1 of 2

০৯. সুদ

নবম অধ্যায় – সুদ

ধারা-২১৫

সূদ ( ১)-এর সংজ্ঞা এই শ্রেণীভুক্ত মালের লেনদেনকালে কোন পক্ষ চুক্তি মোতাবেক অপর পক্ষের নিকট হইতে যে বর্ধিত মাল গ্রহণ করে তাহাকে সূদ’ রি) বলে।

বিশ্লেষণ

. সূদ’ শব্দটি এখানে আরবী ‘রিবা’ (L) শব্দের বিকল্প হিসাবে ব্যবহৃত হইয়াছে। ‘রিবা’ শব্দের আভিধানিক অর্থ পরিবৃদ্ধি বা পরিবর্ধন। কুরআন মজীদে বলা হইয়াছে :

لا يربوا

وما أتيتم من ربا ليروا في أموال الناس

• Lic “মানুষের সম্পদ বৃদ্ধি পাইবে বলিয়া তোমরা সুদের যাহা দিয়া থাক, আল্লাহর দৃষ্টিতে তাহা ধন-সম্পদ বৃদ্ধি করে না” (সূরা রূম : ৩৯)।

আলমগিরীতে ‘সূদ-এর নিম্নোক্ত সংজ্ঞা প্রদান করা হইয়াছে :

وهو في الشرع عبارة عن فضل مال لا يقابله عوض في

معاوضة مال بمال .

“শরীআতে সূদ’ সেই মালকে বলা হয় যাহা মালের পরিবর্তে মালের লেনদেনকালে অতিরিক্ত অংশ হিসাবে গ্রহণ করা হয় এবং যাহার কোন বিনিময় নাই।”

فهو زيادة أحد البدلين المتجانسين من غير أن يقابل

• ১০ ১১ ১০

“একই প্রজাতির কোন জিনিসের পারস্পরিক লেনদেনের সময় কোন বিনিময় ব্যতীত এক পক্ষ কর্তৃক যে অতিরিক্ত পরিমাণ মাল গ্রহণ করা হয় সেই অতিরিক্ত অংশকে ‘সূদ’ বলে।”

كل زيادة مشروطة في العقد خالية من عوض مشروع

৩৭৯

“শরীআতসম্মত বিনিময় ছাড়াই চুক্তির শর্ত অনুযায়ী যে বর্ধিত মাল গ্রহণ করা হয় তাহাকে সূদ’ বলে”।

الربا هو فضل خال عن عوض بمعيار شرعی مشروطه

لأحد المتعاقدين في المعاوضة .

“চুক্তিবদ্ধ দুই পক্ষের যে কোন এক পক্ষ শর্ত অনুযায়ী লেনেদেনে শরীআত সম্মত বিনিময় ছাড়াই যে বর্ধিত মাল প্রদান করে তাহাকে ‘সূদ’ বলে।”

সূদ অর্থাৎ বর্ধিত অংশের প্রতিকল্প বা বিকল্প ) থাকে না। যেমন এক মণ ধানের বিনিময়ে দেড়মণ ধান গ্রহণ করা হইলে অতিরিক্ত অর্ধ মণের কোন বিকল্প অনুপস্থিত। তাই এই অতিরিক্ত অংশ ‘সূদ’ হিসাবে গণ্য। অনুরূপভাবে এক ব্যক্তি অপর ব্যক্তিকে এক মাসের জন্য এই শর্তে এক শত টাকা ধার দিল যে, মেয়াদশেষে সে ঋণদাতাকে এক শত বিশ টাকা ফেরত দিবে। এখানে বিশ টাকার কোন প্রতিকল্প বা বিনিময় নাই, তাই তাহা সূদ হিসাবে গণ্য। উল্লেখ্য যে, কোন ব্যক্তি অপর ব্যক্তিকে মাল অথবা নগদ অর্থ ঋণ দিলে তাহা ইসলামী শরীআত মোতাবেক লাভযুক্ত বা বর্ধনযুক্ত হইতে পারিবে না, ঋণদাতা কেবল তাহার ঋণের সমপরিমাণ মাল বা নগদ অর্থ ফেরত পাইবে। এই ঋণ কর্যে হাসানা (উত্তম ঋণ) নামে পরিচিত।

ধারা-২১৬

সুদ হারাম সূদ হারাম এবং লেনদেনে সূদে যোগ ঘটিলে উহা বাতিল গণ্য হইবে।

বিশ্লেষণ

সূদ শশাষণের অন্যতম হাতিয়ার এবং সূদ প্রথা সমাজের সম্পদকে মুষ্টিমেয় পুঁজিপতির কুক্ষিগত করিয়া দেয়। তাই মহান আল্লাহ্ সূদকে হারাম ঘোষণা করিয়াছেন :

الذين يأتون الروا لا يقومون الأكما يقوم الذي يتخبطه الشيطان من المس . ذلك بأنهم قالوا انما البيع

اللوا . من جاء

مثل الربو . وأحل الله البيع و موعظة من ربه فانتهى فله ماسل . وأمره الى الله . ومن عاد فأولئك أصحاب الثار . هم فيها خلدون . يمق الله الربوا ويربي الصدقت . والله يحب كل كفار أثيم

৩৮০

“যাহারা সূদ খায় তাহারা সেই ব্যক্তিই ম্যায় সঁড়াইবে যাহাকে শয়তান স্পর্শ যারা পাগল করে। কারণ তাহারা বলে, ক্রয়-বিক্রয় ও ব্যবসা-বাণিজ্য তো সুদের মত। অথচ আল্লাহ ক্রয়-বিক্রয় ও ব্যবসা-বাণিজ্যকে হালাল (বৈধ) করিয়াছেন এবং সুদকে হারাম (নিষিদ্ধ) করিয়াছেন। যাহার নিকট তাহার প্রতিপালকের উপদেশ আসিয়াছে এবং যে বিরত হইয়াছে, তবে অতীতে যাহা হইয়াছে তাহা তাহারই; এবং তাহার ব্যাপার আল্লাহর এখতিয়ারে। আর যাহারা পুনরায় আরম্ভ করিবে তাহারাই দোযখের অধিবাসী, সেখানে তাহারা স্থায়ী হইবে। আল্লাহ সুদকে নিশ্চিহ্ন করেন এবং দান-খয়রাতকে বর্ধিত করেন। আল্লাহ্ কোন অকৃতজ্ঞ পাপীকে ভালোবাসেন না” (সূরা বাকারা : ২৭৫, ২৭৬)।

يأيها الذين آمنوا اتقوا الله وذروا ما بقي من الربوا ان كنتم مؤمنين فان لم تفعلوا فأذنوا بحرب من الله ورسوله وان تبتم فلكم روس أموالكم . لا تظلمون ولا تظلمون .

“হে মুমিনগণ! তোমরা আত্মাহকে ভয় কর এবং সূদের যাহা বকেয়া আহে তাহা ত্যাগ কর, যদি তোমরা প্রকৃত মুমিন হও। যদি তোমরা তাহা না কর তবে আনিয়া রাখ যে, ইহা আল্লাহ ও তাঁহার রাসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ। কিন্তু যদি তোমরা তওবা কর তবে তোমাদের মূলধন তোমাদেরই। তোমরাও অত্যাচার করিবে না এবং অত্যাচারিতও হইবে না” (সূরা বাকারা : ২৭৮-২৭৯)।

يأيها الذين آمنوا لا تأكلوا الربوا أضعافا مضعفة

واتقوا الله لعلكم تفلحون .

“হে মুমিনগণ! তোমারা চক্রবৃদ্ধি হারে সূদ খাইও না এবং আল্লাহকে ভয় কর, যাহাতে তোমরা সফলকাম হইতে পার” (সূরা আল ইমরান : ১৩০)।

عن جابر قال لعن رسول الله صلى الله عليه وسلم أكل

البوا وموكله وكاتبه وشاهديه وقال هم سواء .

“জাবির (রা) হইতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) অভিসম্পাত করিয়াছেন : “সূদখােরকে, সূদদাতাকে, সূদের হিসাবরক্ষককে ও উহার সাক্ষীদ্বয়কে এবং তি’ বলিয়াছেন, ইহারা সকলেই সমান (অপরাধী)।

ين ستة وثلتين

درهم ربوا يأكله الجل وهو يعلم أش

رنية .

৩৮১

“কোন ব্যক্তি জ্ঞাতসারে এক দিরহাম পরিমাণ সূদ গ্রহণ করিলে তাহা ছত্রিশবার যেনা করার চাইতেও মারাত্মক।”

البوا سبعون جزء أيسرها أن ينكح الرجل أمه .

“সূদের গুনাহের সত্তরটি স্তর রহিয়াছে। উহাদের মধ্যে সর্বাধিক হালকা স্তর হইল—কোন ব্যক্তির স্বীয় মাতাকে বিবাহ করা।”

ان الربو وان كثر فان عاقبته تصير اللى ق .

“সূদের দ্বারা সম্পদ বৃদ্ধি পাইলেও পরিণামে অভাব-অনটন আসিবেই।”

সূদ কেবল ঋণ বা আর্থিক লেনদেনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নহে। ক্রয়-বিক্রয়, ব্যবসা-বাণিজ্য ও বস্তুসমূহের আন্ত বিনিময়ের ক্ষেত্রেও সূদের যোগ ঘটিতে পারে। কোন লেনদেনে সূদের যোগ ঘটিলে তাহা হারাম এবং বাতিল গণ্য হইবে, উক্ত লেনদেন আইনত বলবতযোগ্য হইবে না।

ধারা-২১৭

সূদের শ্রেণীবিভাগ (ক) সূদ দুই শ্রেণীতে বিভক্ত—’রিবা আন-নাসিয়া বা মেয়াদী সূদ (.) tal ) ও ‘মালের সুদ বা রিবা আল-ফাদল’ (ULL )।

(খ) কোন ব্যক্তি অপর ব্যক্তির নিকট হইতে কোন জিনিস নির্দিষ্ট মেয়াদান্তে ফেরত দেওয়ার শর্তে গ্রহণ করার পর, মেয়াদশেষে মুক্তি মোতাবেক উক্ত জিনিসের সহিত যে অতিরিক্ত পরিমাণ তাহাকে প্রদান করে সেই অতিরিক্ত পরিমাণকে “রিবা আন-নাসিয়া’ ( JL.) বলে।

(গ) একই প্রজাতির দ্রব্য ও দ্রার লেনদেনকালে এক পক্ষ চুক্তি মোতাবেক অপর পক্ষকে শরীআত সম্মত বিনিময় ) ব্যতীত যে বর্ধিত মাল প্রদান করে উহাকে মালের সূদ’ (LiuTu)) বলে।

বিশ্লেষণ

‘রিবা আন-নাসিয়ায় একটি নির্দিষ্ট সময়কালের জন্য কোন ব্যক্তি অপর ব্যক্তিকে নগদ অর্থ এই শর্তে প্রদান করে যে, মেয়াদশেষে অর্থ গ্রহণকারী (দেনাদার) প্রাপ্ত অর্থের সহিত নির্দিষ্ট হারে (যেমন ৫%, ১০% ইত্যাদি) অতিরিক্ত পরিমাণ অর্থ যোগ করিয়া (সুদে মূলে) তাহা মালিককে ফেরত প্রদান করিবে। খাতক নির্দিষ্ট মেয়াদান্তে তাহা পরিশোধ করিতে ব্যর্থ হইলে পুঁজিপতি তাহার মূলধনের সহিত অতিরিক্ত পাওনা যোগ করিয়া সম্পূর্ণ অংকের সহিত পুনরায় নির্দিষ্ট হারে অতিরিক্ত অংশ যোগ

৩৮২

করিয়া মেয়াদ বৃদ্ধি করিয়া দেয়। বিবা-আন-নাসিয়াকে একদল ফকীহু মহাজনী সূদ হিসাবেও আখ্যায়িত করিয়াছেন।

কোন ব্যক্তি প্রয়োজনে অপর ব্যক্তির নিকট নিজের কোন জিনিস বন্ধক রাখিয়া ঋণ গ্রহণ করার পর মেয়াদান্তে তাহা পরিশোধ করিতে না পারিলে ঋণদাতা তাহার সূদ ও মূলের পরিবর্তে উক্ত বন্ধক আত্মসাৎ করিত।”

রিবা আন-নাসিয়া ব্যবসায়িক লেনদেনেও ঘটিতে পারে। যেমন বিক্রেতা ক্রেতাকে বলিল, এই পণ্যের নগদ মূল্য প্রদান করিলে ইহার দাম দশ টাকা এবং বাকিতে ক্রয় করিলে বার টাকা। সময়ের ব্যবধানের কারণে এই অতিরিক্ত দুই টাকা রিবা আন-নাসিয়া হিসাবে গণ্য। অথবা কোন ব্যক্তি অপর ব্যক্তির নিকট হইতে এক মণ ধান এই শর্তে ক্রয় করিল যে, সে ছয় মাস পর তাহাকে উহার মূল্য বাবদ দেড় মণ ধান প্রদান করিবে। সময়ের ব্যবধানের কারণে প্রদত্ত এই অতিরিক্ত অর্থ মণ ধান রিবা আন-নাসিয়া হিসাবে গণ্য। মুজাম সুগাতিল ফুকাহা গ্রন্থে মেয়াদী ঋণের নিম্নোক্ত সংত্তা প্রদান করা হইয়াছে;

الزيادة المشروطه مقابل الأجل خالية عن عوض

مشروع

‘চুক্তির শর্ত মোতাবেক মেয়াদকালের বিপরীতে শরীআত সম্মত বিনিময় ছাড়াই যে বর্ধিত মাল প্রদান করা হয় তাহাকে ‘মেয়াদী ঋণ’ ( JIL) বলে।

মুজামু লুগাতিল ফুকাহা গ্রন্থে ‘সূদ’ অর্থাৎ “রিবা আল-ফাদল”-এর নিম্নোক্ত সংজ্ঞা প্রদান করা হইয়াছে?

بيع شيء من الأموال البوبة بجنسه متفاضة .

*একই শ্রেণীভুক্ত খাদ্যশস্যের পারস্পরিক ক্রয়-বিক্রয়কালে এক পক্ষ অপর পক্ষকে উহার যে বধিত অংশ’ প্রদান করে তাহাকে ‘মালের সূদ’ বলে।”

ধারা-২১৮

সব্যসামগ্রীর বিনিময় যদি একই :dী দ্রার সাসস্পরিক বিনিময় উভয় পক্ষ হইতে পরিমাণে সমান সমান এবং নগদ টা দান হয় তাহা হইলে উহা বৈধ গণ্য হইবে; কিন্তু যদি পরিবৃদ্ধি ঘটে এবং ৬ ‘আদান-প্রদান না হয় তাহা হইলে উহাতে

সূদের যোণ টিবে এবং লেনদেন বাতিল গণ্য হইবে।

বিশ্লেষণ

যেসব দ্রব্যের ওজন বা পরিমাপ করিয়া পরিমাণ নির্ণয় করা হয়, একই শ্রেণীভুক্ত সেইসব দ্রব্যের পারস্পরিক বিনিময়কালে এক পক্ষ অপর পক্ষকে পরিমাণে কিছু

৩৮৩

অধিক প্রদান করিলে ঐ অতিরিক্ত পরিমাণ সূদ হিসাবে গণ্য হইবে। মহানবী (সা) বলেন :

الذهب بالذهب والفضة بالفضة والبر بالبر والشعير بالشعير المر بالتمر والملح بالملح مثلا بمثل سواء بسواء يدا بيد فمن زاد او استاد فقد أربى الأخ المغطى فيه سواء .

“সোনার বিনিময়ে সোনা, রূপার বিনিময়ে রূপা, গমের বিনিময়ে গম, বার্লির বদলে বার্লি, খেজুরের বদলে খেজুর এবং লবণের বদলে লবণের লেনদেন করা হইলে সেই ক্ষেত্রে পরিমাণের সমতা এবং উপস্থিত বিভিন্ন জাতীয় বস্তুর বিনিময়ে উভয় পক্ষ হইতে নগদ আদান-প্রদান হইতে হইবে। যে ব্যক্তি বেশি দিবে বা বেশি গ্রহণ করিবে সে সূদ অনুষ্ঠানকারী সাব্যস্ত হইবে। সেই গ্রহীতা ও দাতা উভয়ে সমান (অপরাধী):”.

لا تبيعوا الذهب بالذهب الأ مثلا بمثل ولا تشفوا بعضها على بعض ولا تبيعوا الورق بالورق الأمثلا بمثل

نيقوا بعضها على بغص ولا تبيعوا منها غائبا بناجز .

و

“সোনা সোনার বদলে পরিমাণে সমতা ব্যতীত বিক্রয় করিও না, এক দিকে অপর দিক অপেক্ষা বেশি করিও না। রূপা রূপার বদলে পরিমাণে সমতা ব্যতীত বিক্রয় করিও না, এক দিকে অপর দিক অপেক্ষা বেশি করিও না। আর উল্লিখি ক্ষেত্রে ধারের বিনিময় নগদের সহিত করিও না।”১০

যেসব দ্রব্যের আন্ত-বিনিময় হয় তাহা ভিন্ন ভিন্ন শ্রেণীভুক্ত হইলে রিং কম-বেশি হওয়াতে সূদের যোগ ঘটিবে না। মহানবী (সা) বলেন :

ولكن بيعوا الهدب بالورق والورق بالهب والبر

بالمعبر والشر بالملح و الملح بالشر يد بيد كيف

“তবে রূপার বিনিময়ে সোনা, সোনার বিনিময়ে রূপা, বার্লির বিনিময়ে গম, গমের বিনিময়ে বার্লি, লবণের বিনিময়ে খেজুর এবং খেজুরের বিনিময়ে লবণ উভয় পক্ষ হইতে নগদ লেনদেনে (পরিমাণে) যেরূপ ইচ্ছা ক্রয়-বিক্রয় করিতে পার।”

৩৮৪

ধারা-২১৯ এই শ্রেণীভুক্ত দ্রব্যের গুণ ও মানগত পার্থক্য থাকিলে গুণগত ও মানগত পার্থক্যযুক্ত একই শ্রেণীভুক্ত দ্রব্যের পরস্পর বিনিময়কালে কোন পক্ষ হইতে পরিমাণে কম-বেশি করা যাইবে না; প্রয়োজন হইলে একটি দ্রব্য বিক্রয় করিয়া উহার মূল্য তারা অপর দ্রব্যটি ক্রয় করিতে হইবে।

বিশ্লেষণ

একই শ্রেণীভুক্ত বিভিন্ন প্রজাতির দ্রব্যের মধ্যে গুণ ও মানগত পার্থক্য বিদ্যমান থাকার কারণে উহার আর্থিক মূল্যেও পার্থক্য হইতে পারে। যেমন এক মণ বাসমতি ধান এবং এক মন ইরি ধানের মূল্য কখনও সমান নহে। এই দুই প্রজাতির ধানের পরস্পর অদল-বদল করিতে চাহিলে এক মণ বাসমতি ধানের বদলে ইরি ধান এক মনের বেশি গ্রহণ করা যাইবে না, অতিরিক্ত গ্রহণ করা হইলে সেই অতিরিক্ত অংশ ‘সূদ’ হইবে এবং লেনদেনটি বাতিল গণ্য হইবে। এই ক্ষেত্রে বাসমতি ধান বিক্রয় করিয়া ইরি ধান ক্রয় করাই নিরাপদ ব্যবস্থা। আবার ঐ দুই প্রজাতির ধানের মূল্য নিরূপণ করিয়া এবং তাহা পরস্পরের নিকট হইতে নগদ আদায় না করিয়া উহার বিনিময় করিলে তাহাও বৈধ হইবে না। এখানে একজনের নিকট অপরজনের নগদ মূল্য হস্তান্তর করিতে হইবে। মহানবী (সা)-এর বাণী হইতে এই বিষয়ে সুস্পষ্ট বিধান পাওয়া যায় :

“আবু সাঈদ ও আবু হুরায়রা (রা) হইতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা) এক ব্যক্তিকে খায়বার এলাকায় কর্মকর্তা নিয়োগ করেন। এই ব্যক্তি তথা হইতে উন্নত মানের খেজুর লইয়া আসিলে রাসূলুল্লাহ (সা) জিজ্ঞাসা করিলেন, খায়বার এলাকার সব খেজুরই কি এই রকম উন্নত মানের? সে বলিল, না, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা এক সা’ এইরূপ (উত্তম) খেজুর দুই সা’ (নিম্নমানের) খেজুরের বিনিময়ে গ্রহণ করিয়া থাকি, অথবা (ভালো) দুই ‘সা’ (খারাপ) তিন ‘সা-এর বিনিময়ে গ্রহণ করিয়া থাকি। রাসূলুল্লাহ (সা) বলিলেন, এইরূপ বিনিময় করিও না, বরং নিম্নমানের খেজুর

নগদ মূল্যে বিক্রয় কর, অতঃপর ঐ মূল্য দ্বারা উন্নত মানের খেজুর ক্রয় কর : রাসূলুল্লাহ (সা) ইহাও বলিলেন যে, ওজন করিয়া লেনদেনকৃত বস্তুর বিনিময় সম্পর্কেও এই একই বিধান।”

عن أبي سعيد قال جاء بلال الى الثبي صلى الله عليه وسلم بتمر بني فقال له النبي صلى الله عليه وسلم أن هذا قال كان عندنا تم رد بت منه صاعين بصاع فقال أو عين الربوا لأتفعل ولكن إن أردت أن تشتري فبع الشمر ببيع أخر ثم اشتريه .

“আবু সাঈদ (রা) হইতে বর্ণিত। তিনি বলেন, বিলাল (রা) মহানবী (সা)-এর নিকট ‘বনী’ প্রজাতির খেজুর লইয়া আসিলেন। মহানবী (সা) তাহাকে – জ্ঞাসা করিলেন, এই প্রজাতির খেজুর কোথায় পাইলে? বিলাল (রা) বলিলেন,

খার নিকট নিম্ন মানের খেজুর ছিল, আমি উহার দুই ‘সা ইহার এক সা’-এর এলে বিক্রয় করিয়াছি। মহানবী (সা) বলিলেন, আহা! ইহা তো একেবারেই সূদী লেনদেন হইয়াছে। আর কখনও এইরূপ করিও না। বরং তুমি ইহা করিতে চাহিলে মন্দ খেজুর নগদ মূল্যে বিক্রয় কর, অতঃপ প্রাপ্ত মূল্য দ্বারা উত্তম খেজুর ক্রয়

কর।”

ধারা-২২০

স্থানীয় প্রথার প্রভাব। (ক) সোনা, রূপা, গম, বার্লি, খেজুর ও লবণ ওজন বা পরিমাপের দ্বারা পরিমাণ নির্ধারণ করিয়া ক্রয়-বিক্রয় করার প্রথা কোন এলাকায় প্রচলিত না থাকিলেও উহাদের এই শ্রেণীভুক্ত কোন প্রব্যের পারস্পরিক লেনদেনে কম-বেশি করা হইলে তাহাও সূদী লেনদেন হিসাবে গণ্য হইবে।

(খ) যে দ্রব্যের ওজন বা পরিমাপের দ্বারা পরিমাণ নির্ধারণ করিয়া ক্রয়-বিক্রয় প্রচলিত আছে সেই দ্রব্যের পারস্পরিক লেনদেনে কম-বেশি করা হইলে তাহাও সূদী লেনদেন হিসাবে গণ্য হইবে।

বিশ্লেষণ

হাদীস শরীফে ছয়টি দ্রব্যের কথা উল্লেখ আছে। যেমন সোনা, রূপা, গম, বালি, খেজুর ও লবণ। এসব দ্রব্য কোন এলাকায় ওজন বা পরিমাপের দ্বারা পরিমাণ নির্ধারণ করিয়া ক্রয়-বিক্রয় করার প্রথা প্রচলিত না থাকিলেও এইগুলির একই শ্রেণীভুক্ত কোন দ্রব্যের পারস্পরিক লেনদেনে কম-বেশি করা যাইবে না। হাদীসের নিষেধাজ্ঞা এসব বস্তুর ক্ষেত্রে স্থায়ীভাবে বহাল থাকিবে।” ২৫

৩৮৬

উপরোক্ত ছয়টি দ্রব্যের বহির্ভূত দ্রব্য-সামগ্রীর ক্ষেত্রে স্থানীয়ভাবে প্রচলিত প্রথার প্রভাব স্বীকার করিয়া লওয়া হইয়াছে। অতএব কোন দ্রব্যের স্থানীয়ভাবে ওজন বা পরিমাপের দ্বারা পরিমাণ নির্ধারণ করিয়া ক্রয়-বিক্রয় করার প্রথা প্রচলিত থাকিলে উক্ত দ্রব্যের পারস্পরিক লেনদেনে কম-বেশি করা যাইবে না। যেমন হাদীসে ধান বা চাউলের বা দুধের বা তৈলের উল্লেখ নাই, কিন্তু স্থানীয় প্রথা অনুযায়ী উক্ত দ্রব্য ওজন বা পরিমাপের দ্বারা পরিমাণ নির্ধারণ করিয়া লেনদেন করা হয়, অতএব উক্ত দ্রব্যের পারস্পরিক লেনদেনে কম-বেশি করা বৈধ নহে।

ধারা-২২১

যে দ্রব্য গণনা করিয়া ক্রয়-বিক্রয় হয় যে দ্রব্য গণনা করিয়া সংখ্যা বা পরিমাণ নির্ধারণ করিয়া ক্রয়-বিক্রয় করা হয় সেই দ্রব্যের পারস্পরিক লেনদেনে কম-বেশি করা হইলে তাহা সুদের আওতায় পড়িবে না।

বিশ্লেষণ

যেমন ডিম, কলা, পশু-পাখি, গাছপালা, কাপড়-চোপড় ইত্যাদি ওজন বা পরিমাপের দ্বারা পরিমাণ নির্ধারণ করিয়া ক্রয়-বিক্রয় করা হয় না, বরং গণনা করিয়া সংখ্যা নির্ণয় করিয়া অথবা স্কেল দ্বারা মাপিয়া পরিমাণ নির্ণয় করিয়া ক্রয়-বিক্রয় করা হয়। এই ক্ষেত্রে একই শ্রেণীভুক্ত দ্রব্যের পারস্পরিক লেনদেনে কম-বেশি করা হইলে তাহা সূদের আওতায় পড়িবে না। যেমন একটি ডিমের বদলে দুইটি ডিম গ্রহণ করা যাইবে।

ধারা-২২২ দ্রব্যের লেনদেনে সূদের সংযুক্তি ঘটার মূলনীতি ওজন অথবা পরিমাপের যারা পরিমাণ নির্ধারণ হয়—একই শ্রেণীভুক্ত এইরপ দ্রব্যের পারস্পরিক লেনদেনে কম-বেশি করা হইলে তাহা সূদী লেনদেন হইবে।

বিশ্লেষণ

কোন দ্রব্যের পারস্পরিক লেনদেনে কমবেশি করা হইলে তাহাতে তখনই সূদের যোগ ঘটিবে যখন দ্রব্যটির মধ্যে যুগপৎভাবে নিম্নোক্ত তিনটি বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান থাকিবে: (১) দ্রব্যটি একই শ্রেণীভুক্ত (২) দ্রব্যটির পরিমাণ নির্ধারণ করা সম্ভব এবং (৩) ওজন অথবা পরিমাপের দ্বারা দ্রব্যটির পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়।

‘ওজন’ বলিতে বাটখারা দ্বারা ওজন করিয়া পরিমাণ নির্ণয় করা বুঝায়। পরিমাপ বলিতে কোন পাত্র দ্বারা পরিমাপ করিয়া পরিমাণ নির্ণয় করা বুঝায়। যেমন মুদি দোকানদার কখনও বাটখারা দ্বারা আবার কখনও পাত্র দ্বারা তৈলের পরিমাণ নির্ধারণ

৩৮৭

করিয়া থাকে। গ্রামে-গঞ্জে ধান-চাউল দাড়িপাল্লা দ্বারা মাপা হয়, আবার পাত্র দ্বারাও মাপা হয় এবং উক্ত যে কোন এক পন্থায় পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়। ‘

কোন দ্রব্যের মধ্যে উক্ত তিনটি বৈশিষ্ট্যের কোন একটি বিদ্যমান না থাকিলে উহার লেনদেনে কমবেশি করা হইলে তাহাতে সূদের সংযোগ ঘটিবে না। যেমন পশু ওজন বা পরিমাপ করিয়া পরিমাণ নির্ধারণ করিয়া ক্রয়-বিক্রয় করা হয় না। এই ক্ষেত্রে একটি গরুর বিনিময়ে দুইটি গরু লওয়া হইলে তাহাতে সূদের যোগ ঘটিবে না।

ধারা-২২৩

পর বিনিময়ে গোশত ক্রয়-বিক্রয় (ক) একই শ্রেণীর জীবন্ত পশুর বিনিময়ে উহার গোশত ক্রয়-বিক্রয় করা বৈধ, কিন্তু উহার গোশতের বিনিময়ে গোশত ক্রয়-বিক্রয় বৈধ নহে।

(খ) এক শ্রেণীর পর গোশত অপর শ্রেণীর পর গোশতের বিনিময়ে পরিমাণে বেশি করিয়া কয়-বিক্রয় করা বৈধ।

বিশ্লেষণ

পশু ওজন বা পরিমাপ করিয়া ক্রয়-বিক্রয় করা হয় না, কিন্তু গোশত ওজন করিয়া ক্রয়-বিক্রয় করা হয়। তাই একই শ্রেণীভুক্ত পণ্ড ও উহার গোশতের পারস্পরিক ক্রয়-বিক্রয় বৈধ। ইমাম আবু হানীফা ও ইমাম আবু ইউসুফ (র) এই মত ব্যক্ত করিয়াছেন। কিন্তু ইমাম মুহাম্মাদ (র)-এর মতে উক্তরূপ ক্রয়-বিক্রয় বৈধ নহে।

তবে এক শ্রেণীর পশুর গোশতের বিনিময়ে অপর শ্রেণীর পশুর গোশতের ক্রয়-বিক্রয় পরিমাণে সমতা না রাখিয়াও বৈধ। যেমন এক কেজি ছাগলের গোশতের বিনিময়ে দুই কেজি গরুর গোশত ক্রয় বা বিক্রয় করা বৈধ। গরু ও মহিষকে একটি প্রজাতি এবং ছাগল ও ভেড়াকে একটি প্রজাতি গণ্য করা হইয়াছে।

ধারা-২২৪

মাহের পারস্পরিক বিনিময় (ক) একটি মাহের বিনিময়ে দুই বা ততোধিক মাছের ক্রয়-বিক্রয় বৈধ।

(খ) কোন এলাকায় ওজন করিয়া পরিমাণ নির্ধারণ করিয়া মাছের ক্রয়-বিক্রয় প্রচলিত থাকিলে সেই এলাকায় একই শ্রেণীভুক্ত মাহের পারস্পরিক লেনদেনে কম-বেশি করা বৈধ নহে।

বিশ্লেষণ

যেমন শুটকি মাছ ওজন করিয়া পরিমাণ নির্ণয়পূর্বক ক্রয়-বিক্রয় করা হইয়া থাকে। সুতরাং একই প্রজাতিভুক্ত মাছের তাজা ও শুটকির মধ্যে সমতা না রাখিয়া

৩৮৮

লেনদেন করা বৈধ হইবে না। তাহা ছাড়া কোন কোন এলাকায় কাঁচা মাহও ওজন করিয়া ক্রয়-বিক্রয় হইতে দেখা যায়। তাহা সাময়িক বা অনিয়মিত ব্যাপার হইয়া থাকিলে ধর্তব্য হইবে না, কিন্তু স্থানীয় প্রচলিত রীতি হইলে বিনিময়ে সমতা বজায় রাখিতে হইবে।

ধারা-২২৫ প্রস্তুতকৃত খাদ্যদ্রব্য ও খাদ্যশস্যের বিনিময় কোন খাদ্যশস্যের আরা, প্রস্তুতকৃত খাদ্যদ্রব্য উক্ত শস্যের বিনিময়ে কম-বেশি করিয়া ক্রয়-বিক্রয় করা বৈধ।

বিশ্লেষণ

যেমন চিনি আতপ চাউলের দ্বারা পোলাও ভাত উক্ত চাউলের বিনিময়ে, অথবা গমের দ্বারা প্রস্তুত রুটি উক্ত গমের বিনিময়ে পরিমাণে কম-বেশি করিয়া ক্রয়-বিক্রয় করা বৈধ :

ধারা-২২৬

তুলা, সুতা ও কাপড়ের বিনিময় একই শ্রেণীভুক্ত তুলা ও তার পারস্পরিক বিনিময়ে অথবা সুতা ও কাপড়ের পাশরিক বিনিময়ে পরিমাণে কম-বেশী হইলে তাহা বৈধ গণ্য হইবে, যদি

কাপড় ওজন করিয়া ক্রয়-বিক্রয় করার প্রচলন না থাকে।

বিশ্লেষণ

কাপড় সাধারণত স্কেল দ্বারা মাপিয়া অথবা টুকরা হিসাবে ক্রয়-বিক্রয় করা হয়। কোন স্থানে কাপড় ওজন করিয়া ক্রয়-বিক্রয় করার প্রথা প্রচলিত থাকিলে সেখানে একই শ্রেণীভুক্ত তুলা ও কাপড়ের পরিমাণে কম-বেশি করিয়া পারস্পরিক বিনিময় বৈধ হইবে না।

তথ্যনির্দেশিকা

আমগিরী, কিতাবুল বুযু, ৯ম বাব, ৬ষ্ঠ ফসল, ৩, পৃ. ১১৭; আরও দ্র .

হিদায়া, কিতাবুল বুয়ু, বাবু রিবা, ৩খ, পৃ. ৬১, টাকা নং ২।

কিতাবুল ফিকহ আলাল মাহিবিল আরবাআ, কিতাবুল আহকামিল ৰায়, মাহিদুর বিবা, ২য়, পৃ. ২৪৫।

মুজামু লুগাতিল ফুকাহা, পৃ. ২১৮। মুফতী আমীমুল ইহসান, কাওয়াইদুল ফিকহ, ঢাকা ১৩৮১ হি., পৃ. ৩০১। সহীহ মুসলিম হইতে মিশকাতুল মাসাবীহ, বাংলা অনু. মুর মোম আজমী, ৬খ, পৃ. ২৬, নং ২৬৮৩ (১); আরও দ্র. হাদীস নং ২৭০৫ (২৩), পৃ. ৩৮।

০ ০

,

৩৮৯

মুসনাদে আহমাদ, সারু কুতনী ও বায়হাকী শুআবুল ঈমান হইতে মিশকাতুল মাসাবীহ (বাংলা অনু.), ৬২., পৃ. ৩৬-৭, নং ২৭০১ (১৯)। ইবন মাজা ও বায়হাকী শুআবুল ঈমান হইতে মিশকাত (বাংলা অনু.), ৬২, পৃ. ৩৭, নং ২৭০২ (২০)। ঐ, পৃ. ৩৮, নং ২৭০৩ (২১); ইবন মাজা, বায়হাকী ও মুসনাদে আহমাদ-এর বরাতে। ইসলাম কা কানূনে তিৱাত, পৃ. ১৭০।

ঐ, পৃ. ১৭০। ১১. মুজামু লুগাতিল ফুকাহা, পৃ. ২১৮।

মুজামু লুগাতিল ফুকাহা, পৃ. ২১৮। সহীহ মুসলিমের বরাতে মিশকাতুল মাসাবহ (বাংলা অনু.) ৬, পৃ. ২৭, নং ২৬৮৫ (৩); আরও দ্র. নং ২৬৮৪ (২), ২৬৮৮ (৬) ও ২৬৯৫ (১৩)।

ঐ, পৃ. ২৮, নং ২৬৮৬ (৪)।

এ,, ৩৩-৩৪, নং ২৬৯৫ (১৩)।

বুখারী ও মুসলিমের বরাতে মিশকাতুল মাসাবীহ (বাংলা অনু.), ৬৭, পৃ. ২৯, নং

২৬৮ (৭)।

বুখারী ও মুসলিমের বরাতে মিশকাতুল মাসাবীহ (বাংলা অনু.), ৬, পৃ. ৩০-৩১,

নং ২৬৯০ (৮)। আল-হিদায়া, কিতাবুল বুয়ু, বাবুররিবা, ৩, পৃ. ৬৪; আলমগিরী, কিতাবুল বুয়ু, বাব৬, ফাসল ৬, ৩৭, পৃ. ১১৭।

আল-বিদায়া, ঐ, ৩, পৃ. ৬৪।

আল-হিয়া, ৩, পৃ. ৬৫; আলমগিরী, ৩, পৃ. ১১৮। ২১. আলমগিরী, ৩খ, পৃ. ১১৭; আল-হিদায়া, খ, পৃ. ৬১। ২২. আল-হিদায়া, কিতাবুল বুয়ু, বাবুর রিবা, ৩২, পৃ. ৬৫-৬৬, আলমগিরী, ৩, পৃ.

১২০। ২৩. আল-হিদায়া, ৩, পৃ. ৬৯; আলমগিরী, ৩, পৃ. ১২০। ২৪. আলমগিরী, ৩, পৃ. ১২০। ২৫. আল-হিদায়া, ৩, পৃ. ৬৯। ২৬. আলমগিরী, ৩থ, পৃ. ১১৯।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *