৩.
আমজাদ প্রায় চার মাস বিথীকে পড়াচ্ছে। প্রিটেস্টে ও টেষ্টে বিথী ভালো রেজাল্ট করেছে। এখন ফাইনাল পরীক্ষা চলছে। বিথীর বাবা রজত খুশী হয়ে আমজাদকে এখন দুহাজার টাকা বেতন দিচ্ছেন।
একমাস পরে বাসা ভাড়া নিয়ে মাকে নিয়ে আসবে বলে এলেও আমজাদ প্রথম মাসের টিউসনির বেতন পেয়ে চিন্তা করেছিল, দেড় দু’হাজার টাকার কমে ভদ্র মহল্লায় দুই রুমের বাসা ভাড়া পাওয়া যাবে না। মা যা ধার্মিক মেয়ে, সেপারেট বাথরুম ও কিচেন না হলে থাকতেই চাইবে না। দেড় দু’হাজার টাকা বাসা ভাড়া দিলে বাকি টাকায় দু’জনের চলবে? তাই তখন মাকে নিয়ে আসে নি। অবশ্য চিঠি দিয়ে মাকে সে কথা জানিয়েছে। আরো জানিয়েছে, দু’তিন মাস পরে নিয়ে আসবে।
বিথীর পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরের দিন মাকে নিয়ে আসার কথা বলার জন্য তাদের বাসায় গেল।
আজ সপ্তাহিক ছুটি। রজত বাড়িতে ছিলেন। সবাই একসঙ্গে নাস্তা খেয়ে চা খাওয়ার সময় রজত বললেন, বিথী খুব ভালো পরীক্ষা দিয়েছে বলল। আপনার কি মনে হয়?
আমজাদ বলল, আশা করি, ওর রেজাল্ট ইনশাআল্লাহ্ খুব ভালো হবে।
আপনার সঙ্গে যতবার আলাপ করেছি, আপনি কথায় কথায় ইনশাআল্লাহ, আল্লাহ্ সবকিছু করার মালিক বলেন কেন?’
আপনার কথার উত্তর দেয়ার আগে কয়েকটা কথা জিজ্ঞেস করতে চাই।
বেশতো, কি জানতে চান বলুন।
আল্লাহ্ যে এক ও তিনি যে ভূমণ্ডল ও আকাশমণ্ডলী এবং এতদউভয়ের মধ্যে যা কিছু আছে সবকিছু সৃষ্টি করেছেন, তা কী বিশ্বাস করেন?
আমি ওসব নিয়ে কখনো চিন্তা করি নি।
আমজাদ স্বাতিকে জিজ্ঞেস করল, আপনি করেন?
করি।
কিন্তু আমি আপনাদের বেদ, উপনিষদ, গীতা ও অন্যান্য অনেক ধর্মের বই । পড়েছি। বেদে সবকিছু একজন সৃষ্টি করেছেন উল্লেখ থাকলেও বহু দেব-দেবীর উপাসনা আপনারা করেন। আমি এ ব্যাপারে আর কিছু বলতে চাই না। তারপর রজতের দিকে তাকিয়ে বলল, আচ্ছা আমি যদি বলি এই বিল্ডিংটা আপনা থেকে তৈরী হয়েছে, তা কি কেউ বিশ্বাস করবে? করবে না। বরং আমাকে পাগল বলবে। তা হলে এই ভূমণ্ডল ও আকাশমণ্ডলীর নিশ্চয় সৃষ্টিকর্তা আছেন। যারা একাধিক সৃষ্টিকর্তা আছেন বিশ্বাস করে, তারাও ভুল করে। কারণ একাধিক সৃষ্টিকর্তা থাকলে এত নিখুঁত সৃষ্টি ও নিখুঁত নিয়মানুবর্তিতায় সৃষ্টিজগৎ চলত না।
রজত বললেন, আমি ধর্ম যেমন বিশ্বাস করি নি তেমনি ওসব ব্যাপারে পড়াশোনাও করি নি। তবে মানব ধর্ম অর্থাৎ মানবতায় বিশ্বাসী। যা সত্য ও ন্যায় সেটাই হল আসল ধর্ম। যারা ধর্মের মুখোশ পরে সত্য ও ন্যায়কে পদদলিত করে অমানুষের মতো কাজ করে, তাদেরকে দুনিয়ার সকল মানুষ ধার্মিক বললেও আমি তাদেরকে শয়তান মনে করি। তাদেরকে ঘৃণা করি।
আপনি যদি কুরআন হাদিস ও নবী (দঃ) ও তার পবিত্র সাহাবীদের জীবনী ও ইসলামের সঠিক ইতিহাস পড়াতেন, তা হলে বুঝতে পারতেন আপনার কথাগুলো ইসলামের কথা। ইসলাম এমন একটা ধর্ম, যেখানে মানব ধর্মকে অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। সেখানে এতটুকু অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয় নি। যারা ধর্মের মুখোশ পরে মানবতাকে অবমাননা করে, তারা ইসলামিক পরিভাষায়। মুনাফেক। মুনাফেকদের অন্তরে থাকে এক জিনিস আর মুখে প্রকাশ করে অথবা কাজ করে তার বিপরীত। এদের ব্যাপারে আল্লাহ কুরআন পাকে বলিয়াছেন “আখেরাতে এরাই হবে জাহান্নামী। আর জাহান্নাম হল অতি নিকৃষ্ট স্থান। যারা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে তাদেরকে বলে মুসলমান। আর মুসলমান শব্দের অর্থ হল মান্য করা। অর্থাৎ যারা ইসলামের বিধি-নিষেধ মেনে চলে তাদেরকে মুসলমান বলে। শুধু তাই নয়, ইসলাম যে কত বড় মানবতার ধর্ম, সে ব্যাপারে ছোট্ট একটা উদাহরণ দিচ্ছি, আমাদের নবী হযরত মুহাম্মদ (দঃ) বলিয়াছেন, “তুমি কোনো ফল বাড়িতে নিয়ে এলে পাশের বাড়িতে সামান্য হলেও দেবে। যদি দেয়ার মতো সামর্থ না থাকে, তা হলে ফলের খোসা জানালা দিয়ে বাইরে না ফেলে নিজের উঠোনে পুঁতে দেবে। নচেৎ পাশের বাড়ির ছেলেমেয়ে খোসা দেখে তারা তাদের মা-বাবার কাছে ঐ ফলের বায়না ধরবে। হয়তো তাদের বাবার ফল কেনার সমর্থ নেই।” হাদিসে আছে, আমাদের নবী (দঃ) বলিয়াছেন, “যখন তোমরা তরকারী রান্না কর। তাহার সুরুয়া বা ঝোল বৃদ্ধি করিও এবং তোমরা প্রতিবেশীকে উহা হইতে কিঞ্চিৎ দিও।” [বর্ণনায় হযরত আবুজর (রাঃ)—মুসলিম]
আর নারীদের উদ্দেশ্য করে নবী করিম (দঃ) বলিয়াছেন, হে মুসলমান মহিলাগণ, কোনো প্রতিবেশিনী তাহার প্রতিবেশীকে ছাগলের খুর রাঁধা হইলেও উপহার দিতে যেন কষ্ট বোধ না করে। [বর্ণনায় : হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) বুখারী, মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিযী]
মুমীন মুসলমানের জীবন-যাপন কুরআন ও হাদিসের দ্বারা সুনিয়ন্ত্রিত হয়। ফলে তাহার নজর (দৃষ্টি) ক্ষুদ্র নয়। তাহার সহানুভূতি, ভালোবাসা ও প্রেম কোনো নির্দিষ্ট গন্ডিতে সীমাবদ্ধ থাকে না, (২) মুমীন মুসলমান আত্মসম্মান জ্ঞান-সম্পন্ন। মুশরেক (আশাবাদী) সৃষ্টির নিকট মাথা নত করে এবং মানুষকে ভয় করে চলে, (৩) অপরপক্ষে মুমীন মুসলমান গর্বিত ও অহঙ্কারী হতে পারে না, (৪) সে বুঝে আত্মার পবিত্রতা ও সৎ কাজ ছাড়া অন্য উপায় নাই, (৫) মুমীন মুসলমান কোনো অবস্থাতেই নিরাশ বা ভাগ্নোৎসাহ হয় না (৬) সে আল্লাহর পথে বা জেহাদে নির্ভীক ও পরম সাহসী, (৭) হিংসা, পরশ্রীকাতরতা, লোভ ও মোহ মুমীন মুসলমানের হৃদয় থেকে বের হয়ে যায়, (৮) তার সর্বাধিক গুণ আল্লাহ ও তার রাসুল (দঃ) এর বিধান ও নির্দেশের আজ্ঞাধীন হওয়া, ইহার নামই ইসলাম আর এরাই হল প্রকৃত মুমীন মুসলমান।
স্বাতি বললেন, এগুলোই যদি মুসলমানদের পরিচয় হয়, তা হলে সারা পৃথিবীতে তারা এত অবহেলিত কেন? কেন আজ তারা এত অনুন্নত? কেন তারা আজ এত নিপীড়িত?
আমজাদ ছোট্ট একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে বলল, তারা তাদের পরিচয় জানে না। জানার চেষ্টাও করে না। যদি জানত, তা হলে আজ তারা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জাতিতে পরিণত হত। প্রমাণ পেতে হলে কুরআন, হাদিস নবী ও সাহাবীদের জীবনী ও ইসলামের ইতিহাস পড়তে হবে। নবী (দঃ) এর যুগ থেকে ছ’শ বছর পর্যন্ত ইসলামের স্বর্ণযুগ বলা হয়। এই ছ’শ বছরের ইতিহাস পড়লে জানা যায়, ঐ সময়ে মানুষ কত সুখ-স্বাছন্দে ও নির্ভয়ে বসবাস করেছে। আজ সারা দুনিয়াতে ছাপ্পান্নটা মুসলিম দেশ। সেসব দেশের শাসনকর্তাদের মধ্যে একতা নেই। যে যার গদী রক্ষার জন্য ইসলামের বিধি বিধান ত্যাগ করে বিধর্মীদের সরণাপন্ন হচ্ছে। বিধর্মীদের কাছ থেকে সমরাস্ত্র নিয়ে একে অপরের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত। আর এই সুযোগে ইহুদী খ্রিষ্টানরা পরিকল্পিতভাবে তাদের উপর আধিপত্য খাটাচ্ছে। আল্লাহ কুরআন পাকে বর্ণনা করিয়াছেন–”স্থলভাগে ও জলভাগে মানুষের স্বহস্থকৃতসমূহের দরুন নানাপ্রকার বালা-মসীবত-বিপদ-আপদ ছড়াইয়া পড়িতেছে, যেন আল্লাহ তাহাদিগকে তাহদের (মন্দ) কাজের কিয়দংশের স্বাদ উপভোগ করান, যাহাতে তাহারা (উহা হইতে) ফিরিয়া আসে।” [সূরা-রূম, আয়াত্ত–৪১, পারা-২১]
আচ্ছা রজতদা, আপনি ছেলেবেলায় অথবা কিশোর বয়সে মাহফিলে যান নি? অথবা আপনার মা, বাবা, বা আত্মীয়স্বজনদেরকে ধর্মের বিধি বিধান মেনে চলতে দেখেন নি?
ওয়াজ মহফিলে গেছি এবং ওয়াজ শুনে মনে হয়েছে, মৌলবীরা মধ্যযুগের মুসলমানদের অলিক কল্পকাহিনী শোনাচ্ছেন। আর মা বাবা আত্মীয়স্বজনদের মধ্যে অনেককে নামায, রোযা, হজ্জ, যাকাত পালন করতে দেখলেও তাদের হিংসা বিদ্বেষ ও চরিত্রহীনতার কথা জেনে তাদেরকে ভণ্ড মনে হয়েছে। তবে আপনার সঙ্গে পরিচয় হয়ে মনে হচ্ছে, আপনি তাদের ব্যতিক্রম। যাই হোক, আপনার যদি আরো কিছু বলার থাকে, পরে আলাপ করা যাবে। এখন আমি একটু বেরোব।
আমি কিন্তু একটা কথা বলতে এসেছিলাম।
বলুন।
বিথীর তো পরীক্ষা শেষ। ওকে আর পড়াতে আসতে হবে কি?
স্বামী বলার আগে স্বাতি বললেন, নিশ্চয় আসবেন। রেজাল্ট বেরোন পর্যন্ত আপনি ওকে অঙ্ক ও ইংরেজিতে পাকা করে ফেলবেন। ও যেন ইংরেজিতে কথা বলতে পারে সে ব্যাপারেও চেষ্টা করবেন। আর কলেজে এ্যাডমিশন পরীক্ষায় যেন ভালোভাবে কৃতকার্য হতে পারে। আমরা আপনার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েই রেখেছি। এই তিন-চার মাস দু’হাজার দিলে ও কলেজে এ্যাডমিশন নেয়ার পর আড়াই হাজার দেব।
আমজাদ বিথীর দিকে এক পলক তাকিয়ে বুঝতে পারল সে আনন্দিত মুখে এক দৃষ্টে তার দিকে তাকিয়ে আছে। পাঁচশ টাকা বেতন বাড়বে শুনে মনে মনে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে বলল, আমি কয়েকদিনের জন্য বাড়ি যেতে চাই।
এবার রজত বললেন, বেশতো যাবেন। কদিন থাকবেন?
এক সপ্তাহের মধ্যে ইনশাল্লাহ ফিরে আসব।
রজত হেসে উঠে বললেন, আপনার এই ইনশাল্লাহ কথাটার অর্থ কি বলুন তো?
মুসলমান হিসাবে আমি বিশ্বাস করি, আল্লাহর ইচ্ছা ব্যতীত কারো কিছু করার ক্ষমতা নেই। ইনশাআল্লাহর অর্থ হল, “আল্লাহর রাজি থাকলে তাই প্রত্যেক মুসলমানের উচিত ভবিষ্যতে কোনো কাজ করার কথা বলার আগে ইনশাল্লাহ বলা। অর্থাৎ সব সময় আল্লাহকে স্মরণ রাখা। তা হলে শয়তান মানুষের মনে কুপ্রবৃত্তি জাগাতে পারবে না।
ঠিক আছে, এব্যাপারেও আপনার সঙ্গে পরে আলাপ করব, এই কথা বলে রজত ভিতরের রুমে চলে গেলেন।
আমজাদকে উদ্দেশ্য করে স্বাতি বলল, আপনি বিথীর সাথে কথা বলুন, আমি একটু পরে আসছি।
মা চলে যাওয়ার পর বিথী বলল, আপনি ভালো চাকরির চেষ্টা করছেন না কেন?
আমজাদ মৃদু হেসে বলল, তোমার বুঝি তাই ধারণা? আসলে আজকাল। ভালো চাকরি পাওয়া খুব দুষ্কর।
বাবা একজন ব্যবসায়ী। যদি বলেন, তাকে আপনার কথা বলব।
তা বলতে পার, তবে আমার মনে হয় কোনো কাজ হবে না।
আপনার এরকম মনে হল কেন? বাবার অফিসেতো অনেক লোক চাকরি করে।
ঠিক আছে, তোমাকে তো বলতে বললাম।
এমন সময় স্বাতি ফিরে এসে বসে মেয়েকে জিজ্ঞেস করলেন, তোর স্যার কাকে কি কথা বলতে বললেন?
বিথী বলল, স্যার উচ্চ ডিগ্রী নিয়েও একটা ভলো চাকরি পাচ্ছেন না। তাই বাবাকে চাকরির কথা বলতে বললেন।
তোকে কিছু বলতে হবে না। যা বলার আমি বলব। তারপর আমজাদকে বললেন, রজতের কাছে শুনেছি, মা ছাড়া আপনার কেউ নেই। তিনি ভাইয়ের বাড়িতে থাকেন। ঢাকায় নিয়ে এসে রাখেন না কেন?
এতদিন ইচ্ছা থাকলেও সামর্থ ছিল না। এবার মাকে নিয়ে আসার জন্যই যাচ্ছি।
বাসা ভাড়া নিয়েছেন।
না। আজ কালের মধ্যে বাসা ভাড়া ঠিক করে যাব।
একদিন আমাদের বাসায় আপনার মাকে নিয়ে আসবেন।
ইনশাআল্লাহ্ নিয়ে আসব বলে আমজাদ তাদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে এল।
দু’দিন অনেক খোঁজাখুঁজি করে মধুবাগেই টিনসেড দু’রুমের বাসা ভাড়া নিল, তারপর গণি ভাইয়ের অফিসে গিয়ে মাকে নিয়ে আসার কথা বলে এক সপ্তাহের ছুটি নিল।
.
বাড়িতে পৌঁছে মাকে গেট খুলতে দেখে সালাম দিয়ে কদমবুসি করে বলল, তুমি ভালো আছ মা?
ছেলের জামা কাপড় ও চেহারায় জৌলুসী দেখে সালমা খাতুন আনন্দিত হয়ে বললেন, আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। আয়, আমার ঘরে গিয়ে বসবি।
বাসার সবকিছু আগের মতো থাকলেও কিছু যেন একটা হয়েছে বলে মনে হল আমজাদের।
মায়ের ঘরে এসে বসার পর জিজ্ঞেস করল, মামা মামিকে দেখছি না কেন?
পরে শুনিস সব কিছু, এখন এতটুক শুনে রাখ ইসমাঈল জেলে আছে। তোর মামা তাকে ছাড়াবার তদারকি করতে গেছে। আর তোর মামি স্বামীর সঙ্গে রাগারাগি করে বাপের বাড়ি চলে গেছে। তুই হাত মুখ ধুয়ে নে, আমি নাস্তা নিয়ে আসি বলে সালমা খাতুন বেরিয়ে গেলেন।
ইসমাঈলের যে এরকম কিছু হবে গতবারে এসে বুঝতে পেরেছিল। তাই কবে গেল কেন গেল জিজ্ঞেস করতে গিয়েও করল না।
কিছুক্ষণ পর সালমা খাতুন নাস্তা নিয়ে ফিরে এলেন।
আমজাদ খেতে শুরু করে বলল, ইসমাঈল জেলে গেল কেন?
ও হীরোইনের ব্যবসা করত। মাস দুয়েক আগে এক রাতে পুলিশ ঘর তল্লাসী করতে এসে ওর খাটের নিচে এক কেজী হীরোইন পেয়ে ধরে নিয়ে গেছে। সেই থেকে জেলে আছে।
মামা ছাড়াবার ব্যবস্থা করেন নি?
করে নি আবার। পুলিশরা অনেক টাকা চেয়েছিল। অত টাকা তোর মামা পাবে কোথায়?
কেন? ইসমাঈল তো মাসে দশ বিশ হাজার টাকা রোজগার করত?
রোজগার করলে কি হবে? তোর মামা মামিকে সংসার খরচ দিত। বাকি টাকায় মদ খেত, জুয়া খেলত।
তা মামি রাগারগি করে বাপের বাড়ি চলে গেলেন কেন?
তোর মামি বাপের অনেক সম্পত্তি পায়। তোর মামা তাকে বলেছিল তা থেকে কিছু বেঁচে টাকা এনে দিতে ছেলেকে ছাড়াবার জন্য। তোর মামি রাজি হয় নি। তাই তোর মামা রাগারাগি করেছিল।
আমি বাসা ভাড়া করে তোমাকে নিয়ে যেতে এসেছি।
তা আমি বুঝতে পেরেছি। কিন্তু তোর মামা নেই। তাকে একা ফেলে যাই কি করে?
ও নিয়ে তুমি চিন্তা করো না। রাগ করে মামি এর আগেও অনেকবার বাপের বাড়ি চলে গিয়েছিলেন। কিছুদিন পর আবার ফিরেও এসেছেন। এবারও তাই করবেন?
তুই কদিন থাকবি?
বড় জোর চার পাঁচ দিন।
ভালো চাকরি পেয়েছিস বুঝি?
না। আগের চাকরি করছি। সেই সাথে টিউশনী করছি।
দুপুরে খাওয়ার পর ঘুমিয়ে পড়েছিল আমজাদ। বিকেলে আসরের নামায পড়ে ট্যাক্সি ক্যাবে শাহিনের খোঁজ করল।
ম্যানেজার বলল, শাহিন এখানে আর চাকরি করে না। নিজেই ট্যাক্সি নামিয়েছে। জাফরের গ্যারেজে গেলে তার খোঁজ পাবেন।
জাফরের গ্যারেজ আমজাদ চেনে। এম. এস. সি. পরীক্ষার পর গাড়ি চালানো ও গাড়ি সারানো শেখার জন্য এই গ্যারেজে তিন মাস কাজ করেছে। তখন জাফরের বয়স ছিল পঞ্চাশ পঞ্চান্ন। আমজাদ তাকে নানা ডাকত। এখন তার বয়স ষাটের উপর। কিন্তু শরীরের গঠন ভালো হওয়ায় এত বয়স জানা যায় না। গতবারে এসে সময়ের অভাবে তার সঙ্গে দেখা করতে পারে নি।
আমজাদ গ্যারেজে এসে জাফরের সঙ্গে সালাম বিনিময় করে জিজ্ঞেস করল, কেমন আছেন নানা?
জাফর সালামের উত্তর দিয়ে বলল, আল্লাহ্ খুব ভালো রেখেছেন। তা ভাই তোমার খবর বল। শুনলাম, তুমি ঢাকায় চাকরি করছ। তা মাকে এখানে ফেলে রেখেছ কেন? তোমার মামাত ভাইয়ের খবর নিশ্চয় জেনেছ?
জি, জেনেছি। মাকে নিয়ে যেতে এসেছি।
শুনে খুশী হলাম। তোমাকে মানুষ করার জন্য তোমার মা অনেক কষ্ট করেছে। দোয়া করি, তাকে সুখী করার তওফিক আল্লাহ যেন তোমাকে দেন।”
আপনার দোয়া যেন আল্লাহ্ কবুল করেন। তারপর বলল, নানা, শাহিনকে এখন কেথায় পাব বলতে পারেন?
তাকে এখন পাবে না। গতকাল সে প্যাসেঞ্জার নিয়ে ঢাকা গেছে, আগামীকাল তাদেরকে নিয়ে ফিরবে। তবে কখন ফিরবে বলতে পারছি না? তা কবে মাকে নিয়ে যাবে?
চার পাঁচ দিন পর। এবার আসি নানা।
সে কী? কতদিন পর এলে। কিছু না খেয়ে চলে যাবে? তারপর একজন কর্মচারীকে ডেকে চা নাস্তা আনতে দিলেন।
মাগরিবের নামায পড়ে ঘরে ফিরে দেখল, মামা মায়ের সঙ্গে কথা বলছে। আমজাদ সালাম দিয়ে কদমবুসি করে বলল, মামা, কেমন আছেন।
জহির উদ্দিন একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে বললেন, আর আমাদের থাকা না থাকা। আজ দু’মাস হয়ে গেল টাকার জন্য ছেলেটাকে জেল থেকে বের করতে পারলাম না। কবে পারব তাও জানি না। আর বের করেই বা কি হবে? জেল। থেকে বেরিয়ে আবার তো ঐ কাজই করবে? ওর জন্য কারো কাছে মুখ দেখতে পারি না।
ওকে আপনারা ছোটবেলা থেকে শাসন করেন নি। নিজেরা যেমন ধর্ম কর্ম করেন নি। ওকেও তেমনি সেসব শিক্ষা দিয়ে মানুষ করেন নি। এখন হা-হুঁতাশ করলে কি হবে? ইসমাঈল আপনাদের একমাত্র ছেলে, যেমন করে তোক বের করার ব্যবস্থা করুন। তারপর না হয় আমি ওকে ঢাকায় নিয়ে গিয়ে কিছু একটা। ব্যবস্থা করব।
বুবু বলল, তুমি তাকে নিয়ে যেতে এসেছ, কয়েকদিন থাকবে তো?
চার পাঁচ দিন থাকব, এর মধ্যে গিয়ে মামিকে নিয়ে আসুন। এতদিনে তার রাগ পড়ে গেছে।
জহির উদ্দিন আবার একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে বললেন, তা ছাড়া তো আর উপায় দেখছি না।
রাতে ঘুমাবার সময় সালমা খাতুন ছেলের রুমে এসে তাকে একটা ভিজিটিং কার্ড দিয়ে বললেন, তুই চলে যাওয়ার পর ঘর ঝাড় দেয়ার সময় পেয়েছি। তোর চিঠি পেয়ে ভেবেছিলাম, অফিসের ঠিকানায় ডাকে পাঠিয়ে দেব। কিন্তু খুঁজে পাই নি। আজ তোর বই-এর তাক গুছাতে গিয়ে একটা বইয়ের ভেতর পেয়েছি।
সেবারে ঢাকায় ফিরে আমজাদ আসিফ সাহেবের সঙ্গে দেখা করার জন্য এই কার্ডটা পকেটে পায় নি। ভেবেছিল, আসার পথে টাকা বের করার সময় হয়তো কোথাও পড়ে গেছে। এখানে পড়ে গেছে ভাবতেই পারে নি।
এবারে আসার আগে একটা অফিস ব্যাগ কিনেছে। কার্ডটা তার ভিতরের পকেটে রেখে বলল, জান মা, গতবারে আসার সময় এই কার্ডের মালিক আমি চাকরি খুঁজছি শুনে এটা দিয়ে বলেছিলেন দেখা করতে। ঢাকায় গিয়ে কার্ডটি খুঁজে পাই নি।
এবারে গিয়ে দেখা করবি। আল্লাহ্ রাজি থাকলে উনি তোকে চাকরি দিতে পারেন। এবার ঘুমিয়ে পড়। আমি যাই বলে সালমা খাতুন চলে গেলেন।
কার্ডটা দেখেই আসিফ সাহেবের মেয়ে দুটোর কথা মনে পড়ল। মা চলে যাওয়ার পর গাড়ির মিররে তার দিকে ছোট মেয়েটির একদৃষ্টি তাকিয়ে থাকার ও হাসি উপহার দেয়ার কথা মনে পড়তে ভাবল, ঢাকায় ফিরে প্রথমে আসিফ। সাহেবের সঙ্গে দেখা করবে।
পরের দিন সকালে নাস্তা খেয়ে বেরিয়েছে এমন সময় শাহিনকে আসতে দেখে সালাম ও কুশল বিনিময় করে বলল, কাল এসেই তোর খোঁজে ট্যাক্সি ক্যাবে গিয়েছিলাম। সেখানে শুনলাম তুই নিজেই ট্যাক্সি নামিয়েছিস।
হ্যাঁ, আল্লাহ্ আমার মনের আশা পূরণ করেছেন। হোটেলে চল, যা খেতে চাইবি তাই খাওয়াব।
হাঁটতে শুরু করে আমজাদ বলল, এখন তা হলে ভালোই কামাচ্ছিস?
হ্যাঁ, আল্লাহর রহমতে ভালোই কামাচ্ছি।
কী ব্যাপার বলতো? কথায় কথায় আল্লাহর নাম নিচ্ছিস?
খুব অবাক হচ্ছিস, তাই না?
অবাক হওয়ারই তো কথা। গতবারে একবারও তোকে আল্লাহর নাম নিতে শুনি নি।
গতবারে শুনিস নি তো কি হয়েছে? সবকিছুতে আল্লাহর নাম নেয়াই তো প্রত্যেক মুসলমানের উচিত।
আমজাদ বলল, এখন আর তা হলে দু’নাম্বার মাল গাড়িতে করে নিয়ে যাস নি?
না। আল্লাহর কাছে তওবা করে মাফ চেয়ে ঐ কাজ ছেড়ে দিয়েছি।
আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে আমজাদ বলল, তুই যে ট্যাক্সী নামিয়েছিস, এত টাকা পেলি কোথায়?
বাবা জমি বিক্রি করে পঞ্চাশ হাজার দিয়েছিল। সেটা জমা দিয়ে মাসে মাসে কিস্তিতে দিচ্ছি। তিন বছরের মধ্যে শোধ হয়ে যাবে। আমার কথা রেখে এবার তোর কথা বল।
আমার কথা নতুন করে আর কি বলব? আজও ভালো কিছু পাই নি। সেই আগের চাকরিই করছি। তবে একটা ভালো টিউশনী করছি। মাসে হাজার দুই পাই।
গতবারে আসার সময় যে লোকটা কার্ড দিয়ে দেখা করতে বলেছিলেন, ওনার কাছে যাস নি?
কার্ডটা এখানে ফেলে গিয়েছিলাম। তাই যাওয়া হয় নি। আজ মা কার্ডটা দিল। ভেবেছি, ঢাকায় গিয়েই ওনার সঙ্গে দেখা করব।
তাই করিস। আমার মনে হয় তিনি তোকে ভালো চাকরি দেবেন। আছিস তো ক’দিন?
চার পাঁচদিন আছি।
তোর মামাত ভাই জেলে সেকথা নিশ্চয় শুনেছিস?
হ্যাঁ, শুনেছি। ছেলের জন্য মামা খুব ভেঙ্গে পড়েছেন। আমার টাকা থাকলে যেমন করে হোক ওকে জেল থেকে বের করতাম।
ভাগ্যিস আল্লাহ্ আমাকে আগেই হেদায়েত দিয়েছেন, নচেৎ আমারও হয়তো একদিন ওর মতো অবস্থা হত।
আমজাদ একটা কাগজে ঠিকানা লিখে তার হাতে দিয়ে বলল,ঢাকা গেলে এখানে আসবি।
বাসা ভাড়া নিয়েছিস?
হ্যাঁ, মাকে নিয়ে যেতে এসেছি।
ঠিক আছে, ঢাকায় গেলে তোর বাসায় যাব। বিকেলে যশোহরের একটা ট্রিপ আছে, যাবি না কি?
তোর প্যাসেঞ্জার আপত্তি করবে না?
সেটা আমি বুঝবো। তুই যাবি নাকি বল?
যাব।
তিনটের সময় রেডি থাকিস, তুলে নেব।
প্যাসেঞ্জার বুড়ো দম্পতি। তারা পিছনের সিটে বসেছে। ওরা দু’জন সারা রাস্তা গল্প করে কাটাল।
প্যাসেঞ্জার নামিয়ে ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে এসে শাহিন বলল, এখানে ঘণ্টাখানেক প্যাসেঞ্জারের জন্য অপেক্ষা করব। ভাগ্য ভালো থাকলে পেয়ে যেতে পারি।
আমজাদ বলল, ঠিক আছে, তুই এখানে থাক, আমি একটু মার্কেট থেকে। দু’একটা জিনিস কিনে আনি।
বেশতো যা, এক ঘণ্টার বেশি দেরি করবি না কিন্তু।
আমজাদ রাস্তা পার হয়ে মার্কটে ঢুকতে যাবে, এমন সময় পেছন থেকে সুরেলা মেয়েলী কণ্ঠ কানে এল–
এই যে শুনুন।
যদিও আমজাদের মনে হল, এখানে তার পরিচিত কোনো মেয়ে নেই যে, তাকে ডাকবে। তবু মেয়েটির মধুর কণ্ঠস্বর শুনে পিছনে না তাকিয়ে পারল না। তাকিয়েই অবাক।
মেয়েটি মৃদু হেসে বলল, চিনতে পারছেন?
নিজের অজান্তে আমজাদের মুখ দিয়ে বেরিয়ে গেল, আপনাকে একশ বছর পরে দেখলেও চিনতে পারব।
মেয়েটির সঙ্গে তারই বয়সী দুতিনটে মেয়ে রয়েছে দেখে আমজাদ সামলে নিয়ে বলল, সেই থেকে এখানে আছেন, না আবার এসেছেন?
এখানে আমার ফুপুর বাড়ি। বছরে দু’একবার বেড়াতে আসি। দু’দিন হল এসেছি। তা আপনি এখানে কেন? আপনার বাড়ি তো সাতক্ষীরা?
বন্ধুর সঙ্গে এসেছি।
বাবা আপনাকে কার্ড দিয়ে দেখা করতে বলেছিলেন, দেখা করেন নি কেন?
আপনি জানলেন কি করে?
বাবার কাছে জেনেছি। আমার প্রশ্নের উত্তর দিলেন না যে?
কার্ডটা হারিয়ে ফেলেছিলাম।
হারিয়ে ফেলেছিলাম বললেন, এখন তা হলে পেয়েছেন?
হ্যাঁ, বাড়িতেই ফেলে গিয়েছিলাম। এবারে আসার পর মা দিয়েছেন।
ঢাকায় ফিরছেন কবে?
কয়েকদিনের মধ্যে।
আশা করি, বাবার সঙ্গে দেখা করবেন?
ইনশাআল্লাহ্ করব। কিছু মনে করবে না। আমি আমজাদ, আপনি?
আনান।
ধন্যবাদ, এবার আসি।
আনানও ধন্যবাদ জানিয়ে বলল, চলুন না, একটু গলা ভেজান যাক।
মাফ করবেন, সময় নেই। বন্ধু অপেক্ষা করছে। তারপর আমজাদ বিদায় নিয়ে গাড়ির কাছে ফিরে এল।
শাহিন বলল, কিরে, মার্কেটে গেলি কিছু কিনবি বলে, হাতে কিছু দেখছি না যে?
মার্কেটে ঢোকার আগে এমন একজনের সঙ্গে দেখা হল, যাকে দেখে কেনাকাটার কথা ভুলে গেলাম।
তাই নাকি?
হ্যাঁরে তাই। কি জানিস, তার সঙ্গে এখানে দেখা হবে কল্পনাই করি নি। ভাগ্যিস তোর সঙ্গে এসেছিলাম।
কী ব্যাপার বলতো? তোকে খুব উফুল্ল দেখাচ্ছে? কার সঙ্গে দেখা হল?
আরে ঐ যে গতবারে আসার সময় একজন নামি-দামি সাহেব ও দু’মেয়েকে লিফট দিলি, সেই দু’মেয়ের মধ্যে ছোটটার সঙ্গে।
বলিস কি রে? ঐ মেয়ে তোর সঙ্গে কথা বলল?
শুধু কথা নয়, তার বাবার সঙ্গে কেন দেখা করি নি সে কথা জিজ্ঞেস করে বলল, এবারে ঢাকায় গিয়ে যেন দেখা করি।
আমার কি মনে হচ্ছে জানিস?
বল, কি মনে হচ্ছে।
তোর উপর মেয়েটার নজর পড়েছে।
মানে?
এই সামান্য কথার মানে বুঝলি না? আরে বোকা, তোকে মেয়েটা পছন্দ করে ফেলেছে।
ধ্যাৎ, কি যা তা বকছিস?
যা তা বকছি নয়, দেখিস, একদিন আমার কথা ফলবে।
এমন সময় দু’জন ভদ্রলোক এসে বললেন, সাতক্ষীরা যাবেন?
শাহিন বলল, যাব, গাড়িতে উঠুন।
.
আমজাদ বিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার পর ফুপাতো বোন সুবর্ণ আনানকে জিজ্ঞেস করল, কেরে ছেলেটা?
তোরা শুনিস নি? ছেলেটা তো নিজেই বলল, তার নাম আমজাদ।
তাতো শুনেছি; কিন্তু তুই উপযক হয়ে যেভাবে তার সঙ্গে আলাপ করলি, যেন কত দিনের পরিচিত।
আনান হেসে উঠে বলল, শোন, ওর সঙ্গে আজই প্রথম আলাপ হল।
সুবর্ণার চাচাতো বোন অঞ্জলী বলল, আজ প্রথম আলাপ হতে পারে, আগে, নিশ্চয় পরিচয় হয়েছে। তা না হলে অপরিচিতের সঙ্গে কেউ প্রথম আলাপ ঐভাবে করতে পারে?
না, আগে পরিচয় হয় নি। তবে একে অপরকে দেখেছি মাত্র। তারপর গতবারে আসার সময় যা কিছু ঘটেছিল বলে বলল, সে সময় উচ্চশিক্ষিত হয়েও চাকরি পাচ্ছে না শুনে বাবা ওনাকে কার্ড দিয়ে দেখা করতে বলেছিল।
সুবৰ্ণ টিপ্পনী কাটল, আরে, তোরা ব্যাপারটা বুঝতে না পারলেও আমি পেরেছি। ও ছেলেটার প্রেমে পড়েছে।
আনান রেগে উঠে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে বলল, কচু বুঝেছিস।
সুবৰ্ণ ছাড়ল না, বলল, কচু খুব ভিটামিনযুক্ত খাদ্য। ছেলেটা বেকার হলেও অনেকগুণের অধিকারী।
আনান আরো রেগে উঠে বলল, তোরা পাঁচ কেজি কচু কিনে খেতে থাক, আমি চললাম বলে হাঁটতে শুরু করল।
সাবাই তার পিছনে হাঁটতে শুরু করে অঞ্জলী বলল, আমরা একটু রসিকতা করলাম, আর তুই কিনা আমাদেরকে কচু খাইয়ে ছাড়লি?
Leave a Reply