• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • নতুন সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • পুরানো সব ক্যাটাগরি
  • My Account →
  • নতুন সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • পুরানো সব ক্যাটাগরি
  • My Account →
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

২. সব কয়টি চ্যানেল চালু রেখে

লাইব্রেরি » মুহম্মদ জাফর ইকবাল » সায়েন্স ফিকশন সমগ্র » মহাকাশে মহাত্রাস » ২. সব কয়টি চ্যানেল চালু রেখে

হাসান সব কয়টি চ্যানেল চালু রেখে যতগুলি সম্ভব মহাকাশযানের সাথে যোগাযোগ রেখে চলল। অনেক কয়টা মহাকাশযান পৃথিবীতে নেমে পড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বড় বড় দু’টি মহাকাশ ল্যাবরেটরি খালি করে সব কয়জন বিজ্ঞানী আর টেকনিশিয়ান পৃথিবীর দিকে ফিরে গেল। যারা পৃথিবী থেকে দূরে—কিংবা পৃথিবীতে ফিরে যেতে পারছিল না, তারা ভীষণ অসহায় অনুভব করতে লাগল। কারণ গড়ে প্রতি দুই ঘন্টায় একটা করে মহাকাশ স্টেশন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। সবাই ধারণা করে নিয়েছে, একটা অজ্ঞাত কোনো মহাকাশযান একটি একটি করে পৃথিবীর সবকয়টি মহাকাশযান ধ্বংস করে যাচ্ছে। প্রথমে জল্পনাকল্পনা এবং ধারণা, কিন্তু চৰ্বিশ ঘন্টার মাথায় দেখা গেল ব্যাপারটা আসলেও তাই।

জাপানের একটি উপগ্রহ ধ্বংস হয়ে যাবার পূর্বমুহূর্তে একজন বিজ্ঞানীকে চিৎকার করে বলতে শোনা গেল—’ফ্লাইং সসার’!

পৃথিবী থেকে সবাইকে মহাকাশযানগুলি খালি করে পৃথিবীতে চলে আসার নির্দেশ দেয়া হল। যারা অনেক দূরে কিংবা যাদের এই মুহূর্তে পৃথিবীতে ফিরে আসা সম্ভব নয়, তাদেরকে বিশেষ নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেয়ার আদেশ দেয়া হল।

হাসান পৃথিবীতে ফিরে যাওয়ার জন্যে ছোট্ট রকেটটাতে জ্বালানি ভরে নিয়ে যন্ত্রপাতি পরীক্ষা করে নিল, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তারা পৃথিবীতে রওনা দেবে। সারাদিনের উত্তেজনায় জাহিদ, কামাল আর জেসমিন বিপর্যস্ত। হাসান জোর করে ঘন্টাখানেকের জন্যে বিশ্রাম নিতে পাঠিয়েছে। একেকজন এত ক্লান্ত যে মড়ার মতো ঘুমাচ্ছে।

হাসান তার মহাকাশ স্টেশনে সব কয়টি রাডার চালু করে রেখেছে, যদিও জানে তাতে কোনো লাভ নেই। এ পর্যন্ত যে কয়টি মহাকাশযান ধ্বংস হয়েছে তাদের ভিতরে কেউ সতর্ক হবার এতটুকু সুযোগ পায় নি, যদিও সবার কাছেই সর্বাধুনিক রাডার ছিল। খুব কাছে আসার পর হয়তো সেটিকে দেখা যায়, কিন্তু ততক্ষণে কিছু করার থাকে না। এণ্ড্রোমিডাতে নূতন ধরনের অনেকগুলি রাডার স্টেশন ছিল, যেগুলি আন্তঃসৌরমণ্ডল যোগাযোগে সাহায্য করার জন্যে আনা হয়েছিল। এগ্রোমিডা ছেড়ে চলে যেতে হবে শোনার পর হাসান এই মূল্যবান ক্ষুদ্রকায় কিন্তু প্রচণ্ড ক্ষমতাবান রাডার স্টেশনগুলি এগ্রোমিডাকে ঘিরে চারদিকে পাঠিয়ে দিয়েছে। যদি ভাগ্য ভালো হয়, হয়তো তাদের কোনো একটি এই রহস্যময় ফ্লাইং সসারকে দেখতে পেয়ে তাকে সতর্ক করে দিতে পারবে।

পৃথিবীর দিকে রওনা দেবার আর দেরি নেই। জ্বালানি নিয়ে নেয়া হয়েছে, স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রপাতি কাজ করতে শুরু করেছে। আর ঘন্টাখানেক পরেই ইচ্ছে করলে রওনা দেয়া সম্ভব—যদি-না এর মাঝেই সেই ফ্লাইং সসার এসে হানা দেয়!

সব কিছু ঠিক করার পর জাহিদ কামাল আর জেসমিনকে ডেকে তোলার জন্যে নিচে নেমে আসছিল, ঠিক সেই সময় সে সতর্ক সংকেত শুনতে পেল। সংকেত শুনে কেন জানি হঠাৎ ওর বুকের ভিতর রক্ত ছলাৎ করে উঠল।

শান্ত পায়ে কন্ট্রোলরুমে গিয়ে সে স্ক্রীনের দিকে তাকায়। নীলাভ স্ক্রীনে একটি অশরীরী ছবি। পিরিচের মতো একটা অদ্ভুত মহাকাশযান ঘুরতে ঘুরতে ছুটে আসছে। মিনিট দুয়েক সে এটিকে দেখতে পেল—রাডার স্টেশনের খুব কাছে দিয়ে ছুটে যাবার সময় স্ত্রীনে ধরা পড়েছে। যদিও এখন আর দেখা যাচ্ছে না—কিন্তু রাডার স্টেশনের পাঠানো হিসেব দেখে নির্ভুল বলে দেয়া যায়, এই কুৎসিত ফ্লাইং সসারটি ছুটে আসছে এণ্ডোমিডার দিকে। গতিবেগ অস্বাভাবিক, এগ্রোমিডার কাছাকাছি পৌঁছুতে আর মাত্র ঘন্টাখানেক সময় নেবে।

হাসান একটা চেয়ারে বসে ঠাণ্ডা মাথায় একটা সিগারেট ধরাল। এখন কী করা যায়?

প্রচণ্ড বিপদের মুখে ঠাণ্ডা মাথায় নির্ভুল সিদ্ধান্ত নিতে পারে বলে হাসানের পৃথিবীজোড়া সুনাম রয়েছে। তার অসাধারণ বুদ্ধিমত্তা, সঠিক সিদ্ধান্ত নেবার এবং বাস্তবায়নের ক্ষমতা, আর উপস্থিত বুদ্ধির জন্যে সে দু’বার জাতীয় পুরস্কার পেয়েছে। কিন্তু এই মুহূর্তে সে অসহায় বোধ করে। যেখানে পারমাণবিক অস্ত্রসজ্জিত সোভিয়েত ইউনিয়নের উপগ্রহ আর্কাদি গাইদার মুহূর্তের মাঝে ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে, সেখানে বৈজ্ঞানিক গবেষণার উপযুক্ত একটি মহাকাশ স্টেশন কীভাবে টিকে থাকবে। পৃথিবীতে রওনা দিয়ে লাভ কী—তা হলে প্রথমে এগ্রোমিডাকে ধ্বংস করে তারপর তাদের ক্ষুদ্র রকেটটাকে শেষ করে দেবে। হাতে সময় এক ঘন্টা, হাসানের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করবে চারজন মানুষের জীবন!

মিনিট দশেকের ভিতর সে সিদ্ধান্ত নিয়ে নিল—তারপর ছুটে গেল চারতলায়। একটা রুবি ক্রিষ্টাল লেসার টিউবকে টেনে বের করে নিয়ে এসে বসাল কন্ট্রোল রুমের জানালার কাছে। তারপর ক্ষিপ্র অভ্যস্ত হাতে কম্পিউটারটি চালু করে দ্রুত কয়েকটা সংখ্যা প্রবেশ করিয়ে দিল, ফ্লাইং সসারের যাত্রাপথ ছকে বের করার জন্যে। লেসার টিউবের কানেকশান দিয়ে নিচে নেমে গিয়ে ডেকে তুলল জাহিদ, কামাল আর জেসমিনকে। ঘড়ি দেখে সে ঠাণ্ডা গলায় বলল, তোমাদের পাঁচ মিনিট সময় দেয়া হল পোশাক পরে প্রস্তুত হবার জন্যে। আর ঠিক সাত মিনিট পরে তোমরা রকেটে প্রবেশ করবে—পৃথিবীতে ফিরে যাবার জন্যে।

কামাল কী একটা বলতে যাচ্ছিল, হাসান শীতল চোখে বলল, একটি কথাও নয়। তোমরা প্রস্তুত হয়ে রকেট লাঞ্চারে এস—আমি আসছি। মনে রাখবে ঠিক পাঁচ মিনিটের ভিতর—যদি বাঁচতে চাও।

পাঁচ মিনিটের আগেই ওরা পোশাক পরে রকেটের দরজার কাছে গিয়ে দাঁড়াল। হাসান এল সাথে সাথেই, বুকখোলা শার্ট আর চিন্তিত মুখে বরাবর যেরকম থাকে।

স্যার, আপনি পোশাক পরলেন না?

জেসমিনের কথার উত্তরে হাসান একটু হাসল—বলল, আমার জন্যে এ পোশাকই যথেষ্ট। যাক সময় নষ্ট করে লাভ নেই। কাজের কথা বলি। শোন, আমি যখন কথা বলব, কেউ একটি কথাও বলবে না, যা যা বলব অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলবে। প্রথমত ঠিক দু মিনিট পরে তোমরা তিনজন রকেটে উঠে দরজা বন্ধ করবে–

তিনজন মানে? আপনি—

হাসান সরু চোখে কামালের দিকে তাকাল, ঠাণ্ডা গলায় বলল, কথার মাঝখানে কথা বলতে নিষেধ করেছি; মনে আছে? যা বলছিলাম, ঠিক দশ মিনিট পর স্টার্ট নেবে। এক্সেলেরেশান করবে টেন জি বা তারও বেশি। খুব কষ্ট হবে, কিন্তু এ ছাড়া পালানোর কোনো উপায় নেই। পৃথিবীর সাথে যোগাযোগ রেখো—যে-কোনো রকম ঝামেলা দেখলে ওদের পরামর্শ চাইবে। পৃথিবীর অ্যাটমস্ফিয়ারে ঢোকার সময় খুব সাবধান। ক্রিটিক্যাল অ্যাঙ্গেলটা নিখুতভাবে বের করে নেবে—একটুও যেন নড়চড় না হয়। বায়ুমণ্ডলের ভেতরে ঢুকে আধ ঘন্টার ভিতর প্যারাশুট খুলে যাবে। না খুললে ইমার্জেন্সি কিট ব্যবহার করবে। আর শোন, আমার এই চিঠিটা দেবে ডিরেক্টরকে। বুঝেছ?

জ্বি। স্যার, একটা কথা জিজ্ঞেস করব?

কি?

আপনি আমাদের সাথে যাবেন না?

না।

তা হলে আমরাও যাব না।

হাসানের মুখে খুব সূক্ষ্ম একটা হাসি খেলে গেল। ধীরে ধীরে বলল, এটা সেন্টিমেন্টের ব্যাপার না জাহিদ। আর চল্লিশ মিনিটের ভিতর ফ্লাইং সসার এড্রোমিডাকে ধ্বংস করবে—এটা এখন এণ্ড্রোমিডার দিকে ছুটে আসছে। যদি আমরা চারজনই রকেটে পৃথিবীতে রওনা দিই, প্রথমে এন্ড্রোমিডাকে ধ্বংস করে তারপর রকেটটাকে শেষ করবে।

রকেটটা যেন শেষ করতে না পারে, সে জন্যে আমি এপ্রোমিডাতে থাকব। সসারটাকে একটা আঘাত করতে হবে, যেভাবেই হোক। আমি লেসার টিউব বসিয়ে এসেছি। যদিও এটা অস্ত্র হিসেবে কখনো ব্যবহার করা হয় নি, তবু মনে হচ্ছে চমৎকার কাজ করবে। কম্পিউটার থেকে যাত্রাপথ বের করেছি। আমি সসারটার মাঝখান দিয়ে ছয় ইঞ্চি ব্যাসের ফুটো করে ফেলব।

স্যার—

সময় শেষ হয়েছে, যাও, রকেটে ওঠ।

স্যার, জেসমিনের চোখে পানি চিকচিক করে ওঠে।

হাসানের ইচ্ছে হল, কোমল স্বরে দু’-একটা কথা বলে, কিন্তু তা হলে সবাই ভেঙে পড়বে। মুখটাকে কঠোর করে সে আদেশ দিল, তাড়াতাড়ি–

তবু ওরা দাঁড়িয়ে রইল। একজনকে মৃত্যুর মুখে ফেলে দিয়ে ওরা কীভাবে যাবে? হাসান এগিয়ে গিয়ে দরজা খুলে ধরে, তারপর কঠোর স্বরে ধমকে উঠল, যাও, ওঠ—

একজন একজন করে ওরা ভিতরে ঢুকল। হাসান দরজা বন্ধ করে দিয়ে ঘুরে দাঁড়াল। তারপর আটকে রাখা দীর্ঘশ্বাসটা খুব সাবধানে বের করে দিল।

Category: মহাকাশে মহাত্রাস
পূর্ববর্তী:
« ১. হাসান মনে মনে ছটফট করছে
পরবর্তী:
৩. লিফট বেয়ে ছ’তলায় ওঠার সময় »

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বাংলা লাইব্রেরি : উল্লেখযোগ্য বিভাগসমূহ

লেখক ও রচনা

অনুবাদ সাহিত্য

সেবা প্রকাশনী

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

কোরআন

হাদিস

ত্রিপিটক

মহাভারত

রামায়ণ

পুরাণ

গীতা

বাইবেল

বিবিধ রচনা

বাংলা ওসিআর

Download Bangla PDF

হেলথ

লাইব্রেরি – ফেসবুক – PDF

top↑