০২. বাঙালি বাঙলা বাঙলাদেশ

বাঙালি বাঙলা বাঙলাদেশ

একজন বাঙালি দেখতে কেমন? বাঙালিরা দেখতে ইংরেজের মতো ধবধবে শাদা নয়, নয় নিগ্রোর মতো মিশমিশে কালো। বাঙালিরা, অর্থাৎ আমরা, তুমি আমি এবং সবাই, আকারে হয়ে থাকি মাঝারি রকমের। আমাদের মাথার আকৃতি না-লম্বা না-গোল, আমাদের নাকগুলো তীক্ষ্ণও নয়, আবার ভোতাও নয়, এর মাঝামাঝি। উচ্চতায় আমাদের অধিকাংশই পাঁচ ফুটের ওপরে আর ছ-ফুটের নিচে। এ হচ্ছে বাঙালিদের সাধারণ রূপ। চারদিকে তাকালে এটা সহজে বোঝা যায়। আমাদের পূর্বপুরুষ কারা; আমরা কাদের বিবর্তনের পরিণতি? আমরা একদিনে আজকের এ-ছছাটোখাটো আকার, শ্যামল গায়ের রঙ লাভ করি নি। আমাদের পূর্বপুরুষ রয়েছে।

নৃতাত্ত্বিকেরা অনেক গবেষণা করে সিদ্ধান্তে এসেছেন আমাদের পূর্বপুরুষ হচ্ছে সিংহলের ভেড্ডারা। এরা অনেক আগে সারা ভারতে ছড়িয়ে ছিলো। আমাদের শরীরের রক্তে তাদের রক্ত রয়েছে বেশি পরিমাণে। তবে আমরা অজস্র রক্তধারার মিশ্রণ : আমাদের শরীরে যুগেযুগে নানা জাতির রক্ত এসে ভালোবাসার মতো মিশে গেছে। রবীন্দ্রনাথ ‘ভারততীর্থ’ কবিতায় বলেছিলেন, ভারতবর্ষে শক হুন মোগল পাঠান সবাই লীন হয়ে আছে। ঠিক তেমনি বাঙালির শ্যামল শরীরে ঘুমিয়ে আছে অনেক রক্তস্রোত। আমরা ভেড়াদের উত্তরপুরুষ। আদিবাসী সাঁওতাল, মুণ্ডা, মালপাহাড়ি, ওরাঁও এদের মধ্যেই শুধু নয়, নিম্নবর্ণের হিন্দুদের মধ্যে, এমনকি উচ্চবর্ণের হিন্দু ও মুসলমানের মধ্যেও এদের উপাদান প্রচুর পাওয়া গেছে। ভেড়া রক্তধারার সাথে পরে মিলিত হয় আরো একটি রক্তধারা। এ-ধারাটি হলো মঙ্গোলীয়। মঙ্গোলীয়দের চোখের গঠন বড়ো বিচিত্র। তাদের চোখ বাদামি রঙের লাল আভামাখা, আর চোখের কোণে থাকে ভাঁজ। বাঙালিদের মধ্যে এরকম রূপ বহু দেখা যায়। এরপরে বাঙালির শরীরে মেশে আরো একটি রক্তধারা; এদের বলা হয় ইন্দো-আর্য। আর্যরা ছিলো সুদেহী, গায়ের রঙ গৌর, আকারে দীর্ঘ, আর তাদের নাক বেশ তীক্ষ। অনেক বাঙালির মধ্যে এদের বৈশিষ্ট্যও চোখে পড়ে।

এরপরে এদেশে আসে পারস্যের তুর্কিস্তান থেকে শকেরা। এরাও আমাদের রক্তে মিশে যায়। এভাবে নানা আকারের বিভিন্ন রঙের মানুষের মিলনের ফল আমরা। শকদের পরেও বাঙালির রক্তে মিশেছে আরো অনেক রক্ত। বিদেশ থেকে এসেছে বিভিন্ন সময়ে বিজয়ীরা;—এদেশ শাসন করেছে, এখানে বিয়ে করেছে, বাঙালিদের মধ্যে মিশে গেছে। এসেছে মানুষ আরব থেকে, পারস্য থেকে, এসেছে আরো বহু দেশ থেকে। তারাও আমাদের মধ্যে আছে।

বাঙালি মুসলমানেরা কিন্তু প্রকৃতই বাঙালি। একালে বাঙালিদের মধ্যে কেউ কেউ নিরর্থক গর্ব করতো যে তারা এদেশের নয়, তারা অমলিন মরুভূ আরবের। আমাদের মাঝে আরব রক্ত কিছুটা থাকতে পারে, কিন্তু আমরা এ-দেশেরই। আমরা আবহমানকাল ধরে বাঙালি। এদেশে মুসলমানদের আগমনের পরে, অনেকটা ত্রয়োদশ শতাব্দীর পরে, এদেশের দরিদ্ররা, নিম্নবর্ণের লোকেরা, উৎপীড়িত বৌদ্ধরা মুসলমান হতে থাকে। কেননা মুসলমানরা সে-সময়ে এসেছে বিজয়ীর বেশে। অনেকে বিজয়ী শক্তির মোহে, অনেকে ধর্মের মোহে এবং অধিকাংশ দারিদ্র ও অত্যাচার থেকে মুক্তির জন্যে মুসলমান হয়েছে। এরা জাতিতে বাঙালি আর ধর্মে মুসলমান, যেমন আমরা। আমাদের প্রধান পরিচয় আমরা বাঙালি।

তবে বহুদিন বাঙালি মুসলমানদের মধ্যে কখনো ঠাণ্ডা, কখনো উত্তপ্ত লড়াই চলেছে নিজেদের জাতিত্ব নিয়ে। মুসলমানদের একদল, যারা কোনো রকমে অর্থ ও মর্যাদা লাভ করতে পেরেছিলো, তারা গর্ব করতে ভালোবাসতো এ বলে যে তারা এদেশের নয়, তারা আরবইরানের। এরা ছিলো অনেকটা গৃহহীনের মতে, বাস করতো এদেশে, খেতো এদেশের মাছভাত, কিন্তু স্বপ্ন দেখতে আরবইরানের। আরো একটি দল ছিলো, যারা অর্থ লাভ করতে পারে নি, সমাজের মাতব্বর হতে চায় নি, তারা নিজেদের দাবি করে এসেছে বাঙলার বাঙালি বলে। এ-দু-দলের বিরোধ অনেক দিন ছিলো, এয়োদশ শতক থেকে এই সেদিন পর্যন্ত এ-বিরোধে বাঙালি মুসলমানেরা সময় কাটিয়েছে। এজন্যে মধ্যযুগের এক মহৎ কবি রেগে গিয়ে বলেছিলেন, যারা বাঙলায় জন্মে বাঙলা ভাষাকে ঘৃণা করে তারা কেননা এদেশ ছেড়ে চলে যায় না? তারা চলে যাক। এ-কবির নাম আবদুল হাকিম। আমরা আজ এ-সত্য প্রতিষ্ঠিত করেছি, আমরা বাঙালি, বাঙলা আমাদের ভাষা, বাঙলাদেশ আমাদের দেশ।

বাঙলা ভাষা কোথা থেকে এলো? অন্য সকল কিছুর মতো ভাষাও জন্ম নেয়, বিকশিত হয়, কালে কালে রূপ বদলায়। আজ যে-বাঙলা ভাষায় আমরা কথা বলি, কবিতা লিখি, গান গাই, অনেক আগে এ-ভাষা এরকম ছিলো না। বাঙলা ভাষার প্রথম বই চর্যাপদ আমরা অনেকে পড়তেও পারবো না, অর্থ তো একবিন্দুও বুঝবো না। কেননা হাজার বছর আগে যখন বাঙলা ভাষার জন্ম হচ্ছিলো, তখন তা ছিলো আধোগঠিত। তার ব্যবহৃত শব্দগুলো ছিলো অত্যন্ত পুরোনো, যার অনেক শব্দ আজ আর কেউ ব্যবহার করে না। সেভাষার বানানও আজকের মতো নয়। কিন্তু চর্যাপদ-এ যে-বাঙলা ভাষা সৃষ্টি হয় তাতো একদিনে হয় নি, হঠাৎ বাঙলা ভাষা সৃষ্টি হয়ে এসে কবিদের বলে নি, ‘আমাকে দিয়ে কবিতা লেখো।’ বাঙলা ভাষা আরো একটি পুরোনো ভাষার ক্রমবদলের ফল। ওই পুরোনো ভাষাটির নাম ‘প্রাচীন ভারতীয় আর্যভাষা।’ এ-প্রাচীন ভারতীয় আর্যভাষা মানুষের মুখে মুখে বদলে পরিণত হয়েছে বাঙলা ভাষায়।

ভাষা বদলায় মানুষের কণ্ঠে। সব মানুষ এক রকম উচ্চারণ করে না, কঠিন শব্দ মানুষ সহজ করে উচ্চারণ করতে চায়। এর ফলে পঞ্চাশ কি একশো বা তার চেয়েও বেশি সময় পরে দেখা যায়, ওই ভাষার অনেক শব্দের উচ্চারণ বদলে গেছে, বানান বদলে গেছে। দেখা যায় কোনো ভাষায় একশো বছর আগে যে-সব শব্দ ব্যবহৃত হতো, সেগুলোর আর ব্যবহার হচ্ছে না। তার বদলে মহাসমারোহে রাজত্ব বসিয়েছে নতুন নতুন শব্দ। এভাবে ভাষা বদলে যায়; এক ভাষার বুক থেকে জন্ম নেয় নতুন এক ভাষা, যার কথা বেশ আগে ভাবাও যেতো না। কিছু শব্দের বদল দেখা যাক। চন্দ্র একটি প্রাচীন ভারতীয় আর্য বা সংস্কৃত শব্দ। শব্দটি সুন্দর, মনোরম; কিন্তু উচ্চারণ করতে বেশ কষ্ট হয়। মানুষ ক্রমে এর। উচ্চারণ করতে লাগলো ‘চন্দ’। ‘র’ ফলা বাদ গেলো, উচ্চারণ সহজ হয়ে উঠলো। এরকম চললো অনেক বছর। পরে একদা নাসিক্যধ্বনি ‘ন’-ও বাদ পড়লো, এবং ‘চ’-এর গায়ে লাগলো আনুনাসিক আ-কার। এভাবে চন্দ্র হয়ে উঠলো ‘চাঁদ’। এভাবে কর্ণ’ হয়ে গেলো ‘কন্ন’, এবং তার পরে হয়ে উঠলো ‘কান’। আরো কিছু শব্দের বদল দেখা যাক :

শব্দটি প্রথমে ছিল তারপর হয় আর আজ
হস্ত হত্থ, হাথ হাত
বংশী বংসী বাঁশী, বাঁশি
বধূ বহু বউ
আলোক আলোঅ আলো
নৃত্য ণচ্চ নাচ

 

ভাষা এভাবে বদলে যায়। প্রাচীন ভারতীয় আর্যভাষা দিনে দিনে বদলে এক সময় হয়ে ওঠে বাঙলা ভাষা। ভাষা বদলের কিন্তু নিয়ম রয়েছে; খামখেয়ালে ভাষা বদলায় না। ভাষা মেনে চলে কতকগুলো নিয়মকানুন। প্রাচীন ভারতীয় আর্যভাষা একদিন পরিবর্তিত হয়ে রূপ নেয় ‘পালি’ নামক এক ভাষায়। পালি ভাষায় বৌদ্ধরা তাদের ধর্মগ্রন্থ ও অন্যান্য নানা রকমের বই লিখেছে। পালি ভাষা ক্রমে আরো পরিবর্তিত হয়; তার উচ্চারণ আরো সহজ সরল রূপ নেয়, এবং জন্ম নেয় ‘প্রাকৃত ভাষা’। এ-বদল একদিনে হয় নি, প্রায় হাজার বছরেরও বেশি সময় লেগেছে এর জন্যে। প্রাকৃত ভাষা আবার বদলাতে থাকে, অনেক দিন ধরে বদলায়। তারপর দশম শতকের মাঝভাগে এসে এ-প্রাকৃত ভাষার আরো বদলানো একটি রূপ থেকে উদ্ভূত হয় একটি নতুন ভাষা, যার নাম বাঙলা। এ-ভাষা আমাদের।

কেউ কেউ মনে করেন, বাঙলা ভাষার উদ্ভব ঘটেছে সপ্তম শতাব্দীতে। কিন্তু আজকাল আর বাঙলা ভাষাকে এতো প্রাচীন বলে মনে করা হয় না; মনে করা হয় ৯৫০ খ্রিস্টাব্দের কাছাকাছি কোনো সময়ে বাঙলা ভাষার জন্ম হয়েছিলো। প্রাচীন এ-বাঙলা ভাষার পরিচয় আছে চর্যাপদ নামক বইটির কবিতাগুলোতে। এর বাঙলা ভাষা প্রাচীন বাঙলা ভাষা, সদ্য জন্ম লাভ করেছে, তার আকৃতি পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে নি। এর ভাষা কেমন কেমন লাগে, এর শব্দগুলো আমাদের অপরিচিত, এর শব্দ ব্যবহারের রীতি আজকের রীতির থেকে ভিন্ন। এর কবিতাগুলো পড়ে অর্থ বুঝতে কষ্ট হয়। আলো অন্ধকারের রহস্য এর ভাষার মধ্যে জড়িয়ে আছে। এজন্যে এর ভাষাকে বলা হয় সন্ধ্যাভাষা’। সন্ধ্যার কুহেলিকা এর পংক্তিতে পংক্তিতে ছড়ানো।

জন্মের পর থেকে বাঙলা ভাষা পাথরের মতো এক স্থানে বসে থাকে নি। বাঙলা ভাষা পরিবর্তিত হয়েছে। মানুষের কণ্ঠে, কবিদের রচনায়। এ-বদলের প্রকৃতি অনুসারে বাঙলা ভাষাকে তিনটি স্তরে বিভক্ত করা হয়। প্রথম স্তরটি প্রাচীন বাঙলা ভাষা। এর প্রচলন ছিলো ৯৫০ থেকে ১২০০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত। তারপর দেড়শো বছর, ১২০০ থেকে ১৩৫০ পর্যন্ত বাঙলা ভাষার কোনো নমুনা পাওয়া যায় নি। দ্বিতীয় স্তরটি মধ্যযুগের বাঙলা ভাষা। ১৩৫০ থেকে ১৮০০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত যে-ভাষা আমরা পাই, তাই মধ্যযুগের বাঙলা ভাষা। এ-ভাষাও আজকের বাঙলা ভাষার মতো নয়। তবে তা হয়ে উঠেছে আমাদের আজকের ভাষার অনেক কাছাকাছি। এ-ভাষায় লেখা সাহিত্য অনায়াসে পড়া যায়, বোঝা যায়। ১৮০০ খ্রিস্টাব্দ থেকে শুরু হয় আধুনিক বাঙলা ভাষা। আধুনিক বাঙলা ভাষাকেও ইচ্ছে করলে কয়েকটি ভাগে ভাগ করতে পারি।

আজ যে-দেশের নাম বাঙলাদেশ, তার আকৃতি কিন্তু চিরকাল এরকম ছিলো না। আগে বাঙলাদেশ বিভক্ত ছিলো নানা খণ্ডে; তাদের নামও ছিলো নানারকম। কিন্তু বাঙলা বা বঙ্গ’ অথবা বাঙ্গালা’ যে-নামেই একে ডাকি না কেনো, এর নামটি এসেছে কোথা থেকে? এ-দেশের নামের কাহিনী বলেছেন সম্রাট আকবরের সভার এক রত্ন আবুল ফজল। তিনি বলেছেন বঙ্গ’ শব্দের সাথে ‘আল’ শব্দটি মিলিত হয়ে এদেশের নাম হয়েছে বাঙ্গাল’ বা বাঙ্গালা’। আমরা আজ বলি বাঙলা। আল’ কাকে বলে? এদেশে আছে খেতের পরে খেত; এক খেতের সাথে অপর খেত যাতে মিলে না যায়, তার জন্যে থাকে আল। আল’ বলতে বাঁধও বোঝায়। এদেশ বৃষ্টির দেশ, বর্ষার দেশ, তাই এখানে দরকার হতো অসংখ্য বাঁধের। আল বা বাঁধ বেশি ছিলো বলেই এদেশের নাম হয়েছে বাঙ্গালা বা বাঙলা। বাঙলা নামের ব্যুৎপত্তিটি একটু কেমন কেমন। বাঙলাদেশ বহু বহু বছর আগে বিভক্ত ছিলো নানা জনপদ বা অংশে। একেকটি কোমের নরনারী নিয়ে গড়ে উঠেছিলো একেকটি জনপদ। ওই জনপদের নাম হতো যে-কোম সেখানে বাস করতো, তার নামে। কয়েকটি কোমের নাম : বঙ্গ, গৌড়, পুণ্ড, রাঢ়। এ-কোমগুলো যে-জনপদগুলোতে বাস করতো পরে সেজনপদগুলোর নাম হয় বঙ্গ, গৌড়, পুণ্ড ও রাঢ়। এগুলো ছিলো পৃথক রাষ্ট্র।

প্রাচীনতম কাল থেকে ষষ্ঠ-সপ্তম শতাব্দী পর্যন্ত বাংলাদেশ ছিলো এসব ভিন্ন ভিন্ন জনপদে বিভক্ত। একটি রাষ্ট্রে জমাট বাঁধতে এর অনেক সময় লেগেছে। সপ্তম শতাব্দীর আদিভাগে শশাঙ্ক গৌড়ের রাজা হন। তার সময়ে বর্তমানের পশ্চিম বাঙলা প্রথমবারের মতো ঐক্যবদ্ধ হয়। তারপর বাঙলাদেশে তিনটি জনপদ বড়ো হয়ে দেখা দেয়, অন্যান্য জনপদ সেগুলোর কাছে ম্লান হয়ে যায়। এ-জনপদ তিনটি হচ্ছে পুঞ, গৌড়, রাঢ়। শশাঙ্ক ও পালরাজারা অধিপতি ছিলেন রাঢ়ের অর্থাৎ পশ্চিম বঙ্গের। কিন্তু তাঁদের সময়ে একটি মজার কাণ্ড ঘটে। তাঁরা নিজেদের ‘রাঢ়াধিপতি’ বলে পরিচয় না দিয়ে নিজেদের পরিচয় দিতে থাকেন ‘গৌড়াধিপতি বলে। গৌড় নামে সমগ্র দেশকে সংহত করতে চেয়েছিলেন শশাঙ্ক, পালরাজারা, এবং সেনরাজারা। কিন্তু তাঁদের চেষ্টা সার্থক হয় নি। কেননা গৌড়ের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলো বঙ্গ। পাঠান শাসনকালে জয় হয় বঙ্গের; পাঠান শাসকেরা বঙ্গ নামে একত্র করেন বাঙলার সমস্ত জনপদ। ইংরেজদের শাসনকালে বাঙলা নামটি আরো প্রতিষ্ঠা লাভ করে। কিন্তু আকারে হয়ে পড়ে ছোটো।

১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ ত্রিখণ্ডিত হয়। বাঙলার একটি বড়ো অংশ হয়ে পড়ে পাকিস্তানের উপনিবেশ। তখন তার নাম হয় পূর্ব পাকিস্তান। কিন্তু বাঙালিরা বাঙলার এনাম মনেপ্রাণে কখনো গ্রহণ করে নি। তাই ১৯৭১-এ জন্ম নেয় নতুন বাঙলাদেশ। বাঙলা সাহিত্য বাঙলাদেশ, এবং বর্তমানে যাকে পশ্চিম বাঙলা’ বলা হয়, তার মিলিত সম্পদ।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *