1 of 2

রাজা রাজেন্দ্রনারায়ণ দেব, বাহাদুর

রাজা রাজেন্দ্রনারায়ণ দেব, বাহাদুর

রাজা রাধাকান্ত দেব, বাহাদুর, কে সি এস আই-এর মধ্যম পুত্র রাজা রাজেন্দ্রনারায়ণ দেব, বাহাদুরের জন্ম ১৮১৫-র জুন মাসে। মহারাজা নবৃকৃষ্ণের বংশের বড় তরফের সন্তান, এবং দেব পরিবারের জীবিত পুরুষদের মধ্য প্রবীণতম ব্যক্তি রাজেন্দ্রনারায়ণকে সরকার ‘রাজা’ পদবী ও মর্যাদা দিয়ে সম্মানিত করেন। ‘খিলাত’ অর্থাৎ ঢাল তলোয়ার ও রত্নও যথারীতি পদবীর সঙ্গে দেওয়া হয়। এ বিষয়ে সরকারী পত্রের সারসংক্ষেপ নিম্নে দেওয়া হল :

‘বর্তমান শতাব্দীর সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য ও বিশিষ্টতম এদেশীয় ভদ্রলোক ছিলেন রাজা রাধাকান্ত দেব; কুমার রাজেন্দ্রনারায়ণ দাব তাঁর একমাত্র জীবিত পুত্র। পাণ্ডিত্যের জন্য রাজা (রাধাকান্ত) শুধু এদেশেই নয়, ইউরোপেও খ্যাতি অর্জন করেছিলেন; কিন্তু তা ছাড়াও তিনি তাঁর চারিত্রিক মাহাত্ম ও পবিত্রতার জন্য সর্ব সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে শ্রদ্ধেয় ও সম্মানিত ছিলেন। ছোটলাট-বাহাদুর বিশ্বাস করেন যে, এরূপ সমুন্নত গুণাবলী সমন্বিত পিতার সন্তানকে (রাজা) পদবীতে ভূষিত করলে এদেশীয় জনগণ আনন্দিত হবেন। পিতার গুণাবলীর অধিকারী তিনি নন, একথা সত্য, তবু পুত্রকে সম্মানিত করারও যথোপযুক্ত কারণ আছে বলে ছোট লাটবাহাদুর মনে করেন। এজন্য তিনি সুপারিশ করছেন যে, যে বংশের প্রধান পুরুষকে পুরুষানুক্রমে রাজাবাহাদুর পদবীতে ভূষিত করে আসা হচ্ছে, সেই বংশের একমাত্র জীবিত বংশধরকে এই পদবী দ্বারা সম্মানিত সব দিক দিয়েই যুক্তিযুক্ত ও উপযুক্ত।’

১ মে, ১৮৬৯-এর গেজেট অব ইন্ডিয়াতে প্রকাশিত ৩০ এপ্রিল ১৮৬৯-এর ৫৯৩ সংখ্যক (রাজনৈতিক) বিজ্ঞপ্তিটি ছিল নিম্নরূপ :

‘পরলোকগত রাজা রাধাকান্ত দেব বাহাদুর, কে সি এস আই-এর গুণাবলীর এবং ব্রিটিশ রাজের প্রতি এই বংশের সেবার স্বীকৃতিস্বরূপ, সপারিষদ ভাইসরয় তথা গভর্নর জেনারেল তাঁর (রাধাকান্তর) পুত্রকে ব্যক্তিগত সম্মাননা হিসাবে ‘রাজা’ বাহাদুর’ পদবী দ্বারা ভূষিত করিতেছেন।

১৮৭০-এর সরকারী একটি আদেশ বলে রাজা ব্রজেন্দ্রনারায়ণকে যে কোনো দেওয়ানী আদালতে ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত না হবার অধিকার দেওয়া হয়। তিনি অত্যন্ত নিষ্ঠাবান হিন্দু এবং তাঁর পূর্বপুরুষদের ধর্ম সংরক্ষণে তাঁর উৎসাহ ও উদ্যমের জন্য তিনি হিন্দু সম্প্রদায়ের নিকট অত্যন্ত প্রিয়। সংস্কৃত পণ্ডিতদের তিনি বিশেষরূপে পৃষ্ঠপোষকতা করেন; ভদ্র, নম্র এবং অমায়িক ব্যবহারের জন্য তিনি সর্বসাধারণের ভালবাসা ও শ্রদ্ধা পাত্র। তিনি ‘কায়স্থ কুল সঙ্ঘ রক্ষিণী সভার সভাপতি, ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশনের সভ্য এবং কিছুকালের জন্য ‘সনাতন ধর্ম রক্ষিণী সভা’র অন্যতম সহকারী সভাপতি। তাঁর জমিদারীতে তিনি বেশ কয়েকটি পুষ্করিণী খনন করিয়েছেন এবং তাঁর রায়তদের সন্তানদের শিক্ষার জন্য বহু পাঠশালা স্থাপন করেছেন। কলকাতার কুমারটুলিতে একটি শ্মশানঘাট নির্মাণের জন্য তিনি উদারভাবে অর্থ সাহায্য করেন। জনগণের মঙ্গলজনক কাজে তাঁর উদার দানের হস্ত সব সময়ই প্রসারিত থাকে। রাজা রাজেন্দ্রনারায়ণের বয়স এখন ৬৬ বছর ৷

তাঁর একমাত্র পুত্র কুমার গিরীন্দ্রনারায়ণ দেব বর্ধমানে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও কালেক্টরের সরকারী চাকরি করছেন।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *