে জীবনে আর দেখে নি বলেই?

স্তব্ধ হয়ে দু-এক মুহূর্ত তাকিয়ে থেকেই দ্রুতকণ্ঠে আমি এসব কিছু জানি না পারু, আমি এত সব কিছু জানি না। আমায় তোর বাবা গুচ্ছির টাকা হাতে গুঁজে দিয়ে বলে এল— তোমার বৌমার খুব ইচ্ছে, তাই আমি— বলেই কোঁচার খুঁটে চোখ চেপে একরাম ছুটে বেরিয়ে যায় জগু বাড়ির সদর চৌকাঠ পার হয়ে। কে বলবে, তার দু চোখেও সহসা জলের ধারা ঠেলে আসে কেন?

মুটে কটা এতক্ষণ ঝাঁকা খালি করে ক্লান্তি অপনোদন করছিল, বাবু ভাগলবা দেখে তারাও ছুটি দেয়। পারু তেমনি স্তব্দ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। পারু সহসা যেন আর এক জগতের দরজায় এসে দাঁড়ায়।

জ্ঞানাবধি শুধু মার তীব্ৰতা আর রুক্ষতাই দেখে এসেছে পারু, মার জীবনের প্রচ্ছন বেদনার দিকটা দেখে নি। আজ হঠাৎ মনে হলো তার, মার প্রতি তারা শুধু অবিচারই করে এসেছে।

কোনোদিন সেই অকারণ তীব্রতার কারণ অন্বেষণ করবার কথা ভাবে নি।

একথা ঠিক, বাবাকেও তারা ভাই-বোনেরা কেউ একতিলও শ্রদ্ধা করে না, তবু কদাচ কখনো একটু করুণা করে, অনুকম্পা করে। কিন্তু মাকে?

মার জন্যে কিসের নৈবেদ্য রাখা আছে তাদের অন্তরে?

ভাবিলো সে কথা পারু।

কারণ সহসা পারু তার মার একটা নির্জন ঘরের সামনে এসে দাঁড়ালো। যে ঘরের সন্ধান সে কখনো জানত না, যে ঘরের দরজা কখনো খোলা দেখে নি।… অসতর্ক একটা বাতাসে একটিবার খুলে পড়েছে সে দরজা, তাই থমকে দাঁড়িয়ে পড়েছে পারুল।

ওই জনহীন শূন্যঘরটা এখানে ছিল চিরকাল?

অথচ ওরা–

দিদি বকুল এসে দাঁড়ালো, বললো, দাদা বললো, তোকে যে কামিজটায় বোতাম বসিয়ে রাখতে বলেছিল, সেটা কোথায়?

পারুল চোখে অন্ধকার দেখলো।

পারুলের গলা শুকিয়ে এল।

আস্তে বললো, বোতাম বসানো হয় নি, ভুলে গেছি!

ভুলে গেছিস? সর্বনাশ! কোথায় সেটা?

মার ঘরে প্যাঁটরার ওপর।

সেরেছে, দাদা তো সেখানেই বসে!

বকুলেরও যেন হাত-পা ছেড়ে যায়।

হ্যাঁ, এমনি ভয়ই করে তারা দাদাদের।

অথবা ভয় করে আত্মসম্মান-হানির। জানে যে এতটুকু ত্রুটি পেলেই খিঁচিয়ে উঠবে তারা, ঘৃণা ধিক্কার আর শ্লেষ দিয়ে বলবে, এটুকুও পার নি? সারাদিন কি রাজকাৰ্য করা? নভেল পড়া আর বাবার অন্নজল ধ্বংসানো ছাড়া আর কোনো মহৎ কর্ম তো করতে দেখি না।

যেন অন্য অনেক মহৎ কর্মের দরজা চিনিয়ে দেওয়া হয়েছে তাদের। যেন দাদাদের জামায় বোতাম বসানো, কি ঘর গোছানো, তাদের জুতো ঝেড়ে রাখা, কি ফতুয়া গেঞ্জি সাবান কোচে রাখাই ভারী একটা মহৎ কর্ম!

ওরা কি ওদের মহৎ পুরুষজীবনের শুল্ক আদায় করে নেবার পদ্ধতিটা রপ্ত করে রাখছে। এই মেয়ে দুটোর ওপর দিয়ে?

এ কথা ভাবে পারুল।

তবু প্ৰতিবাদ করবার কথা ওঠে না।

প্রতিবাদের সুর শুনলে খিচুনি বাড়বে বৈ তো কমবে না।

কিন্তু আজ পারুল সহসা কঠিন হলো।

বললো, অত ভয় পাবার কি আছে? বলগে যা হয় নি, ভুলে গেছি।

ও বাবা, আমি পারবো না।

ঠিক আছে আমি যাচ্ছি—

যাচ্ছিল, যাওয়া হল না। প্ৰবোধ এসে ঢুকলো বাইরে থেকে এক বোতল ক্যাওড়ার জল হাতে করে।

প্ৰবোধের মুখ রাগে থমথমে।

এসেই কড়াগলায় বলে ওঠে, জগুদাকে কে কি বলেছে?

বলেছে।

বলবে। আবার কে কি?

পারুল বকুল দুজনেই অবাক হয়ে তাকায়। প্ৰবোধ আরো চড়া গলায় বলে, নিশ্চয়ই কিছু একটা বলা হয়েছে, বুড়োমদ একটা লোক চোখ মুছতে মুছতে বেরিয়ে যেত না। আমাকে বলে গেল, আমার দ্বারা কিছু হবে না, আমি তোর বামুনভোজনের যজ্ঞিশালায় নেই— শুধু শুধু এমন কথাটা বলবে এমন পরোপকারী মানুষটা? বলেছ, তোমরাই কেউ কিছু বলেছ। মায়ের শিক্ষায় শিক্ষিত হয়েছ তো সবাই, গুরুলঘু জ্ঞান করতে জানো না, গুরুজনদের মান-অপমানের ধার ধারো না। উদ্ধত অবিনয়ী এক-একটি রত্ব তৈরী হয়েছ তো!

বকুল এর বিন্দুবিসর্গও জানে না, তাই বকুল হাঁ করে চেয়ে থাকে। তবে পারুলও উত্তর দেয় না। কিছু। কারণ পারুল জানে, এসব কথার লক্ষ্যস্থল পারুল বকুল নয়, তাদের দাদারা।

এই স্বভাব বাবার, মুখোমুখি কিছু বলবার সাহস হয় না ছেলেদের, তাই এমন শব্দভেদী বাণ নিক্ষেপ!

ওরাও তাই শিখেছে।

জবাব দেয় না, ঠেস দিয়ে কথা বলে দেওয়ালকে শুনিয়ে।

ছেলে বলেই অবশ্য এতটা সাহস তাদের! মাকে (বোধ করি তুচ্ছ মেয়েমানুষ জাতটার একটা অংশ হিসেবে) তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য কটু-কাটব্য করে, আর ব্যাপকে অবজ্ঞা করে।

কিন্তু ওদেরই বা দোষ কি?

ওরা ওদের মা-বাপের মধ্যে শ্রদ্ধাযোগ্য কী দেখতে পাচ্ছে?

হয়তো শুধু মা-বাপ। এই হিসেবেই করতো ভয়-ভক্তি, যদি ওদের দৃষ্টিটা আচ্ছন্ন থাকতো অন্য অনেকের মত। কিন্তু তা হয় নি, সুবৰ্ণলতা অন্য পাঁচ জনের থেকে পৃথক করে মানুষ করতে চেয়েছিল তার সন্তানদের। তাদের খোলা চোখে দেখতে শেখাবার চেষ্টা করেছিল, ওরা সে চেষ্টা সফল করেছে। ওরা শুধু মা-বাপ বলেই ভক্তি-শ্রদ্ধা করবে। এমন নির্বোধের ভূমিকা অভিনয়ে রাজী নয়।

না করুক, সমতলেও নেমে আসুক!

প্রবোধ অন্তত তা নয়।

প্ৰবোধের ইচ্ছে করে, ছেলেমেয়েরা তার মুখে মুখে চোটপাট জবাব করুক, সেও তার সমুচিত জবাব দেবার সুযোগ পাক। কিন্তু তা হয় না! ছেলেরা তো দূরের কথা, মেয়েরা পর্যন্ত যেন কেমন অবজ্ঞার চোখে তাকায়।

সে দৃষ্টিতে আগুন জ্বলে উঠবে না মাথার মধ্যে?

তাই এখনও আগুন জ্বালা কণ্ঠে চীৎকার করে প্রবোধ, কেউ কিছু বলে নি বললেই মানবো আমি? ওই অবোধ-অজ্ঞান মানুষটা কখনো মান-অভিমানের ধার ধারে না, সে হঠাৎ এতটা অভিমান করে–

বাপের কণ্ঠ-মাধুর্যে আকৃষ্ট হয়ে ভায়েরা এসে দাঁড়ালো, একটু থমকে বলে উঠলো, কি ব্যাপার? বাড়িতে ভোজটোজ নাকি? পারুর বিয়ে বুঝি?

পারুর বিয়ে!

হতবাক প্ৰবোধ বলে, পারুর বিয়ে? তোমরা জানবে না সেটা?

বাঃ, এই তো জানিছি। ভাঁড় খুরি এসে গেছে!

বললো ভানু।

তার সেজকাকার ভঙ্গীতে।

প্ৰবোধ অসাহায়ের মত এদিক-ওদিক তাকালো! বললো, এইভাবে জানবে? বাঃ কেন, আর কোনো ঘটনা ঘটে নি সংসারে? তোমাদের মার চতুর্থীর বামুন-ভোজন–

তাই নাকি? ওঃ!

ভানু ভুরু কোঁচকায়।

ভানুর সেই ভুরুতে ব্যঙ্গের হাসি ছায়া ফেলে।

প্ৰবোধ হঠাৎ সেই দিকে তাকিয়ে চেঁচিয়ে ওঠে, তা এতে হাসবার কি হলো? হাসবার কি হলো? যে মানুষটা তোমাদের সংসারে প্রাণপাত করছে, তার একটা পাওনা নেই সংসারের কাছ থেকে?

কি উত্তর ভানুদিত কে জানে!

সহসা কোন ঘর থেকে যেন বেরিয়ে এল। তার মা। খুব শান্ত আর স্থির গলায় বললো, তোমাদের এই সংসার থেকে আমার যা প্ৰাপ্য পাওনা, সেটা তাহলে শোধ হচ্ছে? অনেক ধন্যবাদ যে শোধের কথাটা। তবু মনে পড়েছে তোমার। কিন্তু ওতে আমার রুচি নেই, সেই কথাটাই জানিয়ে দিতে এলাম তোমায়। এসব আয়োজন করার দরকার নেই, করা হবে না।

করা হবে না!

প্ৰবোধ যন্ত্রচালিতের মত বলে, আজ হবে না?

না। আজ না কোনদিনই না!

এরপরও যদি রেগে না ওঠে। প্ৰবোধ, কিসে আর তবে রেগে উঠবে?

অতএব রেগেই বলে, হবে না বললেই হলো? রাজ্যসুদ্ধ লোকজনকে নেমন্তন করে এলাম—

নেমন্তন্ন করে এলে? সুবৰ্ণলতা স্তব্ধ হয়ে তাকায়। কিন্তু প্ৰবোধ ভয় পায় না, প্ৰবোধ এমন স্তব্ধতা অনেক দেখেছে। তাই প্ৰবোধ বলে, এলাম তো! বিরাজ বলেছে, সে সক্কলের আগে আসবে–আর ও-বাড়ির সবাই একটু দেরি করবে, কারণ—

থাক, কারণ শুনতে চাই না। লোকজন আসে। ভালই, তোমরা থাকবে। আমি অন্য কোথাও গিয়ে থাকবো।

তুমি অন্য কোথাও গিয়ে থাকবে?

প্ৰবোধ আর পারে না, খিঁচিয়ে উঠে বলে, বাপের ছোরাদটা তাহলে আমিই করবো?

হঠাৎ সুবৰ্ণ ঘুরে দাঁড়ায়। কাতর গলায় বলে, আমায় এবার তুমি ছুটি দাও। আর মন্দ কথা বলিও না। আমায়। আর পারছি না আমি।

চলে যাচ্ছিল দ্রুতপায়ে, ঠিক এই মহামুহূর্তে ঝি এসে খবর দেয়, বাবুর বোনের দেশ থেকে অম্বিকেবাবু না কে একজন এসেছে, খবর দিতে বললো!

Category: সুবর্ণলতা (১৯৬৭)
পূর্ববর্তী:
« ২.০৯ অনেকগুলো বছর জেলের ভাত খেয়ে
পরবর্তী:
২.১১ তারপর সুবৰ্ণলতা »

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বাংলা লাইব্রেরি : উল্লেখযোগ্য বিভাগসমূহ

লেখক ও রচনা

অনুবাদ সাহিত্য

সেবা প্রকাশনী

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

কোরআন

হাদিস

ত্রিপিটক

মহাভারত

রামায়ণ

পুরাণ

গীতা

বাইবেল

বিবিধ রচনা

বাংলা ওসিআর

Download Bangla PDF

হেলথ

লাইব্রেরি – ফেসবুক – PDF

top↑