2 of 2

৭৯. বদর যুদ্ধ সম্পর্কে রচিত বিভিন্ন কবিতা

বদর যুদ্ধ সম্পর্কে রচিত বিভিন্ন কবিতা

বদর যুদ্ধ সম্পর্কে যে সব কবিতা রচিত হয়েছে তার মধ্যে ইবন ইসহাক হযরত হামযা ইবন আবদুল মুত্তালিবের নিম্নলিখিত কবিতাটি উল্লেখ করেছেন। কিন্তু ইবন হিশাম, একে হামযার কবিতা বলতে অস্বীকার করেছেন।

হযরত হাযযার কবিতা–

তুমি কি এমন বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য করনি যা যুগের বিস্ময় হিসেবে গণ্য? আর মৃত্যুর জন্যে রয়েছে বিভিন্ন প্রকার স্পষ্ট উপকরণ।

আর এ ঘটনা। এ ছাড়া আর কিছুই ছিল না যে, ঐ সম্প্রদায়কে উপদেশ থেকে উপকৃত হতে বলা হয়েছিল, কিন্তু তারা অবাধ্যতা ও অস্বীকার করার মাধ্যমে উপদেশদাতার বিরুদ্ধাচরণ

করেছে।

ফলে সন্ধ্যাকালে তারা সদল বলে বন্দরের দিকে অগ্রসর হল এবং বদর প্রান্তরের পাথুরে ভূমিতে স্থায়ীভাবে আটকা পড়ল। འ་

আমরা তো কেবল বাণিজ্য কাফিলার জন্যেই বেরিয়েছিলাম। এ ছাড়া আর কোন উদ্দেশ্য আমাদের ছিল না। পক্ষান্তরে তারা আমাদের দিকে এগিয়ে এলো। ফলে ঘটনাক্রমে তাদের সাথে আমাদের সংঘর্ষ বেধে গেল।

আর যখন সংঘর্ষ বেধে গেল, তখন তাদের প্রতি ধূসর বর্ণের তীক্ষ তীর নিক্ষেপ করা ছাড়া আমাদের আর কোন গত্যন্তর ছিল না।

আর মস্তক ছেদনকারী অলংকার খচিত ঝকঝকে সাদা ধারাল তরবারি দ্বারা আঘাত করা ব্যতীত কোন উপায় ছিল না।

আর পথভ্রপথভ্রষ্ট উতবাকে আমরা মাটির সাথে মিশিয়ে দিই এবং শায়বাকে অন্ধকূপের মধ্যে নিহতদের মাঝে উপুড় করে নিক্ষেপ করি।

তাদের যে সব মিত্ররা মাটির সাথে মিশে গিয়েছে, আমরও সেই সাথে মাটির সাথে মিশে

আন্তীন বিদীর্ণকারী এসব মহিলা হচ্ছে ফিহর গোত্রের শাখা লু-আই ইবন গালিব-এর সন্ত্রান্ত মহিলাদের অন্তর্ভুক্ত।

এরা এমন এক সম্প্রদায়ের লোক, যারা নিজেদের ভ্রান্তপথে চলার কারণে নিহত হয়েছে। তারা শেষ পর্যন্ত ঝাণ্ডা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে এবং পরাজয়বরণ করা পর্যন্ত তাদের সাহায্যার্থে কেউ এগিয়ে আসেনি।

তাদের সে ঝােণ্ডা ছিল ভ্ৰষ্টতার প্রতীক। আর তাদের নেতৃত্ব দিচ্ছিল স্বয়ং ইবলীস। অবশেষে সে তাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে। যে খবীছ, বিশ্বাসঘাতকতা করাই তার নীতি।

যখন সে মুসলমানদের সাহায্যার্থে ফেরেশতাদের অবতরণ স্পষ্টভাবে দেখতে পেল, তখন সে বলল, আমি তোমাদের থেকে পৃথক হয়ে গেলাম, আজ আর ধৈর্য-ধারণ করার ক্ষমতা আমার নেই।

কেননা, আমি যা দেখতে পাচ্ছি। তোমরা তা দেখছে না। আমি আল্লাহর শাস্তির ভয় করছি, কারণ, আল্লাহ পরাক্রমশালী।

সে তাদেরকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে, আর তারা তাতে আটকা পড়েছে। সে যে কথাটি তাদেরকে জানায়নি, ঐ কথাটি সে ভাল করেই জানতো।

যে প্রভাতকালে তারা বদরের কূপে পৌছায়, তখন তাদের সংখ্যা ছিল এক হাযার। অন্য দিকে আমাদের দলে ছিল শুভ্র রং বিশিষ্ট নর উটের ন্যায়। তেজোদীপ্ত তিনশ’ যোদ্ধা।

আর আমাদের মাঝে ছিল আল্লাহর প্রেরিত সৈনিকগণ। তাঁরা বদরে আমাদেরকে শক্ৰদের মুকাবিলায় সাহায্য করছিলেন। এরপর এ কথা সর্বত্র আলোচিত হতে থাকে।

জিবরাঈল ফেরেশতা আমাদের পতাকাতলে থেকে তাদেরকে এক সংকীর্ণ স্থানে এমন কঠোর আঘাত হানেন যে, তাদের উপর দিয়ে মৃত্যুর হিমশীতল বায়ু প্রবাহিত হতে থাকে।

এই কবিতার জবাবে রচিত হারিছ ইবন হিশামের কবিতার কথা ইবন ইসহাক উল্লেখ করেছেন। আমরা ইচ্ছাকৃতভাবে তা বাদ দিয়েছি।

হযরত আলী (রা)-এর কবিতা বদর যুদ্ধ সম্পর্কে আলী ইবন আবু তালিব নিম্নলিখিত কবিতা রচনা করেন। অবশ্য ইবন হিশাম, একে অস্বীকার করেছেন।

তুমি কি লক্ষ্য করনি, আল্লাহ তাঁর রাসূলের কত কঠিন পরীক্ষা নিয়েছেন? যেমন কঠিন পরীক্ষা নেয়া হয় উচ্চ পদাধিকারী ও উচ্চ মর্যাদায় আসীন ব্যক্তির।

যে পরীক্ষার দ্বারা কাফিরদের নামিয়ে দেয়া হয়েছে লাঞ্ছনার স্থলে। তাই যারা বন্দী হয়েছে ও নিহত হয়েছে তারা লাঞ্ছনার সম্মুখীন হয়েছে।

এই পরীক্ষার মাধ্যমে রাসূলুল্লাহর প্রতি আল্লাহর সাহায্য মহীয়ান রূপ লাভ করেছে। আর রাসূলুল্লাহ তো ইনসাফের সাথেই প্রেরিত হয়েছেন।

তিনি আল্লাহর পক্ষ হতে এমন এক কিতাব নিয়ে এসেছেন, যা হক ও বাতিলের মধ্যে পার্থক্য করে দেয় এবং জ্ঞানী লোকদের নিকট তাঁর আয়াতগুলো অতি সুস্পষ্ট।

কিছু লোক এই কিতাবের উপর ঈমান এনেছে ও বিশ্বাস স্থাপন করেছে। এর ফলে আল্লাহর রহমতে তারা তাদের শক্তিকে সংহত করতে সক্ষম হয়েছে।

পক্ষান্তরে কিছু লোক তা অস্বীকার করেছে। তাই তাদের অন্তর বক্র হয়ে গেছে। ফলে আরাশের অধিপতি তাদের বিভ্ৰান্তি আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন।

তিনি বদরের দিন তাঁর রাসূলকে শক্ৰদের উপর বিজয়ী করেছিলেন। আর বিজয়ী করেছিলেন এমন এক ক্ষিপ্ত দলকে যাদের কাজকর্ম ছিল অতি উত্তম।

তাদের হাতে ছিল হালকা সাদা তরবারি, যা দিয়ে তারা শত্রুদের উপর হামলা চালায়। তারা এ তরবারিগুলো নতুনভাবে শানিয়ে ও ধার দিয়ে নিয়েছিল।

এ সব তরবারি দিয়ে তারা শত্রুপক্ষের বহু জাত্যাভিমানী বীর সেনা ও শৌৰ্য-বীর্যের অধিকারী যুবকদেরকে ভূপাতিত করে।

তাদের শোকে বিলাপকারিণী মহিলারা অশ্রু বিসর্জন করেছে। এ সব মহিলা ছোট ও বড় আকারে মুষলধারে বৃষ্টিপাতের ন্যায় অশ্রুবিন্যা প্রবাহিত করেছে।

বিলাপকারিণী মহিলারা পথভ্রষ্ট উত্বা, তার পুত্র ও শায়বা এবং আবু জাহলের মৃত্যুবার্তা ঘোষণা করে বিলাপ করে যাচ্ছে।

বিলাপকারিণীরা খোড়া লোকটির জন্যে বিলাপ করছে এবং ইবন জাদ আনও তাদের অন্তর্ভুক্ত। এ সব মহিলা শোকের কাল পোশাক পরিহিতা এবং তাদের ভারাক্রান্ত হৃদয়ের চিহ্ন সুস্পষ্ট।

শক্ৰদের মধ্য থেকে এমন একটি দল তুমি বদরকুপে দেখতে পাবে, যারা ছিল যুদ্ধক্ষেত্রে রণ-কুশলী ও দুর্ভিক্ষের সময় সাহায্যকারী।

কেউ তাদেরকে ভ্ৰষ্টপথের দিকে আহবান করেছে। আর তারাও সে ডাকে সাড়া দিয়েছে। ভ্রষ্টপথে চলার নানাবিধ সূত্র ও উপায়-উপকরণ আছে, যেগুলো সেদিকে যাওয়ার জন্যে খুবই আকর্ষণীয়।

অবশেষে তারা সীমালংঘন করে ও আর্তনাদ করে জাহান্নামের অতল গহবরে তলিয়ে গেছে।

এই কবিতার জবাবে লিখিত হারিছের কবিতা ইবন ইসহাক তাঁর গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু আমরা এখানে তার উল্লেখ থেকে বিরত থাকলাম।

কাআব ইবন মালিকের কবিতা বদর যুদ্ধ সম্পর্কে কাব ইবন মালিক নিম্নলিখিত কবিতা রচনা করেন।

অর্থ : আমি আল্লাহর ফায়সালায় চমৎকৃত। তিনি যা ইচ্ছা করেন তা বাস্তবায়ন করতে সক্ষম। আল্লাহকে বাধ্য করার শক্তি কারও নেই।

বদরের দিনে তার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা সীমালংঘনকারী এক সম্প্রদায়ের মুকাবিলা করি। আর সীমালংঘনকারীরা মানুষের সাথে জুলুম-অত্যাচারের নীতি অবলম্বন করে থাকে।

তারা সে দিন সৈন্য-সামন্ত একত্রিত করেছিল এবং আশ-পাশের লোকদেরও যুদ্ধে শরীক হওয়ার জন্যে আহবান জানিয়েছিল। ফলে তাদের দলে সৈন্যসংখ্যা অনেক বেশী হয়ে যায়।

বনু কাআবি ও বনু আমির সহ সকলেই আমাদের দিকে এগিয়ে আসে। আমরা ছাড়া আর কেউ তাদের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু ছিল না।

আর আমাদের মাঝে রয়েছেন আল্লাহর রাসূল। তার চারপাশে আছে আওস গোত্রের লোক —যারা ছিল রাসূলের জন্যে দুর্গের ন্যায় শক্তিশালী ও সাহায্যকারী।

তাঁর পতাকা তলে রয়েছে বনু নাজ্জারের দল। হালকা ও সাদা বর্ম পরিধান করে তারা ধূলি উড়িয়ে সম্মুখে অগ্রসর হচ্ছে।

আমরা যখন তাদের মুখােমুখি হই, তখন আমাদের প্রতিটি মুজাহিদ তার সাথীকে উৎসাহ যোগায় ও দৃঢ়পদে অবস্থান করে।

আমরা সাক্ষ্য দিই যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোন প্ৰভু নেই এবং আল্লাহর রাসূল সত্য নিয়ে জয়ী হন।

তখন সাদা ও হালকা তরবারি খাপ থেকে বের করা হল। দেখে মনে হচ্ছিল তা যেন অগ্নিশিখা। উত্তোলনকারী যেন তোমার দুই চোখের সামনে নাড়াচাড়া করে চোেখ ঝলসে দিচ্ছে। এসব তরবারি দিয়ে আমরা তাদের দলকে বিধ্বস্ত করে দিয়েছি। ফলে তারা ছত্ৰভংগ হয়ে পড়ে এবং যারা তাদের মধ্যে উদ্ধত, তারা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।

শেষে দেখা গেল, আবু জাহল উপুড় হয়ে পড়ে আছে, আর উতবাকে তারা বিপর্যন্ত অবস্থায় ছেড়ে চলে যায়।

শায়াবা ও তায়মীকে তারা রণক্ষেত্রে ফেলে চলে যায়। এরা সকলেই ছিল আরাশের অধিপতির অবাধ্য।

এর ফলে তারা তাদের চিরস্থায়ী ঠিকানা জাহান্নামের ইন্ধনে পরিণত হল। প্রত্যেক কফিরের গন্তব্যস্থল হচ্ছে জাহান্নাম।

লৌহ-দণ্ড ও প্রস্তরে পরিপূর্ণ সে জাহান্নামের অগ্নিশিখা তাদের উপর প্রজ্বলিত হচ্ছে প্ৰচণ্ড তাপের পূর্ণ যৌবন সহকারে।

রাসূলুল্লাহ তাদেরকে বলেছিলেন, তোমরা আমার কাছে এসো! কিন্তু তারা মুখ ফিরিয়ে নিল এবং বলল, তুমি তো একজন জাদুকর।

আল্লাহর ফায়সালা ছিল কাফিররা এখানে ধ্বংস হবে। আর আল্লাহব ফায়সালা বাতিল করার সাধ্য কারও নেই।

বদর যুদ্ধ সম্পর্কে কাআব ইবন মালিক আরও বলেন :

অর্থ : শুনো! বনু গাসসানের বাড়ীঘর দূরে হওয়া সত্ত্বেও কি তাদের নিকট এ সংবাদ পৌছেছে? আর কোন বিষয়ের সংবাদ সেই উত্তমভাবে বলতে পারে যে সে বিষয়ে ভালভাবে

এই সংবাদ যে মাআদ বংশের মুখ ও জ্ঞানী সকলে মিলে আমাদের প্রতি তীর-ধনুক তাক করেছে শক্রিতাবশত।

শক্ৰতা এ জন্যে যে, দায়িত্বশীল রাসূল যখন আমাদের মাঝে আসলেন, তখন আমরা জান্নাতের আশায় আল্লাহর দাসত্ব কবুল করি, অন্য কারও দাসত্ব করি না।

তিনি এমন একজন নবী, যিনি নিজ কওমের মধ্যে উত্তরাধিকার সূত্রে সম্মানের অধিকারী, সৎ গুণাবলীর অধিকারী। তাকে তাঁর বংশীয় ঐতিহ্য মহান ব্যক্তিত্বে গড়ে তুলেছিল।

তারাও অগ্রসর হল, আমরাও অগ্রসর হলাম। যখন আমরা পরস্পরে মুখোমুখি হলাম, তখন আমাদেরকে সিংহের মত মনে হল— যার থাবা থেকে বাচার আশা করা যায় না।

আমরা তাদেরকে তরবারি দ্বারা আঘাত হানি। আমাদের প্রচণ্ড আঘাতে লুআই বংশের বড় বড় নেতা ও বীর অতি শোচনীয় ভাবে গর্তের মধ্যে উপুড় হয়ে পড়তে লাগলো।

অবশেষে তারা রণে ভংগ দিয়ে পলায়ন করল আর আমরা সাদা ঝলমলে ধারাল তরবারি

দ্বারা তাদেরকে সাবাড়ি করে দিতে লাগলাম এবং এ বিষয়ে তাদের ও তাদের মিত্রদের মধ্যে পার্থক্য করতাম না–সমানে হত্যা করেছি। (s

এ প্রসংগে কাআব ইবন মালিকের আরও কবিতা :

অর্থ : হে লুআই-এর পুত্রদ্বয়! তোমাদের পিতার শপথ, তোমাদের অহংকার ও গর্বের উপর।

মুকাবিলার সময়ও তারা দৃঢ়ভাবে টিকে থাকতে পারেনি।

আমরা আল্লাহর নূর নিয়ে সেখানে উপনীত হই, যা আমাদের থেকে অন্ধকার ও আবরণ দূর করে আলোক-উদ্ভাসিত করে দেয়।

তিনি হলেন আল্লাহর রাসূল, যিনি আল্লাহর একটি নির্দেশের দিকে আমাদের অগ্রসর করাচ্ছিলেন। আল্লাহর চূড়ান্ত ফায়সালায় তা দৃঢ়তা লাভ করে।

এ কারণে বন্দরে তোমাদের অশ্বারোহী বাহিনী জয়ীও হতে পারেনি এবং তোমাদের নিকট সহীহ-সালামতে প্ৰত্যাবর্তনও করতে পারেনি।

অতএব, হে আবু সুফিয়ান! তাড়াহুড়া করো না; বরং কুন্দা উপত্যকা হতে উত্তম ঘোড়া বেরিয়ে আসার অপেক্ষা কর।

সে দলের সাথে থাকবে। আল্লাহর সাহায্য, থাকবে রূহুল কুদস— জিবরাঈল ও মীকাঈল ফেরেশতা। কতই না। উত্তম হবে সে দল!

হাসসান ইবন ছবিতের কবিতা নিম্নে উল্লিখিত কবিতাটি কবি হাস্সান ইবন ছবিতের। কিন্তু ইবন হিশাম বলেছেন, কেউ

অর্থঃ তাদের সম্মুখে ছিলেন এমন এক মহান ব্যক্তিত্ব, যার বাহ্যিক আলামত ছিল পরিধারে কড়া লাগান শক্ত লৌহ-বর্ম। তিনি ছিলেন কোমলহৃদয়, দৃঢ়চেতা ও নিভীক।

অর্থাৎ— তিনি সৃষ্টি জগতের স্রষ্টা কর্তৃক প্রেরিত রাসূল— যাকে তিনি তাকওয়া। বদান্যতা দ্বারা সৃষ্টির উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন।

তোমরা ভেবেছিলে যে, তোমাদের কৌলীন্য-আভিজাত্যকে তোমরা রক্ষা করতে পারবে ং বদরের কুয়াের উপর অন্য কেউ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে, পারবে না।১

আমরা আল্লাহর পক্ষ থেকে ছেড়ে দেয়া মযবুত রশিকে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে রাখলাম, কিছুতেই ছাড়লাম না।

আমাদের মাঝে আছেন রাসূল। আমাদের মাঝে আছে সত্য— যা আমরা মৃত্যু পর্যন্ত অনুসরণ করে যাব এবং আমাদের পক্ষে রয়েছে আল্লাহর সীমাহীন সাহায্য।

তিনি ওয়াদা পূরণকারী, দায়িত্ব পালনকারী, উজ্জ্বল নক্ষত্র যার থেকে আলো গ্রহণ করা যায়, পূর্ণিমার চাদ— সকল মর্যাদাবানকে তিনি আলোকিত করে দিয়েছেন

হাসসান ইবন ছাবিত আরো বলেন :

অর্থ : হায়! যদি আমি জানতে পারতাম। সেই সংকট মুহুর্তে আমাদের হাতে কাফিরদের যে ধ্বংসক্রিয়া সংঘটিত হয়, সে সংবাদটি মক্কাবাসীদের নিকট পৌঁছল। কি না!

প্রবল আক্রমণে আমরা তাদের নেতৃস্থানীয় বীর পুরুষদেরকে হত্যা করি। ফলে মেরুদণ্ড ভাংগা অবস্থায় পরাজয়ের গ্রানি নিয়ে তারা প্ৰত্যাবর্তন করে।

আমরা আবু জাহলকে হত্যা করেছি। তার আগে উতবা ও শায়বাকে হত্যা করেছি। এরা সবাই হাত ও গ্ৰীবার উপর উপুড় হয়ে পড়ে থাকে।

সে দিন আমরা সুওয়াইদকে হত্যা করি। তারপরে উতবাকে এবং ধূলি উড়ার সময় তু’মা-কেও হত্যা করি।

এ ভাবে কত যে সম্মানিত সর্দার-লোকদের হত্যা করেছি— যারা ছিল আপনি সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রথিতযশা মহান ব্যক্তি।

আমরা তাদেরকে ছেড়ে দিয়েছিলাম ক্ষিপ্ত চিতা বাঘের সামনে— যারা বারবার তাদের সম্মুখে এসেছিল। এরপরে তারা প্রবেশ করবে। গভীর তপ্ত অগ্নিকুণ্ডে।

তোমার জীবনের কসম! বদরের যুদ্ধের দিনে যখন আমরা মুখোমুখি হই, তখন তোমার সাহায্যে না মালিকের অশ্বারোহী বাহিনী এগিয়ে আসলো, আর না তাদের অন্যান্য মিত্ররা।

উবায়দা ইবন হারিছের কবিতা বদর যুদ্ধের শুরুতে উবায়দা ইবন হারিছ ইবন আবদুল মুত্তালিব, হামযা ও আলী যথাক্রমে উতবা, শায়বা ও ওয়ালীদ ইবন উতবার বিরুদ্ধে মল্লযুদ্ধে অবতীর্ণ হন। এ মল্লযুদ্ধে উবায়দা

১. ইবন হিশামের সীরাত গ্রন্থে এই পংক্তির পরে নিমের পংক্তিটি আছে :

ثم و رد نا لم نسسمع لقولکم ‘ + حتی شسر بنا رواء غیر تصدید–অর্থ : কিন্তু আমরা সে পানির কাছে পৌঁছলাম। তোমাদের কোন কথা শুনলাম না এবং তৃপ্তি সহকারে পানি পান করলাম নির্বিবাদে।,

ইবন হারিছের একটি পা কেটে যায়। সেসময় তিনি নিম্নের কবিতাটি আবৃত্তি করেন। কিন্তু ইবন। হিশাম, এ কবিতাটি উবায়দার বলে স্বীকার করেননি।

a–a–ستبلغ عنا اهل مكة وقعة + يهب لها من كان عند تلك ناتشيا অর্থ : অচিরেই মক্কাবাসীদের নিকট আমাদের সম্পর্কে একটি ঘটনার সংবাদ গিয়ে পৌঁছবে। সে সংবাদ শুনে এখান থেকে যারা দূরে অবস্থান করছে, তারা ঘাবড়ে যাবে।

উতবা সম্পর্কে, যখন সে পালাচ্ছিল এবং তারপরে শায়বা, আর যে অবস্থায় থাকতে উতবার প্রথম ছেলেটিও (ওয়ালীদ) সম্মত ছিল।

তারা যদি আমার পা কেটে দিয়ে থাকে, তবে এতে আমি বিচলিত নই, কেননা, আমি মুসলমান। এর বিনিময়ে আমি আল্লাহর পক্ষ থেকে অচিরেই এক সুখময় জীবন আশা করি।

সে জীবন হবে তুরদের সাথে, যারা মূর্তির মত স্বচ্ছ। উচ্চতর জন্নাতে যারা উচ্চ মর্যাদা পাবে তাদের জন্যে নির্ধারিত থাকবে এ সব তুর।

তা পাওয়ার জন্যে আমি এমন এক জীবনকে বিক্রি করে দিয়েছি, যার পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে আমি অবহিত। আমি তা দ্রুত কামনা করেছি। এমনকি কাছের জিনিসকেও পরিত্যাগ করছি।

পরম দয়ালু সত্তা আপন অনুগ্রহে আমাকে ইসলামের পোশাক দিয়ে সম্মানিত করেছেন— যা আমার যাবতীয় অপরাধকে ঢেকে ফেলেছে।

যে দিন সকাল বেলা আমার সমকক্ষ লোকের পক্ষ থেকে মুকাবিলা করার আহবান আসলো, সে দিন তাদের সাথে যুদ্ধ করা আমার কাছে খারাপ ঠেকেনি।

যখন তারা নবী করীম (সা)-এর নিকট (মল্লযুদ্ধের) দাবী জানাল, তখন তিনি আমাদের তিনজন ব্যতীত অন্য কাউকে ডাকেননি। সুতরাং আমরা আহবানকারীদের সামনে গিয়ে উপস্থিত হলাম।

আমরা বর্শা হাতে নিয়ে সিংহের মত গর্জে উঠে তাদের সামনে হাযির হলাম এবং রহমান

এরপর আমরা তিনজনই আপন জায়গায় অবিচল থাকলাম। আর তারা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লো।

ইবন ইসহাক লিখেছেন : বদর যুদ্ধে হারিছ ইবন হিশাম যুদ্ধ না করে দলবল ফেলে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পলায়ন করে। এ সম্পর্কে হাস্সান ইবন ছাবিতের নিন্দাসূচক কবিতাও

রয়েছে।

হাসসান ইবন ছাবিত আরও বলেন :

অর্থ : হে হারিছ! যুদ্ধ ও দুযোগকালে এমন সব লােকের উপর তুমি নির্ভর করলে, যারা মোটেই নির্ভরযোগ্য ছিল না।

তখন তুমি এমন উটের পৃষ্ঠে আরোহণ করেছিলে, যার পা ছিল দীর্ঘকায়, ভাল বংশজাত, দ্রুতগামী ও প্রশস্ত পিঠ বিশিষ্ট।

সম্প্রদায়ের লোকজন তোমার পিছনেই ছিল, কিন্তু বেঁচে থাকার আশায় তুমি যুদ্ধ ত্যাগ করে চলে আসলে! অথচ ঐ সময়টি পলায়নের সময় ছিল না।

হায়! তুমি তোমার সহোদরের দিকেও ফিরে তাকলে না। যখন সে বর্শার আঘাতে মাটিতে পড়ে মরে যাচ্ছিল এবং তার সঙ্গের আসবাবপত্র সব খোয়া যাচ্ছিল।

আল্লাহ (মালিক) তার (আবু জাহলের) ব্যাপারে দ্রুত ফায়সালা দিলেন ও তার দলবলকে লাঞ্ছনাকর কলংক দিয়ে ও জঘন্য শাস্তি দিয়ে ধ্বংস করে দিলেন।

তিনি আরও বলেন :

অর্থ : বদর যুদ্ধের প্রাতঃকালে কুরায়শরা নির্বিচারে কঠিন ভাবে বন্দীত্ব ও হত্যাকাণ্ডের

শিকার হয়। *

আবুল ওয়ালীদের নেতৃত্বে পরিচালিত সে দিনের লড়াইয়ে যুদ্ধের সাহায্যকারী লোকজনের মধ্যে বাদানুবাদের সময় আমরা প্ৰস্তুত হলাম। যেদিন রাবী আর দুই পুত্র বিপুল অস্ত্র সাজে সজ্জিত হয়ে আমাদের দিকে এগিয়ে আসলেন, সে দিন আমরা তাদেরকে হত্যা করলাম।

আর যখন বনু নাজ্জার সিংহের ন্যায় গর্জন করে যুদ্ধক্ষেত্রে ঝাঁপিয়ে পড়ল, তখন হাকীম সেখান থেকে পালিয়ে গেল।

সে দিন গোটা ফিহর গোত্র পৃষ্ঠ প্রদর্শন করে পালিয়ে যায়। আর হুয়ায়রিছ তো দূর থেকে তাদেরকে ত্যাগ করে চলে যায়।

তোমরা অপমান ও হত্যার সম্মুখীন হয়েছিলে— যা তোমাদের কণ্ঠশিরার মধ্যে প্রবেশ করেছিল।

বাহিনীর সমস্ত লোকই দৌড়ে পালিয়ে গেল এবং পূর্ব পুরুষদের মান-সম্মানের দিকে কেউ ফিরেও তাকাল না।

হিনদ বিনত উছাছার কবিতা

মৃত্যুতে নিম্নোক্ত শোকগাথা রচনা করেন :

অর্থ : সাফুরা নামক স্থানটি নিজের মধ্যে সমবেত করেছে সম্মান, নেতৃত্ব, স্বভাবগত সহনশীল এবং জ্ঞান ও প্রজ্ঞাসম্পন্ন গুণ গরিমার লোকদেরকে।

সেই সাফরা এলাকার একজন হচ্ছেন উবায়দা, তুমি তার জন্যে কাদো— যিনি ছিলেন। মেহমান মুসাফিরের জন্যে নিবেদিত এবং বিপদকালে দুঃস্থ বিধবারা তার কাছে আসতো। তিনি ছিলেন অসহায়দের জন্যে বৃক্ষ স্বরূপ।

তুমি কাদো সে সব লোকের উদ্দেশ্যে— যারা প্রত্যেক শীতের মওসুমে দুর্ভিক্ষের কারণে দিগন্তরেখা লাল হয়ে যাওয়ার সময় তার নিকট আসতো।

আর তুমি ইয়াতীমদের স্মরণে কাদো— যারা ঝঞাবায়ু প্রবাহিত হলে তার কাছে এসে আশ্রয় নিত। আরও কাদো ডেগের নীচে আগুন জ্বালানোর জন্যে, যা দীর্ঘ দিন যাবত টগবগ করে ফুটতো।

এরপর যদি কখনও আগুনের তেজ কমে যেত, তখন তিনি মোটা মোটা কাঠ দিয়ে সে আগুন আবার প্রজ্বলিত করে দিতেন।

এই ব্যবস্থা তিনি করতেন। রাত্রিকালে আগমনকারী পথিক কিংবা আপ্যায়নের প্রত্যাশী। লোকদের জন্যে এবং সেসব পথহারা পথিকদের জন্যে— যারা কুকুরের আওয়াজ শুনে সেদিকে অগ্রসর হয়ে তার কাছে উপস্থিত হত।

আতিকার কবিতা উমাবী তাঁর মাগাষী গ্রন্থে সাঈদ ইবন কুতুন থেকে বর্ণনা করেন : আতিকা বিনত আবদুল মুত্তালিব পূর্বে এক স্বপ্ন দেখেছিলেন। বদর যুদ্ধের পর স্বপ্নের সাথে মিলে যাওয়ায় নিম্নোক্ত কবিতা আবৃত্তি করেন :

অর্থ : আমার স্বপ্ন কি বাস্তবে পরিণত হয়নি এবং তার ব্যাখ্যা কি তোমাদের সামনে আসেনি? যখন সম্প্রদায়ের একদল লোক পলায়ন করল।

যে ব্যক্তি স্বচক্ষে দেখেছে যে, ধারাল তরবারি কী ভাবে সঞ্চালিত হয়েছে, তখন তোমাদের কাছে আমার সে স্বপ্ন বিশ্বাসযোগ্য হয়েছে।

আমি তোমাদের নিকট সত্য কথা বলেছিলাম, মিথ্যা কথা বলি নাই। বস্তুত আমাকে মিথ্যাবাদী ঠাওরিয়েছে সে, যে নিজে মিথুক।

হাকীম তো এমনিতে পালায়নি। বরং মৃত্যুর ভয়ে সে পালিয়েছে। অবশ্য পালিয়ে যাওয়ার সকল পথই তার রুদ্ধ হয়ে গিয়েছিল।

সে দিন তোমাদের মাথার উপরে ছিল ভারতীয় তরবারি এবং বাহরায়নের খত গোত্রে নির্মিত বর্শা— যা দেখতে চকমকে ও প্রতিপক্ষের উপর বিজয় নিশ্চিত করে।

সে তরবারির ধারাল অংশটি উজ্জ্বলতায় এমন ঝলমল করে যে, যদি কোন গর্জনকারী সিংহরূপ বীরের হাতে পড়ে, তবে তা অগ্নিস্ফুলিঙ্গের ন্যায় মনে হয়।

হায়! আমার পিতার কসম! সে দিন কি অবস্থাই না হয়েছিল, যে দিন মুহাম্মদের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। যে দিন তুমুল যুদ্ধের সময় গর্দানসমূহ কৰ্তিত হয়েছিল।

সে দিন সামনা-সামনি যুদ্ধে পাতলা ধারাল তরবারিগুলো তোমাদের উপর দিয়ে এমন ভাবে অতিক্রম করে গেল, যেমন দৃক্ষিণের মেঘমালা আকাশ পথ অতিক্রম করে যায়।

এরপর তার অনেক তরবারি কর্ম সম্পাদন করে শীতল হয়ে যায় এবং যে সেগুলোকে দৃঢ়তর করতো, সে ওগুলো ওলট-পালট করে রেখে দেয়।

কী দশা আজ সে সব নিহত লোকদের— যাদের লাশ বন্দরের পুরনো নোংরা কূপে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। আর তাদেরই বা কী দুর্দশা, যারা যুদ্ধ করতে এসে আমার ভাইপোর কাছে বন্দী অবস্থায় আছে।

এরা কী দুর্বল নারী ছিল? নাকি আল্লাহর পক্ষ থেকে মৃত্যু এসে তাদেরকে সেখানে হাঁকিয়ে নিয়ে গিয়েছিল? আর মৃত্যু তো একটা ফাঁদ হিসাবেই গণ্য হয়ে থাকে।

তাহলে রণাঙ্গনে মুকাবিলার সময় মুহাম্মদকে তার চাচাত ভাইয়েরা কী প্রকৃতিতে দেখেছিল? আর অভিজ্ঞতার পরীক্ষা তো যুদ্ধের ময়দানেই হয়ে থাকে।

তরবারির প্রচণ্ড আঘাত তোমাদেরকে কি এমন ভাবে সংকীর্ণ করে ফেলেনি, যা প্ৰত্যক্ষ করে কাপুরুষরা ঘাবড়ে যায় এবং দিনের বেলােয়ই (তরবারির ঝিলিকে) চোখে আকাশের তারা

দেখা যায়।

আমি কসম করে বলছি–তারা যদি প্রত্যাবর্তন করে, তা হলে তুমি তাদেরকে সমুদ্রে নিক্ষেপ করবে, তারা সেখানে গিয়ে পড়বে। অশ্ববাহিনী যা পরীক্ষা করে অভিজ্ঞতা অর্জন

করেছে।

এ যুদ্ধে ব্যবহৃত তরবারির উজ্জ্বলতা যেন সূর্যের কিরণ। সে তরবারির আলোর শিখায় যেন প্রভাতকালীন সূর্যের লালিমা প্রস্ফুটিত হচ্ছে।

উমাবী তার কিতাবে নিমের কবিতাটিও আতিকার বলে উল্লেখ করেছেন।

অর্থ : বদর যুদ্ধে নবী মুহাম্মদের জন্যে কেন তোমরা ধৈর্য প্রদর্শন করনি? আর যুদ্ধে যে

জড়িয়ে যায় ধৈর্যশীল হওয়া তার জন্যে অপরিহার্য। তোমরা সেই তীক্ষ্ণ ধারাল তরবারির আঘাত থেকে কেন ফিরে এলে না, যে তরবারি বহনকারী মু’মিনদের হাতে ঝলসে উঠছিল।

সেই শুভ্র তরবারির সামনে কেন তোমরা সহনশীল হতে পারলে না, যার ফলে চিহ্নিত স্বল্প ংখ্যক মুমিনের হাতে তোমরা বন্দী হয়ে গেলে।

আর তোমরা যুদ্ধের ময়দান থেকে পালিয়ে এলে। সেই লোক কখনও বীর হতে পারে না, যে অস্ত্ৰ নিয়ে লড়াই করতে গিয়ে পলায়ন করে।

মুহাম্মদ তো তোমাদের নিকট সেই বাণী-ই নিয়ে এসেছেন। যে বাণী নিয়ে এসেছিলেন পূর্ববতী নবীগণ। আর আমার ভাইপো (মুহাম্মদ) একজন পুণ্যবান ও সত্যবাদী। তিনি কোন কবি নন।

তোমরা তোমাদের নবীর যে ক্ষতি সাধন করেছ, তা অচিরেই পুষিয়ে যাবে এবং বনু আমর ও বনু আমির উভয় গোত্রই তাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসবে।

আবু তালিব পুত্র তালিবের কবিতা

আবু তালিবের পুত্র তালিব রাসূলুল্লাহ্ (সা)-এর প্রশংসায় নিম্নোক্ত কবিতা রচনা করেন। এর মধ্যে তিনি বদর যুদ্ধে নিহত ও কৃপে নিক্ষেপ্ত কুরায়শদের জন্যে শোক প্রকাশ করেছেন। এ সময় তিনি তার স্ব-সম্প্রদায়ের ধর্মের উপরই প্রতিষ্ঠিত ছিলেন।

অর্থ : শুনে রাখ! আমার চোখ বনু কাআবের জন্যে কেঁদে কেঁদে অশ্রুশূন্য হয়ে পড়েছে। কিন্তু বনু কাআবকে সে চোখে দেখেনি।

জেনে রাখ! বনু কাআবি যুদ্ধ-বিগ্রহে পারস্পরিক সহযোগিতা পরিত্যাগ করেছে এবং অপরাধে জড়িত হয়ে পড়েছে। ফলে কালের করাল গ্রাসে তারা ধ্বংস হয়ে গিয়েছে।

আর বনু আমিরের অবস্থা এই যে, প্রত্যুষে বিপদ এসে পড়লে তারা কাঁদতে থাকে। হায়, যদি আমি জানতাম যে, এ উভয় গোত্রের লোকদেরকে কখন নিকট থেকে দেখার সুযোগ হবে?

সুতরাং হে আমার ভাইয়েরা! হে বনু আবদে শামস ও বনু নাওফিল। আমি তোমাদের জন্যে নিজেকে উৎসর্গ করে বলছি, তোমরা আমাদের মধ্যে যুদ্ধ ছড়িয়ে দিয়ে না।

আর পারস্পরিক ঐক্য ও সংহতি গড়ে ওঠার পর এমন কোন ঘটনা সৃষ্টি করে উপাখ্যানে পরিণত হয়ে যেয়ো না যে, বিপদগ্ৰস্ত হওয়ার জন্যে একে অপরকে দোষারোপ করতে থাকবে।

তোমাদের কি জানা নেই যে, ‘দাঁহিস” যুদ্ধের পরিণতি কী হয়েছিল? আর আবু ইয়াকসূমের যুদ্ধের কথাও কি স্মরণ নেই যখন তারা সৈন্যবাহিনী দিয়ে গিরিপথ ভরে ফেলেছিল?

যদি আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রতিহত করা না হত, যিনি ব্যতীত অন্য কিছুই নেই, তাহলে বঁাচার জন্যে তোমরা মাটির নীচে কোন সুড়ৎগও খুঁজে পেতে না।

কুরায়শদের মধ্যে আমরা বড় ধরনের কোন অপরাধ করিনি। শুধু এই কাজটি ব্যতীত যে, ভূ-পৃষ্ঠে বিচরণকারীদের মধ্যে সর্বোত্তম লোকটিকে আমরা হিফাযত করেছি।

তিনি নির্ভরযোগ্য, বিপদের বন্ধু, তাঁর গুণাবলী মাহাত্ম্যপূর্ণ। তিনি কৃপণ নন এবং ঝগড়াটেও নন।

কল্যাণপ্রার্থীরা তার শরণাপন্ন হয়। তারা সৰ্বক্ষণ তাঁর দুয়ারে ভীড় করে থাকে। তারা এমন একটি নহরের কাছে আসে, যার পানি কখনও হ্রাস পায় না এবং শুকিয়েও যায় না।

আল্লাহর কসম, আমার অন্তর ততক্ষণ পর্যন্ত চিন্তিত ও উদ্বিগ্ন থাকবে, যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা খাযরাজ-এর উপর হামলা না করবে।

যিরার ইবন খাত্তাবের কবিতা ইবন ইসহাক তাঁর গ্রন্থে মুশরিকদের রচিত এমন কিছু কবিতা উল্লেখ করেছেন, যা বদর যুদ্ধে তাদের নিহত লোকদের শোকগাথা হিসেবে পরিচিত। তার মধ্যে বনু মুহারিব ইবন ফিহরির লোক যিরার ইবন মুত্তালিব ইবন মিরদাস-এর নিম্নোক্ত কবিতাটি এখানে উল্লেখ করা হল। পরবতীতে যিরার ইসলাম গ্রহণ করেন। সুহায়লী তাঁর রচিত রওযাতুল উনুফ গ্রন্থে এমন কিছু লোকের কবিতা সম্পর্কে আলোচনা করেছেন, যারা পরবতীতে ইসলাম গ্ৰহণ করেন।

অর্থ : আওস গোত্রের অহংকার দেখে আমি অবাক হয়ে যাই। কেননা, আগামীকাল

তাদের উপরও মৃত্যুর চাকা ঘুরে আসবে। আর কাল-পরিক্রমার মধ্যে থাকে অনেক শিক্ষণীয় বিষয়।

আমার আরও অবাক লাগে বনু নাজারের অহংকার দেখে। তাদের অহংকার এ কারণে যে, বদর যুদ্ধে একটি জনগোষ্ঠী সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয়ে যায়। আর তারা সেখানে বহাল তবিয়তে রয়েছে।

আমাদের বংশের নিহত লোকগুলো যদি ধ্বংসপ্রাপ্ত অবস্থায় পড়ে থাকে, তবে তাতে কোন চিন্তা নেই। কেননা, তাদের পরে আমরা পুরুষরা তো বেঁচেই আছি। অচিরেই আমরা ধ্বংসাত্মক হামলা চালাব।,

১. ইবন হিশাম, এর পরে নিম্নের ছন্দটি উল্লেখ করেছেন :

অর্থঃ সে দু’ গোত্র আমার ভাই তাদের পিতা ছাড়া অন্য কারও দিকে যাদের সম্পর্ক করা হয় না এবং যাদের প্রতিবেশীরা তাদের প্রতি অপহরণের অভিযোগ দেয় না।

হে বনু আওস। ক্ষুদ্র কেশর বিশিষ্ট দীর্ঘকায় তেজী ঘোড়া আমাদেরকে নিয়ে তোমাদের মাঝে ঝাপিয়ে পড়বে এবং আমাদের ব্যথিত হৃদয় শান্তি পাবে।

আর সেই ঘোড়ায় চড়ে আমরা বনু নাজ্জারের মধ্যে ঢুকে পড়বো। এ ঘোড়াগুলো বর্শা ও বর্মধারীদেরও বহন করবে।

আমরা তাদেরকে ধরাশায়ী করে ফেলে রাখবো, আর পাখীরা তাদের চার পাশে ঘিরে থাকবে। তখন মিথ্যা আশা ছাড়া তাদের অন্য কোন সাহায্যকারী থাকবে না।

ইয়াছরিব অঞ্চলের মহিলারা তাদের শোকে কাদবো। সেখানেই তারা রাত কাটাবে এবং নিদ্রাহীন অবস্থায় থাকবে।

আর ঐ অবস্থা এ জন্যে হবে যে, আমাদের তরবারি সর্বদা তাদের রক্ত ঝরাতে থাকবে, যাদের সাথে এ তরবারি যুদ্ধ করবে।

যদি তোমরা বদর যুদ্ধে জয়ী হয়ে থাক, তবে তা এ কারণে যে, আমাদেরই এক লোক আহমদকে তোমরা পেয়ে গেছ–আর তিনি তো বিজয়ীই হন।

আর এমন কিছু লোকজন তাঁর সাথে রয়েছে, যারা সমাজে উত্তম লোক হিসেবে বিবেচিত এবং তাঁর আপনজন। বিপদ কালে তাঁরা তাকে সাহায্য করেন। কিন্তু মৃত্যু তো সবার জন্যে অবধারিত।

তাদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন আবু বকর ও হামযা। আর আলীকে ধরা হয় তাদের মধ্যমণি রূপে— যাকে তুমি স্মরণ করতে পোর।

এদের দ্বারাই বিজয় লাভ করা সম্ভব হয়েছে। বনু আওস ও বনু নাজারের বংশোদ্ভূত সন্তানদের দ্বারা বিজয় আসেনি— যাদের নিয়ে ওরা গর্ব করে।

তুমি যখন বনু কাআবি ও বনু আমিরের বংশপঞ্জি গণনা করবে, তখন দেখবে তাদের উধ্বতন পুরুষ হলেন লুয়াই ইবন গালিব। w’

এরা প্রতিটি যুদ্ধে অশ্বারোহীদের প্রতি তাক করে বর্শা নিক্ষেপকারী এবং কঠিন দুৰ্যোগকালে সদাচরণকারী ও পুণ্য সঞ্চয়কারী।

যিারারের উপরোক্ত কবিতার জবাবে কাআব ইবন মালিক যে কাসীদা আবৃত্তি করেন আমরা কিছু পূর্বে তা উল্লেখ করেছি। যার প্রথম কথা এই :

অর্থ : আমি আল্লাহর সিদ্ধান্ত দেখে বিস্মিত। তিনি যা ইচ্ছা করেন তা বাস্তবায়নে সক্ষম।

আল্লাহকে অক্ষম করার শক্তি কারও নেই।

ইবন ইসহাক বলেন? বদর যুদ্ধ প্রসঙ্গে আবু বকর শাদদাদ ইবন আসওয়াদ ইবন শুউব নিম্নোক্ত কবিতা আবৃত্তি করেন।

লেখক বলেন, : ইমাম বুখারী উল্লেখ করেছেন যে, আল্লাহ মুশরিক নারীকে মু’মিন পুরুষের

দেন। তখন শাদা যা ইবন আসওয়াদ উক্ত উন্মে। বকরকে বিবাহ করে।

(অর্থঃ) উম্মে বকর তো মহা শান্তিতে জীবন যাপন করছে। কিন্তু আমার স্ব-সম্প্রদায় ধ্বংস হওয়ার পর আমার জীবনে কি কোন শান্তি আছে?

বদরের কুয়োর কাছে গায়িকা ও মদ্যপায়ীদের কী অবস্থাই না হয়েছে। বদরের কুয়োর কাছে আবলুস কাঠের পাত্রে উচু করে ভর্তি করা কুজের গোশতের কী দশাই না হল!

বদরের পাড় বাধা কুয়োর কাছে কত যে মুক্ত উট ও চতুষ্পদ জন্তুর পাল ছিল! বন্দরের পাড় বাধা কুয়োর কাছে কী পরিমাণ দুর্বর শক্তি ও বড় বড় পেয়ালা ছিল! আর সেখানে সন্ত্রান্ত আবু আলীর কত যে সঙ্গী ছিল— যারা ছিল তার উৎকৃষ্ট মদের আসরের বন্ধু-বান্ধব।

তুমি যদি দেখতে আবু আকীল ও নিয়াম পর্বতদ্বয়ের মধ্যবর্তী উপত্যকায় অবস্থানকারীদের তৎপরতা।

তবে তুমি সেখানে যাদেরকে পেতে তাদের উপর তুমি মেতে উঠতে। যেভাবে উটের বাচ্চার মা তার উদ্দেশ্য পূরণের জন্যে মেতে ওঠে।

রাসূল আমাদের জানাচ্ছেন যে, অচিরেই আমাদেরকে আবার জীবিত করা হবে। কিন্তু মৃতদের বিচূর্ণ হাড় ও মাথার খুলি কীভাবে জীবন লাভ করতে পারে?

ইমাম বুখারী তাঁর সহীহ গ্রন্থে এই কাসীদার কিছু অংশ উদধূত করেছেন— যাতে কবির মানসিকতা প্ৰকাশ পায়।

উমাইয়া ইবন আবুস সালতের কবিতা

ইবন আবুস সালত নিম্নের কবিতাটি আবৃত্তি করেন :

(অর্থ 🙂 কেন তুমি কাঁদছো না সন্ত্ৰান্ত পরিবারের সন্ত্রান্ত সন্তানদের জন্যে— যারা প্ৰশংসা পাওয়ার অধিকারী।

যেমন কেঁদে থাকে কবুতর বৃক্ষের ঝুলন্ত ডালে বসে।

পুঞ্জীভূত যন্ত্রণায় সে কাঁদতে থাকে এবং সন্ধ্যাকালে অন্যান্য প্রত্যাবর্তনকারীদের সাথে সেও প্রত্যাবর্তন করে।

তাদের দৃষ্টান্ত ঐসব বিলাপকারী মহিলা— যারা উচ্চৈঃস্বরে ক্ৰন্দন করে।

যে তাদের উপর ক্ৰন্দন করবে, সে দুঃখের কারণেই ক্ৰন্দন করবে এবং প্রত্যেক প্ৰশংসাকারী যথার্থই বলে থাকে।

বদরের প্রান্তরে ও টিলার উপর সর্দারদের কী যে শোচনীয় পরিণতি হয়ে গেল!

বারকায়ন অঞ্চলের নিম্নভূমিতে ও আওয়াশিহ অঞ্চলের টিলাগুলোতে কী যে কাণ্ড ঘটে গেল।

কিশোর ও যুবক সর্দার আর উদ্ধত ধ্বংসকারীদের কী পরিণতি যে হল!

তোমরা কি তা দেখতে পাওনা, যা আমি দেখতে পাচ্ছি। অথচ প্ৰত্যেক দর্শকদের কাছেই তা প্ৰকাশমান।

মক্কা উপত্যকার তো চেহারাই পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে এবং তা এক ভয়াল জনপদে পরিণত

হয়েছে।

অহংকারের সাথে পদচারণাকারীদের সে যে কী অবস্থা হল— যাদের গায়ের রং ছিল উজ্জ্বল ফর্সা।

তারা ছিল রাজা-বাদশাহদের দরবারের কীট। দুৰ্গম পথ অতিক্রম করে বিজয় লাভকারী। তারা ছিল অতিভোজী, হুংকারকারী বিশালদেহী ও সফলকাম নেতা।

তারা ছিল বক্তা, কর্মতৎপর ও সৎ কাজ মাত্রেরই নির্দেশ দানকারী।

তারা রুটির উপর মাছের পেটির মত চর্বি রেখে আপ্যায়ন করতো।

তারা কুয়ার ন্যায় পাত্রের সাথে বড় বড় পাত্র নিয়ে হাউজের মত পাত্রের দিকে ছুটতো। সে পাত্রগুলো যাজ্ঞাকারীদের জন্যে শূন্য বা এলোমেলো ছিল না।

এ পাত্রগুলো নির্ধারিত ছিল একের পর এক আগমনকারী অতিথিদের জন্যে এবং এগুলো छिल 奇百 v3 প্রসারি ངོ་རྒྱ5 །

তারা শত শত বরং হাযার হাযার গর্ভবতী উট দান করে দেয়।

সে যেন বালাদিহ অঞ্চল থেকে আগমনকারী উটের কাফেলাকে হাঁকিয়ে দেয়া হচ্ছে।

অন্যদের মর্যাদার উপর তাদের মর্যাদার শ্রেষ্ঠত্ব এমন, যেমন শ্রেষ্ঠত্ব রয়েছে বুকে পড়া পাল্লার ওযনের।

যেমন দানশীল হাত দ্বারা প্রদত্ত জিনিস পাল্লায় ওযন করলে ভারী হয়ে যায়।

একটি দল তাদের সাহায্য পরিত্যাগ করল। অথচ তারা নিজেদের সন্ত্রম লাঞ্ছনা থেকে রক্ষা कद्भछिब्ल।

তারা শুভ্ৰ ভারতীয় তরবারি দ্বারা অগ্রগামী সৈন্য দলের উপর আঘাত হানিছিল।

কেউ যন্ত্রণায় ছটফট করছিল।

আল্লাহই হলেন বনু আলীর হিফাযতকারী, যাদের মধ্যে ছিল বিধবা ও সধবা মহিলারা। যদি তারা এমন কোন আকস্মিক আক্রমণ না করে থাকে, যা ঘেউ ঘেউকারীকে গর্তে লুকাতে বাধ্য করে।

এমন আক্রমণ যা অনুগত, দূরপাল্লার পথ অতিক্রমকারী ও ক্ষিপ্ৰগতিসম্পন্ন ঘোটকীর মুকাবিলায় অনুরূপ ঘোটকীর দ্বারা সাধিত হয়।

যে আক্রমণ হয় গোফ-দাড়িহীন কিশোরদের দ্বারা— মারা লোমহীন অশ্বপৃষ্ঠে আরোহণ করে হিংস্র সিংহের দিকে কুকুরের মত ঝাঁপিয়ে পড়ে।

সম মানের লোকেরা পরস্পরে এমনভাবে মুখোমুখি হয়, যেমন একজন কর মর্দনকারী অন্য একজন কর মর্দনকারীর দিকে এগিয়ে গিয়ে থাকে।

যারা সংখ্যায় এক হাযার, তারপর আরও এক হাযার। এরা ছিল লৌহ বর্ম পরিহিত ও বর্শা নিক্ষেপণে দক্ষ।

ইবন হিশাম বলেন, : রাসূলুল্লাহর সহাবাগণ সম্পর্কে আপত্তিকর উক্তি থাকায় পংক্তি ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

আমার মতে এটি একটি সমর্থনহীন প্রত্যাখ্যাত ও বুদ্ধিভ্রষ্ট ব্যক্তির কাসীদা। এর দ্বারা বক্তার চরম মূর্খতা ও অজ্ঞানতা প্রকাশ পেয়েছে। কেননা সে এখানে মুশরিকদের প্রশংসা ও মু’মিনদের নিন্দা করেছে। আবু জাহল ও তার দোসরদের অনুপস্থিতিতে মক্কাভূমি তার কাছে উজাড় মনে হয়েছে। যারা ছিল মূখ, সীমা লংঘনকারী, দুষ্ট কাফির। কিন্তু আল্লাহর প্রিয় রাসূল —যিনি মানবকুলের গৌরব, চাঁদের চাইতেও উজ্জ্বল যার চেহারা, জ্ঞান ও প্রজ্ঞায় যিনি মহীয়ান, তাঁর সাখী সত্যানুসারী আবু বকর সিদীক, যিনি ছিলেন সকল প্রকার কল্যাণমূলক কাজে অগ্ৰণী, বিশ্বপ্ৰভু আল্লাহর পথে হাযার হাযার অর্থ ব্যয়কারী, অনুরূপভাবে অন্যান্য সাহাবায়ে কিরাম, যারা মূর্থিতা ত্যাগ করে জ্ঞানের সন্ধানে ছুটেছেন এবং দারুল কুফার ত্যাগ করে দারুল ইসলামে গমন করেছেন— তাদের অবর্তমানে মক্কাভূমি তাদের কাছে উজাড় মনে হয় না। আলোর সাথে অন্ধকার ও রাতের সাথে দিনকে তারা ঘুলিয়ে ফেলেন না। বদর যুদ্ধ প্রসঙ্গে আরও বহু কবিতা আছে। ইবন ইসহাক সেগুলো উল্লেখ করেছেন। গ্রন্থের কলেবর বেড়ে যাওয়ার ভয়ে ও পাঠকদের বিরক্তির আশংকায় আমরা এই পর্যন্ত উদধূত করেই ক্ষান্ত দিলাম।

উমাবী তার মাগায়ী গ্রন্থে তাঁর পিতা সূত্রে. আবু হুরায়রা থেকে বর্ণনা করেন। রাসূলুল্লাহ (সা) জাহেলী কবিতা আবৃত্তিকে ক্ষমার চোখে দেখেছেন। সুলায়মান বলেন, এ প্রসঙ্গে যুহরী বলেছেন যে, “তবে ছুটি কাসীদা এর ব্যতিক্রম। তার একটি হল উমাইয়া ইবন আবিস সালতের কবিতা— যার মধ্যে বদরী সাহাবীগণের কুৎসা আছে। দ্বিতীয়টি আশার কবিতাযার মধ্যে আখওয়াসের উল্লেখ আছে। তবে এ হাদীছটি গরীব–অপরিচিত এবং এর একজন বর্ণনাকারী সুলায়মান ইবন আরকামের বর্ণনা অগ্রহণযোগ্য।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *