সাঙ্গ হয়েছে রণ—

‘সাঙ্গ হয়েছে রণ—’

রবীন্দ্রনাথ

এ-রণ সাঙ্গ হয়নি। সবে আরম্ভ মাত্র। কত শতাব্দী ধরে চলবে কেউ বলতে পারে না। কিংবা কত হাজার বছর ধরে। হাজার বছর ধরে বলছি ভেবেচিন্তেই। প্রায় আড়াই হাজার বছর পূর্বে প্যালেস্টাইনের ইহুদি জাত আপন রাষ্ট্র আপন স্বাধীনতা হারায়। সেই সময় থেকে ইহুদিরা পৃথিবীর চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়তে আরম্ভ করে। ফলে ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে প্যালেস্টাইনের ইহুদি জনসংখ্যা শতকরা পাঁচ থেকে দশের মাঝখানে এসে দাঁড়ায়। ১৯১৯/২০ থেকে পুনরায় ইহুদিদের বহু লোক প্যালেস্টাইনে ফিরে আসতে লাগল। ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে (ইহুদি গণনায় ৫৭০৮ সালে অবশ্য এর প্রাচীনত্ব সম্বন্ধে সন্দেহের অবকাশ আছে) ইউনাইটেড নেশনসের অনুশাসনানুসারে প্রাচীন প্যালেস্টাইনের একাংশ নিয়ে ইজরাএল রাষ্ট্র (Erez Jissrael) গঠিত হয়। অর্থাৎ অন্তত আড়াই হাজার বছর লাগল একটা মৃত রাষ্ট্রকে পুনরুজ্জীবিত করতে। তাই এ রাষ্ট্র যদি আবার লোপ পায় তবে হয়তো লাগবে আরও হাজার দুই তাকে পুনরায় প্রাণ দিতে। তাই গোড়াতেই বলেছি, এ সগ্রাম হয়তো চলবে আরও কয়েক হাজার বছর ধরে।

কিন্তু প্রশ্ন, এ রাষ্ট্র কি আবার লোপ পেতে পারে? অতি ক্ষুদ্র যে রাষ্ট্র এতগুলো বিরাট বিরাট আরব রাষ্ট্রকে চারদিনের ভিতর চূড়ান্ত পরাজয় দিল (বস্তুত এক ঘন্টার ভিতরেই আরবশক্তির চোদ্দ আনা জঙ্গিবিমান নষ্ট হয়, এবং ফলে আরবরা কোনও যুদ্ধক্ষেত্রেই সামান্যতম সার্থক আক্রমণ চালাতে পারেনি। সে কি কস্মিনকালেও এদের কাছে পরাজিত হবে? অবিশ্বাস্য।

মাত্র একটি যোগাযোগের ফলে এ বিপর্যয় ঘটতে পারে। এবং উপস্থিত আরবরা যে সন্ধিপত্রেই দস্তখত্ করুক না কেন, তারা সেই মহালগনের প্রতীক্ষায় প্রহর গুনবে।

সকলেই জানেন, আরব-ইজরাএল দুই পক্ষই লড়েছেন পশ্চিমাগত অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে। কোনওদিন যদি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ লেগে যায় (এবারেও আব্দুন নাসির তাই চেয়েছিলেন কিন্তু রুশ তাঁকে ডোবাল) তবে ইজরাএলের সর্ব সাপ্লাই বন্ধ হয়ে যাবে- এমনকি খাদ্যশস্যও। মিশর-ইরাক তখন লড়বে অনেকটা রুশ যেরকম হিটলারের সঙ্গে লড়েছিল। ইরাক-জরডন হটে হটে যতদূর খুশি যেতে পারে, মিশরের বেলাও তাই। আরব বাহিনী হুবহু রুশদের মতোই কোনও জীবনমরণ সগ্রামে লিপ্ত হয়ে নিজেদের কিছুতেই বিধ্বস্ত হতে দেবে না। এবারেও কোনও কোনও আরব রাষ্ট্র মিশরকে এই ট্যাকটিক বরণ করতে বলেছিল। কিন্তু নাসের জানতেন, ইজরাএল কালক্রমে যদি পরাজয়ের সম্মুখীনও হয় তবে মার্কিনিংরেজ শেষ মুহূর্তে তার পক্ষে নামবেই। আর ইতোমধ্যে প্লেন, তেল, বোমার সাপলাই তো চালু থাকবেই। তাই ভবিষ্যতে আরব রাষ্ট্রপুঞ্জ শুধু তখনই ইজরাএল আক্রমণ করবে যখন গোড়াতেই দেখবে মার্কিনিংরেজ রুশ বা চীনের কিংবা উভয়ের সঙ্গে মরণ-আলিঙ্গনে কণ্ঠ পাকড়ি ধরেছে আঁকড়ি/ দুইজন দুইজনে/। তখন ইজরাএলের সাহায্যের জন্য এরা কড়ে আঙুলটি পর্যন্ত এগিয়ে দিতে পারবে না। ইজরাএল অবশ্যই তার প্রতি-ব্যবস্থা বছরের পর বছর করে যাবে, কিন্তু যুদ্ধবিশারদ তথা অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলেন : ক্ষুদ্র একটি রাষ্ট্র যার লোকবল যৎসামান্যেরও কম, যার প্রায় তাবৎ উপার্জন বিশ্ব ইহুদি সংঘের দানখয়রাত থেকে, যার আপন উৎপাদনী শক্তি প্রয়োজন মেটানোর চেয়েও ঢের ঢের কম, তার পক্ষে এ হেন অর্থনৈতিক পলিসি আত্মহত্যার শামিল। তাই আজ থেকে আরব ঠিক এইটেই কামনা করছে।

আর আরব সম্পূর্ণ নিরাশ হবেই-বা কেন? ক্রুসেডের সময় আরবভূমির এক ক্ষুদ্রাংশ তিনশো বছর ধরে লড়েছে পোপের নেতৃত্বে জমায়েত তাবৎ ইয়োরোপের সঙ্গে এবং শেষ পর্যন্ত তারা হোলিল্যান্ড ত্যাগ করে ফিরে যান যাঁর যাঁর দেশে পোপের কাতর ক্রন্দন, তীব্র অভিসম্পাত উপেক্ষা করে। ইহুদি যদি দু হাজার বছরের মড়া রাষ্ট্রে প্রাণ দিতে পারে, তবে আরবই-বা তার মাত্র এক হাজার বছরের পুরনো রাষ্ট্রশক্তিতে প্রাণ সঞ্চার করতে পারবে না কেন?

তা হলে প্রশ্ন, এ সমস্যার কি কোনও সমাধান নেই?

আছে হয়তো। কিন্তু যে সমাধান এক পক্ষ কিছুতেই স্বীকার করবে না সেটাকে সমাধান বলি কী প্রকারে? তবু দেখা যাক।

যুদ্ধবিরতির সঙ্গে সঙ্গেই মার্কিনিংরেজের শুধু একটি চিন্তা : এই যে আরব-বলদের মড়াটা পড়েছে পায়ের কাছে, এর কতটা অংশ পাব আমি– সিংহ-আন্-স্যাম, কতটা পাবে জনবুল-নেকড়ে, আর কতটা পাবে ইহুদি-ফেউ?- যদ্যপি বেচারি ফেউটাই এস্থলে করেছে লড়াই। কিন্তু সে ফালতু জমিজমা নিয়ে করবে কী? অত ইহুদি পাবে কোথায়? হাতের চেয়ে যে আঁব বড় হয়ে যাবে! আর সে যদি নিতে চায়, নিক। আমরা নেব সিনা, গুদা, কলিজা! শাঁসালো বস্তু। সেগুলো কী, এখখুনি নিবেদন করছি।

বিশ্বাস করুন আর না-ই করুন, বিবিসি যুদ্ধবিরতির প্রথম খবর দেবার ঠিক আট মিনিট দশ সেকেন্ড পর একটি talk-টিপ্পনী বেতারিত করল। বক্তা ইংরেজ ইহুদি কি না জানিনে; তাকে ইহুদি বলে ধরে নিয়ে আমি ইহুদিজাতকে অপমান করতে চাইনে।

নাকি-নাকি ন্যাকা সুরে নিজের স্বার্থ যতখানি গোপন করা যায় তাই করে এবং ইংরেজি ভাষা যে ভণ্ডামির জন্য প্রকৃষ্টতম ভাষা সেকথা যে হটেনটট সাত অবধি গুনতে পারে না সে-ও জানে যা বললেন তার বিগলিতার্থ, এরকম লড়াই বড়ই খারাপ, বড়ই খারাপ। এরকম ফের হতে দেওয়া উচিত নয়, উচিত নয়। এই দেখুন না, এরই ফলে আরব জাত বন্ধ করে দিল সুয়েজ খাল— বলুন তো আমাদের জাহাজ চলাচল করবে কী করে? আবার কসম খেয়ে বসল, তেল বেচবে না আমাদের কাছে ওহ! আমাদের বাস-কারখানা তা হলে চলবে কী করে! আর গালফ-অব-আকাবা, শরুম্-উশ-শেখ সে তো বটেই বটেই। অতএব এ হেন অঘটন যাতে পুনরায় না ঘটে তার জন্য ক. সুয়েজ খাল আন্তর্জাতিক কন্ট্রলে নিয়ে নাও, খ. তাবৎ আরবভূমির তেলেরও এমন ব্যবস্থা কর যাতে করে আসছে দুর্যোগে আরব জাত বস্তুটা নিয়ে ছিনিমিনি না খেলতে পারে এবং গ. কিন্তু গ–অর্থাৎ গালফ অব্‌ আকাবা সম্বন্ধে টীকাকারের উত্সাহ কম কারণ সেখানে প্রধান স্বার্থ ইজরাএলের। এর অর্থ কী? সুয়েজ খাল কন্ট্রলে এলে ইংরেজকে মাশুল বাবদ এক পৌন্ডের জায়গায় দিতে হবে একটি ফার্দিং (ও! ফার্দিং বুঝি অধুনা দুর্লভ? তা সেটা দারুণ স্বার্থত্যাগ করে ফের টাকশালে বানাতে হবে বইকি! Oh Albion! Consider thy historical self-sacrifice!)। তেল কন্ট্রলে এলে হয় কোনও রয়েলটিই দেব না, নয় ওই দু-একটা ফার্দিং থ্রোন টু দি অ্যারাব-বয়!

লড়াই করে মলো ইজরাএল আর লুটের বেলা এলবিয়ন। এর ঠিক উল্টোটাকে বাঙলায় বলে– হায়, বাঙলা বড়ই নাঈফ শিশুর আধো-আধো ভাষা, ও নিয়ে আদৌ ভণ্ডামি করা যায় না খেলেন দই রমাকান্ত বিকারের বেলা গোবদ্দন। এস্থলে ইজরাএল আগেভাগেই বিকার করে বসে আছে, এবারে দই খাবেন গোবর্দন ইংরেজ মহাজন। তবে এর মধ্যে একটুখানি আশার আলো দেখা যাচ্ছে। অ্যাদ্দিন ইংরেজ বিজিনেস বা শপ-লিফটিং করেছেন অঘা ভারতীয়দের সঙ্গে, শিশু নিগ্রোদের সঙ্গে, ক্যাবলাকান্ত আরবদের সঙ্গে, এবারে চাচা, নয়া ওঝার নয়া নয়া খেল। এরা আণ্ডা না ভেঙে মামলেট বানাতে পারে, দেখলে না, নেই নেই তো নেই, সেই নেই নেই থেকে দ্যাখ তো না দ্যাখ একটা নয়া চনমনে সমূহ রাষ্ট্র ইজরাএল পয়দা করে দিয়ে সপ্রমাণ করে ফেলল, তোমাদের আড়াই হাজার বছরের পুরনো পদার্থবিদ্যা দর্শনের স্বতঃসিদ্ধ something cannot come out of nothing আগাপাশতলা ভুল, বিলকুল ভণ্ডুল। জানি তোমরা হর ডিল বা ঘোড়া বিক্রির জন্য পাঠাবে তোমাদের ঝানু ঝানু স্কটসম্যানদের কিন্তু ওদের খোয়াড়েও আছে গণ্ডায় গণ্ডায় ঝাণ্ড ঝাও স্কটিশ জু– যারা ক্রমান্বয়ে চতুর্দশ পুরুষ স্কটল্যান্ডে জন্মমৃত্যু বিবাহ সেরে স্কটসম্যানদের চুষেছে এবং চুষে ভর্তি পকেটে হুইসিল দিতে দিতে পরশুদিন এই হেথা ইজরাএলে এসেছে। তোমরা যদি সুয়েজখালে নাও চল কইরা দু পয়সা কামাও তবে ইহুদি গোপাল সেখানে স্রেফ ঢেউ গুনে দু আঁজি।

কিন্তু এ সবেতে কিছু যায়-আসে না। সুয়েজ, শম্ উশ-শেখ, তেল এসব নিয়ে আরব লেনদেন করতে হরবত তৈরি। এস্তেক– আমার বিশ্বাস–ইজরাএলের চতুর্দিকে জমাজমি নিয়েও সে দরদস্তুর করতে রাজি আছে, কিন্তু তার একটিমাত্র শর্ত মেনে নিতে হবে।

সে শর্তটি : যেসব আরব চাষা জেলেদের প্যালেস্টাইন থেকে তাড়িয়ে দিয়ে ইজরাএল তৈরি করেছ তাদের ফিরিয়ে নিয়ে পূর্ণ নাগরিক অধিকার দিতে হবে।

ইহুদিদের প্যারিস তেল-আভিভ শহর হেসে গড়াগড়ি দেবে। তা কখনও হয়!

উত্তরে আরব বলে, কেন হবে না? তেরশো বছর নয়, তারও বহুপূর্বের থেকে আরব-ইহুদি পাশাপাশি বাস করেছে। পয়গম্বর হজরত মুহম্মদ ইহুদিদের বিশেষ সম্মানের চোখে দেখতেন। নিউ টেসটামেন্টে পাই, ইহুদিরা প্রভু খ্রিস্টকে ক্রুশবিদ্ধ করে মেরেছে এবং তারই ফলস্বরূপ যুগ যুগ ধরে খ্রিস্টানরা তোমাদের অত্যাচার করেছে, এখনও কোনও কোনও দেশে করে আর হিটলারের কথা তুলব না, সে তো বিশ্বজন জানে। অথচ কুরান শরিফে স্পষ্ট বলা হয়েছে, প্রভু যিশু আদৌ ক্রুশবিদ্ধ হয়ে মারা যাননি। যে কলঙ্ক থেকে আমাদের নির্ভুল আপ্তবাক্য কুরান শরিফ তেরশো বছর পূর্বে তোমাদের বেকসুর মুক্তি দিয়েছে, সেই কলঙ্ক থেকে খ্রিস্টানদের প্রতিভূ হিজ হোলিনিস পোপ তোমাদের মুক্তি দিয়েছেন বছর দুই হয় কি না হয়। গ্রিক অর্থডক্স, কপট, লুথেরিয়ান ইত্যাদি চার্চ এখনও দেয়নি। অর্থাৎ প্রায় এক হাজার ন-শো ত্রিশ বছর ধরে পৃথিবীর সর্ব খ্রিস্টান তোমাদের অপরাধী ধরে নিয়ে যেখানে-সেখানে ঠেঙিয়েছে। তোমাদের নামে কুৎসিত কেলেঙ্কারি কেচ্ছা রটিয়েছে যে, তোমরা তোমাদের এক বিশেষ পরবের দিনে একটি নিষ্পাপ খ্রিস্টান শিশুর গলা কেটে তার রক্তপান করাটা অবশ্য কর্তব্য পুণ্য বলে স্বীকার কর।(১) খ্রিস্টানদের এই ইহুদিবিদ্বেষের জন্য বিশেষ ইংরেজি শব্দ এটি-সেমিটিজম। এবং এতেও সন্তুষ্ট না হয়ে ইংরেজি ভাষা জরমন থেকে নিয়েছে যুডেনডেসে, সুদূর রুশ থেকে নিয়েছে গ্রম। আরবিতে সেরকম কোনও শব্দ আছে, না আমরা তোমাদের ওপর কখনও কোনও অত্যাচার করেছি? বস্তুত আমাদের নবী মদ খাওয়া এবং সুদ নেওয়া বারণ করে দেওয়াতে এ দুটো মুনাফার ব্যবসা তোমরা একচেটে চালিয়েছ তেরশো বছর ধরে তামাম মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা জুড়ে। এই যে ১৯১৯ থেকে তোমরা মধ্যপ্রাচ্যের ইহুদিদের বার বার তোমাদের হোলি ল্যান্ডে নিমন্ত্রণ জানিয়েছ তাদের সবাই এসেছে? (২) এই গত যুদ্ধের সময়ও আমরা কোনও কোনও জায়গায় বিশেষ পুলিশ মোতায়েন করেছি, পাছে উত্তেজিত জনতা তাদের মারধোর করে। আর তোমাদের সঙ্গে লড়াই করে তো আমরা জেরুজালেম দখল করিনি। লড়াই হয়েছিল খ্রিস্টানদের সঙ্গে। শত্রু যদি আমাদের কেউ থাকে তবে সে খ্রিস্টান। অথচ এই খ্রিস্টানদের সঙ্গে আমরা সম্মিলিতভাবে অক্লেশে লেবাননে রাষ্ট্র পরিচালনা করছি।

তোমরাই আবার আমাদের সঙ্গে একই রাষ্ট্রে বাস করতে পারবে না কেন?

অসম্ভব! অসম্ভব! ইহুদি জানে সে আড়াই হাজার বছর ধরে ইজরাএলে যে নবীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সুখস্বপ্ন গড়েছে সে রাজা দাউদ (ডেভিড) সুলেমানের রাজ্যের হুবহু ফটোগ্রাফ। সে রাজ্য পূত-পবিত্র। তাতে কোনও বিধর্মী নেই। যারা ছিল তাদের বহু পূর্বেই নির্মূল করা হয়েছে। সলমনের গ্লরি তো তার বিধর্মীদের সঙ্গে সহযোগিতা করে নির্মিত হয়নি। এসব প্রস্তাব শুনলেই কানে আঙুল দিতে হয়।(৩)

তাই বলেছিলুম, আরব-ইহুদি সমস্যার সমাধান কোথায়?

————

১. দুর্বল স্মৃতিশক্তির জন্য ক্ষমা ভিক্ষা করে নিবেদন, চসার বোধহয় ওই ধরনের একটি নিষ্পাপ বালকের কাহিনী লিখেছেন। ইহুদিরা নাকি তার গলা পুরোপুরি কেটে ফেলতে পারেনি বলে সে বেঁচে যায় ও তার করুণ কাহিনী খ্রিস্টানদের সামনে বর্ণনা করে।

২. আসলে ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে ইজরাএল প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর যখন ইহুদিরা সে রাজ্যের চাষিদের সঙ্গিনের খোঁচায় তাড়িয়ে দিয়ে, তাদের জমিতে বিদেশাগত জাতভাইদের বসাল তখন ইরাক, সিরিয়া ইত্যাদিতে (মিশর ও উত্তর আফরিকায় অপেক্ষাকৃত অনেক কম) আরবরা সেখানকার ইহুদি বাসিন্দাদের ওপর দাদ তুলতে লাগল। ফলে বাধ্য হয়ে এরা ইজরাএলে চলে যেতে লাগল।

৩. অতীতের কোনও বিশেষ পূত-পবিত্র যুগে ফিরে যাওয়ার স্বপ্ন দেখাটা ইহুদিদের একচেটে নয়। মুসলমানদের ওয়াহাবি আন্দোলন এককালে তাই চাইত। অবশ্য তাদের প্রোগ্রামে বিধর্মীদের খেদাবার ব্যবস্থা নেই। কারণ তা হলে মুসলমান ধর্মে দীক্ষিত করবার জন্য লোক পাবে কোথায়? শুনেছি, স্বামী শ্ৰদ্ধানন্দও বৈদিক যুগ পুনরুজ্জীবিত করতে চাইতেন কিন্তু সেই ধর্মরাজ্যে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের শুদ্ধি করে নেবার ব্যবস্থা ছিল (ব্রাত্য ব্যবস্থা তুলনীয়)। এটাকেই যখন বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে পেশ করা হয় তখন তার জিগির Back to nature!

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *