ধর্ম ও দর্শন
বিজ্ঞান
সাহিত্য
1 of 2

পিথাগোরাস (আনু. ৫৮২–৫০৭ খ্রি. পূ.) – তিনি বলেছিলেন—পৃথিবী গোলাকার

পিথাগোরাস (আনু. ৫৮২–৫০৭ খ্রি. পূ.) – তিনি বলেছিলেন—পৃথিবী গোলাকার

আদি যুগের কথা। তখন জ্ঞান এবং বিজ্ঞান কোনোটাই বেশি অগ্রসর হয়নি। মানুষের জানার পরিধি ছিল খুবই কম। মানুষ তখন বিশ্বাস করত, আমাদের পৃথিবী বুঝি সমতল। খালি চোখে অবশ্য সমতল বলেই মনে হয়। সাধারণ চোখে দেখেই তারা মনে করত, তাদের এই চোখে দেখার মতোই হয়তো সমতল এই পৃথিবী।

কিন্তু পৃথিবীর মানুষের মধ্যে যিনি প্রথম এর প্রতিবাদ করে বলেছিলেন, না, পৃথিবী সমতল নয়, গোলাকার। আমরা এর সবটা একসাথে খালিচোখে দেখতে পাই না বলেই একে সমতল বলে মনে হয়। এই প্রতিবাদকারী ব্যক্তিই ছিলেন প্রাচীন বিশ্বের শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী ও গণিতজ্ঞ। আদি বিজ্ঞানী থ্যালিসের পরই করতে হয় তাঁর নাম। তিনি আর কেউ নন পিথাগোরাস (Pythagoras)।

তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন গ্রিসের সামোস দ্বীপে। তাঁর বাল্যশিক্ষা হয় স্থানীয় এক পণ্ডিতের কাছে। তারপর যুবক বয়সে উচ্চশিক্ষার জন্য যান মিশর ও ব্যাবিলনে। সেখানেই তিনি অঙ্কশাস্ত্রের ওপর বিস্তর পড়াশোনা করেন।

শিক্ষাশেষে আবার ফিরে আসেন নিজের জন্মভূমি সামোস দ্বীপে।

দেশে প্রত্যাবর্তনের পর তিনি একসময় রাজনীতির সাথেও জড়িয়ে পড়েন। তাঁদের সামোস দ্বীপ ছিল পোলিক্র্যাটস রাজার অধীনে। তিনি ছিলেন অত্যাচারী। তার অনাচারের বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়েই তিনি রাজার কুনজরে পড়ে যান। ফলে তাঁকে ছাড়তে হয় জন্মভূমি। রাজার কোপদৃষ্টি থেকে আত্মরক্ষা করার জন্য সামোস থেকে পালিয়ে যান দক্ষিণ ইতালির ক্রোটন শহরে। এখানেই তিনি বসবাস করেন ৫৩০ থেকে ৫২০ খ্রিস্ট পূর্বাব্দ পর্যন্ত।

এখানে এসেই তিনি স্থাপন করেন একটি বিদ্যালয়। তিনি তাঁর অনুসারীদের নিয়ে শুরু করেন একই সাথে অঙ্কশাস্ত্রের অধ্যয়ন ও পাঠদানের কাজ।

তাঁর স্কুলে শুধু অঙ্কশাস্ত্র নয়, পাশপাশি ধর্মশাস্ত্র, দর্শন এবং রাজনীতি বিষয়েও পাঠদান এবং আলোচনা করাহত। অল্পকালের মধ্যেই তাঁর স্কুল থেকে প্রচারিত রাজনৈতিক দর্শন অভিজাত মহলে প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয়।

তিনি রাজনীতিতে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার বিরোধী ছিলেন। তাঁর মতে, রাজনীতিতে কেবল একচেটিয়া অধিকার থাকবে হল সমাজের অভিজাত শ্রেণীর। এতে সমাজের সাধারণ মানুষ অংশ নিতে পারবে না। কারণ, দেশের শাসনক্ষমতা নিয়ন্ত্রিত হবে অভিজাত শ্রেণীর লোকদের দ্বারা। ফলে স্বাভাবিক কারণেই দেশের অভিজাত মহল তাঁর আদর্শকে আন্তরিকভাবে গ্রহণ করেন। প্রায় দু দশক কাল পর্যন্ত পিথাগোরাস অঙ্কশাস্ত্রের পাশাপাশি তাঁর রাজনৈতিক মতাদর্শও প্রচার করেন।

কিন্তু একসময় তাঁর এই রাজনৈতিক আদর্শের বিরুদ্ধেই সৃষ্টি হয় প্ৰতিবাদ আন্দোলন। ৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে তাঁর স্থাপিত বিদ্যালয়ে হামলা চালায় দেশের গণতন্ত্রমনা সাধারণ মানুষেরা। তাঁর বিদ্যালয়টিকে তছনছ করে দেওয়া হয়। এই সংঘর্ষে পিথাগোরাসের কয়েকজন অনুসারী মারা পর্যন্ত যান।

এই অসস্থায় পিথাগোরাস নিজেও তাঁর স্কুল ছেড়ে পালিয়ে চলে যান মেটাপন্টাম নামের এক শহরে। তিনি বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষের পদ থেকেও অবসর গ্রহণ করেন।

এরপর তিনি আরও বিশ বছর জীবিত ছিলেন। এই অবসর সময়টা তিনি একান্তই নিভৃতে বসে কাটিয়েছেন কেবল অঙ্কশাস্ত্রের ওপর গবেষণা করে।

তারপর এই মেটাপন্টাম শহরেই তিনি ৫০৭ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মৃত্যুবরণ করেন।

পিথাগোরাসের শিক্ষাদান পদ্ধতি ছিল বিচিত্র ধরনের। তিনি এ জন্য ব্যবহার করতেন একটি বিশেষ পদ্ধতি। এর নাম ছিল অ্যাকৌসমাতা, যার অর্থ ‘শ্রবণযোগ্য বিষয়াদি’।

শ্রবণযোগ্য বিষয় ছিল কতগুলো সংকেতমাত্র। এই সংকেত যারা শ্রবণ করত তাদের বলা হতো অ্যাকৌসমাতিকোই অর্থাৎ শ্রবণকারী। সহজ কথায় এরা হলো ছাত্র।

গুরু বা শিক্ষকের ওষ্ঠাধর থেকে যে সংকেত নির্গত হবে, শিক্ষার্থীরা তা-ই শ্রবণ এবং হৃদয় দিয়ে তা অনুভব করবে।

এজন্য চাই শ্রেণীকক্ষে নিরবছিন্ন নীরবতা। শিক্ষার্থীরা কোনো রকম প্রশ্ন করতে পারবে না। শুধু শিক্ষকের কথা শুনে যাবে এবং বোঝার চেষ্টা করবে। এখানে কোনো প্রশ্ন নেই, কোনো বিতর্ক নেই।

এমনি করে ছাত্রদের জ্ঞানার্জনের পথে অগ্রসর হবার প্রশিক্ষণ দেয়া হতো। এই প্রশিক্ষণে যে ছাত্র সাফল্য লাভ করত, সে ম্যাথেম্যাটিকোই কোর্স পাস করেছে বলে ধরে নেওয়া হতো।

এই কোর্সে পাস করার পরই কেবল একজন ছাত্র ক্লাসে শিক্ষকের কাছে প্রশ্ন করার যোগ্যতা অর্জন করত এবং তাঁর সাথে বিতর্কেও অবতীর্ণ হতে পারত।

আধুনিক পণ্ডিতরা মনে করেন, পিথাগোরাসের এই শিক্ষাপদ্ধতি ছিল অচল এবং অর্থহীন। কারণ, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর মধ্যে যদি প্রশ্নের আদান-প্রদান করার সুযোগ না থাকে, তাহলে সেখানে কখনওই শিক্ষার পূর্ণতা আসে না। আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গিতে হয়তো কথাটি সত্যি। কিন্তু পিথাগোরাস তাঁর এই শিক্ষাপদ্ধতির প্রবর্তন করেছিলেন প্রাচ্যের ধর্মীয় শিক্ষার আদর্শ, পবিত্রতা এবং শৃঙ্খলাবোধকে অনুসরণ করে।

প্রাচ্যের জৈন ও বৌদ্ধধর্মের শিক্ষাপদ্ধতিও ঠিক এ-রকমেরই। এখানে শিষ্যরা কেবল গুরুবাক্য শ্রবণ করবে এবং তা অনুভব করবে। গুরুর সাথে বিতর্কে যাবে না, যতক্ষণ না তার শিক্ষালাভের ক্ষেত্রে পরিপক্বতা আসে। এতে শিক্ষকের প্রতি শিক্ষার্থীর শ্রদ্ধাবোধ অটুট থাকে ও শিক্ষকের আভিজাত্য বৃদ্ধি পায়। আধুনিক কালের অঙ্কশাস্ত্র। শব্দটিরও আদি সৃস্টিকর্তা পিথাগোরাস। তাঁর বিদ্যালয়ে ব্যবহৃত ম্যাথেম্যাটিকোই শব্দ থেকেই আধুনিক ম্যাথেম্যাটিক্স্ শব্দটির উৎপত্তি।

তবে তখনকার সময়ে ম্যাথেম্যাটিক্স্ বলতে কেবল অঙ্কশাস্ত্রকেই বোঝানো হতো না। তখন ম্যাথিম্যাটিক্স্ শব্দের অর্থ ছিল উচ্চ পর্যায়ের বিশেষ জ্ঞান। এই অর্থ পরে পরিবর্তিত হতে হতে অঙ্কশাস্ত্রে এসে দাঁড়িয়েছে।

হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন জন্মান্তরবাদে বিশ্বাস করে থাকেন। এই বিশ্বাস পিথাগোরাসেরও ছিল। তিনিও বিশ্বাস করতেন, মানুষের আত্মা অমর, আত্মার কোনো মৃত্যু নেই। আত্মা এক দেহ ছেড়ে অন্য দেহে প্রবেশ করে। তার বারবার হয় নবজন্ম। অবশ্য, তাঁর এই বিশ্বাস ও দর্শনের পক্ষে তিনি কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দিতে পারেননি।

তিনি তাঁর নিজের জন্মান্তর গ্রহণ সম্পর্কেও বলে গেছেন বেশিকিছু মজার কথা। তিনি বলতেন, স্বর্গের দেবতা পোসিডনের আশীর্বাদ লাভ করেছেন তিনি। এই আশীর্বাদের বলেই তিনি তাঁর পূর্বজন্মের কথাও বলতে পারেন।

পূর্বজন্মে তিনি পোসিডনের পুত্ররূপে গ্রিসে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তখন তাঁর নাম ছিল ইউফরবস। তিনি ট্রয়ের যুদ্ধে অংশ নিয়ে আহতও হয়েছিলেন।

এর পরের বার তিনি জন্ম নিয়েছিলেন এক জেলের ঘরে। তারপর সাত শো বছর ছিলেন স্বর্গবাসী। এবার তিনি পৃথিবীতে এসেছেন অ্যাপোলোদেবের পুত্ররূপে।

তিনি বলতেন, মানুষ যদি এই জীবনে সৎকর্ম ও সৎজীবন-যাপন করে, তবে তার জন্মও উন্নত হবে। আর খারাপ কাজ করলে তাকে নিকৃষ্ট প্রাণী হয়ে জন্মাতে হবে।

পিথাগোরাসকেই বলা হয় আধুনিক বিজ্ঞানের জন্মদাতা। জ্যামিতিক সূত্রের আবিষ্কার বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে তাঁর সব থেকে বড় অবদান। তাঁর মৃত্যুর দুশো বছর পর অ্যারিস্টটল নিজেও একথা স্বীকার করে গেছেন।

পিথাগোরাসের জ্যামিতিক আবিষ্কারগুলো কী ছিল, তার কিছুটা নমুনা দেওয়া যেতে পারে।

আজ আমরা জ্যামিতি বইতে পড়ছি—একটি সমকোনী ত্রিভুজের বৃহত্তম বাহুর ওপর অঙ্কিত বর্গক্ষেত্র অপর দুটো বাহুর ওপর অঙ্কিত বর্গক্ষেত্রের চেয়ে বড় হবে। আজ এই সূত্রটিকে সহজ বলে মনে হলে কী হবে, সেই আড়াই হাজার বছর আগে বিজ্ঞানের আদি যুগে এই সূত্রে আবিষ্কার কম বড় কৃতিত্বের কথা ছিল না।

তিনিই সর্বপ্রথম আবিষ্কার করেছিলেন যে, পৃথিবী গোলাকার। তিনি কেমন করে জানলেন পৃথিবী গেলাকার, তার অবশ্য কোনো যুক্তিসঙ্গত প্রমাণ তিনি দেখাতে পারেননি। তিনি যা বলেছিলেন, তার সবই ছিল অনুমাননির্ভর।

পিথাগোরাসের সময় বিশ্বজগৎ সম্পর্কে একটি সর্বজনস্বীকৃত ভ্রান্ত ধারণা প্রচলিত ছিল। সে সময় মনে করা হতো, পৃথিবী এই বিশ্বজগতের কেন্দ্রস্থলে অবস্থান করছে। আর বিশ্বের যাবতীয় গ্রহ, নক্ষত্র, সূর্য সবকিছু পৃথিবীকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হচ্ছে।

পিথাগোরাসও তাই বিশ্বাস করতেন। তাঁর ধারণা ছিল, গোলক বা বৃত্ত হলো সবচেয়ে চমৎকার জিনিস এবং গ্রহ সর্বোত্তম জ্যামিতিক আকারবিশিষ্ট। আর পৃথিবী যদি মহাবিশ্বের কেন্দ্র হয় এবং নক্ষত্র ও সূর্য যদি পৃথিবীকে বৃত্তাকার পথেই প্রদক্ষিণ করে, তবে নিশ্চয়ই পৃথিবীর আকারও গোলাকার। এটা ছিল পিথাগোরাসের অনুমাননির্ভর ধারণা বা বিশ্বাস।

তখনকার সব পণ্ডিত এবং বিজ্ঞানী তাঁর এই অনুমানকে সত্য বলে মেনেও নিয়েছিলেন। তিনি আরও বিশ্বাস করতেন, সংখ্যাই হলো বিশ্বজগতের আদি উপাদান।

একটি মজার ব্যাপার হলো, পিথাগোরাসের প্রায় সবগুলো বৈজ্ঞানিক তত্ত্বই ছিল রহস্যময়তায় ঘেরা। তিনি যা বলতেন, তা যুক্তি দিয়েই বলতেন। কিন্তু সেইসব মৌখিক যুক্তির কোনো বাস্তব ও বিজ্ঞানভিক্তিক প্রমাণ হাজির করতে পারতেন না। আর তাঁর এই অস্পষ্টতার জন্য সেইকালে এবং আজও তিনি মিস্টিক বা অতীন্দ্রিয়বাদী বিজ্ঞানী হিসেবে পরিচিত।

সংখ্যা কেমন করে পদার্থরূপে ব্যক্ত হতে পারে তা কারও বোধগম্য হবার কথা নয়। কিন্তু তিনি সেটা বলে গেছেন, বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি সহকারে ব্যাখ্যাও করেছেন। আধুনিক বিজ্ঞানে এটা প্রতিভাত হয়েছে এক নতুন তাৎপর্য নিয়ে। বিশ্বজগতের স্বরূপ বিশ্লেষণ করার ক্ষেত্রে আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানে সংখ্যা সত্যিকারভাবেই একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ, বস্তুজগৎ সম্পর্কে কোনো রাশির পরিমাণ বের করতে গেলেই সংখ্যা দিয়ে তা নির্ণয় করতে হয়।

যেমন, আধুনিক বিজ্ঞানী লর্ড কেলভিন বলেছেন, “তুমি যার কথা বলছ, সেটা যখন তুমি মাপতে এবং সংখ্যায় প্রকাশ করতে পার, তখন তার সম্পর্কে তুমি কিছুটা হলেও জেনেছ বলা যায়। কিন্তু যখন তাকে সংখ্যা দিয়ে প্রকাশ করতে পারবে না, তখন তোমার সে-জ্ঞান নতুন, নগণ্য এবং অসন্তোষজনক বলে মনে হবে।”

আধুনিক বিজ্ঞানীরা বিশ্বজগতের সমস্ত ঘটনার অন্তরালে যেসব নিয়মের সন্ধান পেয়েছেন, সেগুলোও তাঁরা গাণিতিক আকারে প্রকাশ করেছেন। এসব সংখ্যার সমাবেশ মাত্র। যেমন, শূন্যস্থানের ভেতর দিয়ে তরঙ্গের আকারে আলোর ও বিদ্যুতের সঞ্চালন, উষ্ণ পদার্থ থেকে ইলেকট্রনের নিঃসরণ ইত্যাদি ঘটনার তাৎপর্য ব্যাখ্যার জন্য সূক্ষ্ম গাণিতিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রয়োজন। আধুনিককালের আরেক বিজ্ঞানী জেমস জিনস বলেছেন, বিশ্বের গঠন দেখে মনে হয় বিশ্ববিধাতা নিশ্চয়ই একজন মস্ত বড় অঙ্কশাস্ত্রবিদ।

পিথাগোরাস বলতেন, সংখ্যাই হলো বিশ্বজগতের প্রকৃত ভাষা। শুধু সংখ্যা দিয়েই বিশ্বজগতের সমস্ত কিছুকে প্রকাশ করা যায়। তিনি দেখিয়েছেন, একটি বিন্দু (.) হলো একটি নির্দিষ্ট স্থান। আবার দুটো বিন্দুকে যোগ করলে হয় সরল রেখা। তিনটি বিন্দুকে যোগ করলে হয় একটি ত্রিকোণ ক্ষেত্র বা ত্রিভুজ। চারটি বিন্দুকে যোগ করলে হয় চতুর্ভুজ বা বর্গক্ষেত্র।

এই সংখ্যা দিয়ে আরও জিনিসকে বোঝানো যায়, অর্থাৎ মানুষের মাথা হল একটি (১), চোখ দুটি (২), আঙুলের জোড়া তিনটি (৩), প্রত্যঙ্গ ৪টি (দুটো হাত, দুটো পা), প্রতি হাতে-পায়ে আছে পাঁচ সংখ্যা (পাঁচটি করে আঙুল) ইত্যাদি। এভাবে তিনি সংখ্যা দিয়ে মানুষের দেহকে বিশ্লেষণ করেছেন।

তিনি সংখ্যার পিরামিড তৈরির কৌশলও দেখিয়েছেন। যেমন ৪ ( = ৩ + ১), ১০ ( = ৬ + ৩ + ১), ২০ ( = ১০ + ৬ + ৩ + ১) ইত্যাদি। তিনি তাঁর সংখ্যা-পিরামিডের আরও নমুনা দিয়েছেন। যেমন, ১, ৩, ৬ ও ১০ সংখ্যার পিড়ামিড। তার চিত্ররূপটা হলো

এ-রকমের :

পিড়ামিড

তিনি এধরনের সংখ্যা নিয়ে আরও বহু ধরনের মজার কাণ্ড করে দেখিয়েছেন। কে জানে পিথাগোরাসের কাছেও বিশ্বরহস্য এমনি করেই ধরা পড়েছিল কি না! এই মহান বিজ্ঞানীর মৃত্যু হয় ৫০৭ খ্রিস্টপূর্বাব্দে। আজও বিজ্ঞানের জগতে তিনি উজ্জ্বল নক্ষত্রবিশেষ।

পিথাগোরাসের মহান দুটি রচনাকর্মের নাম যথাক্রমে ‘আলমাগেস্ট’’ (Almagest) ও ‘জিওগ্রাফিক্যাল আউটলাইন’ (Geographical Outline)।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *