১.৫.২০ দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ জাফর (শাসনকাল : ২৮ সেপ্টেম্বর ১৮৩৭– ১৪ সেপ্টেম্বর ১৮৫৭)

দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ জাফর (শাসনকাল : ২৮ সেপ্টেম্বর ১৮৩৭– ১সেপ্টেম্বর ১৮৫৭)

আওরঙ্গজেবে পর মোগল সাম্রাজ্য তথা ভারতের শেষ সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ জাফর। পুরো নাম আবুল। মুজাফার সিরাজুদ্দিন মোহাম্মদ বাহাদুর শাহ গাজী। তিনি দিল্লির সম্রাট দ্বিতীয় আকবর শাহ (১৮০৬-৩৭ খ্রি:) ও সম্রাজ্ঞী লাল বাঈর দ্বিতীয় পুত্র। তাঁর ঊধ্বর্তন বংশ তালিকা বিশতম স্তরে গিয়ে মোগল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা জহিরুদ্দিন মোহাম্মদ বাবরের সঙ্গে মিলেছে। বাহাদুর শাহ জাফরের চারজন স্ত্রী ও অনেক উপপত্নী ছিল। তাঁর স্ত্রীরা হলেন— বেগম আশরাফ মহল, বেগম আখতার মহল, বেগম জিনাত মহল, বেগম তাজ মহল। তাঁর ২২ জন পুত্র, তাঁরা হলেন— মির্জা দারা বখত মিরন শাহ, মির্জা শাহ রুখ, মির্জা ফত-উল-মুলক বাহাদুর (ওরফে মির্জা ফখরু), মির্জা দিদার বকশ, মির্জা মোগল, মির্জা খিজির সুলতান, মির্জা আবু বকর, মির্জা জাওয়ান বখত, মির্জা কুয়াইশ, মির্জা শাহ আব্বাস প্রমুখ। এছাড়া তাঁর অন্ততপক্ষে ৩২ জন কন্যা ছিল বলে জানা যায়। তবে সবার নাম জানা যায় না। কয়েকজন হলেন রাবেয়া বেগম, বেগম ফাতিমা সুলতান, কুলসুম জমানি বেগম, রৌনৌক জামানি বেগম প্রমুখ। দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ জাফর নামেই মোগল সম্রাট। বস্তুত তিনি ছিলেন সম্পূর্ণ ব্রিটিশদের নিয়ন্ত্রণে।

পিতার মৃত্যুর পর দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ ১৮৩৭ সালে দিল্লির সিংহাসনে আরোহণ করেন। প্রকৃতপক্ষে পিতামহ সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলম (১৭৫৯ থেকে ১৮০৬ সাল) এবং পিতা সম্রাট দ্বিতীয় আকবর শাহ উভয়ের মতো দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির পেনশনভোগী ছিলেন। তিনি বার্ষিক ১ লাখ টাকা ভাতা পেতেন। পিতার মতো বাহাদুর শাহ নিজের ও মোগল খানদানের ভরণপোষণে ভাতা বৃদ্ধির জন্য অনেক চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু শর্ত ছিল ‘বাদশাহ’ উপাধি ত্যাগ করতে হবে এবং লালকেল্লার বাইরে সাধারণ নাগরিকের মতো জীবনযাপন করতে হবে। কিন্তু তিনি সেই শর্তে রাজি হননি। এ ছাড়া সিংহাসনের উত্তরাধিকারী মনোনয়ন নিয়েও ইংরেজদের সঙ্গে সম্রাটের মনোমালিন্য হয়। সম্রাটের ক্ষমতা ও মর্যাদা খর্ব করতে নানা উদ্যোগও নেয় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। ক্ষমতা, প্রতিপত্তি ও সম্পদ সব কিছু হারিয়ে সম্রাট প্রাসাদের চার দেওয়ালের অভ্যন্তরে জীবন কাটাতে বাধ্য হলেন। এ সময় অমর্যাদার মনোবেদনা ভুলে থাকার জন্য তিনি গজল ও মুশায়েরায় নিমগ্ন থাকতেন। লালকেল্লায় সাহিত্যের আসর বসিয়ে সময় কাটাতেন। তিনি নিজেও কবিতা লিখতেন। জীবনের কষ্ট ও বিষাদ তাঁর কবিতার মূল বিষয়। কবিতার ছত্রে ছত্রে দুঃখ ও বিষাদের সঙ্গে সঙ্গে দেশ ও জাতির পরাধীনতার কথা বিধৃত হয়ে আছে সে সব লেখায়।

বাহাদুর শাহ সিংহাসনে আরোহণের ২০ বছর পর সূত্রপাত হয় ঐতিহাসিক সিপাহি বিদ্রোহের। পলাশীর যুদ্ধের পর ১০০ বছর কেটে গেছে ততদিনে। ছলে-বলে-কৌশলে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি সমগ্র ভারতবর্ষ দখল করে নিয়েছে। দেশবাসীর সঙ্গে সৈন্য বিভাগের লোকদের উপরও চলছে জুলুম, বঞ্চনা ও নির্যাতন। একের পর এক দেশীয় রাজ্য ইংরেজ অধিকারে নিয়ে যাওয়া, লাখেরাজ ও দেবোত্তর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা, কারাগারে হিন্দু-মুসলমান সিপাহিদের জন্য একই খাবারের ব্যবস্থা, ঘিয়ের মধ্যে চর্বি ও আটার মধ্যে হাড়গুঁড়োর সংমিশ্রণ, গোরু ও শূকরের। চর্বি মিশ্রিত কার্তুজ বিতরণ ইত্যাদি ভারতবর্ষের জনমনে কিংবা সৈনিকদের মনে ব্যাপক প্রভাব ফেলে। ভারতীয় সিপাহিদের মধ্যে ধূমায়িত বিক্ষোভ ও অস্থিরতার প্রথম বহিঃপ্রকাশ ঘটে ১৮৫৭ সালের ২২ জানুয়ারি বাংলার দমদম সেনাছাউনিতে। সিপাহিরা ইংরেজ অফিসারকে জানায়, এনফিল্ড রাইফেলের জন্য যে কার্তুজ তৈরি হয়েছে, তাতে গোরু ও শূকরের চর্বি মেশানো থাকে এবং এতে তাঁদের ধর্ম নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কর্তৃপক্ষ সিপাহিদের বুঝিয়ে শান্ত করে। কিন্তু খবরটি একে একে বিভিন্ন সেনাছাউনিতে পৌঁছে যায় এবং তা সিপাহিদের মধ্যে বিদ্রোহের রূপ ধারণ করে। প্রথম বিস্ফোরণ ঘটে বাংলার বহরমপুর সেনাছাউনিতে ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি। ১৯ নম্বর পদাতিক বাহিনীর সিপাহিরা কার্তুজ নিতে অস্বীকার করে, রাতে অস্ত্রাগারের দরজা ভেঙে পুরোনো মাসকেট বন্দুক ও কার্তুজ সংগ্রহ করে। তাঁরা ভীষণ উত্তেজিত অবস্থায় ছিল। পরিস্থিতি সামাল দিতে সিপাহিদের নিরস্ত্র ও বরখাস্ত করা হয়। এই সংবাদও দ্রুত পৌঁছে যায় বিভিন্ন সেনানিবাসে। ২৯ মার্চ রবিবার ব্যারাকপুরের দেশীয় সিপাহিরা বিদ্রোহ করে। সিপাহি মঙ্গল পাণ্ডে গুলি চালিয়ে এক ইংরেজ সার্জেন্টকে হত্যা করে। বিচারে মঙ্গল পাণ্ডে এবং তাঁকে সহায়তার অভিযোগে জমাদার ঈশ্বরী পাণ্ডেকে দোষী সাব্যস্ত করে। ৮ এপ্রিল সকাল ১০টায় তাঁদের দুজনকেই ফাঁসি দেওয়া হয়। এরপর বিদ্রোহের আগুন ছড়িয়ে পড়ে ভারতের উত্তর থেকে মধ্যপ্রদেশ এবং জলপাইগুড়ি থেকে পূর্ববাংলার দক্ষিণ-পূর্ব কোণের চট্টগ্রাম পর্যন্ত। ৯ মে উত্তরপ্রদেশের মিরাটের সিপাহি বিদ্রোহ ঘোষণা করেন দিল্লির পথে অগ্রসর হন। ১১ মে সিপাহিরা দিল্লি অধিকার করে বহু ইংরেজকে হত্যা ও বিতাড়ন করেন। দেশপ্রেমিক সিপাহিরা এ দিন লালকেল্লায় প্রবেশ করে নামেমাত্র মোগল সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ জাফরকে ভারতের স্বাধীন সম্রাট বলে ঘোষণা করেন। সিপাহিরা সম্রাটের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে শপথ নেন। এ দিন গভীর রাতে লালকেল্লায় ২১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে অশীতিপর ৮২ বছরের বৃদ্ধ সম্রাটকে দেওয়ান-ই-খানোস সম্মান জানানো হয়।

বাহাদুর শাহ জাফর সিপাহিদের বিপ্লব তথা ভারতবর্ষের প্রথম সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতৃত্ব দিচ্ছেন এ সংবাদ পৌঁছে যায় উপমহাদেশের কোনায় কোনায়। সেই সংবাদে কানপুর, লখনউ, বিহার, ঝাঁসি, বেরিলি থেকে শুরু করে পশ্চিম ও পূর্ব বাংলার সর্বত্র সিপাহিরা গর্জে ওঠে ‘খালক-ই খুদা’ (আল্লাহর দুনিয়া), মুলক-ই বাদশাহ’ (বাদশার রাজ্য), ‘হুকুম-ই সিপাহি’ (সিপাহির হুকুম)। গোটা দেশের একের পর সেনাছাউনিতে বিদ্রোহ হতে থাকে। ইংরেজরা অতি নির্মমভাবে বিদ্রোহ দমন করে। হাজার হাজার স্বাধীনতাকামীর রক্তে রঞ্জিত হয় উপমহাদেশের মাটি। ইংরেজদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষও বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিল। কিন্তু ব্রিটিশদের কৌশলে ভারতীয়দের এই সংগ্রাম সফল হতে পারেনি। ইংরেজরা দিল্লি দখল করে নেয় এবং সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফর শেষপর্যন্ত ২১ সেপ্টেম্বর আত্মসমর্পণ করেন। ইংরেজ সৈন্যরা মির্জা মোগল, মির্জা খিজির সুলতান, মির্জা আবু বকরসহ ২৯ জন মোগল শাহজাদাসহ বহু আমির ওমরাহ, সেনাপতি ও সৈন্যদের নৃশংসভাবে হত্যা করে। সম্রাটের বিরুদ্ধে বিচারের নামে প্রহসন হল। হাজির করা হল বানোয়াট সাক্ষী। বিচারকরা রায় দিলেন, দিল্লির সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফরকে ১০ মে থেকে ১ অক্টোবর পর্যন্ত ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ সংগঠনের দায়ে অপরাধী সাব্যস্ত করা হল। বলা হল, তাঁর শাস্তি চরম অর্থাৎ মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত। কিন্তু তাঁর বার্ধক্যের কথা বিবেচনা করে প্রাণ দণ্ডাদেশ না-দিয়ে। নির্বাসনে পাঠানোর সুপারিশ করা হল। (সুযোগ পেলে পরের কোনো অধ্যায়ে সিপাহি বিদ্রোহ নিয়ে বিস্তারিত আলোকপাত করব)

১৮৫৮ সালের ৭ অক্টোবর ৮৩ বছরের বৃদ্ধ সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফর, সম্রাজ্ঞী জিনাত মহল, দুই শাহজাদা, শাহজাদী এবং অন্য আত্মীয় ও ভৃত্যদের নিয়ে ইংরেজ গোলন্দাজ ও অশ্বারোহী বাহিনী সহ দিল্লি ত্যাগ করেন। ৯ ডিসেম্বর জাহাজ রেঙ্গুনে পৌঁছোয়। ব্রিটিশ বাহিনীর ক্যাপ্টেন নেলসন ডেভিসের বাসভবনের ছোটো গ্যারেজে সম্রাট ও তাঁর পরিবার-পরিজনের বন্দিজীবন শুরু হয়। সম্রাটকে শুতে দেওয়া হয় একটা পাটের দড়ির খাঁটিয়ায়। ভারতের প্রিয় মাতৃভূমি থেকে বহু দূরে রেঙ্গুনের মাটিতে সম্রাটের জীবনের বাকি দিনগুলো চরম দুঃখ ও অভাব অনটনের মধ্যে কেটেছিল। একটা সময় সম্রাট পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হলেন। এইভাবে ১৮৬২ খ্রিস্টাব্দের ৭ নভেম্বর তাঁর জীবনাবসান হয়। তবে সম্রাটকে অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে কবর দেওয়া হয়। কবরটি বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছিল। উদ্দেশ্য, কোথায় ভারতের শেষ মোগল সম্রাট শায়িত আছেন, তার চিহ্নও কেউ খুঁজে পাবে না। ভারতবর্ষের মানুষ সম্রাটের কবরে ফাতেহা পাঠ করতে রেঙ্গুন যান ১৯০৩ সালে। কিন্তু সেই কবর খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাই প্রথম চেষ্টা সফল হয়নি। অনেক পরে তাঁর আসল কবর আবিষ্কৃত হয় এবং সমাধিসৌধ নির্মিত হয়। একশো বছরের উপর বাহাদুর শাহ জাফরের স্মৃতি মানুষের মন থেকে প্রায় মুছেই গিয়েছিল। কিন্তু বিবিসির আনবারাসন এথিরাজন লিখছেন, ১৯৯১ সালে আকস্মিকভাবে তাঁর কবর উদ্ধার হওয়ার পর অবিভক্ত ভারতের কিংবদন্তী শেষ মোগল সম্রাট আবার ফিরে আসেন মানুষের স্মৃতিপটে। সম্রাটের প্রিয়তমা স্ত্রী জিনাত মহল মারা যান ১৮৮৬ সালের জুলাই মাসে। সম্রাটের পাশেই রয়েছে তাঁর সমাধি।

পরাজিত, অপমানিত ও হতোদ্যম দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ জাফরের জন্য ৩০০ বছরের গৌরবোজ্জ্বল মোগল সাম্রাজ্যের গৌরবহীন পতনের এক অধ্যায়। তাঁর মোগল পূর্বপুরুষরা ৩০০ বছর ধরে রাজত্ব করেছিলেন বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে, যার মধ্যে ছিল বর্তমানের ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তানের বিস্তীর্ণ এলাকা এবং বাংলাদেশ। তাঁর পূর্বপুরুষ আকবর বা আওরঙ্গজেবের বর্ণময় শাসনকালের মতো দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ জাফরের শাসনকাল হয়তো তেমন গৌরবোজ্জ্বল ছিল না, কিন্তু তাঁর ক্ষমতাকাল জড়িয়ে গিয়েছিল সিপাহী বিদ্রোহের সঙ্গে। ওই অভ্যুত্থান শেষপর্যন্ত ব্যর্থ হওয়ার পর সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফরের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার দায়ে মামলা করা হয়। ১৭০০ খ্রিস্টাব্দে শেষ নাগাদ বিশাল মোগল সাম্রাজ্য ক্রমশ ছোটো হয়ে আসে। ওই এলাকায় মোগলদের প্রতিপত্তিও কমতে থাকে। ১৮৩৭ খ্রিস্টাব্দে জাফর যখন সিংহাসনে বসেন, তখন তাঁর রাজ্য ছিল শুধু দিল্লি ও তার আশপাশের এলাকা। কিন্তু তাঁর প্রজাদের কাছে তিনি সবসময়ই বাদশাহই ছিলেন। অন্যান্য মোগল সম্রাটদের মতো তিনিও মঙ্গোলীয় শাসক চেঙ্গিস খান এবং তৈমুর লঙের প্রত্যক্ষ বংশধর ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর মধ্য দিয়ে বিশ্বের অন্যতম সবচেয়ে ক্ষমতাধর একটি শাসককুলের চিরতরে অবসান ঘটল।

ভারতের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী মায়ানমার সফরে গিয়ে তাঁর সমাধি সৌধ পরিদর্শন করেন। সে সময় তিনি পরিদর্শক বইতে লিখেছিলেন— “দু গজ জমিন তো না মিলি হিন্দুস্তান মে, পার তেরি কোরবানি সে উঠি আজাদি কি আওয়াজ, বদনসিব তো নাহি জাফর, জুড়া হ্যায় তেরা নাম ভারত শান আউর শওকত মে, আজাদি কি পয়গাম সে”। অর্থাৎ, হিন্দুস্তানে তুমি দু-গজ মাটি পাওনি সত্য। তবে তোমার আত্মত্যাগ থেকেই আমাদের স্বাধীনতার আওয়াজ উঠেছিল। দুর্ভাগ্য তোমার নয় জাফর, স্বাধীনতার বার্তার মধ্যে দিয়ে ভারতবর্ষের সুনাম ও গৌরবের সঙ্গে তোমার নাম চিরস্মরণীয় হয়ে রয়েছে। ব্রিটিশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যে নির্ভীক মানুষটি বুক চিতিয়ে দাঁড়ান এবং ব্রিটিশদের কোনো শর্তের কাছে মাথা নোয়াননি, তাঁর নাম অবশ্যই সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফর।

সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফর কি হিন্দু-বিদ্বেষী ছিলেন? হিন্দুদের হত্যা করেছে? হিন্দুদের জোর করে মুসলিম বানিয়েছে? তিনি কি হিন্দুদের মন্দির ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে? এমন একটা নথি পেলাম না, যেখানে এই প্রশ্নগুলির উত্তর পাওয়া যায়? বরং জাফরের ধর্মীয় সহিষ্ণুতার পিছনে অনেক ঐতিহাসিক বলেন, সম্রাটের বিশেষ ভূমিকা রেখেছিল তাঁর মিশ্র ধর্মের পরিবারে বড় হয়ে ওঠা। তাঁর বাবা ছিলেন দ্বিতীয় আকবর শাহ, আর মা। ছিলেন হিন্দু রাজপুত রাজকুমারী লাল বাঈ।

[প্রথম খণ্ড সমাপ্ত]

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *