• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • নতুন সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • পুরানো সব ক্যাটাগরি
  • My Account →
  • নতুন সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • পুরানো সব ক্যাটাগরি
  • My Account →
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

১.৪ চতুরঙ্গ বলের উপর দৃষ্টি

লাইব্রেরি » শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় » ঐতিহাসিক কাহিনী সমগ্র - শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় » শঙ্খ-কঙ্কণ (গল্প) - শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় » ১.৪ চতুরঙ্গ বলের উপর দৃষ্টি

ময়ূর এতক্ষণ চতুরঙ্গ বলের উপর দৃষ্টি রাখিয়া বসিয়া ছিল, ভট্ট নাগেশ্বর তাহার নিকটে উপবিষ্ট হইয়া বলিলেন—মহারাজ, এই যুবককে আমি আপনার কাছে এনেছিলাম—

ভূপ সিংহ বলিলেন—জানি। নাগেশ্বরের বাগবিস্তার থামাইয়া তিনি ময়ূরের উপর চক্ষু নিবদ্ধ করিলেন—তুমি আমার অধীনে কর্ম চাও?

ময়ূর বলিল—হ্যাঁ মহারাজ।

রাজা বলিলেন—তোমার হাতে ধনুঃশর দেখে অনুমান করছি তুমি ধনুর্বিদ্যা জানো।

ময়ূর সবিনয়ে বলিল—সামান্য জানি। নাগজাতির কাছে শিখেছি। নাগেশ্বর মুখ খুলিয়া আবার বন্ধ করিলেন। রাজা ময়ূরকে প্রশ্ন করিলেন—তুমি ঘোড়ায় চড়তে জানো?

ময়ূর বলিলেন—না মহারাজ। অসি চালনা?

না মহারাজ।

শুধুই তীর ছুঁড়তে জানো?

নাগেশ্বর আর নীরব থাকিতে পারিলেন না, বলিয়া উঠিলেন—শুধুই কি তীর ছুঁড়তে জানে বয়স্য! এই যুবক অতি ধুরন্ধর তীরন্দাজ, একটি তীর ছুঁড়ে তালগাছের ডগা থেকে পাকা তাল। পেড়ে আনতে পারে। বিশ্বাস না হয় পরীক্ষা করে দেখুন।

অবশ্য পরীক্ষা করে দেখব। এস আমার সঙ্গে। রাজা উঠিয়া দ্বারের দিকে চলিলেন।

রাজপুরী দ্বি-ভূমক হইলেও আকারে ক্ষুদ্র এবং ঘন-সম্বদ্ধ; তাহার পশ্চাৎভাগ অন্তঃপুর, স্বতন্ত্র অবরোধ নাই। অন্তঃপুরের পশ্চাতে উচ্চ প্রাচীরবেষ্টিত বিস্তীর্ণ বিহারভূমি; দুই-চারিটি বৃক্ষ ও লতামণ্ডপশোভিত শপাকীর্ণ অঙ্গন। ভূপ সিংহ এই অঙ্গনের মধ্যস্থলে আসিয়া দাঁড়াইলেন, বলিলেন—এবার তোমার ধনুর্বিদ্যা দেখাও।

ভট্ট নাগেশ্বর ময়ূরকে উৎসাহ দিয়া বলিলেন—দেখাও, দেখাও।

ময়ূর ঊর্ধ্ব আকাশের পানে চোখ তুলিল, সযত্নে ধনুকে গুণ পরাইল; তিনটি শরের মধ্যে একটি হাতে রাখিয়া বাকি দুইটি মাটিতে ফেলিল, তারপর ধীরে ধীরে ধনুকে শরযোজন করিয়া ধনু ঊর্ধ্বে তুলিল।

প্রাসাদের দ্বিতলে বাতায়ন সম্মুখে দাঁড়াইয়া কুমারী সোমশুক্লা চম্পাকলির ন্যায় ক্ষুদ্র শঙ্খটি দেখিতেছিলেন; পাশের অন্য একটি বাতায়নে চঞ্চরী বাহিরের দিকে মুখ বাড়াইয়া চাহিয়া ছিল। সে হঠাৎ কলস্বরে বলিয়া উঠিল—দেখ, দেখ, রাজকুমারি, অঙ্গনে কী হচ্ছে!

সোমশুক্লা চকিতে চক্ষু তুলিলেন। প্রাঙ্গণের মাঝখানে দাঁড়াইয়া সেই যুবক, যাহাকে তিনি ক্ষণেকের জন্য পিতার সম্মুখে দেখিয়াছিলেন। যুবক ঊর্ধ্বদিকে ধনু তুলিয়া গুণ আকর্ষণ করিল; ধনু হইতে বাণ ছুটিয়া গেল, আকাশের ঊর্ধ্বলোকে উঠিয়া প্রায় অদৃশ্য হইয়া গেল। ইতিমধ্যে যুবক ক্ষিপ্ত হস্তে মাটি হইতে অন্য একটি বাণ তুলিয়া লইয়া ধনুতে জুড়িয়াছে। প্রথম বাণটি, বেগ নিঃশেষিত হইলে, পাক খাইয়া নীচে নামিতে আরম্ভ করিল। যুবক তখন দ্বিতীয় বাণ মোচন করিল। দুই বাণ মধ্যপথে ফলকে ফলকে চুম্বন করিয়া একসঙ্গে মাটিতে পড়িল।

ভট্ট নাগেশ্বর দুই বাহু আস্ফালন করিয়া হর্ষোৎফুল্ল কণ্ঠে বলিলেন—সাধু, সাধু!

রাজা কিছু বলিলেন না, কিন্তু তাঁহার কুঞ্চিত চক্ষে গোপন অভিসন্ধি ক্ষণেকের জন্য ফুটিয়া উঠিল। তিনি হস্তের ইঙ্গিতে ময়ূরকে ডাকিয়া পুরীর দিকে ফিরিয়া চলিলেন। নাগেশ্বর উচ্ছ্বসিত স্বরে অদ্ভুত অদ্ভুত বলিতে বলিতে তাঁহার অনুগামী হইলেন।

দ্বিতলের বাতায়নে চঞ্চরী ছুটিয়া গিয়া সোমশুক্লার নিকটে দাঁড়াইল, তাঁহার অঞ্চল টানিয়া দীপ্ত চক্ষে বলিল—রাজকুমারি! কী সুন্দর যুবাপুরুষ!

রাজকুমারীও চমৎকৃত হইয়াছিলেন, উৎফুল্ল মুখে বলিলেন—অপূর্ব শরসন্ধান।

বিহ্বলা চঞ্চরী তাঁহার হস্ত আকর্ষণ করিয়া বলিল—ও কে রাজকুমারী!

সোমশুক্লা চঞ্চরীর মুখে উত্তপ্ত অভীপ্সা দেখিলেন; চঞ্চরীর বহ্নিশিখার মতো রূপ যেন আরও তীব্র-সুন্দর দেখাইতেছে। তিনি অন্য দিকে মুখ ফিরাইয়া নীরস কণ্ঠে বলিলেন—জানি না।

এই সময় সীমন্তিনী প্রবেশ করিল।

সীমন্তিনীর বয়স এখন পঁয়ত্রিশ বছর। শীর্ণ তপঃকৃশ আকৃতি, মুখের উপর দুরপনেয় তিক্ততা স্থায়ী আসন পাতিয়াছে; তবু তাহার মুখাবয়ব হইতে বিগত লাবণ্যের চিহ্ন সম্পূর্ণ লুপ্ত হইয়া যায় নাই।

চঞ্চরীকে সোমশুক্লার হাত ধরিয়া দাঁড়াইয়া থাকিতে দেখিয়া সীমন্তিনীর দুই চক্ষু প্রজ্বলিত হইয়া উঠিল, সে কাছে আসিয়া কঠিন স্বরে কন্যাকে বলিল—চঞ্চরি! কুমারীর অঙ্গ স্পর্শ করেছি কোন স্পর্ধায়! যা—চলে যা এখান থেকে।

চঞ্চরী মাতাকে যমের মতো ভয় করিত, সে কুমারীর হাত ছাড়িয়া দিয়া ছুটিয়া পলাইল। সীমন্তিনী তখন শান্ত স্বরে বলিল—নন্দিনি, স্বর্ণকার এসেছে, নীচে অপেক্ষা করছে।

সীমন্তিনী কুমারীকে নন্দিনী বলিয়া ডাকে, সে তাঁহার ধাত্রীমাতা। সোমশুক্লা তাহাকে জিজি বলেন; শৈশবকালের আদরের ডাক।

সোমশুক্লা বলিলেন—তুমিও আমার সঙ্গে এস জিজি।

সীমন্তিনীর তিক্ত মুখ ক্ষণেকের জন্য কোমল হইল; দুইজনে নীচে নামিয়া গেলেন।

নারী-চরিত্রের জটিলতা কে উন্মোচন করিবে? সীমন্তিনীর জীবনে যে মহাদুর্যোগ আসিয়াছিল তাহার জন্য রাজা ভূপ সিংহের দায়িত্ব কম নয়। অথচ রাজার কন্যাকেই সে নিজের কন্যা বলিয়া বুকে টানিয়া লইয়াছে, নিজের গর্ভজাতা কন্যাকে সহ্য করিতে পারে না।

রাজা ফিরিয়া গিয়া নিভৃত কক্ষে বসিয়াছিলেন; ময়ূর ও নাগেশ্বরকে উপবেশন করিতে বলিলেন। সকলে উপবিষ্ট হইলে রাজা ময়ূরকে বলিলেন—তোমাকে আমি কর্ম দেব। তুমি রাজভবনেই অন্যান্য পরিচরের ন্যায় থাকবে। তোমাকে অশ্বারোহণ শিখতে হবে, অসিবিদ্যা শিখতে হবে।

ময়ূর বলিল—শিখব মহারাজ। আমাকে কোন্ কর্ম করতে হবে?

রাজা বলিলেন—এখন তোমার কোনো কর্ম নেই। যখন সময় হবে আমি তোমার কর্মনির্দেশ করব। আজ থেকে তুমি আমার আজ্ঞাধীন, আমি যা আদেশ করব তাই করবে।

ময়ূর যুক্তকরে বলিল—যথা আজ্ঞা মহারাজ।

রাজার অধরপ্রান্তে হাসির মতো একটা ব্যঞ্জনা দেখা দিল, তিনি কতকটা নিজ মনেই বলিলেন—অনেকদিন থেকে প্রতীক্ষ্ণ করছি।

তারপর তাঁহার মধ্যে অন্য মানুষের আবির্ভাব হইল, তিনি নাগেশ্বরের দিকে কটাক্ষপাত করিয়া বলিলেন-তোমার দৃতকর্মের কী হল?

নাগেশ্বর বলিলেন—দূতকর্ম সম্পন্ন হয়েছে বয়স্য। মহারাজ সূর্যবর্মাকে আপনার বলক্ষেপ জানিয়েছি।

রাজা বলিলেন—কী জানিয়েছ আমার কাছে পুনরাবৃত্তি কর। তোমাকে বিশ্বাস নেই, আগের বার তুমি ভুল বলক্ষেপ জানিয়ে অনর্থ ঘটিয়েছিলে।

নাগেশ্বর ললাটে করাঘাত করিয়া বলিলেন—হা হতোস্মি! একবার ভুল করেছি বলে কি বার বার ভুল করব। আমি তাঁকে জানিয়েছি যে আপনি বাম দিকের নৌবলকে সম্মুখের তৃতীয় কোষ্ঠে সঞ্চারিত করেছেন! ঠিক বলেছি কি না?

রাজা সম্মুখে চতুরঙ্গ ছকের দিকে দৃষ্টি নমিত করিলেন। ময়ূর এতক্ষণ ইহাদের কথার তাৎপর্য বুঝিতে পারে নাই, এখন বুঝিল ভট্ট নাগেশ্বর কিরূপ গোপনীয় দৃতকার্যে সপ্তমপুরে গিয়াছিলেন। দুই রাজা নিজ নিজ রাজ্যে বসিয়া দাবার চাল দিয়া দূতমুখে বার্তা পাঠাইতেছেন। এই খেলাটি বোধ হয় দুই বছর আগে আরম্ভ হইয়াছিল, আরও দুই বছর চলিবে।

ভূপ সিংহ মুখ তুলিয়া বলিলেন—ঠিকই বলেছ। সূর্যবর্মা কি বললেন?

তিনি আপনার চাল নিজের ছকে বসিয়েছেন। বললেন, মাসেক কালের মধ্যে পাল্টা চাল দূতমুখে জানাবেন।

ভাল। বন্ধু সূর্যবর্মা কুশলে আছেন তো?

শারীরিক কুশলেই আছেন, কিন্তু মনের কুশল কোথায়? অনেক খেদ প্রকাশ করলেন, বললেন—আমি অপুত্রক, আমার বন্ধু ভূপ সিংহ ভাগ্যদোষে পুত্রহীন; আমাদের মৃত্যুর পর রাজ্যের কী দশা হবে কে জানে! হয়তো শৃগালের বাসভূমি হবে।

ভূপ সিংহ উদ্গত নিশ্বাস চাপিয়া বলিলেন—ওকথা থাক, আমাদের মৃত্যুর পর যা হবার হবে। কিন্তু যতদিন বেঁচে আছি— তারপর সন্নিহিত ভৃত্যকে ডাকিয়া বলিলেন—বজ্রবাহু, এর নাম ময়ূর। আজ থেকে আমি একে আমার দেহরক্ষী নিযুক্ত করেছি। একে সঙ্গে নিয়ে যাও, রাজভবনে যথাযোেগ্য স্থান এবং অশন-বসনের নির্দেশ কর।

বজ্ৰবাহু ময়ূরকে সঙ্গে লইয়া চলিয়া গেল। রাজা গাত্রোত্থান করিলেন, ভট্ট নাগেশ্বরকে বলিলেন—বয়স্য, চল তোমাকে মিষ্টান্ন ভোজন করাই।

 

সে রাত্রে ভূপ সিংহের চক্ষে নিদ্ৰা আসিতেছিল না। যথাকালে আহার করিয়া তিনি দ্বিতলে শয়নকক্ষে শয্যা আশ্রয় করিয়াছিলেন, ভৃত্য বজ্ৰবাহু পদ-সংবাহন করিয়া দিয়াছিল। অভ্যাসমত তাঁহার একটু তন্দ্রাকর্ষণও হইয়াছিল। কিন্তু বজ্ৰবাহু চলিয়া যাইবার পর তিনি আবার জাগিয়া উঠিয়াছিলেন, চিন্তাতপ্ত মস্তিষ্ক তাঁহাকে ঘুমাইতে দেয় নাই।

শয্যায় শুইয়া তিনি চিন্তা করিতে লাগিলেন, তারপর উঠিয়া কক্ষে পদচারণ আরম্ভ করিলেন। আজ পূর্বাহে যে কয়টি ঘটনা ঘটিয়াছে তাহাই তাঁহার চিন্তার বস্তু। সতেরো বছর পূর্বে রানীর হস্তচ্যুত দক্ষিণাবর্ত শঙ্খ চূর্ণ হইয়া গিয়াছিল; তারপরেই আসিল সর্বনাশা বিপর্যয়। আজ আবার অযাচিতভাবে দক্ষিণাবর্ত শঙ্খ আসিয়া উপস্থিত হইয়াছে। সেই সঙ্গে আসিয়াছে এক অজ্ঞাতকুলশীল যুবক; অদ্ভুত তীরন্দাজ, অথচ শান্ত নিরভিমান দৃঢ়চরিত্র। দীর্ঘকাল তিনি এমনি একটি মানুষের প্রতীক্ষ্ণ করিতেছিলেন; চঞ্চরীর যৌবনপ্রাপ্তির সন্ধিক্ষণে সে আসিয়া উপস্থিত হইয়াছে। এ এক অপূর্ব যোগাযোগ। এ কি নিয়তির ইঙ্গিত? তবে কি সত্যই শুভকাল ফিরিয়া আসিয়াছে? তাঁহার জীবনে অন্য শুভ নাই, একমাত্র শুভ প্রতিহিংসাসাধন। তাহা কি সফল হইবে? মহাপাপিষ্ঠ আলাউদ্দিনকে যুদ্ধে পরাভূত করার সামর্থ্য তাঁহার নাই, গুপ্তহত্যার আশাও তিনি ত্যাগ করিয়াছেন। এখন কেবল একটি মাত্র প্রতিহিংসার অস্ত্র তাঁহার হাতে আছে। বৃহতের বিরুদ্ধে ক্ষুদ্রের প্রতিহিংসা; ক্ষুদ্র বৃশ্চিক হস্তীকে দংশন করিয়া বিষে জর্জরিত করিতে পারে। তিনি তাহাই করিবেন। আলাউদ্দিন তাঁহার কুমারী কন্যাকে অপহরণ করিয়া তাঁহার মুখ কালিমালিপ্ত করিয়াছিল, তিনি সেই কালিমা চতুগুণ ফিরাইয়া দিবেন। কামকুক্কুর আলাউদ্দিন জানিতে পারিবে না, তারপর তিনি তাহাকে জানাইয়া দিবেন। সমস্ত যবনরাজ্য জানিতে পরিবে।…এই কার্যের জন্য ময়ূরের ন্যায় যুবক চাই, যে বিশ্বাসঘাতকতা করিবে না, যে চঞ্চরীর রূপের মোহে ভুলিয়া তাহাকে আত্মসাৎ করিতে চাহিবে না। ময়ূর উত্তম উপাদান, কিন্তু তাহাকে গড়িয়া তুলিতে হইবে।

এই চিন্তাগুলি বারংবার ভূপ সিংহের মস্তিষ্কে আবর্তিত হইয়া বিষাক্ত পতঙ্গের ন্যায় তাঁহার চেতনাকে দংশন করিতেছিল। রত্রি দ্বিপ্রহর অতীত হইল, তবু চোখে নিদ্রা নাই—নিদ্রার ইচ্ছাও নাই–

আর্য!

ভূপ সিংহ চমকিয়া দ্বারের পানে চাহিলেন। স্লান দীপালোকে স্পষ্ট দেখিতে পাইলেন না, দ্রুত আসিয়া দেখিলেন, দ্বারের কবাট ধরিয়া দাঁড়াইয়া আছেন কুমারী সোমশুক্লা। রাজা বলিলেন, শুক্লা!

সোমশুক্লা হ্রস্বস্বরে বলিলেন—পিতা, আপনার কি নিদ্রা আসছে না?

ভূপ. সিংহ কন্যার প্রতি স্নেহশীল হইয়াছিলেন বটে, কিন্তু তাঁহাদের মধ্যে মনের ঘনিষ্ঠতা জন্মে নাই। এখন রাজা যেন কন্যাকে অত্যন্ত নিকটে পাইলেন। তিনি বলিলেন—না বৎসে, ঘুম

আসছে না। কিন্তু রাত্রি অনেক হয়েছে, তোমার চোখে ঘুম নেই কেন?

সোমশুক্লা ঘরে প্রবেশ করিয়া বলিলেন—আমি ঘুমিয়েছিলাম পিতা, কিন্তু ঘুম ভেঙে গেল। তারপর পাশের ঘরে আপনার পদশব্দ শুনে উঠে এলাম।

রাজা বলিলেন—তুমি আবার শয়ন কর গিয়ে। আমার ঘুম কখন আসবে ঠিক নেই।

সোমশুক্লা বলিলেন—না পিতা, আপনি শয়ন করুন, আমি আপনার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি। এখনি ঘুম আসবে।

রাজা শয্যায় শয়ন করিলেন, সোমশুক্লা শিয়রে দাঁড়াইয়া মাথায় হাত বুলাইয়া দিতে লাগিলেন। অপরিসীম প্রশান্তিতে রাজার দেহমন ভরিয়া উঠিল। তিনি ঘুমাইয়া পড়িলেন।

Category: শঙ্খ-কঙ্কণ (গল্প) - শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়
পূর্ববর্তী:
« ১.৩ ভট্ট নাগেশ্বরের গৃহ ক্ষুদ্র
পরবর্তী:
১.৫ ময়ূরের প্রথম রাত্রিটা সুখনিদ্রায় কাটিল »

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বাংলা লাইব্রেরি : উল্লেখযোগ্য বিভাগসমূহ

লেখক ও রচনা

অনুবাদ সাহিত্য

সেবা প্রকাশনী

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

কোরআন

হাদিস

ত্রিপিটক

মহাভারত

রামায়ণ

পুরাণ

গীতা

বাইবেল

বিবিধ রচনা

বাংলা ওসিআর

Download Bangla PDF

হেলথ

লাইব্রেরি – ফেসবুক – PDF

top↑