০২. শিল্প ও সাহিত্য

শিল্প ও সাহিত্য

১. শিল্প ও সাহিত্যচর্চার মাধ্যমে আত্মার খাদ্যের সংস্থান করা যায়।

শেলি

২. সবসময় মনে রাখবেন, শিল্পের মাঝেই শিল্পী বেঁচে থাকে।

রিচার্ড হার্ভে

৩. যন্ত্রণাকাতর মনের জন্য সঙ্গীত ওষুধের কাজ করে।

জন কীটস

৪. শত দুঃখের মধ্যেও সঙ্গীত হৃদয়কে স্পর্শ করে।

জন রে

৫. সঙ্গীত পুরুষের হৃদয় থেকে অগ্নি উৎপাদন করে, আর নারীর চোখ থেকে অশ্রু ঝরায়।

বিটোভেন

৬. সঙ্গীত মৃত্যুর পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত হৃদয় স্পর্শ করে।

জন ক্রাউন

৭. সাহিত্য হচ্ছে জীবনের সমালোচনা।

ম্যাথু আরলল্ড

৮. সাহিত্য হচ্ছে সাধারণ মানুষের সুখদুঃখপূর্ণ জীবনের দলিলবিশেষ।

–টমাস মফেট

৯. অভিনয় প্রাণবন্ত না হলে সুসজ্জিত মঞ্চের কোনো মূল্য নেই।

–ডেভিড এভারেস্ট

১০. গান ভালোবাসে না পৃথিবীতে এমন মানুষ বিরল। যদি কেউ থাকে সে নিশ্চয় পাগল।

ইয়ং

১১. ক্ষুদ্র পাখিও তার মধুর কণ্ঠের গান শুনিয়ে মানুষকে পরিতৃপ্ত করতে চেষ্টা করে।

লিন্ডসে

১২. ছেলেরা থিয়েটারে যায় ভুলতে, মেয়েরা মনে করতে।

জর্জ জিন নাথান

১৩. কাকে বলে মঞ্চ? এটা এমন জায়গা, বুঝলে খোকারা, লোকেরা যেখানে গম্ভীর হয়ে ঢোকে, অভিনয় করে দেখায় কমেডি।

লুইগি পিরান্দেল্লো

১৪. সাহিত্য হচ্ছে দেশ ও জাতির জীবনমানসের প্রতিফলন।

ইমারসন

১৫. সাহিত্য মানবতার ছায়া ছাড়া আর কিছু নয়।

হেনরি জেমন

১৬. মানুষ বিশ্বসংসারে যা ভালোবাসে, আর্টের দ্বারা তার স্তব করে।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

১৭. লেখকের স্বাধীনতা যে শুধু লেখকের জন্য প্রয়োজন তা নয়, সমাজের বৃহত্তম কল্যাণের জন্যও তা অত্যাবশ্যক। ভাষার স্বাধিকারের সাথে লেখকের স্বাধীনতাও চাই।

–আবুল ফজল

১৮. যে-মানুষের হৃদয়ে সঙ্গীতের সুর আছে, প্রেম ও প্রীতি বিনিময়ে সে অদ্বিতীয়।

প্লেটো

১৯. আমার কোন বইতেই আমি ভূমিকা দিই না। যে পাঠক চারশো পৃষ্ঠা বই পাঠ করে কিছুই উপলব্ধি করতে পারবে না, তাকে চার পৃষ্ঠা ভূমিকা দ্বারা কিছুই বোঝানো সম্ভব না।

–শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

২০. আজ উপন্যাস, কিন্তু পঞ্চাশ বছর পরে ইহিতাস।

–জহুরুল হক

২১. একুশ মানে মাথা নত না করা। একুশের দাবি মাতৃভাষার দাবি, ন্যায়ের দাবি, সত্যের দাবি।

আবুল ফজল

২২. একজন কবির ঐশ্বর্য হচ্ছে তার কবিতাসম্ভার।

এডমন্ড স্পেন্সার।

২৩. মনেমনে সব মানুষই কবি।

–ইমারসন

২৪. সহজ হওয়ার মাঝে আছে কালচারের পরিচয়। আড়ম্বরের মাঝে দম্ভের। সে দম্ভ কখনো অর্থের, কখনো বিদ্যার, কখনো বা প্রতিপত্তির।

যাযাবর

২৫. আবেগের সঙ্গে ছন্দের সংমিশ্রণেই কাব্যের উৎপত্তি।

সুধীন্দ্রনাথ দত্ত

২৬. কমল হীরার পাথরটাকেই বলে বিদ্যা এবং তার থেকে যে দ্যুতি ঠিকরে পড়ে তাকে বলে কালচার।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

২৭. ঈশ্বর সব মানুষকে কথা বলার ক্ষমতা দিয়েছেন, কিন্তু গান গাওয়ার ক্ষমতা দিয়েছেন স্বল্প কয়েকজনকে।

–ওয়াল্টার স্মিথ

২৮. খাঁচার আবদ্ধ পাখির কণ্ঠে যে-গান, সে-গানে তার বন্দিত্বের সুরই ফুটে ওঠে।

উইলিয়াম ফ্রেডরিক

২৯. জীবনে যা ক্ষণিকের, তাকেই মনোজগতে চিরস্থায়ী করবার কৌশলের নামই আর্ট।

–প্রমথ চৌধুরী

৩০. কবিমাত্রই দরিদ্র হতে পারে, কিন্তু তার অন্তরের ঐশ্বর্য তাকে চিরভাস্বর করে রাখবে।

–গোল্ডস্মিথ

৩১. অনুকরণ করার অধিকার আছে তার, যার আছে সৃষ্টি করার শক্তি। আদান প্রদানের বাণিজ্য চিরদিনই আর্টের জগতে চলেছে।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

৩২. অনুকরণ চুরি, স্বীকরণ চুরি নয়। মানুষের সমস্ত বড়ো বড়ো সভ্যতা এই স্বীকরণ শক্তির প্রভাবেই পূর্ণ মাহাত্ম লাভ করেছে।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

৩৩. উপন্যাস মানুষকে জীবন সম্পর্কে সচেতন করে তোলে। –রবার্ট হেনরিখ . ৩৪. একটা নাটক তোমাকে অবশ্যই ভাবার মতো কিছু একটা দেবে। কোনো নাটক দেখে প্রথমবারই যখন আমি বুঝে ফেলি, তখনই টের পাই জিনিসটি সুবিধার নয়।

–টি. এস. এলিয়ট

৩৫. আমার নাটকে আমি চাই জীবনের দিকে তাকাতে–তাকাতে চাই অস্তিত্বের মূল ভূমির ওপর–যেন মাত্র বাঁক নিলাম আমরা, আর জায়গাটাতে দৌড়ে গেলাম প্রথমবারের মতো।

ক্রিস্টোফার ফ্রাই

৩৬. যে-কোনো সভ্যতার উৎকৃষ্ট ব্যারোমিটার হল তার কবি-সাহিত্যিক।

কৃষণ চন্দর।

৩৭. জগতে যেথা যত রয়েছে ধ্বনি
যুগল মিলিয়াছে আগে।
যেখানে প্রেম নেই বোবার সভা,
সেখানে গান নাহি জাগে।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

৩৮. স্পষ্ট উচ্চারণ হল ভাষার প্রাণ; উচ্চারণের স্পষ্টতা ভাষাকে অনুভূতি ও সততা দান করে।

–রুশো

৩৯. যে সংগীত ভালোবাসে না সে মানুষ খুন করতে পারে।

–প্রবাদ

৪০. যিনি জীবনকে ভালোবাসেন তিনি সংগীতকে ভালো না বেসে পারেন না।

–সমরেশ বসু

৪১. সংগীতপাগলরা পাগল নয়, সংগীতবিরোধীরাই পাগল।

–বিটোভেন

৪২. তরবারি দিয়ে রাজ্য জয় করা যায়, কিন্তু সংগীত দিয়ে শত্রুকে বন্ধু করা যায়।

–অজ্ঞাত

৪৩. ছবি জিনিসটা হচ্ছে অবনীর, গান জিনিসটা গগনের। অসীম যেখানে সীমার মধ্যে সেখানে ছবি, অসীম যেখানে সীমাহীনতায় সেখানে গান। রূপরাজ্যের কলা ছবি, অরূপ রাজ্যের কলা গান। কবিতা উভচর। ছবির মধ্যেও চলে, গানের মধ্যেও ওড়ে। কেননা, কবিতার উপকরণ হচ্ছে ভাষা। ভাষার একটা দিকে অর্থ আর একটা দিকে সুর, এই অর্থের যোগে ছবি গড়ে ওঠে, সুরের যোগে গান।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

৪৪. সংগীত হচ্ছে সেই পরম ভাষা যা দিয়ে সংগীতশিল্পী প্রত্যেক হৃদয়ের সাথে কথা বলেন।

রিচার্ড ওয়াগনার

৪৫. সংগীতের মাধুর্য তুলনাবিহীন। সংগীত দিয়ে মা তার দুষ্টু শিশুকে ঘুম পড়িয়ে থাকে, প্রেমিক প্রেমিকার মন জয় করে, নিঃসঙ্গ ব্যক্তি নিঃসঙ্গতার দুঃখ ভোলে।

–রিও রেনাল্ড

৪৬. সংগীতের মাধ্যমে যা-কিছু শেষ হয় তা-ই সুন্দর।

রবার্ট বার্নস

৪৭. তোমার গান যদি কাউকে আনন্দ দেয়, দুঃখ ভোলায়, তবেই তো তুমি যথার্থ শিল্পী।

টমাস স্টুড আর্ট

৪৮. শিল্প নিজেকে ছাড়া অন্য কিছুই প্রকাশ করে না।

অস্কার ওয়াইল্ড

৪৯. জগৎ-সংসারকে কৌশলে এড়াতে হলে শিল্পের (আর্টের) অনুশীলনের চাইতে মোক্ষম পন্থা আর দুটি নেই। আবার সংসারাসক্ত হতে হলেও আর্টের অবলম্বন ব্যতীত অমোঘ কিছু নেই।

–গ্যেটে

৫০. সব শিল্পের মূল কথা প্রকাশ। প্রকাশ যত অবাধ ও বিচিত্রমুখি হয়, শিল্পও হয় তত সম্পদশালী।

–আবুল ফজল

৫১. শিল্প আর বিদ্রোহের মৃত্যু ঘটবে সেইদিন যেদিন ভূপৃষ্ঠে একটি মানুষও বেঁচে থাকবে না।

–আলবেয়ার কামু

৫২. শিল্পী নিঃসন্দেহে যুগ-সন্তান, কিন্তু তাই বলে তিনি যদি যুগ-শিষ্য হয়ে পড়েন, তবে সেটাই তার জন্য অত্যন্ত শোচনীয়।

শিলার

৫৩. সাহিত্য ও শিল্পের কাজ মানুষের হৃদয়ে প্রবেশ করা–মনকে শুধু মুগ্ধ নয় হৃদয়কে জাগিয়ে তোলাও।

–আবুল ফজল

৫৪. অব্যয় হল পদের জন্যে কলার খোসা।

ক্লিফটন ফ্যাডিম্যান

৫৫. মনে রাখা ভালো ব্যাকরণই সাধারণ কথাবর্তার উৎস।

সমারসেট মম

 ৫৬. যতক্ষণ ভালো আছি ব্যাকরণের দরকারটা কী?

–আর্টেমস ওয়ার্ড

৫৭. যে-লেখক ব্যাকরণের রীতিতে লিখতে পারেন না তিনি বন্ধ করে দিন দোকান।

আর্টেমাস ওয়ার্ড

৫৮. নিঃসন্দেহে আত্মতৃপ্তি সাহিত্য ও শিল্পের এক বড় শত্রু। –আবুল ফজল

৫৯. যা সবার ভালো লাগে, যা দৃষ্টিনন্দন, যা প্রাণে এক অপরূপ আবেগ ও আনন্দ সৃষ্টি করে–সেটাই যথার্থ উৎকৃষ্ট শিল্প।

–কামরুল হাসান

৬০. কুরূপা মেয়ের চেয়ে সুশ্রী মেয়ের পতিতাবৃত্তি যেমন সমাজের পক্ষে বেশি অনিষ্টকর, তেমনি সমাজের পক্ষে বেশি মারাত্মক ক্ষমতাশালী পথভ্রষ্ট শিল্পী।

বার্নার্ড শ

৬১. পোষা বাঘ যেমন বাঘ নয়, পোষা শিল্পীও তেমনি শিল্পী নয়।

–আবুল ফজল

৬২. প্রত্যেক মানুষের ভেতরেই একটা শিল্পীমন ঘুমিয়ে আছে।

বেকন

৬৩. একজন দক্ষ সমালোচককে লেখকের হৃদয়ে স্থান দেওয়া উচিত।

–এইচ. এল. ম্যালফেল

৬৪. আমাদের দেশে পলিটিক্সকে যারা নিছক পালোয়ানি বলে জানে, সব রকম ললিতকলাকে তারা পৌরুষের বিরোধী বলে ধরে রেখেছে।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

৬৫. হৃদয় যার সঠিক স্থানে নেই, শত চেষ্টা করেও সে কবি হতে পারে না।

রিচার্ড রাওলে

৬৬. কলমকে হৃদয়ের জিহ্বা বলা যায়।

কারভেনটিস

৬৭. কাব্যের একটি গুণ আছে, যা কম লোকেই অস্বীকার করবে ও কাব্য গদ্যের তুলনায় অনেক অল্প কথায় অনেক বেশি ভাব প্রকাশ করে থাকে।

–ভলতেয়ার

৬৮. জগতে যেথা যত রয়েছে ধ্বনি
যুগল মিলিয়াছে আগে।
যেখানে প্রেম নাই বোবার সভা,
সেখানে গান নাহি জাগে।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

৬৯. বাঁশি বাজালেই কেউ নাচে না; তার সুরের মধ্যে নাচের উন্মাদনা থাকলেই নাচে।

–ব্রিন্ট হার্টি

৭০. রস জিনিসটা রসিকের অপেক্ষা রাখে, কেবলমাত্র নিজের জোরে নিজেকে সে সপ্রমাণ করিতে পারে না।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

৭১. যেখানে সাহিত্য রচনায় লেখক উপলক্ষমাত্র না হইয়াছে সেখানে তাহার লেখা নষ্ট হইয়াছে। যেখানে লেখক নিজের ভাবনায় সমগ্র মানুষের ভাব অনুভব করিয়াছে, নিজের লেখায় সমগ্র মানুষের বেদনা প্রকাশ করিয়াছে, সেইখানেই তাহার লেখা সাহিত্যে জায়গা পাইয়াছে।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

৭২. সাহিত্যের ইতিহাস সাধারণত গৌণ লেখকদেরই ইতিহাস, যারা দুই মহৎ লেখকের মাঝখানে স্থান ও কালগত শূন্যতার পূরণ করে মাত্র।

–দেবেশ রায়।

৭৩. প্রয়োজন হলে একজন সৎ, আন্তরিক সাহিত্যিককে জীবনের অন্য সবকিছুই ছেড়ে দিতে হয়। সাহিত্য সতীন পছন্দ করে না।

–বুদ্ধদেব গুহ

৭৪. যিনি লেখক তাকে অনেক কিছুই লিখতে হয়, যা না লিখে তিনি পারেন না।

–জন ক্লার্ক

৭৫. রসের সচ্ছলতায় সাহিত্য হয় না, রসের উচ্ছলতায় সাহিত্যের সৃষ্টি।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

৭৬. লেখকের একটি প্রধান কাজ হল তাঁর লেখা মারফত পাঠকের সঙ্গে কমুনিকেশন ঘটানো। আর এই কুমুনিকেশনের জন্য ভাষাকে হতে হবে নির্ভার, মেদহীন এবং ঋজু।

–প্রফুল্ল রায়

৭৭. যদি লেখক হওয়ার বাসনা থাকে তবে লেখো।

ইপিকটিটাস

৭৮. শুধু প্রতিভা থাকলেই লেখক হওয়া যায় না, পেছনে একজনকে থাকতে হবে।

এমারসন

৭৯. একজন লেখক তখনই লেখে–যখন লিখতে বসে তার বিশ্বাস হয় এমন জিনিসটি আগে আর কেউ লেখেনি। পরে হয়তো সে বিশ্বাস ভুল প্রমাণিত হয়। কিন্তু লেখার সময় ঐ বিশ্বাসটুকু চাই-ই চাই। নয়তো লেখা যায় না।

শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়

৮০. সাহিত্যের প্রদীপ লেখকের মগজের তেল দিয়ে জ্বলে।

সাদাত হাসান মিন্টো

৮১. একটি কপোত যদি কপোতীকে দেখে বাকবাকুম করে উঠতে পারে, তা হলে নারীকে নিয়ে একজন পুরুষ গজল বা গল্প লিখলে আপত্তি কী? মেয়েরা কপোতীর চেয়ে অনেক অনেক বেশি আকর্ষণীয় এবং লাবণ্যময়ী।

সাদাত হাসান মিন্টো

৮২. যে নিজের সম্বন্ধে লেখে এবং তার সমকালের ব্যাপারে লেখে, সে-ই একমাত্র ব্যক্তি, যে সব লোকের জন্য লেখে ও সব মানুষের জন্য লেখে।

বার্নার্ড শ

৮৩. লেখকের জন্য লেখার শাসন ছাড়া অন্য কোন শাসন নেই, অন্তত যখন তিনি লিখতে বসেন তখনকার মতো। তখন তিনি শুধু শিল্পী। শিল্পের শাসনে তিনি যুগপৎ বন্দী

–আবুল ফজল

৮৪. শক্তিমান লেখকের একটি গুণ ভাষা ও ভাবে বেপরোয়া হতে তাঁর দ্বিধা নেই।

–আবুল ফজল

৮৫. লেখক আর শিল্পীর পক্ষে ভবঘুরেমি ধর্মবিজয়, কলাবিজয় এবং সাহিত্য বিজয়ের সূচনাস্বরূপ। বাস্তবিক ভবঘুরেমিকে সামান্য জিনিস মনে করা উচিত নয়। ভবঘুরেমি হল সত্যানুসন্ধানের জন্য, শিল্পসৃষ্টির জন্য সদৃভাবনার প্রসবের জন্য দিগ্বিজয়।

রাহুল সাংকৃত্যায়ন

৮৬. সাহিত্যিকের কাছে সত্যই বড় কথা। সত্যের সঙ্গে যদি জাতীয় আদর্শ, ধর্ম বা শাস্ত্রের বিরোধ ঘটে, নিঃসন্দেহে বিনা দ্বিধায় সাহিত্যিক সত্যের পক্ষাবলম্বন করবেন।

–আবুল ফজল

৮৭. বড় লেখকও তাঁর পূর্ববর্তী লেখকের দ্বারা প্রভাবিত না হয়ে পারেন না, কিন্তু এক সময় আপনা-আপনি তার নিজস্ক শৈলী বেরিয়ে আসে।

রাহুল সাংকৃত্যায়ন

৮৮. সুলেখকরাই একমাত্র জানেন কখন তাঁর লেখা বন্ধ করতে হবে। –রউক্স ৮৯. শিল্প-সাহিত্যের মধ্যে বেঁচে থাকার মধ্যে রয়েছে গভীর প্রশান্তি।

–টমাস ফুলার

৯০. বিক্রয় তালিকা দিয়ে মহৎ সাহিত্যের মান নির্ণয় করা যায় না সত্য, তবে জনপ্রিয়তা শিল্পের কালোত্তরণের একটি প্রমাণ তো বটেই।

রাধারানী দেবী।

৯১. অন্তরে যার রসের অভাব সে কখনোই রস-সাহিত্য সৃষ্টি করতে পারে না।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

৯২. কিছু দুপাঠ্য গদ্য, দর্শন বা রাজনীতির বক্তৃতা পরিবেশন করে যারা সাহিত্যিকের দায়িত্ব পালন করছেন মনে করেন, আমি তাদের সমর্থন করতে পারি না। কারণ আমি মনে করি শিক্ষকের ভূমিকা গ্রহণ করে তাঁরা পাঠককে অসম্মান করেন। লেখকের সঙ্গে পাঠকের সম্বন্ধ তো বন্ধুত্বের। জ্ঞান বিতরণের অধিকার তো তাঁকে দেওয়া হয়নি, যিনি গল্প উপন্যাসকে সাহিত্যের মাধ্যম হিসাবে বেছে নিয়েছেন।

–শরৎকুমার মুখোপাধ্যায়

৯৩. মন্দের ওকালতি করিতে কোনো সাহিত্যিকই কোনোদিন সাহিত্যের আসরে অবতীর্ণ হয় না, কিন্তু ভুলাইয়া নীতিশিক্ষা দেওয়া সে আপনার কর্তব্য বলিয়া জ্ঞান করে না। দুর্নীতিও সে প্রচার করে না। একটুখানি তলাইয়া দেখিলে তাহার সমস্ত সাহিত্যিক দুর্নীতির মূলে হয়তো এই একটা চেষ্টাই ধরা পরিবে, মানুষকে সে মানুষ বলিয়াই প্রতিপন্ন করিতে চায়।

–শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

৯৪. আমাদের সংস্কৃতির দুঃখজনক একটি দিক হল কবিরা শিল্পচর্চা করার চেয়ে সে বিষয়ে লিখে বা বলে বরং বেশি টাকা কামাতে পারেন।

ডব্লিউ. এইচ. অডেন

৯৫. আমার বইগুলির সঙ্গে যারা পরিচিত, তারাই জানে আমি কোনোদিন কোনো ছলেই নিজের ব্যক্তিগত অভিমত জোর করে কোথাও খুঁজে দেবার চেষ্টা করিনি। ….. সেইজন্যেই আমার লেখার মধ্যে সমস্যা আছে, সমাধান নেই; প্রশ্ন আছে, তার উত্তর খুঁজে পাওয়া যায় না। কারণ, এ আমার চিরদিনের বিশ্বাস যে সমাধানের দায়িত্ব কর্মীর, সাহিত্যিকের নয়। কোথায় কোন্টা ভাল, কোন্টা মন্দ; বর্তমানকালে কোন্ পরিবর্তন উপযোগী এবং কোটার সময় আজও আসেনি, সে বিবেচনার ভার আমি সংস্কারকের উপরে রেখেই নিশ্চিন্ত মনে বিদায় নিয়েছি।

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

৯৬. যারা লেখক তারা যদি পঞ্চাশ বছর, একশো বছরের কথা এগিয়ে কল্পনা করতে পারে তবে চলবে না। আজ যাদের মনে হচ্ছে–লোক বিগড়ে যাবে, তখন তাঁদেরই আর সে কথা মনে হবে না। মানুষের “idea” ক্রমেই বদলে যাচ্ছে।

–শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

৯৭. একজন নির্বোধ লেখকই কেবল সারাজীবন অর্থ ছাড়া লিখে যায়।

জনসন

৯৮. পৃথিবীতে যা-কিছু মহৎ এবং সুন্দর, কবি-সাহিত্যিক-শিল্পীরা তাকেই চিরঞ্জীব করে রাখেন।

–শেলি

৯৯. গ্রন্থকার কোন বিশেষ জাতি, সম্প্রদায় বা ধর্মের লোক নয়। সে হিন্দু, মুসলমান, খ্রিস্টান, ইহুদি সমস্তই।

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

১০০. শ্রেষ্ঠ সমালোচক ও স্রষ্টা নীরবে কাজ করে যায়। ভিড় থেকে বহুদূরে থাকে তারা।

–রঁম্যা রলাঁ

১০১. যে কবিতায় বা ছোট গল্পে অনেক fact আছে, ঘটনা আছে, ভাবটা নিতান্ত সাদাসিদা, সাংসারিক, আমি দেখিয়াছি বেশি লোকেরই তা ভাল লাগে। তারা সেটা বোঝে ভাল, কেননা বোঝা সহজ।

–শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

১০২. শিল্পসৃষ্টি কখনোই নীতিহীন হয় না।

রঁম্যা রলাঁ

 ১০৩. জ্ঞানের কথায় আর ভাবের কথায় একই নিয়ম খাটে না। জ্ঞানের কথাকে ভাষান্তরিত করিলে তাহার তেমন ক্ষতি হয় না, কিন্তু ভাবের কথাকে ভাষাবিশেষ হইতে উৎপাটিত করিয়া তাহাকে ভাষান্তরে রোপণ করিলে তাহার স্ফুর্তি থাকে না, তাহার ফুল হয় না, ফল হয় না, সে ক্রমে মরিয়া যায়।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

১০৪. সংঘ বা গোষ্ঠীশিল্পীরা শুধু কতকগুলো বাইরের চাকচিক্য আর শেখানো বুলির বাহক। কিন্তু যারা দূরে দাঁড়িয়ে থাকেন, তাঁরাই শুধু পারেন কোনো এক বিশেষ সময়ের বা বিশেষ জতির বিশষ কোনো তত্ত্ব খুঁজে বার করতে।

–রঁম্যা রলাঁ

১০৫. লেখা আর লেখকের ধর্ম পাঠককে সচেতন করে তোলা, পাঠকমনে সর্ববিষয়ে জিজ্ঞাসা সঞ্চারিত করা।

–আবুল ফজল

১০৬. একজন কবি বা লেখক কখনো নির্ধারিত সীমারেখার মধ্যে বিচরণ করতে পারেন না।

–টমাস ফুলার

১০৭. যে-কোনো দক্ষ লেখকেরই প্রধান লক্ষ্য পাঠক। যারা পাঠক-সমাদৃত হন না, কেবল তারাই ভিন্ন কথা বলেন।

অক্টাভিও পাজ

১০৮. সব মানুষ অল্পবিস্তর ভাবতে আর অনুভব করতে পারে। কিন্তু প্রকাশ করতে পারে লাখে এক। এখানেই সাহিত্যিকের অনন্যতা। ভাব বা অনুভূতি প্রকাশিত হয়ে দেখা না দিলে সাহিত্য হয় না।

–আবুল ফজল

১০৯. রাষ্ট্র বা রাষ্ট্র পরিচালকরা আর যাকেই ফাঁকি দিতে বা বোকা বানাতে পারুক না কেন, লেখক ও বুদ্ধিজীবীদের পারে না। লেখকরা একটি তৃতীয় নেত্রের অধিকারী, যে নেত্র দিয়ে তারা সব কিছু দেখতে পায়।

–আবুল ফজল

১১০. জাতিকে নৈতিক আর মন-মানসের দাসত্ব থেকে বাঁচাবার দায়িত্ব লেখক আর বুদ্ধিজীবীদের।

–আবুল ফজল

১১১. শব্দ সত্যি-সত্যি মুখোশ। সত্যকে এটি খুব কমই প্রকাশ করে। সত্যি বলতে কি, বরং লুকিয়ে রাখতে চায়।

–হেরমান হেস

১১২. যে অভিনযে চরিত্রের সাথে সম্পূর্ণ একাত্ম হয়ে চরিত্রটাকে চরিত্রের মতোই ফুটিয়ে তুলতে পারে, যখন মনে হয় না যে এটা অভিনয়, সেই ব্যক্তিই প্রকৃত অভিনেতা।

শম্ভু মিত্র

১১৩. বেপরোয়া হতে না পারলে লেখক নিজেকে সম্পূর্ণভাবে প্রকাশ করতে পারেন। বেপরোয়া হওয়া মানে পরিপূর্ণভাবে স্বাধীন বোধ করা।

–আবুল ফজল

১১৪. নির্দোষিতার চাইতে বিবেকের অবস্থান অনেক উঁচুতে।

–টমাস মান।

১১৫. খাঁটি লেখক কখনো হাঁ-হুঁজুরের ভূমিকায় নামতে পারে না। রাজনৈতিক মুক্তির চেয়েও মনের মুক্তি, বুদ্ধির মুক্তি অনেক মূল্যবান।

–আবুল ফজল

১১৬. অনুবাদ যদি স্থানে-স্থানে ব্যাখ্যার আকার ধারণ করে তবে অন্যায় হয়, কারণ, ব্যাখ্যায় অনুবাদকের ভ্রম থাকিতেও পারে। এইজন্য অনুবাদ ও ব্যাখ্যা সব রাখিয়া দিলে পাঠককে বিচার করিবার অবকাশ দেওয়া হয়। মূলের যে সকল কথার অর্থ সুস্পষ্ট নহে অনুবাদে তাহা যথাযথ রাখিয়া দেওয়াই কর্তব্য মনে করি।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

১১৭. মানুষ বিকাশধর্মী জীব–তার বিকাশের জন্য এ যাবৎ যত উপায়-উপকরণ আবিষ্কৃত হয়েছে তার মধ্যে নিঃসন্দেহে সাহিত্য শিল্প শ্রেষ্ঠতম। এ বিকাশ মানুষের এত সহজাত যে, মানুষকে মানুষ রেখে এর লোপসাধন কিছুতেই সম্ভব নয়।

আবুল ফজল

১১৮. সাহিত্যে আধুনিকতা মানে সামান্য লাভের জন্য বিরাট দাম দেওয়া আর আঙ্গিকে বিশুদ্ধ আধুনিকতা মানে সব সময় কিছু-না-কিছুটা অশ্লীলতাপ্রবণ।

অস্কার ওয়াইল্ড

১১৯. সাহিত্যের বাণী মাত্রই স্বাধীনতার বাণী। স্বাধীনতা মানে জীবনকে জানা, জীবনের দাবি বুঝে নিয়ে জীবনের রূপায়ণ।

আবুল ফজল

১২০. উত্তমাধম সব উপমাই যাচাই হয়ে তার স্থান পাচ্ছে কাব্যে, সাহিত্যে-শিল্পে। এই যাচাই হাবার দুটো জায়গা–তার একটা হল রসিকের সভা আর একটা হল মহাকালের বিচারালয়।

অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর

১২১. শাস্ত্র, রাষ্ট্র ও মতবাদ সবই এক একটা শৃঙ্খল। সাহিত্য মানুষের মনের মুক্তির ক্ষেত্র। তাই সাহিত্যিককে এ-সব শৃঙ্খল ভেঙে ভেঙেই এগুতে হয়।

আবুল ফজল

১২২. সাহিত্য সত্য-মিথ্যায়, জ্ঞানে-অজ্ঞানে, আলোয়-অন্ধকারে, যুক্তি ও অন্ধবিশ্বাসে পার্থক্য সৃষ্টি করে।

–আহমদ শরীফ

১২৩. বর্ণ বা সম্প্রদায়ের নামে অথবা জাতি কি ভাষাগত কারণে সাহিত্য-শিল্পের স্মরণীয় ঐতিহ্য বিশেষকে উপেক্ষা করা মানে নিজের শিল্প সাধনাকে খর্ব করা। ছোটর জন্য বড়কে ত্যাগ করা।

আবুল ফজল

১২৪. পর্যবেক্ষণী মানুষ বিজ্ঞান রচনা করে, চিন্তাশীল মানুষ দর্শন রচনা করে এবং সমগ্র মানুষটি সাহিত্য রচনা করে।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

১২৫. তালিম দিয়ে কেউ কাউকে সাহিত্যিক বানাতে পারে না।

আবুল ফজল

১২৬. অনুভূতিসঞ্জাত যে ভাব মনে ও মাথায় আলোড়ন জাগায় তাই বাণীরূপ লাভ করে হয় সাহিত্য। পরিণত সাহিত্যে সমন্বিত হয় আদিমতা, বৈদগ্ধ্য এবং পরিণত মনের লক্ষণ, আবেগ ও বুদ্ধির সামঞ্জস্য ও জীবন সম্পর্কে ট্রাজিক চেতনা।

–আহমদ শরীফ

১২৭. সাহিত্যের একমাত্র উদ্দেশ্য রসসৃষ্টি।

–প্রবোধকুমার সান্যাল

১২৮. সাহিত্যের উদ্দেশ্য আনন্দ দান করা, কিন্তু সে-আনন্দটি গ্রহণ করাও নিতান্ত সহজ নহে, তাহার জন্য শিক্ষা এবং সাহায্যের প্রয়োজন।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

১২৯. মানুষের দর্শন-বিজ্ঞান, ধর্মনীতি, অনুরাগ-বিরাগ, আশা-নৈরাশ্য তার অন্তরের সত্য ও স্বপ্ন। এই সকলের সমবায়ে সাহিত্যের জন্ম। অপরাপর শাস্ত্রের ভিতর যা আছে, রস–সব হচ্ছে মানুষের মনের ভগ্নাংশ। তার পুরো মনটার সাক্ষাৎ পাওয়া যায় শুধু সাহিত্যে।

–প্রমথ চৌধুরী

১৩০. খণ্ড, ক্ষুদ্র ও তুচ্ছকে সমগ্রতার মর্যাদা ও গুরুত্ব দান করাই সাহিত্যিকের কাজ। সাহিত্য তাই যাতে মানুষ আনন্দে করিবে পান সুধা নিরবধি।

আহমদ শরীফ

১৩১. মহৎ শিল্পী মানেই বিদ্রোহী।

আবুল ফজল

১৩২. বটতলার সাহিত্য লেখাও যে কী পরিশ্রমসাধ্য ও কষ্টকর, যারা লেখে কেবল তারাই বোঝে। সাহিত্য ক্ষেত্রে সহজে বাজীমাত করা যায় না।

বুদ্ধদেব বসু

১৩৩. কাঁচা আমের রসটা অম্লরস, কাঁচা সমালোচনাও গালিগালাজ। অন্য ক্ষমতা যখন কম থাকে তখন খোঁচা দিবার ক্ষমতাটা খুব তীক্ষ্ণ হইয়া উঠে।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

১৩৪. মানবহৃদয়ের মহৎ চিন্তাই সাহিত্যের ভিত্তি।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

১৩৫. সাহিত্য হচ্ছে মনকে সজীব, সতেজ, সচল ও গ্রহণশীল রাখার এক শ্রেষ্ঠ উপায়।

আবুল ফজল

১৩৬. সহিত শব্দ হইতে সাহিত্যের উৎপত্তি। অতএব ধাতুগত অর্থ ধরিলে সাহিত্য শব্দের মধ্যে একটি মিলনের ভাব দেখিতে পাওয়া যায়। সে যে কেবল ভাবে-ভাবে ভাষায়-ভাষায় গ্রন্থে-গ্রন্থে মিলন তাহা নহে; মানুষের সহিত মানুষের, অতীতের সহিত বর্তমানের, দূরের সহিত নিকটের অত্যন্ত অন্তরঙ্গ যোগসাধন সাহিত্য ব্যতীত আর কিছুর দ্বারাই সম্ভবপর নহে। যে দেশে সাহিত্যের অভাব সে দেশের লোক পরস্পর সজীব বন্ধনে যুক্ত নহে; তাহারা বিচ্ছিন্ন।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

১৩৭. সাহিত্যিক হিসাবে প্রতিষ্ঠালাভের জন্য পাঠক-পাঠিকার সহযোগিতা চাই পঞ্চাশ ভাগ, পঁচিশ ভাগ চাই লেখকের সত্যিকার প্রতিভা আর পঁচিশ ভাগ ধৈর্য।

বার্নার্ড শ

১৩৮. রিয়ালিটি শিল্প নয়। জীবন সাহিত্য নয়। শিল্প হচ্ছে সুন্দরতার চয়ন, জীবনের বিস্তার দর্পণ নয়। শতদলের পরিচয় তার পঙ্কিল জন্মস্থানে নয়, তার প্রস্ফুটিত রূপলাবণ্যে, তার নির্মল নৈবেদ্যে।

–শচীন ভৌমিক

১৩৯. সাহিত্য মূর্খদের জন্য নয়, শিক্ষিত, রুচিবান ও বিদগ্ধ ব্যক্তিদের জন্য।

–আশুতোষ মুখোপাধ্যায়

১৪০. সাহিত্যে মানুষ নিজেরই অন্তরতম পরিচয় দেয় নিজের অগোচরে, যেমন পরিচয় দেয় ফুল তার গন্ধে, নক্ষত্র তার আলোকে।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

১৪১. সাহিত্য হচ্ছে দেশ ও জাতির জীবন ও মানসের প্রতিফলন।

–এমারসন

১৪২. পৃথিবীতে দশে মিলে অনেক কাজ হয়ে থাকে, কিন্তু সাহিত্য তার অন্তর্গত নয়। সাহিত্য একান্তই একলা-মানুষের সৃষ্টি।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

১৪৩. ভাবের আদান-প্রদান মানুষকে মানসিক প্রস্তুতি দান করে এবং লেখার সাধনা মানুষকে যথার্থ মানুষ করে তোলে। লেখার অভ্যাস যার কম, তার স্মৃতিশক্তি অসাধারণ হওয়া দরকার।

ফ্রান্সিস বেকন

১৪৪. লোক যদি সাহিত্য হইতে পাইতে চেষ্টা করে তবে পাইতেও পারে; কিন্তু সাহিত্য লোককে শিক্ষা দিবার জন্য কোনো চিন্তাই করে না। কোনো দেশেই সাহিত্য ইস্কুল মাস্টারির ভার লয় নাই।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

১৪৫. সাহিত্যের বিচার করিবার সময় দুইটা জিনিস দেখিতে হয়। প্রথম, বিশ্বের উপর সাহিত্যকারের হৃদয়ের অধিকার কতখানি; দ্বিতীয়, তাহা স্থায়ী আকারে ব্যক্ত হইয়াছে কতটা।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

১৪৬. সাহিত্য কখনো কোনো মানুষের, সমাজের বা জাতির ক্ষতি করে না। সাহিত্য হল সুন্দরের সাধনা।

সন্তোষকুমার ঘোষ

১৪৭. শব্দ ও ভাষা গঠনের জন্য নির্ভরশীল হতে হবে লেখকের উপর। শক্তিশালী লেখক জন্ম দেন ভাষার, সৃষ্টি করেন নতুন নতুন শব্দের। আসলে সুন্দর ভাষার জন্ম হয় লেখকের সাধনায়।

ড. শহীদুল্লাহ

১৪৮. শিল্প ও সাহিত্যচর্চার মাধ্যমে আত্মার খাদ্যের সংস্থান করা যায়।

শেলি

১৪৯. দ্রিালস জাতিকে জীবন্ত, উদ্বুদ্ধ ও সঞ্জীবিত করিতে হইলে সর্বাগ্রে জাতীয় সাহিত্যের উন্নতি করিতে হয়।

হারানচন্দ্র রক্ষিত

১৫০. এই অভিশপ্ত, অশেষ দুঃখের দেশে, নিজের অভিমান বিসর্জন দিয়ে রুশ সাহিত্যের মতো যেদিন সে আরো সমাজের নীচের স্তরে নেমে গিয়ে তাদের সুখ-দুঃখের বেদনার মাঝখানে দাঁড়াতে পারবে, সেদিন এই সাহিত্য-সাধনা কেবল স্বদেশে নয়, বিশ্ব সাহিত্যেও আপন স্থান করে নিতে পারবে।

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

১৫১. আনন্দ দিতে, মানুষের জীবনের বোঝা কমাতে, তাদের দুঃখ বেদনা, তাদের নিশ্ৰুপ গৃহের মাঝে তাদের বিফল আশা ও তাদের বিষাদময় ভবিষ্যৎ হতে মুক্তি দিতেই সাহিত্যের সৃষ্টি হয়েছে।

ব্রিয়েল ১৫২. সাহিত্যের সঙ্গে সংশ্রবহীন মানুষ সুস্থ স্বাভাবিক নয়। বাট্রান্ড রাসেল

১৫৩. সাহিত্যসেবকেরা পরস্পরের পরমাত্মীয়। হিন্দু হোক, মুসলমান হোক, তবু পর নয়–আপনার জন। সাহিত্যিকদের কোনো ধর্ম নেই।

–শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

১৫৪. ভাষা ও সাহিত্যে পশ্চাদভ্রমণ কোনো কালেই সম্ভব নয়, ভাষা ও সাহিত্য চিরকালই অগ্রসরমান।

আব্দুল মান্নাল সৈয়দ।

১৫৫. মানুষ যখন সাহিত্য রচনায় নিবিষ্টচিত্ত তখন ঠিক হিন্দুও নয়, মুসলিমও নয়। তখন সে তার সর্বজন পরিচিত ‘আমি’টাকে বহুদূরে অতিক্রম করে যায়, নইলে তার সাহিত্য-সাধনা ব্যর্থ হয়।

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

১৫৬. যদি গুণ না থাকে, তা হলে তার অভিনয় করো।

–শেক্সপীয়ার

১৫৭. নাট্যাভিনয়ে আমাদের হৃদয় বিচলিত করিবার অনেকগুলি উপকরণ একত্রে বর্তমান থাকে। সংগীত, আলোক, দৃশ্যপট, সুন্দর সাজসজ্জা, সকলে মিলিয়া নানা দিক হইতে আমাদের চিত্তকে আঘাত করিয়া চঞ্চল করে; তাহার মধ্যে একটা অবিশ্রাম ধারাস্রোত নানা মূর্তি ধারণ করিয়া, নানা কার্যরূপে প্রবাহিত হইয়া চলে–আমাদের মনটা নাট্যপ্রবাহের মধ্যে একেবারে নিরুপায় হইয়া আত্মবিসর্জন করে এবং দ্রুতবেগে ভাসিয়া চলিয়া যায়। অভিনয়স্থলে দেখা যায়, ভিন্ন ভিন্ন আর্টের মধ্যে কতটা সহযোগিতা আছে, সেখানে সংগীত সাহিত্য চিত্রবিদ্যা এবং নাট্যকলা এক উদ্দেশ্য সাধনের জন্য সম্মিলিত হয়, বোধ হয় এমন আর কোথাও দেখা যায় না।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

১৫৮. অভিনেতার হাতে যখন টাকা থাকে, তখন চিঠি লেখার প্রয়োজনে সে টেলিগ্রাম করে।

আন্তন শেখভ

১৫৯. ধর্ম, রাষ্ট্র, রাজনৈতিক মতবাদ বা ইজম–এসবের কোনো একটাকে সাহিত্যের প্রতিষ্ঠাভূমি করতে গেলে বনের বাঘকে, খাঁচায় বন্ধ করলে যে দশা হয়, সাহিত্য-শিল্পের সেই দশা ঘটে।

–আবুল ফজল

১৬০. আমাদের ধর্মহীন ধর্মধ্বজীদের নিষেধ মানতে গেলে দেশে সবরকম সংস্কৃতি সাধনার ভরাডুবি অনিবার্য।

–আবুল ফজল

১৬১. সে-ই বড় অভিনেতা সে মানুষকে সমভাবে কাঁদাতে ও হাসাতে পারে।

দিলীপ কুমার

১৬২. অল্প বয়সে কবিতা লেখা ভালো, কিন্তু সমালোচনা লিখতে যাওয়া অন্যায়–সে সাহিত্যের ওপরেই হোক আর নারীর ওপরেই হোক।

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

১৬৩. সুবৃহৎ অনাবরণের মধ্যে অশ্লীলতা নেই। এই জন্যে শেক্সপীয়ার অশ্লীল নয়, রামায়ণ মহাভারত অশ্লীল নয়। কিন্তু ভারতচন্দ্র অশ্লীল, জোলা অশ্লীল। –রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

১৬৪. দুর্নীতি আর অশ্লীলতাই সাহিত্যের প্রাণ। এই দুইটি সুন্দর হয়েছে যে প্রতিভার হাতে তাকেই আমরা বলি অপরাজেয় শিল্পী।… মানব সৃষ্টিতত্ত্বের মূলে রয়েছে অশ্লীলতার চরম বিলাসকুণ্ড।

প্রবোধকুমার সান্যাল

১৬৫. ত্রুটি, বিচ্যুতি, অপরাধ অধর্মই মানুষের সবটুকু নয়। মাঝখানে তার যে বস্তুটি আসল মানুষ–তাকে আত্মা বলা যেতে পারে–সে তার সকল অভাব, সকল অপরাধের চেয়েও বড়। আমার সাহিত্য রচনায় তাকে যেন অপমান না করি। হেতু যত বড়ই হোক, মানুষের প্রতি মানুষের ঘৃণা জন্মে যায়, আমার লেখা কোন দিন যেন না এত বড় প্রশ্রয় পায়।

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

১৬৬. লেখকদের সমালোচকের সত্যনিষ্ঠ অপ্রিয় সত্য কথা মেনে নেওয়ার মতো সহনশীলতা থাকা চাই।

–আবুল কাসেম ফজলুল হক

১৬৭. শুধু কবিত্বে নয়, সকল প্রকার কারুকলাতেই কারুকারের চিত্তের একটা নির্লিপ্ততা থাকা চাই–মানুষের মধ্যে যে সৃষ্টিকর্তা আছে কর্তৃত্ব তাহারই হাতে না থাকিলে চলে না। রচনার বিষয়টিই যদি তাহাকে ছাপাইয়া কর্তৃত্ব করিতে যায় তবে তাহা প্রতিবিম্ব হয়, প্রতিমূর্তি হয় না।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

১৬৮. কৃষ্টি যখন বিলাসে পরিণত হয় তখন মানুষ ফলের কথা না ভেবে ফুলের চাষ করে।

আবদুর রহমান শাদাব

১৬৯. ব্যবসাদারিতে নৈপুণ্য বাড়ে, কিন্তু বেদনাবোধ কমে যায়–ময়রা যে কারণে সন্দেশে রুচি হারায়। আমাদের দেশের গাইয়ে-বাজিয়েরা কিছুতেই মনে রাখে না যে, আর্টের প্রধান তত্ত্ব তার পরিমিতি। কেননা রূপকে সুব্যক্ত করাই তার কাজ। বিহিত সীমার দ্বারা রূপ সত্য হয়, সেই সীমা ছাড়িয়ে আকৃতিই বিকৃতি।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

১৭০. কেউ কেউ বলছেন, এখন কবিতার যে আওয়াজ শোনা যাচ্ছে, সে নাভিশ্বাসের আওয়াজ। ওর সময় হয়ে এল। যদি তা সত্য হয়; সেটা কবিতার দোষে নয়, সময়ের দোষে। মানুষের প্রাণটা চিরদিনই ছন্দে বাঁধা কিন্তু তার কালটা কলের তাড়ায় সম্প্রতি ছন্দভাঙা।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

১৭১. আধুনকি কালের কবিরা তাদের লেখার কালির সাথে খুব বেশি পরিমাণ জল মিশিয়ে থাকেন।

গ্যেটে

১৭২. যে ব্যক্তি ইতিহাস পড়িবার সুযোগ পাইবে না, কাব্যই পড়িবে, সে হতভাগ্য। কিন্তু যে ব্যক্তি কাব্য পড়িবার অবসর পাইবে না, ইতিহাস পড়িবে, সম্ভবত তাহার ভাগ্য আরও মন্দ।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

১৭৩. কবিতার বিশেষত্ব হচ্ছে তার গতিশীলতা। সে শেষ হয়েও শেষ হয় না।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

১৭৪. যাহারা শ্রুতিসুখবাহ ছন্দবন্ধে শব্দের সহিত শব্দ গাঁথিয়া শুধু কথার ছটায় সকলকে মোহিত করিতে চেষ্টা করেন; অশিক্ষিত ইতর লোকেরা তাহাদিগকে কবি বলিয়া আদর করে।

কালিপ্রসন্ন ঘোষ

১৭৫. সাধ্বী স্ত্রী যেমন স্বামীকে ছাড়া আর কাহাকেও চায় না, ভালো কাব্য তেমনি ভাবুক ছাড়া আর কাহারও অপেক্ষা করে না। সাহিত্য পাঠ করিবার সময় আমরা সকলেই মনে মনে অভিনয় করিয়া থাকি; সে অভিনয়ে যে কাব্যের সৌন্দর্য খোলে না সে কাব্য কোনো কবিকে যশস্বী করে নাই।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

১৭৬. প্রবন্ধের কথা যেখানে থামে সেখানে কেবলমাত্র ফাঁকা। গানের কথা সেখানে থামে যেখানে সুরে ভরাট। বস্তুত সুর যতই বৃহৎ হয়, ততই কথার অবকাশ বেশি হতে চায়। গায়কের সার্থকতা কথার ফাঁকে, লেখকের সার্থকতা কথার ঝাকে।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

১৭৭. ইতিহাসের সংশ্রবে উপন্যাসে একটা বিশেষ রস সঞ্চার করে, ইতিহাসের সেই রসটুকুর প্রতি ঔপন্যাসিকের লোভ, তাহার সত্যের প্রতি তাহার কোনো খাতির নাই। কেহ যদি উপন্যাসে কেবল ইতিহাসের সেই বিশেষ গন্ধটুকু এবং স্বাদটুকুতে সন্তুষ্ট

হইয়া তাহা হইতে অখণ্ড ইতিহাস উদ্ধারে প্রবৃত্ত হন, তবে তিনি ব্যঞ্জনের মধ্যে আস্ত জিড়ে-ধনে-হলুদ-সরষে সন্ধান করেন।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

১৭৮. ছবি হল নীরব কবিতা, আর কবিতা হল এমন একটি ছবি যা কথা বলে।

সিমোনিডেস

১৭৯. জটিল মানুষকে কেউ শ্রদ্ধা করে না। জটিল সাহিত্যও কেউ পছন্দ করে না। জটিলা-কুটিলা একটা ডাইনির বিশেষণ।

–অমীয় চক্রবর্তী

১৮০. কলাবিদ্যার সরলতা উচ্চ অঙ্গের মানসিক উন্নতির সহচর। বর্বরতা সরলতা নহে। বর্বরতার আড়ম্বর-আয়োজন অত্যন্ত বেশি। সভ্যতা অপেক্ষাকৃত নিরলঙ্কার। অধিক অলঙ্কার আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে, কিন্তু মনকে প্রতিহত করিয়া দেয়।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

১৮১. গ্রন্থই আমার প্রভূ, প্রন্থই আমার সঙ্গী।

–জোসেফ হল

১৮২. যার বাগান পুষ্পরাজিতে পূর্ণ এবং যার গৃহ গ্রন্থরাজিতে পূর্ণ, মনের দিকে থেকে সে ঐশ্বর্যবান।

–এন্ডিউল্যাংস

১৮৩. পাঠাগার যেন সর্বকালের স্বাক্ষর।

–উইলিয়াম স্কট

১৮৪. যে বই পড়ে না, তার মধ্যে মর্যাদাবোধ জন্ম নেয় না।

গ্রিয়ারসন স্মিথ

১৮৫. কোনো একটি বিষয় যখন বলতে পারছ না, তখন সেটিকে গাও।

–বুমারচেইজ

১৮৬. সবচেয়ে সেরা বাণিজ্য হল গান তৈরি করা, আর দ্বিতীয় সেরা হল সেগুলো গাওয়া।

–হিলেয়ার বেলোক

১৮৭. আইনের মৃত্যু হয়, কিন্তু বইয়ের মৃত্যু হয় না।

বুলওয়ার লিটন

১৮৮. কোনো আসবাবপত্রই বইয়ের মতো চমকপ্রদ নয়।

–সিডনি স্মিথ

১৮৯. কোনো বিশেষ ব্যক্তি কর্তৃক পৃথিবীর কোনো ভাষাই সৃষ্টি হয়নি। মানবসমাজ যুগ যুগ ধরে অলক্ষিতে একটি ভাষা গড়ে তোলে।

–প্রমথ চৌধুরী

১৯০. সব শিল্পকর্মই প্রকৃতির নকল।

–সেনেকা

১৯১. যে-জাতি তার দেশ ও মাতৃভাষাকে যত বেশি মর্যাদা দেবে, সে তত বেশি উন্নত হবে।

–জি. মোল্যান্ড

১৯২. সংগীতের ভাষাই বিশ্বভাষা।

–জন উইলিয়াম

১৯৩. নানান দেশের নানান ভাষা।
বিনা স্বদেশী ভাষা মিটে কি আশা?

রামনিধি গুপ্ত (নিধুবাবু)

১৯৪. যে সংগীতকে ভালোবাসে, তার নিঃসঙ্গতা সংগীতের মাধুর্যে ভরে ওঠে।

–জন আর্মস্ট্রং

১৯৫. ভাষা হচ্ছে মন্দিরের মতো, যেখানে আত্মা বিচরণ করে।

–লর্ড চেস্টারফিল্ড

১৯৬. বাংলা আমাদের মাতৃভাষা এবং এই মাতৃভাষা ও সাহিত্যের যথোচিত সেবা ব্যতীত আমাদের সামাজিক ও জাতীয় উন্নতি একান্তই অসম্ভব।

–মোঃ ওয়াজেদ আলী

১৯৭. থিয়েটারে না-যাওয়া হল অনেকটা আয়না ছাড়া স্নানঘর বানানোর মতো।

–শোপেনহাওয়ার

১৯৮. আমরা যার মধ্যে বাস করি, এবং কেউ যার মুখোমুখি হতে চাই না, মহৎ নাটক আমাদের সাহস জোগায় তার মুখোমুখি হতে।

থর্নটন ওয়াইল্ডার

১৯৯. আমার ব্যবসা আমার দেহকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য এবং আমার শিল্পকর্ম আমার আত্মাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য।

–ওয়াল্টার ওয়াটসন

২০০. কদর্যের মধ্যে যে সৌন্দর্যের সন্ধান পায়, সে-ই সত্যিকারের শিল্পী।

–জোসেফ ক্যাপ্টেন

২০১. শিল্প একটা জিনিস নয়, একটা পথ।

–হেনরি জেমস

২০২. জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষা, সুখ-দুঃখের প্রতিফলন ঘটে একমাত্র সংবাদপত্রেই।

–হেনরি ওয়ার্ড থ্যাচার

২০৩. সংগীত হচ্ছে শাশ্বত ভাষা, যার আবেদন দেশ, কাল পাত্রভেদে অভিন্ন।

–জে. জি. ব্রেইনার্ড

২০৪. যে সংগীত পছন্দ করে না, সে নিজের সঙ্গে প্রতারণা করে।

কীট্‌স্‌

২০৫. সংগীত যখন ভালোবাসার প্রাণ, তখন উচ্চকণ্ঠে গান গেয়ে যাও।

কীট্‌স্

২০৬. অন্তরের জিনিসকে বাহিরের, ভাবের জিনিকে ভাষার, নিজের জিনিসকে বিশ্বমানবের এবং ক্ষণকালের জিনিসকে চিরকালের করিয়া তোলাই সাহিত্যের কাজ।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

২০৭. কোনো দেশকে সভ্য ও মানুষ করিবার বাসনা তোমার আছে? তাহা হইলে বিধিব্যবস্থার সঙ্গে সেই দেশের সাহিত্যকে উন্নত করিতে চেষ্টা কর। মাতৃভাষার সাহায্যে সাহিত্যকে উন্নত করিতে হইবে। বিদেশী সাহিত্যে মানব স্বাধীনতার কোনো কল্যাণ হয় না, দেশীয় সাহিত্যকে উন্নত করিতে হইলে আবার বিশ্বের উন্নত সাহিত্যের সার সংগ্রহ করিতে হইবে।

–ডা. লুৎফর রহমান

২০৮. কোনো লোকের পক্ষে নিজের বিষয়ে লিখতে যাওয়া যেমন তৃপ্তিকর, তেমনি কঠিন। নিজের কোনো অকীর্তির কথা বলতে গেলে বুকে যেমন বাজে, তেমনি আত্মপ্রশংসাও পাঠকগণের নিকট কর্ণপীড়াদায়ক।

–লিংকন

২০৯. সমস্ত গায়কের একটা সাধারণ সমস্যা আছে। যখন বন্ধুদের মধ্যে তারা থাকে, বন্ধুরা গাইতে বললে তারা গায় না; যখন গাইতে বলে না, তখন আর গান গাওয়া থামায় না।

–হোরেস

২১০. ইতিহাস ও উপন্যাসের মধ্যে তফাত কী? ইতিহাসের চরিত্রগুলো সত্য, কিন্তু ঘটনাগুলো নিজের খেয়ালখুশিমতো সাজানো। আর উপন্যাসের চরিত্রগুলো মিথ্যা, কিন্তু ঘটনাগুলো সত্য। তাই সত্য জানতে হলে উপন্যাসের উপর নির্ভর করাই বুদ্ধিমানের কাজ।

–শংকর

২১১. বাংলা ভাষার মতো এমন একটি বৈজ্ঞানিক, সুপরিকল্পিত এবং সুশৃঙ্খল ভাষা নব্য সভ্য জাতির ভাষাসমূহের মধ্যে দুর্লভ। শহীদ মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী।

–হোরেস।

২১২. আল্লাহ্ মানুষকে জ্ঞান দান করেছেন কলমের মাধ্যমে, আর কলমের আশ্রয়

সৈয়দ মুজতবা আলী

২১৩. বই মনের জন্য এক উন্নতমানের ক্লোরোফর্ম।

রবার্ট চ্যাম্মার

২১৪. বই পড়ে মানুষ জ্ঞানী হয়, অজ্ঞানী, এমনকি পাপিষ্ঠ পর্যন্ত।

মুনীর চৌধুরী

২১৫. সাহিত্যচর্চা বিলাস-পরিতৃপ্তি নহে–বিশ্রাম সময়ে বিশ্রম্ভালাপ নহে। সাহিত্য জীবনের সাধ, সাহিত্য জীবনের সাধনা, সাহিত্য আরাধনার ধন। এ যে প্রেমের যোগ, কল্যাণের সাধনা।

–এয়াকুব আলী চৌধুরী

২১৬. সাহিত্য অমৃতায়মান শান্তির উৎস, শক্তির কল্প ফলের রস, তাই এই চির আধিব্যাধি-বিজড়িত, কর্মপতপ্ত, নিরাশা-তুহিনাচ্ছন্ন সংসারে জাতি ইহা পান করিয়া মরণ-তন্দ্রার মধ্যে বাঁচিয়া উঠে, অবসাদের মধ্যে শক্তি পায়।

–এয়াকুব আলী চৌধুরী

২১৭. সবচাইতে চমৎকার ছন্দগুলো অপ্রত্যাশিত এবং জটিল; আর সবচাইতে মনোহর সূরগুলো সরল এবং নিশ্চিত।

ডব্লিউ এইচ অডেন

২১৮. যা অর্থহীন নয়, তার পক্ষে সংগীতের পাশাপাশি যাওয়া সম্ভব নয়।

যোসেফ এডিসন

২১৯. সংগীত আমাদের অঙ্গ। হয় তা আমাদের আচরণ উন্নত করে, নয়তো টেনে নামায় নিচে।

–বোয়েথিয়াস

২২০. যেখানে আছে সংগীত, অশুভ সেখানে নেই।

–কার্ভেন্টিস

২২১. সংগীতের সঙ্গে নৈশভোজ রাঁধুনি আর বেহালাবাদক দুজনের জন্যই অপমানজনক।

–জি. কে. চেস্টারটন

২২২. মাতৃদুগ্ধের অমৃতধারা মাতৃভাষার মধ্যে সঞ্চারিত আছে; তাই মাতৃভাষার সাহায্যে সাহিত্যে যে ভাবপ্রবাহ ফুটে, তাহা জাতির প্রাণের মধ্যে স্পন্দন যোগায়, তাহার প্রত্যেক শোণিতবিন্দু চঞ্চল ও অধীর করিয়া তুলে। সাহিত্য প্রাণের ভাষায় প্রাণের কথা কয়; তাই প্রাণে প্রাণে প্রেরণা ছুটায়।

–এয়াকুব আলী চৌধুরী

২২৩. কবিতা শব্দের ঐকতান; সংগীত স্বরের।

–জন ড্রাইডেন

২২৪. কলম হাঁকিয়া ফেরা
সকল রোগের সেরা।
তাই কবি মানুষেরা
অস্থিচর্মসার।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

২২৫. কবি এই বিশ্বজগতে তাঁহার হৃদয়ের দৃষ্টি দিয়া একটি অরূপকে দেখিতে পান, তাহাকেই তিনি রূপের মধ্যে প্রকাশ করিতে চেষ্টা করেন। অন্যের দেখা যেখানে ফুরাইয়া যায়, সেখানেও তাহার ভাবের সৃষ্টি অবরুদ্ধ হয় না। সেই অপরূপ দেশের বার্তা তাঁহার কাব্যের ছন্দে নানা আভাসে বাজিয়া উঠিতে থাকে।

জগদীশচন্দ্র বসু

২২৬. বৈজ্ঞানিক ও কবি, উভয়েরই অনুভূতি অনির্বচনীয় একের সন্ধানে বাহির হইয়াছে। প্রভেদ এই, কবি পথের কথা ভাবেন না, বৈজ্ঞানিক পথটাকে উপেক্ষা করেন না।

–জগদীশচন্দ্র বসু

২২৭. কবিরা কালের সাক্ষী আর কালের শিক্ষক
কবিরা অমৃত আর কবিরা অমর।

নবীনচন্দ্র সেন

২২৮. একটি কলমের সাহায্যে যেভাবে হৃদয়ের কথা উৎসারিত হয়, তেমনটি আর কিছুতেই হয় না।

–চার্লস গ্রভিল

২২৯. ক্ষুদ্র পাখিও মধুর কণ্ঠে তার গান শুনিয়ে মানুষকে পরিতৃপ্ত করতে চেষ্ট করে।

–লিন্ডসে

২৩০. মেয়েদের লাইব্রেরিতে ধর্মগ্রন্থ ও পাক-প্রণালী ছাড়া আর কোনো বই থাকা উচিত নয়।

লর্ড বায়রন

২৩১. লাইব্রেরি জাতির সভ্যতা ও উন্নতির মাপকাঠি। লাইব্রেরির সংখ্যার দিকে নজর রেখে জাতীয় উন্নতি ও সভ্যতার পরিমাপ করলে অন্যায় হয় না।

–মোতাহার হোসেন চৌধুরী

২৩২. ভাষা হচ্ছে মন্দিরের মতো, যেখানে মানুষের আত্মা পরম নিশ্চিন্তে আশ্রয় খোঁজে।

এডওয়ার্ড কোক

২৩৩. ভাষা জিনিসটা পণ্ডিতের হাতের মোরব্বা নয়, দেশের জলবায়ু ও আলোকে ইহা সুষ্ঠু হইয়া থাকে। ইহা স্বীয় জীবন্ত গতির পথে বর্জন ও গ্রহণ করিয়া চলিয়া যায়; স্বীয় ললাটলিপিতে কোনো শিক্ষকের ছাপ মারিয়া পরিচিত হইতে চায় না।

–দীনেশচন্দ্র সেন

২৩৪. ভাষা হল চিন্তার পোশাক।

–জনসন

২৩৫. মাতৃভাষা হচ্ছে মন্দিরের মতো পবিত্র, যার শুচিতা রক্ষার জন্য জীবনপণ করতে দ্বিধা করা উচিত নয়।

–আর. সি. ট্রেন্স

২৩৬. তোমার গান যদি কাউকে আনন্দ দেয়, দুঃখ ভোলায়, তবেই তুমি যথার্থ শিল্পী।

টমাস স্টুড আর্ট

২৩৭. শিল্পকলা মানবতার প্রতিবিম্বের অধিক কিছুই নয়।

হেনরি জেমস

২৩৮. সংবাদপত্র হচ্ছে সাধারণ মানুষের স্কুল-শিক্ষক। এই সমাপ্তিবিহীন পুস্তক প্রতিটি দেশের জাতীয় গৌরব।

হেনরি ওয়ার্ড

২৩৯. একটি জাতি সৃষ্টি করে সংগীত–সংগীতস্রষ্টা কেবল সেগুলো বিন্যস্ত

–মিখাইল গ্লিনকা

২৪০. সংগীতহীন জীবন একটা ভ্রান্তি। জার্মানরা ভাবে, এমনকি ঈশ্বরও গান গেয়ে থাকেন।

–নিৎসে

২৪১. সংগীতকে যদি মানবভাষায় অনুবাদ করা যায়, তা হলে এ আর অস্তিত্বশীল থাকবে না।

–নিৎসে

২৪২. একটি সংগীতকর্মের মন্তব্য হতে পারে কেবল আর একটি সংগীতকর্ম।

ইগর স্ত্রভিনস্কি

২৪৩. সংগীতের সমঝদারিত্বের প্রধান সমস্যা দাঁড়িয়েছে এই যে, লোকেরা আজকাল সংগীতকে বড় বেশি শ্রদ্ধা করে। তাদেরকে ভালোবাসতে শেখানো উচিত।

ইগর স্ত্রাভিনস্কি

 ২৪৪. সংগীত হইল সুর, তাল ও সঙ্গতি। মানুষের মনের উপরে ইহার প্রভাব বিদ্যুৎ প্রবাহের ন্যায়। শুনিবার সঙ্গে সঙ্গে ইহা মনকে স্নিগ্ধ করে।

মহাত্মা গান্ধী

২৪৫. সংগীতের ভাষাই সকল মানুষের ভাষা।

লংফেলো

২৪৬. সাহিত্য এমন এক সুগন্ধি যা মানুষকে সুস্থ মানসিকতা নিয়ে বাঁচার অনুপ্রেরণা দেয়।

–টমাস মিল্টন

২৪৭. সকলের সহিত মিলেমিশে যা উপভোগ করা যায় তা-ই সাহিত্য। সাহিত্যে সকল মনের সাহায্য থাকে। সাহিত্যের পাত্র-পাত্রী সবই একটা টাইপ বা নমুনা।

–ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ

২৪৮. সাহিত্য কোনো ব্যক্তিবিশেষের ভাবরাজ্যের প্রতিষ্ঠান নয়, এটি সমগ্র জাতির অভ্যন্তরীণ প্রতিচ্ছবি। সাহিত্যের মূল উপাদান জাতীয় চরিত্র, ধর্মতত্ত্ব এবং সভ্যতা।

–কুর থোপ

২৪৯. কবিতা কবির গোপন আর নিজস্ব অনুভবের উন্মোচন পাঠক যা নিজের বলে শনাক্ত করেন।

–সালভাতোরে কোয়াসিমোদো

২৫০. বিজ্ঞান তাদের জন্যে যারা শেখেন, কবিতা যারা জানেন।

–যোসেফ রু

২৫১. কবিতা একটি দরজা খোলা আর বন্ধ করে দেয়া যাতে ভেতরের লোকেরা অনুমান করে নিতে পারে পলকেই কী দেখা গেল।

–কার্ল স্যান্ডবার্গ

২৫২. কবি একটি দোয়েল, যে অন্ধকারে বসে মিষ্টি সুরে আমোদিত করে তোলে নিজেরই একাকীত্ব।

–শেলি

২৫৩. কবিতা হচ্ছে সাহিত্যের বাণী।

–টমাস স্পার্ট

২৫৪. গণমানুষকে জাগিয়ে তোলার জন্য কবিতা অস্ত্রস্বরূপ।

কাজী নজরুল ইসলাম

২৫৫. পৃথিবীতে যা-কিছু সুন্দর, যা-কিছু মহৎ, কবিতা তাকে চিরঞ্জীব করে রাখে।

–শেলি

২৫৬. লাইব্রেরি আমাদের চিত্তের বিশ্রাম-নীড়, কর্মক্লান্ত জীবনের শ্রান্তিহারা।

–অজ্ঞাত

২৫৭. যেটা বলিবার কথা সেটা পুরা বলা যায় না, ভাষার বাধাবশত কতক বলা যায় এবং কতক বলা যায় না; কিন্তু তবু সৌন্দর্যকে ফুটাইয়া তুলিতে হইবে, কবির এই কাজ।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

২৫৮. কবি হচ্ছে বুলবুলি পাখির মতো, যে অন্ধকারে বসেও তার মিষ্টি-মধুর কলতানে চারদিক মুখরিত করে তোলে।

–শেলি

২৫৯. কবি হচ্ছে সবচেয়ে খাঁটি ঐতিহাসিক।

–জেমস অ্যান্থনি

২৬০. একজন মহৎ কবি একটা জাতির সবচেয়ে মূল্যবান রত্ন।

–বিটোফেন

২৬১. কবিতা সমস্ত শিল্পকলার জ্যেষ্ঠ ভগিনী এবং সব ভাবধারার জন্মদাত্রী।

–উইলিয়াম করজার্ভ

২৬২. কবিতা হল অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের হাতিয়ার। কবিতা যুদ্ধের বিরুদ্ধে শান্তির শাণিত অস্ত্র।

–সন্তোষ গুপ্ত

২৬৩. অন্য মানুষের সঙ্গে কবিদের তফাত কী জান? বিধাতার নিজের হাতে তৈরি শৈশব কবিদের মন থেকে কিছুতেই ঘোচে না। কোনোদিন তাদের চোখ বুড়ো হয় না। মন বুড়ো হয় না। তাই চিরদিন তারা ছোটদের সমবয়সী হয়ে থাকে।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

২৬৪. মিথ্যা কথা বলার জন্য কবিদের অনুজ্ঞা বা লাইসেন্স দেয়া হয়েছে।

প্লিনি দি ইয়ংগার

২৬৫. কলম হল যন্ত্রপাতির মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক। এটা তরবারির চেয়ে ধারালো, চাবুক বা লোহার ডাণ্ডার চেয়ে ভয়াবহ।

–জন টেইলার

২৬৬. আমাদের দেশে যাহারা প্রকৃত শ্রোতা, গানটাকে শুনিলেই তাহারা সন্তুষ্ট থাকে, ইউরোপে শ্রোতারা গান গাওয়াটাকে শোনে।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

২৬৭. মঞ্চ-নাটক একটা মামলা, প্রতিহিংসা নয়। আত্মা এখানে খুলে যায়, নিন্দুকের সংখ্যাবিন্যাসের মতো, শব্দের চাপে। এর জন্যে লোহাগলানো আগুনের প্রয়োজন পড়ে না।

জ্যাঁ জিরাদু

২৬৮. নাটক চায় বিশ্বাসযোগ্যতা। এটি সত্য নিয়ে নাড়াচাড়া করে না, করে প্রতিক্রিয়া নিয়ে।

–সমারসেট মম

২৬৯. আজকার দিনের সত্যিকারের বিশ্ববিদ্যালয় হল বইকে সমষ্টিগত বা একত্রীভূত

–কার্লাইল

২৭০. পাঠাগার নিঃসন্দেহে লিখিত ভাষার সঞ্চয়কেন্দ্র। এখানে মানুষ বিপুল পৃথিবীর সঞ্চয়ের সঙ্গে পরিচিত হন।

–সৈয়দ আলী আহসান

২৭১. পাঠাগারের সংখ্যা কোনো জাতির সংস্কৃতির মান নির্ণয়ের অন্যতম মাপকাঠি।

–আনোয়ারুল হক

২৭২. বই হচ্ছে শ্রেষ্ঠ আত্মীয়, যার সঙ্গে কোনোদিন ঝগড়া হয় না, কোনোদিন মনোমালিন্য হয় না।

প্রতিভা বসু

২৭৩. জাতিকে সঠিক পথে চালনার দিশারি হল বই।

–আজহারুল হক

২৭৪. বই পড়ে যে-জ্ঞান অর্জন করা হয়, তার সঙ্গে চোখে দেখার অভিজ্ঞতা যুক্ত হলে তা পূর্ণতা পায়।

–চার্লস ল্যাম

২৭৫. বই কিনে কেউ কোনোদিন দেউলে হয় না।

–প্রমথ চৌধুরী

২৭৬. সুখে-দুঃখে, সুন্দর-কুৎসিতে, ভাল-মন্দে মানুষের জীবন। আর এক-একটা বই এক-একটা জীবনের প্রতিবিম্ব।

–ড. মুহাম্মদ এনামুল হক

২৭৭. একটি চলচ্চিত্র হচ্ছে চিন্তার ঘনীভূত ঝরনা।

জ্যাঁ ককতো

২৭৮. মার্কিন চলচ্চিত্রগুলো অর্ধশিক্ষিতরা তৈরি করেন অর্ধবোদ্ধাদের জন্যে।

জন এরভিন

২৭৯. যে সব বঙ্গেতে জন্মি হিংসে বঙ্গবাণী
সেসব কাহার জন্ম নির্ণয় ন জানি ॥
দেশী ভাষা বিদ্যা যার মনে ন জুড়ায়।
নিজ দেশ ত্যজি কেন বিদেশ ন যায় ॥

–আবদুল হাকিম

২৮০. মাতৃভাষার প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করা, বাঙ্গালী হইয়া নিজেদের মাতৃভাষা উর্দু বা আরবী বলিয়া পরিচয় দেয়া, কিংবা বাঙ্গালা জানি না ভুলিয়া গিয়াছি এরূপ বলা–এই মারাত্মক রোগ কেবল এক শ্রেণীর মুসলমানের মধ্যেই দেখা যায়। যাহারা এরূপ আচরণ করে তাহারা যে আপন মাতা ও মাতৃভূমির প্রতি নিন্দা প্রকাশ করে এবং নিজ মায়ের এবং দেশের দীনতা জ্ঞাপন করে তাহাতে কিছুমাত্র সন্দেহ নাই।

ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ

২৮১. কাব্যে ভাষার একটি ওজন আছে, সংযম আছে, তাকেই বলে ছন্দ। গদ্যের বাছ-বিচার নেই, সে চলে বুক ফুলিয়ে।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

২৮২. ভাষা হচ্ছে ইতিহাসের দলিল এবং কবিতার জীবাত্মা। ইমারসন ২৮৩. মা এবং মায়ের মুখের ভাষা দুটোর মূল্যই সমান।

বেঞ্জামিন হ্যারিসন

২৮৪. ভাষা ও বক্তৃতা দেয়ার শক্তি হল সরাসরি ঈশ্বরের দান।

–ওয়েবস্টার

২৮৫. মায়ের মুখের ভাষাকে আমি যেমন শ্রদ্ধা করি, তেমনি করে অশ্লীল প্রয়োগকে মনেপ্রাণে ঘৃণা করি।

টমাস ডিবডিন

২৮৬. শিশুর পালন যথা মা-বাপের কর্ম
সমাজ পালনে তথা ভাষা আর ধর্ম।
ধনজন স্বাধীনতা গেলে থাকে আশা
আশা নাই যদি যায় ধর্ম আর ভাষা।

–ভূদেব চৌধুরী।

২৮৭. জীবনের সকল সময়ই মধুর সংগীত দোলা দেয় না, সময়বিশেষে দুঃখ, বিদ্রোহ এবং উন্মাদনা-সৃষ্টিকারী সংগীতের প্রয়োজন অনুভূত হয়।

সুইনবার্ন

২৮৮. পঞ্জিকা হোক কিংবা বোর্ডে-বাঁধানো দাবখেলার ছকই হোক, যা-কিছু মলাটে মোড়া ছাপা জিনিস, তা সবই বই তথা সাহিত্য।

–চার্লস ল্যাম

২৮৯. যেখানে সংগীত আছে, সেখানে বেঁচে থাকার আনন্দ আছে।

–এডমন্ড স্মিথ

২৯০. আমি মুসলমান। সকালে ঘুম থেকে উঠে আল্লাহকে স্মরণ করার পরই আমি ‘জয় বাংলা’ বলি। মৃত্যুর সময়ও আমি আল্লাহর নাম নিয়ে ‘জয় বাংলা’ বলে ইহধাম হতে বিদায় নিতে চাই।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব

২৯১. কিছু একটা বুঝাইবার জন্য কেহ তো কবিতা লেখে না। এজন্য কবিতা শুনিয়া কেহ যখন বলে বুঝিলাম না তখন বিষম মুশকিলে পড়িতে হয়। কেহ যদি ফুলের গন্ধ শুকিয়া বলে, ‘কিছু বুঝিলাম না’, তাহাকে এই কথা বলিতে হয়, ইহাতে বুঝিবার কিছু নাই, এ যে কেবল গন্ধ।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

২৯২. কবিতা অদৃশ্যের যাজক।

–ওয়ালাস স্টিভেন্স

২৯৩. জ্ঞান দিয়ে কবিরা কাব্য রচনা করেন না, রচনা করেন প্রকৃতির উপহারে, আর পয়গম্বর ও দৈবীপুঁথির সমান এক প্রেরণায়।

সক্রেটিস

২৯৪. কবিতা তা-ই কাব্যের ভেতরে যা তোমাকে হাসায়, কাঁদায়, খোঁচায়, কাপিয়ে তোলে পায়ের নখ, তোমাকে প্ররোচিত করে এই করতে, সেই করতে অথবা কিছুই না করতে, জানায় এই পৃথিবীতে তুমি একা, তোমার আনন্দ আর দুঃখ চিরকাল ভাগ করে নেয়ার এবং চিরকাল একা বইবার।

–ডিলান টমাস

২৯৫. গ্রন্থ শুধু পথনির্দেশের আলোর সংকেতই নয়, সময়ে তা বারুদের চেয়েও বিস্ফোরক এবং সম্রাট বা সেনাপতির কীর্তির চেয়েও দীর্ঘস্থায়ী।

ড. সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেন

২৯৬. আমার মনে হয় এদেশে লাইব্রেরির সার্থকতা হাসপাতালের চাইতে কিছু কম নয় এবং স্কুল-কলেজের চাইতে একটু বেশি।

–প্রমথ চৌধুরী

২৯৭. পাঠাগার মানুষের জ্ঞানের অক্ষয় ভাণ্ডাস্বরূপ–চিত্ত-বিকাশের শ্রেষ্ঠ বিহার ক্ষেত্র। আমাদের দেশে পাঠাগার স্থাপনের প্রয়াস যত বেশি হবে, আমাদের ততই মঙ্গল।

মুহম্মদ আবদুল হাই

২৯৮. যদি বইটা হয় পড়ার মতো, তবে তা কেনার মতো বই। –জন রসকিন ২৯৯. বই পড়তে যে ভালোবাসে, তার শত্রু কম।

–চার্লস ল্যাম

৩০০. দেশে সুনাগরিক গড়ে তোলার প্রধান উপায় একটাই–তা হল সুলিখিত এবং সৃষ্টিশীল ও মননশীল বই।

ক্যালিভন কলিজ

৩০১. আমি তাকে সোনা কিংবা রূপা দিইনি, কিন্তু আমি তার চেয়েও মূল্যবান জিনিস বই দিয়েছি।

–জর্জ ম্যাকডোনাল্ড

৩০২. একটি ভালো বই হল বর্তমান ও চিরদিনের জন্য সবচেয়ে উৎকৃষ্ট বন্ধু।

টুপার

৩০৩. যে একটা ভালো বই পাওয়া সত্ত্বেও পড়ে না এবং একটি প্রস্ফুটিত ফুলকে ছিঁড়ে ফেলে তার মতো বোকা আর নেই।

–স্টেফেন গ্রানে

৩০৪. বই বরং ভালোমতন লেখেন পাঠকরা আর পরিষ্কার করে লেখেন বিরোধী পক্ষরা।

–নিৎসে

৩০৫. কারও পক্ষে কোনো গভীর বই বোঝা সম্ভব নয় যদিনা তার অন্তত কিছু অংশ আমরা দেখি বা যাপন করি।

–এজরা পাউন্ড

৩০৬. নৈতিক বা অনৈতিক বই বলে কিছু নেই। আছে কেবল সুলিখিত বা কুলিখিত বই।

–অস্কার ওয়াইল্ড

৩০৭. জীবনে তিন ধরনের সহচর প্রয়োজন–পুরুষলোক, স্ত্রীলোক এবং বই।

–জোসেফ হল

৩০৮. জীবনে মাত্র তিনটি জিনিসের প্রয়োজন–বই, বই এবং বই।

টলস্টয়

৩০৯. বই হল বিশ্বাসযোগ্য আয়নার মতো, যাতে আমাদের মনের প্রতিবিম্ব ধরা পড়ে–জ্ঞানী ও বীরদের মনের প্রতিবিম্বও এর থেকে বাদ পড়ে না।

–গিবন

৩১০. বই লেখাটা নিষ্পাপ বৃত্তি এবং এতে করে দুষ্কর্মের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করা যায়।

বার্ট্রান্ড রাসেল

৩১১. জ্ঞানীরা বই ব্যবহার করে আর অন্যেরা বই-এর প্রশংসা করে।

বেকন

৩১২. এককালে পৃথিবী বইয়ের উপর কাজ করত, এখন বই-ই পৃথিবীর উপর কাজ করে।

জুবার্ট

৩১৩. বরং প্রচুর বই নিয়ে গরিব অবস্থায় চিলেকোঠায় থাকব তবু এমন রাজা হতে চাই না যিনি পড়তে ভালোবাসেন না।

–মেকলে

৩১৪. পৃথিবীর কোনো জাতি জাতীয় সাহিত্য ছেড়ে বিদেশী ভাষায় সাহিত্য রচনা করে যশস্বী হতে পারেনি।

–ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ

৩১৫. নদীর গতিপথ যেমন নির্দেশ করে দেওয়া যায় না, ভাষাও তেমনি। একমাত্র কালই ভাষার গতি নির্দেশ করে।

–ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ

৩১৬. কারও কারও মুখের ভাষাই অস্ত্রের মতো ধারালো।

–জন লাভার

৩১৭. সংগীতের মাধ্যমে যা-কিছু শেষ হয়, তা-ই সুন্দর হয়।

রবার্ট বার্নস

৩১৮. সংগীত হল ভাঙা মনের ওষুধস্বরূপ।

–এ. হান্ট

৩১৯. যে-মানুষের আত্মার সঙ্গে সংগীতের বাস, সে-মানুষই ভালোবাসতে জানে।

–এডমন্ড স্মিথ

৩২০. যে সংগীত ভালোবাসে তার জীবনে নিঃসঙ্গতা থাকে না।

–এডিসন

৩২১. সাহিত্যের কাজ মানুষকে তার চারিদিককার মন্দ শক্তির বিরুদ্ধে বিদ্রোহী করে তোলা, তার মধ্যে সমাজ, বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজনকে অগ্রাহ্য করে ন্যায়, সত্য ও আল্লাহকে মেনে নেবার প্রবৃত্তি সৃষ্টি করে দেওয়া।

–ড. লুৎফর রহমান

৩২২. বড় পর্দা একটি বাজে চলচ্চিত্রকে ঠিক দ্বিগুণ বাজে করে তোলে।

–স্যামুয়েল গোল্ডউইন

৩২৩. চলচ্চিত্র হচ্ছে একটি নৌকা যা সবসময়েই ডুবে যাওয়ার পর্যায়ে থাকে। আপনি যখন চলতে থাকেন তখন সবসময়ে এটি তলিয়ে যাবার প্রয়াস পায় এবং আপনাকে এর সঙ্গে টেনে নিয়ে যেতে চায়।

ফ্রাঁসোয়া ক্রুসো

৩২৪. সাহিত্য খেলা নয়, শৌখিনতা তো নয়ই। সাহিত্য জীবনের প্রকাশ, আবার নব-জীবনেরও ভিত্তি।

–শ্রীসোমনাথ মৈত্র

৩২৫. আনন্দ দিতে, মানুষের জীবনের বোঝা কমাতে, তাদের দুঃখ-বেদনা, তাদের পাপ, তাদের নিশ্ৰুপ গৃহের মাঝে তাদের বিফল আশা ও তাদের বিষাদময় ভবিষ্যৎ থেকে মুক্তি দিতেই সাহিত্যের সৃষ্টি হয়েছে।

–ব্রিয়েল

৩২৬. কবিরা সমাজদেহের চক্ষু, বাগানের মুক্ত পাখি এবং সত্যের দর্পণ।

ইকবাল

৩২৭. কবিতাই চিরদিন ভোগ করে
নবীন যৌবন
সৌন্দর্যের সুধাপাত্র চিরদিন,
করে সে চুম্বন।

–গোলাম মোস্তফা

৩২৮. কবিতার দ্বারা আমি বিলাসিতা করিতে চাহি নাই … আমি চিরদিন বলিয়াছি, অদ্যও বলিতেছি যে, সৌন্দর্য সৃষ্টিই কবিতার প্রধান উদ্দেশ্য নয়, কবিতা নীতিপূর্ণ হইবে এবং বিশেষ কিছু শিক্ষা দিবে।

–কায়কোবাদ

৩২৯. মসজিদ পুষ্করিণী নাম নিজ দেশে রহে।
গ্রন্থকথা যথাতথা ভক্তিভাবে আলাউল কহে৷৷

–আলাউল

৩৩১. বই জ্ঞানের প্রতীক, বই আনন্দের প্রতীক, সৃষ্টির আদিমকাল হইতে মানুষ আসিয়াছে আর চলিয়া গিয়াছে; খ্যাতি, মান, অর্থ, শক্তি কিছুই কেউ রাখিয়া যাইতে পারে নাই। কিন্তু বইয়ের পাতা ভরিয়া তাহারা তাঁহাদের তপস্যা, তাঁহাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা, তাঁহাদের নৈরাশ্য, কি হইতে চাহিয়া কি তাঁহারা হইতে পারেন নাই সবকিছু তাঁহারা লিখিয়া গিয়াছেন।

জসীম উদ্দীন

৩৩২. জীবনটা বই দিয়ে ঘেরা নয় ঠিকই, তবে জীবনকে বুঝতে হলে, অভ্যাসের সংস্কারের বেড়া ভাঙতে হলে বই চাই।

সরোজ আচার্য

৩৩৩. ব্যায়ামের দ্বারা যেমন শরীরের উন্নতি হয়, পড়াশুনার দ্বারা মনেরও তেমনি উন্নতি হয়ে থাকে।

–এডিসন

৩৩৪. বই বিশ্বাসের অঙ্গ, বই মানবসমাজকে সভ্যতা টিকাইয়া রাখার জ্ঞান দান করে। অতএব, বই হইতেছে সভ্যতার রক্ষাকবচ।

–ভিক্টর হুগো

৩৩৫. সাহিত্য ও সংস্কৃতি দেশ ও জাতির দর্পণবিশেষ।

–উইলিয়াম ডানলপ

৩৩৬. কোনো কোনো বইয়ের কথা অসঙ্গতভাবেই ভুলে যাওয়া হয়; তবে অসঙ্গতভাবে কোনো বইকেই স্মরণে রাখা হয় না।

–ডব্লিউ এইচ অডেন

৩৩৭. হৃদয়ের স্পর্শ যেখানে আছে, সেটাই গ্রন্থ।

–হেনরি ডনডিক

৩৩৮. সমালোচক তারাই যারা সাহিত্য ও শিল্পক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছে।

–ফ্রাংকলিন

৩৩৯. সাহিত্যখ্যাতি এমন খ্যাতি, যা মানুষের হৃদয়ে চিরদিন অবিস্মরণীয় হয়ে থাকে।

–হেনরি কিং

৩৪০. ছবি হচ্ছে শব্দহীন এক অনবদ্য কবিতা।

–ওয়াশিংটন আলস্টন

৩৪১. সেই নাটকই আসল নাটক, যার মধ্যে যে মানুষ যা চায় তা-ই পায়।

–শংকর

৩৪২. নৃত্য হচ্ছে সংগীত ও ভালোবাসার সন্তান।

স্যার জন ডেভিস

৩৪৩. মাতৃভাষার এমনি মহিমা যে কথা বলাটাই আনন্দের বলিয়া মনে হয়। বাঙ্গালা যে আমার মাতৃভাষা সে কথাটা আপনাদের সমক্ষে জোর গলায় বলিতে আমার একটু দ্বিধা হয় না। কারণ তাহা না হইলে আমার নিজের মাকেই অস্বীকার করিতে হয়।

–তাসাদুক আহমদ

৩৪৪. ভালো কবিতা বাস্তবতার জন্যে এক অবদান। একটা ভালো কবিতা সহযোগিতা করে জগতের গড়ন আর তাৎপর্য বদলে দিতে, সহযোগিতা করে কারও নিজের আর তার চারপাশের জগৎ সম্বন্ধে ধারণা বাড়িয়ে দিতে।

–ডিলান টমাস

৩৪৫. মহৎ কবিরা, সত্যি যারা মহৎ কবি, পৃথিবীর সকল প্রাণীর মধ্যে সবচাইতে অকবিসুলভ। কিন্তু গৌণ কবিরা সবসময় চমকপ্রদ।

অস্কার ওয়াইল্ড

৩৪৬. কিছু বই আছে যেগুলোর স্বাদ গ্রহণ করে দেখতে হয়, আরেক ধরনের বই আছে যেগুলো গলাধঃকরণ করতে হয়। আরেক ধরনের বই আছে যেগুলো পড়ে গলাধঃকরণ করতে হয় এবং হজম করতে হয়।

ফ্রান্সিস বেকন

৩৪৭. যে লেখক হতে ইচ্ছে করে, তার প্রথমে ছাত্র হওয়া উচিত। ড্রাইডেন ৩৪৮. লেখাটা হল মানুষের সম্পূর্ণ ব্যক্তিত্বের প্রতিফলন।

শংকর

৩৪৯. নোংরা লেখার চেয়ে নোংরা জিনিস আর কিছু নেই। –জি. জে. নাথন

৩৫০. যে-লোক তার নিজের লেখা বইয়ের সম্বন্ধে কথা বলে থাকে, তাকে সে মায়ের সঙ্গে তুলনা করা চলে, যে তার নিজের ছেলের গুণ সম্বন্ধেই বেশি বড়াই করে থাকে এবং এ-কাজটা খুবই লজ্জাকর।

–ডিজরেইলি ৩৫১. একগাদা বই সংগ্রহে রাখা সেগুলো পুড়ে ফেলারই বিকল্প।–অ্যান্থনি বার্জেস

৩৫২. কেউ পড়ে চিন্তা করবে বলে–এরা হাতে গোনা; কেউ লিখবে বলে, এরা সাধারণ; আর কেউ কথা বলার জন্যে–এরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। চার্লস কালেব কল্টন

৩৫৩. ভালো বইগুলো পড়া যেন-বা গত শতকের মহৎ লোকদের সঙ্গে আলাপ করার মতো।

–দেকার্তে

৩৫৪. শব্দ ও ভাষাগঠনের জন্য নির্ভরশীল হতে হবে লেখকের উপর। শক্তিশালী লেখক জন্ম দেন ভাষার, সৃষ্টি করেন নতুন নতুন শব্দের। আসলে সুন্দর ভাষার জন্ম হয় লেখকের সাধনায়।

–ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ

৩৫৫. দ্যাখো, হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি কর এবং লেখো।

–টমাস মুর

৩৫৬. শিল্পসৃষ্টির জন্য আমি নারীর মতো গর্ভবতী থাকতে চাই। সবসময়ই প্রসব বেদনায় ভুগতে চাই।

অ্যান্থনি নিউলে

৩৫৭. আমার কাছে শিল্প রচনা করাটাই সোজা, জীবনটা কঠিন। লরেন্স ডারেল

৩৫৮. শিল্পে এবং সাহিত্যে সাধনা এবং একনিষ্ঠতার কোনো বিকল্প নাই। এখানে চুরি চলে না, ফাঁকি চলে না। চুরি এবং ফাঁকি চলে রাজনীতি, ব্যবসায় আর অর্থনীতিতে। সংগীতে শিল্পে আর সাহিত্যে নয়।

–আবুল ফজল

৩৫৯. যতদিন বাংলার আকাশ থাকবে, যতদিন বাংলার বাতাস থাকবে, ততদিন বাংলার সংস্কৃতি থাকবে।

–বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব

৩৬০. মনুষত্ব তথা মানবধর্মের সাধনাই সংস্কৃতি এবং একমাত্র সাধনাই জীবনকে করতে পারে সুন্দর সুষ্ঠু।

–আবুল ফজল

৩৬১. যে-মানুষের হৃদয়ে সংগীতের সুর আছে, প্রেম ও প্রীতি বিনিময়ে সে অদ্বিতীয়।

–প্লেটো

৩৬২. ভাষা হচ্ছে বিজ্ঞানের একমাত্র বাহন। আর শব্দ কেবল ভাবনার ইশারা।

স্যামুয়েল জনসন

৩৬৩. যে সংগীতকে ভালোবাসে তার নিঃসঙ্গ সময় মধুরতর হবে।

–রাওল্যান্ডি হিল

৩৬৪. জীবন আর সংগীত ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সংগীতের মাঝে মানুষ বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা পায়।

সুইফট

৩৬৫. সাহিত্যের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে মানবজীবনের সম্পর্ক। মানুষের মানষিক জীবনকর্ম কোনখানে? সেখানে আমাদের বুদ্ধি এবং হৃদয়, বাসনা এবং অভিজ্ঞতা সব গলে গিয়ে, মিশে গিয়ে একটি সম্পূর্ণ ঐক্য লাভ করেছে। সেখানে আমাদের বুদ্ধি, প্রবৃত্তি এবং রুচি সম্মিলিতভাবে কাজ করে। এক কথায় যেখানে আদত মানুষটিই আছে, সেইখানেই সাহিত্যের জন্মলাভ।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

৩৬৬. কাব্যের আনুষঙ্গিক ফল যাহাই হউক কাব্যের উদ্দেশ্য উপকার করিতে বসা নহে। যাহা সত্য, যাহা সুন্দর তাহাতে উপকার হইবার কথা। কিন্তু সেই উপকারিতার পরিমাণের উপর তাহার সত্যতা ও সৌন্দর্যের পরিমাণ নির্ভর করে না। সৌন্দর্য আমাদের উপকার করে বলিয়া সুন্দর নহে, সুন্দর বলিয়াই উপকার করে।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

৩৬৭. সংসারে অন্যান্য যাবতীয় কর্মের মতো সাহিত্যসৃষ্টিও একটা কর্ম এবং এই অর্থে একজন সাহিত্যকর্মী একজন চাষী মজুরের সঙ্গে একই শ্রেণীতে দাঁড়ায়।

–অচিন্তেশ ঘোষ

৩৬৮. বইয়েরা নির্দোষ, কেননা সচেতনভাবে কেউ এদের দ্বারা আক্রান্ত হয় না।

টি. এস. এলিয়ট

৩৬৯. বাজে বই লেখা ভালো বই লেখার মতোই কঠিন; একই সতোর সঙ্গে লেখকের আত্মা থেকে জন্ম হয় এর।

–অলডাস হাক্সলি

৩৭০. ভালো বই পড়েও আমরা ততক্ষণ পর্যন্ত সেটি ভালোমতো উপলব্ধি করি না, যতক্ষণ না লেখকের সঙ্গে একই তালে আমরা এগিয়ে যাই।

জন কীটস্

৩৭১. প্রিয় কবি হতে চাও লেখো ভালোবাসা যা পড়ে গলিয়া কবে পাঠকের মন, তার লাগি চাই কিন্তু দু’টি আয়োজন জোর করা ভাব আর ধার করা ভাষা।

–প্রমথ চৌধুরী

৩৭২. একজন লেখকের সবচেয়ে বড় পুরস্কার, সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি, সবচেয়ে বড় সম্পদ হচ্ছে তাঁর পাঠক।

ইমদাদুল হক মিলন

 ৩৭৩. একজন ভাল কবিমাত্রই আত্মার শিল্পী।

–আইজ্যাক ডিজরেইলি

৩৭৪. মানুষের আন্তরিকতা ও তার দৃষ্টির গভীরতাই তাকে কবি করে তোলে।

–কার্লাইল

৩৭৫. কবি হল নিঃশব্দ কবিতা; আর কবিতা হল এমনি একটি ছবি যা কথা বলে।

–সিমোনিডোস

৩৭৬. সাহিত্য সবসময় সুগন্ধে পরিপূর্ণ।

–ওয়াল্ট হুইটম্যান

৩৭৭. যে মানুষ খুন করে, সে আসলে খুন করে যুক্তিশীল এক প্রাণীকে, ঈশ্বরের প্রতিমাকে; কিন্তু যখন কেউ ধ্বংস করে ফেলে কোনো বই, তখন সে খুন করে যুক্তিকে।

মিল্টন

৩৭৮. যে নির্জনে বসে সংগীত শোনে, সে-ই সংগীতকে হৃদয়-মন দিয়ে উপলব্ধি

–এডমন্ড স্মিথ

৩৭৯. শব্দহীন পরিবেশে সংগীত মনের ভাঁজে ভাঁজে সুর ছড়ায়।

–ওয়েলেন্স স্টিভেন্স

৩৮০. উচ্চারণ হল ভাষার আত্মার মতো; এর থেকেই অনুভূতি ও সাধ্য জন্ম নেয়।

–রুশো

৩৮১. কবিরা সমাজদেহের চক্ষু, বাগানের মুক্ত পাখি এবং সত্যের দর্পণ।

ইকবাল

৩৮২. লেখকের স্বাধীনতা যে শুধু লেখকের জন্য প্রয়োজন তা নয়, সমাজের বৃহত্তম কল্যাণের জন্যও তা অত্যাবশ্যক। ভাষার স্বাধীকারের সাথে লেখকের স্বাধীনতাও চাই।

–আবুল ফজল

৩৮৩. বই আমাদের পড়তেই হবে, কেননা বই পড়া ছাড়া সাহিত্যচর্চার উপায়ান্তর নেই। ধর্মের চর্চা মন্দিরের বাইরেও করা চলে, দর্শনের চর্চা গুহায়, নীতির চর্চা ঘরে এবং বিজ্ঞানের চর্চা যাদুঘরে, কিন্তু সাহিত্যের চর্চার জন্য চাই গ্রন্থাগার। এই চর্চা মানুষ কারখানাতে করতে পারে না, চিড়িয়াখানাতেও নয়।

–প্রমথ চৌধুরী

৩৮৪. সমস্ত বই-ই হয় স্বপ্ন, নয় তলোয়ার।

–এ. সি. লাওয়েল

৩৮৫. বই কেনা শখটারে
দিয়ো নাকে প্রশ্রয়;
ধার নিয়ে ফিরিয়ো না,
তাতে নাহি দোষ রয়।

–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

৩৮৬. শব্দ যদি কবিতা হয়, তবে তার উৎস হচ্ছে হৃদয়।

–আলফ্রেড লোয়ের্স

৩৮৭. পৃথিবীর সকল মানুষ মায়ের মুখের ভাষায়ই কথা বলে।

–বেগ লার্ড

৩৮৮. সমাজবিজ্ঞানী এবং গবেষকরা ছাড়াও সাহিত্যিকরা সমাজের ভেতরের একজন অনুসন্ধানী। তাই তাঁদের লেখায় সমাজচিত্র ফুটে উঠবেই।

–হুমায়ূন আহমেদ

৩৮৯. শিল্পকলায় যারা প্রভুত্ব অর্জন করেছে, আমি তাঁদের সবচেয়ে বেশি শ্রদ্ধা করি।

আর্থার হুইটারম্যান

৩৯০. কবি তখনই দরিদ্র হবেন, যখন তিনি তাঁর শব্দ ব্যবহারে কৃপণতা করবেন।

–জর্জ অ্যাবি

৩৯১. যেদেশে শিল্পী নিগৃহীত হন, সেদেশে শোভন কিছু সৃষ্টি হতে পারে না।

–জেমস টমসন

৩৯২. আমি তোমাকে আমার সংগীতের মাধ্যমেই আনন্দ দিয়ে যাব।

–রাওল্যান্ড হিল

৩৯৩. বেশি বই পড়ার চেয়ে অল্প পড়েও মনে রাখা ভালো।

চার্লস ল্যাম

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *