2 of 3

১০।১ দশম কাণ্ড : প্রথম অনুবাক

অথর্ববেদসংহিতা দশম কাণ্ড
প্রথম অনুবাক
প্রথম সূক্ত : কৃত্যাদূষণম
[ঋষি : প্রতঙ্গিরস দেবতা : কৃত্যাদূষণ ছন্দ : বৃহতী, গায়ত্রী, অনুষ্টুপ, পংক্তি, ত্রিষ্টুপ, উষ্ণিক]

যাং কল্পয়ন্তি বহতৌ বধূমিব বিশ্বরূপাং হস্তকৃতাং চিকিৎসবঃ। সারাদেত্বপ নুদাম এনাম্ ॥ ১। শীর্ষতি নস্বতী কর্ণিনী কৃত্যাকৃতা সংভূতা বিশ্বরূপা। সারাদেত্বপ নুদাম এনাম্ ॥ ২॥ শূদ্ৰকৃতা রাজকৃত স্ত্রীকৃত ব্ৰহ্মভিঃ কৃতা। জায়া পত্যা নুত্তেব কর্তারং বন্ধুচ্ছতু। ৩ অনয়াহমোষধ্যা সর্বাঃ কৃত্যা অদূদুষ। যাং ক্ষেত্রে চর্যাং গোষু যাং বা তে পুরুষেষু। ৪অঘমঘকৃতে শপথঃ শপথীয়তে। প্রত্যক প্রতিহিন্মো যথা কৃত্যাকৃতং হনৎ৷৷ ৫৷৷ প্রতীচীন আঙ্গিরসোহধ্যক্ষো নঃ পুরোহিতঃ। প্রতীচীঃ কৃত্যা আকৃত্যামূন কৃত্যাকৃতো জহি। ৬৷ যদ্যোবাচ পরেহীতি প্রতিকুলমুদায্যম। তং কৃতোহভিনিবর্তস্ব মাম্মানিচ্ছো অনাগসঃ ॥ ৭ যস্তে পরূংষি সন্দধৌ রহস্যেবর্ভূৰ্ধিয়া। তং গচ্ছ তত্র তেহয়নমজ্ঞাতন্তেইয়ং জনঃ ॥৮॥ যে ত্বা কৃত্বালেভিরে বিদ্বলা অভিচারিণঃ। শংড়ীদং কৃত্যাদূষণং প্রতিবর্ক্স পুনঃসরং তেন ত্বা সপয়ামসি। ৯. যদ দুর্ভগাং প্রশ্নপিং মৃতবৎসামূপেয়িম। অপৈতু সর্বং মৎ পাপং দ্রবিণং মোপ তিতু। ১০। যৎ তে পিতৃভ্যো দদতো যজ্ঞে বা নাম জগৃহুঃ। সন্দেশ্যাৎ সর্বস্মাৎ পাপাদিমা মুঞ্চন্তু পৌষধীঃ ॥ ১১। দেবৈনসাৎ পিান্নামগ্রাহৎ সন্দেশ্যাভিনিষ্কৃৎ। মুঞ্চ ত্বা বীরুধো বীর্যেণ ব্ৰহ্মণ ঋগভিঃ পয়স ঋষীণাম ॥১২৷৷ যথা বাতঞ্যাবয়তি ভূম্যা রেণুমন্তরিক্ষাচ্চা। এবা মৎ সর্বং দুর্ভূতং ব্ৰহ্মনুত্তমপায়তি ॥ ১৩৷৷ অপ ক্রাম নানদতী বিনদ্ধা গর্দভীব। কর্তৃন্ নক্ষম্বেতো নুত্তা ব্ৰহ্মণা বীর্যাব ৷ ১৪৷৷ অয়ং পন্থাঃ কৃত্যেতি ত্বা নয়ামোহভিপ্রহিতাং প্রতি ত্বা প্র হিন্মঃ। তেনাভি যাহি ভঞ্জত্যনস্বতীব বাহিনী বিশ্বরূপা কুরূটিনী ৷৷ ১৫। পরাক্ তে জ্যোতিরপথং তে অবাগন্যত্ৰাম্মদয়না কৃণুম্ব। পরেণেহি নবতিং নাব্যা অতি দুর্গাঃ স্রোত্যা মা ক্ষণিষ্ঠাঃ পরেহি। ১৬৷৷ বাত ইব বৃক্ষান্ নি মুণীহি পাদয় মা গামশ্বং পুরুষমুচ্ছিষ এষা। কর্তৃন্ নিবৃত্যেতঃ কৃত্যেহপ্রজাস্তায় বোধয়॥১৭৷ যাং তে বহির্ষি যাং শ্মশানে ক্ষেত্রে কৃত্যাং বলগং বা নিচখনুঃ। অগ্নৌ বা ত্বা গার্যপত্যেহভিচেরুঃ পাকং সন্তং ধীরতরা অনাগসম। ১৮ উপহৃতমনুবুদ্ধং নিখাতং বৈরং কৃৎসাবিদাম কম। তদেতু যত আভৃতং তত্রা ইব বি বৰ্ততাং হন্তু কৃত্যাকৃতঃ প্রজা৷ ১৯৷ স্বায়সা অসয়ঃ সন্তি নো গৃহে বিদ্মা তে কৃত্যে যতিধা পরূংষি। উত্তিষ্ঠৈব পরেহীতোহতে কিমিহেচ্ছসি ॥ ২০৷৷ গ্রীবাস্তে কৃত্যে পাদৌ চাপি কত্সামি নিব। ইন্দ্রাগ্নী অম্মা রক্ষতাং যৌ প্রজানাং প্রজাবতী ॥ ২১। সোমো রাজাধিপা মৃড়িতা চ ভূতস্য নঃ পতয়ো মৃড়য়ত্ত ॥ ২২ ভবাশর্বাবস্যতাং পাপকৃতে কৃত্যাকৃতে। দুষ্কৃতে বিদজং দেবহেতিম্ ॥ ২৩৷৷ যদ্যেয়থ দ্বিপদী চতুষ্পদী কৃত্যাকৃত সস্তৃতা বিশ্বরূপা। সেতোহষ্টপদী ভূত্বা পুনঃ পরেহি দুঞ্জুনে। ২৪৷৷ অভ্যক্তাক্তা স্বরস্কৃতা সর্বং ভরন্তী দুরিতং পরেহি। জানীহি কৃত্যে কর্তারং দুহিতের পিতরং স্ব৷ ২৫৷৷ পরেহি কৃত্যে মা তিষ্ঠো বিদ্ধস্যেব পদং নয়। মৃগঃ স মৃগরুস্তুং ন ত্বা নিকতুমর্হতি। ২৬। উত হন্তি পূর্বাসিনং প্রত্যাদায়াপর ইম্বা। উত পূর্বস্য নিগ্নতো নি হন্তপরঃ প্রতি ॥ ২৭এতদ্ধি শৃণু মে বাচোহখেহি যত এয়থ। যস্থা চকার তং প্রতি। ২৮অনাগগাহত্যা বৈ ভীমা কৃত্যে মা নো গামশ্বং পুরুষং বধীঃ।. যত্রযত্রাসি নিহিতা ততন্তোখাপয়ামসি পর্ণাল্লঘীয়সী ভব৷ ২৯৷ যদি স্থ তমসাবৃতা জালেনাভিহিতা ইব। সর্বাঃ সংলুপ্যেতঃ কৃত্যাঃ পুনঃ কত্রে প্র হিন্মসি ৷৷ ৩০৷৷ কৃত্যাকৃতো বলগিনোহিভিনিষ্কারিণঃ প্ৰজাম। মৃণীহি কৃত্যে মোচ্ছিষোহমূন কৃত্যাকৃত জহি॥৩১৷ যথা সূর্যো মুচ্যতে তমসম্পরি রাত্রিং জহাতুষসশ্চ কেতু। এবাহং সর্বং দুর্ভূতং কং কৃত্যাকৃত কৃতং হস্তীব রজো দুরিতং জহামি৷ ৩২।

 বঙ্গানুবাদ –কৃত্যাকে (আভিচারিক কর্মকে) যৌতুকে প্রাপ্ত বধূর ন্যায় যে ব্যক্তি সজ্জিত (বা সাধিত) করে; আমি তার সেই কৃত্যকে বিদূরিত করছি, সেই কৃত্য আমার নিকট হতে দূর হোক। ঐ রকম সুসজ্জিত শির, নাসিকা ও কর্ণযুক্ত আপত্তিকারক কৃত্যাকে আমি দূর করছি। শূদ্রের দ্বারা, রাজা বা স্ত্রীগণের দ্বারা, পতিসমূহ বা ভ্রাতৃগণের দ্বারা কৃত কৃত্যা তাদের নিকটেই প্রত্যাবর্তন করুক। ক্ষেত্র, গাভী ও পুরুষের উপরে কৃত কৃত্যা নিবর্ষে হোক। শপথ, শপথ দানশালীকেই প্রাপ্ত হোক। হিংসারূপ পাপ হিংসুকের নিকটেই উপনীত হোক। হে পুরোহিত! সম্মুখ হতে আগমনশাশিনী কৃত্যাসমূহকে প্রহার করো। হে কৃত্যা! তুই কৃত্যাকারীর নিকটেই প্রত্যাবর্তন কর, আমি হেন নিরপরাধী জনকে বিনাশ করি না। আমরা যে কৃত্যাকে প্রাপ্ত হয়ে মৃতবৎসারূপ দুর্ভাগ্যকে প্রাপ্ত হয়েছি, আমাদের সেই পাপ দূর হোক এবং আমাদের নিকট ধন ইত্যাদি স্থিত হোক। পিতৃযজ্ঞের পাপ, দৈবাপরাধজনিত পাপ, পিতৃগণের নাম গ্রহণের পাপ ইত্যাদি পাপসমূহ হতে এই ঔষধি সমুদায় তোমাকে মুক্ত করুক। তোমার পাপ এই মন্ত্রবলের দ্বারা ভীতত্রস্ত হয়ে যাক। হে কৃত্যা! তুই। মন্ত্রের দ্বারা প্রহৃতকৃত্যাকারীর নিকট গমন করে তাকে বিনাশ কর। শত্রুর দ্বারা প্রেরিত কৃত্যা তারই নিকট গমন করুক এবং তাকে বিভঙ্গ করুক, তার গো-ইত্যাদি ধনের বিনাশ করুক, তাকে সন্তানহীন করুক। হে কৃত্যা! তোকে অগ্নিতে, শ্মশানে, ক্ষেত্রে, গুপ্তরীতির দ্বারা কপটতার সাথে অভিচারিক কর্মতৎপর মনুষ্যজন নির্মাণ করেছে, তুই আমি হেন অপরিচিত নিরপরাধীকে ত্যাগ করে শত্রুর নিকট গমন কর এবং তাকে বিনাশ কর। ইন্দ্রাগ্নি, ভব, শর্ব, সোম আমাকে রক্ষা করুন। যদি তুই চতুষ্পদশালিনী হয়ে আগত হয়ে থাকিস, তাহলে অষ্টপদশালিনী হয়ে প্রেরকের নিকট গমন কর, এখানে অবস্থান করি না। তোর কর্ণ মৃগরূপ, তুই সিংহরূপে সেখানে গমন কর। হিংসা ভয়ঙ্কর কর্ম, তুই হিংসা করি না। তুই বৃক্ষপত্রের ন্যায় ভারহীন (হাল্কা) হয়ে যা, ভীত হয়ে যা। সূর্য ও ঊষা অন্ধকারকে এবং হস্তী রজকে যেমন মুক্ত করে, তেমনই আমি কৃত্যাকারীর পাপরূপ কৃত্যাকে দূর করে দিচ্ছি।

সূক্তস্য বিনিয়োগঃ –যাং কল্পয়ন্তি ইত্যর্থসূক্তস্য কৃত্যপ্রতিহরগণে পাঠাৎ কৃত্যানিৰ্হরণার্থে। শান্ত্যদক এতৎ সূক্তং বিনিযুজ্যতে। তৎ উক্তং কৌশিকেন।…কৃত্যা-প্রতিহরণগণ দূষ্যা দূষিরসি ইতি সূক্তে (২১১) দ্রষ্টব্যঃ..ইত্যাদি৷৷ (১০কা, ১অ, ১সূ.)৷৷

টীকা –উপযুক্ত অর্থ সূক্তের মুন্ত্রগুলি অপরের দ্বারা কৃত আভিচারিক কর্মের ফল পরিহারের নিমিত্ত সূত্রোক্ত প্রকার শান্তুদক কর্মে বিনিযুক্ত হয়ে থাকে। দ্বিতীয় কাণ্ডের তৃতীয় অনুবাকের প্রথম সূক্তে এর বিনিয়োগ ও বিনিয়োগান্তর বিষয়ে আলোচনা আছে। (১০কা, ১অ. ১সূ.)।

.

দ্বিতীয় সূক্ত : ব্ৰহ্মপ্রকাশনম

[ঋষি : নারায়ণ দেবতা : পুরুষ, ব্রহ্মপ্রকাশন ছন্দ : ত্রিষ্টুপ, অনুষ্টুপ, জগতী, বৃহতী ]

কেন পাঞ্চী আভৃতে পুরুষস্য কেন মাংসং সস্তৃতং কেন গুফৌ। কেনাঙ্গুলীঃ পেশনীঃ কেন খানি কেনোচ্ছনখে মধ্যতঃ কঃ প্রতিষ্ঠা ৷৷ ১৷ কম্যানু গুম্ফাবধরাকৃম্বন্নষ্ঠীবন্তাবুত্তরে পূরুষস্য। জষ্মে নিঋত্য ন্যদধুঃ ক স্বিজ্জানুনোঃ সন্ধী ক উ তচ্চিকেত। ২৷৷ চতুষ্টয়ং যুজ্যতে সংহিতান্তং জানুভ্যামূৰ্ব্বং শিথিরং কবন্ধ। শ্রোণী যদূরূ ক উ তজ্জজান যাভ্যাং কুসিন্ধং সুদৃঢ়ং বভূব। ৩। কতি দেবাঃ কতমে ত আসন্ য উরো গ্রীবাশ্চিকুঃ পূরূষস্য। কতি চ স্তনৌ ব্যদধুঃ কঃ কফোডৌ কতি স্কন্ধান কতি পৃষ্টীরচিন্ব৷ ৪৷৷ কো অস্য বাহু সমভরদ বীর্যং করবাদিতি। অংসৌ কো অস্য তদ দেবঃ কুসিন্ধে অধ্যা দধৌ। ৫৷৷ কঃ সপ্ত খানি বি ততর্ক শীর্ষণ কর্ণাবিমৌ নাসিকে চক্ষণী মুখ। যেং পুরুত্ৰা বিজয়স্য মহ্মনি চতুম্পাদো দ্বিপদো যন্তি যাম ৷৬৷ হম্বোৰ্হি জিহ্বামদধাৎ পুরুচীমধা মহীমধি শিশ্ৰায় বাচম। স আ বরীবর্তি ভুবনেন্বন্তরপো বসানঃ ক উ তচ্চিকেত ॥৭ মস্তিষ্কমস্য যতমম ললাটং ককাটিকাং প্রথমো যঃ কপাল। চিত্বা চিত্যং হন্বেঃ পূরুষস্য দিবং রুনোহ কতমঃ স দেবঃ ॥ ৮প্রিয়াপ্রিয়ানি বহুলা স্বপ্নং সম্বাধতঃ। আনন্দানুয়গ্রা নন্দাংশ্চ কম্মাদ বহতি পুরুষঃ ॥৯॥ আর্তিরতিনিঋতিঃ কুততা নু পুরুষেইমতিঃ। রাদ্ধিঃ সমৃদ্ধিরবৃদ্ধিমতিরুদিতয়ঃ কুত। ১০। কো অস্মিন্নাপো ব্যদধা বিমূবৃতঃ পুরুবৃত সিন্ধুসৃত্যায় জাতাঃ। তীব্রা অরুণা লোহিনীস্তাম্ৰধূম্রা ঊর্ধ্বা অবাচীঃ পুরুষে তিরক্ষীঃ ॥ ১১। কো অস্মিন্ রূপমদধাৎ কো মহ্মানং চ নাম চ। গাতুং কো অস্মিন্ কঃ কেতুং কশ্চরিত্রাণি পুরুষে ॥ ১২। কো অস্মিন্ প্রাণমবয়ৎ কো অপিনং ব্যানমু। সমানমস্মিন্ কো দেবোহধি শিশ্ৰায় পূরুষে। ১৩। কো অস্মিন্ যজ্ঞমদদেকো দেবোহধি পুরুষে। কো অস্মিনৎসত্যং কোহনৃতং কুততা মৃত্যুঃ কুতোহমৃতম্ ॥ ১৪৷৷ কো অস্মৈ বাসঃ পর্যদধাৎ কো অস্যায়ুরকল্পয়ৎ। বলং কো অস্মৈ প্রাযচ্ছৎ কো অস্যাকল্পয়জ্জব ৷৷ ১৫কেনাপো অন্বতনুত কেনাহরকয়োদ রুচে। উষসং কেনাদ্ধৈ কেন সায়ম্ভবং দদে। ১৬৷৷ কো অস্মিন, রেতো ন্যদধাৎ তন্তুরা তায়মিতি। মেধাং কো অস্মিন্নধ্যৌহৎ কো বাণং কো নৃতো দধৌ। ১৭৷ কেনেমাং ভূমিমৌর্ণোৎ কেন পর্যভবদ দিব। কেনাভি মহা পৰ্বৰ্তান্ কেন কর্মাণি পূরুষঃ ॥ ১৮৷৷.. কেন পর্জন্যমন্বেতি কেন সোমং বিচক্ষণ। কেন যজ্ঞং চ শ্রদ্ধাং চ কেনাস্মিন্ নিহিতং মনঃ ৷৷ ১৯৷৷ কেন শ্রোত্রিয়মাপ্নোতি কেনেমং পরমেষ্ঠিন। কেনেমমগ্নিং পূরুষঃ কেন সম্বৎসরং মমে৷ ২০৷৷ ব্ৰহ্ম শ্রোত্রিয়মাপোতি ব্রহ্মেমং পরমেঠিন। ব্রহ্মেমমগ্নিং পুরুষো রক্ষ সম্বৎসরং মমে॥ ২১৷৷ কেন দেব অনু ক্ষিয়তি কেন দৈবজনীর্বিশঃ। কেনেদমন্যন্নক্ষত্রং কেন সৎ ক্ষত্ৰমুচ্যতে। ২২। ব্ৰহ্ম দেবা অনু য়িতি ব্ৰহ্ম দৈবজনীর্বিশঃ। ব্রহ্মেমন্যন্নক্ষত্রং ব্রহ্ম সৎ ক্ষত্রমুচ্যতে ॥ ২৩৷৷ কেনেয়ং ভূমিব্রিহিতা কেন দ্যৌরুত্তরা হিতা। কেনেদমূর্ধ্বং তির্যকং চান্তরিক্ষং ব্যচো হিতম্ ॥ ২৪৷ ব্ৰহ্মণা ভূমিব্রিহিতা ব্ৰহ্ম দৌরুত্তরা হিতা। ব্রহ্মেদমূর্ধ্বং তির্যকং চান্তরিক্ষং ব্যচো হিতম। ২৫৷৷ মূর্ধানমস্য সংসীব্যাথা হৃদয়ং চ যৎ। মস্তিষ্কাদূর্ধ্বঃ প্রৈরয়ৎ পরমানোহধি শীর্ষতঃ ॥ ২৬। তদ বা অথর্বণঃ শিরো দেবকোশঃ সমুজিতঃ। তৎ প্রাণো অভি রক্ষতি শিরো অনুমথো মনঃ ॥ ২৭৷৷ ঊর্ধ্বো নু সৃষ্টাস্তিৰ্য্য নু সৃষ্টাঃ সর্বা দিশঃ পুরুষ আ বভূবাঁ। পুরং যো ব্ৰহ্মণণা বেদ যস্যাঃ পুরুষ উচ্যতে ॥ ২৮৷৷ যো বৈ তাং ব্ৰহ্মণণা বেদাতেনাবৃতং পুরম্। তস্মৈ ব্ৰহ্ম চ ব্রাহ্মাশ্চ চক্ষুঃ প্রাণং প্রজাং দদুঃ ॥ ২৯৷৷ ন বৈ তং চক্ষুজহাতি ন প্রাণো জরসঃ পুরা। পুরং যো ব্ৰহ্মণো বেদ যস্যাঃ পুরুষ উচ্যতে। ৩০৷ অষ্টাচক্ৰা নবদ্বারা দেবানাং পূরয়োধ্যা। তস্যাং হিরণ্যয়াঃ কোশঃ স্বর্গো জ্যোতিষাবৃতঃ ॥ ৩১ ॥ তস্মিন হিরণ্যয়ে কোশে রে ত্রিপ্রতিষ্ঠিতে। তস্মিন্ য যক্ষমাত্মন্বৎ তদ বৈ ব্ৰহ্মবিদো বিদুঃ ॥ ৩২। প্ৰভ্ৰাজমানাং হরিণীং যশসা সংপরীবিতা। পুরং হিরণ্যয়ীং ব্রহ্মা বিবেশাপরাজিতাম্ ৷৷ ৩৩৷৷

বঙ্গানুবাদ –মনুষ্যের পাষ্ণী (পাদগ্রন্থী বা গোড়ালির অগ্রভাগ), পাদগ্রন্থির অস্থি, অঙ্গুলীসমূহ, উরু, পদ,জঙ্, স্কন্ধ, কণ্ঠ, বাহু, নেত্র, কর্ণ, নখ, মুখ, জিহ্বা, চিবুক, ললাট, কপাল, বাণী ইত্যাদি শরীরের অঙ্গসমূহ, শরীরের ত্বক এবং প্রাণ ইত্যাদি বায়ুকে কে রচনা করেছে? দ্বিপদ, চতুষ্পদ প্রাণীগণের কারক-মারক কে? পুরুষের পাপ, সন্তাপ, ঋদ্ধি-সিদ্ধি, সমৃদ্ধি কোথা হতে আগত হয়? জলরাশি, তাদের বক্র-কুটিল গতি, যজ্ঞরূপ কর্মসমুদায়, জন্ম-মৃত্যু, সত্য-মিথ্যা, দিন, সন্ধ্যা ও রাত্রিকে কে নির্মাণ করেছে? কার প্রভাবে মনুষ্য কর্ম করে থাকে, কার দ্বারা মনুষ্যের শ্রদ্ধা, অশ্রদ্ধা, সৎকর্ম-দুষ্কর্ম প্রাপ্ত করা হয়? কার দ্বারা অগ্নিকে লাভ করা যায়, কে সম্বৎসর ইত্যাদিকে গণনা করছে? …পরমেষ্ঠী তথা অগ্নিকে ব্রহ্মই প্রাপ্ত হয়ে আছেন, তিনিই সম্বৎসরকে গণনা করছেন। ব্রহ্মর দ্বারাই দৈব অনুকূল হয়ে যায়, সৎ-ব্রহ্মকেই ক্ষত্র বলা হয়। ব্রহ্মই দ্যাবাপৃথিবীকে রচনা করেছেন, প্রজাপতি ব্রহ্ম মনুষ্যের শির হৃদয় ইত্যাদি নির্মাণ করেছেন।…সেই ব্রহ্ম সকল দিকে প্রকট আছেন। যিনি ঐ ব্রহ্মকে জ্ঞাত হন; তিনি ব্রহ্ম ও মন্ত্রযুক্ত কর্ম, নেত্র প্রাণ এবং সন্ততি প্রদত্ত হন। ব্রহ্ম পুরীতে শয়ন করেন বলে তাকে পুরুষ বলা হয়। এই কথা যিনি জ্ঞাত হন, তাঁর নেত্র ইত্যাদি অঙ্গ বৃদ্ধাবস্থা পর্যন্ত অটুট থাকে। এই শরীর অষ্টচক্র ও নব-দ্বারশালিনী দেবতাগণের বাসস্থান বা নগরী, তাঁকে স্বর্গদা হিরন্ময় জ্যোতি আচ্ছাদিত করে থাকে। সেই হিরন্ময় কোশে আত্মার যে স্থান আছে, তাকে ব্রহ্মের জ্ঞাতা উত্তমভাবে জ্ঞাত হন। পাপনাশক, যশস্বী, কান্তিযুক্ত, অপরাজের ব্রহ্ম হিরন্ময় পুরীর মধ্যে প্রবিষ্ট হয়ে থাকেন।

সূক্তস্য বিনিয়োগঃ –অস্মিন্ সূক্তে পুরুষস্য অর্থাৎ মনুষ্যস্য মাহাত্মং বর্ণতে। তচ্চ তদ্ভিন্নভিন্নাবয়বান্ কো দেবোকরোৎ ইত্যাদি প্রশ্নরূপেণ তত্তপ্রশ্নানাং উত্তররূপেণ চ। যজ্ঞলম্পটাঃ সম্প্রদায়িকাস্তু এতৎ সূক্তং পুরুষমেধে বিনিয়োজয়ন্তি। তৎ যথা। পুরুষমেধে স্নাতালস্কৃতং উৎসৃজ্যৰ্মানং পুরুষপশুং কেন পাষ্ণী ইত্যর্থসূক্তেন অনুমন্ত্রয়তে। তৎ উক্তং বৈতানে। …তথা অস্য সূক্তস্য শনৈশ্চরগ্রহদেবত্যহবিরাজ্য হোমে সমিদাধানোপস্থানয়োশ্চ বিনিয়োগঃ।–ইত্যাদি। (১০কা, ১অ. ২সূ.)।

টীকা –এই সূক্তে পুরুষের অর্থাৎ মনুষ্যের মাহাত্ম বর্ণিত হয়েছে। সেই প্রসঙ্গে ভিন্ন ভিন্ন অবয়বশালী মনুষ্যের কোন্ কোন্ দেবতা সৃষ্টি করেছেন, প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে তা জ্ঞাপন করা হয়েছে। যজ্ঞপ্রিয় মনুষ্যগণ এই সূক্তটি পুরুষমেধ যজ্ঞে বিনিয়োগ করে থাকেন। শনৈশ্চর গ্রহদেবতার হবিরাজ্য হোমে এই সূক্তটির বিনিয়োগ হয়ে থাকে। এই সূক্তের দ্বারা সূত্রোক্ত প্রকারে পুরুষমেধে পুরুষপশু অভিমন্ত্রিত করা হয়ে থাকে ॥ (১০কা, ১অ. ২সূ.)।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *