০৪৬. যানসন্ধিপর্ব্বাধ্যায়

৪৬তম অধ্যায়

যানসন্ধিপর্ব্বাধ্যায়

সনৎসুজাত ও ধীমান বিদুরের সহিত কথোপকথন করিতে করিতে সেই বিভাবরী অতিবাহিত করিলেন। অনন্তর তিনি পাণ্ডবগণের ধর্ম্মার্থসঙ্গত বাক্য শ্রবণ করিবার অভিলাষে ভীষ্ম, দ্রোণ, কৃপ, শল্য, কৃতবর্ম্মা, জয়দ্ৰথ, অশ্বত্থামা, বিকৰ্ণ, সোমদত্ত, বাহ্লীক, মহাপ্ৰজ্ঞ বিদুর, মহারথ যুযুৎসু ও অন্যান্য শৌর্য্যশালী পার্থিবগণসমভিব্যাহারে এবং কোপনস্বভাব কুরুরাজ দুৰ্য্যোধন, দুঃশাসন, চিত্ৰসেন, শকুনি, দুৰ্ম্মুখ, দুঃসহ, কৰ্ণ, উলুক ও বিবিংশতিসমভিব্যাহারে সুধাবদাতা [জ্যোৎস্নাপুলকিত], বিস্তীর্ণ কনকচত্বরশোভিত, চন্দ্রপ্রভ, চন্দরসাভিষিক্ত, পরিচ্ছদ-পরিচ্ছন্ন, কাঞ্চনময়, দারুময়, প্রস্তরসারময় ও দন্তময় আসনসমূহে সমাকীর্ণ, রুচির সভামণ্ডপে প্রবেশ করিলেন। শৌৰ্য্যশালী মহাবাহু সূৰ্য্যসম তেজস্বী রাজগণ বিচিত্ৰ আসনসকল পরিগ্রহ করিলে সেই সভা সুরমণ্ডলীমণ্ডিত ইন্দ্রপুরীর ন্যায়, সিংহসমূহ সনাথ গিরিগুহার ন্যায় শোভা ধারণ করিল।

যুধিষ্ঠিরের নিকট হইতে সঞ্জয়ের প্রত্যাবর্ত্তন

অনন্তর দ্বারবান নিবেদন করিল, “মহারাজ! পাণ্ডবগণের সমীপে যে রথ প্রেরিত হইয়াছিল, ঐ সেই রথ আসিতেছে। আমাদের দূত সূতপুত্র সঞ্জয় শীঘ্ৰগামী তুরঙ্গসমূহের সাহায্যে অতিশীঘ্ৰ আগমন করিয়াছেন।”

অনন্তর কুণ্ডলধারী সঞ্জয় রথ হইতে অবতরণপূর্ব্বক মহাত্মা মহীপালসমূহে পরিপূর্ণ রাজসভায় প্রবেশ করিয়া কহিলেন, “হে কৌরবগণ! আমি পাণ্ডবগণের নিকট হইতে প্রত্যাগত হইয়াছি, এক্ষণে তত্ৰত্য সমুদয় বৃত্তান্ত শ্রবণ করুন। পাণ্ডবগণ সমুদয় কৌরবগণকে বয়ঃক্রমানুসারে প্রত্যাভিনন্দন করিয়াছেন। তাঁহারা বয়োবৃদ্ধগণকে অভিবাদন, বয়স্যগণকে বয়স্যোচিত সম্ভাষণ এবং যুবাদিগকে প্রতিপূজা করিয়াছেন। আমি মহারাজ ধৃতরাষ্ট্রকর্ত্তৃক যে প্রকার উপদিষ্ট হইয়াছিলাম, পাণ্ডবগণকে সেইরূপ অবগত করাইয়াছি।”