২৫. শম্পা নামের সেই হারিয়ে যাওয়া মেয়েটা

কিন্তু শম্পা নামের সেই হারিয়ে যাওয়া মেয়েটা কি সত্যিই হারিয়ে গেল? সমাজ থেকে, পৃথিবী থেকে, আলোর জগৎ থেকে?

হয়তো আলোর জগৎ সেই হিসেবই দেবে, কিন্তু শম্পার হিসেব তো চিরদিনই সৃষ্টিছাড়া, তাই ওর মতে ও একটা উজ্জ্বল আলোর জগতে বাস করছে।

অন্ততঃ এখন ওর মুখে অন্ধকারের চিহ্নমাত্র নেই। যদিও পরিবেশটা দেখলে ওর মা-বাপ বা পরিচিত জগৎ হয়তো মূর্ছাহত হয়ে পড়ে যেতে পারে।

মানিকতলায় একটা মাঠকোঠার নড়বড়ে বাঁশ-বাখারির বারান্দায় বসে আছে ও একটা প্যাকিং কাঠের টুলে, সামনে জীর্ণ একখানা ক্যাম্বিশের চেয়ারে সত্যবান নামের সেই লোকটা। হিসেবমতো বলা যেতে পারে ওর জীবনের শনি অথবা রাহু।

সত্যবান নিজেও নিজেকে সেই আখ্যাই দিয়েছে। সর্বদাই বলেছে, আমিই তোমার শনি, রাহু, কেতু! কী কুক্ষণেই যে আমার সঙ্গে দেখা হয়েছিল তোমার!

এখনো বলছিল সেই কথাই, আরো একজন বারান্দায় উঠে এলো বাঁশের সিঁড়ি বেয়ে। সত্যবানের চেয়ে কিছু বড়ো বলে মনে হয়। চেহারাটা নিতান্ত হতভাগ্যের মতো, আধময়লা একটা পায়জামা শার্ট পরা, চুলগুলো তেল অভাবে রুক্ষ।

ছেলেটার হাতে দুতিনটে ঠোঙা।

সেগুলো নামাতে নামাতে বলে, উঃ, এতো দেরি হয়ে গেল! রাস্তায় তো সব সময় মেলার ভিড়!

শম্পা বলে ওঠে, যাক বাবা, তুমি এসে গেছে বংশীদা, বাঁচলাম। এই অকৃতজ্ঞ লোকটা আমাকে গলাধাক্কা দিয়ে তাড়িয়ে দিচ্ছিল প্রায়। আর বেশী দেরি করলে তুমি হয়তো আমাকে আর দেখতেই পেতে না।

বংশী একটা ঠোঙা খুলে একটা কমলালেবু বার করে ছাড়তে ছাড়াতে বলে, তা ওরকম দুর্ব্যবহার করার কারণটা কী?

সেই পুরনো কারণ। কী কুক্ষণে দেখা হয়েছিল। আগে তবু বলছিলো ওই আমার জীবনের শনি, এখন উল্টো গাইছে। বলছে, আমিই নাকি ওর জীবনের শনি। আমার সঙ্গে দেখা হয় ইস্তক ওর মুখ গেছে, স্বস্তি গেছে, ঘূর্তি গেছে, শেষ পর্যন্ত পা দুখানাও গেল।

বংশী ছাড়ানো লেবুর কোয়াগুলো লেবুর খোসার আধারে রেখে সত্যবানের দিকে বাড়িয়ে ধরে বলে, নে, খা! তারপর একটু হেসে বলে, জাম্বোটার কি ধারণা তুই-ই গুণ্ডা লাগিয়ে বোমা ফেলিয়ে ওর পা উড়িয়ে দিয়েছিস?

তা নয়, ওর ধারণা আমার গ্রহ-নক্ষত্রই শুণ্ডা হয়ে ওর পিছু পিছু ধাওয়া করে ওকে পেড়ে ফেলেছে।

গ্রহ-নক্ষত্তর! সেটা আবার কী বস্তু রে শম্পা?

সে একটা ভয়ঙ্কর বস্তু। ইহ-পৃথিবীতে যা কিছু ঘটছে সব কিছুই নাকি ওই ওনাদের নির্দেশে। হিমালয় পাহাড় থেকে তৃণখন্ড পর্যন্ত সবাই ওনাদের অধীনে।

তা হলে তো কোনো বালাই-ই নেই। বংশী বলে এখন এই মশলাপাতি দিয়ে রান্নাটা করে ফ্যাল।

বংশীদা সত্যবান প্রায় আর্তনাদ করে ওঠে, তুমি ওকে ওর বাড়িতে পৌছে দিয়ে আসবে কিনা?

আমি দিয়ে আসবো? ও কি নাবালিকা নাকি?

তারও অধম। এ বোকার মত বোলো না বংশীদা। ও যেন আমার মাথায় পর্বতভার হয়ে চেপে বসে আছে।

উঃ, দেখছো বংশীদা, একেই বলে অকৃতজ্ঞ পৃথিবী!

শম্পা ঠোঙাগুলো গুছিয়ে নিয়ে দেখতে দেখতে বলে, আবার কেন গাজর নিয়ে এলে বংশীদা? ওই গাঁইয়াটা তে গাজরের ঝোল খেতে চায় না!

সত্যবান উত্তেজিত ভাবে বলে, এভাবে চালিয়ে চললে আমি আর কিছুই খাবো না বংশীদা। এই জীবন আমার অসহ্য হয়ে উঠেছে। আমায় তোমরা নিশ্চিন্তে মরতে দাও।

শান্তিতে মরতে দেবো? শম্পা গুছিয়ে বসে পা দোলাতে দোলাতে বলে, দেখছে বংশীদা, কী “তুচ্ছ” জিনিসটিই চাইছেন বাবু! শান্তিতে মরা! ভারী সস্তা, না? বলি তুমি আমায় শান্তিতে মরতে দিলে?

আমি তোমায় বলেছিলাম, গোয়েন্দার মত আমার পিছু নিয়ে নিজে অশান্তিতে মরতে আর আমায় অশান্তিতে মারতে?

বংশী হেসে ওঠে, কে কাকে কী বলে জাম্বো? ইহ-পৃথিবীতে কে কাকে দিয়ে বলে-টলে কী করাতে পারে বল? যার ঘাড়ে যা চাপে, যে যার ঘাড়ে চাপে। যে মহীয়সী পেতনীটি তোর ঘাড়ে চেপে বসেছে, সে তোকে মরার পরেও ছাড়বে মনে করেছিস? হয়তো সাতজন্ম তোর পিছু পিছু ধাওয়া করে বেড়াবে!

বংশীদা আমায় পেতনী বললে?

আহা লক্ষ্য করিস তার আগে একটা উচ্চাঙ্গের বিশেষণ জুড়েছি!

সেটা আরো বিচ্ছিরি।

সত্যবান সামনের টুলটার ওপর একটা ঘুষি বসিয়ে বলে ওঠে, যার সবটাই বিচ্ছিরি, তার কোনখানটাকে আর ভালো বলবে? এই যে তুমি একটা প্রতিষ্ঠাপন্ন ঘরের মেয়ে, তোমার উচ্চবংশের মুখে চুনকালি লেপে বাবা-মার মাথা হেঁট করে দিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে এসে আমার মতন একটা হাভাতে লক্ষ্মীছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘুরছে, এর মধ্যে কোনটা ভালো শুনি?

শম্পা ওর কথার মাঝখানে বাধা দেয়নি, শুধু কৌতুকের মুখে তাকিয়ে ছিল, এখন হেসে উঠে বলে, দেখছো বংশীদা, আমার হাওয়া লেগে লেগে জাম্বোবাবুর ভাষাজ্ঞানের কতটা উন্নতি হয়েছে। লক্ষ্য করেছো? প্রতিষ্ঠা-পননো, উচ্চ বংশ, আরো কী যেন একটা! নাঃ, আমার ক্যাপাসিটি স্বীকার করতেই হবে তোমায় বংশীদা!

বংশী সস্নেহে হেসে বলে, ছোঁড়াকে সর্বদা অতো জ্বালাস কেন বল্ দেখি শম্পু?

ওই! ওই! সত্যবান রেগে রেগে বলে, ওর নাম হচ্ছে ওর ভালোবাসা!

যাক, এতোদিনে তাহলে আমার স্বরূপ চিনলে? শম্পা আরো জোরে জোরে পা দোলাতে দোলাতে বলে, তাহলে আর বৃথা বিদ্রোহ করতে চেষ্টা কোরো না।

শম্পা! সত্যবান হতাশ গলায় বলে, সত্যিই আমি শান্তিতে মরতে চাই।

যে যা চায় তা যদি পেতো, তাহলে তো পৃথিবী স্বর্গ হয়ে যেতো হে মশাই! আমি তো একখানি চতুস্পদ জীব চেয়েছিলাম, পেয়েও ছিলাম, কপালক্রমে সে-ই দ্বিপদেই দাঁড়ালো। চারখানার দু-খানা গেল। তবেই বোঝো?

বংশী হেসে বলে, তোদের এ ঝগড়া তো সারাজীবনেও মিটবে না, চালা বসে বসে,–আমি তোর বাসন মাজবার জলটা তুলে এনে দিই। বংশী চলে যায়।

সত্যবান চড়া গলায় বলে ওঠে, কেন, জলই বা তুলে এনে দেওয়া হবে কেন? বস্তির ওই সব মেয়েদের মত টিপকলে গিয়ে কোঁদল করে করে বাসন মাজাটাই বা হয় না কেন?

শম্পা অম্লান গলায় বলে, ওই কোদলটা রপ্ত করবার সময় পাচ্ছি না যে! তোমার সঙ্গে কোঁদল করতে করতেই–

সত্যবান ওর দিকে তাকিয়ে গম্ভীর গলায় বলে, সত্যি বলছি শম্পা, তোমার এই আত্মত্যাগ–না তা নয়–আত্মহত্যা, আমাকে যেন বেঁধে মারছে।

শম্পা হঠাৎ হাততালি দিয়ে বলে ওঠে,‘আচ্ছা! আরো দুটো বাড়লো। আত্মত্যাগ আত্মহত্যা!…নাঃ, আর কিছুদিনের মধ্যেই তোমাকে একখানি অভিধান করে তুলতে পারবো!…বংশীদা, ও বংশীদা, শুনে যাও!

সত্যবান আর কথা বলে না।

টুলটার ওপরই হাত জড়ো করে মাথা ঝুঁকিয়ে বসে থাকে।

শম্পা একটুক্ষণ তাকিয়ে দেখে।

লোকটাকে যেন একটা ধ্বংসস্তূপের মত দেখতে লাগছে। শম্পা কি ব্যর্থ হবে? তাই কখনো হতে পারে? ওকে বাঁচাতেই হবে। তা ভিন্ন শম্পার বাঁচবার উপায় কি?

ওর আবেগকে প্রশমিত হতে দেবার জন্যে সময় দিতে শম্পা চুপচাপ তাকিয়ে থাকে আকাশের দিকে। আর হঠাৎ একটা চিন্তায় যেন আশ্চর্য একটি কৌতুকের স্বাদ পায়। মাঠকোঠার বাখারি-ঘেরা বারান্দায় বসেও আকাশের রং তো সমানই নীল লাগছে!

ভাবতে গিয়েই পিসির ঘরের সামনের সেই ছাদের বারান্দাটায় দাঁড়িয়ে পড়লো শম্পা। যেটাতে অনেকদিন দাঁড়ায়নি, যেটাকে সহজে কাছে আসতে দেয় না শম্পা, আসতে চাইলেই প্রায় হাত দিয়ে ঠেলে সরিয়ে দিয়েছে।

ছাদের বারান্দার সামনের আকাশটাও একই রকম নীল। ওই হালকা নীলটার দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে শম্পা একটি প্রিয় পরিচিত কণ্ঠের ডাক শুনতে পায়, শম্পা! তুই। এতোদিন কোথায় ছিলি রে? আমরা তোকে খুঁজে খুঁজে

শম্পা ওই কণ্ঠের অধিকারিণীকে দু’হাতে জড়িয়ে ধরে বলে, আমি যে হারিয়ে গিয়েছিলাম পিসি!

তারপর পিসি তার সুন্দর ছিমছাম ঘরটায় টেনে নিয়ে গিয়ে চেয়ারে বসিয়ে বলে, বল তোর হারিয়ে যাওয়ার গল্প। হারিয়ে গিয়ে কোথায় গিয়ে পড়েছিলি?

শম্পা দুই হাত উল্টে বলে, হনলুলুও নয়, কামস্কাটকাও নয়, স্রেফ নিজের মধ্যেই হারিয়ে মরেছি, হারিয়ে বসে আছি। এ থেকে আর খুঁজে নিয়ে আসতে পারবে না আমায়।

পিসি আস্তে বলে, কিন্তু তোর মা? বাবা?

শম্পা মাথা নীচু করে বলে, পিসি, তোমরা তো সাবিত্রীর কাহিনী বলল, বেহুলার কাহিনী বলল, ওদের মা-বাবার কথা তো বলো না!

তবু তোকে এমন পাষাণ ভাবতে ইচ্ছে হয় না রে শম্পা!

শম্পা আস্তে বলে, পিসি, আমি তাদের কাছে এসে দাঁড়াবো, মাথা নীচু করে আশীর্বাদ চাইবো। বলবো, বাবা, স্বামীর সঙ্গে শত দুঃখবরণ এ তো এ দেশেরই গল্প। সাবিত্রী দময়ন্তী শৈব্যা সীতা চিন্তা দ্রৌপদী এঁদের গল্প তো তুমিই শুনিয়েছে ছেলেবেলায়, কিনে দিয়েছো এঁদেরই বই। আমার শুধু চেহারাটা আধুনিক, আমার শুধু কথাবার্তা এ যুগের, আমার শুধু গতিভঙ্গী বর্তমানের–আর কি তফাত আছে বল?

পিসি আস্তে জিজ্ঞেস করলো, বিয়েটা কি হয়ে গেছে শম্পা?

শম্পা মুখ তুলে হেসে বলে, অনুষ্ঠান-ফনুষ্ঠান যে কিছু হয়নি সে তো বুঝতেই পারছে পিসি, তবে এই একটা আইনের লেখালেখি। ওটা না করে উপায় কী বল? শুধু ওই তোমার গিয়ে ‘বিবাহের চেয়ে বড়ো’ জিনিসটার দাবি তো ইহসংসারে টেকে না। ওই লেখালেখির কাগজটুকু সঙ্গে না থাকলে তিষ্ঠোতে দেবে নাকি সংসার? একখানা মাঠকোঠার ঘরের সুখের ওপরও পুলিস লেলিয়ে দেবে। তাই হাসপাতালেই ওই কর্মটি সেরে নিয়ে আপন অধিকারবলে ওকে হাসপাতাল থেকে বার করে এনে সুখে-স্বচ্ছন্দে নিশ্চিন্ততায় আছি। তবে ওই যা বলেছিলে তুমি প্রথম নম্বরে-হতভাগা। হতভাগাই বটে। এখনো বলে কিনা, ওর কোনো মানে নেই। একটা আর মানুষের সঙ্গে একটা আধখানা মানুষের–ও, তুমি তো আমার সব কথা জানোও না, ওর বন্ধুর দলের কোনো এক পরম বন্ধু যে বোমা মেরে ওর পা দুখানা উড়িয়ে দিয়েছে বাকি জীবনটা চালাগাড়ি চড়ে বেড়াতে হবে হতভাগাকে-তা সেই কথাই বলে, একটা আস্ত মানুষের সঙ্গে একটা আধখানা মানুষের বিয়ে আইনসিদ্ধ নয়।…তাছাড়া আমি তখন প্রায় জ্ঞানশূন্য রোগী, অতএব তুমি আমায় ছেড়ে কেটে পড়ো।…শম্পা পিসির গায়ে মাথা রেখে নিজেকে এলিয়ে দিয়ে বলে, মুখটা বলে কিনা তোমার উপস্থিতি আমার অসহ্য!…বাংলাটা খুব ভালো শিখে ফেলেছে, বুঝলে?…বলে, আমায় শান্তিতে মরতে দাও! বোঝো! আমি হেন একখানা ভগবতীকে হাতের মুঠোয় পেয়েও নেয় না, বলে বিদেয় হও! শান্তিতে মরতে দাও! বুঝছো তো? শুধু হতভাগা নয়, হাড়-লক্ষ্মীছাড়া!

তারপর পিসি আরো কথা বলে।

বলে, সেজপিসিকেও তো একটা খবর দিতে পারতিস।

শম্পা অপরাধী-অপরাধী গলায় বলে, সত্যি খুব উচিত ছিলো। কী বলবো পিসি, মাথায় আর মাথা ছিল না। বোমা তো ওর পায়ে পড়েনি, পড়েছিল আমার মাথায়। জ্ঞানগম্যি ছিল না। উদ্ভ্রান্ত হয়ে কেবল ওকে কী করে বাঁচিয়ে তুলবো সেই চিন্তায়-ভাগ্যিস বংশীদাকে পেয়েছিলাম, তাই সেটা সম্ভব হলো।

পিসি বললো, বংশীদা কে?

শম্পা গভীর চোখে তাকালো পিসির দিকে, আস্তে বললো, বংশীদা কে বলে বোঝানো যাবে না পিসি, কিছুই বলা হবে না। দেখে বুঝবে। তুমি তো এক নজরেই বুঝবে।…হা, ওকে তো আনতেই হবে। তোমাদের কাছে যেদিন আশীর্বাদ নিতে আসবো, একা কি পারবো? বংশীদা ওকে বলে, তোর বন্ধুরা তোর পা দুটো উড়িয়ে না দিয়ে যদি মাথাটা উড়িয়ে দিতো, এর থেকে ভালো হতো! মাথাটায় তো গোবর ছাড়া কিছু নেই, ওটা থাকলেই বা কি, গেলেই বা কি! বোঝো কী মজার লোক।

হি হি করে হেসে ওঠে শম্পা!..

.

সত্যবান চমকে মাথা তুলে তাকায়, বলে, কী হলো? শুধু শুধু হঠাৎ হেসে উঠলে যে?

শম্পা শিথিল ভঙ্গী ত্যাগ করে সোজা হয়ে বসে বলে, পাগল-ছাগলরা তো তাই করে। কেউ শুধু শুধু হাসে, কেউ শুধু শুধু কাঁদে!

সত্যবান সেই একফালি আকাশের দিকে তাকিয়ে শান্ত গলায় বলে, শুধু শুধু কেউ কাঁদছে না।

শম্পা ওর দিকে তাকিয়ে বলে, বংশীদা ভুল বলে। বলে, পাটার বদলে মাথাটা গেলে কম লোকসান হতো, গোবর ছাড়া তো কিছু নেই। দেখছি গোবর শুকিয়ে দিব্যি ঘুঁটে হয়ে উঠেছে! কথা ফেললেই কথা বুঝে ফেলতে পারছো! তবে আমি তো শুধু শুধু ছাড়া কারণ কিছু দেখছি না।

সত্যবান হতাশ গলায় বলে, আচ্ছা তুমি কি সহজ করে কথা বলতে জানাই না? না– বলবে না প্রতিজ্ঞা।

শম্পা মৃদু হেসে বলে, জানো পিসিও ঠিক এই কথাই বলতো। আমি উত্তর দিতাম, যদি খুব সহজ আর সাধারণ কথাই বলতাম শুধু, ভাল লাগতো তোমার? সেই উত্তরটাই তোমাকেও দিচ্ছি। না না, উত্তর তো নয়, প্রশ্ন–দাও এখন প্রশ্নটার উত্তর?

সত্যবান আস্তে মাথা নাড়ে।

দিতে পারবো না।

পারলে না তো? পিসি পারতো। বলত, দূর, পাগল হয়েছিস!

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *