১৬. সাময়িক পত্র

যোড়শ অধ্যায় – সাময়িক পত্র

বাংলার সাময়িক পত্রগুলিকে নিম্নলিখিত সাতটি ভাগে বিভক্ত করা যায় :

১। বাংলা ভাষায় প্রকাশিত। (ক) মাসিক; (খ) সাপ্তাহিক; (গ) দৈনিক;

২। ইংরেজি ভাষায় প্রকাশিত। (ক) মাসিক; (খ) সাপ্তাহিক; (গ) দৈনিক;

৩। উর্দু ও অন্য ভারতীয় ভাষায় প্রকাশিত।

১. বাংলা ভাষায় প্রকাশিত

(ক) মাসিক পত্র

আলোচ্য যুগের প্রথমে তিনখানি বাংলা মাসিক পত্রিকা বিশেষ প্রসিদ্ধি লাভ করিয়াছিল–’প্রবাসী’, ‘ভারতবর্ষ’ ও ‘সাহিত্য’। পরবর্তীকালে ‘সবুজপত্র’, মানসী, ‘মর্মবাণী’ ও ‘নারায়ণ’ অল্পকালের জন্য খ্যাতিলাভ করিয়াই লুপ্ত হইয়াছিল। এই সমুদয় ও অন্যান্য মাসিক পত্রে সুচিন্তিত নানাবিষয়ক জ্ঞানগর্ভ প্রবন্ধ, (ধারাবাহিক) উপন্যাস, ছোটগল্প, কবিতা, গ্রন্থপরিচয় বা গ্রন্থসমালোচনা ও জ্ঞাতব্য নানাবিধ সংবাদ ইত্যাদি পরিবেশিত হইত। কয়েকটি পত্রিকার বিস্তৃত বিবরণ দিতেছি।

প্রবাসী

 ইঁহার সম্পাদক রামানন্দ চট্টোপাধ্যায় (১৮৬৫-১৯৪০) একজন বিশিষ্ট সাংবাদিক ছিলেন। প্রথমজীবনে তিনি দাসী’ (১৮৯২), মুকুল’ (১৮৯৫), প্রদীপ প্রভৃতি পত্রিকা সম্পাদনা করেন। পরে (১৯০১ সনে) প্রবাসী পত্রিকা প্রকাশিত করেন। এই পত্রিকা প্রকাশের সংকল্পের সময় তিনি বাংলাদেশের বাহিরে এলাহাবাদে থাকিতেন, এইজন্য পত্রিকার নাম রাখেন প্রবাসী।

রামানন্দবাবু মৃত্যুকাল পর্যন্ত ইহার সম্পাদক ছিলেন। পরে তাঁহার পুত্র কেদারনাথ চট্টোপাধ্যায় ইহার সম্পাদক হন। প্রসিদ্ধ ঔপন্যাসিক চারুচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় বহুকাল ইহার সহকারী সম্পাদক ছিলেন।

পূর্বোক্ত বিষয়বস্তুগুলি ছাড়াও প্রবাসী’-র কয়েকটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখযোগ্য।

প্রথমতঃ, প্রতি সংখ্যায় ‘বিবিধ-প্রসঙ্গ’ নামে নানা প্রসঙ্গ ও সমস্যা, বিশেষতঃ রাজনীতিক ও সামাজিক বিষয়ে স্বাধীন অভিমত প্রকাশ ও সূক্ষ্ম সমালোচনা খুবই

মূল্যবান বলিয়া সর্বসাধারণ মনে করিত।

দ্বিতীয়তঃ, রবীন্দ্রনাথের অনেক উপন্যাস, কবিতা, নাটক ‘প্রবাসী’তে প্রথম প্রকাশিত হইত।

তৃতীয়তঃ, ‘বেতালের বৈঠক’। ইহাতে সাহিত্য, দর্শন, বিজ্ঞান, শিল্প, বাণিজ্য প্রভৃতি বিষয়ে প্রশ্ন ও পরবর্তী সংখ্যায় তাহার উত্তর দেওয়া হইত।

চতুর্থতঃ, দেশ বিদেশের কথা’। ইহাতে ভারতবর্ষ ও বিদেশের সমসাময়িক ঘটনার আলোচনা করা হইত।

পঞ্চমতঃ, কষ্টিপাথর’। বিভিন্ন সাময়িক পত্রিকা হইতে সঙ্কলন।

ষষ্ঠতঃ, উৎকৃষ্ট রঙ্গীন চিত্র ও ভাস্কর্যের নিদর্শন। প্রবাসীর প্রতি সংখ্যায় প্রায় দেড়শত পৃষ্ঠা থাকিত।

ভারতবর্ষ

প্রসিদ্ধ নাট্যকার ও সঙ্গীত-রচয়িতা দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের কথা এই গ্রন্থের তৃতীয় খণ্ডে বলা হইয়াছে। তিনি ডেপুটি ম্যাজিষ্ট্রেটের পদ হইতে অবসর গ্রহণ করিয়া একটি উচ্চশ্রেণীর বাংলা মাসিক পত্রিকা প্রতিষ্ঠার কল্পনা করেন এবং সুপ্রসিদ্ধ গ্রন্থপ্রকাশক গুরুদাস চট্টোপাধ্যায়ের পুত্র ইহার প্রকাশনের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। কিন্তু অকস্মাৎ দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের মৃত্যু হওয়ায় জলধর সেনের সম্পাদনায় ভারতবর্ষ’ প্রকাশিত হইল (১৩২০ সাল)। জলধর সেন (১৮৬০ ১৯৩৯) সাহিত্যজগতে সুপ্রসিদ্ধ না হইলেও সুপরিচিত ছিলেন এবং প্রবাসচিত্র’ (১৩০৬), ‘হিমালয়’ (১৩০৭) প্রভৃতি গ্রন্থ এবং গল্প ও উপন্যাস রচনা করিয়া খ্যাতিলাভ করেন। তিনি সাপ্তাহিক ‘গ্রামবার্তা’, ‘বসুমতী’, ‘হিতবাদী’, ‘সুলভ সমাচার’ প্রভৃতি পত্রিকার সম্পাদনা বা সম্পাদনের সহায়তা করেন। মৃত্যুকাল পর্যন্ত সুদীর্ঘ ছাব্বিশ বৎসর তিনি ভারতবর্ষ’ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন।

গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, কবিতা, চিত্র, গ্রন্থপরিচয় প্রভৃতি ছাড়াও ইহাতে ‘বিবিধপ্রসঙ্গ’-শীর্ষক আলোচনা হইত, কিন্তু তাহাতে রাজনীতিক ও সামাজিক সমস্যার অংশ খুব কমই থাকিত এবং ইহা ‘প্রবাসী’ পত্রিকার অনুরূপ আলোচনার মত জনপ্রিয় বা লোকশিক্ষার সহায়ক ছিল না। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কোন কোন গল্প ও উপন্যাস এই পত্রিকায় প্রথম প্রকাশিত হয়। ভারতবর্ষের প্রতি সংখ্যায় প্রায় ১৭৫ পৃষ্ঠা ছাপা হইত।

সাহিত্য

১২৯৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এই পত্রিকার সম্পাদক সুরেশচন্দ্র সমাজপতি (১৮৭০-১৯২১) বঙ্গসাহিত্যে একেবারে অপরিচিত ছিলেন না। নানা বিষয়ক তাঁহার কয়েকখানি গ্রন্থ এককালে খ্যাতিলাভ করিয়াছিল। সাহিত্য পত্রিকার প্রকাশনকালে (১২৯৭ সাল) এরূপ উচ্চশ্রেণীর পত্রিকা খুব বেশী ছিল না। ইহার বৈশিষ্ট্য ছিল “তীক্ষ ব্যঙ্গাত্মক, সরস ও নির্ভীক সাহিত্য সমালোচনা”। তৎকালে ইহা খুবই আদৃত হইত এবং বিশেষ করিয়া নূতন লেখকের উৎকর্ষের মানদণ্ড বলিয়া বিবেচিত হইত। ইহার সুফল কুফল দুইই ছিল। এই গ্রন্থের লেখক নিজেকে বাংলাভাষায় রচনায় অনভ্যস্ত ও অসমর্থ জানিয়াও এক বিশিষ্ট সুহৃদের সনির্বন্ধ অনুরোধে তাঁহার সম্পাদিত মফঃস্বল হইতে প্রকাশিত এক পত্রিকায় একটি ক্ষুদ্র ঐতিহাসিক প্রবন্ধ লিখিতে বাধ্য হন। ইহা প্রকাশিত হইবার পর ‘সাহিত্য পত্রিকায় ইহার সুখ্যাতি ভবিষ্যতে বাংলাভাষায় লেখার বিশেষ উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা জোগাইয়াছিল। অনেক নবীন লেখকের অনুরূপ অভিজ্ঞতার কথা শুনিয়াছি। সুরেশচন্দ্র সমাজপতি দুমুখ’ বলিয়া কুখ্যাত ছিলেন, কিন্তু তাঁহার সমালোচনার মূল্য সকলেই স্বীকার করিত। অনেক উৎকৃষ্ট প্রবন্ধাদি দ্বারা সাহিত্য পত্রিকা সমৃদ্ধি ও মর্যাদা লাভ করিয়াছিল।

‘ভারতবর্ষ’ পত্রিকা প্রকাশের অব্যবহিত পরেই ১৩২১ সালে চিত্তরঞ্জন দাশ (১৮৭০-১৯২৫) সম্পাদিত নারায়ণ’ ও প্রমথ চৌধুরী (১৮৬৮-১৯৪৬) সম্পাদিত সবুজপত্র’ প্রকাশিত হয়। চিত্তরঞ্জন ব্যারিষ্টার ও রাজনীতিক নেতা হিসাবে প্রসিদ্ধি লাভ করিলেও সাহিত্যক্ষেত্রে একেবারে অপরিচিত ছিলেন না। তাঁহার তিনখানি কাব্যগ্রন্থ মালঞ্চ (১৩১৯ সাল), ‘সাগরসঙ্গীত’ (১৯১৩ খ্রীঃ) এবং অন্তর্যামী’ (১৯১৪ খ্রীঃ) তাঁহার কবিপ্রতিভার পরিচায়ক। নারায়ণ’ পত্রিকা সম্পাদনায় বিপিনচন্দ্র পাল তাঁহার সহযোগিতা করিতেন। শুধু মাসিক পত্রিকা হিসাবে খ্যাতিলাভের যোগ্যতা ছাড়াও আরও দুইটি কারণে ইহা প্রসিদ্ধি লাভ করিয়াছিল। প্রথমতঃ, সনাতন হিন্দুধর্ম ও সমাজের সমর্থন (এবং সম্ভবতঃ কতকটা ঐ কারণেই) দ্বিতীয়তঃ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও সবুজপত্র পত্রিকার প্রতি বিরোধী মনোভাবপ্রসূত বিরুদ্ধ সমালোচনা। নারায়ণ’ পত্রিকা সুধীসমাজে আদৃত হইলেও ইহা স্বল্পকাল স্থায়ী ছিল।

‘সবুজপত্রের বৈশিষ্ট্য ছিল আধুনিকতা ও প্রগতিশীলতা এবং ইহার বিশেষ নিদর্শন বাংলা কথ্যভাষাকে সাহিত্যের আসনে সুপ্রতিষ্ঠিত করা। সবুজপত্র’ রবীন্দ্রনাথের বহু রচনা দ্বারা সমৃদ্ধ হইয়াছিল এবং অতুল গুপ্ত প্রভৃতি একদল শক্তিশালী লেখক ইহাকে কেন্দ্র করিয়া চলিত অর্থাৎ কথ্যভাষাকে শক্তিশালী করিয়া তোলেন। কেহ কেহ বলেন যে, স্বয়ং রবীন্দ্রনাথও ইহার দ্বারা প্রভাবান্বিত হইয়াছিলেন।

এই প্রসঙ্গে একটি বিষয় সম্বন্ধে আলোচনা করা প্রয়োজন। সবুজপত্রের মারফত প্রমথ চৌধুরী সাহিত্যক্ষেত্রে কথ্যভাষাকে প্রতিষ্ঠিত করায় অনেকে তাঁহাকে এই অভিনব রীতির জনক বলিয়া অভিহিত করেন, কিন্তু এই প্রসঙ্গে স্মরণ রাখা উচিত যে প্রমথ চৌধুরীর এই প্রচেষ্টার বহু পূর্বে স্বামী বিবেকানন্দ তাঁহার প্রবন্ধে এই ভাষা ব্যবহার করিয়াছিলেন। দৃষ্টান্তস্বরূপ উদ্বোধন’ পত্রিকায় ‘প্রাচ্য ও পাশ্চাত্ত্য-নামক প্রবন্ধ হইতে কয়েক পংক্তি উদ্ধৃত করিতেছি : “সকল দেশেই কাপড়ে-চোপড়ে কিছু না কিছু ভদ্রতা লেগে থাকে। ব্যাতন না জানলে বোদ্র অবোদ্র বুঝবো ক্যামনে? শুধু ব্যাতনে নয়, কাপড় না দেখলে বোদ্র অবোদ্র বুঝবো ক্যামনে’ সর্বদেশে কিছু না কিছু চলন। আমাদের দেশে শুধু-গায়ে ভদ্রলোক রাস্তায় বেরুতে পারে না, ভারতের অন্যান্য প্রদেশে আবার পাগড়ী না মাথায় দিয়ে কেউই রাস্তায় বেরোয় না।”

‘পরিব্রাজক’ গ্রন্থেও স্বামীজি এইরূপ কথ্যভাষাই ব্যবহার করিয়াছেন। সুতরাং প্রমথ চৌধুরীই বঙ্গসাহিত্যে কথ্যভাষা প্রচলনের পথ দেখাইয়াছেন এরূপ ধারণা ঠিক নহে। তবে পথপ্রদর্শক না হইলেও ‘সবুজপত্রে এই ভাষা ব্যবহারের ফলে যে ইহা ক্রমশঃ বঙ্গসাহিত্যে প্রতিষ্ঠালাভ করিতেছে ইহা স্বীকার করিতেই হইবে। কিন্তু ইহা বঙ্গসাহিত্যে স্থায়ী আসন বা একচ্ছত্র আধিপত্য লাভ করিবে এ-বিষয়ে সন্দেহের অবকাশ আছে। ইতিহাস, বিজ্ঞান, অর্থনীতি, দর্শন প্রভৃতি বিষয়ক গ্রন্থ এই ভাষায় লেখা সম্ভব বা সঙ্গত কিনা এ-বিষয়ে এখনও গুরুতর মতভেদ বর্তমান।

সবুজপত্রের সম্পাদক প্রমথ চৌধুরীর সাহিত্যিক অবদানের কথা সাহিত্য শীর্ষক অধ্যায়ে বলা হইয়াছে। সুতরাং এস্থলে তাহার পুনরুল্লেখ নিপ্রয়োজন। তাঁহার কয়েকখানি গল্পগ্রন্থ, বিশেষতঃ চার ইয়ারি কথা (১৯১৬) এবং ফরাসী সনেট রীতিতে লিখিত কবিতা এককালে খুব প্রসিদ্ধি লাভ করিয়াছিল।

মানসী’ নামক একখানি মাসিক পত্রিকা ১৩১৫ সালে প্রকাশিত হয়। ইহার ষষ্ঠ বর্ষে (১৩২০ সালে) নাটোরের মহারাজা জগদিন্দ্রনাথ রায় (১৮৬৮-১৯২৬) ইহার সম্পাদকতা গ্রহণ করেন। ১৩২২ সালের শ্রাবণ মাসে অমূল্যচরণ বিদ্যাভূষণের সহযোগে জগদিন্দ্রনাথ ‘মর্মবাণী’ নামে আর-একখানি সাপ্তাহিক পত্রিকা সম্পাদন করেন। কিন্তু ঐ বৎসর ফাল্গুন মাসেই এই দুইখানি পত্রিকা মিলিত হইয়া মানসী ও মর্মবাণী’ নামে প্রকাশিত হয় এবং ইহার সম্পাদক হন জগদিন্দ্রনাথ। প্রসিদ্ধ গল্প ও উপন্যাস-লেখক প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় তাহার সহযোগী ছিলেন এবং জগদিন্দ্রনাথের মৃত্যুর পর মানসী ও মর্মবাণী’ পত্রিকার সম্পাদক হন। প্রবাসী’ ও ‘ভারতবর্ষের ন্যায় প্রসিদ্ধ না হইলেও এই পত্রিকাখানি প্রবন্ধগৌরবে বিশেষ খ্যাতিলাভ করিয়াছিল। অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়, রমাপ্রসাদ চন্দ্র, রাধাগোবিন্দ বসাক প্রভৃতি ইহার সহিত ঘনিষ্ঠভাবে সংশ্লিষ্ট থাকায় ইহা এককালে রাজসাহী বা বরেন্দ্র গ্রুপের মুখপত্র বলিয়া পরিচিত ছিল। কিন্তু ইহার প্রকাশস্থল ছিল কলিকাতায় এবং এখানে পূর্বোক্ত মনস্বীগণ ছাড়া রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, অধ্যাপক খগেন্দ্রনাথ মিত্র প্রভৃতি আরও কয়েকজন মিলিত হইয়া একটি লেখকগোষ্ঠী প্রতিষ্ঠিত করেন এবং প্রায় প্রতিদিন সন্ধ্যাকালে ধর্মতলা-চৌরঙ্গীর সংযোগস্থলে দ্বিতল ভবনের একটি কক্ষে ক্ষুদ্র সাহিত্যসভার অনুষ্ঠান হইত। ভারতবর্ষ’, ‘ভারতী’ ও আরও দুই-একটি মাসিক পত্রিকার কার্যালয়ে এরূপ নিয়মিত সাহিত্যিক সম্মেলন কলিকাতার সাহিত্যজীবনের একটি বৈশিষ্ট্য বলিয়া পরিগণিত হইত। ইহার শ্রেষ্ঠ নিদর্শন রবীন্দ্রনাথের ভবনে প্রসিদ্ধ সাহিত্যিকগণের সম্মেলন।

১৮৭৭ সনে প্রতিষ্ঠিত ভারতী’ পত্রিকার কথা তৃতীয় খণ্ডে বলা হইয়াছে। আলোচ্য যুগেও ইহা একটি প্রসিদ্ধ মাসিকপত্র বলিয়া পরিগণিত হইত। সুপ্রসিদ্ধ। কথাসাহিত্যিক মণিলাল গঙ্গোপাধ্যায় (১৮৮৮-১৯২৯) সাত বৎসর কাল (১৩২২-২৯) ইহার সুযোগ্য সম্পাদক ছিলেন। কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত ও ঔপন্যাসিক চারুচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় প্রভৃতি অনেক খ্যাতনামা সাহিত্যিক ইহার সহিত ঘনিষ্ঠভাবে সংযুক্ত ছিলেন।

১৩০৩ সালে প্রতিষ্ঠিত প্রথমে পাক্ষিক, পরে মাসিক উদ্বোধন’ পত্রিকা রামকৃষ্ণ মিশনের মুখপত্র হিসাবে এখন পর্যন্ত সগৌরবে ধর্মসম্বন্ধীয় পত্রিকার মধ্যে শ্রেষ্ঠ আসনে প্রতিষ্ঠিত। এই শ্রেণীর আর-একখানি পত্রিকা প্রবর্তক মতিলাল রায়ের প্রতিষ্ঠিত চন্দননগরের প্রবর্তক সংঘের মুখপত্র। শ্রীঅরবিন্দের পৃষ্ঠপোষকতায় স্বদেশভক্ত বিপ্লবী মতিলাল রায় এই সংঘ প্রতিষ্ঠিত করেন। ১৯৫৯ সনে তাঁহার মৃত্যুর পরেও এই সংঘ ও পত্রিকার উন্নতি অব্যাহত আছে।

আলোচ্য যুগে আরও কয়েকখানি মাসিকপত্র ছিল। ইহাদের মধ্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সম্পাদিত ভাণ্ডার’ (১৩৩২ সাল), দীনেশচন্দ্র সেন ও বিজয়চন্দ্র মজুমদার সম্পাদিত ‘বঙ্গবাণী’ (১৩২৮), উপেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায় সম্পাদিত বিচিত্রা (১৩৩৪), মাসিক বসুমতী’ (১৩২৯), সুধীন্দ্রনাথ দত্ত সম্পাদিত পরিচয়’ (প্রথমে ত্রৈমাসিক, পরে মাসিক ১৩৩৮) বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। বঙ্গবাণী’ পত্রিকা পরে স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের পুত্রগণ প্রকাশিত করেন এবং ইহাতে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের পথের দাবী’ প্রকাশিত হয়।

দুইখানি পত্রিকা বিভিন্ন কারণে কিছুকালের জন্য প্রসিদ্ধি লাভ করিয়াছিল। ‘শনিবারের চিঠি’ নিন্দাসূচক সমালোচনার জন্য বিখ্যাত বা কুখ্যাত ছিল। রবীন্দ্রনাথ হইতে আরম্ভ করিয়া বঙ্গসাহিত্যের বহু লেখক (অবশ্য ইহার ক্ষুদ্র পরিচালকবর্গ ছাড়া) ইহার তীব্র কশাঘাতের পাত্র ছিলেন। ইহা প্রথমে ১৩৩১ সালে সাপ্তাহিক ছিল, প্রতি শনিবার বাহির হইত। পরে ১৩৩৪ সালে ইহা মাসিকপত্রে পরিণত হয়। ইহার একাধিক সম্পাদক ছিলেন, তন্মধ্যে সজনীকান্ত দাসই বিশেষ খ্যাতি বা অখ্যাতি অর্জন করিয়াছিলেন।

দীনেশরঞ্জন দাশ সম্পাদিত ‘কল্লোল’ (১৩৩০) ও প্রেমেন্দ্র মিত্র এবং শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত কালি কলম’ (১৩৩৩) তথাকথিত আধুনিক যুগে’র ছোটখাট লেখকসম্প্রদায়ের দুইটি মুখপত্র ছিল। শনিবারের চিঠি’র ন্যায় ইহাও কালসমুদ্রে বিলীন হইয়াছে–বিশেষ কোন চিহ্ন রাখিয়া যায় নাই।

কলিকাতার বাহিরেও কয়েকখানি মাসিকপত্র প্রকাশিত হয়। চন্দননগরের ‘প্রবর্তকের কথা উল্লেখ করিয়াছি। ঢাকা হইতে শ্রীসুশীলচন্দ্র বসু সম্পাদিত ‘প্রাচী’ নামক মাসিক পত্রিকা প্রকাশিত হয় (১৩৩০ সাল)। বিশেষত্ববর্জিত হইলেও মফঃস্বলের পত্রিকাগুলিতে অনেক সময় মূল্যবান প্রবন্ধাদি প্রকাশিত হইত। দৃষ্টান্ত স্বরূপ ‘প্রাচী’ পত্রিকার প্রথম বর্ষে প্রকাশিত কয়েকটি রচনার উল্লেখ করিতেছি।

১। শ্রীহরপ্রসাদ শাস্ত্রী–পালবংশের রাজত্বকালে বাংলার অবস্থা।

২। শ্রীপ্রফুল্লচন্দ্র রায়-বাঙ্গালী মস্তিষ্কের অনুর্বরতা ও বাঙ্গালী ছাত্রগণের সময় ও সামর্থের অপচয়।

৩। শীসতীশচন্দ্র রায়-বৈষ্ণব পদাবলীর রসাস্বাদন।

৪। শ্রীনরেশচন্দ্র সেনগুপ্ত-নারীর শিক্ষা ও অধিকার।

(প্রথম দুইটি রচনা ‘মাধুকরী এই সংজ্ঞার অন্তর্গত–অর্থাৎ অন্য পত্রিকা হইতে পুনর্মুদ্রিত)।

(খ) পাক্ষিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকা

কাজী নজরুল ইসলাম সম্পাদিত পাক্ষিক পত্রিকা ‘ধূমকেতু’ ১৩২৯ সালে প্রকাশিত হয়। সাপ্তাহিক পত্রিকার মধ্যে নিম্নলিখিত কয়েকটি বিশেষ উল্লেখযোগ্য: বসুমতী’ (১৩০৩ সাল), ‘স্বরাজ’ (১৩১৩ সাল), ‘বিজলী’ (১৩২৭ সাল), ‘বাংলার কথা’ (১৩২৮ সাল), ‘আত্মশক্তি’ (১৯২৬ খ্র.), ‘দেশ’ (১৩৪০ সাল), যুগান্তর (১৯০৬ খ্রী.), নবশক্তি’ (১৯০৬) ও ‘ধর্ম’ (১৯০৯)।

শেষোক্ত দুইটি যথাক্রমে মনোরঞ্জন গুহ ঠাকুরতা ও শ্রীঅরবিন্দ সম্পাদিত।

(গ) দৈনিক পত্রিকা

পুরাতন ‘হিতবাদী’, ‘বসুমতী’ ছাড়াও আলোচ্য যুগে আরও কয়েকটি দৈনিক পত্রিকা প্রকাশিত হইত। ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়-সম্পাদিত ‘সন্ধ্যা’র কথা পূর্বেই বলা হইয়াছে। শ্রীপাঁচকড়ি বন্দ্যোপাধ্যায় (১৯৬৬-১৯২৩) সম্পাদিত ‘নায়ক’ (১৯০৮) ব্যঙ্গরচনা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের প্রতি তীব্র ও বিরূপ সমালোচনার জন্য প্রসিদ্ধি লাভ করিয়াছিল। নায়ক’ যে খুবই জনপ্রিয় ছিল ইহা তাহারই একটি কারণ। কাগজ বিক্রেতারা রাস্তায় হাঁকিত, আজ পাঁচকড়িবাবু অমুককে খুব গাল দিয়েছেন। স্যার আশুতোষের সহিত তাঁহার সৌহার্দ্য ছিল। আশুতোষ কন্যার বিবাহে ভোজের পরে পাঁচকড়িকে বলিলেন, “ভাল করে খেয়েছিস ত? কালই তো নায়কে গালাগালি দিবি।” পাঁচকড়ি অম্লান বদনে বলিলেন, “আমার গালাগালিতে তোর কিছু হবে না। কিন্তু গরীব ব্রাহ্মণের কাগজ বেশী বিক্রি হবে–দু’পয়সা লাভ হবে।” পাঁচকড়ি বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত, অনূদিত ও সম্পাদিত গ্রন্থের এবং যে সমুদয় সাময়িক পত্রিকার সহিত তিনি যুক্ত ছিলেন তাহাদের সংখ্যা খুব বেশী। তাঁহার লিখিবার ভঙ্গীর মধ্যে একটু বিশেষত্ব ছিল। এই গ্রন্থের লেখকের স্বকর্ণে শোনা দুইটি উক্তিই সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত এবং সংবাদপত্রের সম্পাদক ও পাঠকের মনোবৃত্তির পরিচায়ক।

‘আনন্দবাজার পত্রিকা’ ১৯২২ সনে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ইহার সম্পাদক সুরেশচন্দ্র মজুমদার (১৮৮৮-১৯৫৪) ১৯৩৭ সনে ইংরেজি দৈনিক Hindusthan Standard বাহির করেন।

ঠিক ইহার বিপরীতভাবে ঐ বৎসরই ‘অমৃতবাজার পত্রিকার সম্পাদক বাংলা দৈনিক যুগান্তর প্রকাশিত করেন। এই চারিটি পত্রিকাই বর্তমানকাল পর্যন্ত বিশিষ্ট জনপ্রিয় দৈনিক বলিয়া প্রসিদ্ধি লাভ করিয়াছে। বিপ্লবী শ্রীমাখন সেন বহুকাল আনন্দবাজার পত্রিকার সহিত সংশ্লিষ্ট ছিলেন। পরে ১৯৩৯ সনে ভারত’ নামে দৈনিকপত্র প্রকাশ করেন কিন্তু ইহা বেশীদিন স্থায়ী হয় নাই। কৃষক-প্রজা’ নামক রাজনৈতিক দলের মুখপত্র কৃষক’ ১৯৩৯ সনে প্রকাশিত হয়। ১৯৪১ সনে ফজলুল হক ‘নবযুগ’ বাহির করেন। ১৯৩৬ সনে আক্রাম খা আজাদ’ নামে এবং ১৯৪৬ সনে হুসেন শহীদ সুরাওয়ার্দি (১৮৯৩-১৯৬৩) ইত্তেহাদ’ নামে বাংলা দৈনিক প্রতিষ্ঠা করেন।

(ঘ) বিবিধ

মফঃস্বল হইতে প্রকাশিত বরিশাল হিতৈষী’, ‘হাওড়া হিতৈষী’, ‘রঙ্গপুর বার্তাবহ’, ‘মিহির ও সুধাকর এবং প্রতিজ্ঞা, প্রভৃতি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

২. ইংরেজী ভাষায় প্রকাশিত

(ক) মাসিক পত্র

১৯০৭ সনে ‘প্রবাসী’র সম্পাদক রামানন্দ চট্টোপাধ্যায় এলাহাবাদ হইতে ‘Modern Review’ নামক মাসিক পত্রিকা প্রকাশ করেন। ১৯০৮ সন হইতে ইহা কলিকাতায় প্রকাশিত হয়। কেবল বঙ্গদেশে নহে, সমগ্র ভারতে ইহা শ্রেষ্ঠ ইংরেজী মাসিকপত্ররূপে মর্যাদা লাভ করে। অনেক ইংরেজ লেখকও এই পত্রিকায় লিখিতেন এবং ইহার খ্যাতি ইংলণ্ডে ও আমেরিকার যুক্তরাষ্ট্রে ছড়াইয়া পড়ে। ‘প্রবাসী’ পত্রিকার যে সমুদয় বৈশিষ্ট্যের উল্লেখ করা হইয়াছে, এই পত্রিকাখানিতেও তাহা বর্তমান ছিল। পূর্বেই বলা হইয়াছে, তিনি হিন্দীভাষায় বিশাল ভারত’ নামে এক পত্রিকা প্রকাশ করেন। তিনি ভারতীয় সাংবাদিকতায় সবদিক দিয়াই যুগান্তর আনয়ন করিয়াছিলেন, ইহা বলিলে খুব অসঙ্গত হইবে না।

১৯০৯ সনে বিপিনচন্দ্র পাল ‘Swaraj’ নামে স্বল্পকাল স্থায়ী একটি মাসিক পত্র প্রকাশ করেন। ১৯১৮ সনে শ্রীঅরবিন্দ ‘Arya’ নামক পত্রিকা সম্পাদন করেন।

(খ) সাপ্তাহিক

আলোচ্য যুগে নিম্নলিখিত চারিটি সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রকাশিত হইয়াছিল :

সংখ্যা – প্রতিষ্ঠার – তারিখ – পত্রিকার নাম – সম্পাদকের নাম

১। ১৯০৮ খ্রী. – Hindu Review – বিপিনচন্দ্র পাল

২। ১৯০৯ –  Karmayogin – শ্ৰীঅরবিন্দ

৩। ১৯৩৭ – Independent India – মানবেন্দ্রনাথ রায়

৪। ১৯৩৯ – Forward Bloc – সুভাষচন্দ্র বসু

ইহার কোনটিই দীর্ঘকাল স্থায়ী হয় নাই। কিন্তু সম্পাদকের নাম হইতে ইহাদের গুরুত্ব উপলব্ধি হইবে।

(গ) দৈনিক

আলোচ্য যুগে নিম্নলিখিত দৈনিক পত্রিকাগুলি প্রকাশিত হইয়াছিল :

সংখ্যা – প্রতিষ্ঠার তারিখ – পত্রিকার নাম – প্রতিষ্ঠাতা বা সম্পাদকের নাম

১। ১৯১১ খ্রী. – Empire – Fraser Blair

২। ১৯১১ – Comrade – মহম্মদ আলি

৩। ১৯২০ – Servant – শ্যামসুন্দর চক্রবর্তী

৪। ১৯২৩ – Forward – চিত্তরঞ্জন দাশ (১৯২৯ হইতে Liberty )

৫। ১৯২৯ – Advance – যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত

৬। ১৯৩৭ – Hindusthan Standard – সুরেশচন্দ্র মজুমদার

৭। ১৯৪৪ – Nationalist – শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়

Statesman And Friend of India ১৮৮৪ হইতে ১৯২২ পর্যন্ত প্রকাশিত হওয়ার পরে ১৯২৩ সন হইতে ইহার নাম হয় শুধু ‘Statesman’। পূর্বেকার Englishman, Bengalee ও Amrita Bazar Patrika আলোচ্য যুগেও প্রচলিত ছিল। ইহাদের পূর্ব ইতিহাস এই গ্রন্থের তৃতীয় খণ্ডে বিবৃত হইয়াছে। স্বদেশী আন্দোলনের সময় এই চারিখানিই শ্রেষ্ঠ ইংরেজী দৈনিক পত্রিকার অন্যতম বলিয়া পরিগণিত হইত। কিন্তু ইহাদের দৃষ্টিভঙ্গীর প্রভেদ এই আন্দোলনের সময় স্পষ্ট হইয়া দেখা দেয়। Statesman ও Englishman-এর মতামত যথাক্রমে ইংলণ্ডের Liberal ও Conservative দলের মত। ইংরেজ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন Englishman তীব্রভাবে নিন্দা করিত, কারণ ইহা ছিল উগ্রপন্থী ও সাম্রাজ্যবাদী মনোভাবসম্পন্ন ও ভারত-বিদ্বেষী। Statesman নিজেকে Friend of India (ভারতবন্ধু) বলিয়া ঘোষণা করিত এবং সাধারণতঃ নিরপেক্ষ সংবাদপত্রের ন্যায় মতামত প্রকাশের চেষ্টা করিত। অন্য দুইটি পত্রিকার মধ্যে Bengalee-র সম্পাদক সুরেন্দ্রনাথ ছিলেন নরমপন্থী দলের একজন বিশিষ্ট নেতা এবং Bengalee পত্রিকা ঐ দলের মুখপত্র বলিয়া সুপরিচিত ছিল। Amrita Bazar Patrika-র সম্পাদক নরমপন্থী দলের ভক্ত বা পৃষ্ঠপোষক না হইলেও ঐ দলের। প্রতি সহানুভূতিশীল ছিলেন। এই দুই পত্রিকার মধ্যে যে পূর্ব হইতেই রেষারেষি ভাব ছিল তাহা এই গ্রন্থের তৃতীয় খণ্ডে উল্লিখিত হইয়াছে। আলোচ্য যুগে তাহা আরও বৃদ্ধি পায়।

এই যুগে Bengalee ও Englishman-পত্রিকার দৃষ্টিভঙ্গী যে কিরূপ ভিন্ন ছিল, স্বদেশী আন্দোলনের সময়কার একটি প্রচলিত মতবাদ হইতে তাহা বোঝ যাইবে। স্বদেশী আন্দোলন-সম্পর্কিত কোন সাধারণ সভায় মোট কত লোক উপস্থিত ছিল তাহার সংখ্যা নির্ণয় করিতে হইলে এই দুইটি কাগজে যে-সংখ্যার উল্লেখ থাকিবে তাহার যোগফলের অর্ধেক করিলেই প্রকৃত সংখ্যা নির্ণীত হইবে। অর্থাৎ স্বদেশী আন্দোলনের প্রভাব Statesman অযথা খাটো করিতে এবং Bengalee তুল্যরূপে অতিরঞ্জিত করিতে অভ্যস্ত।

অপর যে-কয়খানি ইংরেজী দৈনিক পত্রের নাম করিয়াছি তাহাদের মধ্যে Bande Mataram পত্রিকার কথা পূর্বেই লিখিয়াছি। তাহাদের মধ্যে Hindusthan Standard এখন Amrita Bazar এবং Statesman-এর সমপর্যায়ে কলিকাতার তিনটি বিশিষ্ট কাগজের অন্যতমরূপে পরিগণিত হয়। Bangalee পত্রিকা সুরেন্দ্রনাথের রাজনীতিক জীবনের অবসানের সঙ্গেই লোপ পাইয়াছে।

৩. উর্দু ও অন্য ভারতীয় ভাষায় প্রকাশিত পত্রিকা

১৯২৮ সনে প্রখ্যাত সাংবাদিক রামানন্দ চট্টোপাধ্যায় কলিকাতা হইতে ‘বিশাল ভারত’ নামে হিন্দী মাসিক-পত্রিকা প্রকাশ করেন।

১৯১২ সনে আবুল কালাম আজাদ আলহিলাল’ নামে উর্দু দৈনিক পত্রিকা প্রকাশ করেন।

তথ্যনির্দেশ

১. গ্রন্থাকারে প্রকাশিত একাদশ সংস্করণ, পৃ. ৬৮-৬৯

২. হেমেন্দ্রকুমার রায় প্রণীত মণিলালের আসর’ দ্রষ্টব্য।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *