• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • নতুন সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • পুরানো সব ক্যাটাগরি
  • My Account →
  • নতুন সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • পুরানো সব ক্যাটাগরি
  • My Account →
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

০৩. ক্রিনিটি তুমি কী করছ

লাইব্রেরি » মুহম্মদ জাফর ইকবাল » সায়েন্স ফিকশন সমগ্র » রবো নিশি » ০৩. ক্রিনিটি তুমি কী করছ

নিকি জিজ্ঞেস করল, ক্রিনিটি তুমি কী করছ?

ক্রিনিটি টার্মিনালের সাথে একটি বড় তার জুড়ে দিয়ে উপরের স্কুটা লাগাতে লাগাতে বলল, আমি এই বাইভার্বালটি ঠিক করছি।

তুমি কেন এটি ঠিক করছ? আমরা ঘুরতে বের হব।

নিকির চোখে-মুখে আনন্দের ছাপ পড়ল, আমরা কোথায় ঘুরতে বের হব ক্রিনিটি?

নির্দিষ্ট কোনো জায়গায় নয়। আমরা আসলে ঘুরে ঘুরে দেখব। কোথাও তোমার মতো মানুষ খুঁজে পাই কিনা।

এবারে নিকির মুখে দুশ্চিন্তার একটি ছাপ পড়ল, খানিকক্ষণ চুপ করে থেকে বলল, আমার মতো মানুষ?

হ্যাঁ, তোমার মতো মানুষ।

সেই মানুষের সাথে দেখা হলে আমি তাকে কী বলব ক্রিনিটি?

তোমার সেটি নিয়ে ভাবনা করতে হবে না। তোমার যেটি বলতে ইচ্ছে হয় সেটিই বলবে।

তখন সেই মানুষটি কী বলবে ক্রিনিটি?

সেই মানুষটিও তখন তার যেটি ইচ্ছে হয় সেটি বলবে।

আমি তোমার সাথে যেভাবে কথা বলি সেভাবে কথা বলব?

তার চাইতে অনেক সুন্দর করে কথা বলবে। আমি হচ্ছি মাত্র তৃতীয় মাত্রার রোবট আমি সত্যিকার মানুষের মতো কথা বলতে পারি না। আমি শুধু তোমার সাথে তথ্য বিনিময় করি।

সত্যিকার মানুষ কেমন করে কথা বলে ক্রিনিটি?

সেটি অনেক বিচিত্র। কথা বলার সময় তার হাত নাড়ে, মাথা নাড়ে। চোখ দিয়ে তাকায়, গলার স্বর কখনো উঁচু করে, কখনো নীচু করে। একটি সাধারণ কথা বলার জন্যেও অনেক কিছু করে। আবার অনেক গুরুত্বপূর্ণ কথা মুখ ফুটে বলে না। একজন আরেকজনের চোখের দিকে তাকিয়েই বুঝে ফেলে।

নিকিকে এবারে খুব দুশ্চিন্তিত দেখায়। খানিকক্ষণ চিন্তা করে বলল, ক্রিনিটি?

বল।

আমি তো চোখের দিকে তাকিয়ে কোনো কথা বুঝতে পারি না।

তোমার সেটি নিয়ে ভাবনা করতে হবে না। তুমি যদি কখনো কোনো মানুষের দেখা পাও তাহলে দেখবে তুমি বুঝতে পারছ।

আর যদি না পারি?

পারবে। যদি না পার তাহলে তুমি শিখে নেবে।

ক্রিনিটি।

বল?

আমি কিন্তু শিখতে পারি না। মিক্কু কী সুন্দর একটি গাছের ডাল ধরে লাফ দিয়ে আরেকটি ডাল ধরে ফেলে। আমি অনেকদিন থেকে চেষ্টা করছি, শিখতে পারছি না।

ক্রিনিটি ঘুরে নিকির দিকে তাকিয়ে বলল, তুমি সেটি অনেক চেষ্টা করেও শিখতে পারবে না। মিক্কু হচ্ছে বানর, তুমি মানুষ। মানুষ চেষ্টা করলেও বানর হতে পারে না। মানুষের অন্য মানুষ থেকে শিখতে হয়, বানর থেকে শিখতে হয় না।

নিকি বলল, ও।

ক্রিনিটি বাইভার্বালের নীচে গিয়ে একটি গোলাকার ফুটোর ভিতরে উঁকি দেয়, সেখান থেকে জংধরা একটি রিং খুলে নতুন একটি রিং লাগাতে শুরু করে। ঠিক তখন তার মাথার উপর দিয়ে কিকি উড়ে এসে বাইভার্বালের একটি হ্যান্ডেলে বসে কর্কশ স্বরে কঁ কঁ করে ডাকল।

নিকি বলল, কিকি আমরা ঘুরতে বের হব। তুমি আমাদের সাথে যাবে?

কিকি কী বুঝল কে জানে, নীচু স্বরে আবার ক ক করে শব্দ করল। নিকি ক্রিনিটির দিকে তাকিয়ে বলল, ক্রিনিটি।

বল।

কিকি আমাদের সাথে ঘুরতে যেতে পারবে?

যেতে চাইলে যাবে। তবে—

তবে কী?

কিকি হচ্ছে কাক জাতীয় পাখি। পাখিদের মাঝে সবচেয়ে বুদ্ধিমান। এরা দল বেঁধে থাকে, আর দলের সবাইকে ছেড়ে সে আসলে যেতে পারবে না।

কেন যেতে পারবে না?

সব পশু-পাখিদের নিজেদের নিয়ম আছে। পাখিরা থাকে দল বেঁধে। বাঘ থাকে একা একা।

নিকি মুখে হাসি ফুটিয়ে বলল, কিকি তার দলের পাখি থেকে আমাকে বেশি ভালোবাসে। তাই না কিকি?

কিকি মাথা নেড়ে বলল, কঁ কঁ।

ক্রিনিটি নিকির কথা শুনে তার দিকে ঘুরে তাকালো, সে এই মাত্র তার কথায় ভালোবাসা শব্দটি ব্যবহার করেছে এবং মনে হয় ঠিকভাবেই ব্যবহার। করেছে। নিকির মা তাকে দায়িত্ব দিয়েছিল ভালোবাসা দিয়ে বড় করতে তার নিজের ভালোবাসা অনুভব করার ক্ষমতা নেই তারপরেও এই ছেলেটিকে সে মনে হয় ভালোবাসার ব্যাপারটি বোঝাতে পেরেছে। ক্রিনিটি দেখল নিকি কালো রঙের পাখিটিকে হাত বাড়িয়ে কাছে টেনে নিয়ে তাকে আদর করতে থাকে।

ক্রিনিটি যখন বাইভার্বালের সামনে বড় বড় দুটি স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র স্ক্রু দিয়ে লাগানো শুরু করেছে তখন নিকি জিজ্ঞেস করল, এগুলো কী ক্রিনিটি।

এগুলো হচ্ছে অস্ত্র।

অস্ত্র দিয়ে কী করে?

অস্ত্র দিয়ে ধ্বংস করে।

নিকি অবাক হয়ে বলল, ধ্বংস করে? কেমন করে ধ্বংস করে?

এর মাঝে বিস্ফোরক রয়েছে। যখন ট্রিগার টানা হয় তখন বিস্ফোরকগুলো ছুটে যায়, যেখানে সেটি আঘাত করে সেখানে বিস্ফোরণ হয়ে সব ধ্বংস হয়ে যায়।

নিকি চোখ বড় বড় করে ক্রিনিটির দিকে তাকিয়ে রইল তারপর ইতস্তত করে বল, কিন্তু ক্রিনিটি–

কিন্তু কী?

তুমি কেন এই বাইভার্বালে অস্ত্র লাগাচ্ছ? তুমি কাকে ধ্বংস করতে চাও?

আমি কাউকে ধ্বংস করতে চাই না। কিন্তু সবসময় একটু সতর্ক থাকতে হয়। এই বনে সব পশুপাখি তোমার বন্ধু। কিন্তু অন্য কোথাও অন্য পশুপাখি তোমার বন্ধু নাও হতে পারে। তারা তোমাকে আক্রমণ করে বসতে পারে—

নিকি মুখ শক্ত করে বলল, না। কখনো কোনো পশুপাখি আমাকে। আক্রমণ করবে না। আমি পশুপাখিকে ভালোবাসি। পশুপাখিও আমাকে ভালোবাসে।

ক্রিনিটি বলল, সেটি সত্যি কথা। কিন্তু আমি কোনো ঝুঁকি নিতে চাই। তুমি হচ্ছ একমাত্র জীবিত মানুষ—তোমার যেন কোনো ক্ষতি না হয় সেটি আমাকে সবসময় লক্ষ রাখতে হয়।

তুমি বেশি বেশি লক্ষ রাখ।

তা ছাড়া আমরা যখন ঘুরতে বের হব তখন আরো অনেক কিছুর সাথে আমাদের দেখা হবে। তাদের থেকেও বিপদ হতে পারে।

নিকি একটু চিন্তিত সুরে বলল, কার সাথে দেখা হতে পারে?

রোবটদের সাথে।

নিকি এবারে শব্দ করে হেসে ফেলল। রোবট বলতে সে শুধু ক্রিনিটিকে বোঝে, ক্রিনিটি বা ক্রিনিটির মতো কারো কাছ থেকে কোনো বিপদ হতে পারে সেটি এতো অবাস্তব একটি বিষয় যে সেটি কল্পনা করে নিকি না হেসে পারল না। নিকি হাসতে হাসতে বলল, ক্রিনিটি, তুমি বলেছ যে রোবটদের তৈরি করা হয়েছে মানুষদের সেবা করার জন্যে। একটি রোবট কখনো কোনো মানুষের ক্ষতি করতে পারে না। চেষ্টা করলেও পারে না।

সেটি সত্যি কথা। কিন্তু—

কিন্তু কী?

একসময় পৃথিবীতে মানুষ ছিল তখন রোবটদের জন্যে এই নিয়ম ছিল। এখন তো পৃথিবীতে মানুষ নাই তাই রোবটদের মাঝে এই নিয়মগুলো আছে। কিনা সেটি তো জানি না। এখন এই পৃথিবীতে আছে শুধু রোবট তারা কী করছে কে জানে।

নিকি খানিকক্ষণ চিন্তা করে বলল, রোবটদের এখন কোনো কাজ নেই। তাই তারা মনে হয় অনেক মজা করছে।

ক্রিনিটি বলল, সব রোবট মজা করতে পারে না।

কেন ক্রিনিটি? কেন সব রোবট মজা করতে পারে না?

মজা করার জন্যে বুদ্ধিমত্তা থাকতে হয়। সব রোবটের বুদ্ধিমত্তা নেই। যাদের মানুষের সমান বুদ্ধিমত্তা তারা মজা করতে পারে।

তুমি কী মজা করতে পার?

না। আমি পারি না। আমি তৃতীয় মাত্রার রোবট। আমার বুদ্ধিমত্তা মানুষ থেকে কম। চতুর্থ মাত্রার রোবটের বুদ্ধিমত্তা মানুষের বুদ্ধিমত্তার সমান।

আর পঞ্চম মাত্রা?

পঞ্চম মাত্রার রোবট পৃথিবীতে তৈরি হয় নি।

কেন তৈরি হয় নি?

পঞ্চম মাত্রার রোবটের বুদ্ধিমত্তা হবে মানুষ থেকে বেশি সেই জন্যে কখনো পঞ্চম মাত্রার রোবট তৈরি করা হয় নি। পৃথিবীর মানুষ নিজের থেকে বুদ্ধিমান রোবট তৈরি করতে চায় নি।

নিকি কিছুক্ষণ ক্রিনিটির দিকে তাকিয়ে থেকে বলল, ক্রিনিটি।

বল।

আমার মনে হয় তুমি যদিও তৃতীয় মাত্রার রোবট কিন্তু তুমি ইচ্ছা করলে মজা করতে পারবে।

ক্রিনিটি তার কপোট্রনে একধরনের চাপ অনুভব করল, সে চাপটুকু কমে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করে বলল, তুমি তাই মনে কর?

হ্যাঁ।

তুমি কী রকম মজা করার কথা ভাবছ?

বনে একটি গাছে একটু হলুদ একটু লাল রঙের ফল পাওয়া যায় সেটি খেতে খুব মজা। তুমি সেটি খেয়ে দেখতে পার।

মানুষ হচ্ছে স্তন্যপায়ী প্রাণী তার শরীরে একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রা থাকতে হয়। সেইজন্যে মানুষকে একটু পরে পরে খেতে হয়। আমি রোবট, আমার শরীরে একটি ব্যাটারি লাগানো আছে, আমাকে খেতে হয় না।

নিকি বলল, আমি জানি। কিন্তু আমার মনে হয় এই ফলটি তবু তোমার খেয়ে দেখা উচিৎ। এই ফলটি খেলে তোমার যেটি মনে হবে সেটি হচ্ছে মজা।

ক্রিনিটি কোনো উত্তর না দিয়ে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র দুটি লাগানো শেষ করে তার লেজার আলোটি পরীক্ষা করল।

নিকি বলল, গাছের উপর থেকে হ্রদের পানিতে লাফ দিলেও অনেক মজা হয়।

ক্রিনিটি বলল, আমার ধাতব শরীর পানিতে ভেসে থাকতে পারে না।

নিকি বলল, ড়ুবে থাকলে আরও বেশি মজা। পানিতে লাল রঙের কাকড়া থাকে। সেগুলো দেখা যায়।

ক্রিনিটি কোনো কথা বলল না। সে তৃতীয় মাত্রার রোবট হয়েও এই মানব শিশুটির সাথে কথা বলতে পারে, কিন্তু অনেক সময়ই আবিষ্কার করে সে কোনো একটি কথার উত্তরে যৌক্তিক কোনো কথা বলতে পারছে না। তখন সে চুপ করে থাকে।

নিকির হাতে বসে থাকা পাখিটি একটু চঞ্চল হয়ে আকাশের দিকে তাকাল তারপর চাপা স্বরে ডাকল, কঁ কঁ।

নিকি উঠে দাঁড়িয়ে বলল, ঠিক আছে চল।

ক্রিনিটি বলল, কোথায় যাচ্ছ?

কিকি আকাশে উড়বে। আমি ওর পিছু পিছু দৌড়াব।

ও।

আমার মনে হয় পাখিরা মানুষ থেকে বেশি মজা করতে পারে।

কথাটি সত্য নয়, শুদ্ধ করে নিকিকে সেটি বলা উচিৎ ছিল, কিন্তু ক্রিনিটি কোনো কিছু বলল না। দীর্ঘদিন নিকির সাথে থেকে ক্রিনিটি কিছু জিনিস করতে শিখেছে। নিকিকে সে প্রায় সময়েই যুক্তিহীন বা অতিরঞ্জিত কথা বলতে দেয়। ক্রিনিটি জানে কারণে-অকারণে মানুষ অযৌক্তিক কথা বলে। মানুষকে অযৌক্তিক কথা বলতে না দিলে কিংবা অযৌক্তিক কাজ করতে না দিলে তারা মনে হয় পূর্ণাঙ্গ মানুষ হতে পারবে না।

কিকির পেছনে পেছনে নিকি ছুটতে থাকে। কিকি উড়তে উড়তে আবার নিকির কাছে ফিরে আসে, নিকি তাকে ধরার চেষ্টা করে কিকি শেষ মুহূর্তে উড়ে সরে যায়, এটি দুজনের মাঝে একরকম খেলা। নিকি বারকয়েক চেষ্টা করে কিকিকে ধরে আনন্দে হি হি করে হাসতে থাকে। ক্রিনিটি তার কাজ থামিয়ে নিকিকে লক্ষ করে, নিকিকে বড় করতে গিয়ে সে মানুষের অনেক কিছুই বুঝতে শিখেছে, কিন্তু হাসির ব্যাপারটি সে এখনো ধরতে পারে নি। মানুষ। কেমন করে হাসে সেই ব্যাপারটি তার কাছে এখনো দুর্বোধ্য। সে যদি তিন মাত্রার রোবট না হয়ে চার মাত্রার রোবট হতো তাহলে সে হয়তো এটি বুঝতে পারত, তিন মাত্রার রোবট হিসেবে সে কখনোই এটি জানতে পারবে না।

নিকি কিকির শরীরে হাত বুলিয়ে বলল, ক্রিনিটি বলেছে তুমি নাকি সামাজিক প্রাণী।

কিকি মাথা নেড়ে বলল, কঁ কঁ।

সামাজিক প্রাণী কথাটার মানে বুঝেছ? যারা দল বেঁধে থাকে তাদেরকে বলে সামাজিক প্রাণী। তুমিও কি দল বেঁধে থাক?

কিকি মাথা নেড়ে বলল, কঁ কঁ।

আমি তোমাকে কখনো দল বেঁধে থাকতে দেখি নি।

কিকি আবার মাথা নেড়ে বলল, কঁ কঁ।

বিকেলবেলা ক্রিনিটি যখন বাইভার্বালটির কাজ শেষ করে ইঞ্জিনটি প্রথমবার চালু করেছে তখন সে একটি অভূতপূর্ব দৃশ্য দেখতে পেল। বনভূমির আকাশ কালো করে হাজার হাজার পাখি কর্কশ শব্দ করে উড়ে বেড়াচ্ছে। বনভূমির সামনে খোলা জায়গাটিতে নিকি দুই হাত উঁচু করে দাঁড়িয়ে আনন্দে চিৎকার করছে আর হাজার হাজার পাখি তাকে ঘিরে ঘুরছে আর ঘুরছে।

 

নিকি ঘুমিয়ে যাবার পর ক্রিনিটি তার শরীরটি একটি পাতলা চাদর দিয়ে ঢেকে দেয়। তারপর তার গলার মাদুলিটি খুলে নিয়ে সে ক্রিস্টাল রিডারের সামনে বসে। মাইক্রোফোনটি টেনে নীচু গলায় দিনলিপিটি রেকর্ড করতে শুরু করে :

পৃথিবী থেকে সব মানুষের মৃত্যু হবার পর মূল তথ্য কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে গেছে, এই এলাকার যোগাযোগটিও বিচ্ছিন্ন। আমি তাই কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারছি না। আমি বিচ্ছিন্ন ভাবে স্মরণ করতে পারি, কোনো একটি মানব শিশু যদি কোনো পশুপাখি দ্বারা লালিত পালিত হয়। তাহলে সে সেই পশুপাখির কিছু বৈশিষ্ট্য অর্জন করতে পারে। নেকড়ে বাঘ। দিয়ে লালিত কিছু শিশু নেকড়ে বাঘের মতো চার পায়ে ছুটতে পারত, বুনো কুকুর দ্বারা লালিত শিশু কুকুরের কিছু বৈশিষ্ট্য অর্জন করেছিল। ওরাংওটাং দিয়ে পালিত শিশু গাছে ওরাংওটাং-এর মতো ছুটে বেড়াতে পারত।

নিকি খুব শৈশব থেকে এই বনের কিছু পশুপাখির সাথে বড় হয়েছে। আমি সতর্ক দৃষ্টি রেখেছি বলে পশু পাখির প্রবৃত্তি তার মাঝে গড়ে ওঠে নি, কিন্তু আমার বিশ্বাস করার যুক্তিসঙ্গত কারণ আছে যে নিকি পশুপাখির সাথে কোনো একটি উপায়ে তথ্য বিনিময় করতে পারে।

আমি আজকে নিকিকে বলেছি কিকি কাক জাতীয় প্রাণী এবং কাক জাতীয় প্রাণীরা দল বেঁধে থাকে। নিকি বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্যে কিকিকে তার প্রমাণ দেখাতে বলেছে। কিকি তার প্রমাণ হিসেবে বনভূমির সকল পাখিকে তার সামনে হাজির করেছে। আমি দেখেছি হাজার হাজার পাখি নিকিকে ঘিরে ঘুরছে। নিকি পাখি বা অন্যান্য প্রাণীর সাথে কিভাবে তথ্য বিনিময় করে সেটি আমি এখনো পুরোপুরি বুঝে উঠতে পারি নি। তৃতীয় মাত্রার রোবট হিসেবে আমার কিছু সীমাবদ্ধতা আছে, আমি হয়তো কখনোই বিষয়টি বুঝতে পারব না।

আমি বাইভার্বালটি প্রস্তুত করেছি। খুব দ্রুত আমি নিকিকে নিয়ে বের হব। মানুষ যখন বেঁচেছিল আমি তখন তাদের মুখে এই বনভূমিটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের প্রশংসা শুনেছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে আমরা যোগাযোগের নেটওয়ার্কের বাইরে। পৃথিবীতে কোনো মানুষ জীবিত আছে কিনা সেটি বের করতে হলে আমাকে সভ্যতার আরো কেন্দ্রবিন্দুতে উপস্থিত হতে হবে।

নিকির দৈনন্দিন কার্যাবলির মাঝে আজকের উল্লেখযোগ্য ঘটনা বাইভার্বালের গঠন প্রকৃতি সম্পর্কে তার প্রথম বাস্তব ধারণা। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে…

ক্রিনিটি তার নিখুঁত ইলেক্ট্রনিক মেমোরি থেকে নিকির সারাদিনের প্রতিটি ঘটনার খুঁটিনাটি ক্রিস্টাল রিডারে লিপিবদ্ধ করতে শুরু করে।

Category: রবো নিশি
পূর্ববর্তী:
« ০২. নিকি জানালাটি খুলে বাইরে তাকাল
পরবর্তী:
০৪. ক্রিনিটি নিকির কোমরে বেল্ট বেঁধে »

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বাংলা লাইব্রেরি : উল্লেখযোগ্য বিভাগসমূহ

লেখক ও রচনা

অনুবাদ সাহিত্য

সেবা প্রকাশনী

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

কোরআন

হাদিস

ত্রিপিটক

মহাভারত

রামায়ণ

পুরাণ

গীতা

বাইবেল

বিবিধ রচনা

বাংলা ওসিআর

Download Bangla PDF

হেলথ

লাইব্রেরি – ফেসবুক – PDF

top↑