১৭. শীত করছে

গাড়িতে বসে গায়ে কাঁপন দিল জাহেদার। বেশ ঠাণ্ডা পড়েছে। এতক্ষণ শিশিরে ভিজে ভেতরটা একেবারে হিমাগার হয়ে আছে।

শীত করছে?

হুঁ।

বাবর তার জ্যাকেট খুলে দিল।

এটা জড়িয়ে নাও।

না।

দাঁতে দাঁত বেজে উঠল জাহেদার। বাবর শাসন করে উঠল, শীতে মরবে তবু কথা শুনবে না মেয়ে।

জোর করে জ্যাকেটটা চাপিয়ে দিল জাহেদার গায়ে। বলল, গাড়ি চললে ভেতরটা গরম হয়ে উঠবে।

আপনার শীত করবে না?

করবে তো! তা কী করা যাবে? ঠাট্টা করে বাবর বলল। বড় রাস্তায় এসে জিগ্যেস করল। ঘরে যাবে, না একটু ঘুরে আসবে?

জাহেদা কোনো কথা বলল না।

চল, ঘুরেই আসি। কারমাইকেল কলেজের দিকে গাড়ি ছোটাল বাবর। কিছুক্ষণ চুপচাপ থাকবার পর বলল, থমথমে এই রকম রাতে তোমাকে আর কবে নিয়ে বেরুব, কে জানে?

কেন বলছেন?

এমনি। আমার খুব ভাল লাগছে। যা ভাল লাগে তা ধরে রাখা বোকামি। মানুষ ধরে রাখতে চায় বলেই দুঃখ পায়। আসলে সব কিছুই একটা স্রোতের মত। সুখ, ঐশ্বৰ্য, জীবন, আকাশ, বিশ্ব, মহাবিশ্ব, ছায়াপথ, তারকাপুঞ্জ, সব কিছু। সমস্ত কিছু মিলে প্রবল শুভ্ৰ জ্বলন্ত একটা মহাস্ত্ৰোত মনে হয়। দুঃসহ কষ্ট হয় তখন। আমার জীবনে যদি একটা কোনো কষ্ট থাকে তাহলে তা এই! এই মহাস্রোতের সম্মুখে আমি অসহায় তুচ্ছ। তুমি আমি এই শহর, মহানগর, সভ্যতা সব অর্থহীন বলে মনে হয়। আমি কী করলাম, তুমি কী করলে, ন্যায়অন্যায় পাপ-পুণ্য, মনে হয় সবই এক, সব ঠিক আছে–কারণ সবই কত ক্ষুদ্র।

বাবর হাসল। অনুভব করল জাহেদা তার দিকে তাকিয়ে আছে।

কিছু বলছ না?

উঁ।

শুনছ?

হ্যাঁ শুনছি।

এই মহাম্রোতে কোথাকার কে বাবর আলী খান। বাবর হাসল। কে তুমি কোন সাত্তার চৌধুরীর মেয়ে জাহেদা। বাবর আবার হাসল। কিছু এসে যায় না। কে একজন তার নাম সেক্সপীয়ার, সে হ্যামলেট লিখল কি না লিখল, তাও কিছু নয়। এই পৃথিবীর মত কত কোটি পৃথিবী আছে, কত কোটি হ্যামলেট লেখা হয়েছে, কত বিতোভেন সোনাটা লিখছে, কত বাস্তিলের পতন হয়েছে–কতটুকু জানি! এই পৃথিবী আদিতে ছিল উত্তপ্ত একটা পিণ্ড, কোটি কোটি বছর পর একটা শীতল প্রাণহীন বস্তুপিণ্ড হয়ে তা মহাশূন্যে ঘুরতে থাকবে। তখন কোথায় তোমার বাবার আলী কোথায় জাহেদা, কোথায় সেক্সপীয়ারের হ্যামলেট আর জাপানের সামুরাই আকাশ ছোঁয়া দালান আর সমুদ্রে ভাসমান কুইন এলিজাবেথ। হাঃ। বাবর হাসল। সাঁ করে গাড়ি ঘুরিয়ে বলল, চল ফিরে যাই।

ফিরতে ফিরতে বাবর আবার হাসল।

হাঃ। জান জাহেদা, মানুষ সেই জন্যেই বোধহয় ঈশ্বরের কল্পনা করে। ঈশ্বরের ধারণা একটা সীমার আরোপ, একটা আকার প্রদানের প্রচেষ্টা মাত্র। এই অনন্তকে ধারণ করতে পারি না বলেই নামে একটা ফ্রেম দিয়ে নিয়েছি। কিন্তু যাক। আমার কষ্ট হচ্ছে।

জাহেদা আবার বাবরকে দেখল। কিন্তু ক্ষণকালের জন্যে। আবার সে দ্রুত অপসৃয়মাণ অন্ধকারের দিকে তাকিয়ে রইল। ডাকবাংলোয় এসে জ্যাকেট ফিরিয়ে দিল জাহেদা। সেটা ডান হাতে ঝুলিয়ে বাঁ হাতে জাহেদাকে বেষ্টন করে সিঁড়ি বেয়ে উঠতে লাগল বাবর। বলল, হেডা, আমরা যেখানে, সেখানে আগেও ছিলাম, এখনও আছি, পরেও থাকব।

পরিচিত কথাটা শোনে জাহেদার মুখে হাসি ফুটে উঠল। অর্থহীন একটা ঝাঁকুনি দিয়ে মাথার চুল ঝাড়লো সে। তখন অতি সুন্দর দেখাল। আকাজক্ষা ঝাঁপিয়ে পড়ল বাবরের সারা দেহে! ভেতরে একটা ক্ষুদ্র সূর্য উদিত হয়ে তাপ বিকিরণ করতে লাগল। অকস্মাৎ। চকিতে চোখে ভেসে উঠল।। বিষ্ণু মূর্তির ওপর ঝুঁকে পড়া জাহেদার ছবিটা। আঙুলগুলি উদগ্ৰীব হয়ে উঠল। স্পর্শ করতে। দরোজা খুলতে কেঁপে উঠল তার হাত। দুতিনবার চেষ্টা করে তালায় চাবি পরানো গেল।

দরোজা খুলে দেখে দুদিকে বিছানা সুন্দর করে পাতা। মাঝখানে চেয়ার, তার ওপর পানির জগ, গ্লাশ। দুবিছানায় দুটো কম্বল দেখে অবাক হলো বাবর। আর একটা কখন দিয়ে গেছে চৌকিদার? তাকে তো সে দিতে বলেনি? নাকি, বিকেলে যখন সে ঘুমিয়েছিল তখন জাহেদা বলেছে! সহাস্য ঠোঁট কামড়ে ধরে একটু দাঁড়িয়ে রইল বাবর। জাহেদা বাথরুমে গেল।

তখন পাজামা পরে নিল বাবর তাড়াতাড়ি। জাহেদা ফিরে এলো পোশাক পাল্টে। নীল শাদা ডোরা কাটা চিলে পাজামা। এসে সোজা কম্বলের তলায় ঢুকে মুখ পর্যন্ত টেনে দিয়ে মরার মত পড়ে রইল। কেবল পেটের কাছটা ওঠা নামা করতে লাগল তালে তালে। বাবর তখন টিপে টিপে আয়নার সামনে ফুলদানি থেকে ফুল নিয়ে কটা পাপড়ি ছিড়ল, পাপড়িগুলো ঝুরঝুর করে ফেলে দিল জাহেদার পেটের ওপর। তালে তালে পাপড়িগুলো উঠতে লাগল, পড়তে লাগল আবার উঠল, অনেকক্ষণ তাকিয়ে দেখল বাবর। জাহেদা এতটুকু নড়ল না। এতটুকু কৌতূহল হলো না জানতে নিঃশব্দে বাবর কী করেছে। টুক করে বাতিটা নিভিয়ে দিল বাবর। গাঢ় অন্ধকারে ড়ুবে গেল সমস্ত অস্তিত্ব। বাবর নিজের বিছানায় এসে শুয়ে পড়ল কম্বল টেনে। বলল, শুভরাত্ৰি।

কোনো জবাব দিল না জাহেদা।

বাবর একটা সিগারেট ধরাল। বাথরুম থেকে ফোঁটায় ফোঁটায় পানি পড়ার শব্দ আসছে। সিক্ত অবিরাম একটা শব্দের স্রোত। অনেকক্ষণ পর চৈতন্য হলো সিগারেটটা পুরে ছাই হয়ে গেছে, আঁচ লাগছে আঙুলে। সেটা নিভিয়ে আরেকটা ধরাতেই কাঠির আলোয় দেখল জাহেদার মুখ খোলা, বুকের ওপর হাত বিছিয়ে ছাদের দিকে অপলক চোখে তাকিয়ে আছে সে। আস্তে আস্তে আলো কমে এলো, অন্ধকার বাড়তে লাগল। কাঠিটা লাল ছাই হয়ে গেল। জাহেদা তেমনি তাকিয়ে রইল শূন্যের দিকে।

জাহেদা।

উঁ।

ঘুম আসছে না?

জাহেদা কোনো জবাব দিল না। বাবর সিগারেট খেতে লাগল। নিঃশব্দে। আবার সে জিগ্যেস করল, নিজের সমুখের দিকে চোখ রেখেই, কী ভাবছ? আমাকে বলবে না?

তখন প্ৰায় ফিসফিস করে জাহেদা উত্তর করল, আমি এখন আমার মা-র কথা ভাবছি। বাবর শুধু বলল, হ্যাঁ।

নিস্তব্ধ কয়েকটি মুহূর্ত পার হয়ে গেল। জাহেদা আবার বলল, শূন্যের দিকে তেমনি তাকিয়ে থেকে, আমি এখন আমার বাবার কথা ভাবছি।

হ্যাঁ।

আরো কয়েকটি মুহূর্ত গেল। আরো কয়েকটি দীর্ঘ মুহূর্ত।

আমি এখন পাপ্পুর কথা ভাবছি।

হ্যাঁ।

একটি যুগ অতিবাহিত হয়ে গেল। জাহেদা তখন বলল, আমি এখন হোস্টেলের সবুজ মাঠটা দেখতে পাচ্ছি।

হ্যাঁ।

আমি এখন আরিচার ফেরিবোটে।

হ্যাঁ, জাহেদা, হ্যাঁ।

আমি এখন সেই ছেলেটার কথা ভাবছি।

চুপ করে রইল জাহেদা। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করল বাবর জাহেদার কণ্ঠস্বরের জন্যে। কিন্তু নীরবতা শাসন করতে লাগল। এই ঘর এবং ঘরের বাইরে সম্পূর্ণ বিশ্বটাকে। তখন বাবর তাকিয়ে দেখল জাহেদা কখনো তাকিয়ে আছে ছাদের দিকে। তার নাক, চিবুক, গ্ৰীবার উপত্যকা অন্ধকারের মধ্যে গাঢ় অন্ধকার হয়ে ফুটে আছে।

চোখ ফিরিয়ে নিল বাবর। সেও তাকিয়ে রইল। তার সমুখে। ফোঁটায় ফোঁটায় পানি পড়তে লাগল বাথরুমে। বালিশের নিচে হঠাৎ প্রবল হয়ে উঠল। হাত ঘড়ির টিকটিক। তার সমস্ত অস্তিত্বকে ঠুকে ঠুকে বাজিয়ে যেতে লাগল ওটা।

জাহেদা তখন ভীরু কণ্ঠে জিগ্যেস করল, জেগে আছেন?

বাবর তখন শুনল কিন্তু উত্তর দেয়া হলো না। অনেক সময় নীরব থেকেই মনে হয় বলা হয়ে গেছে।

কই, আপনি জেগে?

হ্যাঁ।

আপনার কথা শুনছি না?

কথা শুনতে চাও?

হ্যাঁ।

যা খুশি।

বাবর সমুখে তাকিয়ে অন্ধকারে মৃদু হেসে বলল, এ প্লাস বি হোল স্কোয়ার ইস ইকুয়াল টু এ স্কোয়ার প্রাস বি স্কোয়ার প্লাস টু এ বি। এ মাইনাস বি—

ও-কী? জাহেদা এই প্ৰথম মুখ ফিরিয়ে বাবরকে দেখল। বলল, ও-কী বলছেন?

অ্যালজেব্রার একটা ফর্মুলা।

এই বুঝি কথা?

তাহলে কী বলব?

জানি না। জাহেদা মুখ ফিরিয়ে নিল, তাকাল আবার সেই শূন্যের দিকে।

বলি? হেডা, ও হেডা, তোমাকে ভালবাসি।

না, আমি শুনতে চাই না।

আসলে তুমি আমার কথা শুনতে চাও না জাহেদা। বলতে বলতে বাবর উঠে দাঁড়াল। আসলে আমি এখন কথা বলতে চাই না। বাবর এসে জাহেদার পাশে শুলো। আসলে তুমি এখন আমাকে চাও। বাবার কম্বলের ভেতর ঢুকে জাহেদাকে কাছে টানল। আসলে তোমার এক লাগছে। আমারও হেডা, আমারও লাগছে। বলে সে প্রথমে তার কপালে একটা চুমু দিল, তারপর ঠোঁটে। বিশুষ্ক থেকে ধীরে ধীরে সিক্ত হয়ে এলো ঠোঁট। নিষ্প্রাণ যেন সপ্ৰাণ হয়ে উঠল। জাহেদাকে একেবারে বুকের মধ্যে নিয়ে সমস্ত অস্তিত্ব দিয়ে আলিঙ্গন করল বাবর।

তখন একবার কেঁপে উঠল মেয়েটা। তারপর হঠাৎ একটা নিঃশ্বাস ফেলে তার বাহুমূলে মুখ গুঁজে চুপ করে পড়ে রইল।

এই সময় বাবর মুঠো করে ধরল জাহেদার হাত। তারপর সেটা এনে রাখল। তার উত্তপ্ত অঙ্গের ওপর। প্ৰথমে বিদ্যুতে হাত পড়ার মত হাতটা টেনে নিল জাহেদা। কিন্তু আলাদা হতে পারল না। আস্তে আস্তে কম্পিত করতল সে এবার রাখল। ওখানে। তার আঙুলের ডগায় কেন্দ্রীভূত হলো সমস্ত জীবন। জন্মের বেদনা। ভয়, বিস্ময় একত্রিত মিশ্রিত হয়ে একটি উত্তাপের আকার ধারণ করল। সে ধীরে ধীরে মুঠো করে ধরল। তারপর দীর্ঘ একটা নিঃশ্বাস ফেলে ছেড়ে দিয়ে আবার আঁকড়ে ধরল সে। এবার আর ছাড়ল না। জ্বলন্ত ফুলকি ছড়ান একটা তারাবাতি শিশুর মত মুঠোয় ধরে রইল জাহেদা। সে একই সঙ্গে এক এবং দুই হয়ে গেল। নিৰ্ভয়ে কৌতূহলে আক্রান্ত সে অনুভব করতে লাগল বাবর যেন অন্য কারো দেহ উন্মোচন করছে অতি সন্তৰ্পণে; যেন অন্য কারো পায়ের তলায় পড়ে থাকল পাজামা, অন্য কারো বুকে বিচ্যুৎ হলো বোতাম। প্রথমে একটু ঠাণ্ড করে উঠল। তারপর কোথা থেকে একখণ্ড তাপ এসে তার পাশে স্থির হলো।

সেইভাবে স্থির থেকে কণ্ঠ থেকে নিসৃত কিছু ধ্বনি শুনল জাহেদা। সে নিজেই বলছে, কিন্তু কেন বলছে, বুঝতে পারল না, এতটুকু অপ্রাসঙ্গিক মনে হলো না, তবু আর একটা সত্তা কৌতুক অনুভব করতে লাগল। সে বলছে, আচ্ছা মানুষ শুধু নিরামিষ খেয়ে বাঁচতে পারে?

যেন টেবিলে মুখোমুখি বসে চায়ের পেয়ালা নিয়ে গল্প করছে এমনি গলায় বাবর উত্তর করল, কেন পারে না? প্রণব বাবুকে তো দেখলে।

তাই ভাবছি। আশ্চর্য!

এতটুকু আশ্চর্য নেই। এতে। তুমি জান না জাহেদা, মানুষ নিজেকে কতটা মানিয়ে নিতে পারে। তোমার কাছে যেটা অস্বাভাবিক, আরেক জনের কাছে সেটাই সবচেয়ে স্বাভাবিক। তুমি যা বিশ্বাস কর, আরেকজন তা করে না। তুমি যাতে বীচ, আরেকজনের কাছে সেটাই মৃত্যু। আমি যেভাবে বাঁচতে চাই, আরেকজন সেভাবে চায় না। তুমি যা নাও, আরেকজন তা ফেলে দেয়। সবই সত্য। কারণ সত্য মাত্রেই আপেক্ষিক, এই মৃত্যু ছাড়া। হেডা, তুমি শুনছ? তুমি ভাল, তুমি সোনা, হেডা, হেডা ও। বলতে বলতে আপন দেহে সে ঢেকে দিল জাহেদাকে।

জাহেদা অস্পষ্ট স্বরে বলল, না।

হ্যাঁ, বল হ্যাঁ। না বলে কিছু নেই পৃথিবীতে ও হেডা।

না।

তখন বাবর বলল, ফোর থ্রিজা টুয়েলভ, ফোর ফোরজা সিক্সটিন, ফোর ফাইভজা টুয়েন্টি।

হঠাৎ হেসে ফেলে জাহেদা।

আর সেই মুহূর্তে বাবর তার দেহ এবং অভিজ্ঞতার অন্তর্গত হয়ে গেল। জাহেদা টের পেল তার ভেতরে একটা ক্ৰন্দন থমকে আছে যেন। সেটা নড়ছে না, বড় হচ্ছে না, ফেটে বেরুচ্ছে না, স্তব্ধ হয়ে আছে। তারপর মুহূর্তে তার দেহ একটা তীরবেগে উর্ধ্বগামী পাখি হয়ে গেল। ধীরে ধীরে ফিরে জাহেদা বালিশে মুখ গুঁজে দিল। ভেতরে সচল হয়ে উঠল তখন কান্নাটা। চাপ দিতে লাগল। ফেটে বেরুতে লাগল। ফুলে ফুলে উঠল তার শরীর।

বাবর তখন আবার তাকে কাছে টেনে চুমো দিয়ে বলল, কাঁদছ? ও সোনা তুমি কাঁদছ? কেন কাঁদছ?

জাহেদা বলল, আমার সব কিছু পর হয়ে যাচ্ছে। দূরে সরে যাচ্ছে। সব কিছু ফেলে দিয়ে আমি কোথায় যেন যাচ্ছি। কেবলি যাচ্ছি। চলে যাচ্ছি।

তখন বাবর তাকে বুকে তুলে নিল। আবার তার হাতে দিল তারাবাতিটা। বলল, এটা নাও। নাও।

যেন শিশুর হাতে একটা খেলনা তুলে দিল বাবর।

জাহেদা ধরে রইল। ক্রমশ দৃঢ় হয়ে এলো তার পাঁচটা আঙুল। যেন ছেড়ে দিলেই অর্থই পানিতে পড়ে যাবে সে।

তারপর হঠাৎ টের পেল তার ভেতর থেকে কান্নার বিদায়। সে তখন ঝাঁপিয়ে পড়ে। বাবরের কানের কাছে মুখ রেখে শ্বাসরুদ্ধ কণ্ঠে একবার মাত্র বলতে পারল, আমাকে ফেলে যে ও না।

বাবর তাকে সারা শরীর দিয়ে আবার ঢেকে দিল।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *