৯. খানসামার কলকাতা

খানসামার কলকাতা

আমি যদি জন্ম নিতাম
ছকু খানসামার কালে—

.

মধ্যে মধ্যে ‘ছকু খানসামা লেন’ দিয়ে চলতে চলতে এই কথাটা আমার অনেকদিন মনে হয়েছে। ভেবেছি, নবাবি আমলের খানসামাদেরও একটা ‘স্টেটাস’ ছিল, ভুঁইফোঁড়দের আমলে আমাদের তা—ও নেই। মুসলমান নবাবদের মতন ইংরেজ নবাবরাও একটা খানসামা—খিদমতগারি কালচারের সৃষ্টি করেছিলেন কলকাতা শহরে। তালুকদারি কালচারের মতন এই খানসামা—কালচারও কলকাতা কালচারের আর—একটি অঙ্গ।

নবাবি আমলের হারাম বা দরবারি পরিবেশে খানসামা—খিদমতগাররা কী অভিনয় করত, তা নিয়ে কোনো রঙিন রূপকথা রচনা করতে চাই না। নবাবি আমল তখন অস্তাচলে, মুসলমান নবাবি আমল। তার সঙ্গে ঢাকাই ও মুর্শিদাবাদি কালচারও অস্ত যাচ্ছে। কিন্তু তার অস্তগামী বর্ণচ্ছটা নতুন ইংরেজ—নবাবি আমলের কলকাতা কালচারের উপর প্রতিফলিত হচ্ছে। খানসামারা আর মুর্শিদাবাদের বাবুর্চিখানার নায়ক নয়, কলকাতার ইংরেজদের কিচেনের নায়ক। ইংরেজ নবাবদের এই আদি যুগটাকে প্রায় খানসামাদের যুগ বলা চলে। ছকু খানসামা কে ছিল জানি না, কোনো জীবনীকোষে তার জীবনচরিত কেউ লিপিবদ্ধ করে যাননি। তবে ছকু যে কোনো ইংরেজ—নবাবের পিয়ারের খানসামা ছিল তাতে কোনো সন্দেহ নেই। হয়তো কোনো এ দেশি বাঙালি নবাবেরও হতে পারে। যারই খানসামা হোক, সেটা বড় কথা নয়। কথা হল, খানসামাগিরি বা খিদমতগারির স্বর্ণযুগের কথা। কলকাতা শহর আজও সেই স্বর্ণযুগের স্মৃতিচিহ্ন বুকে করে রয়েছে। বরণীয় ও স্মরণীয়ের সংখ্যা তারপর অনেক বেড়েছে, দিন দিন আরও বাড়ছে, পথঘাটের নামও বদলাচ্ছে, আরও বদলাবে। চিরস্মরণীয় হবার আকাঙ্ক্ষা মানুষের যতদিন থাকবে (অনন্তকাল থাকবে), ততদিন একজন স্মরণীয়ের স্মৃতিপথ ও স্মৃতিস্তম্ভকে ধূলিসাৎ করে দিয়ে অন্য আর—একজন চিরস্মরণীয় হবার চেষ্টা করবেন। ছকু খানসামার বদলে কোনো গফুর খানসামা বা বিরাট দেশপ্রেমিকের নামে কোনো অ্যাভিনিউ ভবিষ্যতে তৈরি হবে কি না জানি না। তবে, একটা কথা মনে হয়, খানসামাগিরি যে যুগের স্মরণীয় কীর্তি বলে গণ্য হত, আজও কি সে যুগের শেষ হয়েছে? এ যুগের নতুন নবাবরা তা জানেন, আর জানে তাদের নতুন খানসামারা।

রাজা—বাদশাহের যেমন ইতিহাস আছে, খানসামারও তেমনি একটা ইতিহাস আছে। জনৈক ইংরেজ শিল্পী প্রায় এক শতাব্দী আগে তাঁর মা—কে খানসামাদের সম্বন্ধে চিঠিতে লিখে জানাচ্ছেন :

Khansamanship like Malvoilo’s greatness, commeth in three wise: some are born Khansamans–some achieve Khansamanship and others have Khansamanship thrust upon them.

খানসামাগিরি তিন উপায়ে করার সৌভাগ্য হয়। কেউ খানসামা হয়ে জন্মায়, কেউ খানসামাগিরির যোগ্যতা অর্জন করে, আবার কারও স্কন্ধে সেটা চাপিয়ে দেওয়া হয়। মোট কথা, খানসামাগিরি রীতিমতো একটা লোভনীয় পেশা, যা ইংরেজ আমলে মুসলমানদেরই একচেটে ছিল। খানসামারাই ছিল ইংরেজ নবাবদের ঘরের গিন্নি। শুধু রান্নাঘরের নয়, ভাঁড়ারের চাবিকাঠিও তাদের হাতে থাকত। বাড়ির অন্যান্য চাকরবাকর সকলে খানসামার হুকুমের অধীন থাকত এবং তার মন জুগিয়ে চলত। খিদমতগার আর খানসামার তফাত আছে, পদমর্যাদার তফাত। খিদমতগার খানা টেবিলের চাকর, সাহেবদের টেবিলে খানা ‘সার্ভ’ করাই তার প্রধান কাজ। কাজ করে সাহেব—প্রভুকে খুশি করতে পরলে খিদমতগিরি থেকে খানসামাগিরিতে পদোন্নতি হত। ঘরের ব্যাপারে খানসামা হল মুখ্যমন্ত্রী, আর তার ডেপুটি হল খিদমতগার। তারপর অবশ্য মন্ত্রী মণ্ডলীর মধ্যে পদের তারতম্য আছে গুরুত্ব হিসেবে। খিদমতগারের পরেই বাবুর্চি। মুসলমান ছাড়াও মগ, পর্তুগিজ ও কেওড়া জাতির হিন্দুরা বাবুর্চির কাজ করত। মগ বাবুর্চিরাই নাকি সাহেবদের খুব প্রিয় ছিল। স্টকলার সাহেব এই কথা তাঁর ‘Calcutta as it is’ (J.H. Stocqueler) গ্রন্থে দীর্ঘদিন আগে বলে গেছেন : The Mugs are esteemed by us in the culinary department, being heaven-born cooks from the Burmese quarter’।

তিনি এ কথাও বলেছেন যে এই মগরা ‘flat faced specimen of the unfeathered biped—is ready not only to cook you a chop of pork, but to eat it into the bargain’—অর্থাৎ হিন্দুরা বাবুর্চির কাজ করত না, কারণ গোরু, মহিষ, শুয়োর, অনেক কিছুতে তাদের আপত্তি ছিল। মুসলমান বাবুর্চিরাও শুয়োর নিয়ে গণ্ডগোল করত। একমাত্র মগ বাবুর্চিদের গাধা—গোরু—শুয়োর কিছুতেই আপত্তি ছিল না, রন্ধনে তো নয়ই, ভক্ষণেও না। সুতরাং মগ বাবুর্চিদের ইংরেজ নবাবরা ‘হেভন—বর্ন—কুক’ মনে করতেন। পদমর্যাদায় খিদমতগারের পরে ছিল এই বাবুর্চিদের স্থান। চতুর্থ স্থান ছিল মশালচিদের। সাহেব—নবাবের ভ্রমণ বা শিকারের সময় মশাল জ্বালিয়ে ধরে যারা তাঁর সঙ্গে যেত, তাদের বলা হত মশালচি। কিন্তু ভ্রমণ বা শিকার সবসময় করা হত না এবং মশালও সর্বক্ষণ জ্বালাবার দরকার হত না। অন্য সময় মশালচিরা বাবুর্চি ও খিদমতগারের সহকারীর কাজ করত, যেমন কাঁটাচামচ—কাপ—প্লেট পরিষ্কার করা ইত্যাদি। পঞ্চম স্থান ছিল বেয়ারাদের এবং তার মধ্যে ওড়িয়া ও বাঙালি হিন্দু বেয়ারাই ছিল বেশি। বেয়ারাদের মধ্যে কেউ পাল্কি বইত, কেউ হয়তো সাহেবদের ব্যক্তিগত হুকুম খাটত, বিছানা ঝাড়ত, জুতো ঝাড়ত, হুঁকোর কলকে বদলে দিত। টুকিটাকি যাবতীয় ফরমায়েশ খাটা, পাল্কি বহন করা, অথবা ব্রাউনবেরি ও চৌঘুড়ি ঘোড়ার গাড়ির পিছনে দাঁড়িয়ে থাকাই ছিল বেয়ারাদের কাজ। এ ছাড়া দারোয়ান—বরকন্দাজরা ছিল, মেথর—মেথরানিরা ছিল, মালি ও আয়ারা ছিল, হুঁকোবরদাররা ও ধোপারা ছিল, জল টানার জন্য ভিস্তিরা ছিল, দরজিরা ছিল, জমাদাররা ছিল। ইংরেজ নবাবদের বসতবাড়িটা ছিল যেন একটা বিরাট প্রতিষ্ঠানের মতন। খিদমতগার বাবুর্চি মশালচি বেয়ারা দারোয়ান বরকন্দাজ ভিত্তি হুঁকোবরদার জমাদার দরজি মালি আয়া মেথর মেথরানি নিয়ে বিরাট একটা জমজমাট যৌথ কারবার। সবার উপরে চরম সত্যের মতন ছিল খানসামা। ছিল না শুধু, বিরাজ করত বলা চলে। সুতরাং খানসামাকে কেবল খানসামা মনে করা ভুল। কলকাতার ইংরেজ নবাবদের অন্দরমহলের দোর্দণ্ডপ্রতাপ অধীশ্বর ছিল খানসামা। তাকে খুদেনবাব বললেও ভুল হয় না। সেকালের কোনো মুনশি বা বেনিয়ানের চেয়ে সাহেবদের কাছে খানসামার প্রতিপত্তি কম ছিল না। ‘ছকু খানসামা লেন’ সেই প্রচণ্ড প্রতিপত্তির নগণ্য নিদর্শন মাত্র।

১৮৪১ সালের ‘বেঙ্গল অ্যান্ড আগ্রা অ্যানুয়াল গাইড অ্যান্ড গেজেটিয়ার’ থেকে গৃহভৃত্যের বেতনের একটি তালিকা উদ্ধৃত করছি—

খানসামা : ১০ টাকা থেকে ১৬ টাকা

খিদমতগার : ৬ টাকা থেকে ৮ টাকা

বাবুর্চি : ৬ টাকা থেকে ৯ টাকা

দারোয়ান : ৫ টাকা

হরকরা : ৫ টাকা

কচুয়ান : ৮ টাকা থেকে ১০ টাকা

সহিস : ৫ টাকা

মশালচি : ৪ টাকা

সর্দার বেয়ারা : ৬ টাকা থেকে ৮ টাকা

সহকারী বেয়ারা : ৫ টাকা থেকে ৬ টাকা

পাঙ্খা বেয়ারা : ৫ টাকা থেকে ৬ টাকা

মেথর : ৪ টাকা

ভিস্তি : ৪ টাকা

আবদার : ৬ টাকা থেকে ৮ টাকা

এ ছাড়া কেউ কেউ সরকার বা মুনশি নিয়োগ করতেন, মাসিক কুড়ি থেকে ত্রিশ টাকা বেতনে। সরকার ও খানসামার স্টেটাসের পার্থক্য ছিল, কর্তৃত্বেরও তারতম্য ছিল। কিন্তু দু’পয়সা উপার্জনের কৌশল উভয়ের ছিল একরকম। শ্রীমতী ফ্যানি পার্কস তাঁর ‘ওয়ান্ডারিংস অফ এ পিলগ্রিম’ গ্রন্থে সরকারমশায়ের যে সচিত্র বিবরণ দিয়েছেন, তা উপভোগ্য। তাঁর নিজের ভাষাতেই তা উদ্ধৃত করা উচিত :

A very useful but expensive person in an establishment is a Sircar; the man attends every morning early in receive orders, he then proceeds to the bazaars, or to the Europe shops; and brings back for inspection and approval, furniture, books, dresses or whatever may have been ordered; his profit is a heavy percentage on all he purchases for the family.

শ্রীমতী ফ্যানি সরকারমশায়কে ‘ইউজফুল’ কিন্তু ‘এক্সপেনসিভ’ ব্যক্তি বলেছেন। সাধারণত টাকার দু’আনা করে দস্তুরি সরকারের প্রাপ্য বলে উল্লেখ করেছেন, অর্থাৎ সাড়েবারো পার্সেন্ট। খানসামা মোটামুটি এর অর্ধেক পেত। এ ছাড়া সরকারের সঙ্গে খানসামার বিশেষ কোনো তফাত ছিল না। সরকারমশায় ছিলেন ভদ্র—খানসামা, এই যা তফাত এবং প্রধানত হিন্দু। খানসামারা মুসলমান। উভয়েই দস্তুরি—কালচারের প্রবর্তক।

খানসামাদের তনখা ছিল সবচেয়ে বেশি, অন্যান্য সাহেবরা বলেছেন, মাসে আট টাকা এ থেকে পঁচিশ টাকা পর্যন্ত। খিদমতগারদের মাইনে ছ’টাকা থেকে দশ টাকা, বাবুর্চিদেরও তা—ই, মশালচিদের চার টাকা। কিন্তু খানসামার তনখাটাই আসল রোজগার নয়, দস্তুরিটাই আসল। এই দস্তুরির জন্যই খানসামাত্ব বজায় রাখা সম্ভব হত। দৈনন্দিন হাটবাজারের ভার ছিল খানসামার উপর। বাজার থেকে প্রত্যেক বিক্রেতার কাছে তার দস্তুরি বাঁধা। টিরেটা বাজার হোক, আর জ্যাকসনের বা হাটখোলার শোভাবাজারের বাজারই হোক, প্রত্যেক বাজারে বিক্রেতারা খোদ সাহেবকে না চিনলেও তাঁর বাড়ির খানসামাকে বিলক্ষণ চিনত এবং দূর থেকে তাকে দেখলেই সেলাম করত। বাজারে ও পথেঘাটে সাহেবের চেয়ে এ দেশি খানসামাদের খাতির ছিল বেশি। সেলামের ভিড় ঠেলে সাহেবের ‘পেট’ খানসামাকে পথ চলতে হত, বাজারহাট করতে হত। পদে পদে, প্রত্যেক লেনদেনের সঙ্গে দস্তুরি তার বাঁধা, সরকারি বিনিময়—হারের মতন। না চাইতেই পাওয়া যেত। সাধারণত টাকায় দু’পয়সা করে, বিশেষ ক্ষেত্রে টাকায় চার পয়সাও হতে পারে। দশ টাকা যদি মেমসাহেব বাজার করতে দিতেন, তাহলে পাঁচ আনা পয়সা যে খানসামার দস্তুরি হিসেবে প্রাপ্য তা তিনিও জানতেন। হিসেব নেবার সময় সেটা বাদ দিয়েই হিসেব নিতেন। কিন্তু দস্তুরি ছাড়াও দরের কারসাজিতে খানসামা আরও কিছু পেত। গড়ে তার ‘নিট’ রোজগার টাকায় এক আনা করে ফেলে—ছেড়ে হত। এ তো গেল বাজারের ব্যাপার। তা ছাড়া খানসামার আরও উপরি রোজগার ছিল। ঘরকন্নার ব্যাপার দেখাশোনার ভার থাকত সম্পূর্ণ তার উপর। খিদমতগার থেকে আরম্ভ করে বেয়ারা ভিস্তি ধোপা মেথর—মেথরানি পর্যন্ত সকলের নোকরি তার কৃপাদৃষ্টির উপর নির্ভর করত। খানসামার পাগড়ি টপকে সাহেবের অন্দরমহলে কারও কোনো কাজে বহাল হবার উপায় ছিল না। সুতরাং সাহেব বাড়ির চাকরি করতে হলে (যেন সরকারি চাকরি আর কী!) খানসামাকে কিছু নজরানা দিতেই হত। না দিলে উপায় নেই। মুসলমান খিদমতগারই হোক, মগ বাবুর্চিই হোক, আর হিন্দু বেয়ারাই হোক, নজরানা না দিয়ে কারও নিস্তার নেই। এই নজরানা থেকেও খানসামার বাৎসরিক ‘নিট’ রোজগার অল্প ছিল না। এ ছাড়া ‘বকশিস’ বা ‘টিপস’ তো ছিলই। বড় বড় ভোজসভায় বড়সাহেবদের ঝুনো খানসামারা মোটা বকশিস পেত এবং অন্যেরা যা পেত তার বকরাও নিত। সব মিলিয়ে মোটামুটি খানসামার আয় যা হত তা দালাল গোমস্তা বেনিয়ান ভদ্রলোক বাবুদের রীতিমতো হিংসে করার মতন। কিন্তু খানসামাদের ইতিহাস লেখা হয়নি, কারণ খানসামারা মধ্যবিত্ত ‘ভদ্রলোক’ নয়। দালাল—গোমস্তাদের ও সরকার—মুনশিদের ইতিহাস লেখা হয়েছে, কারণ তাঁরা মধ্যবিত্ত ভদ্রলোক।

অনেক মুনশি, অনেক গোমস্তা, দালাল, বেনিয়ান ও বাজার সরকার ইংরেজদের কৃপায় হোমরাচোমরা হয়েছেন, রাজা—মহারাজা খেতাব পেয়েছেন এবং কেবল সেইজন্যই তাঁদের ইতিহাস সযত্নে লেখা হয়েছে। কিন্তু খানসামারা কোনো খেতাব পায়নি বলে স্বনামধন্য হয়নি। তাদের ইতিহাসও কেউ লেখেননি। শুধু ‘ছকু খানসামা’র কথা বলছি না। হয়তো এরকম আরও অনেক খানসামা ছিল, যাদের খেতাব না থাকলেও আর্থিক অবস্থা ভদ্রলোক দালালদের চেয়ে খারাপ ছিল না। বাজারে বেশ তাদের প্রতিপত্তি ছিল বোঝা যায়। বৃদ্ধ ‘রিটায়ার্ড’ খানসামাকে সামনে সকলেই সেলাম করত এবং পিছনে আঙুল দেখিয়ে—’অমুক সাহেবের খানসামা’। খানসামার সেই ‘স্বর্ণযুগ’ ছেড়ে কত দূর আমরা এগিয়ে এসেছি তা আজও বিচার করা হয়নি এবং ‘কলকাতা কালচার’র গোড়াপত্তনে সেই খানসামা—কালচারের দান কতটা, তাও কেউ ভেবে দেখেছেন বলে মনে হয় না। কলকাতায় চাকুরিজীবী মধ্যবিত্ত কালচার এই খানসামা কালচারের কাছে যে কতটা ঋণী, তা—ও ভাববার বিষয়। আধুনিক সমাজের প্রধান বৈশিষ্ট্য যে দস্তুরি—কালচার, তার প্রবর্তক শহরের সাহেবদের সরকার মুনশি ও খানসামারা। টাকায় পয়সা থেকে দু’আনা দশ পয়সা পর্যন্ত দস্তুরি দিয়ে, এই ‘টাকা ধর্ম—টাকা স্বর্গ’ ধ্যানময় সমাজের এক—একটি সোপান উত্তীর্ণ হতে হয়। এখনও পদে পদে যখন দেশীয় সাহেবদের সরকারমশায় ও খানসামাদের সঙ্গে দেখা হয়, তখনই কেবল ছকু—নিমুদের কথা মনে পড়ে এবং ছকু খানসামা অথবা নিমু খানসামা লেনের ঐতিহাসিক তাৎপর্য যে কত গভীর, কত ব্যাপক তা বোঝা যায়।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *