০৫. গতানুগতিক নিয়ম

০৫.

অ্যাথেনা অ্যাকুইটেন গতানুগতিক নিয়মে তারকার স্তরে সাদামাটাভাবে উপার্জন করছিল। জনগণ কদাচিৎ তাকে মূল্যায়ন করত। সে বছরের অনেক সময় প্রশিক্ষণে ব্যয় করত। অভিনয়ের ক্লাস, নাচ ও হাঁটা-চলার ক্লাস, কণ্ঠ পরীক্ষা, নাট্য, সাহিত্য বিষয়ে ব্যাপক পড়াশোনা এবং অভিনয়ের যাবতীয় প্রয়োজনীয় বিষয়ে সে প্রশিক্ষণ নিয়েছিল। আরও অনেক ছোটখাটো কাজ করত সে।

সে এজেন্টদের চারপাশে ঘুরত, পরিচালকদের তাকে নেবার জন্য বলত। প্রযোজক ও পরিচালকদের শান্তভাবে কামাসক্তে জড়াত এবং ডাইনোসরের মতো স্টুডিও চক্র ও প্রধান ব্যক্তিদের যৌন কামনায় আসক্ত হতে বাধ্য করত।

প্রথম বছরে কিছু কমার্শিয়াল কাজ ও কিছু মডেলিং করে যা উপার্জন করেছিল, তা দিয়ে কোনোমতে তার জীবিকা নির্বাহ করত। খুবই কৃপণতার সাথে তাকে চলতে হতো। এরকম শুধু তার প্রথম বছরই হয়েছিল। এরপর তার অভিনয়ের দক্ষতা বেড়ে গেল।

যারা তাকে গহনা ও টাকা উপহার হিসেবে দিত সে তাদের শুধু প্রেমিক ভাবত। তাদের কেউ কেউ বিয়ের প্রস্তাবও দিয়েছিল। এই সম্পর্ক ছিল খুবই স্বল্পকালের এবং বন্ধুত্বের মধ্য দিয়েই একদিন তা শেষ হয়ে যেত।

এর কোনোটাই তার কাছে যন্ত্রণাদায়ক বা অবমাননাকর ছিল না। এমনকি রোলস রয়েস গাড়ির বিক্রেতাও ধরে নিয়েছিল, সে গাড়ির সাথে আসবে না। সে কৌতুক করে বলেছিল এ দামের মধ্যে এমন গাড়ি হলে আমি কিনব। সে মানুষের প্রিয় ছিল। সে সেক্স দারুণভাবে উপভোগ করত। তার অত্যাধিক প্রচেষ্টার ফলেই সে ধীরে ধীরে চলচ্চিত্র জগতে স্থান করে নিয়েছিল। অভিনয়ই তার জীবন।

 তার নিজস্ব বোধগম্য ক্ষমতা ছিল অন্যদের চেয়ে বেশি। তেমন কোনো বোধগম্য ছিল। বিশ্বের বিপদ-আপদ ছিল তার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তার জীবনটা প্রথমেই অভিনয় দিয়ে শুরু করেছিল। ছোট পর্দায় তার পদযাত্রা তেমন ছিল না। বেশ কিছু বড় নাটকের বড় চরিত্রে সে কিছুদিন অভিনয় করেছিল।

আর এর পরেই চলচ্চিত্রে তার একটা পরিচিতি আসে। এর ফলশ্রুতিতে বড় চলচ্চিত্রে ভালো চরিত্রে অভিনয় করার তার সুযোগ আসে।

 তার বাস্তব জীবন ছিল তার অভিনয়েরই অংশ। সে অধিকতর সজীবতা অনুভব করত তার চরিত্রের নিজের জীবনটা ফুটিয়ে তুলবার জন্য। সে বারংবার চেষ্টা করত।

তার ভালোবাসার বিষয় ছিল আনন্দের মতো গলফ ও টেনিস খেলার মতো, বন্ধুদের সাথে আড্ডার মতো, স্বপ্নের মতো ছিল তার অস্তিত্ব। তার বাস্তব জীবন থিয়েটারের মধ্যে দিয়েই সামনের দিকে ধাবিত হতে লাগল।

অ্যাথেনা একটা নতুন খবর পেয়ে পুরোপুরি আশ্চর্য ও অভিভূত হলো।

সে জানল যে, তাকে বড় অভিনয়ে নির্বাচন করা হয়েছে। কিন্তু সে জানে কেন তাকে পছন্দ করা হলো। আসলে তার এজেন্ট মেলো স্টুয়ার্ট তাকে আলোকিত করার জন্য প্রথম থেকে চেষ্টা করে আসছিল।

তুমি একজন বড় অভিনেত্রী। কিন্তু তুমি এই শহরে অল্প কয়েক বছর ধরে আছ, তোমার মেধা থাকা সত্ত্বেও তুমি কিছুটা অনভিজ্ঞ। তাই আমি যা বলব তাতে তুমি অপরাধ নিও না–যা ঘটে এখানে তা বিস্তৃত হয়।

সে কিছুক্ষণ বিরতি নিল। সাধারণভাবে আমি কখনো এটা ব্যাখ্যা করব না; কারণ ব্যাখ্যাটা ততটা জরুরি নয়।

কিন্তু আমি অত্যন্ত অনভিজ্ঞ অ্যাথেনা হেসে বলল।

না, ঠিক অনভিজ্ঞ নও বলে কোনো কথা নয়, মেলো বলল।

 তুমি তোমার অভিনয়ের প্রতিই মনোযোগী, তবে চলচ্চিত্র শিল্পের অভ্যন্তরীণ জটিলতা সম্পর্কে তুমি অসচেতন।

অ্যাথেনা বেশ মজা পেল। আমাকে বলল আমি কিভাবে এমন সুযোগটা পেলাম।

মেলো বলল, স্টেলিংয়ের এজেন্ট আমাকে ডেকেছিল। সে বলল, সে তোমাকে ট্যাপার নাটকে দেখেছিল। তোমার পারফমেন্সে সে অভিভূত হয়েছিল। সে এখন নিশ্চিতভাবে তার চলচ্চিত্রে তোমাকে অভিনয় করাতে চায়। পরে প্রযোজক আলোচনা করার জন্য আমাকে ডাকল।

প্রযোজকের সাথে আমার চূড়ান্ত আলোচনা হয়েছে। বেতনভুক্ত হয়ে তুমি কাজ করবে। তোমার পারিশ্রমিক দুশত গ্রান্ড। এমন কোনো শর্ত নেই যা তোমার পরবর্তী ক্যারিয়ারে সমস্যা সৃষ্টি করবে, অন্য যে কোনো ছবিতে কাজ করার ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই। এটা তোমার জন্য সত্যিই ভালো সুযোগ।

ধন্যবাদ অ্যাথেনা বলল।

মেলো বলল, স্টিভেন তার সহঅভিনেত্রীর সাথে পাগলের মতো ভালোবাসায় প্রায়ই জড়িয়ে পড়ত। আন্তরিকভাবে কিন্তু সে ভালো লোক।

অ্যাথেনা তাকে থামাল। মেলো, এটা আর বলো না।

আমি মনে করি এটা অবশ্যই তোমাকে অবগত করা দরকার, মেলো বলল।

আমাকে কী বলতে চেষ্টা করছ যে আমি প্রথমেই তার ঘাড়ে লাফ দিয়ে। উঠে পড়েছি! এমন কি মনে হচ্ছে তোমার?

অ্যাথেনা কঠোরভাবে বলল, আমার কি অভিনয়ের প্রতিভা নেই যে তার সঙ্গে আমাকে অন্তরঙ্গ হয়ে অভিনয় করতে হবে?

অবশ্যই নয়, মেলো বলল।

ব্যাপারটা তেমন নয়। অভিনয় ছাড়াও অনেক খুঁটিনাটি বিষয় আছে। কিন্তু তুমি জানো কিভাবে একজন লোক চলচ্চিত্রে বড় তারকা হয়?

কখনো কখনো কেউ কেউ ভালো অভিনেত্রী না হয়েও বড় চরিত্রে অভিনয় করার সুযোগ পায়। আর এটা হলো তোমার জন্য বড় চরিত্র। তুমি এটাকে হাতছাড়া করো না। আর স্টিভেন স্টেলিংয়ের সাথে ভালোবাসায় জড়িয়ে পড়াটা কী খুব কঠিন? সমগ্র বিশ্বের একশত মিলিয়ন মহিলা তাকে ভালোবাসে, তুমি কেন বাসবে না? তোমাকে অভিভূত হতে হবে।

আমি আনন্দিত বোধ করছি, শান্তভাবে অ্যাথেনা বলল।

 কিন্তু আমি আসলেই তাকে ঘৃণা করলে পরে কী ঘটবে?

কাকে ঘৃণা করবে? সে আসলেই একজন সুন্দর মানুষ, আমি তোমাকে শপথ করে বলতে পারি। কিন্তু ততক্ষণ পর্যন্ত তার সাথে ফষ্টিনষ্টি করতে হবে যতক্ষণ ছবিতে তোমার যথেষ্ট পরিমাণ দৃশ্য না নেয় এবং যখন আর তোমাকে বাদ দিতে পারবে না।

 আমি খুব ভালো করলে কী তারা আমাকে বাদ দিতে চাইবে? অ্যাথেনা বলল।

 মেলো দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল, সত্য কথা, স্টিভেন অত লম্বা সময় অপেক্ষা করবে না। তিনদিনের মধ্যে তার ভালোবাসায় না পড়লে, তুমি তার ছবি থেকে বাদ পড়ে যাবে।

এটা যৌন হয়রানি, অ্যাথেনা হেসে বলল।

চলচ্চিত্র জগতে এটা যৌন হয়রানি হতে পারে না। মেলো বলল, এক বা অন্যভাবে তোমার পশ্চাৎদেশ বিক্রির সুযোগ দেবে, অবশ্য এখানে ঢোকার পর।

আমি মনে করি আমি তার ভালোবাসায় আসক্ত হলাম, অ্যাথেনা বলল।

যৌন কাজ করা স্টিভেনের জন্য যথেষ্ট নয়? সে যাকে চায় তার সঙ্গে যৌন কাজ করতে পারে। মেলো বলল।

 সে তোমার সাথে ভালোবাসায় মগ্ন হবে, পরিবর্তে সেও ভালোবাসা চাইবে।

সে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল।

তুমি কাজের বাইরে ভালোবাসা করতে পারো, কারণ তুমি তখন কাজে খুব ব্যস্ত থাকবে না। সে কিছুক্ষণ বিরতি নিল। এটা তোমার সম্মানহানিব কথা হচ্ছে না। সে বলল।

মেলো, তুমি কি মনে করো না করো তা আমি জানি না। আমার শরীর বিক্রি ছাড়াই আমি যথেষ্ট ভালো করতে পারব? অ্যাথেনা শক্তভাবে বলল।

 অবশ্যই তুমি পারবে মেলো বলল। তুমি পঁচিশ বছরের যুবতী। তোমাকে দুই থেকে পাঁচ বছর অপেক্ষা করতে হবে। তোমার প্রতিভায় আমার চুড়ান্ত বিশ্বাস আছে। কিন্তু একটা সুযোগ দাও। সবাই স্টিভেনকে ভালোবাসে।

আমি মেলোকে নিজের করে ভাবতে গিয়েছিলাম। অ্যাথেনা প্রথম দিন আমার শুভেচ্ছা গ্রহণ করেছিল। তার পরও সে আর আমার কোনো কথা, কোনো কিছু সাদরে গ্রহণ করেনি। কারণ তারপর সে স্টিভ স্টেলিংয়ের প্রতি দুর্বল হয়েছিল। তার পর তারা একে-অপরের প্রতি দুর্বলতা প্রকাশ করতে থাকে, পরিশেষে তারা একে-অপরের সঙ্গে গভীর ভালোবাসায় জড়িয়ে পড়ে। ফলে আমার সুযোগটা হাতছাড়া হয়ে যায়। কারণ তখন স্টিভ স্টেলিংয়ের আকাশ ছোঁয়া গুডউইল ছিল। তার গুডউইলের কাছে আমার সব কিছু স্রোতে ভেসে যায়। আমি অ্যাথেনা বুঝতে অক্ষম হই।

এবং শেষ দিন স্টিভ স্টেলিং তার ভালোবাসায় মৌখিকভাবে সাড়া দেয়। আমি মনে করি একটি ভালো ছবির কারণে তারা একে-অপরকে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িয়ে ফেলে। সে কিছুক্ষণ বিরতি নিল, তারপর একটু হেসে বলল, আমি বেশ আছি।

ধন্যবাদ তোমাকে। অ্যাথেনা বলল, কোথায় এবং কখন? তৎক্ষণাৎ স্টিভের চেহারা তার চোখের সামনে ভাসতে লাগল, আরে না, সে বলল, তোমার পছন্দ।

সেই মুহূর্তে সে একজন সুপার তারকা, আর অ্যাথেনা এই পথে নতুন– তাছাড়া সে তার দায়িত্বে তার কর্তব্যে কখনোই কোনো প্রকার অবহেলা করেনি। তুমি কি আমার স্থানে আসতে পারবে? অ্যাথেনা জিজ্ঞেস করল, আমরা একসঙ্গে আজ রাতের খাবার খাব তারপর বাকি কাজের ব্যাপারে কথা বলব। সে কিছুক্ষণ বিরতি নেওয়ার পর বলল, রাত সাত টার সময়।

তারপর অ্যাথেনা শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিতে আরম্ভ করল। আসলেই আমার কোনো কাজই যৌনতার কারণে পড়ে থাকতে পারে না। তারা রাতের খাবার খাওয়ার পর সাদা মদ খেল এবং তারা একত্রে কোক খেল।

তখন তার পরনে ফেডেড ব্লু জিন্স পরা ছিল। তার শার্টটি ছিল বু কালারের। আর অ্যাথেনার পরনে ছিল সিল্কি হাউজ, তার সঙ্গে স্রেক পরেছিল। তার পায়ে ছিল উঁচু হিলের জুতা। যা তাকে আরো বেশি সুন্দর দেখাচ্ছিল। সব কিছু মিলে তাকে দেখতে সুন্দরী মনে হয়েছিল। স্টিভ স্টেলিং সঙ্গে করে রেড মদের বোতল এনেছিল। কিন্তু সে রাতের খাবারের পর এটা খেল না। সে এটা আগামী দিন রাতের খাবারের পর খাওয়ার জন্য রেখে দিল।

সে তখন ব্যবসায়ী পোশাক পরে ছিল। তখন তার পরনে ছিল বেগি ব্রাউন রঙের টাওজার, ব্লু ডেনিম শার্ট, তার কালো চুল বাতাসে উড়ছিল। তার পায়ে ছিল ইতালি জুতা যা তাকে আরো বেশি আকর্ষণীয় করে তুলল।

 তারপর তারা রাতে খেতে খেতে তাদের স্ক্রিপ্ট নিয়ে আলোচনা করল। তারা স্ক্রিপ্টের বিভিন্ন দিক পরিবর্তন করার জন্য ভালোভাবে স্ক্রিপ্টটি পড়তে লাগল। রাতের খাবারের পর তারা তাদের লিভিং রুমে গেল এবং পুনরায় স্ক্রিপ্ট নিয়ে আলোচনায় মগ্ন হলো। তারা দুজনই স্ক্রিপ্ট নিয়ে বেশ উত্তেজনার মধ্যে ছিল। তাই তারা সেটা পরিবর্তন করে আরো ভালো কিছু করার জন্য চেষ্টা অব্যাহত রাখল।

অ্যাথেনা লক্ষ্য করে দেখল স্টিভ স্টেলিং প্রত্যেককে চরিত্র ফুটিয়ে তোলার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে। সেটি ক্যামেরার সামনে মুভ করার আগে বারবার নিজকে সংশোধন করার চেষ্টা করে। সে পরিচালকের সঙ্গে বারবার চরিত্রের ব্যাপারে আলোকপাত করে। কখনো কখনো সে নিজেই চরিত্রকে ফুটিয়ে তোলার জন্য নিজে নিজেই ক্যামেরা টেক করার জন্য চেষ্টা করে অর্থাৎ তার চরিত্র তার পছন্দমতো না হওয়া পর্যন্ত সে চেষ্টা অব্যাহত রাখে।

দীর্ঘক্ষণ চরিত্র নিয়ে আলোচনার পর তারা পাশাপাশি বসল। তারপর অ্যাথেনা নিচু হয়ে তার বুকে চুমু দিল। এটা ছিল তার নিত্যদিনের ভালোবাসার সংকেত। চুম্বন খেয়ে স্টিভ স্টেলিং একটু শিহরিত হলো। সেও তার ভালোবাসায় সাড়া দিল। আরো এতেই প্রমাণিত হলো সে বড় মাপের তারকা। তারা দুজনেই দক্ষ।

তারপর তারা দুজনই আলোড়িত হলো। স্টিভ স্টেলিং তার সারা শরীরে হাত বুলাতে লাগল, এতে অ্যাথেনা আর বেশি সংবেদনশীল হলো, সেটা তাকে বেড়ে যাওয়ার জন্য সংকেত দিল।

তারপর সিনেমার ভঙ্গিমায় একে-অপরকে আদর করতে আরম্ভ করল। তারা আস্তে আস্তে উত্তেজনার চরম শিখরে আরোহণ করল …

কিছুক্ষণ পরে তারা ফ্রেস হলো। অ্যাথেনা তার জন্য কিছু খাবারের আয়োজন করল। তারা পুনরায় খাবার খাওয়ার সময় আলোচনায় ফিরে এলো। অ্যাথেনা বলল, শুধু চরিত্র ফুটানোর চেষ্টা করলেও চলবে না– চরিত্র ভালো করে ফুটিয়ে তোলার জন্য গল্পেরও প্রয়োজন। তারা উভয়েই একমত হলো। এখন থেকে তারা কোনো ছবি করলে অবশ্যই অনেক আগে থেকেই স্ক্রিপ্ট সংগ্রহ করবে। কারণ গল্প ভালো না হলে চরিত্র ফুটানো যাবে না আর চরিত্র ফুটানো না গেলে ছবি হিট হবে না। এতে করে সবার চাইতে আমরাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হব।

স্টিভ স্টেলিং তার প্রতি আরো বেশি ভালোবাসায় আসক্ত হলো। কিন্তু সে পুনরায় তাদের পেশা নিয়ে আলোচনায় ব্যস্ত হলো। অ্যাথেনা বলল, আসলে ভালো ঘটনার চমকপদ বিশ্লেষণ না হলে কোনো পরিচালকই ছবিকে ফুটিয়ে তুলতে পারবে না। তাই সবার আগে চলচ্চিত্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের গল্প বা কাহিনীর দিকে ভালোভাবে খেয়াল রাখতে হবে।

স্টিভ স্টেলিং নতুন ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার কারণে আনন্দ উপভাগ করল। সে নতুন করে নিজের মধ্যে আত্মবিশ্বাস অর্জন করার চেষ্টা করল। কিন্তু সে সর্বদাই অ্যাথেনার প্রতি ভালোবাসা দেখিয়েছিল। শত ব্যস্ততার মধ্যেও সে অ্যাথেনাকে সময় দেওয়ার চেষ্টা করত। কারণ সবকিছুর চাইতে সে অ্যাথেনার প্রতি বেশি দুর্বল ছিল। কারণ তার জীবন চরিত্রে অ্যাথেনার মতো কখনো এমন সুন্দরীর সাক্ষাৎ পায়নি। কিন্তু মাঝে মাঝে অ্যাথেনার আচরণে সে বেশ ক্ষুব্ধ হতো। তখন সে নিজেই তার সমস্যা দূর করার জন্য উঠে পড়ে লাগত।

পরবর্তী ক্ষেত্রে তাদের মধ্যে যে ঘটনার সন্নিবেশ হলো– তারা দুজনই বেডের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল। চলো আমরা আমাদের কাজে ফিরি। তারা স্ক্রিপ্টটি হাতে নিল এবং জোরেসোরে পড়তে লাগল।

স্টিভ স্টিলিং যখনই ক্যামেরার সামনে পোজ দেয় তখনই অ্যাথেনা তা ভালোভাবে খেয়াল করে। সে চেষ্টা করে কিভাবে ভালো অভিনেত্রী হওয়ার জন্য আরো ভালোভাবে পোজ দেওয়া যায়। সে স্টিভ স্টিলিংয়ের প্রতিটি কাজকে পাগলের মতো অনুসরণ করে। আর যদি কোনো পোজ তার পছন্দ না হয় তাহলে সঙ্গে সঙ্গে স্টিভ স্টিলিংকে তা অবগত করে, অনুরূপভাবে স্টিভও অ্যাথেনার পোজ দেওয়ার সময় ক্যামেরার পেছনে থাকে, তার প্রতিটি কাজকে নিখুঁতভাবে চুলচেরা বিশ্লেষণ করে দেখে। প্রকৃতপক্ষে এটিই একজন ভালো অভিনেতার ও অভিনেত্রীর গুণ। অ্যাথেনা বলল, স্টিভ তুমি আমাকে যা শিখিয়েছ তা আমি কখনো ভুলব না। প্রকৃতপক্ষে আমার আজকের অবস্থানের জন্য সব কৃতিত্ব তোমার। আমি অ্যাথেনা যা সারা জীবন স্মরণ করব।

তারপর সে মৃদুভাবে বলল, আসলে এটা একটি বোধগম্য হওয়ার ব্যাপার।

তোমার ধারণা ঠিক, স্টিভেন বলল, তারা দুজনই ছিল একে-অপরের প্রতি কৃতজ্ঞ।

তার কাজ ও চলচ্চিত্র দুটোই খুব বড় ধরনের সাফল্য। অ্যাথেনা প্রথম কাজের মাধ্যমে তারকা খ্যাতি অর্জন করল। পাঁচ বছরে একটি ছবি করার সিদ্ধান্ত নিল সে কারণে সফলতা লাভ করল। তারকার জন্য কাজ, সফলতার জন্য কাজ। অ্যাথেনা ও স্টিভেন পরস্পরকে ভালোবাসে এবং পরশকে সংলাপ বলার ক্ষেত্রে সাহায্য করে। কিন্তু তাদের ভালোবাসার মূলে ছিল মজা করা, বিখ্যাত হওয়া বা উচ্চাকাঙ্ক্ষা। ভালোবাসা মানুষকে উজ্জীবিত করতে পারে এবং কোনো ভালোবাসার মৃত্যু থেকে ফেরাতে পারে না, ভৌগোলিক প্রশ্নও সেখানে ছিল। ছবি শেষ, তাদের ভালোবাসাও শেষ। অ্যাথেনা মালিবুতে চলে গেল এবং স্টিভেন ইতালিতে। তাদের এই মুহূর্তে বিয়ে করা উচিত কিন্তু এটা ছিল অসম্ভব। অ্যাথেনা সম্পর্কটাকে খুব উপভোগ করত কিন্তু সে এটাকে গৌণভাবে নিয়েছিল। এটাকে পেশা হিসেবে নিলেও স্টিভেনকে সে অনেক বেশি ভালোবাসে। তার পক্ষে এটা অতিক্রম করা অসম্ভব। স্টিভেন খুব সচেতন, সঠিক এবং দায়িত্বশীল প্রেমিক। তার একটি ছবির কাজ চলে গেলেও সে এটা করবে।

সে তার শারীরিক সম্পর্ক উপভোগ করে কিন্তু এটা তার প্রশংসা ধরে রাখতে পারে না। স্টিভেনের বিয়ের প্রস্তাব তার কাছে বড় পাওয়া ছিল। কিন্তু সে তা প্রত্যাখ্যান করল। কারণ সে জানত স্টিভেন তার ছবির ও হলিউডে অবস্থানের জন্য এটা করে। যখন ড্রাগ সমস্যাটি তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেল তখন সে এটাকে তার জীবনের একটি অংশ হিসেবে পেতে চাইল। স্টিভেন তার প্রত্যাখ্যান ভালোভাবেই গ্রহণ করল। এটা ছিল তার অতিরিক্ত কোকেন গ্রহণের ফল। তাই সে এটা থেকে মুক্ত হলো। পরবর্তী পাঁচ বছরে অ্যাথেনা তারকা খ্যাতির সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাল। স্টিভেন পুনরায় মেয়েদের প্রতি দুর্বল হতে লাগল দুর্ভাগ্যবশত এটা তাকে অভিনয়ে অমনোযোগী করে তুলল। ড্রাগ-অ্যালকোহল তাকে কাজের প্রতি দায়িত্বহীন করে তুলল। শেষ বছরে অ্যাথেনা সবার সাথে সুসম্পর্ক রেখেছিল। তার মধ্য এলি ম্যারিওনের একমাত্র পুত্র তরুণ প্রযোজক কেভিন ম্যারিওন। কেভিন ম্যারিওন ছিল তার সমবয়সি কিন্তু সে ছিল ছবি ব্যবসার সাথে জড়িত। তার প্রথম ছবি খুব সাফল্য পায় এবং ছবিতে তার বুদ্ধিমত্তার পরিচয় পাওয়া যায়। সেই সময়ে তার তিনটি ছবি ফ্লপ করে এবং তার বাবাই শুধু তাকে এ ব্যবসায় সাহায্য করে। কেভিন ম্যারিওন খুব সুদর্শন ছিল। এলি ম্যারিওনের প্রথম স্ত্রী খুব সুন্দর ছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশতভাবে ক্যামেরার সামনে ভালো দেখাত না, ফলে তার ভবিষ্যৎ তৈরি হলো একজন প্রযোজক হিসাবে।

 অ্যাথেনার সাথে কেভিনের দেখা হলো এবং তখন সে তাকে তার নতুন ছবির তারকা হওয়ার জন্য অনুরোধ করল। সে যে নিষ্পাপ তা অ্যাথেনা র‍্যাপ পার্টিতে হতাশা ও উদ্বিগ্নতার মধ্য শুনেছিল। এটা চলচ্চিত্রের সেরা সংলাপ আমি এটি পড়েছি, কেভিন বলল। আমি অবশ্যই তোমাকে বলব এবং পুনরায় লিখতে সাহায্য করব। অ্যাথেনা তুমি সত্যিই এই চরিত্রের জন্য উপযুক্ত। তোমার মতো অভিনেত্রীকে আমি আমার ব্যবসায় চাই। সে তাকিয়ে থাকল এবং অ্যাথেনা তার ছবির সংলাপ দেখে উৎসাহিত হলো। এটা ছিল গৃহহীন রাস্তার মেয়ের গল্প। তার বসবাস গার্বেজপূর্ণ এলাকায় হলেও সে তার কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে আমেরিকার গৃহহীনদের নেতা হয়ে গিয়েছিল।

কেভিন বলল, তুমি যদি অভিনয় করো তাহলে আমি আনন্দে মরেই যাব। অ্যাথেনা চিন্তা করল আমি উন্মাদ কিন্তু সে একজন ক্ষমতাবান প্রযোজক এবং সে সবকিছু ঠিকঠাকভাবে করতে পারে। সে হতাশায় মেলো স্টুয়ার্টের দিকে তাকাল এবং মৃদ হাসল। কিন্তু কিছু না বলেই চলে গেল। খুব ভালো ধারণা মেলো বলল, এটা একটি ক্লাসিক অর্থবহ কাহিনী কিন্তু কেভিন তুমি কি জানো অ্যাথেনার জন্য কতটা গুরুত্ববহ হবে। চলো আমরা সংলাপটি পড়ি তার পর নাট্যরূপ দিই।

অবশ্যই, কেভিন বলল একশর মতো কপি এই সংলাপের। আমি জানি তুমি এটাকে পছন্দ করবে। মেলো, অ্যাথেনাকে মেলরোজের একটি ছোট থাই রেস্টুরেন্টে নিল।

তারা তাদের খাবারের অর্ডার দিল এবং স্ক্রিপ্টের দিকে নজর দিল। অ্যাথেনা বলল, আমি প্রথমে নিজেকে হত্যা করব। কেভিন ফিরে আসবে। তুমি চলচ্চিত্র ব্যবসা ঠিক বুঝনি, মেলো বলল। কেভিন খুব বুদ্ধিমান আমার করার কিছু ছিল না কিন্তু কিছু করলাম। তাই আমার খারাপ লাগছে। কোথায়, কখন, অ্যাথেনা বলল। মেলো বলল, আমি তাকে পুনরায় ডাকতে পারি না। তুমি একজন বড় মাপের তারকা, তোমাকে না করতে নেই, এটা প্রয়োজনীয় কিছু নয়।

 ক্লডিয়া অ্যাথেনাকে বলল, সবকিছুই তোমার নিজস্ব অ্যাথেনা, তা তোমারও আছে। এটা এক প্রকার বন্ধুত্ব। ক্লডিয়া এটাকে বুঝতে পারলেও বন্ধুত্বের জন্য তাকে খুব সহজে গ্রহণ করল। ক্লডিয়া বলল, স্টিভ স্টেলিংয়ের সঙ্গে তোমার সম্পর্ক আছে। অ্যাথেনা উচ্চ স্বরে হাসতে লাগল, যা সেখানকার সবাই লক্ষ্য করছিল, তারা সবাই এককথায় অকপটে বিশ্বাস করত, স্টিভ স্টেলিং বিছানায় বড়ই পারদর্শী একজন দামি অভিনেতা এবং একজন মজার মানুষ।

 সে সর্বদা তোমার মতো সুন্দর, ক্লডিয়া বলল, মানুষ তার সৌন্দর্যের ভীষণ প্রশংসা করে। অ্যাথেনা না শোনার ভান করল। এটা এক প্রকার কারও কারও অভ্যাস, যারা কোনো কারণ ছাড়াই আমার প্রশংসা করে।

 এতেই কি সে একজন বড় মাপের অভিনেতা প্রমাণিত হয়? অ্যাথেনা বিরক্তি সহকারে বলল।

 আরে না, তুমি আসলেই একজন বড় মাপের অভিনেত্রী, ক্লডিয়া বলল। তারপরই অ্যাথেনা একটু শান্ত হলো। সে আরও বলল, কিন্তু সে তোমার চাইতে একজন সুখী মানুষ।

সত্যিই? অ্যাথেনা বলল। তা হয়তো ঠিক কিন্তু কিছু দিন সে আমার চাইতে অসুখী জীবনযাপন করেছিল যা আজ আমার মনে পড়ে।

হ্যাঁ, ক্লডিয়া বলল। সে এখন আর ভালো কিছু করতে যাচ্ছে না। কিন্তু সে বুদ্ধিমান, সম্ভবত তার আরো চালাক হওয়া প্রয়োজন। সে যা করতে যাচ্ছে তা সম্পর্কে আমি আগে কিছু জানতাম।

অ্যাথেনা বলল, তাছাড়া আমি তেমন কিছু চাই না।

তুমি আমার না, ক্লডিয়া বলল, কিন্তু তুমি কখনও তোমার প্রতিভা ধরে রাখতে পারবে না।

 আমি জানি তুমি মদ পান করতে চাওনি। বজ তোমাকে জোর করে মদ পান করিয়েছে। তা তুমি নিজের মধ্যেই গোপন রেখেছ।

 অ্যাথেনা হাসল। আমার গোপনীয়তাই আমার আস্থা। সে বলল, আমার গোপনীয়তার চেয়ে আরো বেশি আস্থাশীল, আরো বেশি রক্ষণশীল আমরা ছবির তারকা, আমাদের নিজস্ব ব্যক্তিত্ববোধ থাকা উচিত।

প্রত্যেক শুক্রবার সকালে তাদের সাধারণত কোনো কাজ থাকে না, তাই তারা সেদিন একসঙ্গে কেনাকাটার জন্য শপিংমলে যায়।

 সে শারীরিক সৌন্দর্যকে আরও আকর্ষণীয় করার জন্য কালো উইগ এবং ঢিলা ব্ল্যাক পরিধান করল। তার চেহারাকে একটু মোটা করার জন্য মেকাপ গ্রহণ করল। তার ঠোঁট একটু মোটা, তারপরেও সুন্দর। সবকিছু মিলে মেকাপ করার পর তাকে বেশি ভালো লাগত ছিল। সে তার চোখে কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার করল যাতে তাকে আরও বেশি বুদ্ধিমতী মনে হলো। তার গলার স্বর আরও নরম ও মসৃণ হলো।

অ্যাথেনা কিছু কিনল, তারপর সে জিনিসগুলো ক্লডিয়ার ব্যাগে রাখল। এভাবে কেনাকাটা শেষ করার পর তারা দুজনে দুপুরের খাবার খেল। এটা ছিল একটি বেশ বড় রকমের রেস্টুরেন্ট, সেখানে সাধারণত সবাই প্রবেশ করতে পারত না। তাই কেউ-ই তাদের চিনতে পারল না।

প্রতি মাসের দুই সপ্তাহ ক্লডিয়া অ্যাথেনার ম্যালিবুর বাড়িতে সম্পূর্ণভাবে কাটাত। তারা একসঙ্গে সাঁতার কাটত, টেনিস খেলত, আরো অনেক আনন্দপূর্ণ কাজ করত।

ক্লডিয়া অ্যাথেনাকে ম্যাসিলিনার দ্বিতীয় চ্যাপটার পড়ার জন্য আদেশ করল। তখন অ্যাথেনা তাকে চরিত্র কেমন সে ব্যাপারে জানার জন্য জিজ্ঞেস করল। যদিও তখনও সে বড় মাপের তারকা হতে পারেনি। তাই যখন ক্লডিয়া পুনরায় ম্যালিবুতে পৌঁছল তখন অ্যাথেনা তার ছবির কাজে বেশ ব্যস্ত, তাছাড়া অ্যাথেনার ক্যারিয়ার তখন হুমকির মুখে যা হয়েছিল ক্লডিয়ার সূক্ষ্ম ভুলের জন্য।

সর্বদা প্যাসিফিক হোটেলের দুজন নিরাপত্তা প্রহরী অ্যাথেনার বাড়ির গেটে পাহারারত থাকত। আরো দুজন নিরাপত্তা প্রহরী তার বাড়ির বাগানের মধ্যে সর্বদা পাহারারত থাকত।

অ্যাথেনা ক্লডিয়াকে জানাল, আমি তোমাকে মিস করছি সে বলল, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই আমি চলে যাব।

তুমি কেন এত উন্মাদ হচ্ছ? ক্লডিয়া বলল, তুমি সামান্য ভুলের জন্য তোমার জীবনটাকে হুমকির মুখে নিয়ে যাচ্ছ এবং মনে রেখো, আমি তোমাকে বিশ্বাস করতে পারি না, শোনো, আমি আজ তোমার সঙ্গে থাকব এবং আগামীকাল আমি আমার প্রশিক্ষণ শুরু করব।

অ্যাথেনা হাসল এবং তার কাধ বাকা করে সম্মতি জানাল। তোমার মধ্যে থেকে মাফিয়া চক্রর গন্ধ বের হয়ে আসছে। কারণ তুমি হাজার হলেও ক্লেরিকুজিও পরিবারের একজন সদস্য।

 তারা একসঙ্গে মদ পান করল। তারপরও তারা পাশাপাশি বসে আরো কিছু সবুজ জাতীয় পানীয় পান করল।

তুমি আমার মনকে পরিবর্তন করতে পারবে না কারণ আমি অবুঝ শিশু নই, অ্যাথেনা বলল।

এখন তুমি তোমার যাবতীয় কথা আমাকে বলতে পারো, আমি মনে করি আমি তা অবশ্যই বুঝতে পারব।

তারপর সে ক্লডিয়াকে তার বিবাহ সম্পর্কে যাবতীয় কথা বলল। আসলে বজ স্কানেট দীর্ঘদিন আমার অপেক্ষার প্রহর গুনছিল, আমি পরিশেষে জীবনের দিকে তাকিয়ে সাড়া দিতে বাধ্য হলাম। ক্লডিয়া অ্যাথেনার গল্পে কিছু ভুল ধরল। সে বলল, তুমি পুনরায় কিছু গোপন করতে যাচ্ছ। এটা ঠিক না– প্রাণ খুলে বলতে পারো। তাছাড়া তোমার কথা সত্য হলে, আমাকে বলল তোমার শিশুর ঘটনাটা কি?

অ্যাথেনা বলল, তোমাকে আমি বলেছি- তাই সত্য এর চেয়ে আমার কাছে আর কিছু জানার চেষ্টা করো না, কারণ প্রত্যেকেরই নিজস্ব বলে কিছু থাকে। তুমি পারলে ছবি এবং স্টুডিওর ব্যাপারে আমার সঙ্গে আলাপ করতে পারো। তাছাড়া আমি বর্তমানে কিছুটা হতাশার মধ্যে আছি, পরিস্থিতি অনুকূলে এলে আমি তোমাকে বলার চেষ্টা করব। তবে এতটুকু বলতে পারি তুমি তোমার প্রশ্নের উত্তর পেয়েছ। তাছাড়া এর বাইরে কিছু ঘটেছে তা একান্তই আমার নিজস্ব ব্যাপার। সেদিকে তুমি নাক না গলালে আমি খুবই খুশি। হব।

ঠিক এই মুহূর্তে একজন লোক একটি বিশাল ট্রাঙ্ক নিয়ে তাদের ঘরে প্রবেশ করল। নিরাপত্তা প্রহরীরা তাকে থামাতে পারেনি। অপর দিকে বাগানের দুজন প্রহরীও ছুটে আসছিল– তার পরেও সে নিরাপত্তা প্রহরীর বাধাকে অতিক্রম করে ভেতরে ঢুকে পড়েছে।

অ্যাথেনা দাঁড়াল, সে ক্লডিয়াকে মৃদু সুরে বলল, এটা বজ, সে তাকে দেখেই বুঝতে পেরেছিল, এটা তার আসল চেহারা না। সে পাশে তাকিয়ে আরও পাঁচজন লোক দেখল। ক্লডিয়া তাদের অনুসরণ করার চেষ্টা করছিল।

বজ স্কানেট তাদের দিকে তাকিয়েছিল, তার চোখ দিয়ে যেন রক্ত বের হয়ে আসছে। তার চেহারা রোদে পুড়ে তামা হয়ে গেছে। তার দেহটা, ট্রাঙ্ক বহন করার জন্য একটু হেলিয়ে গেছে। সে হেসে বলল, হাই অ্যাথেনা, মদ পান করার জন্য আমাকে দাওয়াত করলে কেমন হতো? অ্যাথেনা একটি হাসি দিল, আমি চাই না আমার জন্য কেউ নেশা জাতীয় কিছু গ্রহণ করুক– তাছাড়া তুমি অনেক পূর্বেই আমার ধৈর্যের বাঁধ ভেঙেছ।

 তোমার ধারণা ঠিক না, বজ বলল, আমরা একে-অপরের কাছের মানুষ। আমাদের মধ্যে অনেক গোপন অভিমান আছে। তারপরও তুমি এমনভাবে কথা বললে, তারপর সে কিছুটা হাসল। সে তার দিকে তাকিয়ে থাকল।

একজন নিরাপত্তা প্রহরী বলল, সে আমাদের সাঁতার কাটাতে বাধ্য করেছে, সে আমাদের হয়রানি করেছে, এখন আমরা তাকে হাতকড়া পরাব।

না, অ্যাথেনা বলল, তার গাড়ির কাছে যাও।

তার পরও বজ স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকল। তার শরীর অবশ হয়ে এলো। অ্যাথেনা বলল, আমি তোমাকে দেখে নেব। তারপর সে চলে গেল।

 সত্যিই তুমি সুপুরুষ। তা না হলে তুমি চার জন নিরাপত্তা প্রহরীকে অতিক্রম করে আসতে পারতে না, ক্লডিয়া বলল। আমি তোমাকে বাবা দিচ্ছি।

ক্লডিয়া আমি আগামীকাল আমার ভাই ক্রসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য ভেগাসে যাচ্ছি। সে অনেক সুদর্শন লোকজনকে চেনে। আমি নিশ্চিত যে, সে আমাকে সাহায্য করতে পারবে। তাছাড়া সে আমাকে সাহায্য করা ব্যতীত সেখান থেকে আমাকে আসতেও দেবে না। সে কেন সাহায্য করবে, অ্যাথেনা বলল, এবং কিভাবে? সে ও কি মাফিয়া চক্রের কেউ?

ক্লডিয়া জোর দিয়ে বলল, অবশ্যই না, সে আমাকে সাহায্য করবে, কারণ সে আমাকে ভালোবাসে। সে বেশ গর্বের সাথে কথাটা বলল, আমি একমাত্র মানুষ যাকে সে পিতার পরেই বেশি ভালোবাসে।

অ্যাথেনা তার দিকে বোকার মতো তাকিয়ে থাকল। তোমার ভাই তোমার পেছনে ছায়ার মতো লেগে আছে। তুমি ছবি ব্যবসার জন্য খুবই উঁচু মানের একজন মেয়ে, আর এ জন্য তুমি অনেকের সঙ্গে রাত্রি যাপনও করেছ, তুমি তো অভিনেত্রী নও, তুমি একজন সাধারণ ছবির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা।

 সেটা কোনো ব্যাপার নয়, ক্লডিয়া বলল, আমি ভেগাসে যাচ্ছি, ছবি শুটিং শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমি ফিরব না।

রাতটা অ্যাথেনা ডেস্কের সামনে বসে সাগর, চন্দ্রবিহীন কালো রাত্রি দেখে কাটাল। সে সারারাত ক্লডিয়ার চিন্তা-ভাবনার প্রতি অনড় থাকল– সে ভাবল ক্রস তাকে হয়তো সাহায্য করতে পারে, কিন্তু কিভাবে তাকে ভালোবাসে?

যখন ক্লডিয়া স্কিপি ডিরির সঙ্গে বিকেলে বসে অ্যাথেনার গল্প বলছিল, তখন তারা সবাই নিশুপ ছিল। তারপর ডিরি বলল। কিছুদিনের মধ্যে অনেকটা পরিবর্তন হয়েছে আমি দেখেছি, সে অনেক দিন বজ স্কানেটের সঙ্গে জীবনযাপন করেছে। সে যদি আজ বজকে প্রত্যাখ্যান করে তাহলে সে কিভাবে তার শিশুকে পেল।

ক্লডিয়া বলল, আমি আমার ভাইয়ের কাছে ভেগাসে যাচ্ছি। সবকিছু সম্পর্কে তার অনেক অভিজ্ঞতা আছে। সে একটি সমাধান বের করতে পারবে।

 আমি ভাবতে পারি না সে কিভাবে বজ স্কানেটকে প্রত্যাখ্যান করল, ডিরি বলল। আমরা অবশ্যই ইতিমধ্যে তা জানার জন্য অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমাদের জানার অন্য কোনো সুযোগ নেই।

 সে জানত, একমাত্র ক্রস ব্যাপারটাকে পরিষ্কার করতে পারে। কারণ ক্রস দীর্ঘদিন তার সঙ্গে ছবি ব্যবসায় জড়িত ছিল। তাছাড়া ক্রস তার সঙ্গে আরো ব্যাপারে জড়িত ছিল, তাই ক্রসই তার সম্পর্কে ভালো বলতে পারবে। আমি মনে করি ক্রস সব ব্যাপার জানলেও তোমার কাছেও সবকিছু পরিষ্কার করে বলবে না।

স্কিপি ডিরি কিছুক্ষণ বিরতি নেওয়ার পর বলল, আমিও তোমার সঙ্গে যাব।

ডিরি তার আধা মিলিয়ন ডলার মেরে দেবার পরও ক্লডিয়া তাকে ভালোবেসেছিল। সে ডিরিকে ভালোবাসে তার দোষ ও দুর্নীতির জন্য। স্কিপি ডিরি এমন একজন ব্যক্তি যার মধ্যে একজন প্রযোজক হিসেবে সব গুণ বিদ্যমান।

কয়েক বছর আগে তারা একত্রে একটা ছবিতে কাজ করছিল। এমনকি ডিরি হলিউডের একজন খুবই সফল প্রযোজক। এক সময় চলচ্চিত্রের একজন তারকা ডিরির স্ত্রীকে ধর্ষণ করার গর্ব করেছিল। এটা শুনে সে তার কাঁধে ঝাঁপিয়ে পড়ছিল।

ক্লডিয়ার আরো অনেক কিছু মনে পড়ল। তারা দুজনেই গাড়ি করে যাচ্ছিল, হঠাৎ ক্লডিয়া একটি সুন্দর ব্লাউজ গাড়ির জানালায় দেখল। সে কখনও এমন ব্লাউজ আগে দেখেনি।

কিন্তু ক্লডিয়া সে ব্যাপারে ডিরিকে কিছু বলল না। তারপরও ডিরি ক্লডিয়ার মনোভাব বুঝতে পেরেছিল। কিন্তু সেও তাকে সে ব্যাপারে কোনো প্রশ্ন করল না।

যখন তারা স্থানীয় একটি দোকানে গেল দোকানের কর্মচারী তাদেরকে পাঁচশত ডলার মূল্যের একটি ব্লাউজ দেখাল, ক্লডিয়া বলল, একটি ব্লাউজ পাঁচশ ডলার?

আমাকে হাসাবেন না।

কর্মচারী বলল, এটা খুব দামি কাপড়ের এবং হাতে তৈরি। তাছাড়া এ ধরনের ব্লাউজ পৃথিবীর কোথাও পাওয়া যাবে না, একমাত্র আমরাই এটা সরবরাহ করি। তাছাড়া এটার দামও তেমন বেশি বলে আমরা মনে করি না।

ডিরি হাসছিল, সে বলল, ক্লডিয়া এটা কেনার প্রয়োজন নেই। তুমি কি জান দুপুরের খাবার খেতে কত টাকা লাগবে। তাছাড়া তুমি সর্বদা এটা ৩০ ডলার দিয়ে কিনতে পারবে এবং বাকি টাকা তুমি অন্য কাজে ব্যয় করতে পারবে।

ক্লডিয়া ক্লার্কের দিকে তাকিয়ে হাসল, আমাকে শেষ বারের মতো বলুন এটার দাম কমাতে পারবেন কি-না।

ক্লার্ক বলল, ঠিক আছে আপনারা আসতে পারেন।

তারা দোকান থেকে বের হয়ে এলো যেহেতু তারা দোকান থেকে বের হয়ে আসছিল, ক্লার্ক পুনরায় তাদের পেছন থেকে ডাকল, তখন ক্লডিয়া হেসে বলল, আসি।

তারপর তারা গাড়ি করে যেতে শুরু করল। স্কিপি ডিরি বলল, তুমি ভাগ্যবতী, তুমি এটা এমনি এমনি পেয়ে গেলে।

পরের দিন যখন ক্লডিয়া কাজের জন্য স্টুডিওতে পৌঁছল, তার টেবিলে উপহারের বক্স দেখল। সে বক্সটি খুলে দেখল সেখানে এক ডজন ব্লাউজ এবং যা স্কিপি ডিরি পাঠিয়েছে।

ক্লডিয়া ভাবল, দোকানে ক্লার্ক আর ডিরি আমাকে বোকা বানিয়েছে। সে বক্সের মধ্যে আরও একটি সুন্দর পোশাক এবং টেনিস ব্যাট দেখতে পেল।

সেখানে আরো দুজন প্রযোজক তার সঙ্গে রাতের খাবার খেল। তারপর তারা সকলেই মদ পান করল। ক্লডিয়া ভাবল হয়তো ডিরি তার সঙ্গে মজা করছে, কিন্তু যখন ডিরি দুজন প্রযোজককে বলল, আমাকে প্রতি বছর আমার সন্তানের জন্য পাঁচ মিলিয়ন ডলার সঞ্চয় করতে হয়। তারপরও আমি ভাবি হয়তো আমি তাদের ভরণপোষণ করতে পারব না।

ক্লডিয়া হঠাৎ হতাশ হয়ে গেল, ডিরি তখন তাকে বলল, আমি সৎ, সবাই তা ভাবে কিন্তু কেউই চিৎকার করে বলতে পারে না।

স্কিপি ডিরি তার ছবি ব্যবসার বাকি টাকা পরিশোধ করল। একজন রাজমিস্ত্রির ছেলে হিসেবে এই প্রথম কেউ হলিউডের ছবি ব্যবসায় আত্মনিয়োগ করল।

সে কঠোর পরিশ্রমী, সে ছোট ঘরের ছেলে হলেও ছবির জগতের সবকিছুই বুঝত। সে সব কাজ যথেষ্ট বুদ্ধিমত্তার সঙ্গ সম্পন্ন করত। কিভাবে পরিচালক, তারকার সঙ্গে কথাবার্তা বলতে হয়, তাও সে আত্মস্থ করেছিল। তার ব্যবহার ছিল খুবই ভালো। সে ছবির জগতের সঙ্গে জড়িত সকলের সঙ্গেই ভালো আচরণ করত। সে সবকিছু বুদ্ধিমত্তা আর ধৈর্যের সঙ্গে মোকাবেলা করত। ছবির ব্যবসার জন্য তার মধ্যে কোনো কিছুর ঘাটতি ছিল না। সে ছবির কাজের জন্য বিভিন্নভাবে তার লগ্নি করা টাকাকে বিভিন্ন খাত অনুযায়ী ভাগ করত। ফলে সে একজন ভালো প্রযোজক হতে পেরেছিল। সে ছবির স্ক্রিপ্টের জন্য পঞ্চাশ শতাংশ এবং চিত্র গ্রহণের জন্য সত্তর শতাংশ টাকা বিনিয়োগ করেছিল।

সে যত্ন করে সব কাজ করত। সে নিজেই তার প্রয়োজনে সকল স্ক্রিপ্ট পড়ত। সে চরিত্র ও তারকা অনুযায়ী যাকে যে চরিত্র দেওয়ার দরকার তাকে সেই চরিত্র দিত। তাছাড়া সে ছবির প্রয়োজনে টাকা খরচ করেও বিভিন্ন লোকেশনে তার ছবির দৃশ্য চিত্রায়ণ করত। সে কখনো কোনো কাজে বিন্দু পরিমাণ ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করত না। আর এত কিছুর বিনিময়েই সে একজন সফল তারকা হওয়ার সাফল্য অর্জন করেছিল। ছবি তৈরি করার সময় সে বারবার তার টাকা ওঠানোর জন্য খুব ব্যস্ত থাকত। তার চিন্তা-ভাবনা থাকত যে করেই হোক তার ছবিকে সাফল্য পেতেই হবে।

তাছাড়া ছবির জন্য বিজ্ঞাপন ব্যয় বেশি করত। যাতে করে ছবি শেষ হওয়ার আগেই দর্শকদের মধ্যে ছবির প্রতি আকর্ষণ সৃষ্টি হয়।

তাছাড়া অনেক সময় ছবির সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ, প্রতিনিধিদের ক্রিসমাস কার্ড ও বিভিন্ন উপহার পাঠাত।

তাছাড়া সে সাড়া ফেলানোর জন্য আগে থেকেই পত্রিকা, ম্যাগাজিনে বিজ্ঞাপন দিত। আর এই সব কাজে ক্লডিয়া তাকে সর্বাত্মক সাহায্য করত। ক্লডিয়া সঙ্গে সঙ্গে তা শুধরিয়ে দিত। আর এই সব কারণেই শত কিছুর পরেও তাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় ছিল। যখন ক্লডিয়া তাকে ভুল বুঝত, তখন ডিরি নিশ্চুপ থাকত এবং ভুল বোঝার চেষ্টা করত। কখনোই ক্লডিয়ার প্রতি রাগ করত না সে।

স্কিপি ডিরি প্রায় বলত, আমি যখন একজন পরিপূর্ণ মানুষ হব তার পরেই বিয়ে করব। কিন্তু সে ভালোবাসার প্রতি যথেষ্ট আসক্ত ছিল।

কিন্তু ডিরি সত্যিই ক্লডিয়াকে ভালোবাসত। যখন সে ক্ষমতাবান প্রযোজক ছিল তার ছবির কাজ বড় বড় তারকাদের নিয়ে করত। সে প্রায় ছবির তারকা, পরিচালক ও অন্যান্য কলাকৌশলীদের নিয়ে প্রায়ই মিটিং করত। সে এখন আস্তে আস্তে ভাটির দিকে ধাবিত হচ্ছে, তাই আর তার কাজের প্রতি তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া নেই। বর্তমানে সে তার সন্তান আর স্ত্রীকে নিয়ে সুখী জীবন করার চেষ্টা করছে।

স্কিপি ডিরি সমস্ত সফল প্রযোজকের মতো খুবই ব্যস্ত। তার প্রযোজিত ছবিগুলো দেখাশোনার জন্য, অর্থ সংগ্রহ ও প্রকল্প বাড়ানোর জন্য সমগ্র বিশ্ব জুড়ে তাকে ভ্রমণে যেতে হয়। অনেক সুন্দরী, উচ্ছল নারীরা তার সাথে যোগাযোগ করে বন্ধুত্ব করতে চায়। কিন্তু সে এখনো তার স্ত্রীকে ভালোবাসে।

 একদিন এক বালিকা তার কাছে একটা স্ক্রিপ্ট নিয়ে এসে বলল, এটা একটি খ্রিস্টিও ভালো কাহিনী। সে ছিল খুবই প্রতিভাধর, সে বলল–এটা একটা কালো ছবি, এখানেই এক যুবক কবির প্রতি ভালোবাসায় আসক্ত হয় এক নারী। পরে সে স্বামীকে হত্যা করে কবির সঙ্গে চলে যেতে চায়।

স্কিপি ডি বলল, এই ছবি করার জন্য একটি আলাদা স্টুডিও ভাড়া করতে হবে। খ্রিস্টকে এই চরিত্রে অভিনয় করে বাস্তবিকতা ফুটিয়ে তুলতে হবে।

 সে তার সমস্ত অর্থ শেষে ফিরিয়ে আনল। সব কিছু স্বপ্নের মতো সম্পন্ন। হলো। খিস্ট তার চরিত্রটিতে ভালোভাবে অভিনয় করল। ডি ছবিটা যথাযথভাবে প্রযোজনা করল। এটা বাজেটের নব্বই শতাংশেই পর্দায় পাঠানো সম্ভব হলো।

সেই সময় ডি কখনো তার স্ত্রীর প্রতি অবিশ্বস্ত হতে পারছিল না। শুধু একটা রাত ছাড়া যখন সে লন্ডনে পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান আয়োজনে ছিল।

তখন সে একটা খুব স্লিম ইংলিশ মেয়ের ভালোবাসায় আসক্ত হয়েছিল।

এই ভালোবাসা তার কাজে সাহায্য করেছিল। ছবিটি আর্থিক সাফল্য এনেছিল। খিস্টি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে একাডেমি পুরস্কার পেল।

স্কিপি ডিবি পরে ক্লডিয়াকে বলল, হ্যাপিলি ইভার আফটার ছবিটি কোথায় শেষ হওয়া উচিত ছিল। দেখল তার আসল আত্মমর্যাদা। এখন সে তার সত্য মূল্য অনুভব করল। সত্য হলো সে এখন একজন পরিপূর্ণ ব্যস্ত তারকা। সে এখন পরিচালকের পাঠানো স্ক্রিপ্ট পায়।

 অধিক ভালো কিছু খোঁজার জন্য ডি তাকে পরামর্শ দিল। পরের ছবিটা হবে জটিল। তার জীবন সম্পর্কে সে কখনো উদ্বিগ্ন ছিল না। কিন্তু পুরস্কার। পাওয়ার কয়েক মাস পর সম্মানীয় অভিনেত্রী হিসেবে তাকে সর্বশীর্ষ স্থানীয় পার্টিতে দাওয়াত করল। চলচ্চিত্র ব্যবসায়ের গুরুত্বপূর্ণ সারিতে তাকে দেখা গেল। সে সদ্য যুবতী মেয়েটির সাথে অন্তরঙ্গ হয়ে গেল। খেয়ালখুশিভাবে পনের বছরের জুনিয়র অভিনেতার সাথে অন্তরঙ্গভাবে সে বাইরে চলে যেত। চিত্র সাংবাদিকরা তার বিবরণ নিল, নারীবাদীরা তা নিয়ে খুব আনন্দিত হলো।

স্কিপি ডিরি বাহ্যিকভাবে এটাকে খুব ভালোভাবে নিল। সে সমস্ত বিষয়টা বুঝল।

সর্বোপরি কেন সে নিজে নিজেই যুবতী মেয়েটাকে প্যাঁচের মধ্যে রাখল? আবার কেন সে তার অসাধারণ প্রচেষ্টা খ্রিস্টির ক্যারিয়ারে যোগ করবে? বিশেষ করে, সে আসলে তার কাছে তার এক যুবক প্রেমিকের জন্য চরিত্রটা চেয়েছিল। তার জন্য স্ক্রিপ্ট খোঁজা বন্ধ করল। সে অন্য প্রযোজক, পরিচালক, স্টুডিও প্রধানদের সাথে তার জন্য প্রতিযোগিতা বন্ধ করে দিল। তারা বয়স্ক লোক হিসেবে খ্রিস্টিকে কোনো প্রকার সুযোগ দিল না।

খ্রিস্টি প্রধান চরিত্র হিসেবে আরো দুইটি ছবি নির্মাণ করল। আর দুটি ছবিই ফ্লপ করল কারণ তার চরিত্র ছিল ভুলে ভরা।

আর সে কারণেই সে পুরস্কার থেকে যা পেয়েছিল তা ব্যবসায়ে ব্যয় করল।

 তিন বছরের মধ্যে সে তৃতীয় পর্যায়ে চলে এলো।

 এই সময়ে সে একজন লোকের সাথে ভালোবাসায় আসক্ত হলো। লোকটার ইচ্ছে ছিল প্রযোজক হওয়ার। বাস্তবিক একেবারে তার স্বামীর মতো, কিন্তু তার মূলধন দরকার। তাই খ্রিস্টি তাকে ডিভোর্স দিল। বিপুল পরিমাণ স্থাবর সম্পত্তি এবং বছরে পাঁচ লাখ ডলার খোরপোশ হিসেবে পেল। তার আইনজীবী ইউরোপে স্কিপির সম্পদ সম্পর্কে কোনো খোঁজ পেল না। অতএব, তারা বিচ্ছিন্ন বন্ধু। সাত বছর পর খ্রিস্টি এক দুর্ঘটনায় মারা গেল। যদিও সে ডির খ্রিসমাস কার্ডের তালিকায় আছে, আসলে সে তার বিখ্যাত লাইফ ইজ টু শর্ট-এর তালিকায়ও আছে। কাজেই ক্লডিয়া ডি লিনা ডির ভালোবাসায় আচ্ছন্ন ছিল। কারণ সত্য অন্যের কাছে প্রকাশ করা, তার জীবনধারণ তার জীবনের জন্য। তাই অশালীনভাবে সে তার আত্মস্বার্থে মগ্ন হলো। তার ক্ষমতার কারণে তুমি তাকে দেখো, আর তোমাকে তার বন্ধু বলে মানে, তোয়াক্কা না করে তুমি জানলে সে কখনো বন্ধুত্বের মতো কাজ করতে পারে না। সে ছিল যেমন আকর্ষণীয় তেমন ভণ্ড। আর অন্যদিকে ডি ছিল একজন বড় ধৈর্যশীল। আর সে ছিল সেই লোক, সে জেনেছিল কে ক্রসের সাথে বুদ্ধিমত্তা মানিয়ে নিতে পারে। তারা পরবর্তী প্লেনে ভেগাসে গেল।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *