• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • নতুন সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • পুরানো সব ক্যাটাগরি
  • My Account →
  • নতুন সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • পুরানো সব ক্যাটাগরি
  • My Account →
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

১০. নস্যু কচাং কুঃ

লাইব্রেরি » নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় » টেনিদা সমগ্র » চার মূর্তি (উপন্যাস) » ১০. নস্যু কচাং কুঃ

নস্যু কচাং কুঃ

টেনিদা ধপাস্ করে মেঝের ওপর বসে পড়ল। ওর নাকের সামনে অনেকক্ষণ ধরে একটা পাহাড়ি মৌমাছি উড়ছিল, অত বড় নাকটা দেখে বোধহয় ভেবেছিল, ওখানে একটা জুতসই চাক বাঁধা যায়। হঠাৎ টেনিদার নাক থেকে ঘড়াৎ-ঘড় করে এমনি একটা আওয়াজ বেরুল যে—সেটা ঘাবড়ে গিয়ে হাত তিনেক দূরে ঠিকরে পড়ল।

লিডারের অবস্থা তখন সঙিন। করুণ গলায় বললে, ওরে বাবা—গেলুম। শেষকালে কিনা চীনে দস্যুর পাল্লায়! এর চেয়ে যে ভূতও অনেক ভালো ছিল!

আমাক হাত-পাগুলো তখন আমার পিলের ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করছে। বললুম, তার নাম আবার ঘচাং ফুঃ! অর্থাৎ ঘচাং করে গলা কেটে দেয়… তারপর ফুঃ করে উড়িয়ে দেয়।

ঝাঁটু মিটমিট করে তাকাচ্ছিল। আমাদের অবস্থা দেখে আশ্চর্য হয়ে বললে, বেপার কী বটেক দাদাবাবু?

ক্যাবলা বললে, বেপার? বেপার সাঙ্ঘাতিক। হ্যাঁ রে ঝাঁটু, এখানে ডাকাতফাকাত আছে নাকি?

-ডাকাত?–ঝাঁটু বললে, ডাকাত ফির ইখানে কেনে মরতে আসবেক? ই তল্লাটে উসব নাই।

নাঃ, নেই!-মুখখানাকে কচু-ঘণ্টর মতো করে টেনিদা খেকিয়ে উঠল; তবে ঘচাং ফুঃ কোত্থেকে এল? তাও আবার যে-সে নয়—একেবারে দুর্ধর্ষ চৈনিক দস্যু।

ক্যাবলা কী পাখখায়াজ ছেলে। কিছুতেই ঘাবড়ায় না। বললে, আরে দুত্তোর—রেখে দাও ওসব? দেখলে তো, তা হলে কিছু নয়, সব ধাপ্পা! ঘচাং ফুর তো আর খেয়ে-দেয়ে কাজ নেই—এই হাজারিবাগের পাহাড়ি বাংলোয় এসে ভ্যারেন্ডা ভাজবে! আসলে ব্যাপার কী জানো? স্রেফ বাংলা ডিটেকটিভ উপন্যাস।

–বাংলা ডিটেকটিভ উপন্যাস!-টেনিদা চোয়াল চুলকোতে চুলকোতে বললে : মানে?

-মানে? মানে আবার কী? ওই এনতার সব গোয়েন্দা গল্প—যেসব গল্পের পুকুরে সাবমেরিন ভাসায়, আর যাতে করে বাঙালী গোয়েন্দা দুনিয়ার সব অসাধ্য সাধন করে—সেই সমস্ত বই পড়ে এদের মাথায় এগুলো ঢুকেছে। আমার বড়মামা লালবাজারে চাকরি করে, তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলুম—এই গোয়েন্দারা কোথায় থাকে। বড়মামা রেগে গিয়ে যাচ্ছেতাই করে বললে, কী একটা ককেতে থাকে।

—চুলোয় যাক গোয়েন্দা। টেনিদা বিরক্ত হয়ে বললে, তার সঙ্গে ঘচাং ফুঃর সম্পর্ক কী?

—আছে—আছে! ক্যাবলা সবজান্তার মতো বললে, যারা এই চিঠি লিখেছে, তারা গোয়েন্দা-গল্প পড়ে। পড়ে-পড়ে আমাদের ওপরে একখানা চালিয়াতি খেলেছে।

—কিন্তু এরকম চালিয়াতি করার মানে কী? আমাদের এখান থেকে তাড়াতেই বা চায় কেন? আর হাবুল সেনকেই বা কোথায় নিয়ে গেল?

ক্যাবলা বললে, সেইটেই তো রহস্য! সেটা ভেদ করতে হবে। কতকগুলো পাজি লোক নিশ্চয়ই আছে—আর কাছাকাছিই কোথাও আছে। কিন্তু এই চিঠিটা দিয়ে এরা মস্ত উপকার করেছে টেনিদা!

—উপকার?—টেনিদা বললে, কিসের উপকার?

—একটা জিনিস তো পরিষ্কার বোঝা গেল, জিন-টিন এখানে কিছু নেই—ওসব একদম ভোঁ-কাট্টা! কতকগুলো ছ্যাঁচড়া লোক কোথাও লুকিয়ে রয়েছে—এবাড়িটায় তাদের দরকার। আমরা এসে পড়ায় তাদের অসুবিধে হয়েছে—তাই আমাদের তাড়াতে চায়। ক্যাবলা বুক টান করে বললে, কিন্তু আমরা পটলডাঙার ছেলে হয়ে একদল ছিচকে লোকের ভয়ে পালাব টেনিদা? ওদের টাকের ওপরে টেক্কা মেরে জানিয়ে দিয়ে যাব, ওরা যদি ঘচাং ফুঃ হয় তা হলে আমরা হচ্ছি কচাং কুঃ।

কচাং কুঃ!-—আমি বললুম, সে আবার কী?

ক্যাবলা বললে, বাঘা চৈনিক দস্যু! দুর্ঘর্ষের ওপর আর-এক কাঠি!

আমি ব্যাজার হয়ে বললুম, আমরা আবার চীনে হলুম কবে? দস্যুই বা হতে যাব কোন দুঃখে?

ক্যাবলা বললে, ওরা যদি চৈনিক হয়—আমাদেরই বা হতে দোষ কী? আমরাও ঘোরতর চৈনিক। ওরা যদি দস্যু হয়—আমরা নস্যু!

—নস্যু—টেনিদার নাক বরাবর আবার সেই মৌমাছিটা ফিরে আসছিল, সেটাকে তাড়াতে তাড়াতে টেনিদা বললে, নস্যু কাকে বলে?

—মানে, দস্যুদের যারা নস্যির মতো নাক দিয়ে টেনে ফেলে, তারাই হল নস্যু।

টেনিদা উঠে দাঁড়িয়ে বললে, দ্যাখ ক্যাবলা, সব জিনিস নিয়ে ইয়ার্কি নয়! যদি সত্যিই ওরা ডাকাত-টাকাত হয়—

ডাকাত হলে অনেক আগেই ওদের মুরোদ বোঝা যেত। বসে বসে ঝোপের মধ্যে। চীনেবাদাম খেত না, কিংবা কাগজে জড়িয়ে মড়ার মাথা ছুঁড়ত না। ওরাও এক নম্বর কাওয়ার্ড!

তা হলে হাবুল সেনকে নিয়ে গেল কী করে?

নিশ্চয়ই কোনও কায়দা করেছে। কিন্তু সে কায়দাটা সমঝে ফেলতে বহুত সময় লাগবে না। টেনিদা—

-কী?

—আর দেরি নয়। রেডি? টেনিদা বললে, কিসের রেডি?

—ঘচাং ফুঃ-দের কচাং কুঃ করতে হবে। আজই, এক্ষুনি।

টেনিদা তখনও সাহস পাচ্ছিল না। কুঁকড়ে গিয়ে বললে, সে কী করে হবে?

হয়ে যাবে একরকম। এই বাংলোর কাছাকাছিই ওদের কোনও গোপন আস্তানা আছে। হানা দিতে হবে সেখানে গিয়ে।

—ওরা যদি পিস্তল-টিস্তল ছোঁড়ে?

—আমরা ইট ছুঁড়ব!–ক্যাবলা ভেংচি কেটে বললে, রেখে দাও পিস্তল! গোয়েন্দা-গল্পে ওসব কথায় কথায় বেরিয়ে আসে, আসলে পিস্তল অত সস্তা নয়। হ্যাঁ—গোটাকয়েক লাঠি দরকার। এই ঝাঁটুলাঠি আছে রে?

ঝাঁটু চুপচাপ সব শুনছিল। কী বুঝছিল কে জানে, মাথা নেড়ে বললে, দুটো আছে। একটো বল্লমও আছে।

—তবে নিয়ে আয় চটপট।

–লাঠি বল্লমে কী হবেক দাদাবাবু? ঝাঁটুর বিস্মিত জিজ্ঞাসা।

—শেয়াল মারা হবে।

—শেয়াল মারা? কেনে? মাংস খাবেন?

–অত খবরে তোর দরকার কী? ক্যাবলা রেগে বললে, যা বলছি তোকে তাই কর। শিগগির নিয়ে আয় ওগুলো। চটপট।

ঝাঁটু লাঠি বল্লম আনতে গেল। টেনিদা শুকনো গলায় বললে, কিন্তু ক্যাবলা, এ বোধহয় ভালো হচ্ছে না। যদি সত্যিই বিপদ-আপদ হয়—

ক্যাবলা নাক কুঁচকে বললে, অতুমহারা ডর লাগ গিয়া? বেশ, তুমি তা হলে বাংলোয় বসে থাকো। আমি তো যাবই—এমনকি পালাজ্বরে-ভোগা এই প্যালাটাও আমার সঙ্গে। যাবে। দেখবে, তোমার চাইতে ওরও বেশি সাহস আছে।

শুনে আমার বুক ফুলে উঠল বটে, কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে পালাজ্বরের পিলেটাও নড়মড় করে উঠল—আমাকেও যেতে হবে! বেশ, তাই যাব! একবার ছাড়া তো দুবার মরব না।

আর আমি মারা গেলে—হ্যাঁ, মা কাঁদবে, পিসিমা কাঁদবে, বোধহয় সেকেন্ডারি বোর্ডও কাঁদবে কারণ, বছরবছর স্কুল-ফাইন্যালের ফি দেবে কে? আর বৈঠকখানা বাজারে দৈনিক আধপো পটোল আর চারটে শিঙিমাছ কম বিক্রি হবে—এক ছটাক বাসকপাতা বেঁচে যাবে রোজ। তা যাক! এমন বীরত্বপূর্ণ আত্মত্যাগের জন্যে সংসারের একটু-আধটু ক্ষতি নয় হলই বা!

টেনিদা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললে, চল,—তবে যাই! কিন্তু প্যালার সেই দাড়িটা—

বললুম, তামাকখেকো দাড়ি।

ক্যাবলা বললে, ঠিক। মনেই ছিল না। ওই দাড়ি থেকেই আরও প্রমাণ হয়—ওরা চৈনিক নয়। কলকাতায় তো এত চীনা মানুষ আছে কারও দাড়ি দেখেছ কখনও?

তাই তো! দাড়িওলা চীনা মানুষ! না, আমরা কেউ তো দেখিনি। কখনও না।

এর মধ্যে ঝাঁটু লাঠি আর বল্লম এনে ফেলেছে। বল্লমটা ঝাঁটুই নিলে, একটা লাঠি নিলে ক্যাবলা—আর-একটা টেনিদা। আমি আর কী নিই? হাতের কাছে একটা চ্যালাকাঠ পড়েছিল, সেইটেই কুড়িয়ে নিলুম। যদি মরতেই হয়, তবু তো এক ঘা বসাতে পারব।

অতঃপর ঘচাং ফুঃ দস্যুর দলকে একহাত নেবার জন্যে দস্যু কচাং কুর দল আবার রওনা হল বীরদর্পে। আবার সেই বুনো রাস্তা। আমরা ঝোপঝাপ ঠেঙিয়ে-ঠেঙিয়ে দেখছিলুম, কোথাও সেই তামাকখেকো লুকিয়ে আছে কি না।

কিন্তু আবার আমি বিপদে পড়ে গেলুম। এবার বৈঁচি নয়–কামরাঙা।

বাংলোর ঠিক পেছন দিয়ে আমরা চলেছি। আমি যথানিয়মে পেছিয়ে পড়েছি আর ঠিক আমারই চোখে পড়েছে কামরাঙার গাছটা। আঃ, ফলে-ফলে একেবারে আলো হয়ে রয়েছে।

নোলায় প্রায় সেরটাক জল এসে গেল। জ্বরে ভুগে-ভুগে টক খাবার জন্যে প্রাণ ছটফট করে। ঘচাং ফুঃ টুঃ সব ভুলে গিয়ে গুটিগুটি গেলুম কামরাঙা গাছের দিকে। কলকাতায় এ সব কিছুই খেতে পাই না—চোখের সামনে অমন খোলতাই কামরাঙার বাহার দেখলে কার আর মাথা ঠিক থাকে।

যেই গাছতলায় পা দিয়েছি—

সঙ্গে সঙ্গেই–ইঃ! একতাল গোবরে পা পড়ল—আর তক্ষুনি এক আছাড়। কিন্তু এ কী। আছাড় খেয়ে আমি তো মাটিতে পড়লুম না। আমি যে মহাশূন্যের মধ্যে দিয়ে পাতালে চলেছি। কিন্তু পাতালেও নয়। আমি একেবারে সোজা কার মস্ত একটা ঘাড়ের ওপর অবতীর্ণ হলুম। আঁই দাদা রে বলে সে আমাকে নিয়ে একেবারে পপাত।

আমি আর-একবার অজ্ঞান।

Category: চার মূর্তি (উপন্যাস)
পূর্ববর্তী:
« ০৯. কাঠবেড়ালির ল্যাজ নয় রে ওটা কাহার দাড়ি!
পরবর্তী:
১১. গজেশ্বরের পাল্লায় »

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বাংলা লাইব্রেরি : উল্লেখযোগ্য বিভাগসমূহ

লেখক ও রচনা

অনুবাদ সাহিত্য

সেবা প্রকাশনী

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

কোরআন

হাদিস

ত্রিপিটক

মহাভারত

রামায়ণ

পুরাণ

গীতা

বাইবেল

বিবিধ রচনা

বাংলা ওসিআর

Download Bangla PDF

হেলথ

লাইব্রেরি – ফেসবুক – PDF

top↑