ধর্ম ও দর্শন
বিজ্ঞান
সাহিত্য
1 of 2

গ্যালিলিও গ্যালিলি (১৫৬৪-১৬৪২) – যাঁর গাণিতিক পদ্ধতি আধুনিক বিজ্ঞানের ভিত্তি

গ্যালিলিও গ্যালিলি (১৫৬৪-১৬৪২) – যাঁর গাণিতিক পদ্ধতি আধুনিক বিজ্ঞানের ভিত্তি

সনাতনপন্থি ভ্রান্ত ধারণার বিরুদ্ধে বিজ্ঞানের পরীক্ষিত সত্যকে প্রচার করতে গিয়ে কুসংস্কার ও ধর্মান্ধতার যাঁতাকলে যাঁরা পিষ্ট হয়েছেন, জ্যোতির্বিজ্ঞানী গ্যালিলিও গ্যালিলি ( Galileo Galilei) তাঁদের অন্যতম।

এই মহান সত্যের সাধক গ্যালিলিওর জন্ম ১৫৬৪ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ইতালির পিসা নগরীতে। বাবা ভিনসেনজিও গ্যালিলি ছিলেন পুরাণ, সাহিত্য, সঙ্গীত এবং গণিতশাস্ত্রে আগ্রহী। তেরো বছর বয়সে তাই পুরাণশাস্ত্রে পাঠ নেওয়ার জন্য গ্যালিলিওকেও যেতে হয়েছিল স্থানীয় ভালামব্রোসার বেনেডিকটিন সম্প্রদায়ের গির্জায়।

কিন্তু ছোটবেলা থেকেই গ্যালিলিওর দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হওয়ায় বাবা বলতেন, তোমার বেশি পড়শোনার দরকার নেই, তা হলে চোখ আরও খারাপ হয়ে যাবে।

এরপর ১৫৮১ সালে তাঁকে ডাক্তারি পড়ার জন্য ভর্তি করানো হল পিসা বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিন্তু ডাক্তারি পড়ার চেয়ে তাঁর বেশি ঝোঁক ছিল দর্শনশাস্ত্রের দিকে। ডাক্তারির নীরস বইগুলো তাঁর মোটেও ভালো লাগত না।

পারিবারিক নানা গোলমালে তাঁদের আর পিসাতে থাকা হলো না। ফলে বন্ধ হলো গ্যালিলিওর ডাক্তারি পড়া। তাঁরা এলেন ফ্লোরেন্স শহরে। এখানে এসে তাঁদের পারিবারিক বন্ধু গণিত শাস্ত্রের এক অধ্যাপকের কাছে তিনি পড়তে শুরু করলেন গণিত আর পদার্থবিদ্যা।

১৫৯২ সালে তিনি বদলি হয়ে গেলেন পাদুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে গিয়েই শুরু হয় তাঁর প্রকৃত বিজ্ঞান গবেষণার কাজ। তখনও চলছে টলেমির যুগ।

তাঁর ছিল প্রচুর জানার আগ্রহ। কোটি সত্য আর কোটি মিথ্যে এসবকিছু জানার প্রবল আগ্রহ তাঁকে সর্বক্ষণ তাড়িয়ে বেড়াত। মিথ্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত যে-কোনো চিরাচরিত প্রথার প্রতি তাঁর ছিল বিতৃষ্ণা। তিনি চাইতেন অজ্ঞানতার অন্ধকার ভেদ করে সত্যের আলো প্রকাশিত হোক।

তাঁর মনে ছিল অজস্র প্রশ্ন। তাঁর প্রশ্নের সঠিক উত্তর কেউ দিতে না পারলে তিনি ভয়ানক রেগে যেতেন। এ নিয়ে ছাত্র-শিক্ষক সকলের সাথে তাঁর প্রায়ই ঝগড়া বেধে যেত। ফলে বাড়তে থাকে তাঁর শত্রুর সংখ্যা। তিনি বলতেন, যা মিথ্যে, যার কোনো ভিত্তি নেই, তা মেনে নেওয়া যায় না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের বিপরীতমুখি স্রোতের মুখেও তিনি দ্রুত সামনের দিকে এগুতে লাগলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন উৎসাহী ছাত্র বলে তাঁর নাম ছড়িয়ে পড়তে থাকে চারদিকে।

এই সময়ে অস্টিলিও রিচি নামের একজন অঙ্কশাস্ত্রবিদের সঙ্গে তাঁর পরিচয় ঘটে। তিনি ইউক্লিডের জ্যামিতি পড়াতেন। শিক্ষক রিচির পড়া গ্যালিলিও বসে বসে গভীর মনোযোগ দিয়ে শুনতেন। আর তা-ই শুনতে শুনতেই তাঁর মনেও জ্যামিতি পাঠ করার আগ্রহ জন্মায়। পরে তিনি রিচির কাছে ইউক্লিডের জ্যামিতি পড়তে শুরু করেন। ক্রমে ডাক্তারি পড়ার চেয়ে অঙ্কশাস্ত্রই তাঁকে বেশি আকৃষ্ট করতে থাকে। এ ছাড়া তিনি পদার্থবিদ্যা ও অঙ্কশাস্ত্র পাঠের দিকেও আগ্রহী হয়ে পড়েন।

ধীরে ধীরে তাঁর চিন্তাধারায় কোপারনিকাসের প্রভাব পড়তে থাকে। তিনি একই সাথে অ্যারিস্টটলের মতবাদের বিচার-বিশ্লেষণ করতে থাকেন এবং তাঁর সমালোচনা তো সমালোচনাতেও মুখর হয়ে ওঠেন।

১৫৮৩ সালের কথা। গ্যালিলিও তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। বাবা-মায়ের আদেশমত নিয়মিত গির্জায় যান প্রার্থনা করার জন্য। এ-রকমই একদিন তিনি গির্জায় বসে প্রার্থনা করছিলেন। এমন সময় তাঁর চোখ পড়ল গির্জার ছাদে ঝোলানো বাতিটির দিকে। তিনি দেখলেন, বাতাসের ধাক্কায় বাতিটি দুলছে।

,

ব্যাপারটা তেমন উল্লেখযোগ্য কিছু ছিল না। কিন্তু এই সামান্য দৃশ্যটিই তাঁর মনে গভীর দাগ কেটে বসে। তিনি ডাক্তারি পড়তে গিয়ে দেখেছিলেন স্বাভাবিক অবস্থায় নাড়ির স্পন্দন একইভাবে চলতে থাকে। তিনি একইভাবে লক্ষ্য করলেন, গির্জার ছাদে ঝোলানো বাতির প্রত্যেকটি দোলনেও একই সময় লাগে। বাতাসের গতিবেগ বাড়লে কিংবা কমলে এই দোলনের কোনো হেরফের হয় না। তিনি তখন একটি সুতোর সাথে একটি ঢিল বেঁধে তাকে দেয়ালে ঝুলিয়ে দিয়ে দোলাতে লাগালেন। ঠিক একই ব্যাপার ঘটল।

এর থেকেই তিনি চিন্তা করে আবিষ্কার করলেন দোলন যন্ত্র। পরে এই সূত্রকে কাজে লাগিয়েই ক্রিস্টিয়ান সুইগ্যান্স আবিষ্কার করেন সঠিক মাপের দোলন ঘড়ি।

১৫৮৯ সালে তিনি পিসা বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি নিলেন গণিতশাস্ত্রের অধ্যাপক হিসেবে। তখন তাঁর মাত্র ২৫ বছর বয়স। কিন্তু এই বয়সেই তিনি অধ্যাপক হিসেবে প্রচুর জনপ্রিয়তা অর্জন করলেও। দুর্নামও রটল পাশাপাশি। তিনি অ্যারিস্টটলের মতবাদে বিশ্বাস করেন না। প্রায় দু হাজার বছর ধরে যে মতবাদ চলে আসছে, তারই বিরোধিতায় কিনা তিনি সোচ্চার!

যেমন অ্যারিস্টটলের একটি মতবাদ ছিল, দুটো ভারি বস্তু উঁচু স্থান থেকে নিক্ষেপ করলে বেশি ওজনের বস্তুটি তাড়াতাড়ি মাটিতে পড়বে। শুধু তা-ই নয়, ভারি বস্তুটি ছোটটি অপেক্ষা ওজনে যে অনুপাতে বেশি ঠিক সেই অনুপাতে সেটা দ্রুত মটিতে পড়বে। কিন্তু গ্যালিলিও এই মতবাদকে সমর্থন না করে বলেছিলেন, ভারি বা কম ওজনের সব বস্তুই একই সময় পড়বে। একথা তিনি শুধু মুখেই বলেননি, গির্জার হেলানো মিনারে চড়ে সকলের চোখের সামনে পাথর নিক্ষেপ করে প্রমাণ করেছিলেন, তাঁর মতবাদই সত্য। এমনি করে তিনি পুরনো মতবাদকে ভ্রান্ত বলে প্রমাণ করতে থাকেন।

এতে করে একদিকে যেমন তাঁর প্রচুর নামডাক হয়, অনেকে যেমন তাঁর বুদ্ধিমত্তার প্রশংসা করতে লাগলেন, তেমনি অনেকে তাঁকে নিন্দা এবং ঈর্ষাও করতে লাগলেন। ফলে শুরু হল দলাদলি। এরই ফলে মাত্র তিন বছরের মাথায় অর্থাৎ ১৫৯১ সালে তাঁকে ছাড়তে হলো পিসা বিশ্ববিদ্যালয়।

আর ওই একই বছর মারা গেলেন তাঁর বাবা। ফলে সংসারের সমস্ত দায়িত্ব এসে চাপল তাঁর কাঁধে।

টলেমি বলেছিলেন, পৃথিবী স্থির, সূর্যসহ সমস্ত গ্রহ তাকে ঘিরে আবর্তিত হচ্ছে। অ্যারিস্টটলও তা-ই বলে গেছেন। এই মতাবাদ চলে আসছে দু হাজার বছর ধরে। কিন্তু গ্যালিলিও এ মতে বিশ্বাসী হতে পালেন না। তাঁর বিশ্বাস নিকোলাস কোপারনিকাসের মতবাদে। কোপারনিকাসের মতো তিনিও বিশ্বাস করেন, সৌরজগতে সূর্যই স্থির কেন্দ্রবিন্দু। পৃথিবীসহ সমস্ত গ্রহ সূর্যকেই প্রদক্ষিণ করছে। সব ধরনের বিরোধিতা সত্ত্বেও গ্যালিলিও তাঁর নতুন মতবাদ নিয়ে গবেষণা করে যেতে লাগলেন। তাঁর এই মতবাদ প্রচুর সাড়া জাগাতে সক্ষম হলেও এক শ্রেণীর প্রাচীনপন্থি লোক তাঁর বিরুদ্ধাচরণ শুরু করল একেবারে আঁটঘাট বেঁধে। তাঁর মতে তারা বিশ্বাস আনতে পারলেন না।

১৬০৯ সালে ইংল্যান্ডে একদল ছেলে কাচের লেন্স নিয়ে মজা করতে গিয়ে দেখল একটি নলের দুপাশে দুটো কাচের লেন্স রেখে তার মধ্য দিয়ে তাকালে দূরের জিনিসকে অনেক বড় দেখায়। এই খবর পৌঁছুল গ্যালিলিওর কাছে। তিনি জিনিসটি নিয়ে আরও পরীক্ষানিরীক্ষা করে আবিষ্কার করে ফেললেন দূরবীক্ষণ যন্ত্র।

এবার তিনি প্রত্যক্ষভাবে আকাশ-গবেষণার যন্ত্র পেলেন হাতে। আকাশের অনেক বিস্ময়কর সব দৃশ্য তিনি তাকিয়ে দেখলেন। পৃথিবীর মানুষ এতদিন যা দেখার কল্পনাই করতে পারেনি। তিনি তা-ই দেখার সৌভাগ্য অর্জন করলেন।

খালি চোখে আকাশে দেখা যায় মাত্র ছয় হাজার নক্ষত্র। কিন্তু দূরবীন দিয়ে দেখলে দেখা যায় ছায়াপথের ঘন কুয়াশার আলোয় হলুদের গুঁড়োর মধ্যে লুকনো লক্ষ লক্ষ উজ্জ্বল দানার মতো নক্ষত্ৰ।

বিশ্বের মানুষের মধ্যে তিনিই সর্বপ্রথম এই অপূর্ব দৃশ্য অবলোকন করেন। দেখেন, চন্দ্রপৃষ্ঠ মসৃণ নয়, এতে আছে অনেক বড় বড় পাহাড় আর সাগর। শনির চারপাশে আছে বলয়। বৃহস্পতির আছে তিন-তিনটে চাঁদ।

গ্যালিলিও তাঁর দেখা এসব নতুন গ্রহ-নক্ষত্রের নতুন নামকরণ করতে চেয়েছিলেন। গ্যালিলিওর টাকার প্রয়োজন থাকায় তিনি তাঁর আবিষ্কৃত নক্ষত্রগুলোর নাম দিতে চেয়েছিলেন টাকার বিনিময়ে। কিন্তু ফ্লোরেন্সের ডিউক, ফ্রান্সের রাজা এবং মহামান্য পোপ তাঁর মতে সায় দিতে রাজি হননি। তিনি প্রস্তাব করেছিলেন, তাঁরা যদি তাঁকে প্রচুর অর্থ দেন, তা হলে তিনি এই নক্ষত্রগুলোর নাম তাঁদের নামে করবেন। ফলে তাঁদের নাম অমর হয়ে থাকবে। কিন্তু তাঁরা রাজি হলেন না। যদি হতেন, তা হলে আজ হয়তো আকাশের অনেক গ্রহ-নক্ষত্রের নামই ভিন্নরকমের হতো।

তিনি নক্ষত্রের গতিবিধি লক্ষ্য করে সমুদ্রের দ্রাঘিমাংশ নির্ণয়েরও একটি পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। তাঁর উদ্ভাবিত এই তত্ত্বটি তিনি স্পেনের রাজা ও হল্যান্ডের স্টেট্স্ জেনারেলের কাছে অর্থের বিনিময়ে বিক্রি করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু খদ্দের পাওয়া যায়নি।

গ্যালিলিও ১৬১০ সালে তাঁর লেখা নক্ষত্রজগতের ওপর একটি বই রচনা করেন। ‘নক্ষত্র দূত’ (Siderius Nuntis) নামের এই গ্রন্থটি প্রকাশের সাথে সাথে চারদিকে বিপুল আলোড়নের সৃষ্টি হয়। টলেমি অ্যারিস্টটলের ভ্রান্ত মতবাদ তিনি বাতিল করে দেন তাঁর এই গ্রন্থের ভেতর দিয়ে।

গ্যালিলিওই প্রথম বস্তুর গতির গাণিতিক তত্ত্ব আবিষ্কার করেন। বৃহৎ পদার্থের গতিবিধি নির্ণয়ে বলগুলো কীভাবে স্থির অবস্থায় থাকে এবং বলের সমতার বিচ্যুতি ঘটলে পদার্থ কীভাবে গতিশীল হয় অর্থাৎ Statics and Dynamics—এই দুটো বিষয়ের গাণিতিক তত্ত্বের তিনিই জনক। তাঁর ‘Tow New Science’ গ্রন্থে এসব গবেষণার ফলাফল প্রকাশিত হয়।

১৬৩২ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর সবচেয়ে আলোড়ন সৃষ্টিকারী গ্রন্থ ‘Two chief systems of the world’। মহামান্য পোপের নামে উৎসর্গীকৃত এই গ্রন্থটি প্রকাশের পরপরই তাঁর শত্রুর সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। শত্রুরা প্রচার করতে থাকে, গ্যালিলিওর মতবাদ বাইবেলে বর্ণিত আদর্শ বা মতবাদের সম্পূর্ণ পরিপন্থি।

ফলে শুরু হলো তাঁর বিরুদ্ধে গোপন যড়যন্ত্র। রোমের ধর্ম বিচারসভা ইনকুইজিশন রায় দিল যে, সূর্য যে জগতের কেন্দ্রস্বরূপ এটি অযৌক্তিক এবং ধর্মের পরিপন্থি। তাঁরা আরো রায় দিলেন, পৃথিবীর আহ্নিক গতি বা বার্ষিক গতি সম্পর্কে গ্যালিলিওর ধারণাও বা, প্রকৃত ধর্মবিশ্বাসের বিরোধী।

পোপ আদেশ দিলেন ইতালির সম্রাট কাউনাল বেলারমিন যেন গ্যালিলিওকে এইসব ধর্ম বিরোধী প্রচার থেকে বিরত থাকার জন্য আদেশ দেন। তারপরও তিনি তাঁর প্রচারণা বন্ধ না করেন, তবে তাঁকে যেন কারারুদ্ধ করা হয়।

বেলারমিন গ্যালিলিওকে ডেকে বোঝালেন। বোঝালেন এই বলে, এইসব বিষয় নিয়ে শক্তিশালী ধর্মযাজকদের সাথে তর্কে না যাওয়াই ভালো। গ্যালিলিও পরে অবশ্য বাধ্য হয়ে নতি স্বীকার করেন।

ইতিমধ্যে পোপ এবং বেলারমিন দুজনেই মারা গেলেন। এলেন এক নতুন পোপ। কিন্তু তিনি আরো কট্টরপন্থি। তাই তাঁর সাথেও গ্যালিলিওর শুরু হলো নতুন করে মতবিরোধ। শেষ তিনি কারারুদ্ধ হলেন।

বিচারের নামে প্রহসন করে ধর্মান্ধরা তাঁকে স্বীকার করাতে বাধ্য করালেন যে, যা কিছু তিনি কথোপকথনের ছলে লিখেছেন, সে সবই তাঁর বৃথা গর্বের, অজ্ঞতার এবং অসতর্কতার নিদর্শন। তাঁর মুখ দিয়ে বলানো হলো, তিনি কোপারনিকাসের মতে বিশ্বাস ত্যাগ করেছেন। তিনি বাধ্য হয়ে বিচারকদের সামনে অনুশোচনাজ্ঞাপক শাদা পোশাক পরে হাঁটু গেড়ে বসে রইলেন। এতকিছু করার পরও ধর্মান্ধরা তাঁকে মুক্তি দিল না। প্রথমে তারা তাঁকে নজরবন্দি করে। তারপর ফ্লোরেন্স শহরে তাঁর নিজের বাড়িতে তাঁকে করা হলো অন্তরীণ। এই গৃহবন্দি অবস্থাতেই নানা দুঃখকষ্ট আর অভাব-অনটনের ভেতর দিয়ে মহান এই বিজ্ঞানীর কেটে যায় জীবনের বাকি নটা বছর।

এরপর ১৬৪২ সালের ১৯ জানুয়ারি সত্তর বছর বয়সে এই মহামানবের মৃত্যু হয়। ধর্মান্ধদের যাঁতাকলে গ্যালিলিওর জীবন পিষ্ট হলেও তাঁর প্রচারিত সত্য আজও বেঁচে আছে সগৌরবে। তাঁর প্রচারিত তত্ত্ব আজ অযুত নক্ষত্রের মতোই জ্বলজ্বলে। প্রমাণিত হয়েছে, পাশবিক শক্তি দিয়ে কখনও সত্যকে চাপা দেওয়া যায় না।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *