২৮. উড স্ট্রীটে এলেন নটবর মিত্র

উড স্ট্রীটে এলেন নটবর মিত্র।

একটা নতুন বিরাট উঁচু ফ্ল্যাটবাড়ির অটোমেটিক লিফটে উঠে বোতাম টিপে দিলেন নটবরবাবু। “দেখি মিসেস চক্রবর্তীকে। আপনি আবার যা সরল, যেন বলে বসবেন না অন্য জায়গায় সাপ্লাই না পেয়ে এখানে এসেছি।” সোমনাথকে সাবধান করে দিলেন নটবরবাবু।

পাঁচতলায় দক্ষিণ দিকের ফ্ল্যাটে অনেকক্ষণ বেল টেপার পর মিসেস চক্রবর্তীর দরজা খুললো। একটা ম্যাড্রাসি চাকর ফ্যালফ্যাল করে কিছুক্ষণ অতিথির দিকে তাকিয়ে রইলো, তারপর কোনোকিছু না বলে ভিতরে চলে গেলো। নটবরবাবু, নিজের মনেই বললেন, “মিসেস চক্রবর্তীর ফ্ল্যাট যেন ঝিমিয়ে পড়েছে।”

এবার প্রৌঢ়া কিন্তু সুদর্শনা মিসেস চক্রবর্তী ঘোমটা দিয়ে দরজার কাছে এলেন। ‘ নটবরবাবুকে দেখেই চিনতে পারলেন। মুখ শুকনো করে মিসেস চক্রবর্তী বললেন, “আপনি শোনেননি? আমার কপাল ভেঙেছে। মেয়েগুলোকে আচমকা পুলিশে ধরে নিয়ে গেলো।”

আন্তরিক সহানুভূতি প্রকাশ করলেন নটরববাব।।

মিসেস চক্রবর্তী বললেন, “আর জায়গা পেলো না। পুলিশের এক অফিসার রিটায়ার করে পাশের ফ্ল্যাটটা কিনলো। ওই লোকটাই সর্বনাশ করিয়েছে মনে হয়। এতোগুলো মেয়ে ভদ্রভাবে করে খাচ্ছিল।”

গভীর সহানুভূতি প্রকাশ করলেন নটবর মিত্র। কাঁদ-কাঁদ অবস্থায় মিসেস চক্রবর্তী বললেন, “বাঙালী পুলিশ বাঙালীর রক্ত খাচ্ছে। ভদ্র পরিবেশে সাত-আটটা মেয়ে আমার এই ফ্ল্যাটে প্রোভাইডেড হচ্ছিল। কয়েকটি কলেজের স্টুডেন্টকেও চান্স দিচ্ছিলাম—হপ্তায় দু-তিন দিন দুপুরবেলায় কয়েকঘণ্টা সৎভাবে খেটে মেয়েগুলো ভালো পয়সা তুলছিল। কিন্তু কপালে সহ্য হলো না!”

“গভরমেন্ট পুলিশ এদের কথা যতো কম বলা যায় ততো ভালো,” নটবরবাবু সান্ত্বনা দিলেন মিসেস চক্রবর্তীকে।

একটু থেমে মিসেস চক্রবর্তী বললেন, “নতুন একটা ফ্ল্যাটের খুব চেষ্টা করছি মিত্তির মশাই। কলকাতায় বাড়ি ভাড়ার যা অবস্থা। সায়েবপাড়ায় মাসে দেড় হাজারের কম কেউ কথা বলছে না। আমি মেরে কেটে আটশ পর্যন্ত দিতে পারি।”

নটবরবাবুকেও ফ্ল্যাট দেখবার জন্য অনুরোধ করলেন মিসেস চক্রবর্তী। বিদায় দেবার আগে বললেন, “আবার একটু গুছিয়ে বসি—তখন কিন্তু পায়ের ধূলো পড়া চাই।”

যথেষ্ট হয়েছে। জন্মদিনে আমার জন্যে কী অভিজ্ঞতা লিখে রেখেছিলে, হে বিধাতা? সোমনাথ এবার ফিরে যেতে চায়। কিন্তু নটবর মিত্তির এখন ডেসপারেট! তাঁর ধারণা সোমনাথের কাছে তিনি ছোট হয়ে যাচ্ছেন। পাক স্ট্রীটের দিকে যেতে যেতে নটবর বললেন, “কলকাতা শহরে আপনাদের আশীর্বাদে মেয়েমানুষের অভাব নেই। মিস সাইমনের ওখানে গেলে এখনই এক ডজন মেয়ে দেখিয়ে দেবে। কিন্তু ওই সব যা-তা জিনিস তো জানা শোনা পার্টির পাতে দেওয়া যায় না। তবে আমি ছাড়ছি না——আমার নাম নটবর মিত্তির। করেঙ্গে ইয়ে মরেঙ্গে।”

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *