2 of 2

অধ্যাপক ক্ষেত্রমোহন গোস্বাসী

অধ্যাপক ক্ষেত্রমোহন গোস্বাসী

মেদিনীপুর জেলার আকবরপুর নিবাসী গোস্বামী পরিবারে ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দে অধ্যাপক ক্ষেত্রমোহন গোস্বামী জন্মগ্রহণ করেন। পিতা রাধাকান্ত গোস্বামীর কাছে তিনি সংস্কৃত, বাংলা ও হিন্দী ভাষা শিক্ষা করেন। পিতার মৃত্যুর পর তিনি বাঁকুড়া জেলার পন্ডিত রামশঙ্কর ভট্টাচার্যের কাছে সঙ্গীত শিখতে থাকেন। কয়েক বছরের মধ্যেই সঙ্গীতে পারদর্শিতা লাভ করে তিনি জনসমক্ষে গাইতে আরম্ভ করেন। অল্পকালের মধ্যেই গায়ক হিসাবে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। ১৮৪৭-এ তিনি কলকাতায় মাননীয় মহারাজা যতীন্দ্রমোহন ঠাকুর সি এস আই মহোদয়ের সঙ্গীত সভায় যোগদান করেন এবং তাঁর ভবনেই বাস করতে থাকেন। তখন মহারাজের সঙ্গীত শিক্ষক ছিলেন ওস্তাদ লছমন প্রসাদ মিশ্র। এই ওস্তাদের কাছে ক্ষেত্রমোহন সঙ্গীত শাস্ত্রে আরও শিক্ষা লাভ করেন। তখন থেকে গত তেত্রিশ বছর তিনি পাথুরিয়াঘাটাতেই বাস করেছেন। বেঙ্গল মিউজিক স্কুল প্রতিষ্ঠার অনেক আগে থেকেই তিনি মহারাজা যতীন্দ্রমোহন ও তাঁর ভাই শৌরীন্দ্রমোহনের সঙ্গে ভারতীয় সঙ্গীতের পুনর্জাগরণ ও উন্নতির জন্য পরিশ্রম করতে থাকেন।

সঙ্গীতের ডক্টরেট রাজা শৌরীন্দ্রমোহন ঠাকুরের উদার পৃষ্ঠপোষকতায় তিনি বেঙ্গল মিউজিক স্কুলের ছাত্র ও সঙ্গীতপ্রিয় জনগণের জন্য সঙ্গীত বিষয়ক সঙ্গীতসার, কান্তকৌমুদী জয়দেব প্রভৃতি কয়েকখানি অমূল্যগ্রন্থ রচনা করেন। এগুলি রচিত হয়েছিল রাজা শৌরীন্দ্রমোহন প্রবর্তিত স্বরলিপির ভিত্তিতে।

সম্মানিত এই প্রবীণ অধ্যাপক সঙ্গীতশাস্ত্রে পারদির্শতা ছাড়াও অন্যান্য বহু সদগুণের অধিকারী। ধর্মের প্রতি তিনি নিষ্ঠাবান। ১৮৭৫এ তদানীন্তন ভাইসরয় ও গভর্নর জেনারেল নর্থব্রুক মহারাজা যতীন্দ্রমোহনের বাসভবনে অধ্যাপক ক্ষেত্রমোহনের সঙ্গীতে মুগ্ধ হয়ে তাঁকে একটি প্রশংসাপত্র দ্বারা সম্মানিত করেন।

মেদিনীপুর ও বাঁকুড়া জেলায় তাঁর ছোট তালুক আছে। ক্ষেত্রমোহনের কোন পুত্রসন্তান নেই–আছেন ভ্রাতুষ্পুত্র প্রাণকৃষ্ণ গোস্বামী।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *