2 of 8

ধরা পড়েছে দু’জনে

ধরা পড়েছে দু’জনে

এই নিবন্ধের নামের সঙ্গে ভয়াবহভাবে খাপ খাবে এমন একটি গল্প দিয়ে শুরু করছি। তবে কাহিনীগত এবং ভাবগত কারণে স্বীকার করা উচিত যে এই গল্পটি এ জাতীয় মনোরম বিষয়ের পর্যায়ে পড়ে না।

এ গল্পে সত্যি সত্যি দু’জনের ধরা পড়ার ব্যাপার আছে। বলা বাহুল্য, গল্পটা ফরাসি। অনেক আগেই এটা লেখা উচিত ছিল পরকীয়া প্রেমের কোনও অবাস্তব তথা অবিশ্বাস্য কাহিনীমালায় কবুল করছি, ভুল হয়ে গেছে। তাই শেষ পর্যন্ত ভুলে যাওয়ার আগেই গল্পটা এখানে লিখে রাখছি।

আগেই বলেছি, গল্পটা ফরাসি। অনেকদিন আগের কথা। এক ফরাসি কূটনীতিক এক মদ্যপানের আসরে আমার একান্ত ও পরমারাধ্যা বউদিকে এই গল্পটা বলেছিলেন।

সতীসাধ্বী খুব চটে গিয়েছিলেন গল্পটা শুনে, পরে একটু রেখেঢেকে আমাকে বলেছিলেন, ‘এসব ঘটনার কোনও মানে হয়?’

ঘটনাটা কী?

এক ফরাসি সাহেব, এই সব গল্পে যেমন হয়, কিছুদিনের জন্যে বাড়ির বাইরে গিয়েছিলেন। সেই ফরাসি সাহেবের যিনি ফরাসিনী, সেই মেমসাহেবের যৎকিঞ্চিৎ চরিত্রদোষ ছিল। ফরাসি দেশে এটা খুব খারাপ ব্যাপার বলে গণ্য হয় না।

সে যা হোক, সাহেবের যেদিন বাড়ি ফেরার কথা কোনও কারণে তার দু’দিন আগে তিনি ফিরেছেন। বাড়ি ফিরে সদর দরজায় তিনি কলিংবেল বাজাতে স্ত্রী জানালা দিয়ে দেখেন, সর্বনাশ, স্বামী ফিরে এসেছেন। এদিকে বাড়ির মধ্যে তখন একজন নয়, দু’-দু’জন প্রেমিক। তাড়াতাড়িতে মেমসাহেব একজনকে চালান করলেন শোয়ার ঘরের ছাদে লাগানো বক্সরুমে এবং অপরজনকে লোহার আলমারির পিছনে। তারপর স্বামীকে অভ্যর্থনা করে নিয়ে এলেন।

স্বামীকে যথেষ্ট আদরযত্ন করার পর এই জাতীয় রমণীরা যেমন ছলাকলার আশ্রয় নেন এই মহিলাও তাই নিলেন। প্রেমে গদগদ কণ্ঠে স্বামীর গলা জড়িয়ে ধরে বললেন, ‘ওগো, তুমি যে আমাকে একটা মুক্তোর মালা দেবে বলেছিলে, সেটা কবে দেবে?’

স্বামী বেচারা ছিলেন ধর্মপ্রাণা, তা ছাড়া সে সময় তাঁর একটু টাকার টানাটানি চলছে, তাই তিনি বললেন, ‘আমি আর কী দিতে পারি তোমাকে, যিনি উপরে রয়েছেন তাঁকে বলো।’

ছাদের ওপরের বক্সরুমে যে প্রেমিকপ্রবর এতক্ষণ লুকিয়ে ছিল, একথা শুনে সে দেখল মহাবিপদ, ধরা যখন পড়েই গেছি আমি একা খেসারত দেব কেন? সে বক্সরুম থেকে গলা বাড়িয়ে বলল, ‘পুরো টাকাটা আমি দেব কেন? আমি আদ্ধেক দেব আর বাকি আদ্ধেক দেবে আলমারির পেছনে যে রয়েছে সে।’

এই গল্পটি আমাকে যিনি শুনিয়েছিলেন আমার সেই প্রাণের বউদি সিঁথেয় সিঁদুর আর অক্ষয় সাদা শাঁখা হাতে পূর্ণ যৌবনে বিদায় নিয়েছেন। রঙ্গরসিকতার গল্পে তাঁকে টেনে নিয়ে এসে মহাপাপ হল। তবে এও জানি, তিনি সব বুঝতেন, সব জানতেন, এবং সব ক্ষমা করবেন।

অতঃপর আরও একটি ধর্মীয় গল্প বলি। দুঃখের বিষয় এ গল্পটাও বিদেশি।

দুটি ছেলেমেয়ে প্রেমে পড়েছে। মেয়েটি ক্যাথলিক, ছেলেটি ইহুদি।

বিয়ের প্রশ্ন উঠতেই গোলমাল বাধল। ছেলেটিও ধর্ম ছাড়বে না, আর মেয়ের মা-বাবা গোঁড়া ক্যাথলিক। তাঁরা ভাবতেই পারেন না যে তাঁদের মেয়ে সম্প্রদায়ের বাইরে বিয়ে করতে পারে। মেয়েটি কান্নাকাটি করায় মেয়ের মা-বাবা গেলেন চার্চের বিশপের কাছে পরামর্শ নিতে। বিশপ বললেন, ‘ছেলেটিকে ভাল করে আমাদের ধর্মের কথা বোঝেন। মা মেরির কথা বলুন, পোপের কথা বলুন। ক্যাথলিক ধর্ম সম্পর্কে ছেলেটিকে আগ্রহী করে তুলুন।’

তাই করা হল, মেয়েটি আর তার বাবা-মা সবাই মিলে যখনই সুযোগ পায় ইহুদি যুবকটিকে গির্জা ও পোপের মাহাত্ম্য, মা মেরির উপাখ্যান এই সব বলে। তারপরে যা হল, সে হল ভয়াবহ। একদিন মেয়ের মা-বাবা দেখলেন তাঁদের কন্যা অঝোর নয়নে কাঁদছে। তাঁরা অবাক হয়ে জানতে চাইলেন, ‘কী হয়েছে?’ মেয়েটি কান্না থামিয়ে চোখ মুছে বলল, ‘ও জন্মের মতো সংসার ছেড়ে চলে গেল। সব শুনে ও আমাদের ধর্মের এত ভক্ত হয়েছে যে, ক্যাথলিক সন্ন্যাসী হয়ে গেল।’

অতঃপর একটি দিশি উপাখ্যান।

রাম ও শ্যাম রেস্টুরেন্টে মুখোমুখি বসে রয়েছে, দু’জনেরই মুখ খুব গম্ভীর। রাম শ্যামকে প্রশ্ন করল, ‘আচ্ছা শ্যাম, তুমি কি এমন কোনও মেয়েকে পছন্দ করবে যার বয়েস বেয়াল্লিশ, যার গায়ের রং কালো, যে বেঢপ মোটা।’

বর্ণনা শুনে শ্যাম আঁতকিয়ে উঠল, ‘এসব কী বলছ রাম? তুমি কি আমার টেস্ট জানো না?’তখন রাম বলল, ‘তারপরে ধরো, মেয়েটির অর্ধেক চুল পেকে গেছে, দুটো দাঁত পড়েছে, বাকি দাঁতগুলোয় পানের ছোপ।’

অধিকতর আঁতকিয়ে উঠে শ্যাম বলল, ‘এসব কী যা তা বলছ। তোমার কি মাথা খারাপ?’ রাম শান্তভাবে বলল, ‘আমার নয় তোমারই মাথা খারাপ।’ শ্যাম ঘাবড়িয়ে গিয়ে বলল, ‘মানে?’ রাম বলল, ‘মানে বুঝতে পারছ না? মেয়েটার বর্ণনা শুনে কিছু বুঝতে পারলে না?’

শ্যাম মাথা চুলকোতে লাগল, তখন রাম বলল, ‘আচ্ছা বলো তো, আমার মোটা, কালো, বুড়ি বউয়ের সঙ্গে কী করে তুমি প্রেম চালাচ্ছ? তোমার কি কোনও রুচি নেই?’

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *