০৭. ফুলটুসি শহরের মেয়ে

ফুলটুসি শহরের মেয়ে আর সুরতুন গাঁয়ের।

যে গলিটায় টেপির জন্য চেকারবাবুবাসা করে দিয়েছে তারই অপর প্রান্তে ইসমাইল কসাইয়ের বাড়িতে ফুলটুসি থাকে। ইসমাইলের অনেক নাম ছিলো একসময়ে। এখন প্রধান হয়ে আছে ইসমাইল। তার কাছাকাছি খ্যাতিযুক্ত অন্য নাম বোঁচা।

এখন আর তার সেদিন নেই, বয়স হয়েছে। এখন সে বাজারে গিয়ে দোকান করে না। তার বাসার সামনের দিকের ঘরখানায় বসে দিনের বেলায় মাংস বিক্রি করে। সে-সময়ে তার দোকানের বিক্রিটায় ভিড় হয় না। গতরাত্রির রঙের দাগ মুখে আছে এমন সব শীর্ণদেহ জীর্ণরূপ মেয়েরাই বেশি আসে তার দোকানে। আর আসে দু-চারজন পুরুষমানুষ। এদের কী জীবিকা। এ যেন পৃথিবীর কেউ জানে না। দিনের বেলায় এদের প্রায় সকলের পরনেই মলিন লুঙ্গি, পায়ে ছেঁড়া জুতো।ঠিক সন্ধ্যার সময়ে এদের দেখা যাবে গলিটার মোড়ে মোড়ে ঘুরে বেড়াতে, পরনে মলমলের পাঞ্জাবি, পায়জামা; কারো কারো গলায় ফুলের মালা। রাত্রি গম্ভীর হলে গলিটার বন্ধ দরজাগুলির বাইরে বাইরে এরা ঘুরে বেড়ায়। শেষরাত্রির কাছাকাছি এদের দেখতে পাওয়া যাবে কোনো একটি বারান্দায় মোমবাতির আলোয় গোল হয়ে বসে গুটি খেলছে।

সন্ধ্যার পর ইসমাইলের বাসার কাছে ভিড় জমে যায়। তখন রান্না করা মাংস বিক্রি হয় তার দোকানের সামনের দিকে। কিন্তু তার চাইতেও ভিড় বেশি হয় তার বাড়ির ভিতরে। দেশীদারু তাড়ি তো পাওয়া যায়ই, প্রয়োজন হলে বিলেতি মদের ছোটোখাটো বেঁটে বোতলও দু’একটা সে ঘরের মেঝে খুঁড়ে বার করে দিতে পারে।

কিন্তু তার দোকানে মাঝেমাঝে পুলিস বড়ো জুলুম করে। গত বৎসর শ্রাবণ মাসে পুলিস এসে তাকে বললো–ইসমাইল মিঞা, এবার কিছুদিন ঘুরে আসতে হয়।

–জি?  

–বড়ো বেশি গরম করে তুলেছে।

–জি।

–কাউকে বাকি দিতে আপত্তি করেছিলেন কি না, পাওনা টাকার জন্য গালমন্দ করেছে?

–জি, না। সেই নতুনকনেস্টবলবাবু বাসা ভুল করেছিলো। আমার বউকে মনে করেছিলো–

–বলো কী? তোমার নতুন বউ ফুলটুসি?

–জি। তবে নেশার মাথায় ওরকম গোলমাল হয়। আমি কিন্তুক ধরে নিয়ে গিয়ে যমুনার ঘরে দিয়ে আসছি। সেই যমুনা গো, ঐ যে কলেজের মিয়ে সাজে বেড়ায়, নাকি সুরে গান করে।

–বেশ করেছে। এখন চলল। মাস চার-পাঁচ হবে।

–না হলে হয় না?

–না বোধ হয়। কনেস্টবলবাবু কড়া রিপোর্ট করেছে। বি. এ. কেস। অনেক সাক্ষী।

 বি. এ কেস? ইসমাইল হাসলো।তাও ভালো, পকেট কাটার দায় নয়।

ইসমাইল তার ব্যবসায়ের টেক্স দিতে গেলে পুলিসের সঙ্গে গল্প করতে করতে, ফুলটুসি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখলো।

এরপর চালের কারবারে নামতে হলো ফুলটুসিকে।

ইসমাইল চলে গেছে বলে দুঃখিত নয় সে, ইসমাইল ফিরে এসেছে বলেও সুখী নয়। ইসমাইল ফিরে এসে তার চালের কারবারের কথা জানতে পেরে বলেছিলো–এদিকে ভালো সরু চাল পাওয়া যায় না, মোকাম থেকে ভালো চাল আনবি। ফুলটুসি এখনো চালের ব্যবসা করে যাচ্ছে। চাল যত ভালো ইসমাইলের কৌশলে পচানি নাকি তত মালদার হয়ে ওঠে।

নিজের জীবন সম্বন্ধে চিন্তা করার সময় নেই ফুলটুসির। আসন্ন বিপদ থেকে নিজেকে এবং সন্তান দুটিকে রক্ষা করার কৌশল খুঁজতেই তার দিন অতিবাহিত হয়ে যায়। তার মধ্যেও যেটুকু তার মনে পড়ে সেটা নিছক বর্তমান। অতীতের দিনগুলি খুব অস্পষ্টনয়, কিন্তু বর্তমানের দিনগুলি এত গভীর রঙে রাঙানো যে তার পাশে নিকট অতীতকেও সুপ্রাচীন স্বপ্নের মতো মনে হয়। সে আশৈশব ইসমাইলের পরিচিত। তার যখন তিন-চার বছর বয়েস তখন ইসমাইল তাকে কবে যেন একটা রঙিন ফরক’ এনে দিয়েছিল। তারপর কিছুকাল ইসমাইল মাঝেমাঝেই জেলে গিয়ে দীর্ঘসময় কাটিয়ে আসতো। ইসমাইলের ছেলে ইয়াজ তার সমবয়সী প্রায়। তারা দুজনে পাশাপাশি বেড়ে উঠেছে। ইসমাইলের উপস্থিতি বা অনুপস্থিতি তখনো তাদের কাছে মূল্যবান কিছু ছিলো না। এ সময়ে ইসমাইলের বাড়িতে একটি প্রৌঢ়া থাকতো। একই খোঁয়াড়ে আবদ্ধ তিনটি প্রাণীর পারস্পরিক সম্বন্ধ কিছু থাকানা-থাকা যতটা মূল্যবান,ইসমাইলের সংসারে আবদ্ধ সেই প্রৌঢ়া, ইয়াজ ও ফুলটুসির সম্বন্ধও ততটা। এখন সে সব সম্বন্ধ ফুলটুসির কাছে শৈশবের বোকামি বলে মনে হয়।

ইসমাইলের কাছে ফুলটুসি কৃতজ্ঞ। আবাল্য সে এ বাড়িতে বাস করতে পেয়েছে। অন্নের অভাব হয়নি। তারপর এখন থেকে পাঁচ-সাত বৎসর আগে সেইসমাইলের স্ত্রীহলো। দুটি সন্তান, হাঁড়িকুঁড়ি, উনুন, ইসমাইলের শয্যা-দিবারাত্রি। প্রতিবেশী নেই, সঙ্গী নেই। শুধু ইয়াজ ধূমকেতুর মতো এসে উদিত হয় কখনো কখনো।কী আক্রোশ তার কে জানে! পাঁচ-সাত বৎসর ধরে এ আক্রোশ সে পুষে রেখেছে। অতীতের একটি দিনের কথা বিশেষ করে মনে পড়ে ফুলটুসির। তার প্রথম সন্তান তখন হামা টানতে শিখেছে। সে রান্নাঘরের মেঝেতে জল ঢেলে কাদা করে সারা গায়ে কাদা মেখে হামা টেনে বেড়াচ্ছে। ইয়াজের ভাত গুছিয়ে দিতে দিতে সেদিকে নজর পড়লো ফুলটুসির। কাকে আর বলার আছে মায়ের এই প্রথম গর্বের কথা, প্রথম সন্তানের এই অপূর্ব বীরত্বের কথা! প্রৌঢ় ইসমাইলের কাছে এমন কথা তুলতে সাহস হয় না। প্রতিবেশী কেউ নেই যে তাকে বলা যাবে। চোদ্দ-পনেরো বছরের একটি মায়ের পক্ষে সন্তান তথাপি গর্বের বিষয় তো বটে। ফুলটুসি বলেছিলো ইয়াজকে–কেন, ভাই, ছাওয়াল আমার। ইস্টিশনের বড়োমাস্টার হবি?

ইয়াজ গোঁজ হয়ে বসেছিলো। হঠাৎ উঠে দাঁড়িয়ে থু থু করে ফুলটুসির মুখের উপরে থুথু ফেলে বাড়া ভাত না-খেয়ে বেরিয়ে গেলো।

রাগে অভিমানে ফুলটুসি খানিকটা কাঁদলো। একবার সে ভাবলোইসমাইলকে বলেও দেবে, কিন্তু ভাবতে গিয়ে খটকা লাগলো তার। ইয়াজ যে তাকে ঘৃণা করে এটা অত্যন্ত স্পষ্ট হয়ে উঠলো। সহসা তার মনে হলো ঘৃণাই যুক্তিসংগত।

কিন্তু ইয়াজের যুক্তিসংগত ঘৃণার চাইতে বড়ো ভয় ইসমাইলের ছুরিকে, যে-ছুরি অনায়াসে পাঁঠাবরি-দুম্বার গলায় বসছে দিনে বহুবার। ইসমাইল যদি তার প্রতি কোনো অন্যায় করেই থাকে তার প্রতিকার কোথায় পাওয়া যাবে? তার অন্নে সে বেড়ে উঠেছে, তার অন্ন এখনো তার জীবিকা। সে যদি রাত্রির অন্ধকারে তাকে কয়েকটি খণ্ডে বিভক্ত করে নদীর জলে ফেলে দিয়েও আসে কেউ খোঁজ নিতে আসবে না। আপন-পর সবকিছুই ইসমাইল। সে যদি বলে একদিন ফুলটুসিকে হাট থেকে কিনে এনেছিলো আর একদিন হাটে বিক্রি করে আসবে, কিংবা একদিন পথ থেকে কুড়িয়ে এনেছিলো তেমনি একদিন পথে ফেলে দিয়ে আসবে, ফুলটুসির কিছু বলার থাকবে না। ইসমাইলের বাড়ির মধ্যে খোঁয়াড়ে প্রতিপালিত অনেক ভেড়া-বরি থাকে। তাদের মধ্যে একটা ছাগীমৃত্যুর অনেক তিথি পার হয়েছিলো। এটা ফুলটুসি লক্ষ্য করেছে ইসমাইলের গায়ের গন্ধ পেলে খোঁয়াড়ের মধ্যে প্রাণীগুলি ছটফট করে। ছাগীটা কিন্তু ইসমাইলের কাছে গিয়ে দাঁড়াতে আহার্যের লোভে। তার সন্তান-সম্ভাবনা উপস্থিত হয়েছিলো। একদিন কী মনে করে ইসমাইল সেটাকে দুহাতে চেপে ধরে তার গলাটা কেটে দিলো। ফুলটুসির প্রাণীহনন-অভ্যস্ত প্রাণও আহা-আহা করে উঠেছিলো। ফুলটুসির মনে হয় ছাগীটাও ইসমাইলের দিকে বিস্মিত হয়ে তাকিয়েছিলো। নাকি ওভাবে মৃত্যুর সম্মুখীন হলে চোখের দৃষ্টিটা ওরকম হয়ে যায়?

সুরতুন ভীরু, ফুলটুসিও। শহরে থেকেও ফুলটুসি সাহসী হয়নি। এদের মধ্যে পার্থক্য এই: সুরতুন ভয় থেকে পালানোর জন্য সর্বদা চেষ্টা করছে, ফুলটুসি কোনো কোনো ভয়ের কারণকে মেনে নিয়েছে।

সন্তান দুটিকে সঙ্গে নিয়ে ফুলটুসি স্টেশনে এসে দেখলো টেপির মা শেষের দিকে একটি কামরার কাছে যাত্রীদের সামনে হাত পেতে দাঁড়িয়ে আছে, যেন ভিক্ষা করছে। এটা তার একটা কৌশল। গাড়ির দরজার কাছাকাছি ঘোরাই উদ্দেশ্য।তারপর গাড়ি চলতে আরম্ভ করলে কোনো একটিতে উঠে পড়া। ফুলটুসি সেই কামরার কাছে গিয়ে দেখলো ভিড়ের মধ্যে ফতেমাও আছে। ফুলটুসি ছেলেদের নিয়ে গাড়িতে উঠে বসলো। ছেলে দুটি কথা বলছিলো, ফতেমা আঙুল তুলে ইশারা করতেই থেমে গেলো। যাত্রা শুরু হলো।

কিন্তু ভয়ই মৃত্যুর কারণ হলো ফুলটুসির।

গাড়ি ছাড়তে ছাড়তেই একটি বুড়ো যাত্রী বললো, তোমরা বোধ হয় চালের কারবার করো, না?

এরা পরস্পরের মুখের দিকে চেয়ে রইলো। তাহলে তাদের চেহারা দেখলেই কি লোকে আজকাল চিনতে পারে?

তা বেশ করো। কিন্তু আজকের এ গাড়িতে চেপে ভালো করোনি। সাহেব চেকার আছে। তাছাড়া আজ সকাল থেকে প্রতি জেলার সীমায় গাড়ি থামিয়ে পুলিসরাও গাড়িতে তোমাদের মতো কেউ আছে কিনা খুঁজে দেখছে।

টেপির মা বললো, আমরা ভিক্ষে করে খাই বাবা, আমাদের পুলিস কী করবি, বাবা।

ফতেমা বললো, আমাদের যা চাল তা-ও ভিক্ষে করা।

ফুলটুসি সুরতুনকে ফিসফিস করে বললো, পুলিস কি সত্যি আসবি?

তাই হবি, হয়তো।

কী হবে কে জানে। ফুলটুসি হাত বাড়িয়ে ছেলে দুটিকে কোলের কাছে টেনে নিলো। একটির বয়স সাত, অন্যটির পাঁচ। ধূলি মলিন নোগারোগা দুটি অযত্নলালিত শিশু, কিন্তু স্বভাবতাই ফুলটুসির দৃষ্টিতে তারা অনন্য। গতবার চালের মোকাম থেকে ফিরে সে একটা বড়ো রঙচঙে গামছা কিনে দুটুকরো করে লুঙ্গির ঢঙে পরিয়ে দিয়েছে তাদের। ইসমাইল যে ইসমাইল সে ও দেখে হাসি হাসি মুখেই বলেছিলো–বেশ হইছে, মোগ্লাজিদের মতোই। ফুলটুসির মনে হলো এমন চকচকে লুঙ্গি পরিয়ে আনা ভালো হয়নি। এত লোকের মধ্যেও এদের উপরেই যেমন তার চোখ দুটি বারে বারে গিয়ে পড়ছে চেকারদেরও তেমনি পড়বে। সুরতুন কতকটা বেপরোয়ার মতো এবার গাড়িতে উঠেছিলো। অবশ্য সঙ্গে ফতেমা এবং টেপির মা দু-পাশে আছে বলেই তার সাহস। তবু ফুলটুসির কথা শুনে তার গলা শুকিয়ে গেলো। সে ফতেমার হাত ছুঁয়ে বসে রইলো।

হঠাৎদুটি স্টেশনের মধ্যে চিৎকার করতে করতে গাড়িটা থেমে গেলো। যাত্রীরা তখন ঘুমের নেশায় ঢুলছে। বুড়ো যাত্রীটি নিদ্রাহীন। সে বললো, এবার বোধ হয় চেক হবে।

ফতেমারা সরে সরে বসলো। ফতেমা বললো, ভয় কী? সঙ্গে চাল নি। ট্যাকা কিন্তুক কেউ বার করবা না, বলবা ট্যাকা নাই।

ফুলটুসি কিন্তু এদের কথায় যোগ দিলো না। এরা কিছু বলার আগেই পিছন দিকের দরজাটা খুলে বাইরের অন্ধকারে সে নেমে পড়লো। শুধু নেমে পড়া নয়, পাশের লাইনটা পার হয়ে, লাইনের ওপারের গাছগুলোর ছায়ায় গা মিশিয়ে দাঁড়িয়ে রইলো সে।

কিন্তু তেমনি একটা শব্দ করেই গাড়িটা আবার চলতে শুরু করলো। ছুটন্ত গাড়ি ধরবার জন্য ফুলটুসি ছুটে এলো। হাতল হাতের নাগালের বাইরে, উপরের দিকের একটা পাদানি হাত দিয়ে ধরে উঠতে গেলো ফুলটুসি, পায়ের তলায় কোনো অবলম্বন পেলো না। একটা আতঙ্কময় শূন্যের মধ্যে দিয়ে ক্ষণস্থায়ী একটা আঘাতের অনুভব পার হতে-না-হতে ফুলটুসির সব অনুভব মিলিয়ে গেলো।

খবরটা এরা তখন তখনই পেলোনা। প্রথমে ভাবলো পেছন দিকের কোনো কামরায় উঠেছে সে। পর পর কয়েকটা স্টেশনে গাড়ি ধরলেও যখন সে এলো না তখন এরা স্থির করেছিলো সে উঠতে পারেনি গাড়িতে। ফিরবার পথে খবরটা এলো। সবাই পাথর হয়ে বসে রইলো। কান্নাকাটি করে ক্লান্ত হয়ে ছেলে দুটি ফতেমার পাশেই বসেছিলো। ফতেমা এতক্ষণ তাদের প্রবোধ দিয়েছে আর-একটু দূরে গেলেই পাওয়া যাবে মাকে। এবারও যখন স্টেশনটা থেকে গাড়ি ছেড়ে দিলো আর ফুলটুসির বড়োছেলে জয়নুল প্রশ্ন করলো তার মা এলো না কেনে, ফতেমা উত্তর দিতে পারলো না। তার মাথায় হাত বুলিয়ে বুলিয়ে কাঁদতে লাগলো।

বেদনাতুর হৃদয় নিয়ে এদের দলটি দিঘার স্টেশনে নামলো। স্টেশনে নেমে সুরতুনের মনে হলো: অনেক বিপদের কথা তারা কল্পনা করেছে এই ব্যবসা সম্বন্ধে, এমন চূড়ান্ত বিপদের কথা মনে আসেনি কারো। প্রায় মাস চার-পাঁচ আগে টেপির মা যে-ঘটনাটা ঘটিয়েছিলো বিরামগঞ্জের স্টেশনে তারই সত্যিকারের রূপটা যে এত নির্মম তা সেদিন বোঝা যায়নি। স্টেশনের কর্তৃপক্ষ টেপির মায়ের চালের পুঁটুলিটা আটকে ফেলেছিলো। গাড়ি ছাড়তে বেশি দেরি নেই। টেপির মা আত্মহত্যাই যেন করবে এমনভাবে প্ল্যাটফর্ম থেকে রেল লাইনের উপর নেমে পড়লো দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ির দুখানা কামরার ফাঁক দিয়ে। রেলের কর্মচারীরা ভীত হয়ে তাকে তখনকার মতো চালের পুঁটুলি ফিরিয়ে দিয়েছিলো।

সুরতুন বললো ফতেমাকে–ছাওয়াল দুডে?

–আর কোথায় যাবি, ওরে বাপ কনে থাকে তাও জানি নে।

নিজের চালের পুঁটুলিটা সুরতুনের হাতে দিয়ে ফতেমা ছেলে দুটির হাত ধরলো।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *