০৪০. নড থ্রির বাইরে চার্ট্রাকিয়ান

অধ্যায় : ৪০

নড থ্রির বাইরে চার্ট্রাকিয়ান যেন একেবারে মরিয়া। সে হেলকে বোঝানোর চেষ্টা করছে যে ট্রান্সলেটারের বারোটা বেজে গেছে। সুসান তাদের পাশ দিয়ে

স্ট্র্যাথমোরকে পাবার আশায় এগিয়ে গেল।

পাশ কাটিয়ে যাবার সময় চট করে পাগল হয়ে ওঠা সিস-সেক ধরে বসল সুসানের হাত, মিস ফ্লেচার! আমাদের হাতে ভাইরাস পড়েছে। আমি পজিটিভ! আপনার অবশ্যই

সুসান সাথে সাথে হাত ছাড়িয়ে নিয়ে মুখ ঝামটা দিল, আমার মনে হয় কমান্ডার তোমাকে বাসায় যেতে বলেছে।

কিন্তু রান মনিটর! এটাতে আঠারো ঘন্টা দেখাচ্ছে যে!

কমান্ডার স্ট্র্যাথমোর তোমাকে বাসায় যেতে বলেছে!

ফাঁক স্ট্র্যাথমোর! চিৎকার করে উঠল চার্ট্রাকিয়ান। তার চিৎকার ধ্বণিত প্রতিধ্বণিত হল চারপাশে।

উপর থেকে একটা জলদগম্ভীর কণ্ঠছ গমগম করে উঠল, মিস্টার চার্ট্রাকিয়ান?

ক্রিপ্টোর তিন কর্মচারীই সাথে সাথে জমে গেল।

নিজের অফিসের রেলিঙের বাইরে ঝুঁকে আছে স্ট্র্যাথমোর।

নিচের জেনারেটরের গুমগুম শব্দ ছাড়া আর কোন আওয়াজ নেই। সুসান সাথে সাথে কমান্ডারের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করল, কমান্ডার! হেলই নর্থ ডাকোটা!

কিন্তু স্ট্র্যাথমোরের দৃষ্টি তরুণ সিস-সেকের উপর নিবদ্ধ। উপর থেকে তার দৃষ্টি পড়ে আছে সিস-সেকের উপর, আর কারো দিকে নয়, পুরোটা পথ পেরিয়ে এল সে। তারপর কাঁপতে থাকা টেকনিশিয়ানের সামনে লাড়িয়ে কাটা কাটা স্বরে বলল, কী বলেছ তুমি?

স্যার, কাশতে কাশতে বলল ছেলেটা, ট্রান্সলেটার বিপদে আছে।

কমান্ডার? সুসান বাগড়া দিল, আমি যদি–

মাঝপথে থামিয়ে দিল স্ট্র্যাথমের সিস-সেকের দিক থেকে তার চোখ ফিরছে বা এক মুহূর্তের জন্যও।

ফিল এখনো কথা বলছে হড়বড় করে, আমাদের একটা ইনফেক্টেড ফাইল আছে। আমি নিশ্চিত।

স্ট্রামোরের কণ্ঠ এখনো জলদগম্ভীর, মিস্টার চার্ট্রাকিয়ান, আমরা ভালভাবেই জানি, ট্রান্সলেটারে কোন ইনফেক্টেড ফাইল নেই।

হ্যাঁ, আছে! চিৎকার করল চার্ট্রাকিয়ান, আর সেটা যদি মূল ডাটাবেসে পথ করে নেয়–

কোথায় সেই ইনফেক্টেড ফাইল? এনে দেখাও আমাকে!

আমি পারব না।

অবশ্যই পারবে না। কারণ তার কোন অস্তিত্ব নেই।

সুসান বলল, কমান্ডার, আমার অবশ্যই-

রাগান্বিত একটা হাত ঝাঁপটা দিয়ে আবারো স্ট্র্যাথমোর।

নার্ভাসভাবে হেলের দিকে তাকায় সুসান। হেলের চোখেমুখে কোন ভাব খেলা করছে না। এইতো স্বাভাবিক, হেলের মনে কোন বিকার নেই। কারণ সে ভালভাবেই জানে কী হচ্ছে সেখানে।

অনুরোধ ঝরে পড়ল চার্ট্রাকিয়ানের কণ্ঠে, সেই ইনফেক্টেড ফাইল আছে, স্যার। গান্টলেট কখনোই সেটাকে ধরতে পারেনি।

যদি গান্টলেট সেটাকে ধরতে নাই পারে তাহলে তুমি কী করে সেটাকে চিনতে পারলে?

মিউটেশন স্ট্রিঙ, স্যার। আমি একটা এ্যানালাইসিস চালিয়েছি। ধরা পড়েছে মিউটেশন স্ট্রিঙের ব্যবহার।

এবার সুসান বুঝতে পারল কেন সিস-সেক এত উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। মিউটেশন স্ট্রিঙ থাকে সাধারণত বড় ভাইরাসগুলোয়। জটিলভাবে এগুলো ডাটা করাপ্ট করায়। কিন্তু সুসান জানে, ডিজিটাল ফোট্রেসের এই মিউটেশন স্ট্রি ক্ষতি করবে না। শুধু ডিজিটাল ফোট্রেসকে রক্ষা করবে।

সিস-সেক কথা বলছে একতালে, প্রথমে স্ট্রিঙ দেখে মনে করেছিলাম গান্টলেটের ফিল্টারের কাজ হয়নি ভালভাবে। তারপর যখন কয়েকটা টেস্ট চালালাম তখনতো… একটু অপ্রস্তুত লাগছে তাকে, তখন দেখতে পেলাম কেউ একজন গান্টলেটকে পাস করেছে ইচ্ছাকৃতভাবে। ম্যানুয়ালি।

বোঝা যায় এবার লাল হয়ে উঠছে স্ট্রামোরের চেহারা। তার মেইনফ্রেম খোলা। গান্টলেট এড়িয়ে কাজ করার সামর্থ একমাত্র তারই আছে।

স্ট্র্যাথমোর কথা বলে উঠলে কণ্ঠ আরো শিতল শোনাল, মিস্টার চার্ট্রাকিয়ান, তোমার ভাবার কিছু নেই। আমিই গ্রান্টলেট দিয়ে পাস করিয়েছি। আর আগেই বলেছি তোমাকে, আমি খুবই এ্যাডভান্সড একটা ডায়াগনোসিস চালাচ্ছিলাম। ট্রান্সলেটারে তুমি যে মিউটেশন স্ট্রিঙগুলো দেখতে পাচ্ছ এটা তারই অংশ। গান্টলেট নিতে চায়নি। আমিই দিয়েছি। এখন, তোমার আর কী করার আছে?

উইথ অল ডিউ রেসপেক্ট, স্যার, চাপ দিল চার্ট্রাকিয়ান, আমি কখনো কোন মিউটেশন স্ট্রিঙের ডায়াগনোসিসের কথা শুনিনি–

কমান্ডার, বলে উঠল সুসান, আমি আপনার সাথে জরুরি কিছু ব্যাপারে কথা বলতে–

এবার কথায় বাগড়া দিল সেলফোন।

এসব কী! বলেই ফোন তুলল স্ট্র্যাথমোর। এরপর একেবারে চুপ করে থেকে শুনতে লাগল ভিতরের কথা।

সাথে সাথে হেলের কথা ভুলে গেছে সুসান। বল, সে ভাল আছে, ভাবে সে, : বল, সুস্থ আছে।

ধরে ফেলল স্ট্র্যাথমোর, চোখের ভ্রুকুটি হেনে জানিয়ে দিল সে, ডেভিড নয়।

ডেভিড যদি ব্যর্থ হয় তাহলে এন এস এর আসল ফিল্ড এজেন্ডদের পাঠানো হবে।

কমান্ডার, আমি সত্যি সত্যি মনে করছি যে আমাদের চেক করতে হবে—

থাম- বলে বাকি কথাটা শুনল স্ট্র্যাথমোর।

তাকাল সে চার্ট্রাকিয়ানের দিকে, তোমাকে এখনি ক্রিপ্টো ফ্লোর ত্যাগ করতে হবে। দ্যাটস এন অর্ডার।

কিন্তু স্যার, মিউটেশন স্ট্রি—

এখন!

চার্ট্রাকিয়ান স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকে কিছুক্ষণ। তারপর ঝড় তুলে চলে যায় সিস-সেক ল্যাবের দিকে।

স্ট্র্যাথমোর তাকায় হেলের দিকে। বিভ্রান্ত চোখে। ব্যাপারটা তাহলে কমান্ডারের চোখেও পড়েছে। সে নিরব। খুব বেশি নিরব। হেল জানে, ট্রান্সলেটারকে আঠারো ঘন্টা ব্যস্ত রাখার মত কোন প্রোগ্রাম নেই। তাও সে চুপ করে আছে।

কমান্ডার, আবার চেষ্টা করে সুসান, আমি যদি আপনার সাথে কথা বলতে পারি

পরে। বলল স্ট্র্যাথমোর, আগে এ কলটায় যোগ দিয়ে নিই।

সুসানের কথাটা মুখেই রয়ে গেল। হেলই নর্থ ডাকোটা!

তা আর বলা হল না।

নড থ্রির দরজার কাছে এসে হেল বলে উঠল, তোমার পরে, সু।

অধ্যায় : ৪১

আলফানসো তেরর লিনেন ক্লজেটে এক মেইড পড়ে আছে। সংজ্ঞাহীন। তার পকেটে আরেকটা মাস্টার কি পুরে দিচ্ছিল ওয়্যার রিম পরা লোকটা। মেয়েটার চিৎকার শুনতে পায়নি সে। কারণ আছে, বারো বছর বয়স থেকে তার শ্রবণশক্তি নষ্ট হয়ে গেছে।

যোগাযোগের নতুন মাধ্যম পেয়ে সে বর্তে গেছে। নতুন ক্লায়েন্টের কাছ থেকে পেয়েছে সে এটা। এখন, কথা শুনতে পাক আর না পাক, সারা পৃথিবীর সাথে যোগাযযাগ করতে পারবে কোন সমস্যা ছাড়াই।

চোখের সামনে স্ক্রিন বন্ধ হয়ে গেল। আবার আঙুলে আঙুল টোকা দিচ্ছে সে। সেগুলো অক্ষরে পরিণত হয়ে ভেসে উঠল ভোজবাজির মত।

সাবজেক্ট: রেসিও ইভা গ্রানাডা–টার্মিনেটেড
সাবজেক্ট: হেল হবার–টার্মিনেটেড

হাতে আধা শেষ হওয়া ড্রিঙ্ক নিয়ে পায়চারি করছে ডেভিড বেকার। তিন তলা নিচে। লবিতে। মুক্ত বাতাস নিতে টেরেসের দিকে চলে যায় কখনো। আসা এবং যাওয়া… হাসে সে। আসা এবং যাওয়া। ব্যাপার-স্যাপার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। একটা সিদ্ধান্তে আসতেই হবে এবার। এখন কি সব হাল ছেড়ে দিয়ে এয়ারপোর্টে ফিরে যাওয়া উচিৎ নয়? জাতীয় নিরাপত্তার ব্যাপার? তাহলে তারা কেন একজন স্কুলটিচারকে পাঠাল?

বারটেন্ডারের চোখের আড়ালে চলে গিয়ে ড্রিঙ্কটা ফেলে দিল সে একটা পটেট জেসমিনের গায়ে। মাথাটাকে ফাঁকা করে দিয়েছে ভদকা। ইতিহাসের সবচেসেস্তা মাতাল- মাঝে মাঝে সুসান বলে।

মাথা থেকে চিন্তাটাকে দূর করে দিয়ে হাঁটতে থাকে লরি ধরে ঝাঁকিয়ে সরিয়ে দিতে চায় সমস্ত হালকা ভাব।

এলিভেটরে যাবার সময় তার সামনে এক লোক পড়ে। লিফটের ভিতরেই। মোটা ওয়্যার রিম গ্লাস। নাক ঝাড়ার জন্য একটা রুমাল এগিয়ে নেয় লোকটা। ভদ্রভাবে একটু হাসি দিয়ে বেকার তিরে ঢুকতে থাকে… বাইরে সেভিলিয়ান রাতের অমানিশা নেমে আসছে।

অধ্যায় : ৪২

ভিতরে ঢুকতে গিয়ে একেবারে যাচ্ছেতাই কান্ড করে বসল সুসান। নার্ভাস দেখাচ্ছে তাকে, বুঝতে পারে সে।

স্ট্রেস মারাত্মক ব্যাপার, সুসান। তুমি কি বুক থেকে কিছু সরিয়ে দিতে চাও?

জোর করে বসে পড়ল সুসান। মনে মনে একটাই আশা- স্ট্র্যাথমোর কথা শেষ করে ফিরে আসবে। কিন্তু তেমন কোন লক্ষণ নেই। শান্ত থাকার চেষ্টা করছে। সুসান। নিজের স্ক্রিনের দিকে চোখ তার। ট্রেসার দ্বিতীয় বারের মত কাজ চালাচ্ছে। সুসান জানে, কোন ঠিকানা আসবে। জিহেল@ক্রিপ্টো.এন এস এ, গভ

সুসান তাকায় স্ট্র্যাথমোরের ওয়ার্ক স্টেশনের দিকে। আর পারছে না সে। কমান্ডারের ফোন কলে বাগড়া দেয়ার সময় চলে এসেছে।

উঠে দাঁড়াল সুসান। চলে যাচ্ছে দরজার দিকে। প্রতি মুহূর্তে সরে যাচ্ছে নর্থ ডাকোটার কাছ থেকে। চলে যাচ্ছে কমান্ডারের আরো আরো কাছে।

হেলের চোখে ব্যাপারগুলো বেখাপ্পা লাগে। উঠে দাঁড়ায় সে। দরজার কাছে আটকে দেয় সে সুসানকে।

বল কী হচ্ছে। এখানে আজ কিছু একটা হচ্ছে। কী সেটা?

আমাকে বেরুতে দাও। বলল সুসান। সারা গায়ে ভয় কাঁটা দিয়ে উঠছে।

কামঅন! স্ট্র্যাথমোর তো চার্ট্রাকিয়ানকে তার কাজের জন্য ফায়ার্ড করে দিল। ট্রান্সলেটারের ভিতরে হচ্ছেটা কী? আঠারো ঘন্টা চলার মত ডায়াগনোসিস আমরা কখনোই করি না। দ্যাটস বুলশিট। আর তুমি তা জান। বলতো, কী হচ্ছে?

সরু হয়ে গেল সুসানের চোখ। কী হচ্ছে তা তুমি ভাল করেই জান! সরে যাও, গ্রেগ। আমাকে বাথরুমে যেতে হবে।

হেল সরে গেল। স্যরি, সু। জাস্ট ফার্টিং।

বের হয়ে যাবার সাথে সাথে বুঝতে পারল সুসান, তার গা ভেদ করে দৃষ্টি যাচ্ছে লোকটার।

তাই বাথরুমের দিকে এগিয়ে গেল সে। গ্রেগ হেলের চোখ ফাঁকি দেয়ার আগে তাকে একটু কৌশল করতে হবে।

অধ্যায় : ৪৩

পয়তাল্লিশ বছরের হাসিখুশি মানুষ চ্যাড ব্রিঙ্কারহফ। সামার ওয়েট স্যুট, ট্যান করা চামড়া। ঘন চুল, বাদামি। চোখের রঙ নীল। গভীর। কন্ট্যাক্ট লেন্স বসানো।

উড প্যানেলড অফিসে একবার চোখ বুলিয়ে নেয় সে। এন এস এ তে যতটা উপরে ওঠা যায়– উঠেছে সে। নাইন্থ ফ্লোরের মেহগনি সারিতে এ অফিস। অফিস নাইন এ ওয়ান নাইন্টি সেভেন। দ্য ডিরেক্টরিয়াল স্যুট।

শনিবারের রাত। মেহগনি সারি খালি হয়ে গেছে। এসেন্সিতে একটা সত্যিকারের পোস্ট চেয়েছিল সে। কিন্তু কী করে যেন পার্সোনাল এইডের মত কোন কাজ জুটে গেল তার। আমেরিকান ইন্টেলিজেন্সের একক ক্ষমতাবান লোকটার পাশে, একটু একা। এ্যান্ডোভার এ্যান্ড উইলিয়ামস থেকে ব্রিঙ্কারহফ গ্রাজুয়েশন করেছে। আর এখানে সে আছে, সত্যিকার ক্ষমতা নেই যার। অন্য কারো ক্যালেন্ডার গোছানোর কাজে ব্যস্ত।

.

ডিরেক্টরের পার্সোনাল এইড হলে লাভ আছে কিছু ডিরেক্টরিয়াল স্যুটে আশ্রয় জুটেছে তার, এন এস এ ডিপার্টমেন্টে পূর্ণ প্রবেশাধিকার আছে। ব্রিঙ্কারহফ জানে, সে জন্ম নিয়েছে একজন পি এ হবার জন্য। নোট নেয়ায় দক্ষ, প্রেস কনফারেন্সে  জুড়ি নেই, এ নিয়েই পড়ে থাকার জন্য যথেষ্ট আলসে।

আবার ঘড়ি টিকটিক করে জানিয়ে দিচ্ছে, অনেক সময় পেরিয়ে গেল। শিট! বিকাল পাঁচটা! কী করছি আমি এখনো?

চ্যাড? দরজার গোড়ায় হাজির হয়েছে এক মহিলা।

চোখ তুলে তাকায় ব্রিঙ্কারহফ। মিজ মিকেন এসেছে। ফন্টেইনের ইন্টারনাল সিকুরিটি এ্যানালিস্ট। তার বয়স ষাট। একটু ভারি। ছ রুমের ডিরেক্টরিয়াল স্যুটের মানুষগুলোর একজন। বলা হয় এন এস এর আভ্যন্তরীন ব্যাপারগুলো স্বয়ং ঈশ্বরেরচে ভাল জানে।

ড্যাম! ভাবে ব্রিঙ্কারহফ, হয় আমি বুড়ো হয়ে যাচ্ছি নাহয় সে আরো নবীন হয়ে উঠছে।

উইকলি রিপোর্ট, হাসল সে, একতাড়া কাগজ দুলিয়ে, ফিগার্স চেক করতে হবে তোমার।

আসলেই চ্যাড, হাসল সে, তোমার মায়ের মত বয়স হয়ে গেছে আমার।

আমাকে আবার মনে করিয়ে দিও না। ভাবে ব্রিঙ্কারহফ।

মিজ ডেস্কের সামনে দাঁড়াল, দক্ষিণ আমেরিকা থেকে ফেরার আগে ডিরেক্টর এগুলো শেষ করা অবস্থায় দেখতে চায়। আমি চলে যাচ্ছি। সোমবারের কথা। ঘাড়ের কাছে চলে এসেছে।

সামনে নামিয়ে রাখল সে প্রিন্টআউটগুলো।

আমি কী? এ্যাকাউন্টেন্ট?

না, হানি। তুমি একজন ক্রুজ ডিরেক্টর। ভাল করেই জান সেটা।

তাহলে আমি সংখ্যা নিয়ে কী করব?

তুমি আরো দায়িত্ব চাও, এই সব।

মিজ… আমার কোন জীবন নেই।

কাগজের উপর মহিলা আঙুল চালায়, এটাই তোমার জীবন, চ্যাড ব্রিঙ্কারহফ। যাবার আগে কোনকিছু এগিয়ে দিতে পারি তোমাকে?

আমার কাঁধগুলো শক্ত হয়ে গেছে।

একটা এ্যাসপিরিন নাও।

কোন ব্যাক রাব নেই?

মাথা নাড়ল মহিলা, কসমোপলিটানরা বলে দুই তৃতীয়াংশ ব্যাকরাবের শেষ ফল হয় সেক্সে।

আমাদেরগুলোয় কখনো এমন কিছু হয় না।

এটাইতো সমস্যা।

মিজ–

নাইট, চ্যাড।

চলে যাচ্ছ?

তুমি জান, আমি থাকতে চাইতাম, দরজার দিকে যেতে যেতে বলে মহিলা, কিন্তু আমার কিছু গর্ব আছে। কোন টিন এজারের সাথে দ্বিতীয় ইনিংস খেলতে। চাই না।

আমার স্ত্রী কোন টিন এজার নয়। তার ভাবটা টিন এজারের মত।

মিজ অবাক হয়ে তাকায়। আমি তোমার স্ত্রীর কথা বলিনি। বলেছি, কারম্যানের কথা। পুয়ের্টোরিকান উচ্চারণে বলে সে কথাটুকু।

কে?

কারম্যান। ফুড সার্ভিসের?

ব্রিঙ্কারহফ বড় করে একটা দম ছাড়ে। কারম্যান হুয়ো সাতাশ বছর বয়সী পস্ট্রি শেফ। কাজ করে এন এস এর কমিশারিতে। স্টকরুমে তার সাথে অনেকটা সময় কাটিয়েছে ব্রিঙ্কারহফ।

হাসল মহিলা। মনে রেখ, চ্যাড বিগ ব্রাদার নোজ অল।

বিগ ব্রাদার? অবিশ্বাসে তাকায় ব্রিঙ্কারহফ। বিগ ব্রাদার স্টকরুমের দিকেও নজর রাখে?

বিগ ব্রাদার বা শুধু ব্রাদার হল একটা সেনটেক্স ৩৩৩ যেটা একটা ছোট ক্লজেটের মত জায়গায়, স্যুটের সেন্ট্রাল রুমে বসানো। এটা একশো আটচল্লিশ ক্লজেট সার্কিট ভিডিও ক্যামেরা, তিনশো নিরানব্বই ইলেক্ট্রনিক ডোর, তিনশো সাঁতার ফোন টেপ আর দুশ বারটা ফ্রি স্ট্যান্ডিং বাগের দেখাল করে এন এস এ কমপ্লেক্সে।

এন এস এর পরিচালকরা জানে যে ছাব্বিশ হাজার কর্মচারী থাকা শুধু বড় একটা এ্যাসেট নয়, বরং বিশাল দায়বদ্ধতা। মিজ এই দায়বদ্ধতার কাজ করে ইন্টারনাল সিকিউরিটি এ্যানালিস্ট হিসাবে। বোঝাই যাচ্ছে কমিশারিতেও তার চোখ আছে একটা।

হাত ডেস্কের উপরে, বলল সে, সাবধান, দেয়ালেরও চোখ আছে।

ব্রিঙ্কারহফ বসে থেকে মহিলার হিলের আওয়াজ পায়।

প্রথম প্রিন্টআউটটা বের করে সে।

ক্রিপ্টো- প্রোডাকশন/এক্সপেভেচার

সাথে সাথে মুড হালকা হয়ে গেল তার। ক্রিপ্টোর রিপোর্ট সব সময়ই কেকের মত। সব ডাটা একত্র করার কথা তার। কিন্তু ডিরেক্টর শুধু একটা ব্যাপার জানতে চায়। এম সি ডি। মিন কস্ট পার ডিক্রিপশন। একটা কোড ভাঙার জন্য ট্রান্সলেটারের পিছনে কতটা খরচ করতে হচ্ছে সেই হিসাব। এক হাজার ডলারের নিচে থাকলে ফন্টেইন কোন চিন্তা করে না।

প্রতিদিনের এম সি ডি চেক করতে করতে মাথায় কার্মেন হুয়ের্টা খেলা করতে থাকে। ত্রিশ সেকেন্ডের মধ্যে তার কাজ প্রায় শেষ হয়ে যায়। আর সব সময়ের মত এবারো ক্রিপ্টো ডাটা পারফেক্ট।

কিন্তু পরের রিপোর্টটার দিকে চোখ যাবার আগেই তা আটকে গেল। শিটের শেষ প্রান্তে শেষ এম সি ডি টা নেই। সংখ্যাটা এত বড় যে পরের কলামে চলে গেছে সেটা। অঙ্কটার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে সে।

৯৯৯,৯৯৯,৯৯৯?

হাসফাস করে সে। বিলিয়ন ডলার? কারম্যানের ছবি উরে গেছে। বিলিয়ন ডলারের কোড?

প্যারালাইজড হয়ে বসে থাকে ব্রিঙ্কারহফ। তারপর সাথে সাথে সে নড়েচড়ে ওঠে। দৌড়ে যায় প্যাসেজে, মিজ। ফিরে এস।

অধ্যায় : ৪৪

ফিল চার্ট্রাকিয়ান সিস-সেক ল্যাবে স্থবির হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। স্ট্র্যাথমোরের কথাগুলো মাথায় বোমা মারছে যেনঃ চলে যাও এখনি! দ্যাটস এ্যান অর্ডার!

ট্র্যাশ ক্যানে লাথি কষিয়ে খালি ল্যাবে পায়চারি করে।

ডায়াগনোস্টিক, মাই এ্যাস! কোন কারণে ডেপুটি ডিরেক্টর ফাইলটাকে গান্টলেটের পাশ দিয়ে ঢোকাল!

এন এস এর কম্পিউটার সিস্টেমের দেখভাল করার জন্য ভাল বেতন পায় সিস-সেকরা। চার্ট্রাকিয়ান জানে, সেখানে দুটা মাত্র কাজ আছে, তুমুল পাগলাটে হও, দারুণ মেধাবী হও।

হেল, অভিশাপ দেয় সে, সেইসাথে অশ্লীল একটা গালি ঝেড়ে দেয়, এটা কোন পাগলামির মধ্যেও পড়ে না! রান মনিটরগুলো আঠারো ঘন্টা দেখাচ্ছে।

বোঝাই যায়, প্রথমে ভাইরাস ঢুকিয়ে এখন শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছে ডেপুটি ডিরেক্টর।

চার্ট্রাকিয়ান জানে, গান্টলেট দিয়ে না ঢোকালে সমস্যা হতে পারে। এন এস এর বিশাল ডাটাব্যাঙ্ক হুমড়ি খেয়ে পড়তে পারে।

ডাটাব্যাঙ্কের ইতিহাস সব সময় চার্ট্রাকিয়ানকে তাড়িয়ে বেড়ায়। উনিশো শত্তুরের দিকে প্রথমে এর জন্ম। আস্তে আস্তে ইউনিভার্সিটিগুলো এমন সব ব্যাঙ্ক গড়ে তোলে, তারপর আসে পাবলিক সেক্টর।

ন্যাভাল ইন্টেলিজেন্সের কারণে বোঝা যায় ইন্টারনেটের সাথে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সরাসরি যোগাযোগ ভাল নয়। প্রেসিডেন্ট অবশেষে একটা ডিক্রি জারি করে যে প্রচলিত ইন্টারনেটের বদলে আমেরিকার ডিফেন্স এবং ইন্টেলিজেন্স প্রতিষ্ঠানগুলোয় নিজস্ব একটা নেটওয়ার্ক গড়ে উঠবে। সেজন্য ফান্ডের ব্যবস্থা করা হয়। ব্যাপারটা একেবারে গোপনীয়। এই সমস্ত ডাটা জুড়ো হবে একটা মাত্র বিশাল ডাটাব্যাঙ্কে। এন এস এর ডাটাব্যাঙ্কে।

দেশের সবচে ক্লাসিফায়েড ছবিগুলো টেপগুলো, ডকুমেন্ট আর ভিডিও সবগুলোকে ডিজিটাল করে ফেলা হয়। মিলিয়ন মিলিয়ন। একটা মাত্র জায়গায় সরিয়ে নেয়া হয়। তারপর বাকি কপি ধ্বংস করা হয়। ট্রিপল লেয়ার পাওয়ার রিলে দিয়ে সেই ডাটাব্যাঙ্কটাকে রক্ষা করে তারা। অবশ্যই, ডিজিটাল ব্যাকআপ সিস্টেমও আছে। মাটির দুশ চোদ্দ ফুট গভীরে রাখা হয় সেটাকে। সব ধরনের ম্যাগনেটিক ফিল্ডের বাইরে, সব ধরনের বিস্ফোরণের বাইরে। কন্ট্রোল রুমকে বলা হয় টপ সিক্রেট উম্রা- দেশের সবচে বড় সিকিউরিটি ব্যবস্থা আছে যেটার।

দেশের গোপনীয় ব্যাপারগুলো কখনোই খুব বেশি নিরাপদ থাকে না। যত কথা ভাবা যায় তার সব ধরনের তথ্যই আছে এখানে। পুরো ইউ এস ইন্টেলিজেন্স এর উপর নির্ভর করে।

অবশ্যই, এন এস এর লোকজন জানে যে এর মূল্য থাকবে তখনি যখন এখানে ঢোকা যাবে। একজন সাবমেরিন কমান্ডার ডায়াল করে এন এস এর সবচে নতুন স্যাটেলাইট ছড়িগ আ ররাশান পোর্টের খবর পেতে পারে কিন্তু সে দক্ষিণ আমেরিকায় কোন এ্যান্টি ড্রাগ মিশনে নামতে পারবে না। সি আই এ এ্যানালিস্টরা ঐতিহাসিক খুনের ঘটনাগুলো দেখতে পারবে কিন্তু লঞ্চ কোড পাবে না যেটা আছে শুধু প্রেসিডেন্টের জন্য।

ডাটাব্যাঙ্কের তথ্য জানার জন্য কোন এ্যাক্সেস নেই সিস-সেকদের। কিন্তু এর নিরাপত্তার জন্য দায় তাদের ঘাড়েই বর্তায়। সাধারণত সব ধরনের ডাটাব্যাঙ্কে ইউনিভার্সিটিতে বা এমন বড় কোন প্রতিষ্ঠানে- সর্বক্ষণ হ্যাকাররা সমস্যা করে। কিন্তু এন এস এর বেলায় সে কথা খাটবে না। তারা পৃথিবীর সেরা। এন এস এ ডাটাব্যাঙ্কের কাছেধারে কেউ কখনো আসেনি এবং কখনো পারবে না।

.

সিস-সেক ল্যাবের ভিতরে, ভেবে নেয়ে যাচ্ছে চার্ট্রাকিয়ান- ছেড়ে যাবে কি যাবে না। ট্রান্সলেটারে সমস্যা মানে ডাটাব্যাঙ্কেও সমস্যা। স্ট্র্যাথমোরের নিশ্চিন্ত ভাবটা সমস্যায় ফেলে দেয়।

ট্রান্সলেটার আর এন এস এ ডাটাব্যাঙ্ক পরস্পরের সাথে যুক্ত। সবাই জানে ন। প্রতিটা কোড ভাঙার সাথে সাথে ক্রিপ্টো থেকে সেটাকে সরিয়ে নেয়া হয় সাড়ে চারশ গজ দূরের ডাটাব্যাঙ্কে। ফাইবার অপটিক ক্যাবলের সাহায্যে। ট্রান্সলেটারের গার্ড এই গান্টলেট আর সেটাকে এড়িয়ে গেছে স্ট্র্যাথমোর।

নিজের বুককে ধ্বক ধ্বক করতে দেখল চার্ট্রাকিয়ান। আমাকে এটা রিপোর্ট করতে হবে! চিৎকার করে ওঠে নিজের অজান্তেই।

এমন কোন পরিস্থিতিতে কাকে কল করা যায়–মাত্র একজনকে, সিস-সেকের সেনিয়র অফিসার। ছোটখাট গাট্টাগোট্টা চারশো পাউন্ডের লোক। কম্পিউটারের গুরু। গান্টলেটের জন্মদাতা। ডাকনাম জাব্বা। জাব্বা যখনি স্ট্র্যাথমোরের এ কীর্তির কথা শুনতে পাবে, সব নরক ভেঙে পড়বে এখানে। খুব খারাপ, ভাবে সে, একটা কাজ আছে আমার করার মত।

ফোন তুলে নিয়ে জাব্বার চব্বিশ ঘন্টা খোল সেলফোনে ডায়াল করে সে।

অধ্যায় : ৪৫

চিন্তাকে গুছিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে ডেভিড বেকার এ্যাভেনিউ ডেল সিডায় ঘুরতে ঘুরতে। ভদকা এখনো তাকে ছেড়ে যায়নি। পায়ের তলায় টাইলগুলোকে গুলিয়ে যেতে দেখে সে নিজের ছায়ায়। মনে কোন চিন্তা খেই পাচ্ছে না। সুসান কি এখনো মেসেজটা পায়নি?

সামনে, সেভিল ট্রান্সপোর্টের একটা বাস দাঁড়িয়ে আছে। ডিজেল ইঞ্জিন গর্জে উঠল। বাসে ওঠার কেউ নেই। কেউ কেউ নামার। আবার ছুটল সেটা। পাব থেকে তিন টিন এজার ছুটে গেল পিছনে পিছনে। আবার থামবে বাসটা।

কী দেখল সে! বিশ্বাস হচ্ছে না। নিশ্চই হ্যালুসিলেশন! মদের কাজ!

আমি ভুল দেখছি।

বাস থেমে গেল। তিনজন উঠে যাচ্ছে। আবার দেখল সে দৃশ্যটা। এবার আর বিশ্বাস না করে উপায় নেই মেয়েটাকে দেখেছে সে।

যাত্রিরা উঠে গেল। আবার ইঞ্জিন গর্জে ওঠে সাথে সাথে। পুরোদমে ছুটছে বেকার। টের পায়। চিত্রটা এখন তার চোখে ভেসে থাকে। কালো লিপস্টিক, বুনো চোখ, আইশ্যাডো পাগলাটে- আর সে চুল… স্পাইক করে উপরের দিকে ওঠানো। তিনটা ভিন্ন রঙ সেখানে।

লাল, সাদা, নীল।

চলে যাচ্ছে গাড়িটা। কার্বন মনোক্সাইডের কারণে থেমে গেল বেকার।

এসপারা! চিৎকার করে সে বাসের পিছনে ছুটতে ছুটতে।

বেকারের পায়ের তাল ঠিক রাখতে পারছে না মাথাটা। সেই চিরাচরিত স্কোয়াশের দক্ষতা নেই। নেই ক্ষিপ্রতা। অভিশাপ দিল সে দুজনকে। সেই বারটেন্ডারকে আর জেটল্যাগকে।

বাসটা সেভিলের বুড়ো হাবড়াদের অন্যতম। প্রথম গিয়ার অনেকক্ষণ ধরে চলে। আস্তে আস্তে দূরত্ব কমে আসছে। ডাউনশিফটের আগে সেটাকে ধরতেই হবে।

টুইন টেইলপাইপ দিয়ে গলগল করে আরো ধোয়া বেরুচ্ছে, ড্রাইভার দ্বিতীয় গিয়ারে যাবে এবার। বাসের পাশে চলে এসেছে সে। প্রতিবার আরো আরো দ্রুতি বাড়াচ্ছে। সেভিলের আর সব বাসের পিছন দরজার মত এটারটাও ভোলা। এয়ার কন্ডিশনের অবস্থা বেশি ভাল হয় না এগুলোর

পায়ের আগুন ধরা যন্ত্রণাটার কোন পরোয়া করে না সে।

আরো এগিয়ে যাচ্ছে সে। প্রতিনিয়ত আরো কাছে চলে আসছে পিছন দরজার হ্যাঁন্ডেলটা। হাত বাড়ায় এবার বেকার। চট করে সেটা চলে যায় হাতলে। এবং সেইসাথে মিস করে বসে সে। হারিয়ে ফেলে ব্যালেন্স।

ড্রাইভার গতি বাড়িয়ে দিচ্ছে। বদল করছে গিয়ার।

শিফট করছে লোকটা! আর হবে না!

আবার মরিয়া হয়ে হাত বাড়ায় ডেভিড বেকার। এবার আঙুলগুলো আকড়ে ধরেছে হ্যাঁন্ডেলটা। বেড়ে যাচ্ছে বাসের গতি হু হু করে। ঝট করে নিজেকে ভিতরে টেনে নেয় সে। সেইসাথে ব্যালেন্স হারায় আবারো।

.

যানটার ভিতরে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে সে। পা আর কাঁধ ব্যথায় অবশ অবশ লাগে। কাঁপতে কাঁপতে উঠে দাঁড়ায় সে। অন্ধকার বাসের ভিতরে ঢুকে যায়। মাত্র কয়েক সারি পরেই সেই তিন ধরনের চুল চূড়া হয়ে আছে।

লাল-সাদা-নীল! পেরেছি!

আঙটিটার চিন্তায় অস্থির হয়ে যায় ডেভিড বেকার। অপেক্ষা করছে। লিয়ারজেট সিক্সটি। অপেক্ষা করছে সুসান।

মেয়েটার কাছে গিয়ে কী বলবে ভেবে পাচ্ছে না এমন সময় একটা স্ট্রিট লাইটের নিচ দিয়ে যাওয়া শুরু করল বাসটা। পাঙ্কের চোখমুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠল।

আতঙ্কে তাকিয়ে থাকে বেকার। মানুষটা মেয়ে নয়, ছেলে। উপরের ঠোঁটে রূপার একটা জুয়েলারি দিয়ে ছিদ্র করা। পরনে একটা জ্যাকেট। কোন শার্ট নেই।

চরম অশ্লীল গালি ঝেড়ে নিউ ইয়র্কের উচ্চারণে ছেলেটা প্রশ্ন তুলল, কী চাও তুমি?

ঝাঁকুনিতে নিজেকে সামলাতে সামলাতে সবার দিকে তাকায় বেকার। তাদের বেশিরভাগের চুলই লাল-সাদা-নীল।

সিয়েন্টাটে! চিৎকার করল ড্রাইভার।

বেকার যেন শুনতেই পায়নি।

সিয়েন্টাটে! আবার চিৎকার করল ড্রাইভার, সিট ডাউন!

আয়নায় রাগি চেহারাটার দিকে তাকায় সে। অনেক দেরি হয়ে গেছে।

রেগে গিয়ে ড্রাইভার হঠাৎ কষে ব্রেক করল। উড়ে গিয়ে মুখ থুবড়ে পড়ল বেকার দু সারি সিটের মাঝখানের খালি জায়গাটায়।

এ্যাভেনিডা ডেল সিডে একটা কালো মূর্তি বেরিয়ে এল অন্ধকার ছায়া থেকে। চলে যেতে থাকা বাসের দিকে তাকায় সে।

ডেভিড বেকার চলে গেছে। কিন্তু খুব বেশি সময়ের জন্য নয়। সেভিলের আর সব বাসের মধ্যে সে বেছে নিয়েছে সাতাশ নম্বরটা।

বাস সাতাশের গন্তব্য একটাই

অধ্যায় : ৪৬

ফিল চার্ট্রাকিয়ান ধপ করে তার রিসিভারটা নামিয়ে রাখে। জাব্বার লাইন বিজি। সে কল ওয়েটিং রাখে না। কারণ মনে করে, এটি এ্যান্ড টির একটা চাল এই কল ওয়েটিং। আরো বেশি কল, আরো বেশি আয়। তাই জাব্বার কল ওয়েটিং অন থাকে না। থাকে এ্যানগেজড { এন এস এর এই ইমার্জেন্সি সেলফোনটার প্রতি তারা বিতৃষ্ণা অনেক। তাই সে এ কাজ করে।

ঘুরে দাঁড়ায় চার্ট্রাকিয়ান। তাকায় এন এস এর ক্রিপ্টো ফ্লোরের দিকে। একেবারে শূণ্য। প্রতি মিনিটে মাটির তলার জেনারেটরের গুমগুম আওয়াজ বাড়ছে। এখন তার চলে যাবার কথা কিন্তু একটা ব্যাপার সে মানতেই পারছে না।

এন এস এর সেই পুরনো নীতি ধরেই চলবে, ভাবে সে- এ্যাক্ট ফার্স্ট, এ্যাক্সপ্লেইন লেটার।

কম্পিউটার সিকিউরিটির বিশাল দুনিয়ায় একটা মিনিট নষ্ট করা মানে কম্পিউটারের বারোটা বাজানোর আরো কাছে চলে যাওয়া। সিস-সেকদের রাখা হয় তাদের টেকনিক্যাল ক্ষমতার জন্য রাখা হয় তাদের ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়ের জন্য।

আণে কাজ, পরে ব্যাখ্যা। চার্ট্রাকিয়ান জানে তাকে কী করতে হবে। কাজটা শেষ হয়ে গেলে সে হয় এন এস এর হিরো বনে যাবে, নয়ত লাইন লাগাবে বেকারদের পিছনে।

বিশাল কম্পিউটারটায় ভাইরাস নেমে এসেছে।

শাট ইট ডাউন!

ট্রান্সলেটারকে শাট ডাউন করে দেয়ার দুটা পথ খোলা আছে। এক কমান্ডারের প্রাইভেট টার্মিনাল যেটা তার রুমে লক করা অবস্থায় থাকে; দুই ম্যানুয়াল কিল সুইচ, ক্রিপ্টো ফ্লোরের নিচে। 

চার্ট্রাকিয়ান কোনমতে গিলে নেয় ভাবনাটাকে সাবলেভেলগুলোকে ঘৃণা করে সে। শুধু ট্রেনিঙের সময় সেখানে ছিল। একবার যেন কোন অচেনা দেশ সেটা। ঐয়নের গলিঘুপচি, বিশাল বিশাল ক্যাটওয়াক, একশ ছত্রিশ ফুট পাওয়ার সাপ্লাই…

এই তার শেষ কাজ।

তারা কাল আমাকে ধন্যবাদ দিবে।

বড় করে দম নিল সে। সিনিয়র সিস-সেকের মেটাল লকার খুলে ফেলল। এ্যাসেম্বল না করা কম্পিউটার পার্টগুলোর সাথে আছে মিডিয়া কনসেন্ট্রেটর, ল্যান টেস্টার, স্ট্যানফোর্ড এ্যালুমিনিয়াম মগ। রিম স্পর্শ না করেই ভিতরে হাত ঢুকিয়ে বের করে আনে মেডেকো চাবিটা।

অসাধারণ, বলে সে, সিকিউরিটি সিস্টেম অফিসাররা সিকিউরিটির ব্যাপারে জানে না।

অধ্যায় : ৪৭

বিলিয়ন ডলার কোড? মিজ হলওয়েতে ব্রিঙ্কারহফের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে, বাহ! দারুণভো!

সত্যি।

এ পোশাকগুলো থেকে আমাকে বের করে নেয়ার ফন্দি নয়তো?

মিজ, আমি কখনোই—

আমি জানি, চ্যাড। মনে করিয়ে দিও না।

ত্রিশ সেকেন্ড পর, মিজ বসে আছে ব্রিঙ্কারহফের চেয়ারে। খতিয়ে দেখছে ক্রিপ্টো রিপোর্ট।

দেখলে? এই এম সি ডি? বিলিয়ন ডলারের…

দেখে মনে হয় ভালই, তাই না?

মানে?

মনে হচ্ছে ভাগ করা হয়েছে শূণ্য দিয়ে।

শূণ্য দিয়ে ভাগ করা হয়েছে?

মিজ হাসল, সবগুলো কোডের পিছনে যা খরচ হয়েছে সে হিসাবটাকে গড় করা হয়নি। যোগফল এটা।

অবশ্যই। বলল ব্রিঙ্কারহফ। মহিলার জামার দিকে না তাকানোর চেষ্টা করছে।

যখন কোন হিসাবে গন্ডগোল হয় তখন কম্পিউটার অসীম ব্যাপারটাকে ঘৃণা করে। সেখানে বসিয়ে দেয় সব নয়। দেখতে পাচ্ছ?

ইয়েস। পেপারের দিকে আরো ঝুঁকে আসে ব্রিঙ্কারহফ।

এটা আজকের ডাটা। ডিক্রিপশনের দিকে একবার তাকাও।

ব্রিঙ্কারহফ তাকায় ডিক্রিপশনের পরিমাণের দিকে:

নাম্বার অফ ডিক্রিপশন = ০

ফিগারের উপর আঙুল চালাল মিজ, যা সন্দেহ করেছিলাম। ডিভাইডেড বাই জিরো।

তার মানে সব ঠিকই আছে?

তার মানে আজ কোন কোড ব্রেকিং হয়নি। ট্রান্সলেটার হয়ত বিশ্রাম নিচ্ছে।

বিশ্রাম?

ডিরেক্টর প্রতিদিনের জন্য অনেক অনেক টাকা ঢালে ট্রান্সলেটারের পিছনে। একটা মুহূর্ত ট্রান্সলেটারের থেমে থাকা মানে কোটি টাকা বাথরুমের ভিতর দিয়ে ফেলে দেয়া।

আহ্… মিজ, বলল ব্রিঙ্কারহফ, ট্রান্সলেটার কখনোই বিশ্রাম নেয় না। এটা দিন-রাত সব সময় কাজ করে। ভালভাবেই জান তুমি।

শ্রাগ করল সে, উইকএন্ড রান করানোর ইচ্ছা ছিল না মনে হয় স্ট্র্যাথমোরের। জানে, ফন্টেইন নেই। তাই একটু আয়েশ করার ইচ্ছা হল তার।

কামঅন মিজ! বলল ব্রিঙ্কারহফ, লোকটাকে একটু বিশ্রাম দাও!

মিজ মিল্কেন যে ট্রেভর স্ট্র্যাথমোরকে পছন্দ করেনা সে কথাটা সবাই জানে। স্ট্র্যাথমোরের জন্যই স্কিপজ্যাক লেখা হয়। সেটা ধরা পড়ে যায়। এন এস এ বল হারায়। শক্তি পায় ই এফ এফ। কংগ্রেসের সামনে দুর্বল হয়ে পড়ে ডিরেক্টর। এমনকি গিন্নিরাও শোর তুলল- এন এস এ তাদের পারিবারিক ই-মেইল পড়ে ফেলবে। যেন এন এস এর আর কোন কাজ নেই।

এজন্য অনেক ক্ষতি হয়ে গেল ডিরেক্টরের। কিন্তু সে তার নীতিতে অটল। ব্রিলিয়ান্ট আর স্মার্ট লোকদের তাদের ইচ্ছামত কাজ করতে দাও। এখনো ট্রেভর স্ট্র্যাথমোরের কাজে কখনো বাধা দেয় না ডিরেক্টর।

মিজ, তুমি ভালভাবেই জান স্ট্র্যাথমোর কখনোই ট্রান্সলেটারকে বসিয়ে রাখবে না। সেটা তার বন্ধু।

নড করল মিজ। কমান্ডার নিজের কাজে একেবারে মগ্ন। তার কাজের প্রতি আকর্ষণের কথাটা সবাই জানে। নিচে কোথাও এখনো হয়ত সে মশগুল।

ওকে, বলে মহিলা, আমি তাহলে একটু বাড়িয়ে বলছি।

একটু? স্ট্র্যাথমোরের লাইনে ট্রান্সলেটারে যাবার মত মাইল লম্বা ই-মেইল পড়ে আছে। সেগুলো ডিকোডিং করতে হবে। পুরো সপ্তাহান্ত ধরে সে কখনোই। ট্রান্সলেটারকে বসিয়ে রাখবে না।

ওকে, ওকে, দীর্ঘশ্বাস ফেলল মিজ, আমার ভুল।

ভ্রুকুটি হানল সে। এখনো ভেবে পায় না ট্রান্সলেটার সারাদিনে কোন কোড ভাঙেনি কেন!

আমাকে একটা ব্যাপার আবার চেক করতে দাও, বলল মহিলা, রিপোর্টের দিকে চোখ পড়ে আছে। যা খুজছে পেয়ে গেল একটু পরই।

তোমার কথাই ঠিক। ট্রান্সলেটার পূর্ণ শক্তিতে চলছে।

তার মানে কী?

বুঝতে পারছি না। অপ্রত্যাশিত।

তুমি ডাটাটা দেখে নিতে চাও?

মহিলা তার দিকে বাঁকা চোখে তাকিয়ে থাকে। মিজ মিল্কেনের ক্ষেত্রে কোন প্রশ্ন তুলবে না কেউ একটা ব্যাপারে। ডাটা কখনো ভুল হয়না তার। ফিগার চেক করার সময় ব্রিঙ্কারহফ অপেক্ষা করে।

হাহ! অবশেষে চোখ তুলল সে, গতকালের স্ট্যাটাস ভালই দেখায়। দুশ সাইত্রিশটা কোড় ভেঙেছে। এম সি ডি আটশো চুয়াত্ত্বর ডলার। গড়ে প্রতিটা কোড ভাঙতে ছ মিনিটের কিছু সময় বেশি লাগে। শেষ যে কোডটা ট্রান্সলেটারে ঢোকে

থেমে গেল মিজ।

কী ব্যাপার?

মজার ব্যাপার।

মানে?

গত রাতের শেষ কোডটা দেয়া হয় এগারোটা সাইত্রিশে।

তাহলে?

তাহলে? ট্রান্সলেটার যেখানে ছ মিনিটে একটা কোড ভাঙে সেখানে শেষ কোডটা ভাঙেনি মাঝরাতেও। ব্যাপারটাতো

কী?

এ ফাইল? এটাই ট্রান্সলেটারে গতরাতে ঢোকানো হয়েছে?

হ্যাঁ।

এখনো তা ভাঙেনি। সময় দেখাচ্ছে ২৩:৩৭:০৮। কাল আর আজ মিলিয়ে।

হয়ত তারা দারুণ কোন ডায়াগনোসিস চালাচ্ছে।

আঠারো ঘন্টার কাজ? এ চিন্তা কি করা যায়? তার উপর কিউ ডাটা দেখাচ্ছে এটা আউটসাইডার ফাইল। স্ট্র্যাথমোরকে কল করতে হবে।

বাসায়? শনিবারের রাতে?

না। আমি স্ট্র্যাথমোরকে ভালভাবেই চিনি। সেই এসবের উপর নজরদারি করে। আমি বাজি ধরতে রাজি, এখনো এখানেই আছে। থামে সে, তাকায় ব্রিঙ্কারহফের চোখের দিকে, চল, ব্যাপারটা চেক করে দেখা যাক।

.

ব্রিঙ্কারহফ মিজের পিছনে পিছনে তার অফিসে গিয়ে চোকে। পাইপ অর্গানের মত বিগ ব্রাদারের কিবোর্ডে উড়ে চলে মহিলার হাত।

ক্লোজ ক্যাপশন ভিডিওর এ্যারেতে চোখ রাখে ব্রিঙ্কারহফ। দেয়ালজোড়া মনিটরে ক্রিপ্টোর চিহ্ন।

তুমি ক্রিপ্টোতে ঢু মারবে?

না। জবাব দিল মিজ, পারলে ভালই হত, কিন্তু ক্রিপ্টো একেবারে সিল করে দেয়া। এখানে কোন ভিডিও নেই। সাউন্ড নেই। নেই কিছুই। স্ট্র্যাথমোরের আদেশ। ট্রান্সলেটারের উপর যে নজর রাখতে পারি সেটাও ভাগ্য। স্ট্র্যাথমোর এটাও নিজের হাতে রাখতে চেয়েছিল। কিন্তু ট্রান্সলেটারের উপর কিছু দাবি রাখে ফন্টেইন।

ব্রিঙ্কারহফ অবাক চোখে তাকিয়ে থাকে, ক্রিপ্টোতে কোন ভিডিও নেই?

কেন? তুমি আর কার্মেন আরো একটু প্রাইভেসি চাচ্ছ নাকি?

চুপ করে থাকে ব্রিঙ্কারহফ।

আমি স্ট্র্যাথমোরের এলিভেটরের লগ দেখছি। চেক করল সে, এখানেই আছে। ক্রিপ্টোতে।

তার মানে স্ট্র্যাথমোর এখানে আছে, কোন সমস্যা নেই। তাই না?

সম্ভবত।

সম্ভবত?

তার সাথে যোগাযোগ করে ডাবল চেক করে নিতে হবে।

মিজ, সে একজন ডেপুটি ডিরেক্টর। আমার মনে হয় পুরো পরিস্থিতি তার আওতার ভিতরেই আছে। আমাদের আবার নাক গলানো-

ও, কামঅন চ্যাড- বাচ্চার মত কথা বলোনা। আমরা আমাদের কাজ করছি। আর আমি এও জানিয়ে দিতে চাই স্ট্র্যাথমোরকে যে বিগ ব্রাদার আমাদের সবার উপর নজরদারি করে। পৃথিবীকে বাঁচানোর জন্য তার আরো বড় বড় কাজ করার আগে একটু সাবধান হতে হবে।

সত্যি ভাবছ তাকে বিরক্ত করা উচিত?

আমি তাকে বিরক্ত করছি না। বলল মিজ। তুমি করছ।

অধ্যায় : ৪৮

কী! অবিশ্বাসের সুর মিজের কণ্ঠে, স্ট্র্যাথমোর বলছে আমাদের ডাটা ভুল?

ব্রিঙ্কারহফ নড় করে ফোনটা নামিয়ে রাখল।

স্ট্র্যাথমোর দাবি করছে ট্রান্সলেটার গত আঠারো ঘন্টা ধরে এক ফাইল নিয়ে বসে নেই?

পুরো ব্যাপারটা নিয়ে সে সন্তুষ্ট। ব্রিঙ্কারহফ স্বস্তির সাথে বলল, আমাকে নিশ্চয়তা দিয়েছে যে ট্রান্সলেটারের কাজে কোন গন্ডগোল নেই। জানিয়েছে এটা এখনো প্রতি ছ মিনিটে একটা করে কোড ব্রেক করছে। ধন্যবাদ দিয়েছে আমাদের উদ্বিগ্নতা দেখে।

মিথ্যা বলছে লোকটা। আমাদের সামনে মূলা ঝুলিয়ে রাখছে। দু বছর ধরে কাজ করি। সবকিছু আমার নখদর্পণে।

সবকিছুরই একটা প্রথমবার আছে।

আমি সব ডাটা দুবার করে চালাই।

যাক… তুমি নিশ্চই জান তারা কম্পিউটার নিয়ে কী বলে। তারা যখন ভয় পাচ্ছে না। সব ঠিক আছে, জেনে রাখ।

দিস ইজনট ফানি, চ্যাড! ডি ডি ও এইমাত্র ডিরেক্টরের অফিসের সাথে একটা মিথ্যাচার করল। আমি জানতে চাই, কেন!

ব্রিঙ্কারহফ হঠাৎ ভাবে, এ মহিলাকে ডেকে না আনলেই ভাল হত। মহিলা খুবই জটিল প্রকৃতির। সেই স্কিপজ্যাকের পর থেকেই সে যে কোন ব্যাপারে একটু সন্দেহ দেখা দিলেই দু বার করে চেক করবে। এটাই তার বৈশিষ্ট।

মিজ, আমাদের ডাটা যে ভুল না এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই। আলতোভাবে বলল ব্রিঙ্কারহফ, আই মিন- এ নিয়ে একটু ভাব। কোন একটা ফাইল ট্রান্সলেটারকে আঠারো ঘন্টার জন্য অচল করে দিবে? এমন কথা কে কোন কালে শুনেছে? বাসায় যাও। সময় বয়ে যাচ্ছে।

কাউন্টারের উপর রিপোর্টটা যে জোর দিয়ে মহিলা রাখল তাতে ভারি কিছু হলে ধড়াম করে আওয়াজ উঠত। আমি এ ডাটাকে বিশ্বাস করি। কিছু একটা বলছে, এতে কোন ভুল নেই।

শ্বাস ছাড়ল ব্রিঙ্কারহফ বড় করে। এমনকি ডিরেক্টরও মিজ মিল্কেনের উপর কথা বলে না। তার ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়ের কথাটা সর্বজনবিদিত।

কিছু একটা উঠে আসছে, বলল মহিলা, আর আমি বের করতে চাই সেটা কী!

অধ্যায় : ৪৯

বেকার নিজেকে তুলে নিল পথ থেকে। তুলে দিল একটা সিটে।

নাইস মুভ, ডিপশিট! বাচ্চা বাচ্চা ছেলেটা বলল, যার মাথার চুল তিনভাগে বিভক্ত।

তাকায় সে ছেলেটার দিকে। তাকায় আর সবার দিকে। বেশিরভাগের চুলই এমন কেন! কে জানে? প্রশ্ন করে দেখা যায়।

চুলের ব্যাপারটা কী?

লাল সাদা আর নীল?

নড করল বেকার। বাচ্চাটার ঠোঁটের উপরদিকের ক্ষত থেকে চোখ তুলে রেখেছে।

জুডাস ট্যাবু।

কোন মানে বুঝল না বেকার।

আরে, জুডাস ট্যাবুকে চেন না? সিড ভিসিয়াসের পর সবচে বড় পাঙ্ক। আজকের দিনে, এক বছর আগে তার মাথা গুড়া হয়ে গিয়েছিল। আজ সেই এ্যানিভার্সারি।

নড করল বেকার। কিছুই বোঝেনি সে।

যেদিন ট্যাবু সবাইকে ছেড়ে যায় সেদিন এমন ডিজাইন করা ছিল তার চুলে। তার যত ভক্ত আছে সবাই আজ তাই চুলকে লাল সাদা নীলে সাজিয়েছে।

অনেকক্ষণ কোন কথা বলল না বেকার। বাসের গ্রুপটার দিকে চোখ ফেরায় সে। বেশিরভাগই পাঙ্ক। তাদের বেশিরভাগ আবার তাকিয়ে আছে তার দিকে।

প্রত্যেক ফ্যান আজকের দিনে লাল-সাদা-নীল চুল নিয়েছে।

দেয়ালের ড্রাইভার এ্যালার্ট কর্ডে টান দিল বেকার নেমে যাবার সময় এসেছে। আবার টানল সে। কিছুই হল না।

তৃতীয়বারের মত টানল। তথৈবচ! কোন কাজ হল না।

তারা বাস টুয়েন্টিসেভেনে নিজেদেরকে ডিসকানেক্ট করে রাখে। তাই আমরা তাদের সাথে ইয়ে করি না। আরো একটা প্রচলিত চূড়ান্ত গালি দিয়ে বলল বাচ্চাটা।

ঘুরে দাঁড়াল বেকার। তার মানে আমি নামতে পারব না?

লাইনের শেষপ্রান্তে যাবার আগে নয়।

.

স্প্যানিশ কান্ট্রি রোডে চলে এল বাস পাঁচ মিনিট পর। পিছনের বাচ্চাটার দিকে ফিরল বেকার, এ জিনিস কি কখনো থামবে?

মাত্র কয়েক মাইল দূরেই।

কোথায় যাচ্ছি আমরা?

তার মানে তুমি জান না?

শ্রাগ করল বেকার।

ওহ শিট! ভাল লাগবে তোমার ব্যাপারটা।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *