৭. হাসপাতালের সিঁড়ি দিয়ে

০৭.

হাসপাতালের সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে ম্যাক্সের মনে হল, সে আগে যত বড়লোক ছিল এখন তার দুগুণ।

কারণ সুলিভ্যানরা কেউ ব্যাঙ্কে টাকা রাখত না। টাকাটা থাকত ম্যাক্সের বাবার কাছে। কথা ছিল যে আগে মরবে তার ভাগটা অপর অংশীদার পাবে। এখন পেশাদারী খুনের কাজ থেকে সরে সে একটা পাখির ব্যবসা করতে পারে।

সে ভাবল যে ক্যারল তার কিছুই করতে পারবে না। কারণ মেরি প্রেনটিস সেজে যে ক্যারল ফ্র্যাঙ্কের মৃত্যু ঘটিয়েছে এটা সে লিনডারে সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছে।

তার অবশ্য কিছু হবে না। কারণ তার কাছে মেয়েদের কোন দাম নেই।

এই বলে সে গাড়ির দরজা খুলল। গাড়িতে উঠতে গিয়ে দেখল ফেস্টিয়ারিং-এর ঠিক নীচে একটা টকটকে লাল অর্কিড পড়ে আছে। ফুলটার দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে তার চোখটা সামান্য কুঁচকে উঠল।

কেউ কি বিনা কারণে এত দামী ফুলটা তার গাড়ির মধ্যে ফেলে গেলো নাকি এর কোনও কারণ আছে।

যাইহোক সে গাড়িতে উঠে গাড়ি স্টার্ট করে দিল।

পাহাড়ের উপর একটা কাঠের বাড়ির সামনে গাড়ি থামলো। বাড়ির নাম নিরালা। বাড়িটা বেশ পুরনো।

এটা ম্যাক্সের বাড়ি। এখানে ওর বাবা থাকে। সে তিরিশ বছর সার্কাসের ক্লাউন হয়ে কাজ করেছে। নাম তার ইজমি গিজা।

ম্যাক্সকে সে রীতিমতো ভয় করে চলে। যেমন চলতো ম্যাক্সের মাকে। কারণ ইজমি গিজা শান্তিপ্রিয় লোক।

ম্যাক্স গাড়ি থেকে নেমে এগিয়ে এল। তার বোতামের ঘরে একটা টকটকে লাল অর্কিড।

সে বলল, ফ্র্যাঙ্ক মারা গেছে।

 তাহলে এখানেই সব কিছুর ইতি।

ইস, এখন আমাদের দুজনের টাকাই আমার। এই কথাই ছিল।

ইজমি বলল, আমার অবস্থার কিছু হেরফের হবে কি?

জানিনা, তোমার কথা ভেবে দেখার সুযোগ পাইনি। ওসব ছোট-খাট ব্যাপারগুলো পরে ভেবে দেখবো। তুমি কি এখানে থাকতে চাও?

হ্যাঁ আমি এখানে থাকতে ভালবাসি।

তারপর ম্যাক্স ইজমিকে সব কথা খুলে বলল, সে আরও বলল, মেয়েটা এখানেই আছে এই শহরেই। ফ্র্যাঙ্ক বলেছিল ওঁর পর এবার আমার পালা। এ ব্যাপারে তোমার কি মনে হয়।

কথাটা তুমি আমাকে না বললেই ভালো করতে, এই বলে ইজমি বাড়ির ভেতরে চলে গেল।

এরপর ম্যাক্স গাড়ি থেকে দুটো বড় ব্যাগ বের করে বাড়ির দোতলায় একটা চোরা কুঠুরির মধ্যে ঢুকল। তারপর সেই ঘরের একটা আলমারীর মধ্যে লুকনো দুটো পুরনো চামড়ার ব্যাগ বের করে আনল।

পরবর্তী আধ ঘণ্টা পাঁচ এবং দশ ডলারের একগাদা বান্ডিল গোনায় ব্যস্ত হয়ে রইল ম্যাক্স। এখন সে রীতিমতো ধনী।

একটু পরেই ওর বাবা বলল ওরা ফোন করে ফ্র্যাঙ্কের অন্ত্যেষ্টির ব্যাপারে বলছিল।

 ও ব্যাপারে আমার কোন উৎসাহ নেই। ফুলটুল পাঠানোর কোনও ব্যাপার নেই।

কিন্তু ওরা বলছে একগাদা ফুল এসে পৌঁছেছে। তুমি ওগুলো নিয়ে কি করতে চাও?

কি ফুল?

লাল অর্কিড। তার সঙ্গে একটা কার্ডও এসেছে। তাতে লেখা আছে ক্যারল ব্লানডিশ ও স্টিঙ লারসনের পক্ষ থেকে।

রাতের খাওয়া শেষ করে ম্যাক্স বলল, আমি কালই এখান থেকে চলে যাবো।

ইজমি এঁটো বাসনগুলো নিয়ে দরজার দিক থেকে ফিরতেই বাগানের কোণ থেকে কুকুরগুলো ডেকে উঠলো।

ওটা অমন ডাকছে কেন ম্যাক্স বলল।

 ইজমি বাগানে দেখতে গেল। দেখল কুকুরটার চোখ আতঙ্কে দিশেহারা। তার মনে হল বাড়ির সামনে যেন একটা চলন্ত ছায়ামূর্তি। ভাবল কল্পনা। সে বাড়ি ফিরে এলো।

তারপর ইজমি আর ম্যাক্স আগুনের কাছে বসে ছিল। একটু পরেই একটা অস্পষ্ট ক্যাচশব্দ উঠল। ইজমি বললে শুনলে কিছু?

একটা শব্দ হল বলে তো মনে হল, ম্যাক্স বলল।

তারপর ওরা দুজনেই একটা অস্পষ্ট পদধ্বনি শুনতে পেল।

ইজমিকে বসতে বলে ম্যাক্স পিস্তল হাতে নিয়ে দরজাটা খুলল। বাইরে বারান্দা ঘন অন্ধকারে, তলিয়ে আছে। সে খুব উৎকর্ণ হয়ে সিঁড়ি দিয়ে উঠতে লাগল। সিঁড়ির মাথায় উঠে সিঁড়ির লাইটটা জ্বালিয়ে দিল। ঘরে কেউ নেই। কিন্তু আবার কুকুরটা ডেকে উঠলো। সে দৌড়ে জানলা দিয়ে বাগানে তাকাল। দেখল একটা চলন্ত ছায়ামূর্তি।

হঠাৎ ম্যাক্স আতঙ্কিত হয়ে আলমারির দিকে ছুটে গেল। দেখল চোরাকুঠুরী খোলা। তার সবকিছু চুরি হয়ে গেছে।

প্রথমে তার মনে হচ্ছিল তার বুঝি নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাবে। সে অজ্ঞান হয়ে যাবে। সে চোরাকুঠুরীর মধ্যে হাত ঢুকাল দেখল একটানরম জিনিষ। বাইরে বের করে দেখল একটা অর্কিড। লাল অর্কিড।

ইজমি ছুটে এসে দেখল, ম্যাক্স মৃগী রোগীর মতো মেঝেতে গড়াগড়ি খাচ্ছে। তার মুখে আঁচড়ের দাগ, তার থেকে রক্ত ঝরছে। ঠোঁটের কোণে গ্যাজলা।

.

বিশাল একটা নিয়ন আলোর বিজ্ঞাপন পার্ম বে হোটেলের একমাত্র বৈশিষ্ট। সেটা সানটো-রিডার যে কোন অংশ থেকেই স্পষ্ট দেখা যায়। তাই যে সব ভ্রমনার্থী প্রথমবার সানটোরিড়াতে আসে তারা ভাল হোটেল মনে করে এখানে এসেই ওঠে।

পাম বের স্থায়ী বাসিন্দার সংখ্যাও যথেষ্ট। এডি রিগান যখন প্রথম সানটোরিড়াতে এসে পদার্পণ করে তখন অন্য ভ্রমণার্থীদের মতো সেও পাম বের নিয়ণ আলোতে বিভ্রান্ত হয়ে এখানে এসে ঘর নিয়েছিলো। শীঘ্রই সে বুঝতে পারে, যে হোটেলটা অত্যন্ত বাজে। একেবারে তৃতীয় শ্রেণীর। কিন্তু সে তো নিজেও তখন তৃতীয় শ্রেণীর তাই সে ওই ঘরটায় থেকে যায়।

সেদিন রাতে ম্যাক্স যখন আবিষ্কার করলো যে তার সব জমানো টাকা চুরি গেছে, তার ঘণ্টা খানেক পরে এডি পাম বে হোটলের নোংরা ঘরে বসে স্কচ হুইস্কি খাচ্ছিল। হোটেলের সবাই জানতো, ফ্র্যাঙ্কের মৃত্যুর প্রত্যক্ষ কারণ এডি। সে যে না জেনেই সেখানে গিয়ে হাজির হয়েছিল তা কেউ বিশ্বাস করছে না কারণ লিনডার সঙ্গে তার প্রেম ছিল।

লিনডা বা এডি কেউই পুলিশকে মেরি প্রেনটিসের সম্বন্ধে কিছু বলেনি। ওরা ভেবেছিল ওর কথা জানালে পুলিশ ভাববে তিনজনে মিলে কাজটা করেছে।

এডি স্থির করেছিল এর পর যতদিন না পুলিশ তার আর লিনডার উপর আগ্রহ হারিয়ে ফেলে ততদিন তারা আলাদা থাকবে।

ফ্র্যাঙ্ক লিনডার জন্য কোন অর্থসম্পদই রেখে যাননি শুনে এডি আতঙ্কিত হয়ে উঠল। এখন থেকে লিনডার জন্য তার টাকা রোজগার করতে হবে। এখন বেশ বড় রকমের একটা দাও মারা প্রয়োজন।

খানসামা এসে ওর খালি গ্লাস ভর্তি করতে করতে বলল, একবার পিছনে তাকান।

ঘাড় ফিরিয়ে এডি দেখলো, প্রধান ফটক পেরিয়ে হোটলের রিসেপশান ডেস্কের দিকে একটা মেয়ে এগিয়ে চলেছে। মেয়েটি লম্বা, ছিপছিপে গড়ন, দেখতে মিষ্টি। মাথায় অবাক করে দেবার মতো একরাশ লাল চুল।

এডি মৃদু শিস দিয়ে বলল, এসব সরিয়ে রাখো, ব্যাপারটা একটু দেখতে হচ্ছে। এডি লক্ষ্য করল মেয়েটির হাতে দুটো চামড়ার ব্যাগ।

লিফটের দিকে যখন মেয়েটি এগিয়ে গেল তখন এডির মনে হল মেয়েটিকে কোথায় যেন দেখেছে।

 সে জিজ্ঞেস করল, মেয়েটা কে হে?

নাম লিখেছে ক্যারল রানডিশ।

এডি চমকে উঠেভাবল আরে এই মেয়েটার কথাই তো পেপারে বেরিয়েছিল।ওর দাম কয়েক লক্ষ ডলার। মেয়েটা নাকি পাগল!

এডি বললো, নাঃ একটু চেখে দেখতে হচ্ছে সে ক্যারলের ঘরের নম্বরটা জেনে নিল।

এদিকে ক্যারলকে পৌঁছে দিয়ে চাপরাশী বলল, খাবার কি এখানে খাবেন, আর কি খাবেন যদি বলে দেন ভাল হয়।

খাবার এখানেই এনো। যা কিছু হলেই চলবে। তুমি এখন যাও। এই বলে মাথার শিরা টিপে চেয়ারে বসে রইল।

কিছুক্ষণ এভাবে ও চুপচাপ বসে রইল। মনে হল ও বুঝি অজ্ঞান হয়ে যাবে। ও যখন ম্যাক্সকে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আসতে দেখেছে, সেই তখন থেকেই ওর পেটে কিছু পড়েনি।

বারান্দায় ঘুরেফিরে এডি সময় কাটাচ্ছিল। হঠাৎ দেখল যে একটা খানসামা খাবারের ট্রে হাতে ক্যারলের ঘরের দিকে যাচ্ছে। সে তখন তার থেকে খাবারটা নিয়ে ক্যারলের ঘরে ঢুকল।

সে দেখল মাথা টিপে গুটিসুটি মেরে একটা চেয়ারে ক্যারল বসে আছে।

সে এডিকে দেখে বলল, খাবারটা রেখে তুমি যাও। ঠিক তখনই মেঝের উপর রাখা ব্যাগের উপর চোখ পড়ল এডির। একটা ব্যানারের গায়ে লেখা ফ্র্যাঙ্ক ফুর্ট। ঠিক এই সময়ে কি একটা কারণে ক্যারল হাত নাড়ল। তাতে ওর কব্জির কাছে কাটা দাগটা স্পষ্ট দেখতে পেল এডি। সে চমকে উঠে বুঝল এই মেয়েটাই মেরি প্রেনটিস।

কিন্তু ক্যারল তাকে চিনতে পারার আগেই সে ঘর থেকে বেরিয়ে এল। বুঝলো যে ব্যাগের মধ্যে ফ্র্যাঙ্ক ও ম্যাক্সের জমানো সম্পদ ভর্তি।

ক্যারল ঠিক করেছিল ম্যাক্সকে আরও কয়েকটা দিন জিইয়ে রেখে তিলে তিলে মারবে।

ঠিক সেই মুহূর্তে ব্যাগ দুটোর কথা ক্যারলের মনে পড়ল। ব্যাগ খুলে দেখলো তাতে থরে থরে নোট। সে ব্যাগটা ছুঁড়ে ফেললো মেঝেতে নোট ছড়িয়ে পড়ল। ঠিক এমন সময়ে এডি ঘরে ঢুকল। দেখলো মেঝেতে ছড়ানো নোট।

ক্যারলকে বলল–চিনতে পারো।

 ক্যারল মৃদুস্বরে বলল—বেরিয়ে যান।

মেরি প্রেনটিস নামে নিজের পরিচয় দিয়েছে এমন একটা মেয়েকে পুলিশ খুঁজছে। খুনের অভিযোগ আর তার যথেষ্ট প্রমাণও আছে।

তাতে আমার কি?

দেখো তুমি ঢাকবার চেষ্টা করো না। তুমিই মেরি প্রেনটিস। আমি তোমার কব্জিতে কাটা দাগ দেখেছি। আর তুমিই গ্লেনভিউ মেন্টাল স্যানিটোরিয়ামের প্রাক্তন রোগীনি ক্যারল ব্লানডিশ লক্ষ লক্ষ ডলারের মালিক। এখন আমি এ টাকাগুলো নিয়ে যাচ্ছি। পরে তুমি আমাকে বড় অঙ্কের চেক দেবে না হলে আমি তোমায় পুলিশে ধরিয়ে দেব। বল তোমার কি মতামত?

আপনি বেরিয়ে যান।

বেরিয়ে যাবার আগে এ টাকাগুলো নিয়ে যাচ্ছি।

এগুলো তোমার টাকা নয়।

টাকা কুড়িয়ে নেবার জন্য এডি নিচু হতেই ক্যারল চুল্লি খোঁচানোর শিকটা দিয়ে সর্বশক্তি দিয়ে এডির মাথায় আঘাত করল। তবে আঘাতটা এডির মাথায় লাগল না। কাঁধে লাগল।

এর জন্য একটু পরেই এডি ক্যারলকে টেনে মেঝেতে শুইয়ে এলোপাথাড়ি মারতে লাগল।

 কিন্তু একটু পরেই ক্যারল নিজেকে ছাড়িয়ে দরজার সামনে পৌঁছল। দরজায় চাবি দিয়ে দিল।

এডি বলল, চাবি খোল না হলে তোকে এর শাস্তি ভোগ করতে হবে।

 কিন্তু কথা না বলে সে এগিয়ে গিয়ে এডিকে আক্রমণ করল। এডি তখন বাঁচবার জন্য একটা চেয়ার তুলে ক্যারলের মাথায় আঘাত করল। নিস্তেজ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ল ক্যারল।

এডি ভাবল খুন করে ফেলেছি। তার সারা শরীর ঠাণ্ডা হয়ে গেল।

সে ভাবল পুলিশ ওকে খুঁজে পেলেই আমাকে ফাঁসিতে লটকে দেবে।

হঠাৎ আগের কথা মনে পড়লো। হ্যাঁ একমাত্র গ্যাসই তাকে এই বিপদ থেকে উদ্ধার করতে পারে।

টেলিফোন তুলে সে বলল, গ্যাস শীঘ্রি এখানে চলে এসো।

গ্যাস এসে বলল, একি? মরে গেছে নাকি?

জানি না।

এডি বলল, মেয়েটা পালাত আমি ওকে না মারলে।

গ্যাস মেঝেতে বসে ক্যারলকে ভাল করে দেখল তারপর বলল খুলিটা একেবারে গুড়ো হয়ে গেছে। এত জোরে মারলে কেন?

আমি নিজে বাঁচার জন্য করেছি।

ওসব কথা তুমি পুলিশকে শুনিয়ো। আমি ভাবছি হোটেলের কথা। পুলিশ তো ঘটনাটা জানলেই হোটেলের দরজা বন্ধ করে দেবে।

ঈশ্বরের দোহাই গ্যাস ওকে বের করে কোথাও ফেলে দিয়ে এসো।

আমি শেষে আমার হাতে হাত কড়া পরাব আরকি।

 গ্যাস তুমি বন্দোবস্ত কর। মেঝেতে দেখো বিশ হাজারের বেশি আছে এগুলো তুমি নাও।

 গ্যাস বলল, মেয়েটাকে সরিয়ে দিলে ওগুলো দিয়ে দেবে বলছ।

হ্যাঁ শুধু একটু তাড়াতাড়ি সরিয়ে দাও।

তাহলে এবার যাও এডি। বেশ কিছুদিন তোমার এই আঁচড়ানো থোবড়খানা দেখতে চাই না। তোমার এই বদনখানা দেখলেই কিন্তু পুলিশ সন্দেহ করবে। আমি ওকে কর্মচারীদের জন্য আলাদা যে লিফট আছে তাতে করেনীচে নামিয়ে কোনো গাড়িতে তুলে কোনো জায়গায় ফেলে আসবো।

.

সানটোরিডা মেমোরিয়াল হসপিটালে মন্টগোমারি ওয়ার্ডের বিরাম কক্ষে বসেছিল ইজমি গিজা।

ওরা অ্যাম্বুলেন্সে চাপিয়ে ম্যাক্সকে নিয়ে এসেছিল।

 ইজমির ধারণা, ম্যাক্সকে সন্ন্যাসরোগে আক্রমণ করেছিল। এ রোগের ধারা তাদের গুষ্টিতে আছে।

নার্স এসে ঘরে ঢুকল। মহিলাকি বলবে ভেবেইজমি ভীত হল। মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণ সম্পর্কিত কোন কথা বলেছিলেন মহিলাটি। শরীরের বাম অংশে পক্ষাঘাতের স্পষ্ট প্রমাণ।

ইজমি বলল, কিন্তু অবস্থা কি খুবই খারাপ? বাঁচবে তো?

 আপনি কয়েক মিনিটের জন্য ওর সঙ্গে দেখা করতে পারেন।

ঘরে ঢুকে ইজমি দেখলো, ম্যাক্স বিছানায় শুয়ে আছে। তার মুখ দিয়ে অবিরত গোঙানির আওয়াজ বেরোচ্ছে।

জানলার পাশে দাঁড়িয়েছিল নার্স হেন্যিকি, লম্বা কালো চেহারা, অদ্ভুত ভাবলেশহীন মুখ। ইজমি ম্যাক্সকে বলল, তুমি শিঘ্রী ভাল হয়ে উঠবে।

নার্স ইজমিকে ধরে বাইরে নিয়ে এলো। কারণইজমি কাঁদছিল। সেবলল,নার্স ওকে যথাসম্ভব যত্ন করবেন। ও আমার ছেলে।

ইজমি টানা বারান্দা দিয়ে এগিয়ে চলল। বারান্দার দুধারে সারি সারি দরজা। প্রতিটা দরজার গায়ে ছোট্ট করে নামের ফলক টাঙানো।

হঠাৎ পায়ের শব্দ শুনে ইজমি দেখল একজন দীর্ঘকায় পুরুষ একটি সুন্দরী মেয়েকে নিয়ে বারান্দা দিয়ে এগিয়ে আসছে। উল্টোদিকে একটা দরজা ঠেলে ওরা ভেতরে ঢুকলো। তারপরে দরজা বন্ধ করে দিল। কৌতূহলী হয়ে ওই ঘরের নামের ফলকটা পড়ার জন্য এগিয়ে গেল ইজমি। কিন্তু নামটা পড়ে সে চমকে উঠলো।

হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে থাকা অজ্ঞান ক্যারলের দিকে তাকিয়ে ছিল ভিডা এবং ম্যাগার্থ। ডাক্তার ওর নাড়ির গতি পরীক্ষা করছিলেন।

ডাক্তার বলল আশাকরি আমি আপনাকে ঘরে পাঠিয়ে ভালই করেছিলাম। আমি অবশ্য ক্যারল ব্লানডিশের কথা কাগজে পড়েছিলাম। যখন জানতে পারলাম যে এ মেয়েটি কে, তখন আমার মনে পড়লে আপনি ওর ব্যবসায়ের কার্যনির্বাহী নিযুক্ত। তাই ভাবলাম খবরটা আপনাকে জানিয়ে দিই।

ম্যাগার্থ বলল–অবস্থা খুবই খারাপ, না?

কান্টোর বলল–আমি হলে বলতাম আশা নেই। তবে ভাগ্য ভাল, দেশের সব চাইতে বড় মস্তিষ্ক বিশারদ ডাক্তার ক্র্যাপলিয়েন কিছুক্ষণের মধ্যেই আমাদের এখানে এসে পৌঁছচ্ছেন। উনি অস্ত্রোপচার করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তার ধারণা, ওকে তিনি বাঁচাতে পারবেন।

ভিডা ম্যাগার্থের হাত আঁকড়ে ধরল।

ডাক্তার ক্র্যাপলিয়ন মনে করেন না যে ওর কোন গুরুতর ক্ষতি হয়েছে। হাড় অবশ্য ভেঙেছে। সম্ভবতঃ দুর্ঘটনার ফলে ওর মস্তিষ্কে আঘাত লেগেছিল কিন্তু অস্ত্রপচার হলে রোগী আবার তার স্মৃতিশক্তি ফিরে পাবে।

ম্যাগার্থ বিচলিত হল, তার মানে আমাকেও ওর মনে থাকবে না?

না।

ডাক্তার কান্টোরকে খুব আশাবাদী মনে হল, তিনি বললেন আর আধঘণ্টার মধ্যেই অপারেশন শুরু হবে। আপনারা হয়তো পুলিশের সঙ্গে দেখাসাক্ষাৎ সেরে আবার এখানে ফিরে আসবেন।

.

সানটোরিডাতে মাঝে মাঝেই অদ্ভুত সব আগন্তুকদের আবির্ভাব হয়।

রেল স্টেশনের পত্রিকা বিক্রেতা ওল্ড জো এদের সবাইকেই দেখেছে। কিন্তু ওকে জিজ্ঞেস করলেও বলবে মিস ললিমিডোজের মতো এমন অদ্ভুত আগন্তুক সেআরকখনো দেখেনি।

ভিডা ও ম্যাগার্থের সঙ্গে একই ট্রেনে সানটোরিডাতে এসে পৌঁছেছিলো মিস ললি। ক্যারলকে লিনডার ছবিটা দেখানোর পর থেকে ও বিবেকদংশনে ভুগছিল। ও কেন সুলিভ্যানদের মতো দুটো পাষণ্ডের সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য ওকে একা ছেড়ে দিল। মিস ললি কেন ওর সঙ্গী হল না।

এভাবে দিন চারেক চিন্তা করার পর যদি ক্যারলকে সানটোরিডাতে পাওয়া যায় এই আশায় খালি ট্রেনে চেপে বসল। বহুদিন সে ট্রেনে চাপে না। কারণ সবাই তার দিকে অদ্ভুতভাবে তাকায়।

ওল্ড জো জানতে চেয়েছিল কোন সাহায্য লাগবে কিনা?

 মিস ললি বলেছিল ও ক্যারল ব্লানডিশকে খুঁজতে এসেছে।

ওন্ড জো কোনো কথা না বলে একটা পত্রিকা এগিয়ে দিয়ে পত্রিকার একটা স্তবকের উপর ওর দৃষ্টি আকর্ষণ করল। তাতে লেখা ছিল যে সানটোরিড়া হসপিটালের সামনে আহত অবস্থায় ক্যারল ব্লানডিশকে পাওয়া গেছে। অবিলম্বে ওকে অস্ত্রপচার করা হবে।

রাস্তার উল্টোদিকে ইজমি গিজাকে খুড়িয়ে যেতে দেখে শেষ অবধি মন দিয়ে খবরটা পড়তে পারল না মিস ললি। দীর্ঘ পনের বছরের ব্যবধানেও ওকে চিনতে পেরেছিল সে। ইজমি যেখানে আছে সেখানে ম্যাক্সও থাকবে এই ভেবে সে এগিয়ে গেল।

.

রুদ্ধ বেদনা ও হতাশ রাগ নিয়ে বিছানায় শুয়ে ছিল ম্যাক্স। সে কিছু করতে পারছে না মেয়েটাকে। দরজা খোলার শব্দে সে দেখল অন্য একটা নার্স ঘরে ঢুকল।

তারা দুজন কথা বলতে লাগল। একজন নার্স অন্য আরেকজন নার্সকে বলল অন্য রোগীটার কি খবর বল। ও কি সত্যিই ক্যারল ব্লানডিশ নাকি?

হ্যাঁ মেয়েটা খুব মিষ্টি, মাথায় সুন্দর লাল চুল ডাক্তার চমৎকার অপারেশন করেছে ও আবার ভাল হয়ে উঠবে।

উত্তেজনায় ম্যাক্সের দম বন্ধ হয়ে গেল, সে প্রাণপনে নিজেকে সংযত করে রাখল।

ম্যাক্স ভাবল যদি চলতে পারতাম। কিন্তু তার আগে নার্সটাকে শায়েস্তা করতে হবে।

ওকে সরাতে পারলে ক্যারলকে শেষ করা যাবে। নার্সটা মুখ নীচু করে ওকে বলল কিছু চাই আপনার। বাগে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ও মেয়েটাকে চেপে ধরে গলায় মরণফাঁস দিয়ে দিল, ওর হাত দিয়ে।

মেয়েটা শেষ হয়ে যাওয়ার পর ম্যাক্স ভাবল যা করার এখনি করতে হবে হাতে বেশী সময় নেই।

সে অনেক কষ্টে নিজের শরীরে শক্তি সঞ্চয় করে হামাগুড়ি দিয়ে নীচে নেমে এল। মসৃণ মেঝের উপর বাঁ হাত আর বাঁ পা টেনে টেনে সে কেশ দ্রুত গতিতেই এগিয়ে চলল।

বারান্দার এধার থেকেওধার পর্যন্ত গুঁড়ি মেরে চলার সময় নেই ম্যাক্সের। ভাবলো কপাল ঠুকে উল্টো দিকের দরজাতেই ঢুকে পড়বে সে। দেখবে যদি ক্যারল থাকে সেখানে।

মেঝেয় কান পেতে ম্যাক্স উৎকর্ণ হয়ে রইল। কিন্তু সেই মুহূর্তে সমস্ত বাড়িটা একেবারে নিঝুম। এরপরেই লিফটের ঝোড়ো আওয়াজ আর কোনও সাড়াশব্দ নেই।

বুক ভরে একটা নিঃশ্বাস নিয়ে দরজা খুলে বারান্দার দিকে গুটি মেরে এগুতে লাগল ম্যাক্স।

.

ইজমি বলল–এখন ওকে দেখলে তুমি আর অতটা ভয় পেতে না, জানি ছেলেটা ভাল না। কিন্তু এখন ও খুব অসুস্থ।

মিস ললি তবু একইভাবে দুহাত মুঠো করে পায়চারি করতে লাগল অস্থির হয়ে।

একটা ছোট হোটেলে বসে কথা হচ্ছিল।

মিস ললি বললো, তোমার চেয়ে ওকে আমি ভাল চিনি, ওর ওপরে তোমার দুর্বলতা আছে।

তাই তুমি ওর দোষ ঢাকার চেষ্টা করছে। কিন্তু ও একটা শয়তান। ফ্র্যাঙ্কও তাই ছিল।

যাইহোক ললি ও তো এখন পক্ষাঘাতে অবশ হয়ে গেছে।

কিন্তু ও ম্যাক্স আর কেউ না। ওর উল্টো দিকের ঘরটাতেই মেয়েটা রয়েছে, ভাবতেও আমার ভয় লাগে। এত কাছাকাছি ও যদি জানতে পারে।

কিন্তু ও তো কোনোদিনও হাঁটতে পারবে না।

সুটকেস খুলে একটা ভারি ছোরা বার করল মিস ললি।বলল এটা ম্যাক্সের অনেকগুলো ছোরার মধ্যে একটা, আমি রেখে দিয়েছিলাম। আর ও ছোরা দিয়ে করতে পারে না এমন কোন কাজ নেই। হাঁটতে না পারলেও ও ছোরা ঠিক ছুঁড়তে পারবে।

মিস ললি বলল, আমি হাসপাতালে যাচ্ছি। না গেলে ঠিক শান্তি পাচ্ছি না।

কিন্তু কেন যাচ্ছ? তুমি কি বলে দেবে ও কি করেছে?

হ্যাঁ বলে ওদের সাবধান করে দেবো।

ওদের কিছু বলল না, ম্যাক্স খুব অসুস্থ, একটু দয়া করো ললি।

কিন্তু ও আমাকে দয়া করেনি।

কিন্তু এখন ও অসুস্থ, ও সুস্থ হলে ওকে নিয়ে কোথাও দূরে চলে যাব।

এমন ছেলের জন্ম দিয়েছিলে কেন। আমি তোমাকে আগেই সাবধান করে দিয়েছিলাম। তবু তুমি কেন অমন একটা মেয়েকে বিয়ে করলে। মিস ললি ফেটে পড়লো।

ইজমি বলল, তুমি ঠিকই বলেছ তখন তোমার কথা শুনলে ভাল করতাম।

ইজমি ঘরেবসে রইল।দরজা খুলে মিস ললি বেরিয়ে গেল।ওমনে মনে বললো ম্যাক্সশয়তান, কিছু না কিছু শয়তানি করার চেষ্টা ও করবেই।

অন্ধকার রাস্তায় বেরিয়ে একখানা ট্যাক্সি ধরে মিস ললি সেটাতে চেপে বসলো। যখন ও সানটোরিডা মেমোরিয়ালহসপিটালে পৌঁছল তখন মিনারের ঘড়িতে ঢং ঢংকরে এগারোটা বাজল।

সদর দরজার দারোয়ান ঘৃণা ও বিরক্তি মেশানো মুখে মিস ললির দিকে তাকিয়ে দৃঢ় স্বরে কললো, এখন কারুর সঙ্গে দেখা হবে না। কাজেই কাল আসতে হবে।

লোকটা মিস ললির মুখের ওপরে দরজা বন্ধ করে নিজের অফিস ঘরে ফিরে গেল।

বিশাল বাড়িটার হাজার হাজার জানলা দিয়ে আলো ছড়িয়ে পড়ছে। এ বাড়িরই কোন একটা ঘরে রয়েছে ম্যাক্স। উল্টো দিকের ঘরে ক্যারল।

মিস ললি যেন অমঙ্গলের পূর্বাভাস অনুভব করতে পারছিল। ম্যাক্সকে ও চেনে। ম্যাক্স যদি জানে যে ক্যারল এত কাছে আছে, তাহলে সে যেভাবে হোক ক্যারলকে শেষ করে দেবে।

উল্টো দিকের দরজার গোড়ায় পৌঁছে হাতের ভরে শরীর উঁচু করে নামের ফলকের দিকে তাকালে ম্যাক্স।

ফলকে নাম লেখা ক্যারল ব্লানডিশ। সঙ্গে সঙ্গে তার শরীরে যেন উষ্ণরক্ত স্রোত বয়ে গেলো।

তাহলে মেয়েটা এখানেই আছে। ঘরের ভিতর ঢুকে ম্যাক্স দরজা বন্ধ করে দিল।

সমস্ত ঘরটা আধো অন্ধকার, শুধু খাটের ঠিক ওপরে একটা নীল আলো জ্বলছে। প্রথমে অস্পষ্ট হলেও ও দেখলো ঘরে একটা চেয়ার আর একটা এনামেল করা টেবিল রয়েছে।

গুড়ি মেরে খাটের কাছে এগিয়ে গিয়ে ও দেখলো খাটটা বেশ উঁচু। ডান হাতে ভর রেখে উঁচু হয়ে সে দেখল বিছানায় ক্যারল শুয়ে আছে। মাথায় ব্যান্ডেজ জড়ানো। দেখে মনে হয় বুঝি তার মৃত্যু হয়েছে কিন্তু আসলে তা নয় নিঃশ্বাসের তালে তালে তার বুকের মৃদু ওঠা নামা দেখে বোঝা যায় যে সে জীবিত।

তার এত কাছে শিকার তবুও নাগালের বাইরে। সে ভাবল যে কোন উপায়েই হোক মেয়েটাকে শেষ করতেই হবে।

ম্যাক্স নিজেকে আরাম কুর্সির দিকে টেনে নিয়ে চললো। তক্ষুনি তার মনে হল কেউ ওদিকে আছে।

বারান্দা দিয়ে মিস ললি বেদম বেগে ছুটে আসছিল। কেউ ওকে হাসপাতালে ঢুকতে দেখেনি। ইজমি বলেছিল ম্যাক্স চারতলায় আছে। ও জানতে জরুরী ব্যবহারের সিঁড়িতে চট করে কারো সঙ্গে দেখা হবার সম্ভাবনা কম। তাই এই পথেই ও উঠে এসেছে।

প্রথমে ও ম্যাক্সকে দেখবেবলে মনস্থ করেছিল। ইজমি যেমন বলেছে ম্যাক্স যদি সেরকম অসুস্থ আর অসহায় হয়ে থাকে, তবে আসল কথাটা ও আর ভাঙবেনা।

সহসা একটা দরজায় ম্যান্সের নাম দেখতে পেল ললি। সে ঘরে ঢুকে দেখলো একটা নার্স বিছানায় মরে পড়ে আছে। বিছানা ফাঁকা সেখানে কেউ নেই। সে তখন বুঝতে পারলে কি হতে চলেছে। সে দৌড়ে বিপরীত দিকের কেবিনে ঢুকে পড়ল।

অন্ধকারের মধ্যেও ম্যাক্স তৎক্ষণাৎ ওকে চিনতে পারলো। সে জানতো আবছা আলোয় প্রথমেই মিস ললি তাকে দেখতে পাবে না। ম্যাক্স ললির দিকে এগিয়ে চলল কিন্তু কাছাকাছি। পৌঁছন মাত্রই মিস ললি তাকে দেখে ফেলল।

আতঙ্কে দিশেহারা হয়ে মিস ললি পিছিয়ে এলো। কিন্তু এর মধ্যে ম্যাক্সও পোশাকের প্রান্ত ভাগ চেপে ধরেছে। মিস ললি মুহূর্তের মধ্যে নীচু হয়ে হাতে ধরা ছুরিটা দিয়ে তীব্র আঘাত করলো ম্যাক্সকে।

কিন্তু ম্যাক্সও ইতিমধ্যে কাঁধের কাছে এক প্রচণ্ড ঘুষি মেরে মিস ললিকে ধরাশায়ী করে ফেললো।

ম্যাক্স অনুভবকরলো তার আহত স্থান বেয়ে রক্ত নেমে আসছেপ্রবল গতিতে। ছোরার হাতলটা সে হাতের মুঠোয় পেয়েছে। সে অস্ত্র চালাতে অতি সুদক্ষ।

ইতিমধ্যে মিস ললি উঠে দাঁড়িয়েছে।

ছোরাটা তুলে সে মিস ললিকে ঠিক বুকের মাঝে আঘাত এনে শেষ করে ফেলল। এরপর সে এগিয়ে গেল ক্যারলের খাটের দিকে। কিন্তু মিস ললির বুকের মধ্যে থেকে সে কিছুতেই ছোরাটা তুলতে পারলো না। সেই শক্তিটুকুও নেই।

অতর্কিতে ম্যাক্সের পুরোনো দিনের কথা মনে পড়লো। এখান থেকে সাদা চাদরে মোড়া ক্যারলের নরম গলাটা স্পষ্ট দেখা যায়। কিন্তু ছোরাটা না তুললে সে কি দিয়ে আঘাত করবে। সেটা ভোলার জন্য সে বাটটা ধরল ঠিক তখনই অন্ধকার থেকে ম্যাগার্থ বেরিয়ে এলো বলল, ম্যাক্স তুমি বড্ড দেরী করে ফেলেছে, আর তুমি এ কাজ করতে পারবে না।

পরক্ষণেই মেঝের ওপরে ঠিকরে পড়ে ম্যাক্স লুটিয়ে পড়ল। ম্যাগার্থ বলল এসো বন্ধু আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করে আছি।

মৃত্যুর আগে ম্যাক্সের মনে এটুকুই তৃপ্তি যে সে ছোরাটা আদৌ ছাড়েনি। তার সুনাম ব্যর্থ হয়নি। একটু পরেই দীর্ঘশ্বাস ফেলে ক্যারল চোখ মেলে তাকাল। যে বীভৎসতা মেঝের ওপর ওকে ঘিরে রেখেছিল ও বিছানা থেকে তা দেখতে পাচ্ছিলনা। অতীত ওর মন থেকে সম্পূর্ণ মুছে গেছে। আবার ওর কাছে কেউ আসবে এই আশা নিয়ে সে অপেক্ষা করে রইল।