2 of 2

জোড়াসাঁকোর তারকনাথ প্রামাণিক

জোড়াসাঁকোর তারকনাথ প্রামাণিক

তারকনাথ প্রামাণিক ছিলেন কাঁসা পিতলের ব্যবসায়ী; তাঁর পিতা গুরুচরণ খ্যাতি অর্জন করেছিলেন ধর্মনিষ্ঠা ও পরোপচীকির্ষার জন্য।

ব্রাহ্মণদের প্রতি গুরুচরণের দরদ ছিল অসাধারণ। স্বগৃহে তিনি প্রতিদিন বহু অনাথ আতুরকে আহার্য দিতেন এবং বিভিন্ন ঋতুতে অভাবী মানুষদের মধ্যে ধুতি শাড়ি চাদর এবং কম্বল বিতরণ করতেন। শোনা যায়, তিনি গঙ্গাস্নানে যাবার সময় বা সেখান থেকে ফেরার পথে কেউ শীতে কষ্ট পাচ্ছে দেখলে, বা কোন ব্রাহ্মণ চাইলে, তিনি তাঁর গায়ের দামী শাল বা চাদর দান করে দিতেন। গুরুচরণ ছিলেন নিষ্ঠাবান হিন্দু, তাঁর অধিকাংশ সময় ব্যয়িত হত ধর্মগ্রন্থ পাঠে। পরিণত বয়সেই তিনি পরলোকগমন করেন। পুত্র তারকনাথ উত্তরাধিকার সূত্রেই পিতার সদগুণসমূহের অধিকারী হয়েছেন।

তারকনাথ প্রামাণিকের কাঁসা পিতলের ব্যবসা বহু বিস্তৃত। এই ব্যবসায়ের লাভের সামান্য একটা অংশ তিনি তাঁর পরিবারের ভরণপোষণের জন্য ব্যয় করেন, আর লাভের বেশীর ভাগ অংশ তিনি ব্যয় করেন প্রাত্যহিক দরিদ্রনারায়ণ সেবায় ও ভিক্ষাদানে। একাদশীর দিন তিনি পুত্র কালীচরণের হাত দিয়ে বিপুল পরিমাণে আহার্য, দক্ষিণা, ভিক্ষা ও বস্ত্র দান করেন। মহারাণী ভিকটোরিয়া কর্তৃক ভারত-সম্রাজ্ঞী উপাধি ধারণ উপলক্ষে ১৮৭৭-এর ১ জানুয়ারী কলকাতায় অনুষ্ঠিত দরবারে তারকনাথকে তাঁর অখন্ড দরিদ্রনারায়ণ সেবার জন্য সার্টিফিকেট অব অনার দ্বারা সম্মানিত করা হয়।

তারকানাথের পুত্র কালীচরণও পিতার এই প্রাত্যহিক দানদক্ষিণা স্বহস্তে বিতরণ করে বড় আনন্দ লাভ করেন।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *