০৯. ডাক্তারি

০৯. ডাক্তারি

জ্বী, তাঁর নাম ডা. মন। সবচেয়ে বড় ডিগ্রী নিয়ে আপনার শরীরের ভেতরেই চেম্বার খুলে বসে আছেন। হাউজ-ফিজিশিয়ান বা গৃহচিকিৎসক বলতে যা বোঝায়, উনি ঠিক তাই। বারবার তাঁকে কল দিতে হয় না, উনি নিজে থেকেই নিয়মিত আপনার শরীরের খবরাখবর নেন এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করে থাকেন। জননী এবং সন্তানের সাথে যে সম্পর্ক, আপনার সাথে ওই ডাক্তার সাহেবেরও অনেকটা সেই রকমই সম্পর্ক। মা যেমন নিজে থেকেই সন্তানের যত্ন-আত্তি করে, কিন্তু সন্তান না চাইলে তাকে দুধ দেয় না, সেই রকম আপনার এই হাউজ-ফিজিশিয়ানও আপনার শরীরের যত্ন আত্তি করেন, কিন্তু আপনি না চাইলে আপনার রোগমুক্তি ত্বরান্বিত করেন না, বা আপনি না চাইলে কিছু কিছু রোগ সারাবার জন্যে তেমন গা করেন না। শুধু প্রাচীন কালে দেখা গেছে তাই নয়, বর্তমান কালেও এমন অনেক সাধক বা ধ্যানী পুরুষ এমনকি সাধারণ সংসারী আছেন যাঁরা অসুখ-বিসুখ করলে ডাক্তারের কাছে দৌড়ান না, নিজেরাই নিজেদের চিকিৎসা করেন, এবং সে চিকিৎসায় কোনো রকম ওষুধের ব্যবহার হয় না। এই চিকিৎসা পদ্ধতিকে অনেকেই গুঢ় রহস্যময় আধ্যাত্মিক শক্তির প্রয়োগ বলে বর্ণনা করেন, এবং ব্যবহার করতে ভয় পান। তাঁরা সম্ভবত ভাবেন, অজানা শক্তিকে নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করলে না জানি কি হয়! কিন্তু মনকে আমরা দৈনন্দিন কাজে কম-বেশি ব্যবহার তো করছিই, কই, কি ক্ষতি হচ্ছে আমাদের? অসুখ-বিসুখ সারাবার জন্যে ডাক্তার যে ওষুধপত্র দিচ্ছেন সেগুলোর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াই বরং আমাদের শরীরের জন্যে। বিপদ ডেকে নিয়ে আসছে।

সাইকিক হীলিং (PSYCHIC HEALING) সম্পর্কে হোসে সিলভার অভিজ্ঞতা ব্যাপক। মনকে ব্যবহার করে নিজেরাই নিজেদেরকে সুস্থ করে তুলেছে এই রকম হাজার হাজার রোগীর সাথে সরাসরি আলাপ করেছেন তিনি, তাদের সুস্থ হয়ে ওঠা সম্পর্কে লিখিত রিপোর্টেও গভীর মনোযোগের সাথে চোখ বুলিয়েছেন। তিনি দৃঢ়তার সাথে জানিয়েছেন, ‘এ-ধরনের অসংখ্য ঘটনার কথা জানা আছে আমার, কিন্তু কোথাও শুনিনি বা দেখিনি যে অমুকে নিজের চিকিৎসা করতে গিয়ে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বা অন্য কোনো অসুবিধের মধ্যে পড়েছে।

চিকিৎসা বিজ্ঞান নিয়ে গবেষণা থেমে নেই, সে সব গবেষণার ফলাফল থেকে এই ধারণাই ক্রমশ আরো দৃঢ় হচ্ছে যে শরীরের সাথে গভীর একটা সম্পর্ক রয়েছে মনের। শরীরটা আমাদের, মনটাও আমাদের, কাজেই ধরে নেয়া চলে এই দুটোর সমস্ত শক্তি আমাদের কল্যাণেই ব্যবহার হওয়ার কথা ঠিক হয়ে আছে।

জানা কথা, নিজেকে সারিয়ে তোলার ব্যাপারে যতোই আপনি দক্ষতা অর্জন করবেন ততোই আপনার ডাক্তারের কাছে বা হাসপাতালে যাবার প্রয়োজন কমে। আসবে। তবে, মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে শেখার এই পর্যায়ে যতোটুকু আপনি উন্নতি করবেন বলে ধারণা করা যায়, তাতে ডাক্তার সম্প্রদায়কে এখুনি অবসর গ্রহণ করতে হবে বলে মনে হয় না। আপনি ডাক্তারের কাছে যাবেন বৈকি, এখন যেমন যাচ্ছেন, এবং তাঁর পরামর্শও গ্রহণ করবেন। কিন্তু আপনার তরফে প্রথম করণীয় হবে, আশ্চর্য অল্প সময়ের মধ্যে রোগ থেকে সেরে উঠে ডাক্তারকে তাক লাগিয়ে দেয়া। একদিন হয়ত তিনি ভাববেন, লোকটা গেল কোথায়!

মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে শিখেছে, এমনি কিছু ছাত্রের রিপোর্ট থেকে জানা যায়, সংকট মুহূর্তে তারা রক্তপাত এবং ব্যথা কমাতে সফল হয়েছে। এখানে মিসেস ডোনাল্ড উইন্ডোক্তির কথা উল্লেখ করা যায়। তখন একটা কনভেনশনে যোগ দেয়ার জন্যে স্বামীর সাথে টেক্সাসে রয়েছেন মহিলা। নরউইচ, কানেকটিকাট বুলেটিন পত্রিকার খবর অনুসারে, একটা সুইমিং পুলে ঝাঁপ দিয়ে তিনি তাঁর একটা কানের পর্দা (এয়ারড্রাম) ফাটিয়ে ফেলেন।

কাছাকাছি শহরটাও অনেক দূরে ছিলো, তাছাড়া, আমি চাইনি আমার স্বামী কনভেনশনে অনুপস্থিত থাকুক, পত্রিকার সাংবাদিককে তিনি বলেছেন, তাই কারো কোনো সাহায্যের আশা না করে আমি নিজেই নিজেকে সাহায্য করার চেষ্টা করি। আলফা লেভেলে চলে যাই আমি, একটা হাত রাখি কানের ওপর, ব্যথার ওপর একাগ্র মনোযোগ রেখে বার বার বলতে থাকি, চলে যাও, চলে যাও, চলে যাও!

ফলাফল?

প্রায় সাথে সাথে বন্ধ হয়ে গেল রক্তপাত, ব্যথাটা কমতে কমতে একেবারে চলে গেল। তারপর যখন ডাক্তারের কাছে গেলাম, বিস্ময়ে হতভম্ব হয়ে পড়েছিলেন তিনি।

নিজেই নিজের চিকিৎসা করার সহজ সরল ছ’টা নিয়ম আছে, এখানে সেগুলো সম্পর্কে আলোচনা করছি।

প্রথম কাজ, বিটা লেভেলে, নিজেকে একজন ভালোবাসার পাত্র হিসেবে অনুভব করা। নিজেকে আপনি বিশ্বাস করানঃ মানুষকে আপনি নিঃশর্তভাবে ভালোবাসেন, আপনাকেও সবাই পছন্দ করে এবং ভালোবাসে। মনে মনে নিজেকে জানান, আপনি ক্ষমাশীল। তারপর ক্ষমাশীল হিসেবে অনুভব করুন নিজেকে। এসব করতে হলে সম্ভবত আপনার মনের ঘর-দুয়ার পরিষ্কার করার দরকার হবে (ছয় নম্বর পরিচ্ছেদ দুষ্টব্য)। ৪–আত্ম-উনয়ন

দ্বিতীয় কাজ, নিজের লেভেলে চলে যান। শুধু ধ্যানমগ্ন হওয়াটাই রোগ সারানোর দিকে বিরাট একটা পদক্ষেপ, একথা আগেই আমরা বলেছি। এই লেভেলে মনের নেতিবাচক বা না-সূচক তৎপরতা থাকে না, থাকে না কোনো রাগ বা অপরাধ বোধ, তাই প্রকৃতি শরীরকে যা করার দায়িত্ব দিয়ে রেখেছে সেটা নির্বিঘ্নে করতে পারে সে। আপনার মনে রাগ, ঘৃণা, অপরাধবোধ ইত্যাদি সত্যি সত্যি থাকতে পারে, কিন্তু সেটা শুধু বিটা লেভেলে। মন-নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি চর্চা করতে থাকলে ধীরে ধীরে এই লেভেল। থেকেও ওগুলো বিদায় নেবে।

তৃতীয় কাজ, মনে মনে প্রথম কাজগুলো সম্পর্কে নিজের সাথে কথা বলুন। মনের ঘর-দুয়ার পরিষ্কার করার জন্যে আপনার যে বাসনা আছে, সেটা আন্তরিকতার সাথে প্রকাশ করুন। নিজেকে বলুন, আপনি হা-সূচক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করতে চান। বলুন, আপনি আপনার চিন্তা-ভাবনা হাঁ-সূচক করতে চান। বলুন, আপনি সবার ভালো বাসার পাত্র হতে চান। বলুন, আপনি ক্ষমাশীল হতে চান।

চতুর্থ কাজ, যে অসুস্থতা আপনাকে ভোগাচ্ছে মনে মনে সেটা অনুভব করুন। এখানে আপনি পর্দা পদ্ধতি কাজে লাগাবেন। পর্দায় নিজের অসুস্থতা ফুটিয়ে তুলে সেটা। চাক্ষুষ করুন এবং অনুভব করুন। এটা অল্প সময়ের মধ্যে সারবেন।

পঞ্চম কাজ, আপনার অসুস্থতার ছবি পর্দা থেকে সরিয়ে দিয়ে এরপর আনুন আপনার রোগমুক্ত সুস্থতার ছবি। সুস্থ থাকার যে আনন্দ আর স্ফুর্তি, সেটা অনুভব করুন। উপভোগ করুন মুহূর্তগুলো, যতোক্ষণ খুশি। মনে মনে জানুন, এই সুস্থতা আপনার প্রাপ্য।

ষষ্ঠ কাজ, আরেকবার মনের ঘর-দুয়ার পরিষ্কার অর্থাৎ শুদ্ধি অভিযান চালান। সবশেষে নিজেকে বলুন, ‘প্রতিদিন সবদিক থেকে উন্নতি করছি।’

কতোক্ষণ সময় লাগবে এতে, সারা দিনে ক’বার করতে হবে?

পনেরো মিনিট ধরে করা সবচেয়ে ভালো। যতো বার করবেন ততোই তাড়াতাড়ি উপকার পাবেন, তবে দিনে একবারের চেয়ে কম যেন না হয়। যতোবারই করুন, সেটা বেশি হয়ে যাবার কোনো ভয় নেই।

নিজের চিকিৎসা করার প্রথম পদক্ষেপ, এর কোনো শেষ নেই। এটা বিটা, আলফা এবং থিটায় চর্চা করুন। ভালোবাসার পাত্র হতে বলা হয়েছে আপনাকে, বলা হয়েছে। ক্ষমাশীল হতে–দৈনন্দিন জীবনে তাই হোন। ওই ভাবে বাঁচুন। ভালোবাসার পাত্র এবং ক্ষমাশীল হওয়ার পথে দিনের বেলা যদি কোনো বাধা আসে, যদি মনোযোগ ছুটে যেতে চায়, শক্তি সঞ্চয়ের জন্যে তিন আঙুল এক করুন।

হোসে সিলভার অনেক ট্রেনিং স্কুল থেকে ছাত্রদের জন্যে রিপোর্ট ছাপা হয়। চিঠির আকারে এই রিপোর্টগুলো অন্যান্য শাখা স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকেই আসে। সব চিঠিরই বিষয়বস্তু এক, মনকে নিয়ণ করা শিখে তারা কি ধরনের উপকার পাচ্ছে। মাথাব্যথা, হাঁপানি, তোতলামি, শারীরিক দুর্বলতা, আলস্য, হাই ব্লাডপ্রেশার, নার্ভাসনেস, আতঙ্ক, মৃত্যু ভয়, অতিভোজন, ধূমপানে আসক্তি, অনিদ্রা, এমন কোনো সমস্যা নেই যা সাফল্যের সাথে সমাধান করা না গেছে।

এখানে একটা রিপোর্টের কথা সবিস্তারে উল্লেখ করছি। এটি নির্বাচন করার কারণ, রিপোর্টটা লিখেছেন একজন ডাক্তার।

এগারো বছর বয়স থেকে মাইগ্রেন মাথাব্যথায় ভুগছি আমি। প্রথম দিকে মাঝে মধ্যে আক্রমণ হতো, তখন সেটা কমানোও যেতো। কিন্তু বয়স বাড়ার সাথে সাথে ব্যথাটা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে লাগলো, এবং শেষ পর্যন্ত শিকার হয়ে পড়লাম ক্লাস্টার হেডেক-এর। তিন থেকে চার দিন থাকতো এই ব্যথা, প্রতিটি আক্রমণের মাঝখানে বিরতি থাকতো মাত্র দু’দিন। ভয়ঙ্কর মাইগ্রেন হেডেক আসন গেড়ে বসছিল সাধারণত আক্রমণটা হতো মুখ আর মাথার একটা পাশে। চোখ দুটো মনে হতো কেউ যেন ভেতর থেকে ঠেলে কোটরের বাইরে বের করে দিয়েছে। খোঁচানো ধরনের তীব্র ব্যথা, পেটের নাড়িভুড়ি সব ওলট-পালট হয়ে যেতে চাইতো। বিশেষ ভাবে তৈরি এক ধরনের ভ্যাসেকনস্ট্রিকটিং ড্রাগ দিয়ে মাঝে মধ্যে রেহাই পাওয়া যেতো, ব্যথা শুরু হওয়ার প্রথম দিকে যখন সেটা সহনীয় থাকতো তখন নিতে হতো ওই ওষুধ। শুরু হবার পর খানিকটা সময় পেরিয়ে গেলে কোনো কিছুতেই আর কমাবার উপায় ছিলো না, একমাত্র সময় পূরণ হলে নিজে থেকেই থেমে যেতো। এমন একটা পর্যায়ের দিকে এগোচ্ছিলো ব্যথাটা, ওই বিশেষ ভাবে তৈরি করা ওষুধ প্রতি চার ঘন্টা পর পর নিলেও সেটাকে পুরোপুরি দমন করা সম্ভব হতো না।

খুব নামকরা একজন মাথাব্যথা বিশেষজ্ঞের কাছে গেলাম। তিনি আমাকে সবদিক থেকে পরীক্ষা করে রায় দিলেন, ফিজিক্যাল বা নিউরোলজিক্যাল কোনো অস্বাভাবিকত্ব আমার মধ্যে নেই। তিনি আমাকে কিছু উপদেশ আর চিকিৎসা পদ্ধতি দিলেন। ওগুলো যে আমি অনেক আগে থেকেই মেনে চলছি আর ব্যবহার করছি তা আর তাঁকে বললাম না। ব্যথার আক্রমণ চলতে থাকলো।

আমার এক রোগী সিলভা ট্রেনিং স্কুলের ছাত্রী ছিলো, কোর্স শেষ করে গ্র্যাজুয়েট হয়েছে। প্রায় বছর খানেক থেকে আমাকে ওই ট্রেনিং কোর্সে ভর্তি করাবার চেষ্টা করছিল সে। প্রসঙ্গটা উঠলেই আমি তাচ্ছিল্য প্রকাশ করে তাকে বলতাম, রাখো তোমার মন নিয়ন্ত্রণ, ওসব ভাঁওতাবাজি আমি বিশ্বাস করি না! সব ভুয়া! কিন্তু তারপর একদিন, সেদিন আমার এক দফা মাথাব্যথার চতুর্থ দিন, দেখা করার জন্যে আমার কাছে এলো সে। আমার চেহারা দেখেই যা বোঝার বুঝে নিলো, মুখ ফুটে কিছু বলতে হলো না। আমাকে বললো সে, “এখনো আপনি জেদ ধরে থাকবেন? একবার চেষ্টা করে দেখতে দোষ কি? উপকার না পেলে কোর্স কমপ্লিট করবেন না। নতুন একটা কোর্স শুরু হতে যাচ্ছে-”যাবেন আমার সাথে?”

গেলাম। দস্তখত করে ভর্তি হলাম কোর্সে। প্রথম হপ্তায় প্রতিটি ক্লাস করলাম, যা যা শেখানো হলো সব অন্তর দিয়ে শেখার চেষ্টা করলাম, কেন জানি না, ওই হপ্তায় মাথায় কোনো ব্যথা হলো না। কিন্তু কোর্সটা শেষ করার এক হপ্তা পর প্রচও একটা মাথাব্যথা নিয়ে ঘুম ভাঙলো আমার। ভাবলাম, পদ্ধতিটা সত্যি কাজ করে কিনা পরীক্ষা করে দেখার এই একটা সুযোগ। এক শো থেকে এক পর্যন্ত গুণে ধ্যানমগ্ন হলাম, তারপর আগে থেকে তৈরি করে রাখা সাজেশন দিলাম নিজেকে। সাজেশন দেয়া শেষ হয়েছে, বিটায় ফিরে এসেছি, একটু পরেই ব্যথাটা সেরে গেল। বিস্ময়ে, আনন্দ স্তম্ভিত হয়ে গেলাম। কিন্তু আবার মুষড়ে পড়তে বেশি সময় লাগলো না, কারণ কয়েক সেকেণ্ড পরই ফিরে এলো ব্যথাটা–এবার আরো জোরেশোরে। কিন্তু আমি হাল ছাড়লাম না, আরেকবার ধ্যানমগ্ন হয়ে সাজেশন দিলাম নিজেকে। এবারও দূর হলো ব্যথা, কিন্তু অল্প সময়ের জন্যে। যতোবার ব্যথা ফিরে আসে, আমিও নাছোড়বান্দার মতো ততোবার ধ্যানমগ্ন হয়ে নিজেকে মাথাব্যথার বিরুদ্ধে সাজেশন দিই। এই সময় একবারও আমি ওষুধ নিইনি। এভাবে এক এক করে দশবার ধ্যানমগ্ন হওয়ার পর ব্যথাটা সত্যি সত্যি হার মানলো, সেদিন আর মাথাচাড়া দিলো না।

পরদিন বা তার পরদিনও ব্যথাটা ফিরে এলো না। যেদিন এলো, মাত্র দু’বার ধ্যানমগ্ন হয়ে সাজেশন দিতেই পালিয়ে গেল সেটা। এরপর যদিও আরো তিন মাস মাথাব্যথায় ভুগতে হয়েছে আমাকে, কিন্তু প্রতিবার আক্রান্ত হতাম অল্প সময়ের জন্যে, পেইনকিলার ট্যাবলেট খাওয়ার প্রয়োজন বোধ করতাম না। মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে শেখার পর থেকে অ্যাসপিরিন জাতীয় ওষুধ একবারও খাইনি আমি। শেষ পর্যন্ত বিশ্বাস এলোঃ পদ্ধতিটি সত্যি কাজ করে!

এখানে আরো একজনের কাহিনী না বললেই নয়। ডেট্রয়ট, মিশিগানের একজন নান, সিসটার বারবারা। সিসটার বারবারার কাহিনী বেছে নেয়ার কারণ, ধ্যানমগ্ন। অবস্থাটাকে অত্যন্ত বুদ্ধিমত্তার সাথে ব্যবহার করে মনের কাছ থেকে দুর্লভ একটা চিকিৎসা আদায় করে নিতে পেরেছেন তিনি।

কাছের জিনিস দেখতে পান না বলে সাতাশ বছর ধরে চশমা পরেন সিসটার বারবারা। যতোই কম দেখতে পেতেন, তাঁর চশমার লেন্স ততোই বাড়াতে হতো, এবং এক সময় বোঝা গেল তিনি দূরের জিনিসও আগের মতো ভালো দেখতে পাচ্ছেন না। শেষ পর্যন্ত তাঁকে বাইফোকাল নিতে হলো। তারপর উনিশ শো চুয়াত্তর সালে, তিনি ঠিক করলেন মন-নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির সাহায্য নেবেন। গভীর ধ্যান করে নিজেকে তিনি বললেন, যতো বার আমি চোখের পাতা ফেলবো, সবকিছু নিখুঁতভাবে পরিষ্কার দেখতে পাবো, ঠিক ক্যামেরার মতো। ধ্যানমগ্ন হলে প্রতিবার এই কথাগুলো পুনরাবৃত্তি করতেন তিনি। দু’হপ্তা পর দেখা গেল, তিনি চশমা ব্যবহার করছেন না, তবে পড়াশোনার সময় ওটা লাগে। তিনি ডাক্তার রিচার্ডের সাথে ব্যাপারটা নিয়ে আলোচনা করলেন। পরীক্ষা করে দেখে ডাক্তার রিচার্ড তাঁকে জানালেন, আপনার কর্ণিয়ার আকৃতিতে সামান্য একটু গোলমাল আছে। ডাক্তারের কাছ থেকে ক্রটিটা কি জানার পর সিসটার বারবারা তাঁর ধ্যানের মধ্যে একটা নতুন সাজেশন জুড়ে দিলেন, আমার কর্ণিয়াতে যে গোলমাল আছে তা যেন সেরে যায়। এভাবে কয়েক হপ্তা কেটে যাবার পর আবার তিনি ডাক্তারের কাছে গেলেন।

ড. রিচার্ড অনেক পরে তাঁর এক রিপোর্টে কি লিখেছেন, দেখুন।

বিশে আগস্ট, উনিশ শশা চুয়াত্তর, সিসটার বারবারাকে প্রথম আমি পরীক্ষা করি ।

পরে আবার তাঁকে আমি পরীক্ষা করি ছাব্বিশে আগস্ট, উনিশ শো পঁচাত্তরে। গত এক বছর ধরে তিনি চশমা ব্যবহার করছিলেন না

আমার রোগিনীর মাইওপিয়া সুস্পষ্টভাবে এমন এক পর্যায়ে নেমে এসেছে। যেখানে চশমা ব্যবহার করার কোনো দরকার করে না।

ডাক্তার সাহেবের মাইগ্রেন মাথাব্যথা বা সিসটারের দৃষ্টি ক্ষীণতা, দুটোর একটাও তেমন ভয়ঙ্কর কোনো রোগ নয়। কিন্তু ভয়ঙ্কর কোনো রোগ যদি আক্রমণ করে, তখনো কি আমরা এই পদ্ধতির সাহায্য পাবো? নাকি শুধু ওষুধ খাবো আর নিজেকে ছেড়ে দেবো ভাগ্যের ওপর? আসুন, সবচেয়ে ভীতিকার রোগ, ক্যানসারের দিকে একটু তাকানো যাক।

ক্যানসার বিশেষজ্ঞ ড, ও কার্ল সিমনটন-এর নাম এবং তাঁর গবেষণা সম্পর্কে অনেকেই শুনেছেন। তাঁর এই গবেষণার কিছুটা বর্ণনা পাওয়া যায় মেরিলিন ফার্গুসনের লেখা জনপ্রিয় বই ‘দি ব্রেন রেভোলিউশন’-এ। উনিশ শো ছিয়াত্তর সালে প্রিভেনশন ম্যাগাজিন তাঁর সম্পর্কে একটা প্রবন্ধ ছাপে, প্রবন্ধটার নাম দেয়া হয়, মাইও ওভার ক্যানসার, লেখক ছিলেন গ্রেস হলসেল। ড. সিমনটন মনকে নিয়ন্ত্রণ করার টেকনিক শিখেছিলেন, তাঁর রোগীদের চিকিৎসা করার জন্যে এই সব টেকনিক সাফল্যের সাথে ব্যবহার করেন।

সানফ্রান্সিসকোর কাছে ট্রাভিজ এয়ারফোর্স বেসে রেডিয়েশন থেরাপির চার্জে থাকার সময় একটা দুর্লভ কিন্তু অতি পরিচিত রহস্যের প্রতি দৃষ্টি আকৃষ্ট হয় তাঁর।–কেউ কেউ ক্যানসার থেকে সেরে ওঠে, অথচ চিকিৎসা বিজ্ঞান এর কোনো কারণ ব্যাখ্যা করতে পারে না। এই ধরনের রোগমুক্তিকে স্পনটেনিয়াস রেমিশন বলে। কিন্তু হাজারে বা লাখে মাত্র দু’ একজন রোগী এই নিষ্কৃতি পেয়ে থাকে। তিনি যুক্তিশক্তি দিয়ে উপলব্ধি করলেন, কেন এরা ভালো হয়েছে তা যদি জানা যায় তাহলে হয়তো আরো রোগীর ভালো হবার কারণ সৃষ্টি করা সম্ভব হবে।

গবেষণা করতে গিয়ে ড. সিমনটন দেখলেন, যারা ভালো হয়েছে তাদের সবার। মধ্যে অদ্ভুত একটা মিল রয়েছে। এরা সবাই যার যার জীবনে সন্তুষ্ট, আশাবাদী; ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির অধিকারী, আত্মবিশ্বাসী এবং দৃঢ়চেতা। একটা কনভেনশনে বক্তৃতা দেয়ার সময় তিনি যা বলেছিলেন এখানে তার অংশবিশেষের সার উল্লেখ করা হলো।

সাধারণভাবে ক্যানসারের বেড়ে ওঠা সম্পর্কে তদন্ত চালাতে গিয়ে, রোগটা ব্রা। পড়ার ছয় থেকে আঠারো মাস আগে, তাৎপর্যপূর্ণ একটা মানসিক বিপর্যয় চিহ্নিত করতে পেরেছেন তদন্তকারীরা।

স্বাধীন অনুসন্ধানকারীদের বিভিন্ন জোট দীর্ঘ মেয়াদী পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে এই ব্যাপারটা সনাক্ত করেন। আমরা দেখি, শুধু ওই বিপর্যয়টাই তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাপার। নয়, আসলে ব্যক্তিটি ওই বিপর্যয়টাকে যেভাবে গ্রহণ করছেন সেটাই তাৎপর্যপূর্ণ।

ওই বিপর্যয় বা ক্ষতি পরিমাণে এতো বেশি যে একটা অসহায় বোধ, একটা নৈরাশ্য বোধ রোগীকে সম্পূর্ণভাবে গ্রাস করে ফেলে। এতে করে তার মূল প্রতিরোধক শক্তিটি ধ্বংস হয়ে যায়, এবং এই সুযোগে ভয়ঙ্কর রোগটি বেড়ে উঠে রোগীকে শয্যাশায়ী করে ফেলে।

ট্রাভিজ এয়াফোর্স বেসে আরেকটা পরীক্ষা চালানো হয়। জার্নাল অব ট্রান্স। পারসোনাল সাইকোলজি-তে এই পরীক্ষা সম্পর্কে লেখা হয়েছিল। একশো বাহান্ন জন। ক্যানসার রোগীকে নিয়ে পরীক্ষাটা ড. সিমনটন চালান। এদের মধ্যে প্রচণ্ড আশাবাদী অর্থাৎ হা-সূচক চিন্তা-ভাবনার অধিকারী লোকও যেমন ছিলো, তেমনি প্রচণ্ড হতাশাগ্রস্ত, না-সূচক চিন্তা-ভাবনায় মুষড়ে পড়া লোকজনও ছিলো। থেরাপি চিকিৎসা কার কতোটা ভালো করে, পরীক্ষা করতে গিয়ে ড. সিমনটন দেখেন, বিশজনের বেলায়। চিকিৎসার ফল অত্যন্ত ভালো পাওয়া গেল। যদিও এদের মধ্যে চোদ্দ জনেরই অবস্থা। অত্যন্ত গুরুতর ছিলো, শতকরা পঞ্চাশ ভাগেরও কম সম্ভাবনা পাঁচ বছর বাঁচবে কিনা। তবু চিকিৎসায় কাজ হওয়ার কারণ হলো, এরা কেউ ভেঙে পড়েনি, প্রবণতার দিক থেকে সবাই ছিলো আশাবাদী। অপরদিকে, বাইশ জনের বেলায় চিকিৎসার ফল ভালো হলো না। এরা সবাই হতাশায় মুষড়ে পড়া মানুষ।

আরেকটা কথা এখানে উল্লেখ করতে হয়। আশাবাদী এবং হা-সূচক দৃষ্টিভঙ্গির কিছু লোক বাড়িতে ফেরার পর তাদের চিন্তা-ভাবনা এবং প্রবণতা সম্পূর্ণ উল্টো খাতে বইতে শুরু করায় তাদের অবস্থারও দ্রুত অবনতি ঘটতে শুরু করে। এ থেকে বোঝা যায়, রোগের ভয়াবহতার চেয়ে রোগীর মানসিক দৃষ্টিভঙ্গি অত্যন্ত শক্তিশালী ভূমিকা পালন করে থাকে।

ড, সিমনটন এবং তাঁর স্ত্রী সম্পর্কে মেনিনজার ফাউণ্ডেশনের ড. এলমার গ্রীন বলেছেন, ‘ফিজিওলজিকাল সেলফ-রেগুলেশনের জন্যে মনের পর্দায় ছবি দেখার পদ্ধতির সাথে ট্র্যাডিশনাল রেডিওলজি এক করে চিকিৎসা করায় ক্যানসার নিয়ন্ত্রণে উল্লেখযোগ্য ফল পাচ্ছেন ড. সিমনটন এবং তাঁর স্ত্রী।

আমেরিকান ক্যানসার সোসাইটির প্রেসিডেন্ট ইউজিন পেনডারগ্রাস উনিশ শো উনষাট সালে বলেছিলেন, ‘মানসিক বিপর্যয় যে এই রোগের গতিবিধি প্রভাবিত করে তার কিছু কিছু প্রমাণ পাওয়া গেছে। গবেষণার ক্ষেত্র আরো বাড়িয়ে আমাদের দেখতে হবে, মানুষের মনে এমন একটা শক্তি আছে কিনা যার সাহায্যে এই রোগ বাড়তে বা বাধা পেতে পারে।’

ফোর্ট ওর্থ-এর ক্যানসার কাউন্সেলিং অ্যাও রিসার্চ সেন্টারের মেডিকেল ডিরেক্টরের দায়িত্ব পালন করছেন ড. সিমনটন। কোথেরাপিস্ট হিসেবে রয়েছেন তাঁর স্ত্রী। রোগ সারাবার জন্যে মনের সাহায্য কিভাবে নেয়া যেতে পারে সে-বিষয়ে রোগীদের ট্রেনিং দেন তাঁরা।

যে-কোনো ধারার চিকিৎসায় ফল পাবার ব্যাপারে রোগীর দৃষ্টিভঙ্গি এবং প্রবণতা একটা ভূমিকা পালন করে, এই দৃষ্টিভঙ্গি আর প্রবণতা রোগের গতিবিধি বা মতিগতি নিয়ন্ত্রণেও প্রভাব রাখে–ট্রেনিং দেয়ার শুরুতেই এই কথাটা ভালো করে রোগীদের বুঝিয়ে দেন ড. সিমনটন। রোগীরা কিভাবে নিজেরাই নিজেদের চিকিৎসা করবে তা শেখাবার জন্যে মন-নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির সাহায্য নেন তিনি। তাঁর প্রথম কাজ হয় তাদের মন থেকে ভয় তাড়ানো। তিনি বোঝাতে চেষ্টা করেন, আমাদের প্রত্যেকের শরীরেরই ক্যানসারাস সেল রয়েছে। শরীর যেমন ফরেন প্রোটিন ধ্বংস করে, তেমনি ক্যান সারাস সেলগুলোকেও ধ্বংস করে।– সবগুলো ক্যানসার সেলকে শরীর থেকে বের করে দেয়া সম্ভব নয়, কারণ শরীরের ভেতর আমরা সারাক্ষণ ওই সেল তৈরি করে চলেছি। সেলগুলোর সাথে যুদ্ধে শরীরকে জিততে সাহায্য করাই একমাত্র কাজ হতে পারে আমাদের।

আর তাঁর স্ত্রী রোগীদের বলেন, বেশিরভাগ লোকের ধারণা ক্যানসার সেল দেখতে খুবই কুৎসিত, নীচ, চোরাপথে চলাফেরা করে, এবং অত্যন্ত শক্তিশালী একবার বাড়তে শুরু করলে শরীরের আর কিছু করার থাকে না। ব্যাপারটা ঠিক এরকম না। আর সব সেলের মতোই ক্যানসার সেলও সাধারণ একটা সেল, পার্থক্য শুধু এইটুকু যে এই হারামজাদার মাথা খারাপ হয়ে গেছে। সত্যি কথা হলো, এটা একটা খুব বোকা সেল, সংখ্যায় এতো দ্রুত বেড়ে ওঠে যে প্রায় সময়েই নিজের রক্ত সরবরাহ সিস্টেমকে ঘেরাও করে অচল করে দেয়, ফলে অভুক্ত অবস্থায় নিজেই মারা পড়ে। ওটাকে কাটুন, বিকিরণের মধ্যে ফেলুন, কিংবা কেমোথেরাপি দিন। একবার যদি ওটা অসুস্থ হয়ে পড়ে, নিজের স্বাস্থ্য আর কখনো ফিরে পায় না। মারা যায়।

এবার স্বাভাবিক, স্বাস্থ্যবান একটা সেলের কথা ধরুন। আপনার হাত কেটে গেল, ব্যাণ্ডে জ ছাড়া আর কিছু ব্যবহার করলেন না, তবু ক্ষতটা আপনা থেকেই সেরে যাবে। আমরা জানি, স্বাভাবিক টিস্যু নিজেই নিজেকে মেরামত করতে পারে–তারা তাদের রক্ত সরবরাহে বিঘ্ন ঘটায় না।

ড, সিমনটন আর তাঁর স্ত্রী রোগীদেরকে তিনটে কাজ দেন। এক, মনের পর্দায় রোগ চাক্ষুষ করা। দুই, মনের পর্দায় চিকিৎসা চাক্ষুষ করা। তিন, শরীরের নিজেকে সারিয়ে তোলার যে ক্ষমতা, সেটা কল্পনা এবং অনুভব করা। সেই সাথে নিজেকে সম্পূর্ণ সুস্থ, নিরোগ অবস্থায় চাক্ষুষ করা।

ধ্যান করার ব্যাপারে অত্যন্ত গুরুত্ব দেন তাঁরা। রোগীদের জিজ্ঞেস করেন, দিনে কতোবার ধ্যান করছেন? ধ্যানমগ্ন অবস্থায় ঠিক মতো সবগুলো ছবি দেখছেন কিনা?

চর্চা করার জন্যে একটা অনুশীলন দিয়ে এই পরিচ্ছেদ শেষ করবো। এই অনুশীলনটা মাথাব্যথা সারাবার জন্যে। তবে সাজেশনের শব্দ বদলে অন্য কোনো বাধা সারাবার কাজেও এই পদ্ধতি ব্যবহার করে ফল পাবেন। উদ্বেগ, উত্তেজনা বা দুশি কারণে যে মাথাব্যথা, সেটা সারাবার জন্যে এই পদ্ধতি একবার ব্যবহার করাই যশে। মাইগ্রেন ধরনের মাথাব্যথার জন্যে এই একই পদ্ধতি তিনবার ব্যবহার করবেন, পাঁচ মিনিট পর পর।

মাথাব্যথা দূর করার পদ্ধতিঃ

আপনার যদি মাথা ধরে, তিন–এক পদ্ধতির সাহায্যে নিজের লেভেলে পৌঁছান। তারপর নিজেকে বলুন, আমার মাথা ধরেছে; মাথায় আমি ব্যথা অনুভব করছি, আমি এই মাথাব্যথা চাই না; আমি মাথায় ব্যথা অনুভব করতে চাই না।

তারপর নিজেকে বলুন, এক থেকে পাঁচ পর্যন্ত গুণতে যাচ্ছি আমি, পাঁচ পর্যন্ত গুণে চোখ খুলবো, চোখ খোলার সাথে সাথে সম্পূর্ণ সজাগ অবস্থায় জেগে উঠবো, পুরোপুরি সুস্থ আর ঝরঝরে তাজা থাকবো; তখন আমার মাথায় কোনো ব্যথা থাকবে না; তখন আমার মাথায় আমি কোনো ব্যথা অনুভব করবো না।

এরপর আপনি ধীরে ধীরে গুণতে শুরু করবেন, এক–দুই-তিন। তিন পর্যন্ত গুণে মনে মনে নিজেকে স্মরণ করিয়ে দেবেন, পাঁচ পর্যন্ত গুণে চোখ খুলবো আমি, সম্পূর্ণ সজাগ অবস্থায় জেগে উঠবো, পুরোপুরি সুস্থ আর ঝরঝরে তাজা থাকবো। তখন আমার মাথায় কোনো কষ্ট থাকবে না, তখন আমার মাথায় আমি কোনো ব্যথা অনুভব করবো না।

এরপর আপনি গুণবেন, চার-পাঁচ। এবং পাঁচ পর্যন্ত গুণে চোখ খুলবেন, মনে মনে নিজেকে বলবেন, আমি সম্পূর্ণ সজাগ অবস্থায় জেগে উঠেছি, পুরোপুরি সুস্থ আর ঝরঝরে তাজা বোধ করছি। আমার মাথায় কোনো ব্যথা বা কষ্ট নেই। আমি আমার মাথায় কোনো ব্যথা বা কষ্ট অনুভব করছি না।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *