ইঁদুর ধরা কল

ইঁদুর ধরা কল

ইঁদুর অর্চনার রেয়াজ এদেশে নেই, কিন্তু সিদ্ধিদাতার বাহন শ্ৰীমান মূষিকও কিছু কম সিদ্ধিপ্রদ নন – উৎসর এই কাহিনী থেকে আমরা জানতে পাব।

এমনকি অতঃপর ইঁদুরকে নিয়ে একেবাবে বারোয়ারি সার্বজনীনের চল না হলেও ছোট খাট ঘরোয়া উৎসব বেশ জমতে পারে, আশা করা অবশ্যই।

পর্বতের মূষিকপ্রসব বলা ঠিক না গেলেও মূষিকের পর্বতপ্রসব হত বা বলা যায়। পর্বত না হলেও পার্বতী তো বটেই।

সেদিন সকাল আটটার সময় চোখ মেলেই উৎস দেখতে গেল তার ঘরের জানালার গা ঘেঁষে রঙিন শাড়ি ঝুলছে একখানা। তবে ওপরকার ফ্ল্যাটে ভাড়াটে এলো তাহলে এতদিনে।

রঙিন শাড়িটা তার মনেও একটু রঙ ধবালো বুঝি।

উপরে নীচে পাশাপাশি অনেক গুলো ফ্ল্যাট নিয়ে তাদের পাঁচতলা বাড়িটা। একঘরে ফ্ল্যাট, দুঘরা, আর তিনঘরা ফ্ল্যাট সব। প্রত্যেক ফ্ল্যাটের সঙ্গে সংযুক্ত রান্নাঘর, স্নানের ঘর এবং সব কিছু। টেলিফোনও আছে প্রত্যেক তলাতেই। তবে নিজেরটায় দুটি শয়নকক্ষ। তার উপরেরটাও দুঘরা ফ্ল্যাট উৎস এখানে এসে আগেই ওটা দেখেছিল, তার পরে দুটোর ভেতরে পছন্দ করে এই নীচেরটাকেই সে বেছে নিয়েছে।

নিয়েছিল যে তার ভাগ্যি! নইলে, উপরের ফ্ল্যাট হলে এই শাড়িধারিণীর আবির্ভাব তার অলক্ষ্যেই থেকে যেতে হত। তারপরে যাব শাড়ি তার সঙ্গে তার দেখা হয়েছে মুখোমুখি—সিঁড়ি দিয়ে উঠতে নামতে একাধিকবাব। মেয়েটি তরুণী সুশ্রী আর অবিবাহিত, তাও দেখেছে সে।

দেখে তার মনে হয়েছে যে, উপরের ঘর ভাড়া নেবার এমন কী দরকার ছিল মেয়েটির। তার পাশের ফ্ল্যাটটাই তো খালি পড়ে আছে, আর, যে কালে প্রত্যেক ফ্ল্যাটই স্বতন্ত্র, স্বয়ংসম্পূর্ণ আর প্রত্যেক তলাতেই টেলিফোন।

আর একই ভাড়া যখন সব ফ্ল্যাটের, তখন পাশাপাশি বাস না করে উপরে গিয়ে থাকার কোনো মানে হয়?

সিঁড়ি ধরে ওঠা নামার অবসরে গায়পড়া আলাপও যে এক আধটু গড়ায়নি তা নয়। উৎস জেনেছে যে মেয়েটি কোন ইস্কুলের শিক্ষিকা, একলাই থাকে। আর নাম তার পার্বতী। আর সেই সূত্রে মেয়েটিকে সে জানিয়ে দিয়েছে যে সে হচ্ছে উৎস, এক কলেজে প্রফেসারি করে—সম্প্রতি ডক্টরেটের থিসিস লেখায় উৎসাহী।

এর বেশি এগোয়নি আর। তবে নীচের ঘরে নিজের বিছানায় শুয়ে বা ডেকম্মোরে বসে বসেই সে উপরের খবর সব রাখতে পারে। কখন মেয়েটি বেরোয়, কখন ফিরে আসে, কখন তার স্টোভ ধরায় আবার কখনই বা সে বাথরুমে যায়-নীচে বসেই সব টের পায় উৎস।

আর, সেই আন্দাজে যথাসময়ে সে সিঁড়িটার মাথায় গিয়ে দাঁড়ায়। দেখতে পায় নেমে আসছে মেয়েটি কিন্তু তার কুশল জিজ্ঞাসা আর মেয়েটির মিষ্টি হাসির বেশি এগোয় না কিছু আর। নিজের কাজে বেরিয়ে যায় মেয়েটি।

এইরকমই চলেছে, অকস্মাৎ একদিন ধারাটা যেন পালটে গেল কেমন করে।

উৎস বেড়াতে বেরিয়েছে, কিন্তু সিঁড়ির সম্মুখে পৌঁছতে না পৌঁছতেই তর তর করে সিঁড়ি দিয়ে নেমে এলো মেয়েটি ভীত চকিত বন্যহরিণীর মতই।

উৎস বাবু! বেরুচ্ছেন নাকি আপনি? জিজ্ঞেস করেছে সে। বেরুচ্ছিলাম, তবে দূরে কোথাও নয়, এই ডাকবাক্সে একটা চিঠি ফেলতেই যাচ্ছিলাম। দাঁড়িয়ে গেল সে।

আমার ঘরে একটা ইঁদুর! সভয়ে জানালো পার্বতী। আমি ছুটে পালিয়ে এসেছি। উৎসর হাতে যে কোনো চিঠি-পত্র ছিল না তা সে লক্ষ্য করেনি।

চলুন তো দেখি। সিঁড়ি দিয়ে উঠতে উঠতে উৎস শুধোযনেংটি ইঁদুর? না ধাড়ী একটা?

খুব ধাড়ী নয়, নেহাত নেংটিও না, তার মাঝামাঝি…কিন্তু ভয়ঙ্কর।

তা, ইঁদুর একটু ভয়ঙ্কর বই কি! উৎস সায় দেয় তার কথায়? কামড়ে দিলেই তো র্যাটফিভার। তার কোনো চিকিচ্ছে আছে কিনা আমার জানা নেই।

কী সর্বনাশ! বলে মেয়েটি নিজের ঘরের দরজা খোলে। তারপর তড়াক করে এক লাফে একটা চেয়ারের ওপরে গিয়ে দাঁড়ায় ওই! ওই যে! ভীতিবিহ্বল চোখে সে তাকিয়ে থাকে।

ওটাকে ধরতে না পারলে তো রাত্তিরে আমি ভয়ে ঘুমুতেই পারব না। সে বলে, পারবেন তো পাকড়াতে?

চেষ্টা করে দেখা যাক। উৎসাহিত হয়ে এগুলো উৎস। যদিও আমার তেমন প্র্যাকটিশ নেই। ধরতে গেলে এটা বেড়ালদেরই কাজ তো।

একটু তাড়া পেতেই ইঁদুরটা উধাও হয়েছে। চকিতের মধ্যে চোখের উপরেই যেন অদৃশ্য হয়ে গেল। আনাচেকানাচে কোথাও আর তার পাত্তা নেই।

যাক পালিয়ে গেছে ইঁদুরটা। এতক্ষণে তিনটে বাড়ি ছাড়িয়ে গেছে আমার বিশ্বাস। এ তল্লাটেই নেইকো আর। যা তাড়া লাগালুম ওকে। বলতে গেছে উৎস; বাধা পেয়েছে মেয়েটির কাছ থেকে : পালাবে কোথায়! ওই তো, পাপোষের পাশটিতে ঘাপটি মেরে বসে আছে।

তাইতো! পাপোষের আড়ালেই আত্মরক্ষা করছে বটে।

যাক্, এইবার ওকে ঘেরাও করতে পারব। ডাণ্ডা-টাণ্ডা কিছু দিন তো আমায় দেখি। উৎস বলল, ঠাণ্ডা করে দিই ওকে।

তাড়া খেলেই ইঁদুররা নিজেদের গর্তে গিয়ে সেঁধোয়, তার এতকালের বদ্ধমূল ধারণা যেন টলিয়ে দিল ইঁদুরটা। পাপোষের সঙ্গে আপোষ করে উৎসর চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হলো সে।

না না নাআর্তনাদ করে উঠল মেয়েটি? মারবেন না বেচারীকে। ঐ ঝাড়নটা দিয়ে তাকে ধরে বাইরে নিয়ে যে দূরে কোথাও ছেড়ে দিয়ে আসুন বরং। পাকড়াতে পারবেন না ঝাড়ন দিয়ে?

ঝাডনটার বর্ণবৈচিত্র্যে ইঁদুরটা সম্মোহিত হয়েছিল মনে হয়। সহজেই উৎসর হাতে ধরা দিল সে।

ইঁদুরটা ধরা পড়বার পর চেয়ার থেকে নামল পার্বতী। আপনি আমায় বাঁচালেন উৎসবাবু! উচ্ছ্বসিত হয়ে বলল সে।

কুণ্ডলী পাকানো ইঁদুরের পুঁটুলিটা হাতে নিয়ে রাস্তা পেরিয়ে ওধারের পার্কে ছেডে দিয়ে এল উৎস।

ঝাড়নটা নিয়ে ফিরে আসতে দেখল, পার্বতী দেবী তাদের দুজনের জন্যে দুপেয়ালা কফি বানিয়ে বিস্কুটের বাক্স বার করেছে।

কিন্তু ঐ কফির পেয়ালা পর্যন্তই। তার বেশি আর এগুতে পারেনি উৎস।

কতোবার ভেবেছে যে সে শুধোয় বিকেল বেলায় ঘরে বসে বসে করেন কী? চলুন না কোথাও একটু বেড়িয়ে আসি গিয়ে। কিংবা, সামনের পার্কটায় আসুন একটু হাওয়া খাওয়া যাক। সিনেমায় যাওয়ার কথাও তার মনে হয়েছে, কিন্তু কোথায় যেন আটকায়। মেয়েটার মধ্যেই, না, তার নিজের মনেই কোথায় যেন বাধা রয়েছে। কেমন বাধ বাধ ঠেকে।

তার মনে হতে থাকে যে নিজের সুবর্ণ সুযোগটা সে ফসূকে যেতে দিয়েছে। ভাব জমাবার সেই মাহেন্দ্রক্ষণ সে হারিয়েছে কখন যে!

অনেকবার তার মনে হয়েছে সেই ইঁদুরটা ফিরে এসে যদি তার ভ্রষ্ট লগ্ন আবার তাকে ফিরিয়ে দেয়? দ্বিতীয়বার কফিপানের অবকাশে কফির পেয়ালায় তুফান তুলবার সুযোগ কি আর হবে তার? ভাবতে ভাবতে কত রাত সে ঘুমিয়ে পড়েছে।

অবশেষে এক সুপ্রভাতে ঘুম থেকে উঠতেই তার মাথায় একটা আইডিয়া খেলল।

সটান সে চলে গেল নিউ মার্কেটে। পোয্য পশুপক্ষীর এলাকাটায়।

একটা ইঁদুর চাই আমার। পঙ্কশ্ব এক বুড়ো দোকানীর কাছে গিয়ে বলল।

একটা ইঁদুর? নিশ্চয়। এই যে, দেখুন না, কী চমৎকার ইঁদুর সব। দেখছেন?

খাঁচা তর্তি সুশ্রী সাদা রোমশ যত ইঁদুর—দেখলে চোখ জুড়োয়, সত্যি! মনে হয় যেন খরগোসের বাচ্চারা।

না, না। এ ইঁদুর নয়। এরা তো বিলিতি ইঁদুর। আমি চাচ্ছি আমাদের দেশী বাঙালী ইদর। আমাদের ঘরে বাইরে যাদের দেখতে পাই—সেই রকম ঘরোয়া জিনিস।

আজ্ঞে, সে আমাদের কাছে আপনি পাবেন না। রাখিনে আমরা। অবজ্ঞায় নাক কুঁচকে বলল দোকানদারঃ কেউ আবার চায় নাকি সে ইঁদুর! বাড়িতে দেখতে পেলে মেরে তাড়ায়।

তাই একটা আমার চাই যে। জানাল উৎস: ভয়ঙ্কর দরকার ছিল। যা দাম লাগে দেব।

দিয়ে যান দাম। চেষ্টা করে দেখব। আশপাশের বাড়ির বাচ্চা চাকরদের বলে-কয়ে যদি যোগাড় করতে পারি একটা।

উৎস তক্ষুনি তার হাতে দশ টাকার একখানা নোট ধরে দিল।

আপনার ঠিকানাটা দিয়ে যান বাবু! বলল দোকানীটা : আপনার বাড়ি পৌঁছে দিয়ে আসব ইঁদুর।

দিন কয়েক বাদেই পেছিল এসে ইঁদুরটা।

তারপর পার্বতীর কক্ষে ইঁদুরটার অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় মুহূর্ত গুনতে লাগল উৎস—নিজের বিছানায় শুয়ে শুয়ে কান খাড়া করে।

যখন তার বাথরুমে যাবার আওয়াজ এল তার কানে, স্নানের ঘরে কল খোলার শব্দ পেল সে–আস্তে আস্তে উপরে গিয়ে, ঘরের দরজা একটুখানি ফাঁক করে, ইঁদুরটাকে ঢুকিয়ে দিয়েই, দরজাটা ভেজিয়ে দিয়ে চুপ চাপ ফিরে চলে এল উৎস নীচে। নিজের ঘরে বসে পার্বতীর চিৎকারের প্রতীক্ষায় রইল নিঃশব্দে।

একটু পরেই, সেই আগের দিনটির মতই, ধুপধাপ পায়ের আওয়াজ তীরবেগে নেমে এল তার দরজায়। দুয়ার ঠেলে তার ঘরে সদ্যমাতা পার্বতীর আবির্ভাব হল।

উৎস বাবু! আসুন আসুন! চট করে একবারটি আসুন ওপরে। রুদ্ধশ্বাসে বলল সে-আমার ঘরে আবার একটা ইঁদুর! সেই ইঁদুরটাই ফিরে এল কিনা কে জানে!

তাই নাকি? কী সর্বনাশ! উৎসমুখ উন্মুক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উৎসর পা-ও চঞ্চল হয়ে উঠল।

উঠল গিয়ে একেবারে পার্বতীর ঘরে।

কোথায় সে হতভাগা? দেখিয়ে দিন তো।

ঐ যে—ঐ টিপয়ের তলায়।

দেখেই চিনতে পাবল উৎস। তারই সদ্য আমদানি-কৃত নেংটি!

পূর্ব পরিচযের জনাই কিনা কে জানে, ইঁদুরটা উৎসকে দেখে ভয়ে যেন শিটিযে গেল। সহজেই ধরা দিল তার হাতে।

বিজয়গর্বে তাকে করকবলিত করে যেই না উৎস উঠে দাঁড়িয়েছে, অমনি অপর কোণ থেকে আরেকটা ধেড়ে ইঁদুর তেড়ে এল টিপয়ের দিকটায়।

ও বাবা! এ আবার কে! আরেকটা ইঁদুর দেখছি যে! লাফিয়ে উঠেছে উৎস। পার্বতীও তৎক্ষণাৎ নিজের বিছানায় গিয়ে উঠেছে—কী হবে উৎস বাবু! এটা যে আরো সর্বনেশে চেহারার।

একটা কেঁদো ইঁদুর! উৎস বলল, গেরস্থ বাড়ি সচরাচর তো দেখা যায় না এমনটা। সরকারী গুদামের চালমারা ইঁদুর মনে হচ্ছে—খেয়ে দেয়ে বেশ নাদুস নুদুস হয়েছে।

কেঁদো ইঁদুরটাকে ধরতে রীতিমত বেগ পেতে হলো উৎসকে। তারপর কেঁদো আর কঁদো কাঁদো দুটোকেই পাকড়ে ঝাড়ন জড়িয়ে ছেড়ে দিয়ে এলো সেই পার্কটায়।

ঝাড়নটা ফিরিয়ে দিতে এসে আবার দেখল টিপয়ের ওপরে কফির পেয়ালা সাজানো—সেই আগের বারের মতই।

এবারকার সুযোগ সে আর হাতছাড়া করল না।

কফি পানের ফাঁকে ফাঁকে পাড়ল কথাটা—আপনার ঘরে যেমন ইঁদুরের উপদ্রব, তাতে দেখছি, ইঁদুর তাড়াবার জন্যই একটা লোক না রাখতে হয় আপনাকে।

ভাবছি তাই। কিছু না ভেবেই জবাব দিয়েছে পার্বতী!

যদি রাখেনই কোনো লোক, বলল উৎস, তাহলে আমার আবেদনটা করে রাখছি সবার আগে এই ফাঁকে। আমাকেই রাখতে পারেন।

পার্বতী এর কোন উত্তর দিল না, তারা সারামুখ সিঁদুরের মত টকটকে হয়ে নিজের নিরুক্তিটি জানাল।

তারপরে ইঁদুর-লগ্ন থেকে গোধূলির সিঁদুর-লগ্নে পৌঁছতে আর বিশেষ দেরি হলো উৎসর।

সেদিন উৎস এসে আমন্ত্রণ জানাল আমায়-আমাদের বিয়ের উৎসবে আসবেন দাদা! রীতিমতন প্রেম করে বিয়ে, বুঝলেন? বলে সে পুনশ্চ যোগ করে–তা প্রেম করেই বলুন বা ইঁদুর ধরে বিয়ে করাই বলুন!

প্রেম করা তো ইঁদুর ধরার মতই দুঃসাধ্য ব্যাপার ভাই! আমি বলি : শুনি তো ব্যাপারটা।

তারপর থেকে যা উৎসারিত হলো সেই কাহিনীটাই উদ্ধৃত করেছি এখানে। কিন্তু আসল কথাটাই আপনাকে বলা হয়নি দাদা! তার উৎসার শেষ হবার পর সারাংশ সে নিবেদন করে : আজ সকালে যখন আপনাকে নেমন্তন্ন করতে বেরুচ্চি, দেখি যে নিউ মার্কেটের সেই লোকটা ঘুর ঘুর করছে আমাদের বাড়ির সামনে—যার কাছ থেকে ইঁদুরটা আমি কিনেছিলাম।

ইঁদুর ধরবার ফিকিরেই ঘুরছিল বুঝি?

তা নয়। কী দরকারে এসেছে তাকে শুধাতে, সে একটা চিরকুট আমার হাতে দিয়ে বলল, এই ঠিকানার একটি মেয়ে কয়েকটা ইঁদুর চেয়েছিলেন…।

সে কী? কাগজখানা পড়ে দেখি—পার্বতীর নাম ঠিকানা তাতে লেখা।

আমি আরো অবাক হলাম যখন সে বললে, মেয়েটি মাসখানেক আগে একটা ইঁদুর কিনেছিল তার কাছে, আর দিন কয়েক আগেই নিয়েছে আরেকটা। আরো বলেছে যে হয়তো আবারও কয়েকটার দরকার হতে পারে, তাই আমি তার খোঁজ নিতে এসেছিলাম বাবু!

না, না, ইঁদুরের আর দরকার হবে না, আমি বলে দিলাম তাকে। বলল উৎস: ইঁদুর ধরা পড়েছেদরকার নেই আর ইঁদুরের। ইঁদুর দিয়ে ইঁদুর ধরেছে মেয়েটা।কথাটায়, মনে হল, উৎস নিজের প্রতিই যেন কটাক্ষপাত করল— পার্বতীই মূষিক প্রসব করল, মূষিকটাই পার্বতী প্রসব করল!–এখনও আমি ঠিক ঠাওর করতে পারছি না, দাদা।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *