• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • নতুন সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • পুরানো সব ক্যাটাগরি
  • My Account →
  • নতুন সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • পুরানো সব ক্যাটাগরি
  • My Account →
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

১.৩ ভট্ট নাগেশ্বরের গৃহ ক্ষুদ্র

লাইব্রেরি » শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় » ঐতিহাসিক কাহিনী সমগ্র - শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় » শঙ্খ-কঙ্কণ (গল্প) - শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় » ১.৩ ভট্ট নাগেশ্বরের গৃহ ক্ষুদ্র

ভট্ট নাগেশ্বরের গৃহ ক্ষুদ্র কিন্তু পাষাণনির্মিত। মাত্র দুইটি ঘর, তৈজসপত্র বেশি নাই। ব্রাহ্মণ অকৃতদার, গৃহ গৃহিণীহীন; নিজেই গৃহকর্ম করেন, নিজেই রন্ধন করেন। তাঁহার গৃহদ্বার সর্বদাই খোলা থাকে; দেশে চোর বেশি নাই, যাহারা আছে তাহারা নাগেশ্বরের শূন্য গৃহে চুরি করিতে আসে না।

হস্তমুখ প্রক্ষালনের পর নাগেশ্বর রন্ধনকার্যে লাগিয়া গেলেন; সঙ্গে সঙ্গে তাঁহার বাক্যস্রোত আবার প্রবাহিত হইল। তিনি রাজ্য ও রাজপুরীর বহু কৌতুককর ঘটনা বিবৃত করিলেন। ময়ূর তাঁহার বিবৃতি হইতে অনেক কথা জানিতে পারিল।

নৈশাহার সমাধা হইলে নাগেশ্বর ঘরের কোণ হইতে গোল করা শয্যা আনিয়া দুই ভাগ করিয়া মাটিতে পাতিলেন; তারপর প্রদীপ নিভাইয়া শয়ন করিলেন। উভয়েই ক্লান্ত ছিলেন, অবিলম্বে ঘুমাইয়া পড়িলেন।

পরদিন প্রভাতে নাগেশ্বর ময়ূরকে লইয়া রাজভবনে উপনীত হইলেন। প্রতীহার ময়ূরের হাতে ধনুর্বাণ দেখিয়া ভ্রূ তুলিল, কিন্তু রাজবয়স্যের সঙ্গীকে বাধা দিল না, হাস্যমুখে পথ ছাড়িয়া দিল।

প্রাসাদের একটি নিভৃত কক্ষে ভূপ সিংহ মসৃণ পাষাণকুট্টিমের উপর একাকী বসিয়া আছেন। তাঁহার সম্মুখে পাষাণে ক্ষোদিত চতুরঙ্গ খেলার চতুষ্কোণ ছক পাতা রহিয়াছে। বলগুলির বিন্যাস দেখিয়া মনে হয় খেলা অনেকদূর অগ্রসর হইয়াছে। কিন্তু খেলার প্রতিপক্ষ উপস্থিত নাই।

ভট্ট নাগেশ্বর স্বস্তিবাচন করিলেন—বয়স্যের জয় হোক। সপ্তমপুর থেকে একটি শুক্তি এনেছি, গ্রহণ করুন আর্য। বলিয়া কটিবস্ত্র হইতে একটি শ্বেতবর্ণ ক্ষুদ্র বস্তু বাহির করিলেন।

রাজা ভূপ সিংহ খেলার ছক হইতে অন্যমনস্ক চক্ষু তুলিলেন। শীর্ণ দীর্ঘ অগ্নিদগ্ধ আকৃতি, মুখমণ্ডল বলিরেখাঙ্কিত; মাথার আস্কন্ধ কেশ পক্ক, ভ্রূ ও গুম্ফ পক্ক, কেবল চক্ষুতারকা ঘন কৃষ্ণবর্ণ। তিনি ময়ূরকে দেখিতে পাইলেন না, নির্লিপ্ত কণ্ঠে বলিলেন—শুক্তি!

হাঁ মহারাজ। সপ্তমপুরে এক যাযাবর সমুদ্রবণিকের সঙ্গে দেখা হয়েছিল, তার কাছ থেকে। এই শুক্তি কিনেছি। দেখুন মহারাজ, কী অপূর্ব শুক্তি! বলিয়া নাগেশ্বর করতলে শুক্তিটি লইয়া রাজার সম্মুখে ধরিলেন।

ভূপ সিংহ নির্লিপ্তভাবে শুক্তি তুলিয়া লইলেন, নাড়িয়া চাড়িয়া বলিলেন—একটি ক্ষুদ্র শঙ্খ। এর অপূর্বত্ত্ব কোথায়?

সত্যই শম্বুকের ন্যায় ক্ষুদ্র একটি শঙ্খ। নাগেশ্বর উত্তেজিত হইয়া বলিলেন—হা হতোস্মি, দেখছেন না মহারাজ, দক্ষিণাবর্ত শঙ্খ। মহাভাগ্যদাতা দক্ষিণাবর্ত শঙ্খ। এ শঙ্খ যার কাছে থাকে তার কখনো অমঙ্গল হয় না।

ভূপ সিংহ কিয়ৎকাল শূন্যে চাহিয়া রহিলেন, তারপর ধীরে ধীরে বলিলেন—আমার একটি দক্ষিণাবর্ত শঙ্খ ছিল। একদিন রানীর হাত থেকে স্খলিত হয়ে মণিকুট্টিমে পড়ল, শত খণ্ডে চূর্ণ হয়ে গেল। আজ থেকে সতেরো বছর আগে। তিনি ক্ষুদ্র শঙ্খটি নিরীক্ষণ করিয়া বলিলেন—হাঁ, দক্ষিণাবর্তই বটে। কিন্তু এ নিয়ে আমি কি করব বয়স্য? আমার আর সৌভাগ্যের কী প্রয়োজন।

নাগেশ্বর কুণ্ঠিত মুখে নীরব রহিলেন। রাজা শঙ্খটিকে কিছুক্ষণ মুষ্টিতে আবদ্ধ রাখিয়া চিন্তা করিলেন, শেষে বলিলেন—সোমশুক্লাকে ডেকে পাঠাও। সে এই শঙ্খ ধারণ করুক, হয়তো তার মঙ্গল হতে পারে।

সেই ভাল, সেই ভাল মহারাজ। আমি নিজেই কুমারী শুক্লাকে ডেকে আনছি। বলিয়া নাগেশ্বর দ্রুত অন্তঃপুর অভিমুখে প্রস্থান করিলেন।

এতক্ষণে ময়ূরের প্রতি ভূপ সিংহের দৃষ্টি পড়িল। সে ধনুর্বাণ-হস্তে দ্বারের নিকট নিশ্চল

দাঁড়াইয়া ছিল, রাজা মৃদু বিস্ময়ে প্রশ্ন করিলেন—তুমি কে?

ময়ূর সসম্রমে শির নত করিয়া বলিল—ভট্ট নাগেশ্বর আমাকে সঙ্গে এনেছেন। আমি বিদেশী, আমার নাম ময়ূর।

রাজা বলিলেন—তোমার হাতে আটবিক জাতির ধনুর্বাণ, কিন্তু আকৃতি দেখে আর্য মনে হয়।

ময়ূর বলিল—মহারাজ, আমি আটবিক নাগ জাতির মধ্যে পালিত হয়েছি, কিন্তু জাতিতে ক্ষত্রিয়।

তোমার বংশপরিচয় কি?

বংশপরিচয় জানি না আর্য।

ময়ূরের পানে চাহিয়া চাহিয়া রাজার মুখ-ভাব পরিবর্তিত হইল, মেরুদণ্ড ঋজু হইল। মনে হইল, একটা মানুষ অন্তর্হিত হইয়া অন্য একটি মানুষ আবির্ভূত হইতেছে। তিনি দৃঢ় আদেশের স্বরে বলিলেন, কাছে এস। উপবিষ্ট হও। তোমার ইতিহাস শুনতে চাই।

ময়ূর আসিয়া রাজার সম্মুখে জানু মুড়িয়া বসিল; মাঝখানে দাবার ছকের ব্যবধান রহিল।

তারপর ময়ূর নিজ জীবনের ইতিহাস বলিল।

তাপ্তি নদীর দক্ষিণে দেবগিরি রাজ্যে তাহার বাস ছিল, তাহার পিতা দেবগিরি রাজ্যের একজন যোদ্ধা ছিলেন। রাজ্যের উত্তর সীমান্তে একটি সেনা-গুল্মে তাহারা থাকিত। ময়ূরের বয়স যখন পাঁচ-ছয় বছর তখন উত্তরাপথ হইতে আলাউদ্দিন নামে এক যবন সেনাপতি দেবগিরি আক্রমণ করেন। সীমান্ত রক্ষা করিতে গিয়া এক খণ্ডযুদ্ধে ময়ূরের পিতা হত হন। তাহার মাতা তাহার প্রাণ বাঁচাইবার জন্য তাহাকে লইয়া জঙ্গলের মধ্যে পলায়ন করেন। জঙ্গল ও পর্বতের ভিতর দিয়া বহুদূর পথ অতিক্রম করিবার পর তাহারা এক বন্য জাতির গ্রামে আশ্রয় পায়। মাতা কিন্তু বেশিদিন বাঁচিলেন না, দু-চার দিনের মধ্যে তাঁহার মৃত্যু হইল। মৃত্যুর পূর্বে তিনি ময়ূরের গোত্র-পরিচয় দিয়া যান নাই, কেবল বলিয়াছিলেন—তুমি ক্ষত্রিয়।

অতীতের কাহিনী শেষ করিয়া ময়ূর বলিল—তারপর আমার জীবনের ষোল বছর নাগজাতির গ্রামে কেটেছে; তারা আমাকে স্নেহ করেছে, আমি তাদের ভালবেসেছি। কিন্তু কয়েকমাস আগে গ্রামবৃদ্ধেরা আমাকে গ্রাম ছেড়ে চলে যেতে আদেশ দিলেন। তাই আমি গ্রাম ছেড়ে বেরিয়েছি; অনেক নদী-পর্বত পার হয়ে এখানে এসেছি।

রাজা ময়ূরের মুখের উপর স্থির দৃষ্টি রাখিয়া শুনিতেছিলেন, প্রশ্ন করিলেন—গ্রামবৃদ্ধেরা তোমাকে তাড়িয়ে দিল কেন?

ময়ূর অধোবদন হইল, তাহার মুখ ধীরে ধীরে অরুণাভ হইয়া উঠিল। রাজা বলিলেন, কোনও দুষ্কৃতি করেছিলে?

ময়ূর আহত মুখ তুলিল—আমার কোনও দোষ ছিল না মহারাজ। সে লজ্জাজড়িত স্বরে থামিয়া থামিয়া বলিতে লাগিল—গ্রামের যুবতী মেয়েরা সকলে—কেবল আমার পিছনেই ঘুরে বেড়াতো—আমার জন্যে নিজেদের মধ্যে চুলোচুলি করত—যুবকেরাও আমার প্রতি সন্তুষ্ট ছিল না—আমি মেয়েদের কাছ থেকে পালিয়ে বেড়াতাম, তবু যুবকেরা আমাকে ঈর্ষা করত—একজন তীর ছুঁড়ে আমাকে মারবার চেষ্টা করেছিল—তাই গ্রামবৃদ্ধেরা বললেন, তোমার জন্যে গ্রামের শান্তিভঙ্গ হচ্ছে, তুমি চলে যাও।

রাজার মুখে শুষ্ক হাসির রেখাঙ্ক পড়িল, কিন্তু চক্ষু ময়ূরের মুখ হইতে অপসৃত হইল না। তিনি বলিলেন—তুমি মেয়েদের ভয় কর?

ময়ূর বলিল—ভয় করি না মহারাজ, কিন্তু ওদের এড়িয়ে চলতে চাই।

এই সময় কুমারী সোমশুক্লা কক্ষে প্রবেশ করিলেন, তাঁহার পশ্চাতে ভট্ট নাগেশ্বর!

সপ্তদশ বর্ষীয়া যুবতী সোমশুক্লাকে দেখিলে দর্শকের মন স্নিগ্ধ আনন্দে পূর্ণ হইয়া ওঠে। দীঘাঙ্গী কন্যা, দেহবর্ণের শুচিশুভ্রতা সোমশুক্লা নাম সার্থক করিয়াছে; মুখখানি লাবণ্যে টলমল। তিনি কক্ষে আসিলেন, তাঁহার গতিভঙ্গিতে পাল-তোলা তরণীর অবলীলা। পিতার পাশে নতজানু হইয়া তিনি স্মিতমুখে বলিলেন—আর্য! আমাকে ডেকেছেন?

রাজার মন কোন্ গভীরতর স্তরে নিমজ্জিত ছিল, তিনি শূন্যদৃষ্টিতে কন্যার পানে চাহিলেন—ডেকেছি!

ভট্ট নাগেশ্বর কুমারীর পিছনে দণ্ডায়মান ছিলেন, বলিয়া উঠিলেন—হা হতোস্মি! দক্ষিণাবর্ত শঙ্খের কথা ভুলে গেলেন মহারাজ!

ও হাঁ—মহারাজ মুষ্টি খুলিয়া শঙ্খটি দেখিলেন, কন্যার দিকে বাড়াইয়া দিয়া বলিলেন—বয়স্য আমার জন্য শঙ্খটি এনেছিল। সুলক্ষণ শঙ্খ, তুমি এটি নাও। স্বর্ণকারকে ডেকে পাঠাও, এই শঙ্খ দিয়ে অলঙ্কার গড়িয়ে নাও। সর্বদা অঙ্গে রেখো, মঙ্গল হবে।

কুমারী সোমশুক্লার শান্ত চোখে আনন্দ ফুটিয়া উঠিল। তিনি শঙ্খটি কপোতহস্তে লইয়া কপালে স্পর্শ করিলেন, বলিলেন—ধন্য পিতা। আমি এখনি স্বর্ণকারকে ডেকে পাঠাচ্ছি।—অনুমতি করুন আর্য।

তিনি উঠিয়া দাঁড়াইলেন। রাজা বলিলেন—এস কন্যা।

প্রস্থান করিবার সময় কুমারী সোমশুক্লার দৃষ্টি ময়ূরের উপর পড়িল, ক্ষণকালের জন্য ময়ুরের মুখের উপর সংলগ্ন হইয়া রহিল। তারপর তিনি পাল-তোলা তরণীর ন্যায় কক্ষ হইতে নিষ্ক্রান্ত হইয়া গেলেন।

Category: শঙ্খ-কঙ্কণ (গল্প) - শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়
পূর্ববর্তী:
« ১.২ সাতপুরা শৈলমালার জটিল আবর্ত
পরবর্তী:
১.৪ চতুরঙ্গ বলের উপর দৃষ্টি »

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বাংলা লাইব্রেরি : উল্লেখযোগ্য বিভাগসমূহ

লেখক ও রচনা

অনুবাদ সাহিত্য

সেবা প্রকাশনী

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

কোরআন

হাদিস

ত্রিপিটক

মহাভারত

রামায়ণ

পুরাণ

গীতা

বাইবেল

বিবিধ রচনা

বাংলা ওসিআর

Download Bangla PDF

হেলথ

লাইব্রেরি – ফেসবুক – PDF

top↑