• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • নতুন সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • পুরানো সব ক্যাটাগরি
  • My Account →
  • নতুন সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • পুরানো সব ক্যাটাগরি
  • My Account →
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

১৩. ক্রিটিনাদের গ্রাম

লাইব্রেরি » মুহম্মদ জাফর ইকবাল » সায়েন্স ফিকশন সমগ্র » রুহান রুহান » ১৩. ক্রিটিনাদের গ্রাম

উঁচু জায়গাটা থেকে ক্রিটিনাদের গ্রামটা স্পষ্ট দেখা যায়। দিনেরবেলা হলে আরও স্পষ্ট দেখা যেত। এখন রাত, আকাশে পূর্ণিমার চাঁদ, চাদের আলোতে সবকিছুই একটু অন্যরকম দেখায়। আবছা এবং রহস্যময়। গ্রামে ছোট ছোট বাসা, বাসার সামনে একটু খোলা জায়গা, খোলা জায়গা ঘিরে গাছ-গাছালি বাগান। এখন অনেক রাত বলে বাসাগুলো অন্ধকার থাকার কথা কিন্তু অনেক বাসাতেই আলো জ্বলছে। রিদি, রুহান আর প্রায় তিনশ সশস্ত্র মানুষকে আশ্রয় দেবার জন্যে গ্রামের মানুষেরা কাজকর্ম করছিল। রিদি রুহানকে ধরে নিয়ে আসার পর এখন গ্রামের মানুষদের ভেতর ভয়, আশঙ্কা আর উত্তেজনা। এই জায়গাটা থেকে সেই উত্তেজনাটুকু দেখা যায়। মানুষজন ভীত বিহ্বল হয়ে ছোটাছুটি করছে। কাছে থাকলে হয়তো তাদের ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্নার শব্দও শোনা যেত।

রিদি আর রুহানকে দুটি ধাতব চেয়ারে বেঁধে বসানো হয়েছে, তৃতীয় চেয়ারটিতে বসেছে ক্ৰানা। ক্রানাকে বেঁধে না রাখলেও হতো কিন্তু তবু তাকে চেয়ারের সাথে বেঁধে রাখা হয়েছে যেন হঠাৎ করে উঠে না পড়ে। সে বিড়বিড় করে একটানা নিজের সাথে কথা বলে যাচ্ছে। হঠাৎ করে শুনলে মনে হয় অর্থহীন কিন্তু মন দিয়ে শুনলে একটা অর্থ খুঁজে পাওয়া যায়। এখানে যা ঘটছে তার পুরো ব্যাপারটা নিয়ে জানার ভেতরে একটা বিস্ময়, কী ঘটছে কেন ঘটছে। সেটা নিয়ে তার ভেতরে অসহায় এক ধরনের প্রশ্ন।

ক্ৰিভনের জন্যেও একটা চেয়ার রাখা হয়েছে। তার চেয়ারটি নরম এবং আরামদায়ক। চেয়ারটিতে সে বসে নি, সেখানে তার একটা পা তুলে সে ক্রিটিনাদের গ্রামের দিকে তাকিয়ে আছে। জোছনার আলোতে গ্রামটিকে মনে হচ্ছে রহস্যময় এবং অলৌকিক। ক্ৰিভন একটা নিঃশ্বাস ফেলে বলল, রিদি এবং রুহান, তোমরা দুজন মানুষ আমার অনেক ক্ষতি করেছ। শুধু আমার না, আরো অনেকের।

রিদি কিংবা রুহান কেউ কোনো কথা বলল না। ক্ৰিভন বলল, তোমরা কেন এসব করছ আমি জানি না। আমি চিন্তা করে তার কোনো অর্থ খুঁজে পাচ্ছি না। অনেক চিন্তা করে শেষ পর্যন্ত একটা অর্থ খুঁজে পেয়েছি, সেটা কী জান? সেটা হচ্ছে নির্বুদ্ধিতা। চরম নির্বুদ্ধিতা। এই পৃথিবীটা নির্বোধ মানুষের জন্যে না–এই পৃথিবীটা হচ্ছে বুদ্ধিমান মানুষের জন্যে। তোমাদের এই পৃথিবীতে থাকার কোনো অধিকার নেই।

ক্রিভন চেয়ার থেকে পা নামিয়ে দুই পা হেঁটে সামনে গিয়ে একটা নিঃশ্বাস ফেলে বলল, কিন্তু নির্বুদ্ধিতা হোক আর যাই হোক, তোমরা আমার অনেক বড় ক্ষতি করেছ। সেই ক্ষতিটা আমাকে পুষিয়ে নিতে হবে। যেভাবে হোক।

সেটা করার জন্যে আমাকে কী করতে হবে জান? প্রথমে সবার কাছে প্রমাণ করতে হবে যে যারা তোমাদের সাথে থাকে তারা হচ্ছে নির্বোধ! তারা এত নির্বোধ যে তারা পোকা মাকড়ের মতো মারা পড়ে। ঘটনাটা ঘটানোর জন্যে আমি নিজে এই গণ্ডগ্রামে চলে এসেছি। এখানে বসে থেকে সামনের যে গ্রামটা আছে সেটাকে পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করে দেব। কিছুক্ষণের মধ্যেই এই গ্রামে একটা মানুষ দূরে থাকুক একটা টিকটিকিও বেঁচে থাকবে না! কী আনন্দ, তাই না?

ক্রিভন কোনো কথা না বলে কিছুক্ষণ গ্রামটার দিকে তাকিয়ে রইল তারপর মাথা ঘুরিয়ে রিদি আর রুহানের দিকে তাকিয়ে বলল, কিন্তু শুধু গ্রামবাসীদের পোকামাকড় ব্যাক্টেরিয়া ভাইরাসের মতো মারলে তো হবে না তোমাদের দুইজনকেও একটা শাস্তি দিতে হবে। সেটি হতে হবে এমন যন্ত্রণার একটি শাস্তি যেটা তোমাদের শরীরের প্রত্যেকটা কোষ, তোমাদের মস্তিষ্কের প্রত্যেক নিউরন সেল, তার প্রত্যেকটা সিনান্স কানেকশান যেন মনে রাখে। যন্ত্রণাটা শুধু তোমাদের দিলে তো হবে না সেটা সবাইকে দেখাতেও হবে। বিশাল একটা স্টেডিয়ামের মাঝখানে তোমাদের শাস্তিটা দেব, কয়েক লাখ মানুষ স্টেডিয়ামে টিকেট কেটে সেটা দেখতে আসবে–এটা হচ্ছে আমার পরিকল্পনা। এই এলাকার পুরো মানুষ জানবে ক্রিভনের সাথে কেউ যদি লাগতে আসে তা কোনো মুক্তি নেই। ক্ৰিভনের চোখ দুটি জ্বলে ওঠে, সে হিসহিস করে বল, দরকার হলে তাদের আমি নরক থেকে ধরে আনব, ধরে এনে শাস্তি দেব।

ক্ৰিভন নিঃশব্দে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে বলল, তোমাদের শুধু শারীরিক যন্ত্রণার একটা শাস্তি দেব না, তোমাদের মানসিক একটা যন্ত্রণারও ব্যবস্থা করা দরকার। সে জন্যে তোমাদের এখানে এনেছি, চেয়ারে বসতে দিয়েছি, বেঁধে রেখেছি। বেঁধে না রাখলেও হতো–পালিয়ে তোমরা কোথায় যাবে? কেন এত যত্ন করে তোমাদের এখানে বসিয়েছি জান? তোমরা যেন পুরো ব্যাপারটা দেখতে পার! আমরা এক্ষুনি যে হত্যাকাণ্ড শুরু করব সেটা তোমরা নিজের চোখে দেখবে! তোমাদের নির্বুদ্ধিতার জন্যে এই মানুষগুলো একজন একজন করে মারা যাবে! তোমরা সেটা দেখবে। শরীরে আগুন নিয়ে ছোট ছোট শিশুরা চিৎকার করে ছোটাছুটি করবে তোমরা সেটা দেখবে! দেখে ভাববে এর জন্যে আমরা দায়ী! আমাদের নির্বুদ্ধিতা দায়ী। ক্ৰিভন ঘুরে তাকিয়ে বলল, বুঝেছ?

রিদি কিংবা রুহান কোনো কথা বলল না। তারা পুরো ব্যাপারটা ঠিক করে চিন্তাও করতে পারছিল না, মনে হচ্ছিল পুরো বিষয়টা বুঝি একটা দুঃস্বপ্ন, ভয়ঙ্কর দুঃস্বপ্ন।

ক্ৰিভন এসে তার নরম চেয়ারটিতে বসে পিছনে অস্ত্র হাতে দাঁড়িয়ে থাকা কোনো একজন মানুষকে বলল, স্টিমুলেশন দেবার কাজ শুরু করো।

কয়েকজন ছোটাছুটি করে একটা ছোট যন্ত্র নিয়ে আসে। ক্রানার চেয়ারের পিছনে যন্ত্রটা রেখে তারা ক্রানাকে চেপে ধরল। ক্ৰানা চিৎকার করে প্রতিবাদ করে, ভয়ে আতঙ্কে থরথর করে কাঁপতে থাকে। তার মাঝে একজন একটা ক্যাবল টেনে এনে একটা ধাতব কানেক্টর তার মাথার মাঝে ঢুকিয়ে দেয়। প্রচণ্ড যন্ত্রণায় চিৎকার করতে করতে ক্ৰানা অচেতন হয়ে যায়। ক্রিভন সেদিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে মাথা নেড়ে বলল, সক্রেটিস খুব কাজের জিনিস, তবে ব্যবহার করা এত সোজা নয়!

কাউকে উদ্দেশ্য করে কথাটি বলা হয় নি তাই কেউ এই প্রশ্নের উত্তর দিল। ক্রিভন কিছুক্ষণ ক্ৰানার দিকে তাকিয়ে থেকে একটা নিঃশ্বাস ফেলে বলল, জ্ঞান ফিরিয়ে আন তাড়াতাড়ি, আমাদের হাতে বেশি সময় নেই।

কয়েকজন ক্রানাকে ঘিরে দাঁড়ায়, তার মুখে পানির ঝাঁপটা দেয়, শরীরে ধাক্কা দিয়ে জাগানোর চেষ্টা করতে থাকে। কিছুক্ষণের মধ্যে ক্রানা চোখ খুলে তাকায়। ফিসফিস করে বলে, আমি কোথায়?

ক্রিভন এগিয়ে গিয়ে বলল, তুমি ঠিক জায়গাতেই আছ। এখন সুস্থ বোধ করছ তো?

ক্ৰানা একটা ছোট নিঃশ্বাস ফেলে বলল, সত্যি কথা বলতে কী আমার কোনো বোধ নেই। আমাকে কী জন্যে ডেকেছ বল।

একটু আগেই জানা কথা বলছিল পুরোপুরি অপ্রকৃতস্থ একজন মানুষের মতো মস্তিষ্কে স্টিমুলেশন দেবার সাথে সাথে সে কথা বলছে পুরোপুরি স্বাভাবিক মানুষের মতো!

ক্রিভন ক্রানার সামনে দাঁড়িয়ে বলল, প্রথমে তোমাকে একটা ধন্যবাদ দেয়া দরকার। রিদি আর রুহান নামের দুই নির্বোধকে ধরে আনার জন্যে যে পরিকল্পনাটা তুমি করে দিয়েছিলে, সেটা চমৎকারভাবে কাজ করেছে।

শুনে খুব সুখি হলাম।

বুকের মাঝে হাইব্রিড বিস্ফোরক বেঁধে কাকে পাঠিয়েছিলাম তুমি কী জান?

না, আমি জানি না। আমামর জানার কথা নয়।

আমরা তোমাকে পাঠিয়েছিলাম।

ক্ৰানা ফিসফিস করে বলল, আমি বলে কেউ নেই। আমি ক্ৰানা নামে এই মেয়েটির মস্তিষ্কের একটা অবস্থা। আমার নিজের কোনো অস্তিত্ব নেই। তোমরা ক্ৰানাকে পাঠিয়েছিলে, আমাকে নয়।

একই কথা।

ক্রানা জোর দিয়ে বলল, না এক কথা নয়।

যাই হোক আমি সেটা নিয়ে এখন তোমার সাথে তর্ক করতে চাই না। আমার এখন তোমার সাহায্যের প্রয়োজন।

ক্ৰানা বলল, বলো, আমাকে কী করতে হবে।

সামনের এই গ্রামটি দেখছ? হ্যাঁ, দেখছি।

আমি এই গ্রামের প্রত্যেকটা জীবিত প্রাণীকে হত্যা করতে চাই।

ক্রানার কণ্ঠস্বর এক মুহূর্তের জন্যে থমকে যায়, এক মুহূর্ত দ্বিধা করে বলল, কেন?

আমি এই গ্রামের মানুষকে একটা শাস্তি দিতে চাই। সেই শাস্তির খবরটি সব জায়গায় ছড়িয়ে দিয়ে আমার ক্ষমতাটি সম্পর্কে সবাইকে ধারণা দিতে চাই।

ক্রানা বলল, প্রাণী হত্যা করার জন্যে সবচেয়ে কার্যকরী বিষ নিশুনিয়া এখান থেকে দুটি নিশুনিয়া বোমা একটা ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে গ্রামের মাঝামাঝি ছুড়ে দাও, ত্রিশ সেকেন্ডের মধ্যে সবাই মারা যাবে। যন্ত্রণাহীন চমৎকার একটি মৃত্যু!

না, না, না— ক্ৰিভন মাথা নেড়ে বলল, আমি যন্ত্রণাহীন মৃত্যু চাই না। আমি ভয়ঙ্কর যন্ত্রণা দিয়ে হত্যা করতে চাই। যন্ত্রণার প্রত্যেকটা মুহূর্ত ভিডিওতে ধরে রাখতে চাই। সেটা প্রচার করতে চাই।

তাহলে তোমার জন্যে সবচেয়ে উপযোগী বোমা হবে ক্রাটুশকা বোমা। প্রতি এক বর্গ কিলোমিটারের জন্যে এবটা বোমাই যথেষ্ঠ। এই বোমা থেকে যে গ্যাস বের হয় সেটা বাতাসের অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করে প্রত্যেকটা প্রাণীর শরীরের প্রতি সেন্টিমিটার পুড়িয়ে দেবে। দেখতে দেখতে ফোঁসকা পড়ে দগদগে ঘা হয়ে যাবে। চোখের কর্ণিয়া পুড়ে অন্ধ হয়ে যাবে, প্রচণ্ড যন্ত্রণায়। চিৎকার করতে থাকবে। নিঃশ্বাসের সাথে ফুসফুসে এই গ্যাস যাবার পর ফুসফুস ঝাঝরা হয়ে যাবে, নিঃশ্বাসের সাথে সাথে ফুসফুসের টুকরোগুলো বের হয়ে আসবে। বলা যেতে পারে তিন থেকে চার ঘণ্টার ভেতরে প্রত্যেকটা প্রাণী নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে মারা যাবে। কম সময়ের ভেতরে সবাইকে হত্যা করার জন্যে এটাই সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি। যদি আরও বেশি সময় নিয়ে কাজটা করতে চাও।

ক্রিভন বাধা দিয়ে বলল, না, আমার হাতে বেশি সময় নেই। আমি সময় নিয়ে করতে পারব না।

ক্ৰানা অত্যন্ত শান্ত গলায় বলল, তাহলে তোমার জন্যে কাটুশকা বোমাটিই ভালো। এর দুটি গ্রেড আছে তুমি দ্বিতীয় গ্রেডটি গ্রহণ কর। তোমার সংরক্ষণে সেটা আছে। এর ওজন তেইশ কেজি। এটা নিক্ষেপ করার জন্যে তোমার একটা ক্ষেপণাস্ত্র দরকার। জেনারেশন থ্রী, মাকাও মডেলটি ভালো। নিক্ষেপ করার সময় মাটির সাথে তিরিশ ডিগ্রী কোণ করতে হবে।

চমৎকার! ক্ৰিভন মাথা ঘুরিয়ে অস্ত্র হাতে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষগুলোকে লক্ষ্য করে বলল, তোমরা ব্যবস্থা কর।

মানুষগুলো সাথে সাথে জেনারেশনে থ্রী মাকাও মডেল আর দ্বিতীয় গ্রেডের ক্রাটুশকা বোমা আনতে চলে গেল। ক্ৰানা চোখের কোণা দিয়ে তাদেরকে চলে যেতে দেখল, তারপর চেয়ারে মাথা হেলান দিয়ে বলল, অসম্ভব যন্ত্রণা দিয়ে কীভাবে পুরো গ্রামের সবাইকে হত্যা করতে হবে আমি সেটা বলে দিয়েছি। আমি কী এখন বিদায় নিতে পারি? তোমরা নিশ্চয়ই জান আমার মস্তিষ্ককে এখন বাড়তি ক্ষমতায় কাজ করতে হচ্ছে, সেটি কষ্ট। অনেক কষ্ট।

ক্ৰিভন শব্দ করে হেসে বলল, তোমাকে আমাদের অনেক ইউনিট দিয়ে কিনতে হয়েছে। সে জন্যে একটু কষ্ট তোমাকে করতেই হবে। পুরো ঘটনাটা শেষ না হওয়া পর্যন্ত তোমার সাহায্য দরকার। তার কারণ—

কী কারণ?

আমার পুরো সেনা বাহিনী আসছে। সবাইকে হত্যা করার পর আমার পুরো সেনাবাহিনীকে এখানে পাঠাব, অনেক অস্ত্র আছে সেগুলো উদ্ধার করতে হবে। তা ছাড়া

তা ছাড়া কী?

রিদি আর রুহানকে ধরে আনা হয়েছে। তাদেরকে শাস্তি দেয়ার একটি ব্যাপার আছে। সেটা নিয়েও তোমার সাথে কথা বলতে হবে।

ঠিক আছে। কিন্তু তাড়াতাড়ি কর। আমার খুব কষ্ট হচ্ছে। অসম্ভব কষ্ট। আমার মস্তিষ্কে যেভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে একজন মানুষের মস্তিষ্ক কখনো সেভাবে ব্যবহার করা হয় না। কখনো সেভাবে ব্যবহার করার কথা না।

ক্ৰিভন আবার হেসে বলল, তোমাকে আমি অনেকগুলো ইউনিট দিয়ে কিনেছি। তুমি একটু কষ্ট সহ্য কর।

রিদি আর রুহান নিঃশব্দে বসে আছে। কাছাকাছি কোনো একটা কনটেনার থেকে জেনারেশান থ্রী মাকাও মডেল, দ্বিতীয় গ্রেডের ক্রাটুশকা বোমা এবং আরও কিছু যন্ত্রপাতি আনা হতে থাকল। মানুষজন ব্যস্ত হয়ে সেগুলো সাজিয়ে রাখতে থাকে। রিদি আর রুহান নিঃশব্দে বসে দূরে ক্রিটিনার গ্রামটির দিকে তাকিয়ে থাকে।

রুহান অনেকক্ষণ থেকেই গ্রামটির দিকে কী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। সেখানে একটা কিছু ঘটার জন্যে সে অপেক্ষা করছে। ঘুমানোর আগে কয়লা দিয়ে সে তার ঘরের দেয়ালে একটা নির্দেশ লিখে রেখেছিল, ক্রিটিনা কী সেই নির্দেশটা পড়তে পেরেছিল? পড়ার পর সেটাকে কী সে গুরুত্ব দিয়েছিল?

উত্তর থেকে একটা শীতল বাতাস বয়ে আসে। রুহান নিজের ভেতরে একটা কাঁপুনী অনুভব করে এবং ঠিক তখন তার মনে হলো গ্রামের ভেতর এক সাথে অনেকগুলো আলো জ্বলে উঠল। ভালো করে তাকালে বোঝা যায় সেগুলো। মশালের আগুন। রুহান নিঃশ্বাস বন্ধ করে তাকিয়ে থাকে আর দেখতে পায় আলোগুলো গ্রামের মাঝে ছড়িয়ে পড়ছে। সারা গ্রামের ভেতর নতুন নতুন মশাল জ্বলে ওঠে আর সেগুলো গ্রামের একমাথা থেকে অন্য মাথায় সরে যেতে শুরু করেছে। দেখতে দেখতে সেগুলো সারিবদ্ধ হয়ে যায় এবং পুরো গ্রামটি জুড়ে মশালের আলো দিয়ে বিশাল একটা ক্রস আঁকা হয়ে যায়।

রুহানের সাথে সাথে অন্য সবাই গ্রামের দিকে তাকাল। ক্রিভন একটু অবাক হয়ে বলল, কী করছে গ্রামের মানুষেরা?

কেউ তার প্রশ্নের উত্তর দিল না, শুধু ক্ৰানা হঠাৎ করে সোজা হয়ে বসে চোখ বড় বড় করে ক্রসটির দিকে তাকিয়ে রইল। রুহান আড়চোখে তাকিয়ে দেখল হঠাৎ করে ক্রানার সারা মুখে আনন্দের একটা আভা ছড়িয়ে পড়ছে।

ক্রিভন এগিয়ে এসে বলল, তুমি কী বলতে পারবে এটা কী?

হ্যাঁ। ক্ৰানা মাথা নাড়ল, বলতে পারব।

এটা কী?

এটা একটা ক্রস।

ক্রিভন অধৈর্য হয়ে বলল, সেটা তো দেখতেই পাচ্ছি। কিন্তু কেন ক্রস?

গ্রামের মানুষ একটা তথ্য পাঠানোর চেষ্টা করছে। খুব জরুরি একটা তথ্য।

সেটা কী তথ্য? কাকে পাঠাচ্ছে।

ক্রানা মাথা নেড়ে বলল, আমি বোঝার চেষ্টা করছি। বোঝা মাত্রই তোমাকে জানাব। আমার মনে হয় কিছুক্ষণের মাঝেই এটা আমি বুঝে যাব।

ঠিক আছে আমরা ততক্ষণে বাকি কাজ সেরে ফেলি। মানুষগুলো কিছুক্ষণের মধ্যেই ক্ষেপণাস্ত্র প্রস্তুত করে কাটুশকা বোমাটি ভেতরে প্রবেশ করায়। তারপর পিছনে সরে দাঁড়ায়। ক্ৰিভন জিজ্ঞেস করে, সবাই প্রস্তুত।

মানুষগুলো মাথা নেড়ে বলল, হ্যাঁ। প্রস্তুত।

ক্রিভন সুইচ টেপার জন্যে একটু এগিয়ে যেতেই ক্রানা বলল, একটু দাঁড়াও।

কেন?

তুমি কী বলেছ তোমার সেনাবাহিনী এই এলাকায় আসছে?

হ্যাঁ।

তাদের কী আসতেই হবে?

হ্যাঁ।

তাহলে আগে তাদের একটা খবর পাঠাও।

ক্ৰিভন বলল, কী খবর পাঠাব?

তাদের অস্ত্রের সিকিউরিটি মডিউলে একটা সংখ্যা প্রবেশ করাতে হবে। তাতে বিষাক্ত গ্যাসের উপস্থিতির জন্যে এলার্মটি কার্যকর হবে। তাদের নিরাপত্তার জন্যে এটা খুব জরুরি।

ক্ৰিভন অবাক হয়ে বলল, আমি কখনো শুনি নি, অস্ত্রের ভেতরে বিষাক্ত গ্যাসের এলার্ম আছে।

ক্রানা হাসির মতো একটা শব্দ করে বলল, তোমরা যদি সবকিছু জানতে তাহলে নিশ্চয়ই অনেক ইউনিট খরচ করে আমাকে কিনে আনতে না।

ক্রিভন মাথা নাড়ল। সেটা সত্যি। ঠিক আছে তুমি কোডটি বল, আমি আমার সেনাবাহিনীর কাছে কোডটা পাঠিয়ে দিই।

ক্ৰানা একটা জটিল কোড উচ্চারণ করে অস্ত্রধারী একজন মানুষ ক্রিস্টাল রিডারে সেটা তুলে নিয়ে সেনাবাহিনীর কাছে পাঠানোর জন্যে চলে যায়।

ক্রিভন বলল, আমরা কী আমাদের অস্ত্রেও কোডটা ঢোকাব?

ক্ৰানা বলল, ঢোকাতে পার। তোমাদেরও একটা নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকবে।

অস্ত্রের ভেতর কোডটা ঢুকিয়ে ক্রিভন আবার তার ক্ষেপণাস্ত্রের কাছে ফিরে এলো, ক্ষেপণাস্ত্রের সুইচ স্পর্শ করার ঠিক আগের মুহূর্তে ক্ৰানা বলল, দাঁড়াও।

কী হলো।

বাতাসের দিক পরিবর্তন করতে শুরু করেছে। বিষাক্ত গ্যাস এদিকে আসতে পারে, তোমাদের একটু নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা দরকার।

সেটি কীভাবে করব?

সবাই একটা প্রতিষেধক ক্যাপসুল তোমাদের জিভের নিচে রেখে দাও।

প্ৰতিষেধক ক্যাপসুল কোনটি?

তোমাদের চিকিৎসক নিশ্চয়ই জানে। তাকে জিজ্ঞেস কর।

ক্ৰিভন একটু অধৈর্য হয়ে বলল, আমরা সাথে কোনো চিকিৎসক আনি নি। তুমি কী জান না?

জানি। অবশ্যই জানি। কিন্তু আমি চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ নই। আমি যুদ্ধ বিশেষজ্ঞ। ক্ৰানা শান্ত গলায় বলল, আমি চিকিৎসা সংক্রান্ত উপদেশ দিতে চাই না। কারণ তুমি আমাকে চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ হিসেবে কিনে আননি। যুদ্ধ বিশেষজ্ঞ হিসেবে কিনেছ।

ক্রিভন অধৈর্য হয়ে হাত ছুড়ে বলল, তুমি সময় নষ্ট করো না। বলে দাও কোনটি প্রতিষেধক ক্যাপসুল।

ক্ৰানা প্রতিষেধক ক্যাপসুলের নামটি বলে দিতেই একজন সেগুলো আনতে ছুটে চলে গেল। ক্রানা বলল, যতক্ষণ সেগুলো আনা না হচ্ছে তোমরা ততক্ষণ অন্য একটা কাজ করতে পার।

কী কাজ?

বাতাসের দিক পরিবর্তন করছে, আমি বুঝতে পারছি, উত্তর দিক থেকে শুষ্ক বাতাস আসছে। শুকনো বাতাস ক্রাটুশকা অক্সিডাইজড হতে দেরি হয়।

তার মানে কী?

তার মানে কাটুশকা বোমার কার্যকারিতা শতকরা ত্রিশ ভাগ পর্যন্ত কম হয়ে যেত পারে।

কিভন একটু বিরক্ত হয়ে বলল, শেষ মুহূর্তে এটা বলছ কেন?

ক্ৰানা শান্ত গলায় বলল, আমি এটা শেষ মুহূর্তে বলছি কারণ আমি এটা শেষ মুহূর্তে জানতে পেরেছি। কিন্তু সেটি নিয়ে তোমার ব্যস্ত হওয়ার প্রয়োজন নেই।

ক্ৰিভন, আমি শতকরা ত্রিশ ভাগ অকার্যকর একটি বোমা কেন পাঠাব?

ক্রানা বলল, এগুলো রাসায়নিক বোমা। কেউ শতকরা একশ ভাগ কার্যকারিতা গ্যারান্টি দেয় না। তবে যেহেতু সমস্যাটি সহজ এর সমাধানটিও সহজ।

সমাধানটি কী?

ক্ৰানা বলল, যেহেতু বাতাস শুষ্ক, জলীয় বাষ্প নেই, কাটুশকা বোমার উপাদানে একটু পানি দাও। এগুলো রাসায়নিক বোমা, শেষ মুহূর্তে এখানে প্রয়োজনীয় রাসায়নিক পদার্থ দেয়া যায়।

ক্ৰিভন বলল, তুমি সেটা আগে বলছ না কেন?

আমি ঠিক সময়েই বলেছি, তুমি অধৈর্য হয়ে আছ বলে তোমার কাছে মনে। হচ্ছে আমি দেরি করে বলেছি। কাটুশকা বোমাটি বের করে আনো, ডানদিকৈর স্কুটা ঢিলে করে সেখানে পাঁচশ সিসি পানি ঢেলে দাও।

ক্ৰিভন অন্য কাউকে দায়িত্বটি না দিয়ে নিজেই কাটুশকা শেলটি বের করে আনে। ডানদিকের স্কুটা খুলে সেখানে একটু পানি ঢেলে দিয়ে আবার স্কুটা লাগিয়ে দেয়। শেলটা ক্ষেপণাস্ত্রে ঢুকিয়ে কানার দিকে তাকাল, আর কিছু?

না।

আমি সুইচ টিপতে পারি?

প্রতিষেধক ক্যাপসুলটা আসুক।

কাজেই ক্ৰিভনকে আরো কয়েক মিনিট অপেক্ষা করতে হলো। সবাই প্রতিষেধক ক্যাপসুলটা জিভের নিচে দিয়ে ক্রিভন ক্ষেপণাস্ত্রটির কাছে এগিয়ে। যায়। ডানদিকে একটা লিভারকে টেনে ধরে সে সুইচটা চেপে ধরে। সাথে সাথে ভেতরে একটা যান্ত্রিক শব্দ হয়ে এলার্ম বেজে ওঠে। ক্রিভন পিছনে সরে আসে এবং হঠাৎ করে ঝাঁকুনি দিয়ে ক্ষেপণাস্ত্রটি কেঁপে ওঠে এবং একটা প্রচণ্ড বিস্ফোরণের সাথে সাথে কাটুশকার শেলটি উড়ে গেল।

ক্ৰিভনের মুখে একটা বিচিত্র হাসি ফুটে ওঠে। সে রিদি আর রুহানের দিকে তাকিয়ে বলল, নির্বুদ্ধিতার পরিণাম কী হতে পারে, তুমি নিজের চোখে দেখ।

রুহান ফিসফিস করে বলল, পৃথিবীর ইতিহাসে এর আগেও অনেকবার অনেক নৃশংসতা হয়েছে। কিন্তু কোনো নৃশংস মানুষ কিন্তু কখনো বেঁচে থাকে নি। তুমিও বেঁচে থাকবে না ক্ৰিভন।

ক্রিভন শব্দ করে হেসে বলল, তুমি নিজের চোখে দেখ কে বেঁচে আছে, আর কে বেঁচে নেই!

দূর গ্রাম থেকে একটা কোলাহলের মত শব্দ ভেসে আসে, ক্রিভন সেদিকে উৎসুকভাবে তাকিয়ে ক্রানাকে জিজ্ঞেস করল, শেলটি কী ফেটেছে।

ক্রানা মাথা নেড়ে বলল, নিশ্চয়ই ফেটেছে।

বিষক্রিয়া শুরু হয়েছে?

ক্রানা প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে বলল, ক্ৰিভন, তুমি একটু আগে আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল, আলোর মশাল দিয়ে গ্রামে একটা ক্রস তৈরি করার অর্থ কী?

হ্যাঁ। সেটা কী তুমি বুঝতে পেরেছ?

পেরেছি।

ক্রিভন ভুরু কুঁচকে জানতে চাইল, সেটা কী?

মানুষ যখন কাউকে ভালোবেসে জড়িয়ে ধরে, তখন হাত দুটো অনেক সময় একটার উপর আরেকটা চলে আসে, নিজের অজান্তে দুটি হাত দিয়ে তৈরি হয় একটা ক্রস।

ক্ৰিভন বলল, তুমি কি বলছ বুঝতে পারছি না।

আমি বলছি, এই ক্রসের অর্থ ভালোবাসা।

ভালোবাসা?

হ্যাঁ, ভালোবাসা।

ক্ৰিভন কুদ্ধ গলায় বলল, কার জন্যে ভালোবাসা? কীসের ভালোবাসা?

মানুষের জন্যে মানুষের ভালোবাসা।

কিন্তু সেটা বলার অর্থ কী?

তারা আমাকে মনে করিয়ে দিল, মানুষের জন্যে থাকতে হয়। ভালোবাসা।

ক্রিভন কাঠ কাঠ গলায় হেসে উঠে বলল, এটা চমৎকার একটা রসিকতা হলো, তারা বলছে ভালোবাসা আর তুমি ক্রাটুশকার শেল দিয়ে সেই ভালোবাসার জবাব দিলে! তোমার ভালোবাসায় সবার চামড়ায় ফোঁসকা পড়ে দগদগে ঘা হবে, ফুসফুস টুকরো টুকরো হয়ে বের হয়ে আসবে নিঃশ্বাসের সাথে!

ক্ৰানা মাথা নেড়ে বলল, না, ক্ৰিভন! তুমি বুঝতে পারছ না। কেউ যখন ভালোবাসার কথা বলে তখন তাকে হত্যা করা যায় না।

ক্রিভন চমকে উঠে বলল, তুমি কী বললে?

আমি বলেছি, মানুষ যখন মানুষের কাছে ভালোবাসার কথা বলে তখন তাকে হত্যা করা যায় না!

কিন্তু কিন্তু–

ক্ৰানা হেসে বলল, মনে নেই তুমি কাটুশকার শেলে স্কু খুলে পানি ঢুকিয়েছ?

হ্যাঁ, তাতে কী হয়েছে?

পুরো রাসায়নিক উপাদানগুলো তখন নষ্ট হয়ে গেছে। আমি তোমাকে মিথ্যে কথা বলেছি ক্রিভন।

ক্ৰিভন চিৎকার করে বলল, তুমি আমার সাথে মিথ্যা কথা বলতে পার না। এটা অসম্ভব। তুমি মানুষ নও তুমি মস্তিষ্কের একটা বিচ্যুতি–

তুমি ঠিকই বলেছ। আমার মিথ্যা বলার কথা নয়, শুধু একটি ব্যতিক্রম আছে। যদি কোথাও আমি একটি ক্রস দেখতে পাই, আমার সমস্ত যুক্তি তর্ক ওলটপালট হয়ে যায়! আমার ভেতরে ভালোবাসার বান ডেকে যায়-–

না! ক্ৰিভন চিৎকার করে উঠে দাঁড়াতে গিয়ে হুঁমড়ি খেয়ে পড়ে যায়, অবাক হয়ে একবার ক্রানার দিকে আরেকবার রিদি আর রুহানের দিকে তাকায়। ক্রানা হাসি মুখে বলল, তুমি ছোটাছুটি করো না, তোমার জিভের নিচে যে ক্যাপসুলটা দিয়েছ সেটা কোনো প্রতিষেধক নয়, সেটা ঘুমের ওষুধ! তুমি ঘুমিয়ে পড়ছ ক্ৰিভন। শুধু তুমি নও, তোমরা সবাই।

না। ক্ৰিভন গোঙ্গাতে গোঙ্গাতে বলল, এটা হতে পারে না।

পারে। আমি যদি একটা মিথ্যা বলতে পারি তাহলে দশটা মিথ্যা বলতে পারি। আমি অবশ্যি দশটা মিথ্যা বলি নি। মাত্র তিনটা মিথ্যা বলেছি! তিন নম্বর মিথ্যাটা কী জান?

ক্রিভন কোনো কথা না বলে স্থির চোখে কানার দিকে তাকাল। ক্রানা খিলখিল করে হেসে উঠে বলল, তোমাদের অস্ত্রগুলোর ভেতরে একটা কোড ঢুকিয়েছ মনে আছে? কোডগুলো অস্ত্রটাকে অকেজো করে দেয়। তোমার পুরো সেনাবাহিনীর কারো কাছে এখন কোনো অস্ত্র নেই! একটিও নেই!

ক্রিভন হাঁটু গেড়ে কয়েক পা এগিয়ে এসে কোমর থেকে হঠাৎ একটা ছোট রিভলবার বের করে হিংস্র গলায় বলল, আছে! একটা অস্ত্র এখনো আছে। এই অস্ত্রের কোনো কোড নেই। সেটা দিয়েই আমি তোমাদের শেষ করব।

ক্ৰিভন অস্ত্রটা প্রথমে রুহানের দিকে তাক করল। ট্রিগার টানার সাথে সাথে প্রচণ্ড একটা শব্দে কানে তালা লাগা গেল, শেষ মুহূর্তে রিদি তারই চেয়ার নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছে, নিজের শরীর দিয়ে রক্ষা করেছে রুহানকে।

রুহান বিস্ফারিত চোখে তাকিয়ে আছে। ক্রিভনের দেহের উপর রিদি উপুড় হয়ে পড়ে আছে। জোছনার নরম আলোতে দৃশ্যটিকে মনে হয় অতিপ্রাকৃতিক। যে ক্ষীণ কালচে তরলটি গড়িয়ে আসছে, সেটি রক্তের ধারা। জোছনার আলোতে সেটিকে লাল দেখাচ্ছে না, সেটাকে দেখাচ্ছে কালো!

রুহান তবুও জানে এটা রক্ত। রিদির রক্ত।

Category: রুহান রুহান
পূর্ববর্তী:
« ১২. লরির খোলা দরজার কাছে
পরবর্তী:
১৪. রুহানের পাশে পাশে হাঁটছে ক্রিটিনা »

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বাংলা লাইব্রেরি : উল্লেখযোগ্য বিভাগসমূহ

লেখক ও রচনা

অনুবাদ সাহিত্য

সেবা প্রকাশনী

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

কোরআন

হাদিস

ত্রিপিটক

মহাভারত

রামায়ণ

পুরাণ

গীতা

বাইবেল

বিবিধ রচনা

বাংলা ওসিআর

Download Bangla PDF

হেলথ

লাইব্রেরি – ফেসবুক – PDF

top↑