1 of 2

২০. ওসিয়াত

২০. বিংশ অধ্যায় – ওসিয়াত

ধারা-৫১৫

সংজ্ঞা। (ক) কোন ব্যক্তি কর্তৃক তাহার সম্পত্তি বা উহার আয় তাহার মৃত্যুর পর হইতে চিরকালের জন্য অথবা নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য অপর কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে কোনরূপ বিনিময় ছাড়াই হস্তান্তর করাকে ওসিয়াত” বলে।

(খ) ওসিয়তকারীকে মূসী (৭০), ওসিয়াতকৃত বস্তুকে “মূসা বিহি” ( e ), যাহার অনুকূলে ওসিয়াত করা হয় তাহাকে “মূসা লাহু” (U.০) এবং ওসিয়াতকারী ওসিয়াতকৃত সম্পত্তি পরিচালনার জন্য প্রতিনিধি হিসাবে যাহাকে নিযুক্ত করে তাহাকে “ওসী” (e) বলে।

বিশ্লেষণ

ওসিয়াত ( ০১) শব্দের অর্থ ভার অর্পণ, নির্দেশ উপদেশ, মিলানো, অর্থাৎ কোন জিনিস অন্যদের পর্যন্ত পৌছানো। পারিভাষিক অর্থে—শেষ ইচ্ছা বা ইচ্ছাপত্রযোগে প্রদত্ত সম্পত্তি। মৃত্যুকালে মৃত্যুর পরের জন্য নিজ মালিকানার কিছু অংশ নিঃস্বার্থভাবে কাহাকেও দান করার নাম “ওসিয়াত”। কুরআন মজীদে বলা হইয়াছে :

كتب عليكم اذا حضر أحدكم الموت ان ترك خيران

الوصية للوالدين والأقربين بالمعروف حقا على المتقين

“তোমাদের মধ্যে কাহারও মৃত্যু উপস্থিত হইলে সে যদি ধন-সম্পদ রাখিয়া যায় তবে ন্যায়ানুগ প্রথামত তাহার পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজনের জন্য ওসিয়াত করার বিধান তোমাদের দেওয়া হইল। ইহা মুত্তাকীদের একটি কর্তব্য” (সূরা বাকারা :

১৮০)।

মৃত ব্যক্তির সম্পদ তাহার ওয়ারিশগণের মধ্যে বণ্টনের নীতিমালা প্রসঙ্গে বলা হইয়াছে :

من بعد وصية يوصي بها او دين .

“সে (মৃত ব্যক্তি) যাহা ওসিয়াত করে তাহা দেওয়ার ও ঋণ পরিশোধের পর” (সূরা নিসা : ১১; পরবর্তী আয়াতও দ্র.)।

৫৯২

মহানবী (সা) বলেন :

U

ما حق امری مسلم ته شی يوصي فيه يبيت ليلتين الأ

ووصيه مكتوب عنه .

“কোন মুসলিম ব্যক্তির ওসিয়াত করার মত সম্পদ থাকিলে তাহার নিজের নিকট ওসিয়তনামা না লিখিয়া দুই রাত্রিও অতিবাহিত করা উচিৎ নহে” (বুখারী, কিতাবুল ওয়াসায়া, ১নং হাদীস; মুসলিম কিতাবুল ওয়াসিয়াত, ২য়, হাদীস)।

حدثنا طلحة بن مصرف قال سلت عبد الله بن أبي أوفى هل كان النبي صلى الله عليه وسلم اوطى فقال لا فقلت كيف كتب على الناس الوصية أو أمروا بالوصية ال أوصى بكتاب الله .

“তালহা ইবন মুসাররিফ (র) বলেন, আমি আবদুল্লাহ ইবন আবু আওফা (রা)-কে জিজ্ঞাসা করিলাম, মহানবী (সা) কি ওসিয়াত করিয়াছিলেন? তিনি বলিলেন, না। আমি বলিলাম, তাহা হইলে লোকদের উপর ওসিয়াত কিসের ভিত্তিতে বিধিবদ্ধ হইল অথবা তাহাদেরকে ওসিয়াতের আদেশ দেওয়া হইল? তিনি বলেন, মহানবী (সা) মুল্লাহর কিতাবের ভিত্তিতে ওসিয়াতের বিধান দিয়াছেন।

ধারা-৫১৬।

ওসিয়াত অনুষ্ঠান (ক) ঈজাব ও কবুলের মাধ্যমে ওসিয়াত অনুষ্ঠিত হয় এবং ইহা মৌখিকভাবে অথবা লিতি আকারে হইতে পারে। লিখিতে বা বলিতে অসমর্থ হইলে সুস্পষ্ট ইজি জাব-কবুল অনুষ্ঠিত হইতে পারে।

বিশ্লেষণ

এস।” যেহেতু একটি চুক্তি, তাই ইহাও ঈজাব (প্রস্তাব) ও ককূল (সমর্থন)-এর সামে ঠত হয়। ইহার জন্য কোন নির্দিষ্ট শব্দ নাই, কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে

নিজের সপত্তি বা উহার আয়ের বালিক বানানো প্রকাশক শব্দে ঈজাব হইতে পারে। যেস!, আমি তোমা অনুকূলে আমার অমুক সম্পদের এক-তৃতীয়াংশের ওসিয়াত করিলাম।

ধারা-৫১৭

ওসিয়াত কখন সম্পন্ন হয় (ক) ঈজাবের দ্বারা ওসিয়াত সম্পাদিত হয় এবং ককূলের দ্বারা উহা পূর্ণ ও কার্যকর হয়।

(খ) মূসা লাহু বা তাহার প্রতিনিধি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যখন ওসিয়াতকৃত বস্তু গ্রহণ করিবে তখন হইতে তাহাকে উহার মালিক গণ্য করা হইবে।

(গ) ওসিয়াতকারীর মৃত্যুর পরই এই গ্ৰহণ ধর্তব্য হইবে, তাহার মৃত্যুর পূর্বে মূসা লাহুর গ্রহণ বা প্রত্যাখ্যান ধর্তব্য হইবে না।

(ঘ) ওসিয়াতকারীর মৃত্যুর পর মূসা লাই যতক্ষণ পর্যন্ত ওসিয়াতকৃত বস্তু গ্রহণ বা প্রত্যাখ্যান না করিবে ততক্ষণ উহা ওসিয়াতকারীর ওয়ারিশগণের মালিকানায় থাকিবে।

(ঙ) ওসিয়াতকারীর পূর্বে মূসা লাহু মারা গেলে তাহার ওয়ারিশগণ তাহার স্থলাভিষিক্তহইবে এবং তাহারা ওসিয়াতগ্রহণ বা প্রত্যাখ্যান করার অধিকারী হইবে।

(চ) ওসিয়াত সম্পন্ন হওয়ার জন্য মূসা লাহুর ওসিয়াতকৃত বস্তু হস্তগত করা শর্ত নহে।

বিশ্লেষণ

ওসিয়াত সম্পন্ন হওয়ার জন্য মূসা লাহুর উহা কবুল করা শর্ত হইলেও ওসিয়াতকৃত বস্তু হস্তগত করা শর্ত নহে। ওসিয়াতকারীর মৃত্যুর পর মূসা লাহু কবুল করিলেই ওসিয়াতকৃত বস্তুতে তাহার মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হয়।

ককূল করার পূর্বে মূসা লাহু মারা গেলে তাহার ওয়ারিশগণ ওসিয়াতকৃত বস্তু গ্রহণ বা প্রত্যাখ্যান করিতে পারিবে।

ধারা-৫১৮

ওসিয়াতের অনুকূলে সাক্ষ্য মৃত ব্যক্তির ওয়ারিশগণ ওসিয়াত অস্বীকার করিলে উহা প্রমাণের জন্য দুইজন সাক্ষীর সাক্ষ্য পেশ করিতে হইবে।

বিশ্লেষণ

মতবিরোধের ক্ষেত্রে ওসিয়াত প্রতিষ্ঠিত করার জন্য সাক্ষীর প্রয়োজন। দুইজন লোক সাক্ষ্য দেয় যে, অমুক ব্যক্তি অমুক ব্যক্তির অনুকূলে এই জিনিসের ওসিয়াত করিয়া গিয়াছে এবং মূসা লাহুও উহার দাবি করে তবে ওসিয়াত প্রমাণিত হইবে। ওসিয়াতের অনুকূলে সাক্ষী রাখার জন্য কুরআনের নির্দেশ রহিয়াছে :

يأتيها الذين آمنوا شهاده بينكم اذا حضر أحدكم الموت حين الوصية اثنين وا عدل منكم أو أخران من غيركم ان اشتم ضربتم في الأرض فأصبتم مصيبة الموت ……

“হে ঈমানদারগণ! তোমাদের কাহারও যখন মৃত্যুকাল উপস্থিত হয় তখন ওসিয়াত করার সময় তোমাদের মধ্য হইতে দুইজন ন্যায়পরায়ণ লোককে সাক্ষী রাখিবে। তোমরা সফরে থাকিলে এবং তোমাদের মৃত্যুর বিপদ উপস্থিত হইলে (এবং

৫৯৪

মুসলিম সাক্ষী না পাওয়া গেলে) তোমাদের ব্যতীত অন্য (ধর্মের) লোকদের মধ্য হইতে দুইজন সাক্ষী মনোনীত করিবে……” (সূরা মাইদা : ১০৬)

ওসিয়তনামার সত্যতা সাব্যস্ত হইলেই উহা গ্রহণযোগ্য হইবে এবং সাক্ষ্যই হইল উহার প্রমাণ। এজন্য দুইজন সুস্থবুদ্ধি সম্পন্ন বালেগ পুরুষ বা একজন পুরুষ ও দুইজন মহিলা সাক্ষীর উপস্থিতিতে ওসিয়াত সম্পাদিত হওয়া উচিৎ। সফররত অবস্থায় ওসিয়াত করিলে এবং মুসলিম সাক্ষী না পাওয়া গেলে উহার অনুকূলে অমুসলিমগণকে সাক্ষী রাখা বৈধ।

ধারা-৫১৯

শর্তহীন বা শর্তযুক্ত ওসিয়াত

কোনরূপ শর্ত মুক্ত করিয়া বা না করিয়া ওসিয়াত করা বৈধ। তবে অবৈধ শর্ত যুক্ত করিলে উহা বাতিল গণ্য হইবে এবং ওসিয়াত পূর্ণরূপে কার্যকর হইবে।

বিশ্লেষণ

শর্তযুক্ত ওসিয়াত সাধারণত সম্পত্তির আয় বা উৎপাদনের ক্ষেত্রে হইয়া থাকে। যেমন কোন ব্যক্তি অপর ব্যক্তির অনুকূলে ওসিয়াত করিল যে, ঐ অপর ব্যক্তি তাহার জীবদ্দশা পর্যন্ত অমুক সম্পত্তি ভোগ করিবে। এই অবস্থায় যাহার অনুকূলে ওসিয়াত করা হইয়াছে (অর্থাৎ মূসা লাহু) তাহার মৃত্যুর পর সংশ্লিষ্ট সম্পত্তি ওসিয়াতকারীর ওয়ারিশগণের মালিকানায় ফিরিয়া আসিবে। তবে ওসিয়াতকৃত সম্পত্তিতে ফসল অথবা গাছে ফল আসার পর কিন্তু সংগ্রহের পূর্বে মূসা লাহু মারা গেলে ফল বা ফসল তাহার ওয়ারিশগণই পাইবে।

অনন্তর ওসিয়াতের সহিত কোনরূপ শর্ত যোগ করিলে উহা অবশ্যই যুক্তিসঙ্গত হইতে হইবে। অবৈধ শর্ত যোগ করিলে উহা বাতিল গণ্য হইবে এবং ওসিয়াত পূর্ণরূপে কার্যকর হইবে।

ধারা-৫২০

ওসিয়াত করা উত্তম ওসিয়াত করা বাধ্যতামূলক নহে, বরং ঐচ্ছিক ও উত্তম (মুসতাহাব)।

বিশ্লেষণ

ফকীহগণ কুরআন, হাদীস ও উম্মাতের ইজমার ভিত্তিতে ওসিয়াতের কল্যাণের দিকটি বিবেচনা করিয়া উহাকে মুসতাহাব বলিয়াছেন, যদি ওসিয়াতকারীর যাকাত, রোযা, হজ্জ ও অনুরূপ অত্যাবশ্যকীয় কর্তব্য অপূর্ণ না থাকে।

ধারা-৫২১

ওলিয়াত বৈধ হওয়ার শর্ত ওসিয়াত যথার্থ ও বৈধ হওয়ার জন্য উহার উদ্দেশ্য শরীআত সম্মত হইতে হইবে।

৫৯৫

বিশ্লেষণ

শরীআত বিরোধী কোন উদ্দেশ্যে ওসিয়াত করা বৈধ নহে। অবৈধ উদ্দেশ্যে ওসিয়াত করিলে উহা কার্যকর হইবে না, বরং বাতিল গণ্য হইবে। কারণ আল্লাহ্ তা’আলা বলেন :

تعاوؤا على البر والتقوى ولا تعاؤوا على الاثم

والعدوان .

“সৎকর্ম ও তাকাওয়ার ক্ষেত্রে তোমরা পরস্পরের সহযোগিতা করিবে এবং পাপ ও বিদ্রোহাত্মক কাজে একে অন্যের সহযোগিতা করিবে না” (সূরা মাইদা : ২)।

কোন ব্যক্তি মন্দির বা প্রতীমা গৃহ নির্মাণ বা উহার মেরামতের জন্য ওসিয়াত করিলে তাহা বাতিল গণ্য হইবে। কিন্তু অমুসলিম ব্যক্তির অনুকূলে ওসিয়াত করা বৈধ। এমনকি যাতায়াতের পথে তাহাদের সাময়িক আশ্রয়ের জন্য মুসাফিরখানা নির্মাণের ওসিয়াত করাও বৈধ। হযরত সাফিয়্যা (র) তাঁহার এক ইহুদী আত্মীয়ের অনুকূলে তাঁহার সম্পদের এক-তৃতীয়াংশ ওসিয়াত করিয়াছিলেন, যাহার পরিমাণ ছিল ত্রিশ হাজার দিরহাম।

ধারা-৫২২

ওসিয়াত প্রত্যাহার বা বাতিলকরণ ওসিয়াতকারী তাহার কৃত ওসিয়াত প্রত্যাহার অথবা বাতিল করিতে পারে।

বিশ্লেষণ

ওসিয়াতকারী তাহার জীবদ্দশায় যে কোন সময় তাহার কৃত ওসিয়াত প্রত্যাহার বা বাতিল করিতে পারে। কারণ ইহা তাহার জন্য বাধ্যতামূলক চুক্তি (5.3 ) নহে এবং ইহার গ্রহণ ( 3) তাহার মৃত্যুর পরই অনুষ্ঠিত হয়, গ্রহণের পূর্বে ইহা কার্যকর হয় না। ওসিয়াতকারী সুস্পষ্ট বাক্যে অথবা কার্যকলাপের মাধ্যমে ওসিয়াত প্রত্যাহার করিতে পারে। কথার মাধ্যমে, যেমন সে বলিল, আমি অমুক জিনিস অমুক ব্যক্তির অনুকূলে ওসিয়াত করিয়াছিলাম, এখন উহা তাহার পরিবর্তে অমুক ব্যক্তির জন্য ওসিয়াত করিলাম। তাহার এই শেষোক্ত ওসিয়াতের মাধ্যমে প্রথমোক্ত ওসিয়াত প্রত্যাহৃত বা বাতিল হইয়া যাইবে। কাজের মাধ্যমে—যেমন কোন ব্যক্তি অপর ব্যক্তির অনুকূলে একটি মূল্যবান গাছের ওসিয়াত করিল। পরে সে উহা কাটিয়া নিজের ঘর নির্মাণের কাজে ব্যবহার করিল।

ধারা-৫২৩ যেসব কারণে ওসিয়াত বাতিল হইয়া যায় নিম্নোক্ত যে কোন কারণে ওসিয়াত বাতিল হইয়া যায়—

(ক) ওসিয়াতকারী চিরতরে পাগল হইয়া গেলে; (খ) ওসিয়াতকারী অথবা মূসা লাহু মুরতাদ হইয়া গেলে; (গ) মূসা লাহু ওসিয়াতকারীকে হত্যা করিলে;

(ঘ) মূসা লাহু কর্তৃক মূসা বিহি (ওসিয়াতকৃত বস্তু) গ্রহণ করার পূর্বে উহা ধ্বংস বা বিলুপ্ত হইয়া গেলে;

(ঙ) ওসিয়াতকারীর মৃত্যুর পর মূসা লাহু ওসিয়াত প্রত্যাখ্যান করিলে; (চ)মূসা বিহির উপর অপর কাহারো মালিকানা বা অধিকার সাব্যস্ত হইলে; এবং

(ছ) ইসলামী আইন অনুযায়ী ওসিয়ত বাতিল হওয়ার মত কোন পরিস্থিতির উদ্ভব হইলে।

বিশ্লেষণ

ওসিয়াতকারী পাগল হইয়া যাওয়ার কারণে ওসিয়াত বাতিল হইয়া যায়। কারণ ওসিয়াত হইল একটি বৈধ চুক্তি এবং মৃত্যুর সময় এই চুক্তি করার যোগ্যতা উন্মাদনার কারণে রহিত হইয়া গিয়াছে। অনুরূপভাবে মূসা বিহি (ওসিয়াতকৃত বস্তু) ধ্বংস হইয়া যাওয়ার কারণেও ওসিয়াত বাতিল হইয়া গিয়াছে। কারণ যে জিনিসের ওসিয়াত করা হইয়াছিল উহার অস্তিত্বই বিলুপ্ত হইয়া গিয়াছে। ওসিয়াতকারী বা মূসা লাহু যে কোন একজন মুরতাদ হইয়া গেলেও ওসিয়াত বাতিল হইয়া যাইবে। মূসা লাহু ওসিয়াতকারীকে হত্যা করিলেও ওসিয়াত বাতিল হইয়া যায়। মহানবী (স) বলেন :

ليس لقاتل وصة.

“হন্তার অনুকূলে কোন ওসিয়াত হইতে পারে না।”৬

ধারা-৫২৪

ওসিয়াতকারীর যোগ্যতা যে কোন বালেগ ও সুস্থবুদ্ধি সম্পন্ন পুরুষ বা নারী নিজ সম্পত্তির অংশবিশেষ অপরের অনুকূলে ওসিয়াত করিতে পারে।

বিশ্লেষণ, ওসিয়াত যেহেতু একটি চুক্তি, তাই উহা সঠিক হওয়ার জন্য ওসিয়াতকারীকে অবশ্যই বালেগ ও সুমনা হইতে হইবে। নাবালেগ, পাগল ও জড়বুদ্ধি সম্পন্ন ব্যক্তির ওসিয়াত কার্যকর হইবে না।

ধারা-৫২৫।

যে পরিমাণ সম্পদে ওসিয়াত করা যাইবে কোন ব্যক্তি তাহার সম্পত্তির সর্বাধিক এক-তৃতীয়াংশ পর্যন্ত ওসিয়াত করিতে পারে; কিন্তু যাহার ওয়ারিশ নাই এবং সে ঋণগ্রস্ত না হইলে তাহার সমস্ত সম্পত্তি ওসিয়াত করিতে পারে।

৫৯৭

বিশ্লেষণ

কোন ব্যক্তি তাহার সম্পত্তির সর্বাধিক এক-তৃতীয়াংশ পর্যন্ত ওসিয়াত করিতে পারে, তবে এক-তৃতীয়াংশের কম ওসিয়ত করাই মুস্তাহাব। সাদ ইবন আবু ওয়াক্কাস (রা) মৃত্যুশয্যায় নিজের সমস্ত সম্পত্তির ওসিয়াত করিতে চাহিলে রাসূলুল্লাহ (সা) তাঁহাকে নিষেধ করেন। তিনি দুই-তৃতীয়াংশ, অতঃপর অর্ধেক সম্পত্তি ওসিয়াত করিতে চাহিলে মহানবী (সা) তাহাও নিষেধ করেন। অতঃপর এক-তৃতীয়াংশ সম্পত্তি ওসিয়াত করিতে চাহিলে মহানবী (সা) উহার অনুমতি দেন এবং বলেন, “উহাও পরিমাণে বেশি। তোমার ওয়ারিশগণকে দরিদ্র অবস্থায় রাখিয়া যাওয়ার চাইতে ধনী রাখিয়া যাওয়া উত্তম, যাহাতে তাহারা অন্যের নিকট হাত পাতিতে বাধ্য

হয়।”

ইবন আব্বাস (রা) বলেন, লোকেরা যদি ওসিয়াতের ব্যাপারে এক-চতুর্থাংশ পর্যন্ত নামিয়া আসিত তবে খুব ভাল হইত। কেননা রাসূলুল্লাহ্ (সা) এক-তৃতীয়াংশ পর্যন্ত অনুমতি দিয়াছেন এবং বলিয়াছেন, এক-তৃতীয়াংশ অনেক বেশি বা বড়। কোন ব্যক্তি ঋণমুক্ত হইলে এবং তাহার কোন ওয়ারিশ না থাকিলে সে তাহার সমস্ত সম্পত্তি ওসিয়াত করিতে পারে। ওসিয়াতকে এক-তৃতীয়াংশে সীমাবদ্ধ করা হইয়াছে ওয়ারিশগণের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য। কিন্তু যাহার ওয়ারিশ নাই সেই ক্ষেত্রে কাহারও স্বার্থহানি হওয়ার আশঙ্কা নাই।

কেহ এক-তৃতীয়াংশের অধিক সম্পত্তি ওসিয়াত করিলে উহা বাতিল গণ্য হইবে। তবে সংশ্লিষ্ট ওয়ারিশগণ ওসিয়াতকারীর মৃত্যুর পর সম্মত হইলে ওসিয়াত কার্যকর হইবে।২২

ধারা-৫২৬

ঋণগ্রস্ত ব্যক্তির ওসিয়াত ঋণভারে জর্জরিত ব্যক্তির ওসিয়াত অসিদ্ধ; তবে পাওনাদারগণ ঋণের দাবি ত্যাগ করিলে এবং ওসিয়াত কার্যকর করার জন্য সম্মত হইলে উহা বৈধ হইবে।

বিশ্লেষণ

ওসিয়াত করাটা নফল ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত, আর ঋণ পরিশোধ করা অপরিহার্য (ফরয) কর্তব্যের অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং কাহারও ফরয দায়িত্ব অসম্পাদিত থাকিলে তাহাকে প্রথমে উহা পালন করিতে হইবে। অবশ্য ঋণের পরিমাণ সম্পদের তুলনায় অনেক কম হইলে অথবা ঋণদাতাগণ তাহাদের দাবি প্রত্যাহার করিলে ওসিয়াত করা জায়েয। মহানবী (সা) ঋণগ্রস্ত ব্যক্তির জানাযা পড়িতে সম্মত হন নাই যতক্ষণ পর্যন্ত না অপর কেহ তাহার ঋণ পরিশোধের দায়িত্ব গ্রহণ করিয়াছে।২৪

৫৯৮

ধারা-৫২৭

অমুসলিম ব্যক্তির অনুকূলে ওসিয়াত কোন মুসলিম ব্যক্তি অমুসলিম ব্যক্তির অনুকূলে এবং কোন অমুসলিম ব্যক্তি মুসলিম ব্যক্তির অনুকূলে ওসিয়াত করিতে পারে।

বিশ্লেষণ

ধর্মের পার্থক্য ওসিয়াতের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক নহে। অতএব কোন মুসলিম অমুসলিমের অনুকূলে ওসিয়াত করিতে পারে।

মহান আল্লাহর বাণী :

لأنهم الله عن الذين لم يقاتلوكم في الدين ولم خرجوكم من ديارم أن تبروهم وتقسطوا اليهم ان الله

…..। “দীনের ব্যাপারে যাহারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে নাই এবং তোমাদেরকে স্বদেশ হইতে বহিস্কৃত করে নাই তাহাদের প্রতি মহানুভবতা প্রদর্শন ও ন্যায়বিচার করিতে আল্লাহ্ তোমাদেরকে নিষেধ করেন নাই। আল্লাহ ন্যায়পরায়ণদেরকে ভালোবাসেন” (সূরা মুমতাহানা : ৮)।

অতএব যাহাদের প্রতি জীবদ্দশায় সদ্ব্যবহার ও অনুগ্রহ প্রদর্শন করা যাইতে পারে, মৃত্যুর পরও তাহাদের প্রতি অনুগ্রহ প্রদর্শন করা সঙ্গত। অনুরূপভাবে মুসলমানের অনুকূলে অমুসলিমের ওসিয়াতও বৈধ। কেননা এক পক্ষ হইতে সদাচার প্রদর্শন করা হইলে অপর পক্ষ হইতেও অনুরূপ সদাচার প্রাপ্তির আশা করা যাইতে পারে।২৭.

ধারা-৫২৮

ওয়ারিশগণের অনুকূলে ওসিয়াত কোন ওয়ারিশের অনুকূলে ওসিয়াত করা বৈধ নহে; তবে ওসিয়াতকারীর মৃত্যু পরবর্তী কালে অন্য ওয়ারিশগণের সম্মতিতে উহা বৈধ হইবে।

বিশ্লেষণ

মহানবী (সা)-এর বাণী :

عن أبي أمامة قال سمعت رسول الله صلى الله عليه

وسلم يقول في خطبته عام حجة الوداع ان الله أعطى كل ذي حق حقه فلا وصية لوارث.

আবু উমামা (রা) বলেন, বিদায় হজ্জের বৎসর আমি রাসূলুল্লাহ্ (সা)-কে তাঁহার (বিদায় হজ্জের) ভাষণে বলিতে শুনিছি; “আল্লাহ্ তাআলা প্রত্যেক প্রাপকের প্রাপ্য নির্ধারণ করিয়া দিয়াছেন। অতএব ওরিশের অনুকূলে ওসিয়াত বৈধ নহে।”২৬

عن ابن عباس عن البي صلى الله عليه وسلم قال لا

تجوز وصية الوارث ا أن يشاء الور.

“ইবন আব্বাস (রা) হইতে বর্ণিত। মহানবী (সা) বলেন : ওয়ারিশগণের সম্মতি ব্যতীত কোন ওয়ারিসের অনুকূলে ওসিয়াত বৈধ নহে।”১৭

ওয়ারিশ বিশেষের অনুকূলে ওসিয়াত করা হইলে অপরাপর ওয়ারিশের স্বার্থহানি ঘটিতে পারে এবং ইহার ফলে তাহাদের মধ্যে বিভেদ ও সম্পর্কচ্ছেদ ঘটিতে পারে। অথচ উভয়টিই হারাম করা হইয়াছে। মহান আল্লাহ বলেন :

والفتنة أشد من القتل .

“বিবাদ-বিসম্বাদ হত্যাকাত্রে চাইতেও জঘন্য” (সূরা বাকারা : ১৯৩; আরও দ্র. আয়াত নং ২১৭)।

মহানবী (সা) বলেন :

“ওসিয়াতের মাধ্যমে (কাহারও) ক্ষতিসাধন করা কবীরা গুনাহর অন্তর্ভুক্ত।

الأضرار في الوصية من الكبائر .

عن أبي هريرة عن النبي صلى الله عليه وسلم قال إن الرجل ليعمل والمرأة بطاعة الله ستين سنه ثم يضرهما الموت فيضار ان في الوصية فتجب لهما النار .

আবু হুরায়রা (রা) হইতে বর্ণিত। মহানবী (সা) বলেন : “কোন পুরুষ ও নারী দীর্ঘ ষাট বৎসর আল্লাহর আনুগত্যে অতিবাহিত করিল, অতঃপর তাহাদের মৃত্যু উপস্থিত হয় এবং তাহারা ওসিয়াতের মাধ্যমে ক্ষতিসাধন করে, তাহাদের জন্য দোযখ অবধারিত হইয়া যায়।”

من قطع ميراث وارث قطع الله ميراثه من الجنة يوم

القيامة .

“যে ব্যক্তি কোন ওয়ারিশী স্বত্ব কর্তন করিল, আল্লাহ্ তা’আলা কিয়ামতের দিন তাহার (কর্তনকারীর) জান্নাতের অংশ কর্তন করিবেন।”

যদি এমন কোন ব্যক্তির অনুকূলে ওসিয়াত করা হয় যে ওসিয়াতকারীর মত্যুর পূর্বে তাহার ওয়ারিশ ছিল না, কিন্তু মৃত্যুর পর তাহার ওয়ারিশ হইয়াছে, যেমন

৬০০

সহােদর ভাই, তবে ঐ ওসিয়াত অপর ওয়ারিশগণের সম্মতির উপর নির্ভরশীল হইবে। একজন ওয়ারিশ ও একজন ওয়ারিশ বহির্ভূত ব্যক্তির অনুকূলে একত্রে ওসিয়াত করা হইলে এবং অন্য ওয়ারিশগণ (ওসিয়াতকারীর মৃত্যুর পর) উহাতে সম্মত না হইলে কেবল ওয়ারিশ বহির্ভূত ব্যক্তির অনুকূলে কৃত ওসিয়াতটুকু কার্যকর হইবে।

ধারা-৫২৯

গর্ভস্থ সন্তানের অনুকূলে ওসিয়াত গর্ভস্থ সন্তানের অনুকূলে কৃত ওসিয়াত বৈধ ও কার্যকর হইবে যদি ওসিয়াতের তারিখ হইতে ছয় মাসের মধ্যে উহার জন্ম হয়।

বিশ্লেষণ

এই ক্ষেত্রে ওসিয়াতের সময় মাতৃগর্ভে সন্তানের অস্তিত্ব প্রতীয়মান হইতে হইবে এবং ওসিয়াত সম্পাদনের ছয় মাসের মধ্যে ভূমিষ্ঠ হইতে হইবে। এই সময় অতিবাহিত হওয়ার পর সন্তান জন্মগ্রহণ করিলে তাহার অনুকূলে কৃত ওসিয়াত কার্যকর হইবে না। এই বিধান উত্তরাধিকার আইনের ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত। গর্ভস্থ সন্তান যেভাবে ওয়ারিশ হইতে পারে, তেমনিভাবে ওসিয়াতের মাধ্যমেও স্বত্ব লাভ করিতে পারে।৩২

ধারা-৫৩০

মূসা বিহির শর্তাবলী মূসা বিহি (ওসিয়াতকৃত বস্তু)-কে অবশ্যই অর্থের দ্বারা পরিমাপযোগ্য বৈধ মাল বা মালের বৈশিষ্ট্যযুক্ত হইতে হইবে এবং উহা ওসিয়াতকারীর মালিকানায় থাকিতে হইবে।

বিশ্লেষণ

মূসা বিহির অবশ্যই মাল’-এর বৈশিষ্ট্য থাকিতে হইবে। কারণ হারাম জিনিস মাল হিসাবে গণ্য নহে, যেমন মৃতজীব, শূকর, শরাব ইত্যাদি। মূসা বিহিকে অবশ্যই মূল্যবান জিনিস অর্থাৎ নগদ অর্থে পরিমাপযোগ্য হইতে হইবে। যেমন কোন মুসলিমের জন্য শরাব, শূকর ইত্যাদি মূল্যবান জিনিস নহে। সে এইগুলি ধ্বংস করিলে কোন জরিমানা দিতে হয় না। অবশ্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিকারী কুকুরের ওসিয়াত করা বৈধ। ফকীহগণ উহাকে মূল্যবান গণ্য করিয়াছেন এবং উহার ক্রয়-বিক্রয়, হেবা ইত্যাদি বৈধ বলিয়াছেন। কেহ উহা হত্যা করিলে তাহার উপর জরিমানা আরোপিত হয়। অবশ্য অমুসলিম ব্যক্তির অনুকূলে (তাহাদের ব্যবহৃত) হারাম জিনিসের ওসিয়াত করা বৈধ।৩

৬০১

ধারা-৫৩১

মূসা বিহির পরিমাণ। ওসিয়াতকারীর কাফন-দাফনের খরচ সংকুলান ও ঋণ পরিশোধের পর অবশিষ্ট সম্পদের এক-তৃতীয়াংশ পরিমাণে ওসিয়াত করা বৈধ; ইহার অধিক পরিমাণে ওসিয়াত করা হইলে তাহা ওসিয়াতকারীর মৃত্যুর পর তাহার ওয়ারিশগণের সম্মতি সাপেক্ষ্যে কার্যকর হইবে।

বিশ্লেষণ

ওসিয়াতকারীর পরিত্যক্ত সম্পদ হইতে প্রথমে তাহার কাফন-দাফনের ব্যয় নির্বাহ করিতে হইবে, অতঃপর ঋণ ও অনাদায়ী যাকাত পরিশোধ করিতে হইবে, অতঃপর অবশিষ্ট সম্পত্তির এক-তৃতীয়াংশে তাহার ওসিয়াত কার্যকর হইবে। এক তৃতীয়াংশের অধিক পরিমাণে ওসিয়াতের ক্ষেত্রে ওসিয়াতকারীর জীবদ্দশায় তাহার ওয়ারিশগণের সম্মতি প্রদান ধর্তব্য নহে, বরং তাহার মৃত্যুর পর তাহাদের প্রদত্ত সম্মতিই ধর্তব্য হইবে।

ধারা-৫৩২ সম্পত্তির দ্বারা উপকৃত হওয়ার ওসিয়াত চিরকালের জন্য অথবা নির্দিষ্টকালের জন্য কোন সম্পত্তির দ্বারা উপকৃত হওয়ার অর্থাৎ সম্পত্তি হইতে উদ্ভূত ফল ভোগের ওসিয়াত করা বৈধ।

বিশ্লেষণ

যেভাবে মূল সম্পত্তি ওসিয়াত করা বৈধ, দ্রুপ উহা হইতে উদ্ভূত ফল ভোগের ওসিয়াত করাও বৈধ। এই ক্ষেত্রে উদ্ভূত ফলই “মূসা বিহি” হিসাবে গণ্য হইবে। কারণ “মাল”-এর মত উহা হইতে প্রাপ্ত আয় বা ফলও “মাল” হিসাবে গণ্য। এই সম্পত্তির দ্বারা সুবিধাভোগের ওসিয়াত স্থায়ীও হইতে পারে এবং অস্থায়ীও হইতে পারে। যেমন কোন ব্যক্তি ওসিয়াত করিল যে, তাহার মৃত্যুর পর অমুক ব্যক্তি তাহার অমুক সম্পত্তি হইতে প্রাপ্ত আয় দশ বৎসর অথবা চিরকাল ভোগ করিবে। এই প্রকারের ওসিয়াতে সময়কাল নির্দিষ্ট না করা হইলে উহা মূসা লাহুর জীবদ্দশা পর্যন্ত বলবৎ থাকিবে,অতঃপর উহা ওসিয়াতকারীর ওয়ারিশগণের মালিকানায় ফিরিয়া আসিবে। সম্পত্তির আয় হইতে কাহাকেও বৃত্তিদানের ওসিয়াত করাও বৈধ।

ধারা-৫৩৩

অনুপস্থিত জিনিসের ওসিয়াত ওসিয়াত করার সময় বিদ্যমান ছিল না কিন্তু ওসিয়াতকারীর মৃত্যুর সময় বিদ্যমান এইরূপ সম্পত্তিতে ওসিয়াত করা বৈধ।

৬০২

বিশ্লেষণ

যে জিনিস ওসিয়ত করার সময় বিদ্যমান ছিল কিন্তু ওসিয়াতকারীর মৃত্যুর সময় বিদ্যমান ছিল না, সেই ক্ষেত্রে ওসিয়াত বাতিল হইয়া যাইবে। আর যে জিনিস ওসিয়াত করার সময় বিদ্যমান ছিল না, কিন্তু ওসিয়াত করার পর অস্তিত্ববান হইয়াছে সেই ক্ষেত্রে ওসিয়াত কার্যকর হইবে।

ধারা-৫৩৪

মূসা বিহির পরিবর্ধন মূসা বিহির সহিত সংযুক্ত পরিবৃদ্ধি ওসিয়াতের অন্তর্ভুক্ত হইবে।

বিশ্লেষণ

ওসিয়াতকারীর মৃত্যুর পূর্বে ওসিয়াতকৃত মালের পরিবৃদ্ধি ঘটিলে উহা তাহারই সম্পত্তি গণ্য হইবে। এই পরিবৃদ্ধি ও ওসিয়াতকৃত মালের যোগফল যদি ওসিয়াতকারীর সম্পত্তির এক-তৃতীয়াংশের অধিক হয় তবে তাহার মৃত্যুর পরে অতিরিক্ত অংশের উপর ওসিয়াত কার্যকর হওয়ার জন্য তাহার ওয়ারিশগণের সম্মতির প্রয়োজন হইবে। ওয়ারিশগণ সকলে অথবা যে কোন একজন অসম্মত হইলে অতিরিক্ত অংশে ওসিয়াত কার্যকর হইবে না।

ওসিয়াতকারীর মৃত্যুর পরে এবং সম্পত্তি বন্টনের পর মূসা বিহির পরিবৃদ্ধি ঘটিলে উহা ওসিয়াত গ্রহীতার সম্পত্তি গণ্য হইবে। ওসিয়াতকারীর মৃত্যুর পরে কিন্তু সম্পত্তি বণ্টনের ও মূসা লাহু কর্তৃক গ্রহণের পূর্বে মূসা বিহির পরিবৃদ্ধি ঘটিলে ঐ বর্ধিত অংশ ওসিয়াতকারীর ওয়ারিশগণের প্রাপ্য হইবে এবং বণ্টনের ও মূসা লাহু কর্তৃক গ্রহণের পরে ঘটিলে উহা তাহারই (মূসা লাহুর) প্রাপ্য হইবে, কিন্তু বন্টনের পূর্বে ও মূসা লাহু কর্তৃক গ্রহণের পর পরিবৃদ্ধি ঘটিলে উহা মূসা বিহি গণ্য হইবে না।”

ধারা-৫৩৫

মূসা বিহি অস্পষ্ট ও অনির্দিষ্ট থাকিলে ওসিয়াতে মূসা বিহি অস্পষ্ট বা অজ্ঞাত থাকিলে এবং উহা সুস্পষ্ট করা সম্ভব হইলে ওসিয়াত বৈধ ও কার্যকর হইবে।

বিশ্লেষণ

মূসা বিহি অজ্ঞাত বা অস্পষ্ট থাকিলে এবং ওসিয়াতকারী বা তাহার ওয়ারিশগণের পক্ষে উহা সুস্পষ্ট করা সম্ভব হইলে ওসিয়াত শুদ্ধ হইবে। যেমন কোন ব্যক্তি বলিল, “আমার সম্পত্তির একটি অংশ বা কিছু অংশ অমুক ব্যক্তির অনুকূলে ওসিয়াত করিলাম।” ওসিয়াতকারী পরে কখনও উহার পরিমাণ নির্ধারণ করিয়া দিলে তাহাই মূসা বিহি গণ্য হইবে, অন্যথায় তাহার ওয়ারিশগণ যতটুকু পরিমাণ সম্পত্তি মূসা বিহি হিসাবে নির্ধারণ করিবে ততটুকুতেই ওসিয়াত কার্যকর হইবে।

৬০৩

ধারা-৫৩৬

ওসী নিয়োগ ওসিয়াতকারীর নিজস্ব পছন্দ অনুযায়ী “ওসী” নিয়োগের অধিকার রহিয়াছে।

বিশ্লেষণ

কোন ব্যক্তি তাহার মৃত্যুর পর তাহার পরিত্যক্ত সম্পত্তি দেখাশোনা করার জন্য যাহাকে নিয়োগ করে তাহাকে “ওসী” (প্রতিনিধি Executor) বলে। কোন ব্যক্তি

প্রতিনিধি নিয়োগ না করিয়া মারা গেলে তাহার পরিত্যক্ত সম্পত্তি ব্যবস্থাপনার জন্য আদালত একজন যোগ্য ওসী নিয়োগ করিবে।

ধারা-৫৩৭

নারী-পুরুষ উভয়েই ওসী হইতে পারে যে কোন বিশ্বস্ত মুসলিম বালগ ও সুস্থ বুদ্ধির অধিকারী নারী বা পুরুষকে ওসী নিয়োগ করা যাইতে পারে, তাহারা ওসিয়াতকারীর আত্মীয় হউক বা না হউক; তবে কোন অমুসলিমকে ওসী নিয়োগ করা বৈধ নহে।

বিশ্লেষণ

ওসী হওয়ার জন্য ওয়ারিশ হওয়া বা না হওয়ার কোন শর্ত নাই। যে কোন বিশ্বস্ত বালেগ ও সুস্থ বুদ্ধির অধিকারী মুসলিম ব্যক্তি ওসী নিয়োজিত হওয়ার যোগ্য, এমনকি

অন্ধ ব্যক্তিকেও ওসী নিয়োগ করা বৈধ। অবশ্য কোন অমুসলিম ব্যক্তি ওসী হইতে পারে না। কেহ অমুসলিমকে ওসী নিয়োগ করিয়া মারা গেলে আদালত তাহাকে বরখাস্ত করিয়া তদস্থলে মুসলিম ব্যক্তিকে ওসী নিয়োগ করিবে। এই বিষয়ে সকলেই একমত। মহান আল্লাহ বলেন :

ولن يجعل الله للكفرين على المؤمنين سبي؟ .

“এবং আল্লাহ্ কখনও মুমিনদের উপর কাফিরদের কর্তৃত্ব করার অধিকার দেন নাই” (সূরা নিসা : ১৪১)।

ধারা-৫৩৮

আদালত কর্তৃক ওসী নিয়োগ মৃত ব্যক্তির ওসিয়তকার্যকর করার এবং তাহার নিকট অপরের অথবা অপরের নিকটতাহার প্রাপ্য ঋণ আদায় করার মত কোন যোগ্য ওয়ারিশ বা ওসী নিয়োজিত

থাকিলে আদালত উহার ব্যবস্থাপনার জন্য ওলী নিয়োগ করিতে পারে।

বিশ্লেষণ

কোন ব্যক্তি ওসী নিয়োগ না করিয়া মারা গেলে এবং তাহার নাবালেগ সন্তান থাকিলে তাহাদের লালন-পালন ও তাহার সম্পত্তির ব্যবস্থাপনার জন্য আদালত ওসী নিয়োগ করিতে পারে।

৬০৪

ধারা-৫৩৯ .

ওসীর কর্তৃত্বসীমা মৃতের কোন ঋণ অথবা ওসিয়াত থাকিলে এবং তাহার ওয়ারিশগণ নাবালেগ হইলে তাহাদের প্রয়োজন পূরণের জন্য ও সম্পদের হেফাজতের জন্য ওসী তাহাদের অস্থাবর সম্পত্তি এমনকি কিছুটা কম মূল্যেও বিক্রয় করিতে পারিবে, তবে তাহাদের স্থাবর সম্পত্তি বিক্রয় করিতে পারিবে না, কিন্তু নিম্নোক্ত অবস্থায় পারিবে।

(ক) উহা বিক্রয়ের ক্ষেত্রে তাহাদের সুস্পষ্ট স্বার্থ ও কল্যাণ নিহিত থাকিলে;

(খ) মৃতের দেনা থাকিলে এবং স্থাবর সম্পত্তি বিক্রয় করা ব্যতীত অন্য পন্থায় পরিশোধের ব্যবস্থা করা সম্ভব না হইলে;

(গ) পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর করার মত ওসিয়াত থাকিলে এবং উহা অস্থাবর সম্পত্তি দ্বারা পূরণ করা সম্ভব না হইলে;

(ঘ) সম্পত্তির বিপরীতে কর বা অনুরূপ কোন পাওনা প্রাপ্য থাকিলে, যাহা সম্পত্তির আয় দ্বারা পরিশোধ করা সম্ভব নহে; এবং

(ঙ) সম্পদ ধ্বংস বা পরিত্যক্ত হইয়া যাওয়ার অথবা যালিমের হস্তগত হইয়া যাওয়ার আশঙ্কা থাকিলে।

বিশ্লেষণ

কোন ব্যক্তির মৃত্যুর পর তাহার পরিত্যক্ত সম্পদ ও নাবালেগ সন্তানের হেফাজতের উদ্দেশ্যেই ওসী নিয়োগ করা যাইতে পারে, সম্পদের সংরক্ষণ ও উহার পরিবৃদ্ধির পন্থা অবলম্বন করাই তাহার দায়িত্ব। কিন্তু সে যদি এমন কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করে। যাহার ফলে সম্পদ ও নাবালেগের স্বার্থের ক্ষতি সাধিত হয় তবে তাহার এই ধরনের পদক্ষেপ বাতিল গণ্য হইবে, এমনকি নাবালেগ বালেগ হওয়ার পর তাহার এই কার্যক্রম অনুমোদন করিলেও উহা ধর্তব্য হইবে না। বিশেষত নিয়োগকারী তাহাকে যতটুকু ক্ষমতা দান করিয়াছে উহার আওতায় থাকিয়াই তাহার কার্যক্রম পরিচালনা করিতে হইবে।

ধারা-৫৪০

লাভজনক খাতে সম্পত্তি নিয়োগ নাবালেগের সম্পত্তির পরিবৃদ্ধির উদ্দেশ্যে ওসী উহা ব্যবসা-বাণিজ্য বা অনুরূপ কোন লাভজনক খাতে লগ্নি করিতে পারিবে; কিন্তু সে নিজে উহা দ্বারা ব্যবসা করিতে পারিবে না।

ধারা-৫৪১

সম্পত্তি বন্ধক রাখা নাবালেগের মাল হইতে ওসীর ঋণ গ্রহণ, ঋণ প্রদান, নিজের মাল নাবালেগের নিকট বন্ধক রাখা বা নাবালেগের মাল নিজের নিকট বন্ধক রাখা বৈধ

৬০৫

নহে; অবশ্য তাহাদের ঋণ পরিশোধের জন্য অপরের নিকট তাহাদের মাল বন্ধক রাখিতে পারিবে।

বিশ্লেষণ

নাবালেগের প্রয়োজনে ঋণ গ্রহণ করিলে ওসীকেই উহার যামিন হইতে হইবে। ওসীর নিকট নাবালেগের পাওনা ঋণের পরিবর্তে সে নাবালেগের নিকট নিজের কিছু বন্ধক রাখিল, পরে উহা ধ্বংস হইয়া গেল, ইহার জন্য নাবালেগ দায়ী হইবে না, বরং ওসীর নিকট তাহাদের ঋণ পাওনাই থাকিয়া যাইবে। অবশ্য ওসী এমন কোন ব্যক্তির নিকট নাবালেগের সম্পত্তি বন্ধক রাখিতে পারিবে, নাবালেগ বা তাহাদের অভিভাবকের নিকট যাহার ঋণ পাওনা রহিয়াছে। ব্যবসা করিতে গিয়া ঘটনাক্রমে নাবালেগের উপর ঋণ বর্তাইলে অথবা নাবালেগের প্রয়োজনের তাগিদে কোন মাল ক্রয় করিতে ওসী ঋণের প্রাপক বা বিক্রেতার নিকট তাহাদের সম্পত্তি বন্ধক রাখিতে পারিবে। নাবালেগের প্রাপ্য ঋণের বিপরীতে ওসী ঋণগ্রহীতার মাল নিজের নিকট বন্ধক রাখিতে পারিবে।

ধারা-৫৪২

ওসীর ঋণ স্বীকার (ক) ওসিয়াতকারী বা তাহার নাবালে ওয়ারিশগণের কাহারও নিকট ঋণ পাওনা আছে কিন্তু উহার অনুকুলে কোন প্রমাণ নাই এবং ঋণ গ্রহীতাও উহা অস্বীকার করিতেছে, এই অবস্থায় যে কোন পরিমাণ ঋণ ফেরতদানের উপর ঋণ গ্রহীতাহাদের সহিত মীমাংসা করিয়া নেওয়া ওসীর জন্য বৈধ হইবে, অবশ্য সাক্ষ্য-প্রমাণ বিদ্যমান থাকিলে উহা বৈধ হইবে না।

(খ) নাবালেগের নিকট কাহারও ঋণের দাবি থাকলে এবং উহ, অনুকূলে দাবিদারের নিকট সাক্ষ্য প্রমাণ মিম!কি ওসী উহা পরিশোধ করিতে পারিবে।

(গ) ওসিয়তকারীর নিকট ওসীর নিজের অথবা কাহারো ঋণ পাওনা থাকার কথা ওসী স্বীকার করিলে উহ’ সাক্ষ্য-প্রাণ ব্যতীত গ্রহণযোগ্য হইবে না।

ওসিয়াতকারীর কোন ওয়ারিশ তাহার নিকট কাহারও ঋণ পাওনা থাকার কথা। স্বীকার করিলে উহা সংশ্লিষ্ট ওয়ারিশের অংশ হইতে পরিশোধযোগ্য হইবে।

ধারা-৫৪৩

ওসীর বেতন-ভাতা ওসী তাহার কার্যক্রমের বিনিময়ে পারিশ্রমিক দাবি করিলে উহার অধিকারী হইবে।

৬০৬

বিষেণ ফকীহগণের সাধারণ মতানুযায়ী ওসী তাহার উপর ন্যস্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনের জন্য বেতন-ভাতা গ্রহণ করিতে পারিবে। বেতন-ভাতার পরিমাণ তাহার দায়িত্ব ও কর্তব্যের ধরন, পরিধি ও প্রকৃতি অনুয়ায়ী নির্ধারিত হইবে।”

ধারা-৫৪৪

ওসীর নিকট হইতে হিসাব গ্রহণ ওসিয়াতকারীর ওয়ারিসগণ বালেগ হওয়ার পর ওসীর নিকট হইতে তাহাদের জন্য যাহা ব্যয় করা হইয়াছে উহার হিসাব-নিকাশ গ্রহণ করিতে পারিবে।

বিশ্লেষণ

ওসিয়াতকারীর ওয়ারিশগণ বালেগ হইলে তাহাদের বিষয়-সম্পত্তি তাহাদের নিকট সোপর্দ করা ওসীর কর্তব্য এবং সে যাহা কিছু খরচ করিয়াছে উহারও হিসাব-নিকাশ প্রদান করিবে।

ধারা-৫৪৫

ওসীর অপসারণ ওসিয়াতকারী প্রায় নিয়োগকৃত ওসীকে যে কোন সময় অপলায়ন করিতে পারে।

বিশ্লেষণ

ওসী সাধারণত ওসিয়াতকারীর প্রদত্ত ক্ষমতারই চর্চা করে। সে তাহাকে প্রদত্ত এই ক্ষমতা যে কোন সময় প্রত্যাহার করিতে পারে।”

ধারা-৫৪৬

আদালত কর্তৃক ওসীর অপসারণ ওসিয়াতকারী কর্তৃক নিয়োজিত ওসী অবিশ্বস্ত ও ওসিয়াত পরিচালনায় অক্ষম হইলে আদালত তাহাকে অপসারণ করিয়া তদস্থলে অপর কাহাকেও নিয়োগ করিতে পারে।

বিশ্লেষণ

ওসিয়াত পরিচালনায় আংশিক অক্ষম হইলে আদালত ওসীকে অপসারণ করিতে পারে না, তবে তাহার একজন সহকারী নিয়োগ করিতে পারে। ওসীর অবিশ্বস্ততা প্রমাণিত হইলে আদালত অবশ্যই তাহাকে অপসারণ করিতে পারে।

তথ্যনির্দেশিকা ১. রাগিব, আল-মুফরাদাত, শিরো ওয়াসিয়্যা; সংক্ষিপ্ত ইসলামী বিশ্বকোষ, ২য় সংস্করণ,

১খ, পৃ. ২৫২, শিরো, ওসিয়াত।

৬০৭

২.

আলমগিরী, কিতাবুল ওয়াসায়া, ৬খ, পৃ. ৯০ :

الايصاء في الشرع تمليك مضاف الى ما بعد الموت يعني بطريق التبرع سواء كان عينا او منفعة .

৩ ০

৬ ৪ ০ ১ ৫

বুখারী, কিতাবুল ওয়াসায়া, নং ২৫৩৮ (আধুনিক প্রকাশনী সংস্করণ)। আলমগিরী, কিতাবুল ওয়াসায়া, ৬খ, পৃ. ৯০; বাদাইউস সানাই, কিতাবুল ওয়াসায়া, ৭ খ, পৃ. ৩৩১-৩২। বিদায়াতুল মুজতাহিদ, মিসরীয় সং, ২খ, ৩৩৬।

বাদাইউস সানাই, ৭খ, পৃ. ৩৩২; আলমগিরী, ৬খ, পৃ. ৯০। ৭. বাদাইউস সানাই, কিতাবুল ওয়াসায়া, ৭খ, পৃ. ৩৫৩।

ঐ, ৭খ, পৃ.৩৫৩। ঐ, ৭খ, পৃ. ৩৩০; আলমগিরী, কিতাবুল ওয়াসায়া, ৬খ, পৃ. ৯০; হিদায়া, কিতাবুল ওয়াসায়া, ৪খ, পৃ. ৬৩৮। আলমগিরী, কিতাবুল ওয়াসায়া, আল-বাবুল আওয়াল, ৬খ, ৯১; আল-হিদায়া, কিতাবুল ওয়াসায়া, ৪খ, পৃ. ৬৪১।

তাবাকাত ইবন সাদ, বৈরূত সং., ৮খ, পৃ. ১২৮। আলমগিরী, কিতাবুল ওয়াসায়া, ১ম অনুচ্ছেদ, ৬খ, পৃ. ৯২-৩; বাদাইউস সানাই, কিতাবুল ওয়াসায়া, ৭খ, পৃ.-৭৮-৭৯; আল-হিদায়া, কিতাবুল ওয়াসায়া, ৪খ, পৃ.

৬৪৪। ১৩, বাদাইউস সানাই, ৭, পৃ. ৩৯৪। ১৪. ঐ, ৭খ, পৃ. ৩৯৪। ১৫. আলমগিরী, কিতাবুল ওয়াসায়া, ৬খ, পৃ. ৯২।

অ দারু কুতনী, কিতাবুল আকদিয়া, নং ১১৫, ৪খ, পৃ. ২৩৬-৩৭; আরও দ্র. আল-হিদায়া, কিতাবুল ওয়াসায়া, ৪খ, পৃ. ৬৩৯।

আলমগিরী, কিতাবুল ওয়াসায়া, ৬খ, পৃ. ৯২। ১৮. ঐ, ৬খ, পৃ. ৯২; বাদাইউস সানাই, কিতাবুল ওয়াসায়া, ৭খ, পৃ. ৩৩৪। ১৯. হিদায়া, ওয়াসায়া, ৪খ, পৃ. ৬৪১।

তিরমিযী, কিতাবুল ওয়াসায়া, বাব ১, হাদীস ২১১৬; আবু দাউদ, কিতাব ঐ, বাব

২, নং ২৮৬৪; বুখারী, কিতাবুল ওয়াসায়া, জানাইয, মানাকিবিল আনসার, নাফাকাত, আল-মারদা, দাওয়াত ও ফারাইদ; মুসলিম, ওয়াসায়া, ১৬২৮; নাসাঈ, ঐ, নং ৩৬৫৬; ইন মাজা, ঐ, নং ২৭০৮। বুখারী, ওয়াসায়া, বাব ৩, নং ২৫৪১ ( আধুনিক প্রকাশনী)।

আল-হিদায়া, কিতাবুল ওয়াসায়া, বাবুল ওসিয়্যাহ্ বিসুলুসিলমাল, ৪খ, পৃ. ৬৪৬। ২৩, আল-হিদায়া, কিতাবুল ওয়াসায়া, ৪খ, পৃ. ৬৪২। ২৪. আবু দাউদ, কিতাবুল বুয়ু, বাব ৯, হাদীস নং ৩৩৪৩, ৩খ, পৃ. ৬৩৮; দারিমী, কিতাবুল বুয়ু, বাব ফিস-সালাত আলা মান মাতা ওয়া আলাইহে দায়ন, ২খ, পৃ.

১৭,

২১.

yob

২৬৩; নাসাঈ, কিতাবুল জানাইয, বাব আস-সালাতু আলা মান আলাইহে দায়ন, ১খ,

পৃ. ২৭৮।

২৫, আল-হিদায়া, ওয়াসায়া, ৪খ, পৃ. ৬৪১। ২৬. তিরমিযী, কিতাবুল ওয়াসায়া, বাব লা ওয়াসিয়্যাতা লি-ওয়ারিসিন, নং ২১২১;

আবু দাউদ, ওয়াসায়া, বাব ৬, নং ২৮৭০; ইবন মাজা, ওয়াসায়া, বাবলা ওয়াসিয়্যাতা লি-ওয়ারিস, নং ২৭১৩; নাসাঈ, ওয়াসায়া, বাব ঐ, নং ৩৬৭। আরও

দ্র. দারু কুতনী, ওয়াসায়া, নং ১২, ১৩, ৪খ, পৃ. ১৫২-৩। ২৭. দারু কুতনী, কিতাবুল ওয়াসায়া, নং ৯, ১০, ১১, ৪খ, পৃ. ১৫২। ২৮. দারু কুতনী, ঐ, নং ৭। ২৯. আবু দাউদ, কিতাবুল ওয়াসায়া, বাব ৩, নং ২৮৬৭; তিরমিযী, ওয়াসায়া, বাবুদ

দারার ফিল-ওয়াসিয়্যা, নং ২১১৮; ইবন মাজা, ওয়াসায়া, বাব ৩, নং ২৭০৪। ৩০. ইবন মাজা, কিতাবুল ওয়াসায়া, বাব, নং ২৭০৩; বায়হাকীর শুআবুল ঈমান। ৩১. আলমগিরী, কিতাবুল ওয়াসায়া, ৩য় বাব, ৪খ, পৃ. ২২৩ (দেওবন্দ সংস্করণ);

আল-মাবসূত, ২৭খ, পূ, ১৭৫-৬। ৩২. হিদায়া, কিতাবুল ওয়াসায়া, ৪খ, পৃ. ৬৪৩-৪।

. বাদাইউস সানাঈ, কিতাবুল ওয়াসায়া, ৭খ, পৃ. ৩৫২। ৩৪. বাদাইউস সানাঈ, কিতাবুল ওয়াসায়া, ৭খ, পৃ. ৩৭০।

বাদাইউস সানাই, কিতাবুল ওয়াসায়া, ৭, পৃ. ৩৫২। ১১. ঐ, ৭খ, পৃ. ৩৫২। ৩৭. এ, ৭, পৃ. ৩৫৪-৫; হিদায়া, কিতাবুল ওয়াসায়া, ৪খ, পৃ. ৬৪৯। ৬৮. হিয়া, কিতাবুল ওয়য়া, বাব আল-ওয়াসিয়্যা বিসুলুসিল মাল, ৪খ, পৃ. ৬৫৫-৬;

নেই, কাল ওqাসায়া, আল-বাবুসসালিস, ৬খ, পৃ. ১০৭-৮!

•৩; দুদু : – : – : বী, ৬খ, পৃ. ১০৮।

• উ১ :ল ওয়াসায়া, ৭খ, পৃ. ৩৫৬। ২, কাহরুর : ই, কিতাবুল ওয়াসায়া, বাবুল ওয়াসী ওয়ামা ইয়ামলিকুহু, ৮খ,

*. ১ -৮। ৪২. আল-বা: রুর রাইক, কিতাবুল ওয়াসায়া, বাবুল ওয়াসী, ৮খ, পৃ. ৪৫৯; আলমগিরী

কাবু ওয়াসায়া, আল-বাবুত তাসি ফিল ওয়াসী, ৬খ, পৃ. ১৩৮; আল-হিদায়া,

কিতাবুল ওয়াসায়া, বাবুল ওয়াসী ওয়ামা ইয়ামলিকুহু, ৪খ, পৃ. ৬৭৬। ৪৩. তানযীলুর রহমান, মাজমূআহ কাওয়ানীনে ইসলাম, ৫খ, পৃ. ১৪৮৮-১৪৮৯। ৪৪. আলমগিরী, কিতাবুল ওয়াসায়া, ৯ম অধ্যায়, ৬খ, পৃ. ১৪৭। ৪৫. আলমগিরী, ওয়াসায়া, ৯ম ফাসল, ৬খ, পৃ. ১৪৭। ৪৬. আলমগিরী, ৬খ, পৃ. ১৫৩।

৩৫.

৫er: :.

৬০৯

৪৭. আলমগিরী ও রাদুল মুহতারের বরাতে মাজমূআহ কাওয়ানীনে ইসলাম, ৫খ., পৃ.

১৫১৭। ৪৮. আলমগিরী, ৬খ। ৪৯. মালিকী ও শাফিঈ মাযহাব মতেও ওসিয়াতকারী তাহার জীবদ্দশায় যেকোন সময়

ওসীকে অপসারণ করিতে পারে (মাজমূআহ কাওয়ানীনে ইসলাম, পৃ. ১৪৭২)। শাফিঈ, মালিকী ও হাম্বলী মতে ওসীর অবিশ্বস্ততা প্রমাণিত হইলে সে সরাসরি বরখাস্ত হইয়া যায়, আদালতের হস্তক্ষেপের প্রয়োজন হয় না (মাজমূআহ কাওয়ানীন, ৫., পৃ. ১৪৭৪-৫)।

৫০.

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *