1 of 3

০২।৩ দ্বিতীয় কাণ্ড : তৃতীয় অনুবাক

তৃতীয় অনুবাক
প্রথম সূক্ত : শ্রেয়ঃপ্রাপ্তিঃ
[ঋষি : শুক্র দেবতা : কৃত্বাদূষণ ছন্দ : গায়ত্রী, উষ্ণিক]

দূষ্যা দূষিরসি হেত্যা হেতিরসি মেন্যা মেনিরসি। আপুহি শ্রেয়াংসমতি সমং ক্রাম ॥১॥ সুক্ত্যোহসি প্রতিসরোহসি প্রত্যভিচরণোহসি। আপুহি শ্রেয়াংসমতি সমং ক্রাম ॥ ২॥ প্রতি তমভি চর যোহম্মান দ্বেষ্টি যং বয়ং দ্বিষ্মঃ। আপুহি শ্রেয়াংসমতি সমং ক্রাম ॥ ৩॥ সূরিরসি বর্চোধা অসি তনূপানোহসি। আপুহি শ্রেয়াংসমতি সমং ক্রাম ॥৪॥ শুক্ৰোহসি ভ্ৰাজোহসি স্বরসি জ্যোতিরসি। আপুহি শ্রেয়াংসমতি সমং ক্রাম ৫

 বঙ্গানুবাদ –হে তিলকমণি! তুমি অন্যের দোষরূপকৃত্যাকে দূষিত-করণে সমর্থ। তুমি অন্যের দ্বারা প্রেরিত আয়ুধকে নষ্ট করে থাকো। পরের দ্বারা উচ্চারিত বাক্ (বা মন্ত্র) রূপ বজ্রের নিবারণকল্পে তুমি বজ্ররূপ হয়ে থাকো। অতএব শত্রুগণের দ্বারা কৃত অভিচার ইত্যাদি কর্ম সম্পর্কিত উৎপাতসমূহকে দূর করে দাও। তুমি আমাদের শত্রুকে এমন ভাবে বিনাশ রো, যাতে আমরা বিনা প্রযত্নেই তাদের দমন করে ফেলি। ১।

হে তিলকমণি! তুমি আগত কৃত্যাকে দূরীকরণশালী এবং মন্ত্রযুক্ত রক্ষাত্মক সূত্রস্বরূপ। তুমি আমাদের সমান বলসম্পন্ন শত্রুগণকে লঙ্ঘন পূর্বক, অধিক বলশালী শত্রুগণকে নাশ করো। ২

যারা আমাদের পশু পুত্র ইত্যাদিকে বন্ধনকারী শত্রু, আমাদের সাথে যারা শত্রুতাচরণ করে, এবং আমরা যাতে নাশ করতে ইচ্ছা করি, সেই শত্রগণকে, হে মণি! তুমি বিনাশ করে দাও। আমাদের সমান বলসম্পন্ন শত্রুগণকে উল্লম্ফন পূর্বক, তুমি অধিক বলসম্পন্ন শত্রুদের সংহার করো ৷৷ ৩৷৷

হে মণি! তুমি শত্ৰুকৃত অভিচারকে জ্ঞাত আছো এবং স্বয়ং তেজের ধারক। তুমি অন্য-কৃত অভিচারসমূহ হতে আমাদের দেহকে রক্ষা-করণে সমর্থ। তুমি আমাদের সমান বলসম্পন্ন শত্রুদের লঙ্ন পূর্বক, অধিক বলশালী শত্রুগণকে সংহার করো। ৪

হে শবর্গকে সন্তাপ-দানশীল মণি! তুমি জ্বর ইত্যাদি যুক্ত সন্তাপ দানে সমর্থ এবং কৃত্যা ইত্যাদিকেও তুমি আপন সূর্যসদৃশ তেজে সন্তপ্ত করে থাকো। তুমি আমাদের সমান বলশালী শত্রুগণকে অতিক্রম করে অধিক বলসম্পন্ন শত্রুদের প্রথমেই নাশ করে দাও। ৫

সূক্তস্য বিনিয়োগঃ –তৃতীয়েনুবাকে সপ্ত সূক্তানি। তত্র দূষ্যা দূষিরসি ইতি প্রথমং সূক্তং। স্ত্রীশূদ্ররাজব্রাহ্মণকাঁপালিকান্ত্যজশাকিন্যাদিকৃতাভিচারে স্বাত্মরক্ষার্থং কৃত্যাপ্রতিহরণার্থং চ অনেন সূক্তেন তিলকমণিং সম্পত্য অভিমন্ত্র বধুীয়াৎ। তথা চ সূত্রং। দূষ্যা দূষিরসীতি স্বাক্তং বর্ধতি ইতি (কৌ. ৫।৩)। সুক্তিস্তিলকবৃক্ষঃ (শ্ৰক্তি) স্তিলক ইতি ভাষ্যকারঃ। তথা অস্য সূক্তস্য কৃত্যাপ্রতিহরণগণে পাঠাৎ কৃত্যানিৰ্হরণার্থে শাস্ত্যদকেপি এতৎ সূক্তং আবপনীয়ং। যদ আহ কৌশিকঃ। দূষ্যা দূষিরসি (২।১১) যে পুরস্কাৎ (৪।৪০) ঈশানাং ত্বা (৪।১৭) সমং জ্যোতিঃ (৪।১৮) উতো অস্যবন্ধুকৃৎ (৪।১৯) সুপর্ণধৃা (৫।১৪) যাং তে চক্রুঃ (৫।৩১) অয়ং প্রতিসরঃ (৮।৫) যাং কল্পয়ন্তি (১০।১) ইতি মহাশান্তিং আবপতে ইতি (কৌ. ৫।৩০)। অয়মেব কৃত্যাপ্রতিহরণগণঃ। তথা নক্ষত্রকল্পে কৃত্যাদূষণ এব চ। চাতনো মাতৃনামা চ (ন.ক.২৩) ইত্যত্র শান্তিকল্পে অথ শান্তৈঃ কৃত্যাদূষনৈশ্চাতনৈঃ (শা.ক.১৬)। ইত্যএ চ অস্য সূক্তস্য গণপ্ৰযুক্তো বিনিয়োগগাবগন্তব্যঃ। এবং বাস্পত্যাং রাজ্যশ্রীব্রহ্মবর্চ সকামস্যাভিচরতোভিচমানস্য চ ইতি (ন.ক.১৭) বিহিতায়াং বাৰ্হস্পত্যাখ্যায়াং মহাশূন্তো ও্যমণিবন্ধনেপি এতৎ সূক্তং। তৎ উক্তং নক্ষত্রকল্পে। বাস্পত্যায়াং দূষ্যা দূষিরসীতি স্বাক্তাং অভিচরতোভিচর্যমাণস্য চ ইতি (ন.ক.১৯)। কৃত্যাপ্রতিহরণকর্মণ্যেব আদ্যযৰ্চা কৃত্যায়া গুলফং সূত্রোওদ্রব্যেণ পারফিঞ্চেৎ। সূত্রং চা দূষ্যা দূষিরসীতি দৰ্য্যা ত্রিঃ সারূপবৎসেনাপোদকেন মথিতেন গুলান পরিষিঞ্চতি ইতি (কৌ. ৫৩)। (২কা, ৩অ. ১সূ)।

টীকা –সপ্ত সূক্তসমন্বিত তৃতীয় অনুবাকের এটি প্রথম সূক্ত। স্ত্রী-শূদ্র-রাজা-ব্রাহ্মণ-কাঁপালিক অন্ত্যজ শাকিনী ইত্যাদির দ্বারা অনুষ্ঠিত আভিচারিক কর্মসমূহ হতে নিজেকে রক্ষার উদ্দেশে এই সূক্ত-মন্ত্রগুলির দ্বারা তিলকবৃক্ষ হতে উৎপন্ন মণি (তিলকমণি) অভিমন্ত্রিত করে ধারণীয়।…ইত্যাদি। আপুহি শ্রেয়াংসমতি ইত্যাদি বাক্যের দ্বারা বলা হচ্ছে যে, আমাদের অপেক্ষা কম বলশালী বা সমান বলসম্পন্ন শত্রুদের আমরা নিজেরাই দমন করতে পারব; সুতরাং তিলকমণি যেন আমাদের অপেক্ষা অধিক বলযুক্ত শত্রুদেরই বিনাশ করে দেয়। (২কা, ৩অ. ১সূ)।

.

দ্বিতীয় সূক্ত : শত্রুনাশনম্

[ঋষি : ভরদ্বাজ দেবতা : দ্যাবাপৃথিবী, অন্তরিক্ষ, দেবতাবৃন্দ, ইন্দ্র ইত্যাদি ছন্দ : ত্রিষ্টুপ, জগতী, অনুষ্টুপ ]

দ্যাবাপৃথিবী উর্বন্তরিক্ষং ক্ষেত্রস্য পত্নরুগায়োহদ্ভুতঃ। উতান্তরিক্ষমুরু বাতগোপং ত ইহ তপ্যাং ময়ি তপ্যমানে ॥১॥ ইদং দেবাঃ শৃণুত যে যজ্ঞিয়া স্থ ভরদ্বাজো মহ্যমুকথানি শংসতি। পাশে স বন্ধো দুরিতে নি যুজ্যতাং যো অস্মাকং মন ইদং হিনস্তি ॥ ২॥ ইদমিন্দ্র শৃণুহি সোমপ যৎ ত্বা হৃদা শোচ জোহবীমি। বৃশ্চামি তং কুলিশেনেব বৃক্ষং যো অস্মাকং মন ইদং হিনস্তি ॥ ৩৷৷ অশীতিভিস্তিসৃভিঃ সামগেভিরাদিত্যেভিসুভিরঙ্গিবোভিঃ। ইষ্টাপূর্তমবতু নঃ পিতৃণমামুং দদে হরসা দৈব্যেন। ৪ দ্যাবাপৃথিবী অনু মা দীধীথাং বিশ্বে দেবাশো অনু মা রভধ্বম। অঙ্গিরসঃ পিতরঃ সোম্যাসঃ পাপমাচ্ছত্বপকামস্য কর্তা ॥ ৫ অতীব যো মরুতো মন্যতে নো ব্ৰহ্ম বা যো নিন্দিষৎ ক্রিয়মাণ। তপূংষি তস্মৈ বৃজিনানি সন্তু ব্ৰহ্মদ্বিষং দৌরভিসংতপাতি ॥ 1 সপ্ত প্রাণানষ্টেী মন্যস্তাংস্তে বৃশ্চামি ব্ৰহ্মণা। অয়া যমস্য সাদনমগ্নিদূতো অরষ্কৃতঃ ॥ ৭৷ আ দধামি তে পদং সমিদ্ধে জাতবেদসি। অগ্নিঃ শরীরং বেবেষ্টসুং বাগপি গচ্ছতু। ৮

বঙ্গানুবাদ –আকাশ, পৃথিবী ও তাদের মধ্যবর্তী স্থানে স্থিত অন্তরিক্ষ এবং তাতে বাসকারী অধিপতি দেবতা বায়ু, সূর্য, অগ্নি, লোকপালক বিষ্ণু ইত্যাদি সকলে এই অভিচার কর্মের দ্বারা। প্রেরণা প্রাপ্ত হয়ে শত্রুগণকে বিনাশশীল হোন। ১।

হে যজ্ঞযোগ্য দেবতাবৃন্দ! আমার নিবেদন। শ্রবণ করুন যে, বষট্‌কারের দ্বারা দেবতাগণের উদ্দেশে আহুতি দানকারী ভরদ্বাজ ঋষি আমার কাম্যবস্তুর ফলের (অর্থাৎ ঈপ্সিত সিদ্ধির) নিমিত্ত অভিচার-যোগ্য মন্ত্ৰসমূহ উচ্চারণ করছেন। যে শত্রু আমাদের এই শ্রেষ্ঠ কর্মে (যজ্ঞে), বিঘ্ন সৃষ্টি করে মনে দুঃখ দিয়েছে, তারা আমার এই (অভিচার) কর্মের দ্বারা মৃত্যুরূপ দুর্গতি প্রাপ্ত হোক। ২

হে ইন্দ্র! তোমার চিত্ত সোমপান করে প্রফুল্লিত হচ্ছে। তুমি আমার নিবেদনে মনোযোগ অর্পণ করো। আমি নিজে শত্রুগণকৃত দুষ্কর্মের কারণে তোমাকে বারংবার আহ্বান জানাচ্ছি। আমি স্বয়ং আপন শত্রুকে বৃক্ষের ন্যায় ছেদন করছি। ৩৷৷

ইন্দ্র এবং সামমন্ত্রের উদ্গাতাবৃন্দের দ্বারা প্রযুক্ত; অঙ্গিরা ঋষি, দ্বাদশ আদিত্য, অষ্টাবসু এবং রুদ্রগণের সাথে আমাদের পূর্বপুরুষগণের যে যজ্ঞ ইত্যাদি কামনা আছে এবং স্মৃতি বিহিত কূপ, [ বাপী, তড়াগ ইত্যাদি আছে, সেই কামনা পূর্তির দ্বারা প্রকটিত পুণ্য আমাদের রক্ষক হোক। আমি। এই অমুক (যথানাম) নামধারী শত্রুকে আপন অভিচার কর্মের মাধ্যমে কৃত্যারূপ দেবকোপের দ্বারা এই বিনাশ করছি। ৪

হে আকাশ-পৃথিবী! তোমরা শত্রুগণকে তিরস্কৃত করার নিমিত্ত তেজস্বী হয়ে ওঠো। হে বিশ্বদেবগণ! শত্রুবৃন্দকে সংহার করার নিমিত্ত প্রস্তুত (উদ্যোগী) হও। হে অঙ্গিরাগণ! হে পিতৃগণ! আমার শত্রুকে বশীভূত (বা নিগ্রহ) করতে তোমরাও তৎপর হয়ে ওঠো ॥ ৫৷৷

হে মরুৎ-গণ! যারা আমাদের হীন মনে করে এবং যারা আমাদের অনুষ্ঠানকেও নিন্দনীয় বলে থাকে, তাদের উভয় দলকেই তোমরা তোমাদের তেজ-রূপ আয়ুধে বন্ধন করো। আমার কর্মের প্রতি দ্বেষসম্পন্ন শত্রুকে সবিতাদেব সকল দিক হতে ব্যথিত করুন। ৬

তোমার নেত্র ইত্যাদি সপ্ত প্রাণ (মস্তক ও ছয় ইন্দ্রিয়) এবং কণ্ঠগত অষ্ট ধমনী (নাড়ী)-কে এবং অন্য অঙ্গগুলিকে অভিচার কর্মের দ্বারা ছিন্ন-ভিন্ন করে দিচ্ছি। হে শত্রু! তুমি শবরূপ আভূষণে সজ্জিত হয়ে যম-স্থান (যমালয়) প্রাপ্ত হও। ৭।

 আমি তোমার চূর্ণিত শরীরের সাথে তোমার পাদপাংশু জাতবেদা অগ্নিতে নিক্ষেপ করছি। তার দ্বারা এই অগ্নি তোমার দেহে প্রবিষ্ট হয়ে তোমার প্রাণ ও বাকশক্তিকেও ব্যাপ্ত করুক ৮

সূক্তস্য বিনিয়োগঃ –দ্যাবাপৃথিবী উরু ইতি সূক্তেন অভিচার কর্মণি দীক্ষার্থং বেণুদণ্ডং বৃশ্চতি।…তথা অনেনৈব সূক্তেন দ্বেষ্যনিমূদনকর্মণি দক্ষিণাভিমুখং ধাবতঃ শত্রাঃ পদেষু বৃক্ষপাণি প্রক্ষিপ্য পরশুনা ছিত্বা সপাংসূন পর্ণচ্ছেদান বধকপাত্রে প্রক্ষিপ্য আনীয় ভ্রাষ্ট্রে ভর্জয়েৎ (কৌ. ৬১)। (২কা, ৩অ. ২সূ)।

টীকা –এই সূক্তমন্ত্রগুলির দ্বারা অভিচার কর্মে দীক্ষার নিমিত্ত বংশদণ্ড ছেদনীয়। এই সূক্তের দ্বারা বিদ্বেষকারীর পরাজয় কর্মে দক্ষিণাভিমুখে ধাবিত.শত্রুর পদে বৃক্ষপত্র প্রক্ষিপ্ত করে, তা পরশুর (অর্থাৎ কুঠারের) দ্বারা ছেদন করে পদলগ্ন ধূলির সাথে বধকপাত্রে প্রক্ষেপণ পূর্বক ভর্জনীয় (অর্থাৎ ভাজা উচিত)।জাতবেদা অর্থে অগ্নিকে লক্ষ্য করা হয়েছে–যিনি জাতমাত্ৰকেই জানেন বা জাত প্রাণিমাত্রই যাঁকে জানে বা সকল প্রাণির অভ্যন্তরে (জঠরে) যিনি অধিষ্ঠিত হয়ে থাকেন ॥ (২কা, ৩অ. ২সূ)।

.

তৃতীয় সূক্ত : দীর্ঘায়ুঃপ্রাপ্তিঃ

[ঋষি : অথর্বা দেবতা : অগ্নি, বৃহস্পতি, সকল দেবগণ ছন্দ : ত্রিষ্টুপ, অনুষ্টুপ, জগতী ]

আয়ুদা অগ্নে জরসং বৃণানো ঘৃতপ্রতীকো ঘৃতপৃষ্ঠো অগ্নে। ঘৃতং পীত্বা মধু চারু গব্যং পিতেব পুত্ৰানভি রক্ষতাদিমম্ ॥ ১: পরি ধ ধ নো বর্ডসেমং জরামৃত্যুং কৃণুত দীর্ঘমায়ুঃ। বৃহস্পতিঃ প্রাযচ্ছদ বাস এতৎ সোমায় রাজ্ঞে পরিধাতবা উ॥ ২॥ পরীদং বাসো অধিথাঃ স্বস্তয়েভূষ্টীনামভিশস্তিপা উ। শতং চ জীব শরদঃ পুরূচী রায়শ্চ পোষমুপসংব্যয়স্ক ॥ ৩৷ এহ্যশ্মনমা তিষ্ঠাশ্ম ভবতু তে তনূঃ। কৃন্বন্তু বিশ্বে দেবা আয়ুষ্টে শরদঃ শতম্ ॥ ৪। যস্য তে বাসঃ প্রথমবাস্যং হরামস্তং ত্বা বিশ্বেইবন্তু দেবাঃ। তং ত্বা ভ্রাতরঃ সুবৃধা বর্ধমানমনু জায়ন্তাং বহবঃ সুজাতম্ ॥ ৫॥–

বঙ্গানুবাদ –হে অগ্নি! তুমি (মনুষ্যবালকগণকে) শতায়ু (শত বৎসর পরিমিত আয়ু) প্রদানকারী। তুমি ঘৃতের প্রতীক এবং ঘৃত তোমার অবয়বসমূহের আশ্রয়রূপ। এই কারণে এই মন্ত্রপূত গো-ঘৃত পান করে তুমি তৃপ্ত হও এবং পিতা কর্তৃক পুত্রকে রক্ষা-করণের ন্যায় এই বালককে রক্ষা করে শত বৎসরের আয়ু প্রদান করো। ১।

হে দেবতাগণ! এই বালককে পরিধান ধারণ করাও, একে তেজস্বী করে দাও এবং পূর্ণাবস্থাসম্পন্ন করো (অর্থাৎ পূর্ণ মনুষ্যত্বে উপনীত করো)। একে শত বৎসরের আয়ু প্রদান করো। ইন্দ্র ইত্যাদির স্বামী (বা প্রভু) বৃহস্পতি সোমের নিমিত্তও এই পরিধান ধারণ করিয়েছিলেন। ২

হে বালক! এই পরিধান (বস্ত্র) ক্ষেমের (মঙ্গলের) নিমিত্ত ধারণ করানো হয়েছে। তুমি এর প্রভাবে গো-গণের হিংসাজনিত ভয় হতে রক্ষা প্রাপ্ত হয়ে তাদের পোষণ, করো এবং পুত্র-পৌত্র ইত্যাদি-সম্পন্ন হয়ে শত বৎসর আয়ুষ্মন্ হও। তুমি সমৃদ্ধিযুক্ত ঐশ্বর্যকেও লাভ করো ॥ ৩

হে বালক! আপন দক্ষিণ পাদের দ্বারা এই পাষাণখণ্ডের উপর আঘাত করো এবং এর ন্যায় দৃঢ় এবং নিরোগ থাকো। সকল দেবগণ তোমাকে শত বৎসর আয়ুষ্মন করুন। ৪

হে বালক! তোমার পূরাতন বস্ত্র উন্মোচিত করে আমি গ্রহণ করছি। তুমি সমৃদ্ধির দ্বারা সুশোভিত হও। তোমার জন্মের পরে, পশু পুত্র ইত্যাদিতে প্রবৃদ্ধ হয়ে সুন্দর ভ্রাতা উৎপন্ন হোক এবং সকল দেবতা তোমার রক্ষক হোন ॥ ৫॥

সূক্তস্য বিনিয়োগঃ –আয়ুদাঃ ইতি সূক্তং গোদানাখ্যে সংস্কারকর্মণি শান্তুদকে অনুযোজয়েৎ। তত্রৈব কর্মণি অনেনৈব সূক্তেন আজ্যং হুত্বা ব্রহ্মচারিগণা মূর্ধি সম্পান আনয়েৎ। ইত্যাদি৷৷ (২কা, ৩অ. ৩সূ) ৷৷

 টীকা –মূলতঃ দীর্ঘায়ুপ্রাপ্তির উদ্দেশ্যে এই সূক্তের বিনিয়োগ নির্দিষ্ট আছে। তবে গোদানাখ্য সংস্কার কর্মে শান্তিজল প্রদানে এর প্রয়োগ আছে। এই গোদানাখ্য কর্মে এই সূক্তমন্ত্রের দ্বারা আজাহুতি প্রদান করে ব্রহ্মচারী বালকের মস্তকে জলসিঞ্চন করা হয়।…ইত্যাদি। এছাড়া যথাযথ মন্ত্রের বঙ্গানুবাদে বালক ব্রহ্মচারীর গো-ভীতি নিবারণ, নব-বস্ত্র পরিধান ইত্যাদি বর্ণিত হয়েছে। (২কা, ৩অ. ৩সূ)।

.

চতুর্থ সূক্ত : দস্যুনাশনম্

 [ঋষি : চাতন দেবতা : শালাগ্নিদৈবত্যম্ ছন্দ : অনুষ্টুপ, ভূরিক, বৃহতী ]

নিঃসালাং ধৃষ্ণুং ধিষণমেকবাদ্যাং জিঘস্ব। সর্বাশ্চন্ডস্য নপ্ত্যো নাশয়ামঃ সদান্বঃ ॥১॥ নির্বো গোষ্ঠাদজামসি নিরক্ষান্নিরুপানসাৎ। নির্বো মন্দ্যা দুহিতরো গৃহেভ্যশ্চাতয়ামহে ॥ ২॥ অসৌ যো অধরা গৃহস্ত সত্ত্বরায্যঃ। তত্র সেদিচ্যতু সবাশ্চ যাতুধান্যঃ ॥ ৩॥ ভূতপতির্নিরজত্বিশ্চেতঃ সদান্থাঃ। গৃহস্য বুধ আসীনাস্তা ইন্দ্রো বজ্রেণাধি তিষ্ঠত। ৪ যদি স্থ ক্ষেত্রিয়াণাং যদি বা পুরুষেষিতাঃ। যদি স্থ দস্যুভ্যো জাতা নশ্যতেতঃ সদান্থঃ ॥ ৫॥ পরি ধামান্যাসামাশুগাষ্ঠামিবাসর। অজৈষং সর্বান্ আজী বোনশ্যতেতঃ সদান্বঃ ॥ ৬৷৷

বঙ্গানুবাদ –উন্নত শরীরশালিনী, সন্তান নষ্টকারিণী, ভয়-উৎপাদিকা নিঃসালা নাম্নী রাক্ষসী, ধিষণ নামক পাপ-গৃহ, কঠোর বাক্যশালিনী একবাদ্যা রাক্ষসীকে আমরা সংহার করছি এবং চণ্ড নামক পিশাচিনীদেরও বিতাড়িত করছি। ১।

 হে মগুন্দী নামধারী পিশাচীর পুত্রীগণ! আমরা তোমাদের গো-গণের গোষ্ঠ হতে নিষ্ক্রান্ত (বিতাড়িত) করে দিচ্ছি। ধন-ধান্য যুক্ত ভবন এবং আবাস স্থানসমূহ হতেও দূরীকৃত করে তোমাদের নাশ করছি। ২।

পৃথিবী হতে দূরে এবং নীচে যে পাতাল লোক আছে, সেখানে পুণ্য কার্যে বিঘ্ন উপস্থিতকারিণী অণয়ি নাম্নী, রাক্ষসীগণ গমন করুক এবং বিনাশিনী নাম্নী রাক্ষসীগণও এই (পৃথিবী) লোককে ত্যাগ করে পাতাল লোকে গমন করে অবস্থান করুক। ৩

ভূতনাথ রুদ্র ও ইন্দ্র এই আক্রোশশালিনী পিশাচীগণকে প্রহার পূর্বক (আমাদের) আবাস স্থান হতে দূর করুন। ৪

হে রাক্ষসীবর্গ! তোমরা মাতা-পিতার দেহ হতে প্রাপ্ত (ক্ষেত্রিব্যাধিরূপ) কুষ্ঠ, অপপ্যার, গ্রহণী ইত্যাদিকে উৎপন্ন করে থাকো। এই রকমের তোমরা আমার এই ঘর হতে দূর হয়ে বিনাশ প্রাপ্ত হও। ৫।

 আপন লক্ষ্যের উপর আক্রমণ করে শীঘ্রগামী অশ্ব যেমন স্তব্ধ হয়ে যায়, সেই রকমেই এই পিশাচীগণের আবাসস্থানগুলির উপরে আমি আক্রমণ সংঘটিত করেছি। হে পিশাচীগণ! তোমরা সকলে সেই সংগ্রামে (বা আক্রমণে) পরাজিত হয়েছ। এবং আমি তোমাদের গৃহগুলিকেও অধিকার করে নিয়েছি। এখন তোমরা আশ্রয়হীনা হয়ে মৃত্যু-প্রাপ্ত হও ৷ ৬ ৷

সূক্তস্য বিনিয়োগঃ –নিঃসালাং ইতি সূক্তেন মৃতাপত্যায়া স্ত্রিয়া অপত্যনাশপরিহারায় ত্ৰিষু মণ্ডপেষু একৈকাস্মদপাত্রে সীসেষু চ সম্পাতানয়নং সীসোপরি স্থিতায়ান্তস্যাঃ সম্পাতিতোদকেন আপ্লাবনং চ কৃত্বা স্বগৃহং আনীয় শাদকেন অভিষিচ্য তস্যৈ পুরোডাশককালঙ্কারা অভিমন্ত্র দদ্যাৎ। অথ বা একাস্মন্নেব মণ্ডপে অনেন সূক্তেন ঔদুম্বরী সমিধস্তয়া আধাপ্য পূর্ববৎ শান্ত্যদকাভিষেকাদিকং কুর্যাৎ … ইত্যাদি৷৷ (২কা, ৩অ. ৪সূ)।

টীকা –মৃতাপত্যা অর্থাৎ যে নারীর সন্তান জাত হয়ে মারা যায়, তার সেই অপত্যনাশ পরিহারের নিমিত্ত তিনটি মণ্ডপে এক একটি করে জলপাত্রে সীসা সম্পাতিত করে সেই জলকে এই সূক্তমন্ত্রের দ্বারা অভিমন্ত্রিত করণীয়। অতঃপর সেই জলে সেই নারীকে অভিসিঞ্চিত করে তার আপন গৃহে আনয়নপূর্বক শান্তিজলে অভিষিক্ত করণীয়। সেই সঙ্গে তাকে এই মন্ত্রে অভিমন্ত্রিত পুরোডাশ, কন্দুক (গোলা) ও অলঙ্কার প্রদান করণীয়। এর বিকল্পে একটি মণ্ডপেই এই সূক্তের দ্বারা ঔদুম্বরী সমিধ স্থাপন পূর্বক এই মন্ত্রের দ্বারা পূর্ববৎ শান্তিজল ইত্যাদির প্রয়োগ করণীয়। গৃহে গো-ইত্যাদি পশুর বন্ধ্যাত্ব নিবারণকল্পে, দৈবহত গৃহের দোষ। খণ্ডনকল্পেও এই সূক্তের বিনিয়োগ বিহিত আছে। (২কা, ৩য়, ৪সূ)।  

.

পঞ্চম সূক্ত : অভয়প্রাপ্তিঃ

[ঋষি : ব্রহ্মা দেবতা : প্রাণ, অপান, আয়ু ছন্দ : গায়ত্রী ]

যথা দ্যৌশ্চ পৃথিবী চ ন বিভীতো ন রিষ্যতঃ। এবা মে প্রাণ মা বিভেঃ ॥ ১. যহাহ রাত্রী চ ন বিভীতো ন রিষ্যতঃ। এবা মে প্রাণ মা বিভেঃ ॥ ২॥ যথা সূর্যশ্চ চন্দ্ৰশ্চ ন বিভীতো ন রিষ্যতঃ। এবা মে প্রাণ মা বিভেঃ ॥ ৩ যথা ব্ৰহ্ম চ ক্ষত্রং চ ন বিভীতো ন রিষ্যতঃ। এবা মে প্রাণ মা বিভেঃ ॥ ৪। যথা সত্যং চামৃতং চ ন বিভীতো ন রিষ্যতঃ। এবা মে প্রাণ মা বিভেঃ ॥ ৫৷৷ যথা ভূতং চ ভব্যং চ ন বিভীতো ন রিষ্যতঃ। এবা মে প্রাণ মা বিভেঃ ॥৬॥

বঙ্গানুবাদ –দেবাশয় রূপ আকাশ এবং মনুষ্যের আশ্রয়ভূত পৃথিবী–এই দুই লোক সকলের উপজীব্য; অতএব উপজীব্যকে কেউ নষ্ট করতে পারে না। সেই রকমেই হে প্রাণ! তুমি মরণ-শঙ্কা হতে রহিত হও এবং এই মন্ত্রবলের দ্বারা আকাশ ও পৃথিবীর ন্যায় চিরজীবী হও ১৷

 যেমন দিবা ও রাত্রি (চিরকাল অস্তিত্বশালী হওয়ার কারণে) কখনও বিনষ্টির ভয়ে ভীত হয় না, তেমনই হে প্রাণ! তুমিও তাদের মতো মরণ-ভীতি থেকে রহিত হয়ে থাকো, এবং এই মন্ত্রের বলে চিরজীবী হয়ে থাকো। ২।

 যেমন সূর্য ও চন্দ্র (চিরন্তন হওয়ার কারণে) কখনও ভয়ভীত হয় না, তারা বিনষ্টও হয় না, তেমনই হে আমার প্রাণ! তুমিও কোন কিছু হতে ভয় প্রাপ্ত হয়ো না এবং মৃত্যুর আশঙ্কা পরিত্যাগ করো। তুমিও সূর্য ও চন্দ্রের মতো চিরজীবী হয়ে থাকো ৷৷ ৩৷৷

যেমন ব্রাহ্মণ ও ক্ষত্রিয় জাতিগুলি (শাশ্বত জাতি হওয়ার কারণে) ভয়ভীত হয় না, বিনষ্টও হয় না, তেমনই হে আমার প্রাণ! তুমি মরণ-শঙ্কা হতে রহিত হও এবং ব্রাহ্মণ ও ক্ষত্রিয় জাতির ন্যায় চিরজীবী হয়ে থাকো ॥ ৪৷

 যেমন সত্য ও অসত্য (চিরন্তন হওয়ায়) কখনও কিছুতে ভয় পায় না, বিনষ্টি প্রাপ্তও হয় না, তেমনই হে আমার প্রাণ! তুমিও ভয়প্রাপ্ত হয়ো না এবং বিনাশপ্রাপ্তির চিন্তা করো না; তুমিও সত্য ও অসত্যের সমানই চিরজীবী হয়ে থাকো। ৫

যেমন ভূত (অতীত) ও ভবিষ্য (চিরকাল প্রবাহমান হওয়ার কারণে) কিছু হতে ভয় পায় না, নষ্টও হয় না (অর্থাৎ আজ যা বর্তমান, কাল তা অতীত হয়েই চিরকাল অস্তিত্বসম্পন্ন হয়ে থাকবে, অনাগত কালও তেমনই চিরকাল আসতে থাকবে–সুতরাং এদের কেউ বিনাশ বা শেষ করতে পারে না); তেমনই হে। প্রাণ! তুমিও মৃত্যুর শঙ্কা ত্যাগ করে চিরকাল পর্যন্ত জীবিত থাকো। ৬।

সূক্তস্য বিনিয়োগঃ –যথা দ্যৌঃ ইতি সূক্তেন আয়ুষ্কামঃ স্থালীপাকং ওদনং শান্ত্যদকেন সংক্ষ্যে অভিমন্ত্র প্রাশীয়াৎ।… ইত্যাদি। (২কা, ৩অ. ৫সূ)।

টীকা— এই সূক্তের বিনিয়োগ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে–যে ব্যক্তি আয়ু কামনা করেন তিনি একটি স্থালীতে পাক করা অন্ন শান্তিজলে প্রোক্ষণপূর্বক এই, সূক্তমন্ত্রে অভিমন্ত্রিত করে ভোজন করবেন। এতে মৃত্যুভয় রহিত হয় ॥ (২কা, ৩অ. ৫সূ)।

.

ষষ্ঠ সূক্ত : সুরক্ষা

[ঋষি : ব্রহ্মা দেবতা : প্রাণ, অপান, আয়ু ছন্দ : ত্রিষ্টুপ, গায়ত্রী ]

প্রাণাপানৌ মৃত্যোর্মা পাতং স্বাহা ॥১॥ দ্যাবাপৃথিবী উপত্যা মা পাতং স্বাহা ॥ ২॥ সূর্য চক্ষু মা পাহি স্বাহা। ৩। অগ্নে বৈশ্বানর বিশ্বৈর্মা দেবৈঃ পাহি স্বাহা ॥ ৪৷৷ বিশ্বম্ভর বিশ্বেন মা ভরসা পাহি স্বাহা ॥ ৫

বঙ্গানুবাদ –ঊর্ধ্বমুখ করে চেষ্টা-করণশালী হয় প্রাণ, নিম্নের দিক হতে চেষ্টাবান হয় অপান। উভয়ের অভিমানী হে দেবতাদ্বয়! আমাকে মরণ হতে রক্ষা করো। এই স্বাহাকৃত আহুতি গ্রহণ করো। ১।

হে আকাশ ও পৃথিবীতে স্থিত দিনের অভিমানী দেবতাগণ! তোমরা শ্রবণশক্তি প্রদান করে আমাকে রক্ষা করো এবং আমার প্রদত্ত এই স্বাহাকৃত আহুতি স্বীকার করো। ২।

 হে নেত্রাভিমানী আদিত্য! তুমি দর্শনশক্তি প্রদান করে আমাকে রক্ষা করো। আমি তোমার উদ্দেশে স্বাহা মন্ত্রে এই আহুতি প্রদান করছি, তুমি তা স্বীকার করে নাও ৩

হে বৈশ্বানর অগ্নি! তুমি বৈদ্যুতিক অগ্নি ও সূর্য হতে উৎপন্ন। তুমি বাক্-ইন্দ্রিয় প্রদান করে আমাকে রক্ষা করো। আমি স্বাহা মন্ত্রে এই আহুতি নিবেদন করছি। ৪।

 হে বিশ্বের (অর্থাৎ সকলের) পোষণকারী বিশ্বম্ভর অগ্নি! তুমি আপন পোষণ শক্তির দ্বারা আমাকে রক্ষা করো। তোমার উদ্দেশে স্বাহা মন্ত্রে এই আহুতি প্রদান করছি। ৫৷৷

সূক্তস্য বিনিয়োগঃ — প্রাণাপানৌ ইতি সূক্তেন আজ্যসমিৎপুরোডাশপয়ঞোদনপায়সপশু ব্রীহিযবতিলধানাকরম্ভশম্বুল্যাখ্যানি ত্রয়োদশ দ্রব্যানি আয়ুষ্কামো জুহুয়াৎ।…ইত্যাদি৷৷(২কা, ৩অ. ৬সূ)৷৷

টীকা –যিনি আয়ু কামনা করেন, তাঁর পক্ষে এই সূক্তের দ্বারা আজ্য, সমিৎ, পুরোডাশ, দুগ্ধ, অন্ন, পায়স, পশু, ব্রীহি, যব, তিল, ধান, করম্ভ ও শঙ্কুল (পিষ্টক)–এই ত্রয়োদশটি দ্রব্যের দ্বারা হোম করণীয়।… ইত্যাদি। (২ কা. ৩অ. ৬সূ)।

.

সপ্তম সূক্ত : বলপ্রাপ্তিঃ

[ঋষি : ব্রহ্মা দেবতা : ওজঃ প্রভৃতি ছন্দ : ত্রিষ্টুপ]

ওজোহস্যোজো মে দাঃ স্বাহা। ১। সহোহসি সহো মে দাঃ স্বাহা। ২৷৷ বলমসি বলং মে দাঃ স্বাহা ॥ ৩৷৷ আয়ুরস্যায়ুর্মে দাঃ স্বাহা ॥ ৪৷৷ শ্রোমসি শ্রোত্রং মে দাঃ স্বাহা ॥ ৫॥ চক্ষুরসি চক্ষুর্মে দাঃ স্বাহা ॥ ৬।

বঙ্গানুবাদ –হে ওজ! তুমি ঘৃতের ন্যায় শারীরিক স্থিতি অষ্টম ধাতু। তুমি আমাকে ওজ প্রদান করো, আমি তোমার নিমিত্ত স্বাহা মন্ত্রে এই আহুতি প্রদান করছি। ১।

হে অগ্নি! তুমি শত্রুবর্গকে তিরস্কৃত করণে সমর্থ। আমাকে তেজ প্রদান করো। আমি তোমার উদ্দেশে স্বাহা মন্ত্রে এই আহুতি নিবেদন করছি। ২।

হে অগ্নি! তুমি বলস্বরূপ। আমাকে বল প্রদান করো। আমি তোমার নিমিত্ত স্বাহা মন্ত্রে এই হবিঃ নিবেদন করছি ৷ ৩৷

হে অগ্নি! তুমি আয়ুস্বরূপ। আমার জীবনের নিমিত্ত শতবর্ষের (দীর্ঘ) আয়ু প্রদান করো। আমি তোমার নিমিত্ত স্বাহা মন্ত্রে এই হবিঃ নিবেদন করছি। ৪।

হে অগ্নি! তুমি শ্রোত্রস্বরূপ, এই নিমিত্ত আমাকে শ্রবণশক্তি প্রদান করো। তোমার উদ্দেশে স্বাহা মন্ত্রে এই হবিঃ প্রদান করছি। ৫।

 হে অগ্নি! তুমি চক্ষুস্বরূপ। আমাকে দর্শনশক্তিরূপ নেত্র প্রদান করো। আমি তোমার উদ্দেশে স্বাহা মন্ত্রে এই হবিঃ প্রদান করছি৷৷ ৬ ৷৷

 হে অগ্নি! তুমি সকলের পালনকর্তা; সেই নিমিত্ত আয়ু-ভঙ্গের কারণসমূহ হতে রক্ষাপূর্বক আমাদের পালন করো। তোমার উদ্দেশে স্বাহা মন্ত্রে প্রদত্ত আমার এই হবিঃ তুমি গ্রহণ করো। ৭

সূক্তস্য বিনিয়োগঃ— ওজোসি ইত্যনেন আয়ুষ্কামঃ পূর্বং উক্তপ্রকারেণ ত্রয়োদশ দ্রব্যাণি জুহুয়াৎ।…ইত্যাদি। (২কা, ৩অ. ৭সূ)।

টীকা –আয়ুষ্কামী জন এই সূক্তমন্ত্রের দ্বারা পূর্ব সূক্তে উল্লিখিত আজ্য, সমিৎ, পুরোড়াশ ইত্যাদি ত্রয়োদশ সংখ্যক দ্রব্য সহযোগে পূর্ব সূক্তবৎ হোম করবেন।-অগ্নিই ওজঃ বা তেজঃ সহ শরীরস্থিতির দেবতা। (২কা, ৩অ, ৭সূ)।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *