০৫. বাঁশি বাজাতে ইচ্ছে করে না

সেদিন একজনকে দেখলাম…

কে?

আমার মন ভালো নেই, সুবল। আজ আমার খেলায় যেতে ইচ্ছে করে না। আজ আমার বাঁশি বাজাতে ইচ্ছে করে না। আজ আমি গোচারণে যাব না।

তোর কী হয়েছে কানু!

আমি জানি না। আমার শরীরে জোর নেই, চোখে সুখ নেই। তুই আমার সঙ্গে কথা বলিস না, সুবল। কেউ কথা বললে বাতাস কাঁপে, তা এসে আমার গায়ে ঝাপটা মারে।

অমন করিসনি, কানু। তোর কী অসুখ হল? তুই বুঝিস না, তোর কষ্ট হলে আমাদেরও কষ্ট হয়। তোর হাসিমুখ না দেখলে আমরা ত্রিভুবনে আমোদ পাই না। ধেনুদের গলার টুং-টাং শব্দ শুনে তোর মন উচাটন হচ্ছে না? কদম্ব গাছের নীচে তোর সব খেলার সাথীরা বসে আছে, তাদের কাছে যাবার জন্য তোর মন অস্থির করছে না? আজ আমরা আবার রাজা-প্রজা খেলব। তুই না গেলে কে রাজা সাজবে?

ওসব ছেলেখেলা আর আমার ভালো লাগে না, সুবল! আমি শুধু তাকে দেখতে চাই, তার কাছে যেতে চাই, তার দুটো কথা শুনতে চাই। কোনও দিন কি আমি তার পায়ে আমার মাখা রাখতে পারব? কোনও দিন কি সে সহাস্যে তার কোমল হাতে আমার এই রুক্ষ চিবুক একবার স্পর্শ করবে? কোনও দিন কি তাকে আমি সত্যি দেখেছি, নাকি স্বপ্ন কিংবা মায়া?

সে কে? তুই কার কথা বলছিস, কানু?

তাকে দেখিসনি? তার মাথার চুলে ছিল সিঁদুরের টিপ, যেন সজল মেঘে নতুন সূর্য উঠেছে। সোনার পদ্মের মতন তার মুখ, তাই দেখেই যেন চাঁদ লজ্জা পেয়ে দু’ লক্ষ যোজন দূরের আকাশে চলে গেছে। তার কাজলটানা চোখ দু’টি খুবই উজ্জ্বল অথচ যেন আলস্যমাখা। তার কোমর খুব সরু, কিন্তু গুরুভার নিতম্বদেশ। সে রাজহংসীর মতন ছন্দোময় ধীর ভাবে হাঁটে…

কিন্তু তাকে দিয়ে কী হবে?

সে আমার সব। আমার গোটা হৃদয়টাই এখন আমার চোখে এসে ভর করেছে। আমার চোখ দিয়ে আমি তার কাছে নিজেকে সমর্পণ করতে চাই।

কী জানি, কার কথা বলছিস তুই। গোপপল্লিতে তো সুন্দরীর অভাব নেই।

ওসব বলিস না, সুবল! তার মতন আর কেউ নয়। শুধু চোখের দেখায় আর কে আমাকে এমন অবশ করে দিতে পারে? সুবল, আমি আর একটি বার তার কাছে যাব, আর একবার তার মুখের হাসি দেখব।

দেখবি, দেখবি। এই অঞ্চলেরই মেয়ে যখন, তখন আবার ঠিকই দেখতে পাবি। এখন চল, গোচারণে যাই।

নাঃ।

কানু সুবলের হাত ছাড়িয়ে দৌড়ে পালিয়ে গেল। সুবল খানিকটা অনুসরণ করেও নিবৃত্ত হল শেষ পর্যন্ত। কানু ইচ্ছে করে ধরা না দিলে তাকে ধরার সাধ্য নেই সুবলের।

গোচারণ থেকে অনেকখানি দূরে, যমুনার খেয়া পারাপারের ঘাটে এসে বসে রইল কানু। নদী এখন বেশ চওড়া, ওপারের গাছপালা খুদে খুদে দেখা যায়। ওপারে মস্ত বড় গঞ্জের হাট, এপার থেকে গোপবালকরা ওই হাটে যায় বিকিকিনি করতে। তা ছাড়াও সাধারণ মানুষের পারাপার লেগেই আছে। এক নির্বিকার নিঃশব্দ বুড়ো মাঝি সারা দিন খেয়া বেয়ে যায়।

জলে পা ডুবিয়ে কানু সেই নদীর ধারে বসে রইল, বসেই রইল। মাথার ওপরে চড়া হয়ে এসেছে রোদ, তার হুঁশ নেই। একবারও নড়ে না চড়ে না। শরীরের ব্যথা-বেদনার বোধটুকু পর্যন্ত যেন চলে গেছে তার। জলের ওপরে রৌদ্রের স্রোত, আকাশে ঘুরে ঘুরে ডাকছে গাংচিল।

এক সময় কানুর শরীর চঞ্চল হয়ে উঠল। মুখমণ্ডলে দেখা দিল স্বেদ, চক্ষে ব্যাকুলতা। ব্রজাঙ্গনারা ওপার থেকে এপারে আসছে খেয়ার নৌকোয়। ষোলো-সতেরোটা মেয়ে, তাদের মাঝখানে রাধা। রাধাই যেন চাঁদ, অন্য মেয়েরা তার আভা।

ঘাটে নেমে মেয়েরা কলগুঞ্জন করতে করতে উঠে গেল ওপরে। কানু নড়ল না জায়গা ছেড়ে। রাজ্যের লজ্জা এসে তাকে ভর করেছে। সে যে উঠে রাধার সঙ্গে একটিবার কথা বলবে, সে সাহস নেই।

কানু নির্নিমেষে দেখছে। এই চোখের দেখাই যেন জীবনের সর্বস্ব। রাধার শরীরের প্রতিটি রেখার নামই যে মায়া। সে এত সুন্দর যে কষ্ট হয়। কানুর হাতে এক আঁজলা জল, যেন সে রাধার উদ্দেশে অঞ্জলি দিচ্ছে।

পথটিকে ধন্য করে, পায়ের স্পর্শে যেন পদ্মফুল ফুটিয়ে ফুটিয়ে রাধা যখন সখীদের সঙ্গে চলে গেল অনেক দূরে, তখন কানুর বুক ভেঙে গেল। রাধা একটি বার তাকাল না তার দিকে? সে যে একটা মানুষ বসে আছে ঘাটের পাশে, সেদিকে কি একবারও চোখ ফেলতে নেই? কানুর ইচ্ছে হল, নদীতে ঝাঁপ দিয়ে একেবারে অতলে তলিয়ে যেতে। তার আর বেঁচে থেকে লাভ কী? একটি বার, শুধু একটি বার যদি সে মুখের দিকে তাকিয়ে হাসত…

পরদিন কানু গেল স্নানের ঘাটে। গোপবালারা সবাই এখানে স্নান করতে আসে, রাধাও নিশ্চয়ই আসবে। কানু চুপি চুপি গিয়ে লুকিয়ে বসে রইল একটা ঝোপের আড়ালে। কিন্তু একটু পরেই তার মনে হল, তাকে এখানে বসে থাকতে দেখলে গোপিনীরা নিশ্চয়ই লজ্জা পাবে কিংবা রাগ করবে। তাতে তো লাভ নেই। সে যে প্রস্ফুটিত কুমুদিনীর মতন রাধার মুখের হাসিটাই দেখতে চায়। তার চেয়ে বনপথ দিয়ে যখন গোপিনীরা আসবে, সে যদি উলটো দিক দিয়ে সে-দিকেই হেঁটে যায়! তা হলে এক সময় তার মুখোমুখি পড়তেই হবে। তখন রাধা কি একবার চাইবে না তার দিকে? শুধু একটিবার, এক লহমার জন্য? কালীয়দহের তীরে রাধা যে দৃষ্টিতে ভুবন আলো করেছিল, কানু সেটা আর পাবে না কখনও?

এক সময় দূরের বনপথ সুরলহরীতে ভরিয়ে দিয়ে আসতে লাগল গোপিনীরা। তারা রঙ্গ করে গাইছে মানভঞ্জনের গান, চলার তালে তালে ঝুম ঝুম করে বাজছে তাদের কোমরের গোঠ আর চন্দ্রহার আর পায়ের মল। ওরা কখনও একা আসে না, দল বেঁধে আসে। রাধাকে কখনও কানু একা পাবে না।

কানু যখন ওদের পাশ দিয়ে হেঁটে গেল, দু’-একজন গোপিনী তেরছা চোখে দেখল তাকে। কেউ কোনও কথা বলল না। রাধা অবনতমুখী, গানের সুর মেলাতে মেলাতে চলে গেল, একবারও সে দেখল না কানুকে। একটু দূরে গিয়ে সব মেয়েরা মিলে একসঙ্গে হেসে উঠল। কানু পেছন ফিরে দেখল, হাসতে হাসতে গোপিনীরা এ-ওর গায়ে ঢলে পড়ছে। কী এমন হাসির কথা তাদের মনে পড়েছে, কে জানে!

কানুর ইচ্ছে হল, কাছাকাছি কোনও লম্বা গাছে উঠে উড়ুনিটা দিয়ে গলায় ফাঁস জড়িয়ে ঝুলে পড়ে! কিংবা কোনও মৌচাকে হাত ঢুকিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে চুপচাপ, যাতে লক্ষ লক্ষ মৌমাছি তার গায়ে বিষের হুল ফুটিয়ে দিতে পারে। এমনিতেই তো তার শরীরে বৃশ্চিক দংশন হচ্ছে।

কানু বনের অনেক ভিতরে ছুটে গিয়ে, নির্জনে, একটা তমালগাছের নীচে মাটিতে শুয়ে পড়ে গড়াগড়ি দিতে লাগল। তার মুখ দিয়ে দারুণ চাপা কষ্টের শব্দ বেরিয়ে এল, আঃ আঃ—

দু’-তিনদিন বাদে সুবল নদীর ধারে কানুকে খুঁজে বার করল। ঝাঁঝালো গলায় বলল, এ রকম করলে তো আর চলে না রে কানু! তোর বিহনে আমাদের দল ছত্রভঙ্গ হয়ে গেল। কারওর আর কোনও কাজকম্মে মন নেই। বলাইদাদা সব সময় জিজ্ঞেস করেন, কানু কোথায়, কানু কোথায়! তুই বাড়িতে থাকিস না, গোষ্ঠে আসিস না… তুই কি পাগল হলি?

কানু মুখ গোঁজ করে উত্তর দিল, আমার কিছু ভালো লাগে না!

সুবল তবু কানুর হাত ধরে টেনে তুলে বলল, চল তো, কোন ভুবনমোহিনী তোকে এমন পাগল করেছে, তাকে একবার দেখি গিয়ে! চল—

কানু যাবে না, তবু সুবল জোর করতে লাগল। সে কানুর তুলনায় অনেক চটপট মুখে চোখে কথা বলে। সে শুধু গোপিনীদের দিকে হাঁ করে তাকিয়ে থাকবে না, তাদের সঙ্গে ভাব জমাতে পারবে!

গোপবালারা পসরা নিয়ে হাটে চলেছে, কানুকে সঙ্গে নিয়ে সুবল তাদের পিছু নিল। আকাশ হালকা মেঘে ছাওয়া, তার আড়াল থেকে সূর্য যেন পাঠিয়ে দিচ্ছে দিব্যজ্যোতি। সুপবন সর্বাঙ্গে মধুর স্পর্শ দেয়। দিগন্তকে ভাস্বর করে গোপবালারা গান গাইতে গাইতে যায় নদীর দিকে। তাদের হাতে সোনার কঙ্কণ, তাদের মাথায় পিত্তলের হাঁড়ি-কলসিগুলিও সোনার মতন ঝকঝকে। কেউ কাঁধে বাঁক ঝুলিয়ে নিয়েছে, তাদের শাড়ি গাছকোমর করে বাঁধা। রাধা সব সময় থাকে গোপবালাদের মাঝখানে।

রাজনন্দিনী রাধা আয়ানঘরণী হয়ে সংসারের সব কাজ শিখে নিয়েছে। অন্যান্য গোপাঙ্গনাদের মতো সে-ও পসারিণী হয়ে হাটে যায়। গোপপল্লির রীতি এই যে পুরুষরা করে উৎপাদন, মেয়েরা করে বাণিজ্য। মেয়েদের হাতে সওদা দিয়ে হাটে পাঠানোর বিশেষ সুবিধে এই যে, ক্ৰয়ার্থী পুরুষরা তাদের সঙ্গে বেশি দরাদরি করে না। তারা চেষ্টা করলেও দরাদরিতে মেয়েদের সঙ্গে পারবে কেন?

গোপবালাদের পিছু পিছু আসতে আসতে সুবল জিজ্ঞেস করল, ওগো, তোমরা বুঝি হাটে যাচ্ছ?

সঙ্গে সঙ্গে এক গোপিনী উত্তর দিল, কেন, চোখ নেই? দেখতে পাচ্ছ না?

মুখঝামটা খেয়ে কানু তাড়াতাড়ি সুবলের পিছনে লুকোল। সুবল কিন্তু দমল না। সে আবার হাসিমুখে বলল, না, তাই ভাবলাম, আমরাও হাটে যাচ্ছি তো, একসঙ্গে যাই!

এক গোপিনী বলল, তার তো কোনও দরকার নেই বাপু! আমরা রোজ যেমন নিজেরা নিজেরা যাই, আজও তাই যাব! তোমরা পথ দেখো!

সুবল বলল, একটাই তো পথ, যদি একসঙ্গে যাই, তাতে ক্ষতি কী?

রাধার সখী বৃন্দা পেছন ফিরে দাঁড়িয়ে কোমরে হাত দিয়ে বলল, বলি, তোমাদের মতলবখানা কী শুনি?

ব্রজ-বৃন্দাবনের পথে বিশেষ রিপুভয় নেই। কিন্তু যুবকদের দৌরাত্ম্য কোথায় না থাকে! গোপিনীরা ভাবল, এই দু’জন এসেছে ছলে-কৌশলে কিছু ক্ষীর-ননি চুরি করতে।

সুবল বলল, মতলব কিছু নেই, আমরা তোমাদের ভার বয়ে দেব? তোমাদের কষ্ট হচ্ছে—

কানু বলল, হ্যাঁ হ্যাঁ, আমরা তোমাদের ভার বয়ে দিতে চাই।

সুবল বলল, আহা, তোমাদের কোমল শরীর, অত নরম হাত, তাতে কি আর এত ভার বওয়া যায়?

গোপিনীরা কলকল করে হেসে উঠল।

বৃন্দা বলল, মরণ! ছোঁড়াদের রস দেখো না! বলে কিনা কোমল শরীর! রোজ রোজ বুঝি এই ভার অন্য লোকে বইছে!

বিশাখা বলল, অত যদি ভার বইবার সাধ, তা হলে হাটে গিয়ে মোট বইগে যা না! তাতে দুটো পয়সা পাবি!

সুবল বলল, আমরা তো পয়সা চাই না! আমরা চাই তোমাদের সঙ্গে একটু ভাব করতে। তোমরা আমাদের পানে চেয়ে একটু হাসবে, দুটো কথা বলবে—

বৃন্দা বলল, যা যা ছোঁড়া! নিজের কাজে যা! ঢং দেখে আর বাঁচিনে!

গোপিনীদের তাড়নায় এক একবার সুবল আর কানু পেছিয়ে পড়ে আবার একটু পরেই কাছাকাছি গিয়ে ঘুরঘুর করে। সুবল তার কাকুতিমিনতির ভাষা নরম থেকে নরমতর করে আনে, তবু গোপিনীদের মন গলে না।

শুধু কথায় হয় না দেখে সুবল জোর করে কোনও গোপিনীর হাত থেকে পসরা নিজে নিতে গেল। অমনি সেই গোপিনী ফোঁস করে উঠে বলল, এই, গায়ে হাত ছোঁয়াচ্ছিস যে? বড় বাড় বেড়েছে না? এক্ষুনি ফিরে গিয়ে বাড়ির কর্তাদের বলে দেব!

কানু ততক্ষণে রাধার পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। রাধার হাত থেকে পসরা কেড়ে নিয়ে বলল, এটা আমি মাথায় করে বইছি। এত ভার তোমাকে মানায় না!

কালীয়দহের পাড়ে বাধার মুখে সেদিন যে মুগ্ধতা ছিল, আজ তা একটুও নেই। রাধা কাতর ভাবে বলল, কেন তোমরা আমাদের বিরক্ত করতে এসেছ? আমরা রোজ এই পথ দিয়ে বিকিকিনি করতে যাই—

কানুর বুক ফেটে গেল। রাধার হাসিমুখ সে দেখতে চেয়েছিল, তার বদলে দেখল বিরক্তি। রাধা প্রথম তাকে যে-কথা বলল, সেটা ভর্ৎসনা!

তবু সে অনুনয় করে বলল, আমি তোমার সঙ্গে যাব—

রাধা বলল, না!

.

ততক্ষণে সব গোপিনীরা ওদের দু’জনকে ঘিরে ধরেছে। কয়েক জনের ভাণ্ড থেকে ক্ষীর-ননি চলকে মাটিতে পড়ে গেছে বলে তারা রেগে আগুন। সবাই ওদের এমন বকুনি দিতে লাগল যেন তাতে একটা ঝড় উঠে গেল। ওরা আর পালাতে পথ পায় না। দু’জনেই পিছু হঠে গেল অনেকটা। গোপিনীরা দ্রুত চলে গেল নদীর পারে।

সুবলের বুক-পিঠ ছানার জলে ভিজে গেছে। কাপড়ের খুঁট দিয়ে মুছতে মুছতে বলল, না রে, কানু, এখানে সুবিধে হবে না! গোপিনীদের দেখতে যত নরম, আসলে তা নয়। এক একটি যেন আগুনের মালসা। তুই যার কথা বলছিলি, তার সঙ্গে তুই ভাব করবি কী করে? তুই কি বামন হয়ে চাঁদে হাত দিতে চাস? ও যে বৃযভানু রাজার মেয়ে, আয়ান ঘোষের ঘরণী—তুই সামান্য বৃন্দাবনের রাখাল—

কানুর চোয়াল কঠিন হয়ে গেছে। সে দূরের দিকে তাকিয়ে আছে একদৃষ্টে। আস্তে আস্তে বলল, আমি সামান্য রাখাল হই আর যাই হই, আমি ইচ্ছে করলে ব্রজ-বৃন্দাবন তছনছ করে দিতে পারি!

সুবল বলল, কানু, মাথা ঠান্ডা কর।

কানু তবু বলল, আমি সবকিছু লন্ডভন্ড করে দেব!

সুবল তার পিঠে হাত দিয়ে বলল, ওরে কানু, এত মেজাজ দেখিয়ে লাভ নেই। তুই গায়ের জোরে কালীয়দহের অজগর সাপ মারতে পারিস, কিন্তু গায়ের জোরে তো আর রমণীর মন জয় করা যায় না! এ বড় কঠিন জিনিস!

কানু তখনও দূরের খেয়াঘাটের দিকে চেয়ে আছে। ততক্ষণে নৌকোয় উঠে পড়েছে গোপিনীরা। তাদের রঙিন আঁচল উড়ছে বাতাসে। তাদের মুখগুলি যেন পারিজাত ফুলের মতন। এত দূর থেকেও সৌরভ পাওয়া যায়।

স্রোতে দুলতে দুলতে নৌকোটি চলে গেল অনেক দূরে।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *