1 of 3

০৫।৬ পঞ্চম কাণ্ড : ষষ্ঠ অনুবাক

ষষ্ঠ অনুবাক
প্রথম সূক্ত : অগ্নিঃ
[ঋষি : ব্রহ্মা দেবতা : অগ্নি ছন্দ : ত্রিষ্টুপ, অনুষ্টুপ, বৃহতী প্রভৃতি ]

 ঊর্ধ্বা অস্য সমিধো ভবন্ত্যধ্বা শুক্রা শোচীংষ্যগ্নেঃ। দুমত্তমা সুপ্রতীকঃ সসূনুস্তনপাদসুরো ভূরিপাণিঃ ॥১॥ দেবো দেবেষু দেবঃ পথে অনক্তি মধ্বা ঘৃতেন ॥ ২॥ মধ্বা যজ্ঞং নক্ষতি প্রৈণানো নরাশংসো অগ্নিঃ সুকৃদ দেবঃ সবিতা বিশ্ববারঃ ॥ ৩॥ অচ্ছায়মেতি শবসা ঘৃতা চিদীডানো বহির্নমসা॥ ৪৷ অগ্নিঃ সুচো অধ্বরেষু প্রযুক্ষু স যক্ষদস্য মহিমানমগ্নেঃ ॥ ৫॥ তরী মাসু প্রযষ্ণু বসবশ্যাতিষ্ঠন বসুধার ॥ ৬৷৷ দ্বাররা দেবীরম্বস্য বিশ্বে ব্রতং রক্ষন্তি বিশ্বহা। ৭। ঊরুব্যচসাংগ্নের্ধা পত্যমানে। আ সুম্বয়ন্তী যজতে উপাকে উষাসানক্তেমং যজ্ঞমবতামধ্বরং নঃ ॥ ৮৷ দৈবা হোতার ঊর্ধ্বমধ্বরং নোহগোর্জিয়ামি গৃণত গৃণতা ন স্বিষ্টয়ে। তিম্রো দেবীর্বৰ্হিরেদং সদস্তামিডা সরস্বতী মহী ভারতী গৃণানা। ৯ তন্নস্তুরীপমদ্ভূতং পুরুক্ষু। দেব ত্বষ্টা রায়ম্পোষং বি ষ্য নাভিমস্য ॥ ১০। বনম্পতেইব সৃজা ররাণঃ। সুনা দেবেভ্যো অগ্নিহব্যং শমিতা স্বদয়তু ॥ ১১ অগ্নে স্বাহা কৃণুহি জাতবেদঃ। ইন্দ্রায় যজ্ঞং বিশ্বে দেবা হবিরিদং জুষন্তাম্ ॥ ১২৷৷

 সূক্তসার –অগ্নির বীর্য তেজঃ-যুক্ত এবং তার সমিধগুলি উচ্চতম হয়ে থাকে। ইনি অত্যন্ত প্রদীপ্ত, সুন্দর এবং সূর্যের সমতুল্য। যজ্ঞে এই প্রাণদাতার অনেক হস্ত রয়েছে। অগ্নি দেবতাগণের মধ্যে শ্রেষ্ঠ এবং মধু ও ঘৃতের দ্বারা দেবমার্গের শোধনকারী। শোভন কর্মশালী তথা মনুষ্যবর্গের শ্লাঘনীয় সবিতাদেব ও জগৎ-সংসারের বরণীয় অগ্নিদেব, যজ্ঞকে মধুযুক্ত করে ব্যাপ্ত হয়ে থাকেন। ঘৃত ও হব্যান্নের সাথে স্তুতিসমূহকে লাভ করে অগ্নিদেবতা সম্মুখে আগমন করেন। অগ্নিদেব দেবগণের অধিক সঙ্গতিসম্পন্ন হয়ে আগত হয়ে এই যজ্ঞের মহিমা ও শ্রবণসমূহকে (ঘৃত বা আজ্যাহুতির ক্ষরণকে) নিজের সাথে যুক্ত করে নেন। দেবগণের সঙ্গতিশালী হর্ষোৎপাদক যজ্ঞসমূহে অগ্নিদেব ও ধন-পুষ্টি-করণশালী বসুদেবগণ বাস করেন। অগ্নির তেজস্বী শিখাসমূহ যজমানের ব্রতকে নানারকমে রক্ষা করে। অগ্নির তেজ হতে উৎসারিত ঐশ্বর্যবান্ দীপ্তি ও আহুতির দীপ্তি যজ্ঞের সম্পাদনশীল। এগুলি পরস্পর আশ্রয়ের সাথে সংযুক্ত হয়ে তেজস্বী হয়ে ওঠে। তারা যজ্ঞের রক্ষক। হোতৃগণ যজ্ঞাগ্নির প্রশংসা করুক, কারণ তাতেই আমাদের কল্যাণ। পৃথিবী, অগ্নির কান্তি ও সরস্বতী এই তিন আমাদের কুশের (যজ্ঞীয় তৃণগুচ্ছের) প্রশংসা পূর্বক বিরাজমান হোন। ত্বষ্টাদেব আমাদের জল, অন্ন ও ধনের পুষ্টি প্রদান করুন। বনস্পতি শব্দ পূর্বক নিজেকে মুক্ত করুক, অগ্নি এই হবিকে দেবগণের নিমিত্ত সুস্বাদু করে তুলুন। অগ্নিদেবতা ইন্দ্রের নিমিত্ত যজ্ঞ সমাপ্ত করুন। সকল দেবতা এই হব্য গ্রহণ করুন ॥ ১-১২।

সূক্তস্য বিনিয়োগঃ –পুষ্টিকামঃ ঊর্ধ্বা অস্য ইতি সূক্তেন অগ্নৌ মন্থাকারং ঔদুম্বরং দত্ত্বা আজ্যং জুহোতি। তথা অসংখ্যাতা আগমশন্ধুলীরধিশ্ৰিত্য অনেন সূক্তেন সপ্ত শব্দুলীরগ্নৌ দত্ত্বা আজ্যং জুহোতি। শেষাঃ শঙ্কুলীঃ কত্রে দদাতি। ত উক্তং কৌশিকেন। …ইত্যাদি। (৫কা, ৬অ. ১সূ)৷৷

টীকা— পুষ্টিকামী জন এই সূক্তটির দ্বারা অগ্নিতে মন্থাকার ঔদুম্বর প্রদান করে আজাহুতি প্রদান করবেন। তথা অসংখ্যাত আগমশম্ভুলী অধিশ্রিত (আহৃত) করে এই সূক্তের দ্বারা সাতটি শব্দুলী অগ্নিতে প্রদান করে আজ্যের দ্বারা হোম করণীয়।….ইত্যাদি ॥ (৫কা, ৬অ. ১সূ)।

.

দ্বিতীয় সূক্ত : দীর্ঘায়ুঃ

 [ঋষি : অথর্বা দেবতা : ত্রিবৎ, অগ্নি ইত্যাদি ছন্দ : ত্রিষ্টুপ, অনুষ্টুপ, উষ্ণিক]

নব প্রাণান্নবভিঃ সং মিমীতে দীর্ঘায়ুত্মায় শতশারদায়। হরিতে ত্ৰীণি রজতে ত্ৰীণ্যয়সি ত্ৰীণি তপসাবিষ্ঠিতানি ॥ ১৷৷ অগ্নিঃ সুর্যশ্চন্দ্রমা ভূমিরাপো দৌরন্তরিক্ষং প্রদিপশা দিশশ্চ। আর্তবা ঋতুভিঃ সংবিদানা অনেন মা ত্রিবৃতা পারয়ন্তু ॥ ২॥ এয়ঃ পোষাস্ত্রিবৃতি শ্ৰয়স্তামনকু পূষা পয়সা ঘৃতেন। অন্নস্য ভূমা পুরুষস্য ভূমা ভূমা পশূনাং ত ইহ শয়ন্তাম্ ॥ ৩৷৷ ইমমাদিতা বসুনা সমুক্ষতেমমগ্নে বধয় বাবৃধানঃ। ইমমি সং সৃজ বীর্যেণাস্মিন্ ত্রিবৃচ্ছ্বয়ং পোষয়িষ্ণু ॥৪॥ ভূমিষ্টা পাতু হরিতেন বিশ্বভৃদগ্নিঃ পিপয়সা সজোষাঃ। বীরুদ্ভিষ্টে অর্জুনং সংবিদানং দক্ষং দধাতু সুমনস্যমানম্ ॥ ৫৷৷ ত্রেধা জাতং জন্মনেদং হিরণ্যমগ্নেরেকং প্রিয়তমং বভুব সোমস্যৈকং হিংসিতস্য পরাপতৎ। অপামেকং বেধসাং রেত আহুস্তৎ তে হিরণ্যং ত্রিবৃদস্থায়ুষে ॥ ৬ এ্যায়ুষং জমদগ্নেঃ কশ্যপস্য এ্যাম্বুষ। ত্রেধামৃতস্য চক্ষণং ত্ৰীণ্যায়ূষি তেইকরম্। ৭ ৷৷ এয়ঃ সুপর্ণাস্ত্রিবৃতা যদায়কোক্ষরমভিস্যুয় শক্রাঃ। প্রত্যৌহমৃত্যুমমৃতেন সামন্তর্ধানা দুরিতানি বিশ্বা॥ ৮। দিবা পাতু হরিতং মধ্যাৎ ত্বা পাত্বৰ্জুন। ভূম্যা অয়স্ময়ং পাতু প্ৰাগাদ দেবপুরা অয়ম্ ॥ ৯৷৷ ইমাস্তিম্রো দেবপুরাস্তাস্তা রক্ষন্তু সর্বতঃ। তাং বিভ্রদ বৰ্চ্যুত্তরো দ্বিষতাং ভব ॥ ১০৷ পুরং দেবানামমৃতং হিরণ্যং য আবেধে প্রথমো দেবো অগ্রে। তস্মৈ নো দশ প্রাচীঃ কৃণোম্যনু মন্যতাং ত্রিবৃদাবধে, মে। ১১। আ ত্বা চূতত্বৰ্য্যৰ্মা পূষা বৃহস্পতিঃ। অহর্জাতিস্য যন্নাম তেন ত্বাতি চূতামসি ॥ ১২৷ ঋতুভিষ্ট্ৰাৰ্তবৈরায়ুষে বসে ত্বা। সম্বৎসরস্য তেজসা তেন সংহ কৃন্মসি ॥ ১৩৷৷ ঘৃতাদুলুপ্তং মধুনা সমক্তং ভূমিদৃংহমচ্যুতং পারয়িষ্ণুঃ। ভিন্দৎ সপত্নানধরাংশ্চ কৃথদা মা রোহ মহতে সৌভগায় ॥ ১৪.

সূক্তসার –শতায়ু হওয়ার নিমিত্ত নয় (নব সংখ্যক) প্রাণকে নয়ের সাথে সংযুক্ত করতে হয়। এতে সুবর্ণ, রৌপ্য ও লৌহের তিন-তিন তাপের দ্বারা পূর্ণ সূত্র (বা তার) আছে। এই ত্রিবৃৎ কর্মের দ্বারা অগ্নি, চন্দ্র, সূর্য, পৃথিবী, জল, আকাশ, অন্তরিক্ষ ও দিক্-উপদিক সমূহ তথা ঋতুর অংশ ঋতুসমূহের সাথে প্রাপ্ত হয়ে আয়ুষ্কামী জনকে উত্তীর্ণ করুক (অর্থাৎ আয়ুষ্মন করুক) এই ত্রিবৃতে তিন পুষ্টি আশ্রিত আছে; পূজা দেব ঘৃত-দুগ্ধের দ্বারা এই কর্মকে শুদ্ধি করুক। অন্ন, পুরুষ ও পশুসমূহের আধিক্য এতে আশ্রয় প্রাপ্ত হোক। এই উপনয়ন-সংস্কৃত বালককে আদিত্য ধনের দ্বারা পূর্ণ করুন। অগ্নি বৃদ্ধিপ্রাপ্তির সাথে সাথে এরও বৃদ্ধি সাধিত করুন। ইন্দ্র একে বীর্যযুক্ত করুন। পোষক ত্রিবৃৎ এর আশ্রিত হোক। সুবর্ণের দ্বারা সমৃদ্ধ পৃথিবী এর রক্ষক হোক। বিশ্বের ভরণকর্তা অগ্নি লৌহের দ্বারা তাকে পালন করুন এবং লতাসমূহ হতে প্রাপ্য জলের উত্তম বল তাকে ধারণ করুক। তিন প্রকারে এই সূবর্ণ উৎপন্ন হয়েছিল। এর এক জন্ম অগ্নির প্রিয় হয়েছিল। বিদ্বজ্জন এর একটিকে জলের বীর্যরূপ বলে থাকেন। ব্রহ্মচারীর (উপনীত মানবকের) আয়ুর নিমিত্ত এই সূবর্ণ ত্রিবৃৎ হয়ে যাক। জমদগ্নি, মহর্ষি কশ্যপ প্রমুখের বাল্য-তারুণ্য-বৃদ্ধাবস্থা এই যে অমৃতের নিদর্শন স্বরূপ তিন আয়ু, সেই আয়ু ব্রহ্মচারী প্রাপ্ত হোক। ত্রিবৃৎ রূপে তিন সুবর্ণ একাক্ষরে পরিণত হলে সকল পাপকে অদৃশ্য করে অমৃতের দ্বারা মৃত্যুকে নষ্ট করা যায়। আকাশ হতে সুবর্ণ ব্রহ্মচারীকে রক্ষা করুক, মধ্যলোক হতে রক্ষা করুক এবং পৃথিবী হতে লৌহ রক্ষা করুক। দেবতাগণ চারিদিক হতে রক্ষা করুন। দেবতাগণের সম্মুখে যে মুখ্য দেবতা সুবর্ণরূপী অমৃতকে বন্ধন করেছিলেন, সেই দেবতা এই ত্রিবৃতকে বন্ধনের নিমিত্ত আমাকে (পুরোহিতকে) আজ্ঞা প্রদান করুন। অর্যমা, পূষা ও বৃহস্পতি দেবত্রয় ত্রিবৃতকে উত্তম প্রকারে বন্ধন করুন। আমরা (পুরোহিতগণ) নিত্য উৎপন্নশীল নামের দ্বারা ত্রিবৃতকে বন্ধন করছি। আমি আয়ু ও তেজের প্রাপ্তির নিমিত্ত ব্রহ্মচারীকে ঋতুসমূহ, মাস সমুদায় তথা। সম্বৎসরের তেজঃ-স্বরূপ সূর্যের সাথে যুক্ত করছি। ধৃতের দ্বারা আর্দ্র হয়ে, মধুর দ্বারা সিঞ্চিত হয়ে, ও পৃথিবীর সমান দৃঢ় হয়ে এই মানবক (ব্রহ্মচারী) অথবা আয়ুষ্কামী জন শত্রুগণকে বিদীর্ণ করে ও তাদের তিরস্কৃত করে মহান্ সৌভাগ্য লাভ করুক ॥ ১-১৪

সূক্তস্য বিনিয়োগঃ –সর্বসম্পৎকর্মসু নব প্রাণান্ ইতি সূক্তস্য বিনিয়োগ। তথা আয়ুষ্কামস্য হিরণ্যমণিবন্ধনে অস্য বিনিয়োগঃ। এতদুভয়বিস্তরঃ যদাবধন ইতি সূক্তে (১/৩৫) দ্রষ্টব্যঃ। উপনয়নকর্মণ্যপি আয়ুষ্কামস্য ব্রহ্মচারিণ আজ্যহোমে এতদ বিনিযুক্তং অস্য আয়ুষ্যগণে পাঠাৎ। সূত্রিতং হি।…ইত্যাদি৷৷ (৫কা, ৬অ. ২সূ)।

টীকা –সর্বসম্পকর্মে এই সূক্তটির বিনিয়োগ হয়ে থাকে। তথা আয়ুষ্কামী জনের হিরণ্যমণি বন্ধনে এই সূক্তের বিনিয়োগ হয়ে থাকে। এই উভয় বিষয় সম্পর্কে প্রথম কাণ্ডের ষষ্ঠ অনুবাকের সপ্তম সূক্ত দ্রষ্টব্য। উপনয়ন কর্মেও ব্রহ্মচারীর আয়ুষ্কামনায় আজ্যহোমে এই সূক্তের বিনিয়োগ সম্পর্কে (স্বর্ণ, রৌপ্য ও লৌহের খণ্ডে নবশলাক মণি ত্রিবৃৎ-করণ সম্পর্কে) সূক্তের মধ্যেই নির্দেশ রয়েছে।…ইত্যাদি। (৫কা, ৬অ. ২সূ)।

.

তৃতীয় সূক্ত : রক্ষোঘ্নম্

[ঋষি : চাতন দেবতা : জাতবেদা ইত্যাদি ছন্দ : ত্রিষ্টুপ, অনুষ্টুপ]

পুরস্তাদ যুক্তো বহ জাতবেদোহগ্নে বিদ্ধি ক্রিয়মাণং যথেদম্।। ত্বং ভিষ ভেষজস্যাসি কর্তা ত্বয়া গামশ্বং পুরুষং সনেম॥১॥ তথা তদগ্নে কৃণু জাতবেদো বিশ্বেভিদেবৈঃ সহ সংবিদানঃ। যো নো দিদেব যতমো জঘাস যথা সো অস্য পরিধিপতাতি ॥ ২॥ যথা সো অস্য পরিধিস্পতি তথা তদগ্নে কৃণু জাতবেদঃ। বিশ্বেতিদেবৈঃ সহ সংবিদানঃ ॥ ৩ অক্ষ্যে নি বিধ্য হৃদয়ং নি বিধ্য জিহ্বং নি তৃদ্ধি প্ৰ দতো মৃণীহি। পিশাচো অস্য যতমো জঘাসাগ্নে যবিষ্ঠ প্রতি তং শৃণীহি ॥ ৪৷৷ যদস্য হৃতং বিহৃতং যৎ পরাভূতমাত্মনো জন্ধং যতম পিশাচৈঃ। তদগ্নে বিদ্বান্ পুনরা ভর ত্বং শরীরে মাংসমসুমেরয়ামঃ ॥ ৫৷৷ আমে সুপক্তে শবলে বিপকে যো মা পিশাচো অশনে দদম্ভ। তদাত্মনা প্রজয়া পিশাচা বি যাতয়ন্তামগদোহয়মস্তু ॥ ৬। ক্ষীরে মা মন্থে যতমো দদম্ভাকৃষ্টপচ্যে অশনে ধান্যে যঃ। তদাত্মনা প্রজয়া পিশাচা বি যাতয়ন্তামগদোহয়মস্ত ॥ ৭অপাং মা পানে যতমো দম্ভ ব্যাদ যানাং শয়নে শয়ান। তদাত্মনা প্রজয়া পিশাচা বি যাতয়ন্তামগদোয়মস্তু ॥ ৮৷ দিবা মা নক্তং যতমো দদম্ভ ক্ৰব্যাদ যানাং শয়নে শয়ান। তদাত্মনা প্রজয়া পিশাচা বি যাতয়ন্তামগদোহয়ম ॥৯॥ ক্রব্যাদমগ্নে রুধিরং পিশাচং মনোহনং জহি জাতবেদঃ। তমিন্দ্রো বাজী বজ্রেণ হন্তু চ্ছিনত্ত্ব সোমঃ শিরো অস্য ধৃষ্ণুঃ ॥ ১০ সনাদগ্নে মৃণসি যাতুনান্ ন ত্বা রক্ষাংসি পৃতনাসু জিগু্যঃ। সহমুরাননু দহ ক্ৰব্যাদো মা তে হেত্যা মৃত দৈব্যায়াঃ ॥১১৷ সমাহর জাতবেদো যদ্ধৃতং যৎ পরাভূত। গাত্ৰাণ্যস্য বর্ধন্তামংশুরিবা প্যায়তাময়ম্ ॥ ১২৷৷ সোমস্যেব জাতবেদো অংশুরা প্যায়তাময়। অগ্নে বিরশিনং মেধ্যমযক্ষ্মং কৃণু জীবতু ॥ ১৩৷৷ এস্তে অগ্নে সমিধঃ পিশাচজম্ভনীঃ। তাস্তুং জুযস্ব প্রতি চৈনা গৃহাণ জাতবেদঃ ॥ ১৪৷৷ তাাঘীরগ্নে সমিধঃ প্রতি গৃহ্যর্চিসা। জহাতু ক্ৰব্যাপং যো অস্য মাং সং জিহীৰ্ষতি ॥১৫৷৷

 সূক্তসার –সকল কর্মে প্রথম নিযুক্তশালী অগ্নিদেব আমাদের এই (রক্ষোঘ্ন) কর্মের ভার গ্রহণ করুন। সেই বৈদ্য ও ঔষধির নির্মাতা অগ্নিদেবের দ্বারা আমরা গো অশ্ব ও মনুষ্যগণের নীরোগ অবস্থা লাভ করবো। যারা আমাদের তুচ্ছ মনে করছে অথবা আমাদের ভক্ষণের ইচ্ছা করছে, অগ্নি তাদের পতিত করুন। অগ্নিদেব কর্তৃক আমাদের ভক্ষণেচ্ছু পিশাচগণের চক্ষু বিদীর্ণ হোক, হৃদয় ভগ্ন হোক, জিহ্বা কর্তিত হোক এবং দন্তগুলি বিচূর্ণ হয়ে যাক। এই ব্যাধিতের যে মাংস পিশাচগণ ভক্ষণ করে ফেলেছে, অগ্নি সেই মাংসকে পুনরায় এর শরীরে পূর্ণ করে দিন। আমরা এর শরীরে মন্ত্রশক্তির দ্বারা প্রাণকে পুনরায় সঞ্চারিত করছি। দুগ্ধ, মন্থ ও কৃষির দ্বারা রন্ধিত অন্নে প্রবিষ্ট হয়ে যে পিশাচ আমাদের বিনাশের ইচ্ছা পূর্ণ করে ফেলেছে, সে স্বয়ং আপন সন্তান-সন্ততি বা প্রজাগণের সাথে এইরকমই যাতনা ভোগ করুক। যে পিশাচ দিবারাত্র জলপান, যাত্রা, শয়ন ইত্যাদির সময় আমাদের পীড়িত করেছে, সেই মাংসভক্ষী আপন প্রজাগণের সাথে এই ভাবেই পীড়া ভোগ করুক। অগ্নিদেব সেইসব মাংস-ভক্ষী, রুধির-পায়ী ও মনুষ্যের মন-নষ্টকারী পিশাচবর্গকে বিনাশ করুন। অশ্বযুক্ত ইন্দ্রদেব তাদের উপর আপন বজ্র-প্রহার করুন এবং সোমদেব তাদের মুণ্ড (বা শুণ্ড): কর্তিত করুন। অগ্নিদেব সদা সেই রাক্ষসবর্গকে মর্দন করুন, আপন দিব্যাস্ত্রে ভস্ম করুন। অগ্নিদেব কর্তৃক এই পুরুষের বিনাশপ্রাপ্ত জ্ঞান ও মাংস পুনরানীত হোক। এই (ব্যাধিত) জন সোমের অঙ্কুরের ন্যায় পুষ্ট হয়ে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে পরিপূর্ণ হয়ে উঠুক। অগ্নির দ্বারা এই গুণীপুরুষ জীবিত থাকার প্রয়োজনে রোগ-রহিত হোক। পিশাচবর্গকে বিনাশকারী অগ্নিদেবের উদ্দেশে এই সমিধসমূহ নিবেদিত হচ্ছে, তিনি সেগুলি গ্রহণপূর্বক প্রসন্নতা লাভ করুন। (এই সূক্তের মধ্যে, কয়েক প্রকার রোগের কীটাণুসমূহের বর্ণনা আছে, যেগুলি মনুষ্যের পক্ষে ঘাতক সিদ্ধ হয়ে থাকে। লোকের উচিত–শুদ্ধ বায়ু, সূর্যের প্রকাশ (কিরণ) ও অগ্নি হতে এই রকম দোষাবহতা দূর করে বাতাবরণকে স্বচ্ছ রাখা) ॥ ১-১২

সূক্তস্য বিনিয়োগঃ –পুরস্তাৎ যুক্তঃ ইতি সূক্তস্য চাতনগণে পাঠাৎ যত্রতত্র চাতনগণস্য বিনিয়োগস্তত্ৰাস্য মুক্তস্য বিনিয়োগঃ… ইত্যাদি। (৫কা. ৬অ. ৩সূ)।

টীকা— এই সূক্তের চাতনগণে পঠিত হওয়ার নিমিত্ত যেখানে সেখানে এর বিনিয়োগ হবে।..ইত্যাদি। (৫কা, ৬অ. ৩সূ)।

.

চতুর্থ সূক্ত : দীর্ঘায়ুষ্যম

 [ঋষি : উন্মোচন (আয়ুষ্কাম) দেবতা : আয়ু ইত্যাদি ছন্দ : অনুষ্টুপ, জগতী ]

আবতস্ত আবতঃ পরাবতস্ত আবতঃ। ইহৈব ভব মা নু গা ম পূর্বাননু গাঃ পিতৃনসুং বমি তে দৃঢ়ম্ ॥ ১৷৷ যৎ ত্বাভিচেরুঃ পুরুষঃ স্বাে যদরণো জনঃ। উন্মোচনপ্রমোচনে উভে বাঁচা বদামি তে ॥ ২॥ যদ দুদ্রোহিথ শেপিষে স্রিয়ৈ পুংসে অচিত্তা। উন্মোচনপ্রমোচনে উভে বাঁচা বদামি তে ৷ ৩৷৷ যদেনসো মাতৃকৃতাচ্ছেষে পিতৃকৃতাচ্চ যৎ। উন্মোচনপ্রমোচনে উভে বাঁচা বদামি তে। ৪যৎ তে মাতা যৎ তে পিতা জামির্ভাতা চ সৰ্জতঃ। প্রত্যক সেবস্ব ভেষজং জরদষ্টিং কৃণোমি ত্বা ॥ ৫৷৷ ইহৈধি পুরুষ সর্বেণ মনসা সহ। দূতৌ যমস্য মানু গা অধি জীবপুরা ইহি। ৬। অনুতঃ পুনরেহি বিদ্বানুদয়নং পথঃ। আরোহণমাক্রমণং জীবতোজীবতোয়ন ॥ ৭৷ মা বিভেন মরিষ্যসি জরদষ্টিং কৃণোমি ত্বা। নিরবোচমহং যক্ষ্মমঙ্গেভ্যো অঙ্গজ্বরং তব ॥ ৮ অঙ্গভেদো অঙ্গজ্বরো যশ্চ তে হৃদয়াময়ঃ। যক্ষ্মঃ শ্যেন ইব প্রাপ্ত বাঁচা সাঃ পরশুরাম ॥৯॥ ঋষী বোধপ্রতীবোধাবস্বপ্নে যশ্চ জাগৃবিঃ। তৌ তে প্রাণস্য গোপ্তারৌ দিবা নক্তং চ জাগৃতাম্ ॥ ১০ অয়মগ্নিরুপসদ্য ইহ সূর্য উদেতু তে। উদেহি মৃত্যোর্গম্ভীরাৎ কৃষ্ণাচ্চিৎ তমসম্পরি। ১১ নমো যমায় নমো অস্তু মৃত্যবে নমঃ পিতৃভ্য উত যে নয়ন্তি। উৎপারণস্য যো বেদ তমগ্নিং পুরো দধেইম্মা অরিষ্টতাতয়ে। ১২। ঐতু প্রাণ ঐতু মন ঐতু চক্ষুরধো বল। শরীরমস্য সং বিদাং তৎ পদ্ভ্যাং প্রতি তিতু১৩৷ প্রাণেনাগ্নে চক্ষুষা সং সৃজেমং সমীরয় তা সং বলেন। বেত্থামৃতস্য মা নু গান্মা নু ভূমিগৃহহা ভুবৎ ॥ ১৪৷ মা তে প্রাণ উপ দসনো অপানোহপি ধায়ি তে। সূর্যাধিপতিমৃত্যোরুদায়চ্ছতু রশ্মিভিঃ ॥ ১৫৷৷ ইয়মন্তর্বদতি জিহ্বা বদ্ধা পনিষ্পদা। ত্বয়া যক্ষ্মং নিরবোচং শতং রোপীশ্চ তক্মনঃ ॥ ১৬৷৷ অয়ং লোকঃ প্রিয়তমো দেবানামপরাজিতঃ। যস্মৈ ভূমিহ মৃত্যবে দিষ্টঃ পুরুষ জজ্ঞিষে। স চ ত্বানু হুয়ামসি মা পুরা জরসো মৃথাঃ ॥ ১৭৷

 সূক্তসার –আমি (উন্মোচন নামক মন্ত্রদ্রষ্টা ঋষি) তোমাকে (অর্থাৎ রোগাৰ্তকে) নিকট ও দূর দেশ হতে তোমার প্রাণকে দৃঢ়তার সাথে বন্ধনকরছি। তুমি পূর্ব-পিতৃগণের অনুকরণ এখনই করো না; এখানেই থাকো। তোমার উপর কৃত অভিচারের বন্ধন মুক্ত-করণশীল বিষয়টি আমি মন্ত্রবলের দ্বারা বলছি। তুমি যে স্ত্রী বা পুরুষের নিমিত্ত দ্রোহ বা শাপ প্রযুক্ত হয়েছিলে তা হতে মুক্তকরণ সম্বন্ধী বিষয় আমি তোমাকে বলছি। মাতা বা পিতার পাপে যদি তুমি রোগ-শয্যায় পড়ে থাকো, তবে সেই রোগের উন্মোচন ও প্রমোচনের কথাও আমি মন্ত্র-রূপ বাণীর দ্বারা বলছি। তোমার মাতা, পিতা, ভ্রাতা অথবা ভগ্নী যে মন্ত্র বা ঔষধি করেছিল, তুমি তা ভালভাবে সেবন করো। আমি তোমাকে বৃদ্ধকাল পর্যন্ত জীবনশালী করে দিচ্ছি। তুমি যমদূতের অনুগমন করো না। আপন সকল ব্যাপ্তির সাথে এখানে জীবিত থাকো। হেরোগী! তুমি ভয় ত্যাগ করো। তোমার দেহ হতে যক্ষ্মা ও অস্থি-জ্বর দূর হয়েছে। মন্ত্ররূপ বাণীতে তিরস্কৃত হয়ে অঙ্গে ব্যাপ্ত জ্বর, হৃদয়-রোগ ইত্যাদি বহু দূরে গমন করেছে। তোমার জন্যই তোমার. প্রাণরক্ষক সচেতন ঋষি (আমি) দিবারাত্র জাগ্রত হয়ে আছেন। অগ্নি তোমার সমীপে অবস্থানের যোগ্য; সূর্য তোমার নিমিত্ত এই লোকে উদিত হচ্ছেন তুমি অন্ধকারযুক্ত মৃত্যু হতে নিষ্ক্রান্ত হয়ে জীবন লাভ করো। মৃত্যু, পিতৃগণ ও যমকে নমস্কার। যে অগ্নি দেহকে পারণের বিধি জ্ঞাত আছেন, এই (ব্যাধিত) পুরুষের মাঙ্গল্যে অগ্রে তাকে স্থাপন করছি। প্রাণ একে প্রাপ্ত হোক, মন ও নেত্র একে প্রাপ্ত হোক; আমি এর দেহকে মন্ত্রশক্তির দ্বারা প্রাণবন্ত করে দিয়েছি; এই (ব্যাধিত) ব্যক্তি আপন পদের উপর দণ্ডায়মান হোক। অগ্নিদেব এর প্রাণ ও চক্ষুকে সংযুক্ত করুন, শরীরকে বলের দ্বারা পূর্ণ করে দিন। অমৃতের জ্ঞাতা অগ্নি এই ব্যক্তির নিকট হতে যেন প্রস্থান না করেন; শ্মশানভূমিতে যেন এর ঘর না হয়। রোগীর প্রাণ যেন ক্ষয়প্রাপ্ত না হয়; সূর্যদেব তার আপন রশ্মিসমূহের দ্বারা তাকে মৃত্যুশয্যা হতে উত্তোলিত করেছেন। ভিতর হতে আন্দোলিত হয়ে এর জিহ্বা ঘোষণা করছে যে তার দেহ হতে যক্ষ্মা রোগ পলায়িত হয়েছে এবং জ্বরের আক্রমণও স্তব্ধ (বা শান্ত) হয়ে গিয়েছে। যদিও প্রতি জনের মতো এই ব্যক্তিও মৃত্যুর নিমিত্তই জন্ম প্রাপ্ত হয়েছে, মৃত্যুলোক দেবতাগণেরও প্রিয়; তথাপি এই (ব্যাধিমুক্ত) জন বৃদ্ধাবস্থার পূর্বে মৃত্যুপ্রাপ্ত হবে না ॥১-১৭

সূক্তস্য বিনিয়োগঃ –আবতস্তে ইতি সূক্তস্য অংহোলিঙ্গগণে পাঠাৎ তস্য গণস্য যত্রতত্র সর্বভৈষজ্যাদিষু বিনিয়োগ উক্তস্তত্র সর্বত্র বিনিয়োেগোনুসন্ধেয়ঃ।…তথা অনেন সূক্তেন উপনয়নানন্তরং আয়ুষ্কামং মানবকং অভিমৃশ্য অভিমন্ত্ৰয়েত। সূত্রিতং হি।…ইত্যাদি৷৷ (৫কা, ৬অ, ৪সূ)।

টীকা –এই সূক্তের অংহোলিঙ্গগণে পাঠ করা হয়েছে, সেই জন্য তার গণের যত্রতত্র সর্বভৈষজ্য ইত্যাদি কর্মে বিনিয়োগ অনুসন্ধেয়। তথা এই সূক্তের দ্বারা উপনয়নের পর আয়ু কামনা করে মানবককে স্পর্শ করে অভিমন্ত্রিত কর্তব্য।…ইত্যাদি ॥ (৫কা, ৬অ. ৪সূ)।

.

পঞ্চম সূক্ত : কৃত্যাপরিহরণম

[ঋষি : শুক্র দেবতা : কৃত্যাপ্রতিহরণ ছন্দ : অনুষ্টুপ, বৃহতী ]

যাং তে চক্রুরামে পাত্রে যাং চর্মিধান্যে। আমে মাংসে কৃত্যাং যাং চক্রুঃ পুনঃ প্রতি হরামি তাম্ ॥ ১ : যাং তে চঃ কৃকবাকাবজে বা যাং কুরীরিণি। অব্যাং তে কৃত্যাং যাং চক্রুঃ পুনঃ প্রতি হরামি তাম্ ॥ ২॥ যাং তে চরেকশফে পশূনামুভয়াদতি। গর্দভে কৃত্যাং যাং চক্রুঃ পুনঃ প্রতি হরামি তাম। ৩ যাং তে চরমূলায়াং বলগং বা নরাচ্যাম্। ক্ষেত্রে তে কৃত্যাং যাং চক্রঃ পুনঃ প্রতি হরামি তাম ॥৪॥ যাং তে চকুৰ্গাৰ্হপত্যে পূর্বাগ্নাবুত দুশ্চিতঃ। শালায়ং কৃত্যাং যাং চক্রুঃ পুনঃ প্রতি হরামি তাম্ ॥ ৫৷৷ যাং তে চক্রুঃ সভায়াং যাং চরধিদেবনে। অক্ষে কৃত্যাং যা চক্রুঃ পুনঃ প্রতি হরামি তাম্ ॥ ৬া৷ যাং তে চক্রুঃ সেনায়াং যাং চরিম্বায়ুধে। দুন্দুভৌ কৃত্যাং যাং চক্রুঃ পুনঃ প্রতি হরামি তাম্ ॥ ৭৷৷ যাং তে কৃত্যাং কূপেহবধুঃ শ্মশানে বা নিচখনু। সম্মনি কৃত্যাং যাং চক্রুঃ পুনঃ প্রতি হরামি তাম্ ॥ ৮৷৷ যাং তে চঃ পুরুষাস্থে অগ্নৌ সংকসুকে চ যা। ম্রোকং নিদাহং ক্ৰব্যাদং পুনঃ প্রতি হরামি তাম ॥ ৯ অপথেনা জাভারৈণাং তাং পথেতঃ প্র হিম্মসি। অধীরো মর্যাধীরেভ্যঃ সঃ জরাচিত্ত্যা ॥ ১০৷ যশ্চকার ন শোক কর্তৃৎ শশ্রে পাদমসুরি। চকার ভদ্রমস্মভ্যমভগো ভগবত্ত্যঃ ॥ ১১। কৃত্যাকৃতং বলগিনং মূলিনং শপথেয্য। ইন্দ্ৰস্তং হন্তু মহতা বধেনাগ্নর্বিধ্যত্বস্তয়া ॥ ১২৷৷

বঙ্গানুবাদ –অভিচার-করণশালীগণ অপক (কঁচা) মৃৎপাত্রে বা ধান, যব, গম, তিল ইত্যাদির সাথে মিশ্রিত ধান্যসমূহে অথবা কুকুট ইত্যাদির অপক্ক মাংসে যে কৃত্যাকে সাধিত করেছে, আমি সেই কৃত্যাকে অভিচারকারীদের উপরেই প্রত্যারোপিত করে দিচ্ছি। কুকুট (মুর্গী), ছাগ, বা বৃক্ষের উপর কৃত কৃত্যাকে, মনুষ্যের দ্বারা পূজিত ভক্ষ্য পদার্থে স্থির করে ক্ষেত্রে (জমিতে) কৃত কৃতাকে, গাহপত্যাগ্নি বা যজ্ঞশালায় কৃত কৃত্যাকে, সভামধ্যে বা জুয়ার পাশায় কৃত কৃত্যাকে, সেনার মধ্যে কিংবা বাণের উপর অথবা দুন্দুভিতে কৃত কৃত্যাকে, কূয়ার মধ্যে পাতিত কৃত্যাকে, শ্মশানের মধ্যে গর্ত করে খোদিত অথবা গৃহে কৃত কৃত্যাকে, পুরুষের অস্থির উপর কৃত কৃত্যাকে বা অল্প-জ্বলিত (টিমটিম করে প্রজ্বলিত) অগ্নির উপর কৃত কৃত্যাকে আমি সেই কৃত্যাকারী অভিচারকারীদের দিকেই প্রত্যাবর্তিত করিয়ে দিচ্ছি। যে অজ্ঞানী জন কৃত্যাকে কুমার্গের দ্বারা মর্যাদা-পালনশীল আমাদের উপর আরোপ করেছে, আমরা সেই কৃত্যাকে সেই মার্গেই সেই অজ্ঞানী কৃত্যাকারীর অভিমুখে প্রেরিত করছি। যারা কৃত্যার দ্বারা আমাদের অঙ্গুলী বা পদকে নষ্ট করতে ইচ্ছা করে, তারা যেন তাদের আকাঙ্ক্ষা-পূরণে সফল না হয় এবং ভাগ্যশালী আমাদের কোন অমঙ্গল না করতে পারে। ভেদ-রক্ষাকারী, লুক্কায়িত হয়ে কৃত্যাকারীদের আপন শস্ত্রের দ্বারা ইন্দ্রদেব বিনষ্ট করে দিন, এবং অগ্নিদেব আপন জ্বালাসমূহে তাদের দগ্ধ করে দিন ৷১-১২।

সূক্তস্য বিনিয়োগঃ— যাং তে চক্রুঃ ইতি সূক্তস্য কৃত্যাপ্রতিহরণগণে পাঠাৎ যত্রতত্র তস্য গণস্য বিনিয়োগস্তত্র সর্বত্ৰাস্য সূক্তস্য বিনিয়োগোনুসন্ধেয়ঃ। বিস্তরস্তু দূষ্যা দূষিরসি ইতি সূক্তে (২১১) কৃতঃ ॥ (৫কা, ৬অ. ৫সূ)।

টীকা— এই সূক্তের কৃত্যাপ্রতিহরণগণে পাঠ করা হয়েছে অর্থাৎ কৃত্যা পরিহার কর্মে এর বিনিয়োগ হয়ে থাকে। দ্বিতীয় কাণ্ডের তৃতীয় অনুবাকের প্রথম সূক্তের বিনিয়োগে এই সম্পর্কে বিস্তারিত বলা হয়েছে।(৫কা. ৬অ. ৫সূ)।

ইতি পঞ্চমং কাণ্ডং সমাপ্ত ৷৷

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *