1 of 2

বাগবাজারের মহারাজা রাজবল্লভের পরিবারবর্গ

বাগবাজারের মহারাজা রাজবল্লভের পরিবারবর্গ

‘সিরাজ উদ্-দৌলা’ বাংলার নবাব নাজিম হবার পূর্বে নবাব সরকারের বক্সী অর্থাৎ ফৌজদারের বাহিনীর বেতনদাতা ছিলেন মহারাজা দুর্লভরাম; তাঁর পিতা মহারাজা জানকী রামকে দিল্লীর বাদশাহ্ পাটনার সুবাদার নিযুক্ত করেছিলেন। এঁরা জাতিতে কায়স্থ, বাংলার সম্ভ্রান্ত সোম পরিবার ভুক্ত। মহারাজা রাজবল্লভ বাহাদুর, রায় রায়ান, মহারাজ দুর্লভরামের পুত্র।

পিতা ও পিতামহের প্রভাবে মহারাজা রাজবল্লভ নবাব সরকারের অত্যন্ত সম্মানজনক উচ্চপদ লাভ করেন; তিনি হন নবাব সিরাজুদ্দৌল্লার রায় রায়ান অর্থাৎ অর্থমন্ত্রী, ‘খালসা’ (সম্পত্তি)-র মোহরাধ্যক্ষ এবং মুর্শিদাবাদের একটি জায়গীরের মালিক। ভারতে ব্রিটিশ শক্তি প্রতিষ্ঠায় তিনি লর্ড ক্লাইভকে সবিশেষ সহায়তা করেন।

পলাশী যুদ্ধের পরে নবাব সিরাজুদ্দৌলার মৃত্যুর পরে মহারাজা রাজবল্লভ কলকাতা চলে এসে সূতানুটির বাগবাজারে বাস করতে থাকেন। এই সময় লর্ড ক্লাইভ অনারেবল ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে মহারাজার উল্লেখযোগ্য সহায়তার স্বীকৃতিস্বরূপ তাঁকে কিছু মূল্যবান উপহার দিতে চান, কিন্তু মহারাজা রাজবল্লভ নিজ পদমর্যাদা সম্বন্ধে এত সচেতন ছিলেন যে, পুরস্কারস্বরূপ কোন কিছু নিতে চাননি। তিনি কিছুকাল অনারেবল ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কাউন্সিলের অবৈতনিক সভ্য ছিলেন। তিনি বাগবাজারে একটি ঘাট নির্মাণ করেন। এটি মহারাজা রাজবল্লভের ঘাট নামে পরিচিত। এখনও একটি রাস্তা আছে রাজা রাজবল্লভ স্ট্রিট নামে। তাঁর উত্তরাধিকারীরূপে তিনি রেখে গেছেন তাঁর প্রয়াত পুত্র মুকুন্দবল্লভের বিধবা স্ত্রী এবং ভাগিনেয় কাশীপ্রসাদ মিত্র প্রভৃতিদের।

রাজা মুকুন্দ বল্লভের দত্তকপুত্র রাজা গৌর বল্লভের পুত্র রুক্মিনী বল্লভ এখন এই বংশের কর্তা। তিনিও বাগবাজারে বাস করছেন, অবশ্য তাঁদের অবস্থা পড়ে গেছে।

কাশীপ্রসাদ মিত্রের দুই পুত্র রামপ্রসাদ ও গোপাললাল। রায় রামপ্রসাদ মিত্র বাহাদুর ছিলেন সরকারী তোষাখানার অধীক্ষক; এখন তিনি পেনসনভোগী। বাবু গোপাললাল মিত্র হাইকোর্টের উকিল। রায় রামপ্রসাদ মিত্র বাহাদুর শ্যামবাজারে বাস করেন। বিশেষ দক্ষতার সঙ্গে চাকরি করার জন্য সরকার ১৮৬২ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারী তাঁকে রায় বাহাদুর পদবীতে ভূষিত করেন।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *