1 of 2

০৪. মানবদেহের বিরুদ্ধে অপরাধ

মানবদেহের বিরুদ্ধে অপরাধ
চতুর্থ অধ্যায়

ধারা-৮২

আঘাত (৯) (ক) যে ব্যক্তি অপর কোন ব্যক্তির দৈহিক যন্ত্রণা, ক্ষতি, অসুখ, বৈকল্য বা জখম ঘটায় অথবা কোন ব্যক্তির মৃত্যু মা বটাইয়া তাহার দেহের কোন অঙ্গ বা উহার অংশবিশেষ বিভিন্ন করিয়া ফেলে ঐ ব্যক্তি আঘাত করিয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।

(খ) নিম্নোক্তলি বিভিন্ন ধরনের আঘাত বলিয়া গণ্য হইবে। ১. ইতলাফে উদ (অঙ্গহানি )। ২. ইতলাফে সালাহিয়াতি উদবু (অঙ্গের কর্মক্ষমতা নষ্ট করিয়া দেওয়া (স।

ملاحين، عضو

১. শিজাজ (মুখমণ্ডলে আঘাত করা বা মাথা ফাটানো=৩); ৪, জুহ (আহত কৰা-৫৭)।

বিশ্লেষণ

প্রথমোক্ত দুই প্রকারের আঘাত বাস্তবিকপক্ষে একই প্রকৃতির। কেননা কোন অঙ্গ কটিযা ফেলা বা উহার কর্মক্ষমতা রহিত করিয়া দেওয়ার ক্ষতি একই সমান। অবশ্য মাথা ফাটানো বা অন্য প্রকারে আহত করার ক্ষেত্রে পার্থক্য আছে। অঙ্গ বিচ্ছিন্ন করার ষ্টেন্ত. যেমন হাত, পা, হাত-পায়ের আঙ্গুল, নখ, জিহবা, গুপ্তাঙ্গ, অণ্ডকোষ, কান, ঠোট ইত্যাদি কাটিয়া ফেলা, দাঁত উড়াইয়া ফেলা, চোখের ভ্রু, দাড়ি, চুল ও মাথার চুল উপড়াইয়া ফেলা ইত্যাদি। অঙ্গের কর্মক্ষমতা নষ্ট করিয়া দেওয়া, যেমন শ্রবণশক্তি, দর্শনশক্তি, বাকশক্তি, স্বাদ আস্বাদনশক্তি, ঘ্রাণশক্তি, যৌনশক্তি, চলৎশক্তি, ধারণশক্তি ইত্যাদি নষ্ট করিয়া দেওয়া। শিজাজ এগার শ্রেণীতে বিভক্ত এবং উহার আলোচনা পরে আসিবে। জুরহ বা আহত করা (জিরাহাত-~-) দুই শ্রেণীতে বিভক্ত, উহার আলোচনাও পরে আসিবে।

উল্লিখিত অপরাধসমূহের কোনটির ক্ষেত্রে কিসাস, কোন ক্ষেত্রে পূর্ণ দিয়াত, কোন ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট জরিমানা এবং কোন ক্ষেত্রে অনির্দিষ্ট জরিমানা, এমনকি তাযীরের আওতায় কারাদণ্ড অবধাবিত হইবে।

ধারা-৮৩ অনিন কিসাস ( Sj jeLai) অপরাধী কোন ব্যক্তির দেহের যতখানি ক্ষতি সাধন করিয়াছে সমতার নীতি অনুযায়ী শাস্তিরূপ তাহার দেহেরও ঠিক ততখানি ক্ষতি করা হইবে।

বিশ্লেষণ

যেমন কোন অপরাধী কোন ব্যক্তির চক্ষু উৎপাটন করিলে কিসাস বা সমতার নীতি অনুযায়ী তাহারও চক্ষু উৎপাটন করা হইবে, তাহার অন্য কোন অংগের ক্ষতিসাধন করা হইবে না। মানবদেহের বিরুদ্ধে ক্ষতিসাধনের কিসাস সম্পর্কে কুরআন মজীদে বলা হইয়াছে;

من اعتدى عليگم فاعتدوا عليه بمثل ما اعتدى عليگم .

“সুতরাং যে কেহ তোমাদেরকে আক্রমণ করিবে তোমরাও তাহাকে অনুরূপ আক্রমণ করিবে” (সূরা বাকারা : ১৯৪)।

وكتبنا عليهم فيها أن النفس بالنفس والعين بالعين واشف بالأنف والأذن بالأذن والسن بالسن والجروح

قصاص .

“তাহাদের জন্য আমরা উহাতে বিধান দিয়াছিলাম যে, প্রাণের বদলে প্রাণ চোখের বদলে চোখ, নাকের বদলে নাক, কানের বদলে কান, দাঁতের বদলে দাঁত

এবং যখমের বদলে অনুরূপ যখম” (সূরা মাইদা : ৪৫)।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, “যখমের বদলে যথম” অর্থ–যেই ক্ষেত্রে যখমের সমপরিমাণ কিসাস সওয়া সম্ভব সেই ক্ষেত্রে এই নির্দেশ কার্যকর হইবে এবং যেই ক্ষেত্রে তাহা

সম্ভব নহে সেই ক্ষেত্রে আরশ’, কারাদণ্ড ইত্যাদি কার্যকর হইবে।

وان عاقبتم فعاقبوا بمثل ما عوقبتم به .

“তোমরা প্রতিশোধ গ্রহণ করিতে চাহিলে যতখানি অন্যায় তোমাদের প্রতি করা হইয়াছে ঠিক ততখানি প্রতিশোধ লইবে” (সূরা নাহল :১২৬)।

من عمل سينه فلا يجزي الأ مثلها .

“কেহ মন্দকর্ম করিলে সে কেবল তাহার মন্দকর্মের অনুরূপ শাস্তি পাইবে” (সূরা মুমিন : ৪০)।

ধারা-৮৪

ইতলাফে উদ (অঙ্গ বিলি করা)। যে ব্যক্তি অপর কোন ব্যক্তির দেহের কোন অঙ্গ বিচ্ছিন্ন করে, কর্তন করে বা বিভাজন করে সে ‘ইতলাফে উদবু’ করিয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।

২৭

ধারা-৮৫ ইতলাফে সালাহিয়াতে উদবু (অজেয় কর্মক্ষমতা রহিত করা) যে ব্যক্তি অপর কোন ব্যক্তির দেহের কোন অংগ ভাঙ্গিয়া ফেলে অথবা চিরতরে উহার কার্যক্ষমতা নষ্ট করিয় দেয় বা উহা বিকৃত করিয়া ফেলে, সে

ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির অঙ্গের কর্মক্ষমতা রহিত করিয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।

ধারা-৮৬ ইতলাফে উদ ও ইতলাফে সালাহিয়াতে উদবুর শাস্তি (ক) যে ব্যক্তি কোন কাজের দ্বারা অপর ব্যক্তিকে আঘাত করিবার অভিপ্রায়ে তাহার অঙ্গ বিচ্ছিন্ন করিল অথবা উহার কর্মক্ষমতা রহিত করিল সে কিসের কাণ্ড দণ্ডিত হইবে;

(খ) কোন কারণে কিসাস কার্যকর করা সম্ভব না হইলে অপরাধী ‘আরশ’-এর ণ্ড ভোগ করিবে;

(গ) বিচারকের সুবিবেচনা অনুযায়ী তাযীরের আওতায় তাহাকে অতিরিক্ত পাকিও দেওয়া যাইতে পারে।

ধারা-৮৭

শিজাজ (মাথা ও মুখমণ্ডলের আঘাত) যে ব্যক্তি অপর ব্যক্তির মন্তকে বা মুখমণ্ডলে আঘাত করে যাহা অঙ্গ বিভিন্ন করা বা উহার কার্যক্ষমতা সুহিত করার বর্ণনায় আসে না, ঐ ব্যক্তি মাথা বা মুখমণ্ডলে আঘাত করিয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।

ধারা-৮৮

শিজাজ-এর শ্রেণীবিভাগ শিজাজ (e) নিম্নোক্ত শ্রেণীতে বিভক্ত : (ক)হারিসা (16,8/): যে আঘাতে চামড়া আহত হয়, কিন্তু রক্ত প্রবাহিত হয় না। (খ। নামি’আহ (all) : যে আঘাতে চোখের পানির মত রক্ত বাহির হইলেও তাহা প্রবাহিত হয় না।

(গ) দামিয়াহ (স) : যে আঘাতে রক্ত প্রবাহিত হয়। (ঘ) বাদিআহ (%) : যে আঘাতে চামড়া কাটিয়া যায়। (ঙ) মুতাশাহিমা (Lx.. যে আঘাতে গোশত কাটিয়া যায় কিন্তু পরে মিলিয়া জোড়া লাগিয়া যায়।

(চ) সিমহাক (God) : যে আঘাত মস্তকের হায়ের উপরিভাগের ঝিরি পর্যন্ত পৌছে কিন্তু উহা ছিন্ন হয় না।

(ছ) মূদিহা ( 5): যে আঘাতে উপধারা (চ)-এ উল্লিখিত ঝিল্লি কাটিয়া হাড় প্রকাশ পায়।

(জ) হাশিমা ( I) : যে আঘাতে হাড় ভাঙ্গিয়া যায় কিন্তু স্থানচ্যুত হয় না। (ঝ) মুনাবিলা (lit.) : যে আঘাতে হাড় ভাঙ্গিয়া স্থানচ্যুত হইয়া যায়। (ঞ) আম্মাহ (স) : যে আঘাতে মাথার খুলি ফাটিয়া যায় এবং ক্ষত মগজের ঝিরি পর্যন্ত পৌছিয়া যায়।

(ট) দা!ি!! (ll) : যে আঘাতে মগজের ঝিল্লি ফাটিয়া ক্ষত মগজ পর্যন্ত পোঁহিয়া যায়।

ধারা-৮৯

শিজাজ-এর দণ্ড (ক) হারিলা, দামি’আহ, দামিয়াহ, বাদিআহ, মুলাহিমা ও সিমক-এর ক্ষেত্রে বিচারকের সুবিবেচনামতে অপরাধী দামান-এর দজ্ঞা পাইবে।

(খ) মূদিয়ার ক্ষেত্রে কিসাস কার্যকর করিতে হইবে; কোন কারণে কিসাস কার্যকর করা সব না হইলে আরশ’ বাবদ পাঁচটি উট বা তাহার সমমূল্য অপরাধী ক্ষতিগ্রস্তকে প্রদান করিবে।

(গ) হাশিমা,’মুনাবিলা, আহ ও দামিগা-এর ক্ষেত্রে কিসাস কার্যকর হইবে মা; ইহার পরিবর্তে ‘আরশ’ বাবদ

হাশিমার আরশ ১০টি উট, মুনাকিলার আরশ ১৫টি উট এবং আম্মাহ ও দামিগারপ্রতিটির আরশ পূর্ণ দিয়াতের এক-তৃতীয়াংশ বা উহার সমমূল্য ধার্য হইবে।

বিশ্লেষণ

উপধারা (ক)-এ উল্লিখিত ছয় প্রকার আঘাতের ক্ষেত্রে বিচারকের সুবিবেচন। অনুযায়ী ‘দামান’ ধার্য হইবে। কারণ উপরোক্ত আঘাতসমূহের কোন দাম নির্ধা; করা হয় নাই। মূদিহার ক্ষেত্রে কিসাস কার্যকর করা সম্ভব • হইলে দানস্বরূপ পাঁচটি উট ক্ষতিগ্রস্তকে প্রদান করিতে হইবে।

উপধারা (গ)-এ উল্লিখিত আঘাতের কিসাস গ্রহণ করিলে অপরাধীর মৃত্যু ঘটার আশংকা থাকায় উহার পরিবর্তে নির্দিষ্ট আরশ’ ক্ষতিগ্রস্তকে প্রদান করিতে হইবে।

ধারা-৯০

জুরহ ( আঘাত) যে ব্যক্তি অপর কোন ব্যক্তির মস্তক বা মুখমণ্ডল ব্যতীত দেহের যে কোন স্থানে আঘাত করে, যাহা স্থায়ী বা অস্থায়ী যে কোন প্রকার ক্ষতচিহ্ন সৃষ্টি করে, এ ব্যক্তি জুরহ’ অনুষ্ঠান করিয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।

३१३

ধারা-৯১

জুরহ-এর শ্রেণীবিভাগ জুরহ দুই প্রকার, যথা :

(ক) জাইফাহ (6) : যে ব্যক্তি এমন জুরহ’ অনুষ্ঠান করে যার ফলে জখম দেহের অভ্যন্তরভাগ পর্যন্ত পৌঁছিয়া যায়, সেই ব্যক্তি ‘জাইফাহ’ অনুষ্ঠান করিয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।

(খ) গায়র জাইফাহ (৬ ): যে ব্যক্তি এমন জুরহ’ অনুষ্ঠান করে যাহা প্রথমোক্ত শ্রেণীর আওতায় আসে না, ঐ ব্যক্তি গায়র জাইফাহ’ অনুষ্ঠান করে।

বিশ্লেষণ

গলাব নিম্নাংশ হইতে উরুসন্ধির মধ্যকার জুরহ (আঘাত) জাইফার অন্তর্ভুক্ত। (যেমন বক্ষদেশ, পেট, পিঠ, পাশ্বদ্বয় এবং অণ্ডকোষ ও পাছার মধ্যবর্তী স্থান। দুই হাত, দুই পা, গলা ও ঘাড়ের জখম জাইফাহ হিসাবে গণ্য হইবে না। ‘শিজাজ ও জাইফাহ বহির্ভূত দেহের অন্যান্য স্থানের জুরহ সাধারণত গায়র জাইফাহ’-এর অন্তর্ভুক্ত। দেহের গোশত ফাটিয়া যাওয়া, হাড় অনাবৃত হইয়া পড়া বা ভাঙ্গিয়া যাওয়া ইত্যাদি এই শ্রেণীভুক্ত।

ধারা-৯২

গাইফাই-এর দত (ক) যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে আঘাত করিয়া অপর ব্যক্তির জাইফাহ ঘটায় সে “আশ”-এর ও পাইবে, যাহা দিয়াতের এক-তৃতীয়াংশ হইবে এবং বিচারকের সুবিবেচনা অনুযায়ী তাযীরের আওতায় ক্ষতিগ্রস্তের চিকিৎসার খরচ বহনসহ অতিরিক্ত দণ্ডে দণ্ডিত হইবে।

(খ) জাইফাই অপর অহেড়াইয়া পড়িলে তাহা দুইটি জাইফাই হিসাবে গণ্য হইবে এবং দুই-তৃতীয়াংশ দিয়াত প্রদান বাধ্যকর হইবে।

বিশ্লেষণ

মহানবী (সা) বলিয়াছেন, জাইফার দিয়াত হইবে পূর্ণ দিয়াতের এক তৃতীয়াংশ। ইয়ামানের গভর্নর আমর ইবন হাযম (রা)-কে লিখিত পত্রে তিনি এই নির্দেশ দিয়াছেন।” প্রতিটি জাইফার জন্য পৃথক পৃথকভাবে এক-তৃতীয়াংশ দিয়াত বাধ্যকর হইবে। প্রসঙ্গত জাইফার ক্ষেত্রে কিসাস কার্যকর হইবে না। মহানবী (সা) বলেন :

لأقود في المأمومة ولا الجائفة ولا النقلة .

• “আহ, জাইফাহ ও মুনাজিলাতে কিসাস নাই” (ইবন মাজা, দিয়াত বাব ৯, নং ১৬৩৭)।

বিধিবন্ধ ইসলামী আইন

১৭৩

ধারা-৯৩

গায়র জাইফাহ-এর শ্রেণীবিভাগ গায়র জাইফাই নিম্নোক্ত শ্রেণীতে বিভক্ত :

(ক) যে আঘাতে দেহের চামড়া কাটিয়া রক্ত নির্গত হয় তাহাকে দামিয়াহ (১) বলে।

(খ) যে আঘাত দেহের গোশত কাটিয়া বা চিরিয়া যায় কিন্তু হাড় অনাবৃত হয় না, তাহাকে বাডিআহ (স.) বলে।

(ণ) যে আঘাতে দেহের গোশত ছিন্ন হইয়া যায় তাহাকে মুতাশাহিমাহ (১) বলে।

(ঘ) যে আঘাতে দেহের গোশত কাটিয়া হাড় অনাবৃত হইয়া যায় তাহাকে মূদিতাহ ( ) বলে।

(ঙ) যে আঘাতে দেহের হাড় ভাঙ্গিয়া যায় কিন্তু স্থানচ্যুত হয় না, তাহাকে হাশিমাহ (৩০) বলে।

(চ) যে আখাতে দেহের হাড় ভাংগিয়া স্থানচ্যুত হইয়া যায় তাহাকে মুনাফিলাহ () বলে।

ধারা-১৪

গায়ইফাই-এর দ যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে কোন ব্যক্তির ‘গায় জাইফাহ’ অনুষ্ঠিত করে সে ‘দামান’ ০৬.)-এর দণ্ডে দণ্ডিত হইবে এবং আঘাতের প্রকৃতি অনুযায়ী বিচারকের সুবিবেচনামতে তাযীরের আওতায়ও শাস্তি ভোগ করিবে?

ধারা-৯৫ সব জুরহ (আঘাত)-এ কিসাস হইবে না যেসব আঘাতে কিসাস কার্যকর করা সব কেবল সেইসব আঘাতে কিসাস কার্যকর হইবে এবং হাড়ের আঘাতে কিসাস কার্যকর হইবে না।

বিশ্লেষণ

পবিত্র কুরআনে বলা হইয়াছে : Lajj, (এবং যখমের বদলে অনুরূপ যখম)। এই আয়াতাংশের তাৎপর্য হইল, সমতার নীতি অনুযায়ী যেসব যখমে কিসাস কার্যকর করা সম্ভব বিশেষত সেইসব যখমেই তাহা কার্যকর হইবে। ইমাম আবু হানীফা, আবু ইউসুফ, মুহাম্মাদ ও যুফার (র)-এর মতে হাড়ের উপর কিসাস কার্যকর হইবে না, কেবল দাঁত ইহার ব্যতিক্রম।

২৭৪

ধারা-৯৬ •

অন্যান্য আঘাত জাইফাহ ব্যতীত অন্যান্য যখমের স্থান ভরিয়া গেলে এবং শুধু ক্ষতচিহ্ন বাকি থাকিলে অপরাধী ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষকে “দামান ও চিকিৎসার খরচ প্রদান করিবে।

ধারা-১৭

কিসাস কার্যকর করার শর্তাবলী (ক) অপরাধী আহত ব্যক্তির যে অঙ্গের ক্ষতিসাধন করিয়াছে তাহার অনুরূপ অঙ্গ (মুমাসিলাত) বিদ্যমান থাকিতে হইবে;

(খ) অপরাধের সমপরিমাণ শান্তি কার্যকর করা সব হইতে হইবে; (গ) অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের জোড় হইতে উহা বিচ্ছিন্ন করিলেই কিসাস কার্যকর হইবে;

(ঘ) আহত ব্যক্তির যখম শুকাইয়া যাওয়ার পর কিসাস কার্যকর করিতে হইবে।

বিশ্লেষণ

কিসাস কার্যকর করার জন্য অপরাধীর দেহে আহত ব্যক্তির সাদৃশ্য অংগ বিদ্যমান থাকিলে কিসাস হইবে না। যেমন অপরাধী কোন ব্যক্তির ডান হাত কাটিয়া ফেলিয়াছে বা অকেজো করিয়া দিয়াছে। কিন্তু অপরাধীর দেহে পূর্ব হইতেই ডান হাত নাই। এই অবস্থায় তাহার বাম হাতে কিসাস কার্যকর করা যাইবে না। অনুরূপভাবে ত্রুটিপূর্ণ অঙ্গের পরিবর্তে ত্রুটিহীন অঙ্গে কিসাস কার্যকর হইবে না।”

কোন গ্রস্থিসন্ধি হইতে সংশ্লিষ্ট অঙ্গ বিচ্ছিন্ন করিলেই কিসাস কার্যকর হইবে। কারণ কিসাস গ্রন্থিসন্ধিতে কার্যকর হয়, হাড়ের উপর নহে। অনন্তর ঘা না শুকানো পর্যন্ত কিসাস কার্যকর করা স্থগিত থাকিবে।

ধারা-৯৮

অপরাধী একাধিক হইলে একাধিক অপরাধী সম্মিলিতভাবে কোন ব্যক্তির দৈহিক ক্ষতি সাধন করিলে কিসের পরিবর্তে ‘আরশ’ প্রদান বাধ্যকর হইবে এবং বিচারকের সুবিবেচনায়

অতিরিক্ত দণ্ডও হইতে পারে।

বিশ্লেষণ

একাধিক ব্যক্তি একত্র হইয়া কোন ব্যক্তির দেহের কোন কিসাসযোগ্য অঙ্গের ক্ষতিসাধন করিলে সেই ক্ষেত্রে অপরাধীগণ আরশ-এর দণ্ড পাইবে এবং তাহাদের সংখ্যানুপাতে আরশ-এর অংশ পরিশোধ করিবে। উপরন্তু অপরাধীদের অবস্থা বিবেচনা করিয়া বিচারক তাহার সুবিবেচনা অনুযায়ী অতিরিক্ত শাস্তিও দিতে পারেন।

২৭৫

ধারা-৯৯ এক ব্যক্তি একাধিক ব্যক্তির হানি করিলে এক ব্যক্তি একাধিক ব্যক্তির একই অকর্তন বা অকম করিয়া দিলে অপরাধীর ঐ নির্দিষ্ট অঙ্গের উপরই কিসাস কার্যকর হইবে এবং তাহার উপর দিয়াতও বাধ্যকর হইবে।

বিশ্লেষণ

যেমন এক ব্যক্তি অপর দুই ব্যক্তির ডান হাত কর্তন করিলে কিসাসস্বরূপ অপরাধীর ডান হাতই কর্তন করা হইবে, বাম হাত বা অন্য কোন অঙ্গ নহে এবং অপর হাতের বদলে দিয়াত বাধ্যকর হইবে এবং তাহা ক্ষতিগ্রস্তদ্বয়ের মধ্যে সমভাবে বন্টিত হইবে। অপরাপর হাতের জন্য কিসাস কার্যকর করা অসম্ভব হওয়ায় দিয়াত বাধ্যকর হইয়াছে। ক্ষতিগ্রস্ত দুইজনের একজন উপস্থিত এবং অপরজন অনুপস্থিত থাকিলেও উপস্থিত জনের দাবি অনুযায়ী কিসাস কার্যকর হইবে এবং অনুপস্থিত জন তাহার হাতের ক্ষতিপূরণস্বরূপ দিয়াত লাভ করিবে। অপরাধী যদি কোন ব্যক্তির উভয় হাত অথবা উভয় পা কর্তন করে তবে কিসাসস্বরূপ তাহা। উভয় হাত অথবা উভয় পা কর্তন করা হইবে। যদি সে একজনের ডান হাত এবং অপর জনের বাম হাত কর্তন করে তবে কিসাসম্বরূপ তাহার উভয় হাত কর্তন করা হইবে।১৯

ধারা-১০০

যে অবস্থায় পূর্ণ দিয়াত বাধ্যকর হয়। মানদেহে যেসব অঙ্গ একটি করিয়া বিদ্যমান, অপরাধী কোন ব্যক্তির উহার কোন একটি অঙ্গ কর্তন করিলে বা উহার কর্মক্ষমতা রহিত করিয়া দিলে, তাহার উপর পূর্ণ দিয়াত প্রদান বাধ্যকর হইবে।

বিশ্লেষণ

দুইভাবে অঙ্গের ক্ষতিসাধন হইতে পারে? দেহ হইতে উহা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করিয়া অথবা অঙ্গ বিচ্ছিন্ন না করিয়া উহার কর্মক্ষমতা রহিত করিয়া। এই অবস্থায় অঙ্গের উদ্দেশ্য সম্পূর্ণরূপে লুপ্ত হইয়া যায়। যেসব অঙ্গ শরীরে একটি করিয়া রহিয়াছে, যেমন নাক, জিহবা, পুরুষাঙ্গ ইত্যাদি, সেই ক্ষেত্রে পূণ দিয়াত আরোপিত হইবে। পূর্ণ দিয়াতের পরিমাণ হইল এক শত উট বা উহার সমমূল্য।

অঙ্গ সস্থানে বহাল আছে কিন্তু উহার উপকারিতা নষ্ট করিয়া দেওয়া হইয়াছে, যেমন ঘ্রাণশক্তি ও স্বাদ আস্বাদনশক্তি আঘাতের কারণে নষ্ট হইয়া গিয়াছে। এই ক্ষেত্রে প্রত্যেক অঙ্গের জন্য পৃথক পৃথকভাবে দিয়াত ধার্য হইবে।

২৭৬

ধারা-১০১ যে অবস্থায় আংশিক দিয়াত বাধ্যকর হয় দেহের যেসব অঙ্গ একাধিক সংখ্যায় বিদ্যমান, অপরাধী উহার কোন একটি বা একাধিক অঙ্গের ‘ইতলাফে উদবু’ বা ‘ইতলাফে সালাহিয়াতে উদবু’ ঘটাইলে আংশিক দিয়াত বাধ্যকর হইবে।

তবে শর্ত থাকে যে, একাধিক অঙ্গের মধ্যে একটিমাত্র অঙ্গ পূর্ব হইতে সুস্থ থাকিলে উহায় ক্ষতিসাধনের বেলায় পূর্ণ দিয়াত বাধ্যকর হইবে।

বিশ্লেষণ

যেমন অপরাধী কোন ব্যক্তির একটি হাত বা একটি পায়ের ইতলাফে উদ বা ইতলাফে সালাহিয়াতে উদ্বু ঘটাইল। এই ক্ষেত্রে হাত বা দুই পায়ের জন্য নির্ধারিত দিয়াতের অর্ধেক পরিশোধ বাধ্যকর হইবে। অনুরূপভাবে যে অঙ্গের সংখ্যা চারটি, উহার একটির ক্ষতিসাধন করিলে উহার জন্য নির্ধারিত দিয়াতের এক-চতুর্থাংশ প্রদান বাধ্যকর হইবে। কিন্তু এক প্রকারের একাধিক অঙ্গের মধ্যে একটি মাত্র অঙ্গ সুস্থ ছিল এবং অবশিষ্টগুলি পূর্ব হইতেই অকেজো ছিল, এই অবস্থায় ঐ সুস্থ অঙ্গের

ক্ষতিসাধন করিলে পূর্ণ দিয়াত বাধ্যকর হইবে।

ধারা-১০২

যে অবস্থায় অতিরিক্ত দিয়াত বাধ্যকর হয়। মানবদেহে যে অঙ্গ বিশ-এর অধিক বিদ্যমান, অপরাধী কোন ব্যক্তির সেই অরে সবগুলির ‘ইতলাফে উদ’ বা ‘ইতলাফে সালাহিয়াতে উদ’ ঘটাইলে পূর্ণ দিয়াত এবং উহার অতিরিক্ত প্রধান বাধ্যকর হইবে।

বিশ্লেষণ

যেমন প্রত্যেক ব্যক্তির দাঁতের সংখ্যা সাধারণত ৩২। প্রত্যেক দাঁতের দিয়াতের পরিমাণ পূর্ণ দিয়াতের বিশ ভাগের এক ভাগ। সেই হিসাবে ৩২টি দাঁতের দিয়াতের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩১ অংশ অর্থাৎ পূর্ণ দিয়াত এবং অতিরিক্ত হিসাবে উহার পাঁচ ভাগের তিন ভাগ।

ধারা-১০৩

অনির্ধারিত দিয়াত (ক) তার চাইতে নিহত বায়ের যে অপরাধে কিমা, দিয়াত বা দামান নির্ধারিত মাই সেই অবস্থায় আদালতের সুবিবেচনা অনুযায়ী দিয়াত থার্থ হইবে।

(খ) দেহে গজানো অতিরিক্ত কাজের ক্ষতি সাধমের ক্ষেত্রেও আমিারিত দিয়াত প্রযোজ্য হইবে।

২৭৭

दिसबर्ग ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষ যেন ক্ষতির প্রতিকার পাইতে পারে এবং অপরাধী যেন দণ্ড হইতে রেহাই না পাইতে পারে সেইজন্য এই প্রকারের দিয়াতের ব্যবস্থা রাখা হইয়াছে। বিচারক অপরাধের ধরন ও যখমের প্রকৃতি বিবেচনা করিয়া দিয়াত নির্ধারণ করিবেন। যে ধরনের অপরাধের ক্ষেত্রে এইরূপ দিয়াত আরোপিত হয় উহার দৃষ্টান্ত এই যে, অপরাধী কোন ব্যক্তির কোন অঙ্গের জোড়া হইতে না কাটিয়া উহার নিম্নাংশ হইতে কর্তন করিয়াছে। ফকীহগণের মতানুযায়ী এই অবস্থায় কিসাস গ্রহণ সম্ভব নহে এবং ইহার অন্য মিলি আরশও (,) মাই। অতএব এই ক্ষেত্রে বিচারকের সুবিবেচনা অনুযায়ী দিয়াত ধার্য হইবে।” দেহে গজাননা অতিরিক্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ক্ষতিসাধনের বেলায়ও অনির্ধারিত দিয়াত প্রমোজ্য হইবে। যেমন কোন ব্যক্তির হাতে বা পায়ে বিশের অধিক আঙ্গুল বিদ্যমান আছে এবং অপরাধী এই অতিরিক্ত অঙ্গের ক্ষতিসাধন

করিয়াছে।

ধারা-১০০

দিয়াত কখন বাধ্যকর হয় ইতলাফে উদ, ইতলাফে সালাহিয়াতে উদবু, শিজাজ অথবা আঘাতের বেলায় কোন কারণে কিসাস কার্যকর করা সব না হইলে অপরাধীর উপর দিয়াত প্রদান বাধ্যকর হইবে।

বিশ্লেষণ

যেমন হাত, পা, আঙ্গুল ইত্যাদি অস্থিসন্ধি হইতে বিচ্ছিন্ন না করিয়া গ্রন্থিসন্ধির নিম্নাংশ বা উপরাংশ হইতে বিচ্ছিন্ন করা হইয়াছে, অথবা কিসাস কার্যকর করিলে অপরাধীর সমপরিমাণের অধিক শাস্তি পাওয়ার বা মৃত্যু ঘটার আশঙ্কা আছে। এই ধরনের অবস্থায় কিসাস রহিত হইয়া যাইবে এবং অপরাধীর উপর দিয়াত প্রদান বাধ্যকর হইবে।

ধারা-১০৫

নাকের দিয়াত (ক) কোন ব্যক্তি অপর ব্যক্তির নাক কর্তন করিলে, কোন কারণে অপরাধীর উপর কিসাস কার্যকর করা সম্ভব না হইলে, উহার ‘আৱশ হইবে পূর্ণ দিয়াতের সমপরিমাণ।

(খ) কোন ব্যক্তি অপর ব্যক্তির নাকের কর্মক্ষমতা রহিত করিয়া দিলে উহার ‘আরশ’ হইবে পূর্ণ দিয়াতের সমপরিমাণ।

বিশ্লেষণ

নাকের নরম অংশ কর্তন করিলে কিসাস কার্যকর হইবে! মহান আল্লাহ বলেন :

২৭৮

والأنف بالأنف .

নাকের বদলে নাক’ (কর্তন করা হইবে) (মায়িদা : ৪৫) মহানবী (স) বলেন :

وفي الأنف اذا أوعب جذع الدية مائة من الابل .

“পুরা নাক কর্তন করিলে পূর্ণ দিয়াত।”২৫।

নরম অংশের আংশিক কর্তন করিলে বা নাকের বাঁশিসমেত কর্তন করিলে কিসাস কার্যকর হইবে না, ইহার পরিবর্তে দিয়াত প্রদান বাধ্যকর হইবে। অনুরূপভাবে নাকের কর্মক্ষমতা অর্থাৎ ঘ্রাণশক্তি সম্পূর্ণ নষ্ট করিয়া দেওয়ার ক্ষেত্রেও পূর্ণ দিয়াত বাধ্যকর হইবে।

ধারা-১০৬

জিহবার দিয়াত (ক) কোন ব্যক্তি অপর ব্যক্তির জিহবা কর্তন করিলে, কোন কারণে অপরাধীর উপর কিস কার্যকর করা সব না হইলে, উহার আরশ’ হইবে পূর্ণ দিয়াতের সমপরিমাণ। (খ) জিহবার কর্মমতা নষ্ট করিয়া দিলে উহার ‘আরশ’ হইবে পুর্ণ দিয়াতের

সমপরিমাণ।

বিশ্লেষণ

জিহবার পূর্ণ অংশ কর্তন করিলে ইমাম আবু ইউসুফ (র)-এর মতে কিসাস কার্যকর হইবে। কারণ এই ক্ষেত্রে পুরাপুরি বদলা লওয়া সম্ভব। কিন্তু ইমাম মুহাম্মাদ (র)-এর মতে কিসাস কার্যকর হইবে না। কারণ জিহবা বর্ধিত ও সংকুচিত হওয়ার কারণে পুরাপুরি বদলা লওয়া সম্ভব নহে। জিহ্বার আংশিক কর্তন করিলেও কিসাস কার্যকর হইবে না। এই অবস্থায় পূর্ণ দিয়াত প্রদান বাধ্যকর হইবে। জিহবা স্বস্থানে বহাল আছে কিন্তু উহার কর্মক্ষমতা অর্থাৎ স্বাদ আস্বাদনশক্তি ও কথা বলার শক্তি রহিত করিয়া দেওয়া হইয়াছে; এই অবস্থায়ও পূর্ণ দিয়াত বাধ্যকর হইবে।’

মহানবী (স) বলেন : _স! ৩। “জিহবার জন্য পূর্ণ দিয়াত।”“ জিহবা আংশিক কর্তন করার ফলে আংশিক বাকশক্তি রহিত হইলে আদালতের সুবিবেচনা অনুযায়ী দিয়াত ধার্য হইবে।

ধারা-১০৭

পুরুষাঙ্গের দিয়াত। (ক) কোন ব্যক্তি অপর ব্যক্তির পুরুষাঙ্গ কর্তন করিলে, কোন কারণে অপরাধীর উপর কিসাস কার্যকর করা সম্ভব না হইলে, উহার ‘আরশ’ হইবে পূর্ণ দিয়াতের সমপরিমাণ।

২৭৯

(খ) কোন ব্যক্তি অপর ব্যক্তির পুরুষাঙ্গের কর্মক্ষমতা রহিত করিয়া দিলে উহার আরশ’ হইবে পূর্ণ দিয়াতের সমপরিমাণ।

(গ) খােজা ) ও নপুংসকের (৬) পুরুষাঙ্গ কর্তন করিলে আদালতের সুবিবেচনা অনুযায়ী দিয়াত ধার্য হইবে।

বিশ্লেষণ

মহানবী (সা) বলেন : ২, “পুরুষাঙ্গের জন্য পূর্ণ দিয়াত।”

পুরুষাঙ্গের অগ্রভাগ (1) কর্তন করিলে কিসাস কার্যকর হইবে। অগ্রভাগের আংশিক কর্তন করিলে কিসাস রহিত হইয়া যাইবে এবং দিয়াত আরোপিত হইবে। পুরুষাঙ্গের সমস্তটা কৰ্তন করিলে ইমাম আবু ইউসুফের মতে কিসাস কার্যকর হইবে এবং ইমাম মুহাম্মাদের মতে কিসাসের পরিবর্তে দিয়াত আরোপিত হইবে।

পুরুষাঙ্গ স্বস্থানে বহাল আছে কিন্তু ইহার কর্মক্ষমতা রহিত করিয়া দেওয়া হইয়াছে, এই অবস্থায় পূর্ণ দিয়াত বাধ্যকর হইবে। খােজা (3) ও নপুংসক (Ji)-এর পুরুষাঙ্গ কর্তন করিলে আদালতের সুবিবেচনা অনুযায়ী দিয়াত ধার্য হইবে।

ধারা-১০৮

মেরুদণ্ডের দিয়াত মেরুদতে আঘাতের ফলে উহা বাঁকা হইয়া গেলে এবং বীর্য নির্গমন বন্ধ হইয়া গেলে পূর্ণ দিয়াত বাধ্য হইবে।

বিশ্লেষণ

মহানবী (সা) বলেন : _ial, “মেরুদণ্ডের জন্য পূর্ণ দিয়াত।”

ধারা-১০৯

নারীর বাহ্যদ্বার ও যৌনাঙ্গের দিয়াত (ক) কোন ব্যক্তি কোন নারীর পায়খানা ও পেশাবের নির্গমনপথ পরস্পর মিলাইয়া দেওয়ার ফলে পায়খানা অথবা পেশাবের কোন একটির প্রতিরোধ ক্ষমতা রহিত হইয়া গেলে পূর্ণ দিয়াত বাধ্যকর হইবে; এবং

(খ) পায়খানা-পেশাব উভয়টির প্রতিরোধ ক্ষমতা পূর্ণভাবে রহিত হইয়া গেলে উভয়টির জন্য পৃথক পৃথকভাবে পূর্ণ দিয়াত বাধ্যকর হইবে।

২৮)

ধারা-১১০

দেহের চামড়ার দিয়াত কোন ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে অপর ব্যক্তির দেহের চামড়া উৎপাটন বা কর্তন করিলে আদালতের সুবিবেচনা অনুযায়ী অপরাধীর উপর দিয়াত বাধ্যকর হইবে, কিন্তু মুখমণ্ডলের চামড়া উৎপাটন বা কর্তনের বেলায় পূর্ণ দিয়াত বাধ্যকর হইবে; উপরন্তু আদালত তাবীরের আওতায় অপরাধীকে অতিরিক্ত শাস্তিও দিতে পারে।

বিশ্লেষণ

কোন ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে অপর ব্যক্তির দেহের চামড়া এমনভাবে উৎপাটন বা কর্তন করিল যে, তাহাতে তাহার মৃত্যু ঘটে নাই এবং আহত স্থানে লোম গজায় নাই, এই অবস্থায় আদালত তাহার সুবিবেচনা অনুযায়ী দিয়াতের পরিমাণ নির্ধারণ করিবে। অপরাধের মাত্রা বিবেচনা করিয়া আদালত উপযুক্ত মনে করিলে অপরাধীকে তাযীরের আওতায় অতিরিক্ত শাস্তিও দিতে পারে। অপরাধী কাহারও মুখমণ্ডলের চামড়া উৎপাটন বা কর্তন করিলে সেই ক্ষেত্রে পূর্ণ দিয়াত বাধ্যকর হইবে।”

ধারা-১১১

চুলের দিয়াত কোন ব্যক্তি ইকৃতভাবে অপর ব্যক্তি

(ক) মাথার চুল উৎপাটন করিলে এবং তাহা পুনরায় না গজাইলে অপরাধীর উপর পূর্ণ দিয়াত বাধ্যকর হইবে।

(খ) গৌছ উৎপাটন করিলে এবং তাহা পুনরায় না গাইলে অপরাধীর উপর আদালতের সুবিবেচনা অনুযায়ী দিয়াত বাধ্য হইবে; এবং

(গ) উভয় র চুল উৎপাটন করিলে এবং তা পুনরায় না গজাইনে অপরাধীর উপর পূর্ণ দিয়াত এবং এক ধ্রুর ক্ষেত্রে অর্থ-দিয়াত বাধ্যকর হইবে।

বিশ্লেষণ

উপরোক্ত স্থানসমূহের চুল মানুষের দেহের সৌন্দর্যবর্ধক। তাই তাহা উৎপাটন করিলে দেহের সৌন্দর্য নষ্ট হইয়া যায়। ইমাম মালেক ও শাফিঈ (র)-এর মতে উপরোক্ত অপরাধসমূহের ক্ষেত্রে আদালতের সুবিবেচনা অনুযায়ী দিয়াত ধার্য হইবে। কিন্তু আবু হানীফা ও আহমাদ (র)-এর মতে গোঁফ ব্যতীত অন্যান্য ক্ষেত্রে দিয়াত

বাধ্যকর হইবে।

ধারা-১১২

বােধশক্তির দিয়াত কোন ব্যক্তি কর্তৃক ইচ্ছাকৃতভাবে অপর ব্যক্তির মাথায় আঘাত করার দরুন তাহার বােধশক্তি লোপ পাইলে অপরাধীর উপর পূর্ণ দিয়াত বাধ্য হইবে।

২৮১

বিশ্লেষণ

বােধশক্তি বা চেতনাশক্তিই মানুষের আসল সম্পদ। উহার উপকারিতা অবর্ণনীয়। যে ব্যক্তিকে বােধশক্তিশূন্য করা হইয়াছে সে মৃতবৎ। তাহার কোন কিছু করার শক্তি অবশিষ্ট থাকে না। তাই কেহ ইচ্ছাকৃতভাবে অপর কাহারও উক্তরূপ ক্ষতি সাধন করিলে তাহার উপর পূর্ণ দিয়াত বাধ্যকর হইবে।”

ধারা-১১৩

চোখের দিয়াত কোন ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে অপর ব্যক্তির চোখের ক্ষতিসাধন করিলে এবং কোন কারণে অপরাধীর উপর কিস কার্যকর করা সম্ভব না হইলে, উহার ‘আ’বে এক চোখের ক্ষেত্রে পূর্ণ লিয়াতের অর্ধেক এবং দুই চোখের ক্ষেত্রে পূর্ণ দিয়াতের সমপরিমাণ।

বিশ্লেষণ

মহান আল্লাহর বাণী : xiu – 1, “চোখের বদল চোখ” (সূরা মাইদা : ৪৫)।

যদি কোন কারণে কিসাস কার্যকর করা সম্ভব না হয় তবে সেই ক্ষেত্রে দিয়ত আরোপিত হইবে। মহানবী (সা) বলেন :

وفي العينين الدية وفي العين خمسون .

“দুই চোখের ক্ষেত্রে পূর্ণ দিয়াত এবং এক চোখের ক্ষেত্রে অর্ধ দিয়াত।”

চোখ স্বস্থানে বহাল আছে কিন্তু উহার কর্মক্ষমতা রহিত করিয়া দেওয়া হইয়াছে, সেই ক্ষেত্রেও উপরোক্ত নিয়মে দিয়াত প্রদান বাধ্যকর হইবে। পূর্ব হইতে একটি চোখ অকেজো এবং অপর চোখ ভালো থাকিলে সেই ক্ষেত্রে ভাল চোখটির বেলায় পূর্ণ দিয়াত বাধ্যকর হইবে।”

ধারা-১১৪

কানের দিয়াত কোন ব্যক্তি অপর ব্যক্তির কানের ক্ষতিসাধন করিলে এবং কোন কারণে, কিস কার্যকর করা সব না হইলে উহার আরশ’ হইবে এক কানের ক্ষেত্রে পূর্ণ

দিয়াতের অর্ধেক এবং দুই কানের ক্ষেত্রে পূর্ণ দিয়াতের সমপরিমাণ।

বিশ্লেষণ

মহান আল্লাহর বাণী : ১১১ ১১২।,

২৮২

“কানের বদলে কান।” (সূরা মাইদা : ৪৫)।

যদি কোন কারণে কিসাস কার্যকর করা সম্ভব না হয় তবে সেই ক্ষেত্রে দিয়াত বাধ্যকর হইবে। মহানবী (সা) বলেন : ৬। ১ ১১২ ১১।

“এক কানের দিয়াত পঞ্চাশ উট।”

কান স্থানে বহাল আছে কিন্তু উহার কর্মক্ষমতা নষ্ট করিয়া দেওয়া হইয়াছে, সেই ক্ষেত্রেও উক্ত নিয়মে দণ্ড কার্যকর হইবে। ইমাম মালেক (র)-এর মতে কান উৎপাটন বা কর্তনের কারণে শ্রবণশক্তি রহিত হইলেও নির্দিষ্ট পরিমাণ দিয়াত প্রদান বাধ্যকর হইবে এবং শ্রবণশক্তি নষ্ট না হইলে আদালতের সুবিবেচনা অনুযায়ী দিয়াত ধার্য হইবে।

ধারা-১১৫

ঠোঁটের দিয়াত (ক) কোন ব্যক্তি অপর ব্যক্তির ঠোঁট কর্তন করিলে, কোন কারণে অপরাধীর উপর কিসাস কার্যকর করা সম্ভব না হইলে, উহার আরশ’ হইবে এক ঠোঁটের বেলায় অর্থ-দিরাতের সমান এবং দুই ঠোটের বেলায় পূর্ণ দিয়াতের সমান।

(খ) ঠোঁটের অনুভূতিশক্তি রহিত করিয়া দিলে উপরোক্ত নিয়মে ‘আয়শ’ প্রদান বাধ্যকর হইবে।

বিশ্লেষণ

ঠোঁট কর্তনের ক্ষেত্রে অপরাধীর উপর কিসাস কার্যকর হইবে। কোন কারণে কিসাস কার্যকর করা সম্ভব না হইলে দিয়াত প্রদান বাধ্যকর হইবে। মহানবী (সা) বলেন: :- :,

“দুই ঠোটের জন্য পূর্ণ দিয়াত।

ঠোঁট উপরেরটি হউক বা নিম্নেরটি, ক্ষুদ্র হউক কিংবা বৃহৎ হউক, উভয়ই সমান।

ধারা-১১৬

দুই স্তনের দিয়াত (ক) কোন ব্যক্তি কোন স্ত্রীলোকের স্তন কর্তন করিলে উহার ‘আরশ হইবে একটির বেলায় অর্ধ-দিয়াতের সমপরিমাণ এবং দুইটির বেলায় পূর্ণ দিয়াতের সমপরিমাণ।

(খ) স্তনের বোঁটা কর্তন করিলে এবং কোন কারণে কিসাস কার্যকর করা সব হইলে উপধারা (ক)-এ বর্ণিত নিয়মে দিয়াত প্রদান বাধ্যকর হইবে।

(শ) স্তনস্থানেলআইকিউহার কার্যক্ষমতা নষ্ট করিয়া দেওয়া হইয়াছে, সেই ক্ষেত্রেও উপধারা (ক)-এ বর্ণিত নিয়মে দিয়াত প্রধান বাধ্যকর হইবে।

২৮৩

বিশ্লেষণ

নারীদের স্তন কর্তনে কিসাস বাধ্যকর হইবে কিনা তাহার উল্লেখ নাই। এই ক্ষেত্রে কিসাস বাধ্যকর না হওয়াই উচিত। তবে স্তনের বোঁটা কর্তন করিলে কিসাস বাধ্যকর হইবে। ইমাম মালেক (র)-এর মতে স্তনের বোঁটা কর্তন করায় দুধ নির্গত হওয়া ব্যাহত বা বন্ধ হইলে পূর্ণ দিয়াত বাধ্যকর হইবে, অন্যথায় আদালতের সুবিবেচনামতে দিয়াত ধার্য হইবে।

ধারা-১১৭

হাতের দিয়াত (ক) কোন ব্যক্তি অপর ব্যক্তির হাত কর্তন করিলে বা ভাঙ্গিয়া ফেলিলে, কোন কারণে অপরাধীর উপর কিসাস কার্যকর করা সম্ভব না হইলে, উহার ‘আরশ’ হইবে এক হাতের বেলায় পূর্ণ দিয়াতের অর্ধেক এবং দুই হাতের বেলায় পূর্ণ দিয়াতের সমপরিমাণ।

(খ) হাত স্বস্থানে বহাল আছে কিন্তু উহার কর্মক্ষমতা রহিত করিয়া দেওয়া হইয়াছে এই ক্ষেত্রে উপধারা (ক)-এ বর্ণিত নিয়মে আরশ’ প্রদান বাধ্যকর হইবে।

(গ) একটি হাত পূর্ব হইতেই অকেজো এবং অপর হাত ভাল হিল, এই অবস্থায় সুস্থ হাতের উপধারা (ক) অথবা (খ)-এ বর্ণিত রূপ ক্ষতিসাধন করিলে উহার ‘আয়শ’ হইবে পূর্ণ দিয়াতের সমপরিমাণ।

বিশ্লেষণ

হাতের কজি, কনুই বা বাহু যেখান হইতেই কর্তন করা হউক, কিসাসম্বরূপ অপরাধীরও সেই স্থান হইতে হাত কর্তন করা হইবে।” কোন কারণে কিসাস কার্যকর করা সম্ভব না হইলে দিয়াত প্রদান বাধ্যকর হইবে। মহানবী (সা) বলেন :

وفي اليدين الية وفي اليد خمسون .

“দুই হাতের জন্য পূর্ণ দিয়াত।” “এক হাতের দিয়াত পঞ্চাশ উট।”

ধারা-১১৮

পায়ের দিয়াত (ক) কোন ব্যক্তি অপর ব্যক্তির পা কর্তন করিলে বা ভাঙ্গিয়া ফেলিলে, কোন কারণে অপরাধীর উপর কিসাস কার্যকর করা সব না হইলে, উহার ‘আশ’ হইবে এক পায়ের বেলায় পূর্ণ দিয়াতের অর্ধেক এবং দুই পায়ের বেলায় পূর্ণ দিয়াতের সমপরিমাণ।

২৮৪

() পা হা হা হা, কিন্তু হায় কম অতি রিয়া কে ইয়াৰে, এই ক্ষেত্রে উপধারা (ক)-এবণিত নিয়মে আয়শ’ প্রদান বাধ্য।

(গ) একটি পা পূর্ব হতেই অকেজো এবং অপর পা সু লি, এইরূপ অবস্থায় সুস্থ পায়ের উপধারা (ক) অথবা (খ)-এ বর্ণিতরূপ ক্ষতিসাধন করিলে উহার আরশ’ হইবে পূর্ণ দিয়াতের সমপরিমাণ।

বিশ্লেষণ

কোন কারণে কিসাস কার্যকর করা সম্ভব না হইলে দিয়াত প্রদান বাধ্যকর হইবে। মহানবী (স) বলেন :

وفي الرجل الواحدة نصف الدية وفي رواية مالك وفي

الرجل خمسون .

“এক পায়ের জন্য পূর্ণ দিয়াতের অর্ধেক।

ধারা-১১৯

অক্ষিপনের দিয়াত কোন ব্যক্তি অপর ব্যক্তির অক্ষিপ কর্তন করিলে বা ছিন্ন করিয়া ফেলিলে, কোন কারণে অপরাধীর উপর ফিসাস কার্যকর করা সব না হইলে, উহার ‘আৱশ’ হইবে প্রতিটি আপিলের জন্য পূর্ণ লিয়াতের এক-চতুর্থাংশ।

বিশ্রণ জমহূরের মতে প্রতিটি অক্ষিপন্মের জন্য পূর্ণ দিয়াতের এক-চতুর্থাংশ প্রদান বাধ্যকর হইবে, কিন্তু মালিকগণের মতে এই ক্ষেত্রে আদালতের সুবিবেচনা অনুযায়ী দিয়া ধার্য হইবে?

. ধারা-১২০

হাত-পায়ের আঙ্গুলের দিয়াত (ক) কোন ব্যক্তি অপর ব্যক্তির হাত অথবা পায়ের আঙ্গুল কর্তন করিলে বা ভাঙ্গিয়া ফেলিলে, কোন কারণে অপরাধীর উপর কিসাস কার্যকর করা সব না হইলে, উহার আরশ’ হইবে প্রতিটি আঙ্গুলের জন্য পূর্ণ দিয়াতের এক-দশমাংশ।

(খ) আনুল স্থানে বহাল আছে কিন্তু উহার কর্মক্ষমতা ঋহিত করিয়া দেওয়া হইয়াছে, এই ক্ষেত্রেও উপধারা (ক)-এ বর্ণিত নিয়মে দিয়াত প্রদান বাধ্য হইবে।

(গ) অতিরিক্ত আঙ্গুলের জন্য আদালতের সুবিবেচনা অনুযায়ী দিয়াত ধার্য হইবে।

(ঘ) আঙ্গুলের প্রত্যেক করের জন্য সংশ্লিষ্ট আঙ্গুলের দিয়াতের এক-তৃতীয়াংশ, কিন্তু বৃদ্ধাঙ্গুলের প্রত্যেক করের জন্য উক্ত আঙ্গুলের অর্ধেক দিয়াত প্রদান বাধ্যকর

হইবে।

২৮৫

বিশ্লেষণ

কোন কারণে কিসাস কার্যকর করা সম্ভব না হইলে দিয়াত প্রদান বাধ্যকর হইবে। মহানবী (সা) বলেন :

وفي كل اصبع من الأصابع اليد والرجل عشر من الابل

“হাত ও পায়ের প্রতিটি আঙ্গুলের দিয়াত দশটি করিয়া উট।”“,

আঙ্গুলের প্রতিটি করের জন্য সংশ্লিষ্ট আঙ্গুলের দিয়াতের এক-তৃতীয়াংশ প্রদান বাধ্যকর হইবে, কিন্তু বৃদ্ধাঙ্গুলের প্রতিটি করের জন্য উক্ত আঙ্গুলের দিয়াতের অর্ধাংশ প্রদান বাধ্যকর হইবে। এই বিষয়ে চার মাযহাবের ফকীহগণ একমত।” আঙ্গুলের কর্মক্ষমতা রহিত করিয়া দেওয়ার ক্ষেত্রেও একই নিয়মে দিয়াত প্রদান বাধ্যকর হইবে। হাত বা পায়ের অতিরিক্ত আঙ্গুলের উক্তরূপ ক্ষতিসাধনের বেলায় আদালতের সুবিবেচনা অনুযায়ী দিয়াতের পরিমাণ ধার্য হইবে।

ধারা-১২১

দাঁতের দিয়াত (ক) কোন ব্যক্তি অপর ব্যক্তির দাঁত উৎপাটন বা ভঙ্গ করিলে, কোন কারণে অপরাধীর উপর কিসাস কার্যকর করা সব না হইলে, উহার ‘আরশ’ হইবে প্রতটি দাঁতের জন্য পূর্ণ দিয়াতের বিশ ভাগের এক ভাগ।

(খ) দাঁত স্থানে বহাল আছে কিন্তু উহার কর্মক্ষমতা রহিত করিয়া দেওয়া হইয়াছে, এইকে উপধারা (ক)-এ বর্ণিত নিয়মে আকাশ প্রদান বাধ্য হইবে।

(গ) ৩২-এর অধিক দাঁতের ক্ষেত্রে আদালতের সুবিবেচনা অনুযায়ী দিয়াত প্রদান বাধ্যকর হইবে।

বিশ্লেষণ

হাড়ের উপর সাধারণত কিসাস কার্যকর হয় না, কিন্তু দাঁত ইহার ব্যতিক্রম। মহান আল্লাহ্ বলেন : . JL,

“দাঁতের বদলে দাঁত” (সূরা মাইদা : ৪৫)।

কোন কারণে কিস কার্যকর করা সম্ভব না হইলে ‘আরশ’ প্রদান বাধ্যকর হইবে। মহানবী (সা) বলেন : . L1। U;LT;

“প্রতিটি দাঁতের দিয়াত পাঁচটি উট।

وفي الأسنان مسا خمسا .

“সাতসমূহের প্রতকটির দিয়াত পাঁচটি করিয়া উট।”

দাঁত স্থানে বহাল থাকিলেও উহার কর্মক্ষমতা রহিত করিয়া দেওয়ার ক্ষেত্রেও উল্লিখিত নিয়মে দিয়াত প্রদান বাধ্যকর হইবে। কাহারও ৩২-এর অধিক দাঁত

থাকিলে ঐ অতিরিক্ত দাঁতের জন্য আদালতের সুবিবেচনা অনুযায়ী দিয়াত প্রদান বাধ্যকর হইবে।

ধারা-১২২ প্রত্যয়ে দিয়াত অরে দিয়াতের মধ্যে শামিল (ক) কোন ব্যক্তি অপর ব্যক্তির অদের প্রত্যঙ্গ কর্তন বা ভঙ্গ করার পর সংশ্লিষ্ট অঙ্গটি কর্তন করিলে ৰা ভাঙ্গিয়া ফেলিলে বা অকেজো করিয়া দিলে অপরাধীর উপর কেবল অঙ্গের জন্য নির্ধারিত দিয়াত’ প্রদান বাধ্যকর হইবে।

(খ) অঙ্গ কর্তন করার পর কাহাকেও হত্যা করা হইলে অঙ্গের জন্য নির্ধারিত দিয়াত বাধ্যকর না হইয়া কিসাস বাধ্যকর হইবে এবং কোন কারণে কিসাস কার্যকর করা সম্ভব না হইলে প্রাণনাশের দিয়াত প্রদান বাধ্যকর হইবে।

বিশ্লেষণ

যেমন কোন ব্যক্তি অপর ব্যক্তির প্রথমে হাতের আঙ্গুল কর্তন করিল, অতঃপর হাত কর্তন করিল, এই ক্ষেত্রে আঙ্গুল ও হাতের জন্য পৃথক পৃথকভাবে দিয়াত ধার্য হইবে না, বরং হাতের জন্য নির্ধারিত দিয়াত প্রদানই বাধ্যকর হইবে। অনুরূপভাবে কোন ব্যক্তি অপর ব্যক্তির প্রথমে হাত ও পা কর্তন করি, অতঃপর চক্ষু উৎপাটন করিল, অতঃপর তাহাকে হত্যা করিল। এই ক্ষেত্রেও হাত, পা ও চোখের জন্য নির্ধারিত দিয়াত প্রদান বাধ্যকর হইবে না, বরং প্রাণনাশের জন্য কিসাসই বাধ্যকর হইবে এবং কোন কারণে কিসাস রহিত হইলে প্রাণনাশের দিয়াত প্রদানই বাধ্যকর হইবে।

ধারা-১২৩ ইসকতে হামল (অপূর্ণাঙ্গ ক্রণের গর্ভপাত ঘটানো) (ক) যে ব্যক্তি কোন নারীর সেই শিশুর গর্ভপাত ( ১ ) ঘটা, যাহার অঙ্গসমূহ গঠিত হয় নাই এবং যদি তাহা উক্ত নারীর জীবন রক্ষার্থে বা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করাইবার জন্য না হইয়া থাকে, তাহা হইলে সেই ব্যক্তি ইসকালে হামল’ ঘটাইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।

(খ) যে নারী নিজেই নিজের গর্ভপাত ঘটায় সে উপধারা (ক)-এর তাৎপর্যাধীব হইবে, তবে স্বামীর সম্মতি সাপেক্ষে গর্ভপাত ঘটাইলে উক্ত (ক) ধারায় তাৎপর্যাধীন হইবে না।

(গ) যে ব্যক্তি উগধারা (ক)-এ বর্ণিত শিশুর গর্ভপাত ঘটায় সে তাযীরের আওতায় আদালতের সুবিবেচনা অনুযায়ী দণ্ডযোগ্য হইবে।

২৮৭

তবে শর্ত থাকে যে, গর্ভপাত ঘটানোর ফলে যদি সংশ্লিষ্ট নারীর প্রতি কোন আঘাত ঘটানো হয় বা সে মারা যায়, তবে অভিযুক্ত ব্যক্তি উপরন্তু ঐরূপ আঘাত বা মৃত্যুর জন্য, অবস্থাভেদে যাহা ঘটে, নির্ধারিত দণ্ডে দণ্ডাৰ্হ হইবে।”

ধারা-১২৪

ইসকাতে জানীন ( ৮ ) (ক) যে ব্যক্তি কোন নারীর সেই শিশুর গর্ভপাত ঘটায়, যাহার কিছু বা পূর্ণ অঙ্গ বা অবয়ব গঠিত হইয়াছে এবং যদি তাহা উক্ত নারীর জীবন রক্ষার্থে বা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করাইবার জন্য না হইয়া থাকে, তাহা হইলে সেই ব্যক্তি ‘ইসাতে জানীন’ ঘটাইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।

(খ) যে নারী নিজেই নিজের ‘ইসকাতে জানীন’ ঘটায় সে উপধারা (ক)-এর তাৎপর্যাধীন হইবে, তবে স্বামীর সম্মতি সাপেক্ষে গর্ভপাত ঘটাইলে উক্ত (ক) ধারার তাৎপর্যাধীন হইবে না।

(গ) কোন ব্যক্তির আঘাতের ফলে গর্ভস্থ শিশু মৃত অবস্থায় ভূমিষ্ঠ হইলে সংখ্যা অনুযায়ী প্রতিটির জন্য স্বতন্ত্রভাবে অপরাধীর উপর দণ্ডস্বরূপ দিয়াতের বিশ ভাগের এক ভাগ প্রদান বাধ্যকর হইবে।

(ঘ) কোন ব্যক্তির আঘাতের ফলে গর্ভস্থ শিশু জীবিত ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর মারা গেলে সংখ্যা অনুযায়ী প্রতিটির জন্য স্বতন্ত্রভাবে পূর্ণ দিয়াত বাধ্যকর হইবে?

তবে শর্ত থাকে যে, গর্ভপাত ঘটানোর ফলে যদি সংশ্লিষ্ট নারীর প্রতি কোন আযাত ঘটানো হয় বা সে মারা যায়, তবে অভিযুক্ত ব্যক্তি উপরন্তু ঐরূপ আঘাত বা মৃত্যুর জন্য, অবস্থাভেদে যাহা ঘটে, নির্ধারিত দণ্ডে দণ্ডা হইবে।

তথ্যনির্দেশিকা ১. বাদাইউস সানাই, ৭খ, পৃ. ২৯৬।

বাদাইউস সানাই, ৭, পৃ. ২৯৭।

বাদাইউস সানাই, ৭, পৃ. ২৯৭। ৪. বাদাইউস সানাই, ৭খ, পৃ. ২৯৬; তাবঈনুল হাকাইক, ৬২, পৃ. ১৩২; আল-হিদায়া,

৪থ, পৃ. ৫৭৪। লিসানুল আরাব, ৪খ, পৃ. ২১৯৬-৭; তাবঈনুল হাকাইক, ৬খ, পৃ. ১৩৩; আল-হিদায়া,

৪, পৃ. ৫৪৪। তাবঈনুল হাকাইক, ৬খ, পৃ. ১৩৩; বাদাইউস সানাই, ৭, পৃ. ৩১৬। তাবঈনুল হাকাইক, ৬খ, পৃ. ১৩২-৩; বাদাইউস সানাই, ৭খ, পৃ. ৩১৬। বাদাইউস সানাই, ৭, পৃ. ২৯৬। আত-তাবীর ফিশ শারীতিল ইসলামিয়া (উর্দু অনু.), পৃ. ২৩৬।

৩ ০ ১ ৫

২৮৮

১০. নাসাঈ, দারিমী ও মুওয়াত্তা ইমাম মালেকের বরাতে মিশকাতুল মাসাবীহ, নাসেরুদ্দীন

আল-আলবানী সম্পাদিত, ২য় সংস্করণ, বৈরূত ১৬৯৯/১৯৭৯, কিতাবুল কিসাস, বাবুদ-দিয়াত, ২য় ফাসল, নং ৩৪৯২। আত-তাষীর ফিশ শারীতিল ইসলামিয়্যা (উর্দু অনু.), পৃ. ২১০; বাদাইস

সানাই, ৭, পৃ. ৪১৮-৯। ১২. পাকিস্তানের সংশোধিত ইসলামী দণ্ডবিধির আলোকে রচিত।

পাকিস্তানের (শরীআত মোতাবেক) সংশোধিত দণ্ডবিধির আলোকে রচিত। আবূ বাকর আল-জাসসাস, আহকামুল কুরআন, পারুল ফিক, বৈরূত, ২, পৃ.

৪৪-১। ১৫. আল-কাসানী, বাদাইউস সানাই, ৭, পৃ. ২২৪।

বাদাই, ৭খ, পৃ.২৯৭। ১৭. বাদাই, ৭, পৃ. ২৯৮। ১৮. বাদাইউস সানাই, খ, পৃ. ২৯৯।

১৯. বাদাইউস সানাই, ৭৩, পৃ. ২৯৯-৩০০।

বাদাইউস সানাই, খ, পৃ. ৩১১। বাদাইউস সানাই, ৭৩, পৃ. ৩১৪; তাবঈনুল হাকাইক, ৬খ, পৃ. ১২৯-৩১।

শরীআর আলোকে পাকিস্তানের সংশোধিত ফৌজদারী আইন দ্র.।

বাদাইউস সানাই, ৭, পৃ. ৩১৪।

বাদাইউস সানাই, ৭, পৃ. ৩২৩-২৪।

নাসাঈ, পারিমী ও মুওয়াত্তা হইতে মিশকাতে, কিতাবুল কিসাস, নং ৩৪৯২। ২৬. বাদাইউস সানাই, ৭, পৃ. ৩০৮; আল-হিদায়া, ৪, পৃ. ৫৭১। ২৭. বাদাইউস সানাই, ৭৩, পৃ. ৩০৮; আল-হিদায়া, ৪থ, পৃ. ৫৭১।

আল-ফিকহুল ইসলামী ওয়া আদিল্লাতুই, ৬, পৃ. ৩৪৩; নাসাঈ, কিতাবুল কাসামা, সৈকত, ১ম সং ১৩৪৮/১৯৩০, ৮২, পৃ. ৫৭-৮; সুনানু দারিমী, বৈরূত সং, ২,

পৃ. ১৯৩। ২৯. বাদাই, ৭খ, পৃ, ৩১১।

নাসাঈ, কাসামা, ৮২, পৃ. ৫৭-৮; দারিমী, দিয়াত, ২২, পৃ. ১৯৩। বাদাইউস সানাই, ৭, পৃ. ৩০৮, ৩১১; আল-ফিকহুল ইসলামী, ৬, পৃ. ৩৪৩। আল-ফিকহুল ইসলামী, ৬খ, পৃ. ৩৪৩। নাসাঈ, ঐ; দারিমী, ঐ; বাদাইউস সানাই, ৭, পৃ. ৩১১; আল-ফিকহ ইসলামী, ৬খ, পৃ. ৩৪৩। বাদাইউস সানাই, ৭৩, পৃ. ৩১১; আল-ফিকহুল ইসলামী ওয়া আদিল্লাতুহ, ৬,

পৃ. ৩৪৩-৪। ৩৫. আম্‌দ-দুররুল মুখতার, ৫খ, পৃ. ৪১৩-এর বরাতে আল-ফিকহুল ইসলামী ওয়া

আদিরাতুছ- ৩, ৬, পৃ. ৩৪৪।

২৮৯

৪৫.

৩৬. আল-হিদায়া, ৪খ, পৃ. ৫৭১-২; আল-ফিকহুল ইসলামী ওয়া আদিল্লাতুহু, ৬খ, পৃ.

৩৪৪-৫ (আল-বাদাইউস সানাই, ৭খ, পৃ. ৩১২; আম্‌দ-দুররুল মুখতার, ৫খ, পৃ.

৪০৮ প.; আল-মুগনী, ৮, পৃ. ১০প.-এর বরাতে)। ৩৭. আল-হিদায়া, ৪খ, পৃ. ৫৭১। ৩৮. নাসাঈ, দারিমী ও মুওয়াত্তা হইতে মিশকাতুল মাসাবীহ-এ, কিতাবুল কিসাস, নং

৩৪৯২। বাদাইউস সানাই, ৭খ, পৃ. ৩০৮; আল-ফিকহুল ইসলামী, ৬৩, পৃ. ৩৪৫। নাসাঈ, দারিমী ও মুওয়াত্তা হইতে মিশকাতুল মাসাবীহ-এ, কিতাবুল কিসাস, নং

৩৪৯২। ৪১. আল-

ফিলে ইসলামী, ৬, পৃ. ৩৪৪৫; বাদাইউস সানাই, ৭২, পৃ. ৩০৮। নাসাঈ, দারিমী ও মুওয়াত্তা হইতে মিশকাতুল মাসাবীহ-এ, কিতাবুল কিসাস, নং

৩৪৯২। ৪৩. আল-ফিকহুল ইসলামী, ৬খ, পৃ. ৩৪৫; বাদাইউস সানাই, ৭, পৃ. ৩০৮; আল

হিদায়া, ৪খ। ৪৪: আল-ফিকহুল ইসলামী, ৬, পৃ. ৩৪৬; বাদাইউস সানাই, ৭, পৃ. ৩১১।

বাদাইউস সানাই, ৭, পৃ. ৩০৮; আল- হিদায়া, ৪খ, পৃ. ৫৭২; আল-ফিকহুল।

ইসলামী, ৬, পৃ. ৩৪৪-৫।

৪৬. নাসাবুর রায়াহ, ৪, পৃ. ২৭১।

নাসাই, দারিমী ও মুওয়াত্তা হইতে মিশকাতুল মাসাবীহ-এ, কিতাবুল কিসাস, নং

৩৪৯২। ৪৮. নাসাঈ, দারিমী ও মুওয়াত্তা হইতে মিশকাতে, কিতাবুল কিসাস, নং ৩৪৯২;

বাসাইল না, ৭, পৃ. ৩০০; আল-হিদায়া, ৪খ, পৃ. ৫৭২; আল-ফিকহুল ইসলামী, ৬, পৃ. ৩৪৫। বাদাইউস সানাই, ৭৩, পৃ. ৩১১, ৩২৪; আল-ফিকহুল ইসলামী, ৬, পৃ. ৩৪৭;

আল-হিদায়া, ৪, পৃ. ৫৭২-৩। ৫০. নাসাঈ, দারিমী ও মুওয়াত্তা হইতে মিশকাতুল মাসাবীহ-এ, কিতাবুল কিসাস, নং

৩৪৯২। বাদাইউস সানাই, ৭, পৃ. ৩১৪,৩০৩, ৩১৮; তাবঈনুল হাকাইক, ৬২, পৃ. ৩৪৭; আল-মুগনী, ৮, পৃ. ৩৫; আল-ফিকহল ইসলামী, ৬, পৃ. ১৩৪; আল-হিদায়া,

৪খ, পৃ. ৫৭৩। ৫২. আল-ফিকহুল ইসলামী, ৬খ, পৃ. ৩৪৭।

নাসাঈ, সারিমী ও মুওয়াত্তা হইতে মিশকাতে, কিতাবুল কিসাস, নং ৩৪৯২। ৫৪. আবু দাউদ ও তিরমিযীর বরাতে মিশকাতে, কিতাবুদ দিয়াত, নং ৩৪৯৩। ৫৫. আল-ফিকহ ইসলামী, ৬, পৃ. ৩৪৮; হিদায়া, ৪খ, পৃ. ৫৭৩-৪; বাদাইউস

সামাই, ৭৩, পৃ. ৩১১।

৪৭..

১৯০

৫৬. আল-

ফিল ইসলামী, ৬খ, পৃ. ৩৪৮; বাদাইউস সানাই, ৭, পৃ. ৩১১। ৫৭. বাদাইউস সানাই, ৭, পৃ. ৩০০ পৃ., ৩১৮প,। ৫৮. আলমগিরী, ৬, পৃ. ৩৪-৫। ৫৯.। পাকিস্তানের দণ্ডবিধি হইতে গৃহীত, যাহা ইসলামী শরীআত মোতাবেক সংশোধন

করা হইয়াছে। ৬০. আলমগিরী, ৬খ, পৃ. ৩৪-৫; আল-হিদায়া, ৪খ, পৃ. ৫৮২-৩; বাদাইউস সানাই,

. ৭খ, পৃ. ৩২৫-৬; আল-ফিক্হল ইসলামী, ৬খ, পৃ. ৩৬২-৬৭।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *